Ajker Patrika

শচীন দেববর্মন

সম্পাদকীয়
শচীন দেববর্মন

সংগীতশিল্পী, সুরকার ও সংগীত পরিচালক শচীন দেববর্মন। শচীন কর্তা নামে তিনি সুপরিচিত। তাঁর মায়াবি কণ্ঠে একধরনের সুর যেন ঝরে পড়ত; বিশেষ করে লোকসংগীতে তিনি এক মায়ার জাদু সৃষ্টি করেছিলেন। শচীন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে ত্রিপুরার রাজদরবারে চাকরি নেন। শৈশবকাল থেকেই তিনি ছিলেন সংগীতের প্রতি অনুরক্ত। পরে চাকরি ছেড়ে সংগীতের জন্য কলকাতায় যান।

ওস্তাদ বাদল খাঁ, আলাউদ্দিন খাঁ, ফৈয়াজ খাঁসহ সেই সময়ের বিখ্যাত সংগীতজ্ঞদের কাছে রাগসংগীতের তালিম নেন। মান্না দের কাকা দৃষ্টিশক্তিহীন শিল্পী কৃষ্ণ চন্দ্র দের কাছে তালিম নেওয়ার সৌভাগ্য হয় তাঁর। কৃষ্ণ চন্দ্র দের শিক্ষা শচীনকর্তার সফল শিল্পী, সুরস্রষ্টা আর সংগীত পরিচালক হয়ে ওঠার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে। লোকসংগীত ও রাগসংগীত নিজস্ব ঢঙে গেয়ে প্রচুর সুনাম অর্জন করেন তিনি।

১৯২৩ সালে কলকাতা বেতারে প্রথম তাঁর গান পরিবেশিত হয়। ১৯৩৭ সালে ‘রাজগী’ চলচ্চিত্রে প্রথম সংগীত পরিচালনা করেন। ৮০টির বেশি বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনা করেন। ১৯৪৪ সাল থেকে স্থায়ীভাবে মুম্বাইয়ে বসবাস শুরু করেন। সেখানকার চলচ্চিত্র ‘শিকারী’, ‘দেবদাস’, ‘সুজাতা’, ‘বন্দিনী আরাধনা’, ‘পিয়াসা’ প্রভৃতিতে সুরযোজন করেন। গ্রামোফোন রেকর্ডে প্রকাশিত তাঁর কণ্ঠসংগীতের সংখ্যা ১৩১, একক কণ্ঠে ১২৭টি ও মীরা দেববর্মনের সঙ্গে চারটি দ্বৈত সংগীতের রেকর্ড রয়েছে।

তবে স্ত্রী মীরা দেবীর সঙ্গে পরিচয়, প্রেম ও পরিণয় না হলে বুঝি এককভাবে শচীন দেববর্মন হয়ে উঠতে পারতেন না। কারণ ‘বর্ণে, গন্ধে, ছন্দে, গীতিতে’, ‘আমি টাকডুম টাকডুম বাজাই’, ‘কে যাস রে ভাটি গাঙ বাইয়া’, ‘শোনো গো দখিন হাওয়া প্রেম করেছি আমি’—এমন সব বহুলশ্রুত গানের গীতিকার হলেন মীরা দেববর্মন। তবে গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন শচীন দেববর্মন। ‘সরগমের নিখান’ বইয়ে তাঁর সংগীত সাধনা ও অভিজ্ঞতার কথা লিপিবদ্ধ করেছেন। সুরকার রাহুল দেববর্মন তাঁর ছেলে।

১৯০৬ সালের ১ অক্টোবর কুমিল্লায় জন্ম নেন শচীন দেববর্মন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত