Ajker Patrika

সে অনেক মজার ঈদ ছিল

জমিলা বেগম
আপডেট : ০২ মে ২০২২, ১৬: ৪৮
সে অনেক মজার ঈদ ছিল

ছোটবেলার ঈদ অনেক মজার ঈদ ছিল। এত রাজ্যের চিন্তা ছিল না নিজেদের। চিন্তা ছিল শুধু কীভাবে কী করব ঈদের দিন। 

ঈদের প্রস্তুতির কথা বলি। নতুন কাপড় ভাঁজ করে বালিশের কাছে রেখে তারপর চাঁদরাতে ঘুমাতাম। আব্বা সবাইকে একটা করে লাক্স সাবান দিতেন। সেই সাবানও বালিশের কাছে রাখতাম। ভোরের আজানের সময় ঘুম থেকে উঠতাম। সবাই সেই সাবান দিয়ে গোসল করার জন্য অস্থির হয়ে যেতাম। সেই ভোরে উঠে লাক্স সাবান দিয়ে গোসল করে তারপর আমরা নতুন জামা-কাপড় পরতাম। তখনকার নতুন কাপড় তো আর এখনকার মতো অনেক ছিল না। একটা বা দুইটা কাপড়ই হয়তো দেওয়া হতো বাড়ি থেকে। অথবা মামা একটি দিতেন, না হলে নানার পক্ষ থেকে একটা আসত। এই ছিল তখনকার নতুন কাপড়। সেই কাপড়গুলো এক দিন বা দুদিন লাগিয়ে কীভাবে পরব সে নিয়ে আমরা চিন্তা করতাম। 

সকালে উঠে দেখতাম আমার মা বড় বড় কড়াইতে সেমাই, খিচুড়ি—এসব রান্না করছেন। এখন যে নুডলস খাই আমরা, সে ধরনের একটা সেমাই রান্না করতেন আমার মা, সেই বড় কড়াইতে। আমার নানি মতলব থেকে হাতে বানানো সেমাই পাঠাতেন মায়ের কাছে। ঈদের দিন সকালে ওই সেমাই মা নারকেল দিয়ে রান্না করতেন। 

ফয়েল পেপারের মতো যে পেপার আছে, আব্বা সে পেপারে খুচরো বা ভাঙতি পয়সা মুড়িয়ে রাখতেন একটা প্লেটের ওপর। সেগুলো দিয়ে আসলে বাবা তখন সালামি দিতেন ঈদের দিন। সালামি ছিল আমাদের ছেলেবেলায় খুবই দারুণ একটা বিষয়। এখন তো ছেলেপেলে সালামি নিতে তেমন একটা যায় না। কিন্তু আমরা তখন যেতাম এ বাড়ি থেকে সে বাড়ি, কই কই যে যেতাম সালামি নিতে! পরিচিত সবার কাছে আমি যেতাম। সালাম করলেই টাকা পাব, সেটাই ছিল মূল কথা। তখন আরেকটা রেওয়াজ ছিল। ঈদের দিনে অনেকেই খাওয়াত মানুষকে। আমরা সেসব খাবার নিয়ে আসতাম এবং সেই সময় তারা ঈদের সালামি দিত। 

এখন আমাদের বয়স হয়ে গেছে। এখন কি আর সেই আনন্দ আছে! এখন বাচ্চাকাচ্চা কী খাবে, কী পরবে সে চিন্তাই করি। এখন সুস্থ থাকাই ঈদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত