ইফফাত গিয়াস আরেফিন
প্রশ্ন: আমি একজন সরকারি চাকরিজীবী। ২০১৬ সালে আমার বিয়ে হয়। চার বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। স্বামীর সঙ্গে অনেক দিন ধরেই বনিবনা হচ্ছে না। ছয় মাস ধরে আমার বাবার বাড়িতে আছি। স্বামীকে তালাক দিতে চাই। কিন্তু এ কথা বললেই তিনি সন্তানকে আমার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখাচ্ছেন। আমি জানতে চাই, যদি স্বামীকে তালাক দিই, তাহলে আসলেই কি তিনি আমার সন্তানকে নিয়ে যেতে পারবেন? সন্তানের কাস্টডি নিজের কাছে রাখতে আমার কী করতে হবে?
সামিরা সাদিক, আশুগঞ্জ।
উত্তর: অভিভাবকত্ব ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০-এর বিধান অনুযায়ী নাবালকের স্বাভাবিক এবং আইনগত অভিভাবক হলেন পিতা। তাঁর অনুপস্থিতিতে বা অভিভাবক হিসেবে অযোগ্যতায় মাতা অথবা আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োজিত ব্যক্তি নাবালকের শরীর ও সম্পত্তির অভিভাবক হতে পারেন।
তবে নাবালকের সার্বিক মঙ্গল ও কল্যাণের গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে তার জিম্মাদারির বিষয়ে বাংলাদেশে প্রচলিত মুসলিম আইন অনুযায়ী সন্তানের মাকে নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত সন্তানের জিম্মাদারির অধিকার দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ছেলেশিশুকে সাত বছর এবং
মেয়েশিশুকে বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত মাতা তাঁর জিম্মায় রাখার অধিকারী।
আপনার ক্ষেত্রে যেহেতু আপনার কন্যাসন্তানের বয়স চার বছর, তাই আপনি আপনার স্বামীকে ডিভোর্স দিলেও স্বামী আপনার সন্তানকে নিয়ে যেতে পারবেন না। আপনার মেয়ের অভিভাবক হয়তো আপনার স্বামীই থাকবেন। কিন্তু মেয়ের কাস্টডি থাকবে আপনার কাছে। এ ছাড়া আদালত কাস্টডি দেওয়ার সময় সন্তানের সার্বিক কল্যাণ, পার্থিব, নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক কল্যাণকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
তাই আপনার মেয়ের ১২ বছর বয়স হলেই যে বাবা তাকে আপনার কাছ থেকে নিয়ে যেতে পারবেন, তা নয়। আদালত আপনার মেয়ের সম্মতি জানতে চাইবেন এবং মেয়ের সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে ওঠার জন্য আদালত যদি মনে করেন, আপনার কাছেই সে ভালো থাকবে, তাহলে আপনার পক্ষেই কাস্টডি দেওয়া হবে।
অভিভাবকত্বের বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য। অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০-এর ১৯ ধারায় অভিভাবক হিসেবে পিতাও অযোগ্য হতে পারেন। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, যদি পিতা চারিত্রিকভাবে অসৎ হন, সন্তানের মাতা অর্থাৎ স্ত্রীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করেন, মাদকাসক্ত এবং অধার্মিক হন, শিশুদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করেন, প্রকাশ্যে লাম্পট্য করেন, দুস্থ অথবা নিঃস্ব হন অথবা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে এ-সংক্রান্ত কোনো চুক্তি থাকে এবং নাবালক সন্তানের ভরণপোষণ দিতে অবহেলা করেন।
একই কারণে আপনিও কাস্টডি বা জিম্মাদারি হারাতে পারেন যদি আপনি নীতিহীন জীবনযাপন করেন, সন্তানের প্রতি অবহেলা করেন ও দায়িত্ব পালনে অপারগ হন, সন্তানের পিতাকে আপনার জিম্মায় থাকা অবস্থায় দেখতে না দেন ইত্যাদি।
