বিনদ ঘোষাল
এই লেখাটি লিখতে বসে প্রথমে যে কথাটি মনে হচ্ছে তা হলো, নারায়ণ দেবনাথের কারণেই আমার অতি দ্রুত বাংলা অক্ষরজ্ঞান হয়েছিল। কীভাবে? সে কথা একটু বলি।
আমি তখন সবে পাঁচ বছরে পা দিয়েছি। উনিশ শ সত্তরের দশকে পাঁচ বছর বয়সের আগে ইশকুলে ভর্তি করানো যেত না। তাই পাঁচে পড়তেই বাবা আমাকে নবগ্রামের শিশু ভারতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেজি ওয়ানে ভর্তি করে দিলেন। ভর্তি হয়েছি কি হইনি অত সব বোঝার ক্ষমতা হয়নি, তবে একদিন লোডশেডিংয়ের সন্ধেবেলায় বারান্দায় বসে রয়েছি, দেখলাম বাবা দোকান থেকে আমার জন্য অনেক রংচঙে বই এনেছেন। সেই সব বইয়ের মধ্যে বর্ণপরিচয় নামের একটা বই ছিল আর ছিল নন্টে-ফন্টের নানান কীর্তি নামের একটা বই। সাদাকালো সেই বইটার মলাটে একটা মোটা, টেকো মানুষের রাগী মুখ আর দু’জন আমার থেকে একটু বড় ছেলের হাসি-হাসি মুখ। সেই বইটার পাতা ওল্টালাম। তখন মা আমাকে বাড়িতে অ আ ক খ শেখাচ্ছেন। খুব অল্পই শিখেছি।
বইয়ের পাতায় পাতায় দেখলাম অনেক মজার ছবি। দুটো ছেলে অনেক হাসছে, মজা করছে। আমার বাবার মতো ধুতি-পাঞ্জাবি পরা ভুঁড়িওয়ালা একটা লোক খুব রাগী-রাগী মুখ করে কখনো ওদের পেটাচ্ছে, কখনো তাড়া করছে। কিন্তু ছবিগুলোর মাথায় কী লেখা রয়েছে ভালোভাবে পড়ে উঠতে পারছি না। দিদিকে জিজ্ঞাসা করলাম। দিদি পড়ে শোনাল। খুব মজা লাগল শুনে। মনে জেদ চাপল এমন মজার লেখা নিজেই পড়ব। কিন্তু তার জন্য খুব দ্রুত বাংলা শিখতে হবে। সেদিন থেকেই খুব মন দিয়ে ফেললাম পড়াশোনায়। বর্ণ-পরিচয়ের পাশাপাশি আমার নন্টে-ফন্টের নানান কীর্তি পড়া শুরু। পাড়ায় আমার বয়সী বন্ধুদের মধ্যে সব থেকে আগে আমি পুরো বাক্য লিখতে ও পড়তে শিখেছিলাম আর সেটা একমাত্র সম্ভব হয়েছিল ওই নারায়ণ দেবনাথের জন্য।
তারপর? তারপর পুরো নেশা লেগে গেল। কেজি ওয়ান, টু-থ্রি-ফোর...টেন-টুয়েলভ-কলেজ। আজ এখন মধ্য-চল্লিশে পৌঁছে জীবনের নানা জটিলতায় যখন হাঁপিয়ে পড়ি তখন মোবাইল নয়, ট্যাব-ল্যাপটপ-টিভি-গান-গল্প-উপন্যাস কিচ্ছু না, আলমারি থেকে হাতে টেনে নিই নন্টে-ফন্টে কিংবা বাঁটুল দি গ্রেট সমগ্র। কারণ আমি জানি, মন খারাপ দূর করার জন্য এর থেকে বড় ম্যাজিক আর কারও নেই। বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ একটা মানুষ কীভাবে এত চরিত্র নির্মাণ করে গেছেন, তাদের নিয়ে রাশি রাশি গল্প লিখে গেছেন, তাদের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তা ভাবলে এই বয়সে বিস্মিত হই। নন্টে-ফন্টে, হাঁদা-ভোঁদা, বাঁটুল দি গ্রেট, বাহাদুর বেড়াল, ডানপিটে খাঁদু, গোয়েন্দা কৌশিক—আরও কত যে চরিত্রের স্রষ্টা তিনি এবং প্রতি চরিত্রের মেজাজ আলাদা, গল্পের চলন আলাদা। কীভাবে এতসব চরিত্রকে সামলাতেন তা ভাবলে অবাক হয়ে যাই! আর গল্পের পাশাপাশি মুগ্ধ হতে হয় তাঁর ড্রয়িং দেখে। ফিগার ড্রয়িংয়ে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। যে কোনো পশচার, যে কোনো মুভমেন্টকে অভাবনীয় অনায়াসে আঁকতেন!
