Ajker Patrika

জীবন ঘষে যিনি জ্বালিয়েছেন আগুন

আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ০৫
জীবন ঘষে যিনি জ্বালিয়েছেন আগুন

হাসান আজিজুল হকের নাম প্রথম কবে শুনেছি কিংবা তাঁর লেখা গল্প প্রথম কবে পড়েছি, তা ঠিক মনে নেই। তবে এটা মনে আছে যে স্কুলের ছাত্র থাকতেই তাঁর গল্প পড়েছি। তিনি একজন বড় মাপের গদ্যকার কিংবা তাঁর কতগুলো বই আছে, গল্প ছাড়া আর কিছু, মানে কবিতা, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনি—এসবও তিনি লেখেন কি না, কিংবা ব্যক্তিগত জীবনে তিনি কী করেন, অর্থাৎ তাঁর পেশা কী—এসবের কিছুই না জেনে তাঁর লেখা পড়েছি। প্রথম পাঠেই কেন মুগ্ধ হয়েছিলাম, তা-ও আজ আর বলতে পারব না। হয়তো ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’ই প্রথম পড়েছিলাম। স্কুলের শেষ ক্লাসের ছাত্রের কাছে কেন গল্পটি ভালো লেগেছিল, তা আর না-ই বা বললাম। ভালো লেগেছিল এবং গল্পটি আমাকে টেনেছিল এবং লেখকের প্রতি তৈরি হয়েছিল এক গভীর আকর্ষণ। 

তারপর কত বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। হাসান আজিজুল হক সম্পর্কে ধীরে ধীরে কত কিছু জেনেছি। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনশাস্ত্রের অধ্যাপক। তিনি গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ লেখেন। বাংলা গদ্যসাহিত্যের তিনি এক ব্যতিক্রমী প্রাণপুরুষ। তাঁর জন্ম পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের যবগ্রামে। প্রাথমিক শিক্ষালাভ ওখানেই। তারপর ১৯৫৪ সালে চলে আসেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের খুলনা জেলায়। তিনি হয়ে গেলেন আমাদের দেশের মানুষ। তিনি দেশভাগ দেখেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেখেছেন, দাঙ্গা দেখেছেন, নিষ্ঠুরতা ও নৃশংসতা দেখেছেন, মানুষের শক্তি এবং দুর্বলতাও দেখেছেন। সংঘাত দেখেছেন আবার সম্প্রীতিও দেখেছেন। 

এক সাক্ষাৎকারে হাসান আজিজুল হক বলেছেন: ‘দেশভাগ হয় ১৯৪৭ সালে, তার সাত বছর পর ১৯৫৪ সালে আমি এখনকার বাংলাদেশে আসি। খুলনায়। কারণ খুবই আপতিক। স্কুল ফাইনাল পাস করার পর কোথাও না কোথাও তো ভর্তি হতে হবে–সেটা বর্ধমান কিংবা মাদ্রাজেও হতে পারত। আমার বেলায় হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের খুলনায়। বাড়ি থেকে খুব যে একটা দূর, তা-ও নয়। বৃহদায়তন উপমহাদেশ মাথায় রাখলে সত্যি খুব একটা দূরে আমার দেশান্তর ঘটেনি।’ 

এরপর তিনি বলছেন: ‘দাঙ্গার কথা, কোলকাতার দাঙ্গার কথা, নোয়াখালী-বিহারে সাম্প্রদায়িক হত্যার কাহিনী খুব ছোটবেলায় অল্পবিস্তর শুনেছি বটে–আশেপাশের অঞ্চলে দু-একটি ছোটখাটো দাঙ্গা,খুন–তা-ও দেখেছি। কিন্তু এর চেয়ে মনের ওপর প্রভাব ফেলেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং পঞ্চাশের মন্বন্তর। এসবই দেশভাগের তুলনায় মনকে অনেক বেশি গ্রাস করেছিল।’ 