সন্তানকে কাছে রাখতে চাইলে আপনি আপনার স্বামীকে তালাক দেওয়ার সময়, আগে বা পরে, সন্তানের অভিভাবকত্ব, ভরণপোষণ, জিম্মাদারি এবং দেখা করার সময় ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর সঙ্গে একটি আপসনামা বা চুক্তি করতে পারেন। যদি আপনার স্বামী রাজি না
হন, সে ক্ষেত্রে আপনি পারিবারিক আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন।
বাংলাদেশে ফ্যামিলি কোর্ট অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৫-এর ৫ ধারামতে, সন্তানের কাস্টডির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার একচ্ছত্র এখতিয়ার পারিবারিক আদালতের।
গার্ডিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট, ১৮৯০-এর ১৭ ধারার বিধানমতে, নাবালক-নাবালিকা যে ধর্মীয় অনুশাসনের অধীন, সেই অনুশাসনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং তার সার্বিক কল্যাণের বিষয়টি বিবেচনা করে আদালত অভিভাবক নিয়োগ করবেন।
পরামর্শ দিয়েছেন, ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
প্রশ্ন: আমি একজন সরকারি চাকরিজীবী। ২০১৬ সালে আমার বিয়ে হয়। চার বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। স্বামীর সঙ্গে অনেক দিন ধরেই বনিবনা হচ্ছে না। ছয় মাস ধরে আমার বাবার বাড়িতে আছি। স্বামীকে তালাক দিতে চাই। কিন্তু এ কথা বললেই তিনি সন্তানকে আমার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখাচ্ছেন। আমি জানতে চাই, যদি স্বামীকে তালাক দিই, তাহলে আসলেই কি তিনি আমার সন্তানকে নিয়ে যেতে পারবেন? সন্তানের কাস্টডি নিজের কাছে রাখতে আমার কী করতে হবে?
সামিরা সাদিক, আশুগঞ্জ।
উত্তর: অভিভাবকত্ব ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০-এর বিধান অনুযায়ী নাবালকের স্বাভাবিক এবং আইনগত অভিভাবক হলেন পিতা। তাঁর অনুপস্থিতিতে বা অভিভাবক হিসেবে অযোগ্যতায় মাতা অথবা আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োজিত ব্যক্তি নাবালকের শরীর ও সম্পত্তির অভিভাবক হতে পারেন।
তবে নাবালকের সার্বিক মঙ্গল ও কল্যাণের গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে তার জিম্মাদারির বিষয়ে বাংলাদেশে প্রচলিত মুসলিম আইন অনুযায়ী সন্তানের মাকে নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত সন্তানের জিম্মাদারির অধিকার দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ছেলেশিশুকে সাত বছর এবং
মেয়েশিশুকে বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত মাতা তাঁর জিম্মায় রাখার অধিকারী।
আপনার ক্ষেত্রে যেহেতু আপনার কন্যাসন্তানের বয়স চার বছর, তাই আপনি আপনার স্বামীকে ডিভোর্স দিলেও স্বামী আপনার সন্তানকে নিয়ে যেতে পারবেন না। আপনার মেয়ের অভিভাবক হয়তো আপনার স্বামীই থাকবেন। কিন্তু মেয়ের কাস্টডি থাকবে আপনার কাছে। এ ছাড়া আদালত কাস্টডি দেওয়ার সময় সন্তানের সার্বিক কল্যাণ, পার্থিব, নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক কল্যাণকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
তাই আপনার মেয়ের ১২ বছর বয়স হলেই যে বাবা তাকে আপনার কাছ থেকে নিয়ে যেতে পারবেন, তা নয়। আদালত আপনার মেয়ের সম্মতি জানতে চাইবেন এবং মেয়ের সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে ওঠার জন্য আদালত যদি মনে করেন, আপনার কাছেই সে ভালো থাকবে, তাহলে আপনার পক্ষেই কাস্টডি দেওয়া হবে।
অভিভাবকত্বের বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য। অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০-এর ১৯ ধারায় অভিভাবক হিসেবে পিতাও অযোগ্য হতে পারেন। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, যদি পিতা চারিত্রিকভাবে অসৎ হন, সন্তানের মাতা অর্থাৎ স্ত্রীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করেন, মাদকাসক্ত এবং অধার্মিক হন, শিশুদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করেন, প্রকাশ্যে লাম্পট্য করেন, দুস্থ অথবা নিঃস্ব হন অথবা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে এ-সংক্রান্ত কোনো চুক্তি থাকে এবং নাবালক সন্তানের ভরণপোষণ দিতে অবহেলা করেন।
একই কারণে আপনিও কাস্টডি বা জিম্মাদারি হারাতে পারেন যদি আপনি নীতিহীন জীবনযাপন করেন, সন্তানের প্রতি অবহেলা করেন ও দায়িত্ব পালনে অপারগ হন, সন্তানের পিতাকে আপনার জিম্মায় থাকা অবস্থায় দেখতে না দেন ইত্যাদি।
সন্তানকে কাছে রাখতে চাইলে আপনি আপনার স্বামীকে তালাক দেওয়ার সময়, আগে বা পরে, সন্তানের অভিভাবকত্ব, ভরণপোষণ, জিম্মাদারি এবং দেখা করার সময় ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর সঙ্গে একটি আপসনামা বা চুক্তি করতে পারেন। যদি আপনার স্বামী রাজি না
হন, সে ক্ষেত্রে আপনি পারিবারিক আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন।
বাংলাদেশে ফ্যামিলি কোর্ট অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৫-এর ৫ ধারামতে, সন্তানের কাস্টডির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার একচ্ছত্র এখতিয়ার পারিবারিক আদালতের।
গার্ডিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট, ১৮৯০-এর ১৭ ধারার বিধানমতে, নাবালক-নাবালিকা যে ধর্মীয় অনুশাসনের অধীন, সেই অনুশাসনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং তার সার্বিক কল্যাণের বিষয়টি বিবেচনা করে আদালত অভিভাবক নিয়োগ করবেন।
পরামর্শ দিয়েছেন, ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
জয়পুরহাট ও দিনাজপুরে নারী ফুটবল ম্যাচ আয়োজনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা এবং ম্যাচ বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। একই সঙ্গে অবিলম্বে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।
১ দিন আগেদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে যে সুফল পাওয়া যায়, সেই জায়গায় তাঁরা পিছিয়ে আছেন এখনো। যেমন এখন অনলাইনে সরকারি বিভিন্ন কাজ, কেনাকাটা, আর্থিক লেনদেন করা যায়। কিন্তু সঠিক তথ্য ও ব্যবহারের অভাবে প্রান্তিক নারীরা এসব সুবিধা নিতে পারছ
৩ দিন আগেকোভিড ইফেক্ট তাঁকেও আক্রান্ত করেছিল। উচ্চশিক্ষিত খাদিজা ভালো বেতনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। কোভিডকালে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা ভালো যাচ্ছিল না। সে সময় খাদিজা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। নিয়মমাফিক অফিস থেকে ছুটি চাইলে অফিস জানিয়ে দিল, চাকরিটা ছেড়ে দিতে পারেন। খাদিজা চাকরিটা ছেড়ে দিলেন। খাদিজা জা
৩ দিন আগেবাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং লৈঙ্গিক সমতা নিশ্চিত করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ইউএন উইমেন নতুন এক অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ঢাকার ইইউ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই চুক্তির আওতায় ৪ দশমিক ৮ মিলিয়ন ইউরো বা প্রায় ৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই অর্থ জনপরিসর, কর্মক্ষেত্র এবং উচ্চশিক্
৩ দিন আগে