আমাদের ছোটবেলায় ভিডিও গেম ছিল না, টিভি ছিল না, মোবাইল, হেন-তেন কিছুই ছিল না। ছিল অনেক বন্ধু, খেলার মাঠ আর ছিল নারায়ণ দেবনাথের অলৌকিক জগৎ। যেখানে ডুব দিলেই সুপারিন্টেন্ডেন্ট বাবু, পিসেমশাইয়ের শাসন, কেল্টুদার বদমাইশি, নন্টে-ফন্টের বন্ধুত্ব, বাঁটুলের অভাবনীয় দৈহিক শক্তি, পিসিমা, দুই বিচ্ছু—আরও অনেকের দেখা মিলত। তারা সকলেই ছিল আমার বন্ধু, আমার আপনার জন। আমার মন খারাপ হতোই না কখনো। ডিপ্রেশন কী কখনো বুঝিইনি ওদের জন্য।
সাদাকালো ওই খোপগুলোয় আঁকা ছবি আর ডায়লগবক্সের ‘ইররক, ওকৎ, উলস, আফস, সুরুৎ’ শব্দগুলোর সঙ্গে সেই যে পরিচয় হয়ে গিয়েছিল নারায়ণ দেবনাথের হাত ধরে, আজও ভুলিনি।
অনেক বড় হয়ে যাওয়ার পর একদিন চাকরিসূত্রে আমার সুযোগ হয়েছিল ওই জাদুকরের সাক্ষাৎকার নেওয়ার। হাওড়ার এক শতাব্দীপ্রাচীন বাড়ির নোনাধরা ছোট ঘরের ভেতরে যখন প্রবেশ করেছিলাম আর সেই মানুষটির সঙ্গে কথা বলতে বলতে ডুবে যাচ্ছিলাম শৈশবের স্মৃতিতে, সে এক অনির্বচনীয় অনুভূতি আর জীবনের সেরা প্রাপ্তি ছিল আমার। আর সেদিনই মানুষটির শিশুর মতো সারল্য, মনের স্বচ্ছতা টের পেয়ে উপলব্ধি করেছিলাম, এমন শিশুসুলভ মন না থাকলে অমন চরিত্রদের সৃষ্টি করাই যায় না। আমি জীবনে নিজের পেশার সূত্রে অনেক কৃতী মানুষের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু নারায়ণ দেবনাথের মতো এমন সহজ, নিরহংকার মানুষ দুটি দেখিনি। এই আত্মপ্রচারের যুগে, এই আপন দামামা বাজানোর যুগে তিনি সত্যি এক বিস্ময়, নিজের সম্পর্কে বলতে ওঁর কত কুণ্ঠা! মস্ত শিক্ষা নিয়ে সেদিন ফিরেছিলাম আমি।
নারায়ণ দেবনাথ চলে গেলেন। আটানব্বই বছর বয়সে। হ্যাঁ, চলে যাওয়ার বয়স হয়েছিল ওঁর। সবই জানি, সবই বুঝি, কিন্তু...। এখন অনেকেই বলেন, এই বাংলায় জন্মেছিলেন বলে, এই বাংলায় কাজ করেছিলেন বলে তিনি তাঁর প্রতিভার যোগ্য সমাদর পাননি, অনেক বড় সম্মান তাঁর প্রাপ্য ছিল। তবু জীবনের শেষপ্রান্তে এসে শিশুসাহিত্যে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবিভূষণ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট এবং শেষশয্যায় তিনি পদ্মশ্রী পেয়েছেন—এই আমাদের গৌরব।
হয়তো এইটুকুও যথেষ্ট নয়, ইউরোপ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের দেশগুলোতে তিনি জন্মালে বিশ্ববিখ্যাত হতে পারতেন স্ট্যান লি অথবা ডিজনির মতো। সেই যোগ্যতা তাঁর ছিল। কিন্তু এটাও তো সত্যি, তাঁর চলে যাওয়ার খবরটি পেয়ে আমার মতো এক মধ্য-চল্লিশ মানুষ সকাল থেকে বারংবার চোখ মুছছে আর আবারও চোখ দুটি ঝাপসা হয়ে উঠছে। এই পুরস্কারের মূল্য যে কিছু কম নয়, এই সম্মানের যে কোনো তুলনা নেই তা তিনি অন্তত জানেন।
নারায়ণ দেবনাথ কয়েকটি প্রজন্মকে আশ্রয় দিয়েছিলেন, কল্পনা করতে, নির্মলভাবে হাসতে শিখিয়েছিলেন। তিনি চলে গেলেন। শুধু একটা কথাই শেষে বলার, নারায়ণ দেবনাথ কারও বিকল্প ছিলেন না, নারায়ণ দেবনাথেরও কোনো দিন বিকল্প হবে না। তিনি চিরকালের এক জাদুকর।
লেখক: কথাসাহিত্যিক, কলকাতা
এই লেখাটি লিখতে বসে প্রথমে যে কথাটি মনে হচ্ছে তা হলো, নারায়ণ দেবনাথের কারণেই আমার অতি দ্রুত বাংলা অক্ষরজ্ঞান হয়েছিল। কীভাবে? সে কথা একটু বলি।
আমি তখন সবে পাঁচ বছরে পা দিয়েছি। উনিশ শ সত্তরের দশকে পাঁচ বছর বয়সের আগে ইশকুলে ভর্তি করানো যেত না। তাই পাঁচে পড়তেই বাবা আমাকে নবগ্রামের শিশু ভারতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেজি ওয়ানে ভর্তি করে দিলেন। ভর্তি হয়েছি কি হইনি অত সব বোঝার ক্ষমতা হয়নি, তবে একদিন লোডশেডিংয়ের সন্ধেবেলায় বারান্দায় বসে রয়েছি, দেখলাম বাবা দোকান থেকে আমার জন্য অনেক রংচঙে বই এনেছেন। সেই সব বইয়ের মধ্যে বর্ণপরিচয় নামের একটা বই ছিল আর ছিল নন্টে-ফন্টের নানান কীর্তি নামের একটা বই। সাদাকালো সেই বইটার মলাটে একটা মোটা, টেকো মানুষের রাগী মুখ আর দু’জন আমার থেকে একটু বড় ছেলের হাসি-হাসি মুখ। সেই বইটার পাতা ওল্টালাম। তখন মা আমাকে বাড়িতে অ আ ক খ শেখাচ্ছেন। খুব অল্পই শিখেছি।
বইয়ের পাতায় পাতায় দেখলাম অনেক মজার ছবি। দুটো ছেলে অনেক হাসছে, মজা করছে। আমার বাবার মতো ধুতি-পাঞ্জাবি পরা ভুঁড়িওয়ালা একটা লোক খুব রাগী-রাগী মুখ করে কখনো ওদের পেটাচ্ছে, কখনো তাড়া করছে। কিন্তু ছবিগুলোর মাথায় কী লেখা রয়েছে ভালোভাবে পড়ে উঠতে পারছি না। দিদিকে জিজ্ঞাসা করলাম। দিদি পড়ে শোনাল। খুব মজা লাগল শুনে। মনে জেদ চাপল এমন মজার লেখা নিজেই পড়ব। কিন্তু তার জন্য খুব দ্রুত বাংলা শিখতে হবে। সেদিন থেকেই খুব মন দিয়ে ফেললাম পড়াশোনায়। বর্ণ-পরিচয়ের পাশাপাশি আমার নন্টে-ফন্টের নানান কীর্তি পড়া শুরু। পাড়ায় আমার বয়সী বন্ধুদের মধ্যে সব থেকে আগে আমি পুরো বাক্য লিখতে ও পড়তে শিখেছিলাম আর সেটা একমাত্র সম্ভব হয়েছিল ওই নারায়ণ দেবনাথের জন্য।
তারপর? তারপর পুরো নেশা লেগে গেল। কেজি ওয়ান, টু-থ্রি-ফোর...টেন-টুয়েলভ-কলেজ। আজ এখন মধ্য-চল্লিশে পৌঁছে জীবনের নানা জটিলতায় যখন হাঁপিয়ে পড়ি তখন মোবাইল নয়, ট্যাব-ল্যাপটপ-টিভি-গান-গল্প-উপন্যাস কিচ্ছু না, আলমারি থেকে হাতে টেনে নিই নন্টে-ফন্টে কিংবা বাঁটুল দি গ্রেট সমগ্র। কারণ আমি জানি, মন খারাপ দূর করার জন্য এর থেকে বড় ম্যাজিক আর কারও নেই। বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ একটা মানুষ কীভাবে এত চরিত্র নির্মাণ করে গেছেন, তাদের নিয়ে রাশি রাশি গল্প লিখে গেছেন, তাদের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তা ভাবলে এই বয়সে বিস্মিত হই। নন্টে-ফন্টে, হাঁদা-ভোঁদা, বাঁটুল দি গ্রেট, বাহাদুর বেড়াল, ডানপিটে খাঁদু, গোয়েন্দা কৌশিক—আরও কত যে চরিত্রের স্রষ্টা তিনি এবং প্রতি চরিত্রের মেজাজ আলাদা, গল্পের চলন আলাদা। কীভাবে এতসব চরিত্রকে সামলাতেন তা ভাবলে অবাক হয়ে যাই! আর গল্পের পাশাপাশি মুগ্ধ হতে হয় তাঁর ড্রয়িং দেখে। ফিগার ড্রয়িংয়ে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। যে কোনো পশচার, যে কোনো মুভমেন্টকে অভাবনীয় অনায়াসে আঁকতেন!
আমাদের ছোটবেলায় ভিডিও গেম ছিল না, টিভি ছিল না, মোবাইল, হেন-তেন কিছুই ছিল না। ছিল অনেক বন্ধু, খেলার মাঠ আর ছিল নারায়ণ দেবনাথের অলৌকিক জগৎ। যেখানে ডুব দিলেই সুপারিন্টেন্ডেন্ট বাবু, পিসেমশাইয়ের শাসন, কেল্টুদার বদমাইশি, নন্টে-ফন্টের বন্ধুত্ব, বাঁটুলের অভাবনীয় দৈহিক শক্তি, পিসিমা, দুই বিচ্ছু—আরও অনেকের দেখা মিলত। তারা সকলেই ছিল আমার বন্ধু, আমার আপনার জন। আমার মন খারাপ হতোই না কখনো। ডিপ্রেশন কী কখনো বুঝিইনি ওদের জন্য।
সাদাকালো ওই খোপগুলোয় আঁকা ছবি আর ডায়লগবক্সের ‘ইররক, ওকৎ, উলস, আফস, সুরুৎ’ শব্দগুলোর সঙ্গে সেই যে পরিচয় হয়ে গিয়েছিল নারায়ণ দেবনাথের হাত ধরে, আজও ভুলিনি।
অনেক বড় হয়ে যাওয়ার পর একদিন চাকরিসূত্রে আমার সুযোগ হয়েছিল ওই জাদুকরের সাক্ষাৎকার নেওয়ার। হাওড়ার এক শতাব্দীপ্রাচীন বাড়ির নোনাধরা ছোট ঘরের ভেতরে যখন প্রবেশ করেছিলাম আর সেই মানুষটির সঙ্গে কথা বলতে বলতে ডুবে যাচ্ছিলাম শৈশবের স্মৃতিতে, সে এক অনির্বচনীয় অনুভূতি আর জীবনের সেরা প্রাপ্তি ছিল আমার। আর সেদিনই মানুষটির শিশুর মতো সারল্য, মনের স্বচ্ছতা টের পেয়ে উপলব্ধি করেছিলাম, এমন শিশুসুলভ মন না থাকলে অমন চরিত্রদের সৃষ্টি করাই যায় না। আমি জীবনে নিজের পেশার সূত্রে অনেক কৃতী মানুষের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু নারায়ণ দেবনাথের মতো এমন সহজ, নিরহংকার মানুষ দুটি দেখিনি। এই আত্মপ্রচারের যুগে, এই আপন দামামা বাজানোর যুগে তিনি সত্যি এক বিস্ময়, নিজের সম্পর্কে বলতে ওঁর কত কুণ্ঠা! মস্ত শিক্ষা নিয়ে সেদিন ফিরেছিলাম আমি।
নারায়ণ দেবনাথ চলে গেলেন। আটানব্বই বছর বয়সে। হ্যাঁ, চলে যাওয়ার বয়স হয়েছিল ওঁর। সবই জানি, সবই বুঝি, কিন্তু...। এখন অনেকেই বলেন, এই বাংলায় জন্মেছিলেন বলে, এই বাংলায় কাজ করেছিলেন বলে তিনি তাঁর প্রতিভার যোগ্য সমাদর পাননি, অনেক বড় সম্মান তাঁর প্রাপ্য ছিল। তবু জীবনের শেষপ্রান্তে এসে শিশুসাহিত্যে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবিভূষণ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট এবং শেষশয্যায় তিনি পদ্মশ্রী পেয়েছেন—এই আমাদের গৌরব।
হয়তো এইটুকুও যথেষ্ট নয়, ইউরোপ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের দেশগুলোতে তিনি জন্মালে বিশ্ববিখ্যাত হতে পারতেন স্ট্যান লি অথবা ডিজনির মতো। সেই যোগ্যতা তাঁর ছিল। কিন্তু এটাও তো সত্যি, তাঁর চলে যাওয়ার খবরটি পেয়ে আমার মতো এক মধ্য-চল্লিশ মানুষ সকাল থেকে বারংবার চোখ মুছছে আর আবারও চোখ দুটি ঝাপসা হয়ে উঠছে। এই পুরস্কারের মূল্য যে কিছু কম নয়, এই সম্মানের যে কোনো তুলনা নেই তা তিনি অন্তত জানেন।
নারায়ণ দেবনাথ কয়েকটি প্রজন্মকে আশ্রয় দিয়েছিলেন, কল্পনা করতে, নির্মলভাবে হাসতে শিখিয়েছিলেন। তিনি চলে গেলেন। শুধু একটা কথাই শেষে বলার, নারায়ণ দেবনাথ কারও বিকল্প ছিলেন না, নারায়ণ দেবনাথেরও কোনো দিন বিকল্প হবে না। তিনি চিরকালের এক জাদুকর।
লেখক: কথাসাহিত্যিক, কলকাতা
এবারের মেলায় একটা ব্যতিক্রম চোখে পড়ছে শুরুর দিন থেকে। প্রতিবছর প্রকাশনীগুলো পরিচিত ও জনপ্রিয় লেখকদের বড় বড় ছবি ব্যবহার করেন স্টল প্যাভিলিয়নের সামনে, ভেতরে, ওপরে। এবার সেটা অনেকটাই কম। তবে এই ব্যতিক্রমের মাঝেও একজন লেখক আছেন যথারীতি স্বমহিমায়। তিনি হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর বই আছে এমন সব প্রকাশনীই তাঁর বিশ
৫ ঘণ্টা আগে১৯৫২ সাল। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ২৬ জানুয়ারি পল্টনের এক জনসভায় চার বছর আগে জিন্নাহর দেওয়া ঘোষণার পুনরাবৃত্তি করলেন, ‘কেবল উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।’ ৩ ফেব্রুয়ারি আবারও তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে ‘জিন্নাহর নীতিতে বিশ্বাসী’ বলে দাবি করলেন।
২ দিন আগে... স্কুলে থাকতেই, দীপা দত্তের বাবা সুধাংশু বিমল দত্ত আমাদের এলাকার কমিউনিস্ট এমপি ছিলেন। ওখানে ভাষা আন্দোলনের ধাক্কাটা তীব্রভাবে লাগলো। ভাষা আন্দোলনের একজন নেতা হলেন প্রিন্সিপাল কাশেম।... তারপরে ধরো এই কমিউনিস্ট আন্দোলন, আমাদের ওখানে তখন বড় বড় নেতা যেমন আহসাব উদ্দীন সাহেব, ওখানে মিটিং করতে আসতেন।
৩ দিন আগে...রাজনৈতিক বিশ্বাসকে যদি কবিতায় উত্তীর্ণ করা যায়, তাহলে সেটা কবিতা থাকবে, কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্বাসকে যদি স্লোগান হিসেবে ব্যবহার করা হয় কবিতায়, তাহলে সেটা আর কবিতা থাকবে না। কিন্তু উচ্চকণ্ঠ হলে যে কবিতা হবে না, আমি সেটা বিশ্বাস করি না। নেরুদা যথেষ্ট উচ্চকণ্ঠ রাজনৈতিক কবিতা লিখেছেন এবং সেগুলো যথেষ্ট..
১১ দিন আগে