হাসান আজিজুল হক যখন লিখতে শুরু করেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই এমন সব বিষয় গল্পে উঠে আসে, যেগুলো তাঁর অভিজ্ঞতার ভান্ডারে জমছিল। তিনি বলেছেন, ‘ভাণ্ডার শূন্য থাকলে তো কিছু বের হবে না। যদি পকেট ফাঁকা থাকে এবং আমি দান করতে চাই–সেটা কি সম্ভব হবে?’ না, তাই তো হাসান আজিজুল হক দুহাতে অবিরল লেখেননি, কম লিখেছেন। তবে যা লিখেছেন, তা-ই মানুষের মনে দাগ কেটেছে, পাঠকের মনে আলোড়ন তৈরি করেছে। লেখালেখির ক্ষেত্রে তিনি কাউকে অনুসরণ করেননি, বিশেষ কারো দ্বারা প্রভাবিত হননি। নিজেই বলেছেন, লিখতে গিয়ে কোনো সংজ্ঞা মানেননি, তাঁর কোনো দীক্ষাগুরুও ছিল না। নিজেই নিজের পথ তৈরি করেছেন। তাঁর গদ্যভাষাও যেন কবিতার মতো। কারো কাছে একটু কঠিন মনে হতে পারে। কিন্তু মনোযোগ দিয়ে পড়লেই ভেতরের সুধারস ঠিকই পাঠকের মনকে প্লাবিত করে। ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’ গল্পের শুরুটা দেখুন: ‘এখন নির্দয় শীতকাল, ঠাণ্ডা নামছে হিম, চাঁদ ফুটে আছে নারকেল গাছের মাথায়। অল্প বাতাসে একটা বড় কলার পাতা একবার বুক দেখায় একবার পিঠ দেখায়। ওদিকে গঞ্জের রাস্তার মোড়ে রাহাত খানের বাড়ির টিনের চাল হিম-ঝকঝক করে একসময় কানুর মায়ের কুঁড়েঘরের পৈঠায় সামনের পা তুলে দিয়ে শিয়াল ডেকে ওঠে।’  এমন গদ্য কবিতার চেয়ে কম কিসে! তিনি গদ্যের জন্য তাঁর মতো করে ভাষা নির্মাণ করেছেন। বলেছেন, ‘জোরজবরদস্তি করে কিছুই হওয়ার নয়। ভাষা হচ্ছে নদীর তীব্র স্রোতের মতো, ভেতর থেকে বদলে যাবে। মনে রাখতে হবে, এ হচ্ছে জীবনের রসায়ন, যন্ত্রের ফ্যাক্টরি নয়।’ 

হাসান আজিজুল হক সম্পর্কে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন, ‘তাঁর দৃষ্টি অন্তর্ভেদী। সেই দৃষ্টি শাণিত হয়েছিল তাঁর বামপন্থী বোধের দ্বারা।' তিনি কি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন? আমি সঠিক জানি না। কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য না হয়েও কিন্তু কমিউনিস্ট হওয়া যায়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির তাত্ত্বিক নেতা প্রয়াত অনিল মুখার্জি একদিন আমাকে বলেছিলেন, ‘শুধু মিছিল-মিটিং করলে, স্লোগান দিলেই কমিউনিস্ট হওয়া যায় না। তিনিই কমিউনিস্ট যিনি ভালো মানুষ, যে কাজ করেন, তা নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে করেন এবং যিনি শুধু নিজের কথা না ভেবে সমষ্টির কথা ভাবেন।’ 

অনিল মুখার্জির সংজ্ঞা অনুযায়ী হাসান আজিজুল হক অবশ্যই কমিউনিস্ট ছিলেন। তিনি ছিলেন সেরাদের মধ্যে সেরা। 

তাঁর মতো মুক্ত মনের উদার মানুষ আর কজন আছেন আমাদের দেশে? বড় মানুষের একটি বড় গুণ হলো, তাঁরা কাউকে উপেক্ষা করেন না। অতি উঁচু মাপের ও মনের মানুষ বলেই হাসান আজিজুল হক বরাবর সেই মানুষের জয়গান গেয়েছেন, যাঁরা অক্ষর না চিনলেও আলো মাটি আকাশ নক্ষত্র নদী জল চেনেন।

তিনি উচ্চশিক্ষিত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। কিন্তু তাঁর যাপিত জীবন ছিল সাধারণ। তিনি কখনো নিজেকে ‘এলিট শ্রেণির’ প্রতিনিধি ভাবতেন না। চলনে-বলনে সাদাসিধে ছিলেন। প্রান্তিক মানুষের প্রতি ছিল তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসা। তিনি লিখেছেনও মূলত প্রান্তিক মানুষের কথাই। তিনি নিজেই বলেছেন, ‘আমি এলিট শ্রেণির মধ্যে নেই। বাংলাদেশের অই শ্রেণিকে আমি ‘রিফিউট’ করি। পাশাপাশি মধ্যবিত্তের তেলতেলে সুবিধাবাদকেও ঘৃণা করি। আমি মনে করি, বাংলাদেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই দুই শ্রেণি তুলনামূলকভাবে অত্যন্ত ক্ষুদ্র। পশ্চিমের স্বাধীন বুর্জোয়া সভ্যতা-সংস্কৃতির মধ্যে না গিয়ে তাকে পুরোপুরি ডিঙ্গিয়ে এসে উপনিবেশ এবং তাঁবেদার সামন্ত শ্রেণিভুক্ত হয়ে আজ এই এলিট ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি, এক রকম ভালো অর্থে বলছি, শুয়োরের মতো। শুয়োর দেখে কেউ একজন নাকি জিজ্ঞেস করেছিল–একি ইঁদুর বড় হয়ে হয়ে হয়েছে, নাকি হাতি ছোট হয়ে হয়ে হয়েছে?’ 

সত্য উচ্চারণে এমন অকপট ও সাহসী ছিলেন হাসান আজিজুল হক। 

নিজে যে বাম চিন্তায় বিশ্বাসী ছিলেন, সেটাও স্পষ্ট হয় তাঁর এই কথায়, ‘পুঁজিবাদী সমাজে ব্যক্তি সর্বেসর্বা। সমাজের ধনসম্পদ কুক্ষিগত হয়ে যায় ব্যক্তির কাছে।’ সেজন্য তিনি তাঁর লেখায় ব্যক্তির চেয়ে সমষ্টির দ্রোহকে উজ্জ্বল করে এঁকেছেন। কিছু একটা পাল্টাতে গেলে একা পারা যায় না, সমষ্টির প্রয়োজন হয়। প্রচলিত গণতন্ত্র নিয়ে যে তাঁর খুব উচ্ছ্বাস ছিল তা নয়। বরং তিনি বলেছেন, ‘৫ বছর পর পর নির্বাচন হয়, আর পাঁচ বছর করে গণতন্ত্র কুক্ষিগত হয়।’

আবার মার্কসবাদী দর্শন নিয়েও তিনি বড় আশাবাদী ছিলেন না। তিনি বলেছেন: ‘আমি মনে করি, মার্কসবাদ নিয়ে এদেশে স্তুতি অথবা নিন্দা–এই দুটি অনর্গল আউড়ে যাওয়া প্রায় একমাত্র কাজ, যা আমরা করতে পেরেছি। এতে মার্কসবাদ বোঝার ক্ষেত্রে ক্ষতি হয়েছে, কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে আরও ক্ষতি হয়েছে। দীক্ষিতদের জন্য মার্কসবাদ শাস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে, অদীক্ষিতদের জন্য অস্পৃশ্য ব্যাপার। মূল্যায়ন করার কাজ অবশ্যই করা উচিত–যেহেতু মার্কসীয় দর্শন মৃত নয়, কেবলমাত্র দর্শনও নয়।’ 

হাসান আজিজুল হক আমার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন না। কিন্তু ছিলেন আমার মতো আরও অনেকের জীবনপাঠের শিক্ষক। তাঁর সঙ্গে খুব বেশি দেখা-সাক্ষাৎ না হলেও অন্তত বার চারেক বেশ সময় নিয়ে আন্তরিক পরিবেশে কথা হয়েছে। তিনি ছিলেন ভালো কথক। এত সুন্দর করে কথা বলতেন, শুনতেও ভালো লাগত। পাণ্ডিত্য ফলাতেন না, কিন্তু আলাভোলার মতো এমন সব কথা বলতেন, যা সচরাচর অনেক পণ্ডিতের মুখ থেকেও বের হওয়া সহজ নয়। 

তিনি জানতেন, আমি রাজনীতি নিয়ে লেখালেখি করি। তাই রাজনৈতিক আলোচনাই করতেন আমার সঙ্গে। বছর কয়েক আগে এক অনুষ্ঠান শেষে জিজ্ঞেস করেছিলাম, স্যার, আমরা কি এগিয়ে যাচ্ছি, নাকি—আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই তিনি শুরু করেন, ‘মানুষ পেছনে হাঁটতে পারে না। হাঁটতে হয় সামনের দিকেই। অবশ্য সদরঘাটে যাওয়ার পথে কেউ গুলিস্তানে ঘুরপাক খায় না, তা তো নয়। ক্রমাগত হারানো এবং ক্রমাগত পাওয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের যে অর্জন, তা অবিনাশী। তবে হারানোকে বড় করে দেখা আর পাওয়াকে ছোট করে দেখা মানুষের সহজাত প্রবণতা। বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে গেলে যে মাছটা ধরা যায় না, তাকে বড়ই মনে হয়। আর যেটা বড়শিতে ধরা পড়ে, সেটা ছোট মনে হয়। আমাদের এই জীবনকালে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা আমাদের জন্য আকাশতুল্য অর্জন। আবার বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির প্রতিষ্ঠাকালীন অঙ্গীকার থেকে ক্রমাগত সরে যেতে দেখাটাও কম বেদনার নয়। এটা অবশ্য রাষ্ট্রের দোষ নয়। দোষ সেই মানুষদের, যারা রাষ্ট্র পরিচালনার ভার পায় বা নেয়।’ 

আমার জন্য এটা খুবই কষ্টের যে তাঁর একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নেওয়ার ইচ্ছে পূরণ হওয়ার আগেই তিনি গত ১৫ নভেম্বর ৮৩ বছর বয়সে চলে গেলেন পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে।

শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠ দেওয়ার বাইরেও তিনি তাঁদের জন্য প্রচুর সময় দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে তাঁর ছিল নিবিড় সম্পর্ক। শিল্প-সাহিত্যের সৃজনভুবনে অসংখ্য তরুণের উৎসাহী পদচারণাকে তিনি উৎসাহিত করতেন। একা নয়, অনেকে মিলে এগিয়ে যাওয়ার সাধনায় তিনি কত সময় যে ব্যয় করেছেন! একে তিনি অপচয় মনে করতেন না, মনে করতেন বিনিয়োগ। 

এর বাইরে তিনি নানা বিষয়ে লেখালেখি করেছেন। কারো কারো মতো তিনি অনেক লেখেননি, এক বসায় তিনি কয়েক হাজার শব্দের মালা গেঁথে গল্প-উপন্যাস লিখে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছাননি। তিনি অল্প লিখেছেন, তবে যা লিখেছেন তা বোদ্ধা পাঠকদের মনে নাড়া দিয়েছে, সাড়া দিয়েছে ভাবনার কেন্দ্রে। তিনি দেখেছেন অনেক, ভেবেছেন তার চেয়ে বেশি। আর লিখেছেন তার তুলনায় কম। 

তবে হাসান আজিজুল হক একজনই । তিনি ছিলেন মুক্তমনের মুক্তচিন্তার মানুষ। আড়াল পছন্দ করতেন না। খোলা মনের এই মানুষটি যতটুকু মনোযোগ পাওয়ার দরকার ছিল, ততটুকু পেয়েছেন? তিনি রাজধানীবাসী হননি। কোলাহল থেকে দূরে থাকার জন্যই কি পদ্মাপাড়ের রাজশাহীতে স্থায়ী নিবাস গড়েছিলেন? তাঁর বাড়ির নাম রেখেছিলেন ‘উজান’। উজানস্রোতে দাড় টানতে হয়েছে বলেই কি? রাজশাহীতে বাড়ি করার সময় তিনি স্থপতিকে বলেছিলেন, ‘নেহাত দেয়াল না দিলে তো ঘর হয় না। কাজেই দেয়াল আপনি দেন–আপত্তি করব না, তবে যত কম পারেন।’

হাসান আজিজুল হককে বিস্মৃতির দেয়ালে চাপা দেওয়ার নির্বুদ্ধিতা যেন কাউকে পেয়ে না বসে। 

লেখক: সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রানি ভিক্টোরিয়া যেভাবে ‘মাদক সম্রাজ্ঞী’ হয়ে উঠেছিলেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ০১
ব্রিটেনের রানি ভিক্টোরিয়া। ছবি: সংগৃহীত
ব্রিটেনের রানি ভিক্টোরিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে। শুধু তা-ই নয়, তাঁকে কিন্তু কখনো গহিন অরণ্যের আস্তানায় সশস্ত্র রক্ষীবেষ্টিত হয়ে আত্মগোপনে থাকতে হয়নি। তাঁর মাদক কারবারের আয় গোটা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখত। আর তাঁকে কখনো জেলে যাওয়ার চিন্তা করতে হয়নি। কারণ, মাদক-সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা যাঁদের ছিল, তাঁরা সবাই ছিলেন তাঁর বেতনভুক্ত কর্মচারী!

তিনি আর কেউ নন, তিনি রানি ভিক্টোরিয়া। তাঁর হাতে ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দণ্ড।

রানি ভিক্টোরিয়া শুধু সাম্রাজ্য পরিচালনাতেই মাদক ব্যবহার করেননি, ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি ছিলেন বিভিন্ন ধরনের ড্রাগের ভক্ত। সিংহাসনে আরোহণের সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর।

ভিক্টোরিয়ার অন্যতম প্রিয় মাদক ছিল আফিম। ঊনবিংশ শতাব্দীর ব্রিটেনে আফিম সেবনের ফ্যাশনেবল উপায় ছিল—অ্যালকোহলের সঙ্গে মিশিয়ে লডেনাম আকারে পান করা। তীব্র ব্যথা বা অস্বস্তি দূর করতে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। এমনকি দাঁত ওঠার সময় শিশুদের জন্যও এটি সুপারিশ করতেন চিকিৎসকেরা। রানি ভিক্টোরিয়াও প্রতিদিন সকালে এক ঢোক লডেনাম পান করে দিন শুরু করতেন।

এ ছাড়া তিনি সেবন করতেন কোকেন। এটি তখন ছিল সম্পূর্ণ নতুন এবং বৈধ। দাঁতের ব্যথা উপশম এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য রানি কোকেন মিশ্রিত চুইংগাম ও ওয়াইন পছন্দ করতেন। প্রসবের সময় অসহনীয় যন্ত্রণা কমাতে তিনি সানন্দে ক্লোরোফর্ম গ্রহণ করেন এবং এই অভিজ্ঞতাটিকে ‘স্বর্গীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন।

১৮৩৭ সালে যখন ভিক্টোরিয়া সিংহাসনে বসেন, উত্তরাধিকারসূত্রে একটি বড় সংকটের বোঝা তাঁর ঘাড়ে চাপে—ব্রিটিশরা চীন থেকে বিপুল পরিমাণ চা আমদানি করত। এর ফলে ব্রিটেনের সব অর্থ চীনে চলে যাচ্ছিল। আর ওই সময় ব্রিটিশদের হাতে চীনে রপ্তানি করার মতো কিছু ছিল না। ব্রিটেন মরিয়া হয়ে এমন একটি পণ্যের সন্ধান করছিল, যা চীনের লোকেরা চাইবে।

এ সমস্যার সমাধান ছিল আফিম। ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত ভারতে প্রচুর আফিম উৎপাদিত হতো। এটি ছিল অত্যন্ত কার্যকর ব্যথানাশক এবং মারাত্মকভাবে আসক্তি সৃষ্টিকারী। ফলে চীনের লোকেরা এর জন্য প্রচুর দাম দিতে প্রস্তুত ছিল। রানি ভিক্টোরিয়ার শাসন শুরু হওয়ার পর, চীনে আফিমের চালান দ্রুত বাড়তে থাকে। আফিমের কল্যাণে রাতারাতি বাণিজ্য ভারসাম্য বদলে যায়। চীনই ব্রিটিশদের কাছে ঋণী হতে শুরু করে। মাদক কারবার থেকে আসা অর্থ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মোট বার্ষিক আয়ের ১৫ থেকে ২০ শতাংশে দাঁড়ায়।

চীন সরকার মরিয়া হয়ে আফিমের প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে। চীনের সম্রাট এই কাজের জন্য প্রশাসক লিন জেক্সুকে নিয়োগ করেন। জেক্সু রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে একটি চিঠি লিখে ব্রিটিশদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন—চীন যেখানে চা, রেশম ও মৃৎপাত্রের মতো উপকারী পণ্য পাঠাচ্ছে, সেখানে ব্রিটেন কেন তার বিনিময়ে কোটি কোটি মানুষকে ক্ষতিকর মাদক পাঠাচ্ছে?

রানি সেই চিঠি পড়ারও প্রয়োজন বোধ করেননি। ফলে ১৮৩৯ সালের বসন্তে লিন জেক্সু ব্রিটিশ জাহাজ বহর আটক করেন এবং প্রায় আড়াই মিলিয়ন পাউন্ড আফিম দক্ষিণ চীন সাগরে ফেলে দেন।

মাত্র ২০ বছর বয়সী রানি ভিক্টোরিয়া এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। যেকোনো ক্ষমতাধর সাম্রাজ্যবাদী কিশোরীর মতো তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল প্রত্যাশিতই—তিনি চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এটিই ইতিহাসে প্রথম ‘আফিম যুদ্ধ’ নামে পরিচিত।

ব্রিটিশ বাহিনী চীনা সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে এবং হাজার হাজার চীনা নাগরিককে হত্যা করে। সম্রাট বাধ্য হয়ে একটি অসম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে হংকংকে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিতে হয়। চীনে আফিম ঢোকার জন্য আরও বন্দর খুলে দেওয়া হয় এবং চীনে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিকেরা আইনি সুরক্ষা পান।

এ ঘটনা বিশ্বজুড়ে চীন সাম্রাজ্যের অজেয় ভাবমূর্তি ভেঙে দেয়। এভাবেই একজন একগুঁয়ে কিশোরী রানি একটি প্রাচীন, মর্যাদাপূর্ণ সভ্যতাকে তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করেন। এই নির্মম, নির্লজ্জ আত্মস্বার্থই রানি ভিক্টোরিয়াকে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল মাদক সম্রাট বানিয়ে তোলে!

তথ্যসূত্র: টাইম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চালু হলো ৫০ হাজার পাউন্ডের চিলড্রেনস বুকার, বিচারক হবে শিশুরাও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৪৫
সেরা শিশু কথাসাহিত্যিক পাবেন ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা)। ছবি: বিবিসি
সেরা শিশু কথাসাহিত্যিক পাবেন ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা)। ছবি: বিবিসি

শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া হবে।

বুকার পুরস্কারের ইতিহাসে এই প্রথমবার বিচারক প্যানেলে থাকবে শিশুরাও। বর্তমান চিলড্রেনস লরিয়েট শিশুসাহিত্যিক ফ্রাঙ্ক কটরেল-বয়েস বিচারকদের উদ্বোধনী প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁর সঙ্গে আরও দুজন প্রাপ্তবয়স্ক বিচারক থাকবেন, যাঁরা প্রথমে আটটি বইয়ের একটি শর্টলিস্ট তৈরি করবেন। এরপর বিজয়ী নির্ধারণে সহায়তা করার জন্য তিনজন শিশু বিচারক নির্বাচিত হবেন।

বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, প্রতিবছর চিলড্রেনস বুকার প্রাইজের জন্য শর্টলিস্টেড হওয়া এবং বিজয়ী বইগুলোর ৩০ হাজার কপি শিশুদের উপহার দেওয়া হবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট, দ্য রিডিং এজেন্সি, বুকব্যাংকস এবং চিলড্রেনস বুক প্রজেক্টসহ বিভিন্ন সহযোগী সংস্থাদের মাধ্যমে এ বইগুলো দেওয়া হবে। গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে শিশুদের ‘আনন্দ নিয়ে পড়া’র প্রবণতা। এমন সময় বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন এ উদ্যোগটি নিল।

কটরেল-বয়েস বলেন, এই পুরস্কার শিশুদের উপভোগ করার মতো বই খুঁজে বের করা সহজ করে তুলবে। তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি শিশুরই বইয়ের জগতে ডুব দেওয়ার যে আনন্দ, তা উপভোগ করার সুযোগ পাওয়া উচিত। বিচারক প্যানেলে তাদের আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে এবং মনোনীত বইগুলো উপহার দেওয়ার মাধ্যমে হাজার হাজার শিশুকে বই পড়ার চমৎকার দুনিয়ায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটা বেশ দারুণ আয়োজন হতে যাচ্ছে।’ তিনি মজা করে বলেন, ‘চলুন, হইচই শুরু করা যাক!’

শিশুসাহিত্য জগতের শীর্ষ লেখকদের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে এ ঘোষণা। সাবেক শিশুসাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত মালরি ব্ল্যাকম্যান, জ্যাকলিন উইলসন, মাইকেল মরপুরগো, ক্রেসিডা কাউয়েল, অ্যান ফাইন এবং জোসেফ কোয়েলোরা—সবাই নতুন এই পুরস্কারকে স্বাগত জানিয়েছেন।

ইংরেজিতে লেখা বা ইংরেজিতে অনূদিত এবং যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত সমসাময়িক শিশুসাহিত্যগুলোতে এ পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের বুকার এবং আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারের মতোই বিজয়ী লেখক ৫০ হাজার পাউন্ড এবং শর্টলিস্টেড লেখকেরা প্রত্যেকে ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড পাবেন।

প্রথম চিলড্রেনস বুকার পুরস্কারের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ২০২৬ সালের বসন্তে। বিচারক হতে শিশুদের আবেদন প্রক্রিয়াও এই সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই বছরের নভেম্বরে ঘোষণা করা হবে শর্টলিস্ট এবং শিশু বিচারকদের নাম। বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তরুণ পাঠকদের জন্য আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে। ২০২৭ সালের পুরস্কারের জন্য ২০২৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রকাশিত বই হতে হবে।

শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিল্পকলায় সমর্থন এবং জলবায়ু-সংকট মোকাবিলায় কাজ করা দাতব্য সংস্থা একেও ফাউন্ডেশনের (AKO Foundation) সহযোগিতায় এ পুরস্কার পরিচালিত হবে।

বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) গ্যাবি উড বলেন, ‘২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক বুকার প্রাইজ চালুর পর গত ২০ বছরে আমাদের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোগ চিলড্রেনস বুকার। এর একাধিক লক্ষ্য রয়েছে। একদিকে এটি শিশুদের জন্য লেখা ভবিষ্যৎ ক্লাসিক সাহিত্যকে সম্মান জানাবে, অন্যদিকে এটি এমন একটি সামাজিক উদ্যোগ, যা তরুণদের আরও বেশি করে পড়াশোনায় অনুপ্রাণিত করবে। এর মাধ্যমেই আমরা এমন এক বীজ রোপণ করতে চাই, যেখান থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আজীবন পাঠকেরা বিকশিত হবে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, শিশুদের বিশেষ করে শিশুসাহিত্যের আসল বিচারকদের মতামত শোনার জন্য।

একেও ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ফিলিপ ল-ফোর্ড বলেন, ‘এই অংশীদারত্ব ফাউন্ডেশনের সাক্ষরতা বৃদ্ধি ও সামাজিক গতিশীলতা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা গর্বিত যে এমন একটি প্রকল্পে অবদান রাখতে পারছি, যা তরুণ পাঠকদের অনুপ্রাণিত ও ক্ষমতায়িত করবে।’

বিনো ব্রেইন নামের একটি যুব গবেষণা সংস্থা ও ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্টের সহযোগিতায় নিয়মিত পরামর্শ সেশনের মাধ্যমে শিশুরা এই পুরস্কারের গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট শিশুদের পড়ার অভ্যাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতা মূল্যায়নে সহায়তা করবে।

বুকার ফাউন্ডেশনের মতে, এই নতুন পুরস্কারটি শিশুসাহিত্যকে ‘সংস্কৃতির কেন্দ্রে স্থাপন’ করার একটি প্রচেষ্টা। সিইও গ্যাবি উড বলেন, ‘এই উদ্যোগের লক্ষ্য শুধু শিশুসাহিত্যে উৎকর্ষকে স্বীকৃতি দেওয়া নয়, বরং আরও বেশি তরুণকে এমন গল্প ও চরিত্র আবিষ্কারে সহায়তা করা ‘যারা তাদের সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে থাকবে।’

বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী সাহিত্য পুরস্কার বুকার প্রাইজ প্রথম প্রদান করা হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত ইংরেজিতে রচিত অসাধারণ কথাসাহিত্যকে সম্মান জানাতে এই পুরস্কার প্রবর্তিত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ছায়ানীড়

সম্পাদকীয়
ছায়ানীড়

নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে পারে অন্য জায়গার এসব খাবার। অন্তত ছায়ানীড়ের নিয়মিত ভক্ত-গ্রাহকেরা এমন দাবি করতেই পারেন। তাতে দোষের কিছু নেই।

তাই হয়তো এখনো রেস্তোরাঁটির সামনে ভিড় লেগে থাকে। ব্যস্ত সড়কের পাশ থেকে যখন মুরগি পোড়ার সুঘ্রাণ পাওয়া যায়, তখন পথে যেতে অনেকেই হয়তো বিরতি নিয়ে কিনে নেন ছায়ানীড়ের শর্মা বা গ্রিল চিকেন। ভেতরে বসে খেতে হলে লম্বা লাইনে যেমন দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, আবার পার্সেল নিতে গেলেও অপেক্ষা করতে হয়। প্রাত্যহিক এ দৃশ্য ছায়ানীড়ের জনপ্রিয়তার প্রমাণ। বিরিয়ানি ও অন্যান্য ফাস্ট ফুড খাবারও পাওয়া যায় এখানে।

ছবি: ওমর ফারুক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকাবাসীর দেশবন্ধু

সম্পাদকীয়
ঢাকাবাসীর দেশবন্ধু

আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। বলা হয়, চিত্তরঞ্জন দাশের জীবনদর্শনে প্রভাবিত হয়েই শচীমোহন রেস্তোরাঁটির নাম দেন ‘দেশবন্ধু সুইটমিট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। এর উল্টো দিকে তখন ছিল ইত্তেফাক পত্রিকার অফিস।

সেখানকার সাংবাদিকেরা দেশবন্ধুর পরোটা-লুচি-ভাজি-হালুয়া খেতে যেতেন নিয়মিত। কবি-সাহিত্যিক-অভিনয়শিল্পীরাও পছন্দ করতেন এই রেস্তোরাঁর খাবার। এমনকি এফডিসিতে ফরমাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেশবন্ধুর নাশতা। এখন হয়তো মানিক মিয়া, রাজ্জাক, কবরী কিংবা শাবানাদের মতো বিখ্যাতরা সেখানে যান না কিন্তু তাতে দেশবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখনো ঢাকাবাসীর ভিড় দেখা যায় এই রেস্তোরাঁয়। ভাবা যায়, সারা দিনই এখানকার পরোটা-ভাজি বিক্রি হতে থাকে! দুপুরে অবশ্য খাবারের তালিকায় ভাত-মাছ-মাংসও আছে। ছবি: মেহেদী হাসান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত