Ajker Patrika

যেন থেমে না যায় সাফল্যের যাত্রা

দেখতে দেখতে বিদায়ের ঘণ্টা বাজছে ২০২৪ সালের। বরাবরের মতো এ বছরটাও শেষ হচ্ছে নানা প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, আশা-হতাশা আর অর্জনের মধ্য দিয়ে। দেশে এবং দেশের বাইরে আমাদের নারীরা সম্মানিত হয়েছেন মানবতা, জ্ঞান, দর্শন, বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের কাজ দিয়ে। লিখেছেন কাশফিয়া আলম ঝিলিক

কাশফিয়া আলম ঝিলিক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক সম্মান

সুলতানি আমলের স্থাপত্যরীতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০১২ সালে নির্মিত ঢাকার বায়তুর রউফ মসজিদের নকশা করেছিলেন মেরিনা তাবাসসুম। এ জন্য এ বছর টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী মানুষের মধ্যে একজন হয়ে উঠেছেন তিনি। এ জন্য ৮ ডিসেম্বর জনপ্রিয় অনলাইন ম্যাগাজিন ‘ডিজেন’ কর্তৃক ‘ডিজেন আর্কিটেক্ট অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারে ভূষিত হয় মেরিনার প্রতিষ্ঠান ‘মেরিনা তাবাসসুম আর্কিটেক্টস’। প্রতিষ্ঠানটি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি দেশের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে।

আর্কিটেকচারে মর্যাদাপূর্ণ ইন্সপাইরেলি পুরস্কার জিতেছেন সারাফ নাওয়ার। তাঁর প্রকল্পের নাম ‘টেল অব অ্যান ওশান: ওশানেরিয়াম কমপ্লেক্স অ্যাট সোনাদিয়া’। প্রকল্পটি স্থাপত্যের মাধ্যমে পরিবেশের স্থিতিশীলতার কথা বলে।

প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছেন কুড়িগ্রামের রিকতা আখতার বানু লুৎফা। চিলমারীর এই নারী নিজের সর্বস্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন রিকতা আখতার বানু (লুৎফা) বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়। সেখানে এখন তিন শর বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এ কাজের জন্য রিকতা বিবিসির ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছেন।

প্রতিকূলতা ও অধ্যবসায়

এ বছর আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে দেশের প্রথম নারী রোবোটিকস দল কোড ব্ল্যাক। এর সদস্যরা সবাই উচ্চমাধ্যমিক স্তর থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে সবে উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের প্রথম ও একমাত্র নারী রেসিং ড্রাইভার হিসেবে ইতিহাস গড়েছেন কাশফিয়া আরফা। ভিয়েতনামের ভিনফিউচার স্পেশাল প্রাইজ পেয়েছেন বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরী। কলেরা, টাইফয়েড ও হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের (এইচপিভি) সুলভ মূল্যের টিকা উদ্ভাবনে অবদান রাখায় তাঁকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

দেশে এখনো বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়নি। বাগেরহাটের প্রজাপতি স্কোয়াডের কিশোরীরা বাল্যবিবাহ বন্ধে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে যাচ্ছে। নারীদের প্রতি হওয়া সব ধরনের বৈষম্যের অবসান চায় এই প্রজাপতিরা। এই দলের নুশরাত ইসলাম তৃষা এ বছর মনোনীত হয়েছিলেন আন্তর্জাতিক শিশুশান্তি পুরস্কারের জন্য।

জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ব্যবহার করে ‘ফায়ারফ্লাই স্পার্কল’ নামের একটি নতুন গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের এই দলে রয়েছেন বাংলাদেশি জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. লামিয়া আশরাফ মওলা।

নিভৃতচারিণী

নিভৃতচারী হয়ে কাজ করছেন কুতুবদিয়ার শারমীন আক্তার। তিনি গ্রামের নারীদের জন্য মৌলিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, আয়বর্ধনমূলক বিভিন্ন কার্যক্রমে তাঁদের অংশগ্রহণ, বসতবাড়িতে শাকসবজি চাষ, সঞ্চয় ও পুষ্টি বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে চলেছেন। জুলাই মাসের উত্তাল আন্দোলনের দিনেও থেমে থাকেননি অর্থী জুখরীফের মতো চিকিৎসকেরা। পুলিশের গাড়ির সামনে রুখে দাঁড়াতে একবারও বুক কাঁপেনি নুসরাত জাহান টুম্পার মতো শিক্ষার্থীদের। বাইসাইকেলে চেপে ৬৪ জেলা ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েছেন কুমিল্লার মেয়ে তানজিনা মিতু। এদিকে নেপালের লাংটা হিমালয়ের তিনটি পর্বতের শিখর আরোহণ অভিযানে গেছেন দেশের পাঁচ নারী পর্বতারোহী। পর্বতারোহী নিশাত মজুমদারের নেতৃত্বে ‘সুলতানাজ ড্রিম অনবাউন্ড’ নামের এই অভিযানে অংশগ্রহণকারী অন্য সদস্যরা হলেন পর্বতারোহী ইয়াসমিন লিসা, তাহেরা সুলতানা রেখা, ট্রেকার এপি তালুকদার ও অর্পিতা দেবনাথ।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প হিসেবে কৃষি ও মৎস্য খাত ছাড়া খাদ্য প্রক্রিয়াজাত, ফ্যাশন ও সৌন্দর্য পণ্য, স্বাস্থ্যবিষয়ক পণ্য এবং অনলাইন ব্যবসায় তৈরি হয়েছে অনেক নারী উদ্যোক্তা। পাশাপাশি গার্মেন্টস ও অ্যাকসেসরিজ, বিউটি পারলার, টেইলারিং, রিটেইল শপ, আইটি, ইলেকট্রনিকস, সফটওয়্যার, পাটজাত পণ্য এবং হ্যান্ডিক্র্যাফটস খাতেও নারীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

সহিংসতার শেষ কোথায়

অর্জন, প্রাপ্তি আর সম্ভাবনার গল্পের সমান্তরালে বয়ে চলেছে সহিংসতা ও নির্যাতনের ধারা। বাধা পেরিয়ে যাঁরা এগিয়ে গেছেন তাঁদের জন্য শুভকামনা থাকলেও যাঁরা পিছিয়ে পড়ছেন, হারিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের কথা ভুলে গেলে চলবে না। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জানিয়েছে, বিগত ১১ মাসে নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন ২ হাজার ৩৬২ জন নারী ও কন্যাশিশু। বেশি সহিংসতা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে জুন মাসে। সংখ্যাটা ২৯৭ জন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১১৬ জন।

ধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতন কিংবা খুনের মতো বিষয়গুলো নারীদের পিছিয়ে দেওয়ার অন্যতম কারণ। এতে তৈরি হয় সামষ্টিক ভীতি। এ থেকে উত্তরণ প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারীর বৈতনিক ও অবৈতনিক কর্মঘণ্টা কত

ফিচার ডেস্ক
ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

বিশ্বজুড়ে অনেক দেশে নারী ও পুরুষের কাজের সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পার্থক্য দেখা যায়। তবে এই পার্থক্য সরাসরি আইনি বাধ্যবাধকতার ফল নয়; বরং এটি মূলত গভীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণের প্রতিফলন। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো উন্নত দেশগুলোতে, নারীরা পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি হারে খণ্ডকালীন কাজ করেন। এর ফলে, গড়ে তাঁদের প্রতি সপ্তাহে বেতনভুক্ত কাজের সময় পুরুষের তুলনায় কম হয়। তবে এটি কোনো আইনের কারণে হয়নি। আইন দিয়ে যা করা হয়েছে, তা আফগানিস্তানে। সেটি অবশ্য নারীদের জন্য নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা নয়, বরং নারীদের ঘরের বাইরে কাজ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে প্রায় ২৮ শতাংশ কর্মজীবী ​​নারী খণ্ডকালীন কাজ করেন। যেখানে পুরুষের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ৮ শতাংশ। সেই পরিসংখ্যান থেকে হিসাব করলে বলা যায়, নারীদের কর্মঘণ্টা কম। তবে তা লৈঙ্গিক হিসাবের কারণে নয়। এই পার্থক্যের প্রধান কারণ হলো সামাজিক রীতিনীতি ও ঐতিহ্যগত লৈঙ্গিক ভূমিকা। সমাজ ও পরিবারে যত্নের দায়িত্ব নারীদের ওপর বর্তানোর কারণে কর্মক্ষেত্রে নারীরা নমনীয়তা বা কম সময়ের কাজের পথ বেছে নিতে বাধ্য হন। এ ছাড়া করকাঠামো এবং শ্রমবাজারের নীতিগুলোও নারী ও পুরুষের কাজের সিদ্ধান্তকে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করতে পারে। যে মহাদেশ বা অঞ্চলে শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা ও পারিবারিক দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে, সেখানে সামগ্রিকভাবে উভয় লিঙ্গের জন্যই কম বেতনভুক্ত কাজের সময় দেখা যায়।

এশিয়ার কিছু দেশ; যেমন ঐতিহাসিকভাবে দক্ষিণ কোরিয়া বা বড় অনানুষ্ঠানিক খাত রয়েছে এমন দেশগুলোতে, পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য খুব উচ্চ বার্ষিক বেতনভুক্ত কাজের হার দেখা যায়। ফ্রান্স, ডেনমার্ক বা নরওয়ের মতো কিছু ইউরোপীয় দেশে সাধারণত পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য প্রতি সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৩৯ কর্মঘণ্টা প্রচলিত। তবে নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে নারী কর্মীদের একটি বড় অংশ প্রতি সপ্তাহে ৩০ ঘণ্টার কম কাজ করেন। উত্তর আমেরিকায়; যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, পূর্ণকালীন কর্মরত নারীরা পুরুষদের তুলনায় গড়ে দৈনিক সামান্য কম ঘণ্টা কাজ করেন। যেমন নারীদের জন্য প্রতিদিন ৭ দশমিক ৯ ঘণ্টা এবং পুরুষদের জন্য ৮ দশমিক ৪ ঘণ্টা প্রচলিত আছে।

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিশ্বজুড়ে নারীরা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি সময় অবৈতনিক কাজে; যেমন গৃহস্থালি, সন্তান ও আত্মীয়দের যত্নের পেছনে ব্যয় করেন। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের ২০২৪ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ২০২৩ সালের তথ্যের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ৭৪৮ মিলিয়ন মানুষ পরিচর্যার দায়িত্বের কারণে শ্রমবাজারের বাইরে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৭০৮ মিলিয়ন নারী। এতে অঞ্চলভিত্তিক; যেমন উত্তর আফ্রিকা, আরব রাষ্ট্র, ইউরোপের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে, গড়ে পুরুষদের তুলনায় প্রতিদিন প্রায় আড়াই গুণ বেশি সময় ঘরোয়া ও পরিচর্যার কাজে সময় ব্যয় করেন নারীরা। যখন এই অবৈতনিক সময়কে বেতনভুক্ত কাজের সময়ের সঙ্গে যোগ করা হয়, তখন দেখা যায়, নারীরা পুরুষের চেয়ে সামগ্রিকভাবে বেশি ঘণ্টা কাজ করেন। তবে সেই কর্মঘণ্টার কোনো অর্থমূল্য হয় না। হোক তা ইউরোপ, আফ্রিকা, আমেরিকা কিংবা এশিয়া।

কাজের সময়ের এই লৈঙ্গিকভিত্তিক পার্থক্য মূলত নারীর ওপর অবৈতনিক যত্নের কাজের অস্বাভাবিক বোঝা এবং সামাজিক প্রত্যাশার ফল, যা তাঁদের বেতনভুক্ত কাজের ধরনকে প্রভাবিত করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শিখতে ও শেখাতে ভালোবাসেন মুক্তা

কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা 
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ১৫
আফরোজা খানম মুক্তা
আফরোজা খানম মুক্তা

‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র/ নানান ভাবের নতুন জিনিস, শিখছি দিবারাত্র।’ কবি সুনির্মল বসুর এই কবিতা সবাই পড়েছি ছোটবেলায়। তবে শিখতে পারার এই আনন্দ সবাই উপলব্ধি করতে পারেন না। কিন্তু যাঁরা পারেন, তাঁরা নিজেকে একটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে সফল হন যেকোনোভাবেই। তেমনই একজন মানুষ আফরোজা খানম মুক্তা।

ছোটবেলা থেকে হস্তশিল্প শেখার আগ্রহ তাঁর মায়ের কাজ দেখে। এখনো নতুন নতুন জিনিস তৈরি করা শিখে চলেছেন তিনি। কখনো কাপড়ের ফুল, কখনো চকলেট কিংবা সাবান। ৩০ বছর ধরে নিজের বাড়ির নিচতলায় শৌখিন কারুশিল্প নামের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা করছেন তিনি। দু-তিন শিফটে এক শ থেকে দেড় শ শিক্ষার্থী তাঁর কাছে মোম, ব্লক, বাটিক, সাবান তৈরি এবং পুঁতির বিভিন্ন কাজ শেখেন।

হাতেখড়ি ছোটবেলায়

মুক্তা যখন ক্লাস সেভেনে পড়েন, তখন সাটিনের কাপড় দিয়ে ফুল বানানো শিখেছিলেন। তাঁর বড় বোনের বান্ধবীরা সেই সময় তাঁর কাছে এই ফুল বানানো শিখতে আসেন। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লেখাপড়ার পাশাপাশি নতুন নতুন কাজ শেখা শুরু করেন বিসিক থেকে। ১৯৯১ সালের দিকে মোটামুটি দক্ষ হয়ে ওঠেন মুক্তা। তাঁর বাবা সুইডেন দূতাবাসে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে একবার রাষ্ট্রদূত আসেন তাঁদের বাসায়। তিনি মুক্তার কাজ দেখে প্রশংসা করেন। বিষয়টি তাঁকে আরও উৎসাহিত করে তোলে।

ধীরে ধীরে বিসিক এবং যুব উন্নয়নে বিভিন্ন সরকারি কোর্স করতে থাকেন মুক্তা। একবার বোনের চিকিৎসার জন্য বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন। সেখান থেকে চায়না পুঁতি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফল-ফুল তৈরির কাজ শিখে আসেন! নিজে অনুশীলন করে বারো রকমের ফল বানানো শিখে ফেলেন মুক্তা।

শেখার জন্য দেশ থেকে বিদেশে

মুক্তা বলছিলেন জাপানি টাইডাই শেখার কথা। যে সময় তিনি এই কাজ শেখেন, তখন দেশে জাপানি টাইডাইয়ের কাজ হতো না বললেই চলে। তাদের কাজ করার কৌশল শিখে ফেলেন মুক্তা। ডাক আসে, টেলিভিশনে শেখাতে হবে। ২২ দিনের একটা অনুষ্ঠানে তিনি জাপানি টাইডাই শেখান টেলিভিশনের পর্দায়। মুক্তা বলেন, ‘আমি যখনই কোনো কিছু শিখেছি, সেখানে একটা নিজস্বতা রাখার চেষ্টা করেছি। সর্বোচ্চটা শেখার চেষ্টা করেছি, যেন কাজটা নিখুঁত হয়। এই ধৈর্য আমি সব সময় রাখি।’

ভারতে গিয়ে লীনা বসাকের কাছে ডিসকভারি মোমের কাজ শেখেন। সেই কাজ দেখেও মুগ্ধ হয়েছেন অনেকে। অরগানিক সাবান তৈরি শেখার জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে মুক্তাকে।

এ ধরনের সাবান তৈরি শিখতে তিনি গিয়েছিলেন ভারতে। সেখানে থাকাকালীন দুর্ঘটনায় আহত হন। ফিরে আসার আগে পাঁচ দিনের ক্লাসে ১২ ধরনের সাবান তৈরি শিখে তবেই ফিরেছিলেন দেশে। বর্তমানে তিনি ২২ ধরনের সাবান তৈরি করছেন।

বসে থাকা নয়, কাজ করতে ভালোবাসেন

নিজের পরিচয় তৈরি করার একটা তাগিদ সব সময় তাড়া করে ফেরে আফরোজা খানম মুক্তাকে। তিনি কাজ করেন, কাজ শেখান আসলে নিজের জন্যই। ‘একজনকে শেখাতে হবে’—এ কারণেই তিনি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জিনিস শেখার চেষ্টা করেন। মুক্তা নিজে যেমন কোর্স করে শিখেছেন, তেমনই রান্না ও হস্তশিল্পের বিভিন্ন কোর্সে ক্লাসও নিয়েছেন। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন কোর্স করানোর সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি।

‘রান্নার একাল সেকাল’ নামের একটি ফেসবুক পেজে নিজের বিভিন্ন ধরনের রেসিপি প্রকাশ করেন মুক্তা। শিক্ষার্থীদের আগ্রহ এবং কাজের প্রতি ভালোবাসা দেখে নতুন করে একটি কাজ শেখার আগ্রহ তৈরি হয় মুক্তার ভেতর। তিনি জানান, এমন অনেক মেয়ে আছে, যারা অর্থের কারণে কোর্স করতে পারে না। তাদের জন্য তিনি সরকারি কোর্সের কথা বলেন। তাতে টাকার দরকার নেই।

নিজের মতো তৈরি করা

প্রতিটি কাজে নিজস্বতার ছাপ রাখতে চান মুক্তা। তাই মন দিয়ে কাজের পাশাপাশি নিজের সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটান তিনি। এতে তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে যান বলে বিশ্বাস করেন। ১০ থেকে ১২ বছর আগে ভারতে গিয়ে শিখেছিলেন চকলেট তৈরি করা। এরপর দেশে ফিরে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন মোল্ড কিনেছেন। এর ফলে তাঁর তৈরি চকলেটে এসেছে ভিন্নতা। তা দেখে অনেকে চমকে গিয়েছিল। একটি ডাল প্রতিযোগিতায় তিনি খেসারির ডালের পরোটা বানিয়ে মুগ্ধ করেছিলেন বিচারকদের। সেই রেসিপি

ও পরোটার পুষ্টিগুণ সম্পর্কেও জানিয়েছিলেন তাঁদের। সে জন্য পরামর্শ নিয়েছিলেন পুষ্টিবিদের।

মুক্তার এমন চিন্তা তাঁর শিল্পকে আরও নিখুঁত করে দেয়। সম্প্রতি চা-বাগানে গিয়ে চা ভর্তার সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন তিনি। সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করেছেন চা-পাতার পরোটা! মুক্তা বলেন, ‘যদি আবারও কোনো দিন সেই চা-শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা হয়, তাহলে তাঁদের বলব, এভাবে বানিয়েও তাঁরা খেতে পারেন।’

শুধু শিখে নয়, শিখিয়েও আনন্দ

‘কাজ করতে গিয়ে অনেক কিছু দেখেছি, শিখেছি।’

এ যেন মুক্তার জীবনের বিশাল গল্পের সারমর্ম। শুধু ব্লক-বাটিক নয়; একজন মানুষের শিখতে চাওয়া, সুযোগের অভাবে পিছিয়ে যাওয়ার অনেক গল্প কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। ফলে তিনি অন্য নারীদের শেখার পথ সহজ করতে চান। তাই সুযোগ পেলেই মুক্তা এমন প্রশিক্ষণে অংশ নেন, যেন অন্যদের নতুন কিছু শেখাতে পারেন। মুক্তা বলেন, ‘যারা আমার মতো শিখতে আগ্রহী, তাদের জন্য আমি নিজেকে উন্মুক্ত রেখেছি।’

এ যেন এক নিরন্তর শিখে চলার গল্প, শেখানোর গল্প। অন্যকে সামনের দিকে নেওয়ার গল্প।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিজেকে সময় দিন

ডা. ফারজানা রহমান 
ডা. ফারজানা রহমান
ডা. ফারজানা রহমান

প্রশ্ন: আমি একজন কর্মজীবী নারী। একজনের সঙ্গে আমার ৮ বছরের সম্পর্ক ছিল। তিন মাস আগে সেই প্রেমিকের ইচ্ছায় আমাদের বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের মানসিক ধকল আমি এখনো পুরোপুরি সামলে উঠতে পারিনি। অথচ আমি এই সম্পর্কে যেতে চাইনি। আমাকে সে ইমোশনাল কথাবার্তা বলে সম্পর্ক তৈরি করেছিল। আমাকে ছাড়া বাঁচবে না; এমন কথা বলেছিল। অথচ সেই মানুষটি আমাকে ছেড়ে চলে গেল। আমাদের বিচ্ছেদ হওয়ার তিন-চার মাস আগে সে আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।

বিচ্ছেদের পর কীভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায়? যাদের এ রকম দীর্ঘদিনের সম্পর্কের বিচ্ছেদ হয়, তারা কি পরবর্তী জীবনে সুখী আছেন?

ইরা, কুষ্টিয়া।

উত্তর: আমি মনে করি, আপনি সৌভাগ্যবান। সেটি দুটি কারণে—আপনি কর্মজীবী আর সম্পর্কটা বিয়ের পর্যায়ে যাওয়ার আগেই শেষ হয়েছে। আমি আপনার মধ্যে ব্যক্তিত্ব ও পরিমিত রুচিবোধের পরিচয় পাচ্ছি। আপনি কিন্তু আপনার প্রাক্তনের আবেগকে প্রাধান্য দিতেই সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। তিনি সম্ভবত কোনো বিষয়ে তেমন সিরিয়াস নন। এ রকম কিছু মানুষ থাকে, এদের সঙ্গে সম্পর্ক এমনিতেও দীর্ঘস্থায়ী হয় না। বিচ্ছেদের পর স্বাভাবিক জীবনে আসতে হলে, মন থেকে এই ভালোবাসার অধ্যায়ের ইতি এখানেই টানুন। নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করুন। নিজের যা অর্জন, সেগুলোর মূল্যায়ন করুন।

যে মানুষটি আট বছরের সম্পর্ককে গুরুত্ব না দিয়ে মাত্র তিন মাসের ভালোবাসাকে গুরুত্ব দেয়, তাঁর কথা চিন্তা করে আপনি আর একমুহূর্তও নষ্ট করবেন না। তবে প্রাক্তনকে ভুলতে গিয়ে এখনই বিয়ে কিংবা নতুন কোনো সম্পর্কে জড়ানো ঠিক হবে না। শুধু নিজেকে সময় দিন; সময় নিন।

এমন অনেককে খুব কাছ থেকে আমি দেখেছি, যাঁরা বিচ্ছেদের পর খুব ভালো আছেন। এ ক্ষেত্রে আপনার কোনো ভুল নেই, দোষও নেই।

যে মানুষটি আট বছরের সম্পর্ককে গুরুত্ব না দিয়ে মাত্র তিন মাসের ভালোবাসাকে গুরুত্ব দেয়, তাঁর কথা চিন্তা করে আপনি আর একমুহূর্তও নষ্ট করবেন না। তবে প্রাক্তনকে ভুলতে গিয়ে এখনই বিয়ে কিংবা নতুন কোনো সম্পর্কে জড়ানো ঠিক হবে না। নিজেকে সময় দিন; সময় নিন। পেশাগত জীবনের পাশাপাশি আপনার পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন। আমি নিশ্চিত, একজনের কথা এবং আবেগসর্বস্ব মানুষের ভালোবাসার অভিনয় থেকে মুক্তি পেয়ে আপনি স্বস্তি ও শান্তি ফিরে পাবেন। একটু বুঝেশুনে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে আপনি অবশ্যই পরবর্তী জীবনে সুখী হবেন।

পরামর্শ দিয়েছেন

ডা. ফারজানা রহমান

সহযোগী অধ্যাপক

মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বন রক্ষা করছে নারীদের দল

ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ডের লাম্পাং প্রদেশে একদল নারী স্থানীয় বন রক্ষা এবং পুনরুদ্ধারে অনন্য ভূমিকা রাখছেন। এই উদ্যোগের নেতৃত্বে আছেন রাচাপ্রাপা কামফুদ। তিনি বান পং কমিউনিটি ফরেস্ট অ্যান্ড ফায়ার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের প্রধান। গ্রুপটি মূলত বন পুনর্গঠন ও আগুন প্রতিরোধে কাজ করছে।

বনের সম্পদ ও স্থানীয় জীবিকা

বান পংয়ের বন থেকে গ্রামবাসী পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের খাবারের উপযোগী বনজ সম্পদ। সেখানে পাওয়া যায় টার্মাইট মাশরুম, বাঁশের কচি অংশ, নানা ধরনের পাতাযুক্ত সবজি, এমনকি লাল পিঁপড়ার ডিম। রাচাপ্রাপা জানান, এসব পণ্য স্থানীয় বাজারে ভালো দামে বিক্রি হয়। এটা গ্রামের মানুষের জন্য বাড়তি আয়ের উৎস।

গ্রুপটি বনকে আগুনমুক্ত রাখার পাশাপাশি মাশরুম চাষ করছে আগুন ছাড়াই। আগে অনেক এলাকায় মানুষ শুকনো পাতা পুড়িয়ে মাশরুম জন্মানোর চেষ্টা করত। তাতে প্রায়ই বনে আগুন লেগে যাওয়ার ঘটনা ঘটত। কিন্তু বান পংয়ে চেক ড্যাম ব্যবহার করে বনভূমির মাটি আর্দ্র রাখা হয়। এতে পাতাগুলো প্রাকৃতিক সার হিসেবে কাজ করে এবং গাছ দ্রুত ও স্বাস্থ্যবান হয়ে বেড়ে ওঠে।

চেক ড্যামের ভূমিকা

রাচাপ্রাপা ও তাঁর দল ২০০৭ সালে ৪০ হাজার ১০০ একর এলাকার বন পুনরুদ্ধার শুরু করে। এর আগে এই জমি ছিল চিনাবাদামের খেত। তাঁরা স্থানীয় প্রজাতির গাছ রোপণ করেছেন এবং তিন শর বেশি চেক ড্যাম তৈরি করেছেন। এগুলো পাথর, কংক্রিট ও মাটির সংমিশ্রণে তৈরি ছোট বাঁধের মতো কাঠামো। এই চেক ড্যামগুলো ছোট নদী ও পানির স্রোত ধরে রাখে, মাটিতে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনে। এতে প্রাকৃতিকভাবে বন পুনরুজ্জীবিত হয়।

নারী নেতৃত্বে বন রক্ষাকারী দল

রাচাপ্রাপার গ্রুপে ১০ জন সদস্যের ৮ জনই নারী। তাঁরা নিয়মিত বনে টহল দেন। এ ছাড়া আগুন প্রতিরোধে ফায়ারব্রেক তৈরি করে এবং ওয়াকিটকি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে আগুনের খবর দ্রুত ছড়িয়ে দেন। রাচাপ্রাপা বলেন, ‘স্থানীয় মানুষ প্রথম নারীদের বনে আগুন নেভাতে দেখে অবাক হতেন। কিন্তু দক্ষতা দেখার পর আমাদের প্রতি তাঁদের সম্মান বেড়ে গেছে।’

বনের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক

রাচাপ্রাপা বলেন, ‘আমরা যখন বন রক্ষা করি, বনও তখন আমাদের রক্ষা করে।’ চেক ড্যামের কারণে বনভূমিতে আর্দ্রতা ফিরে এসেছে। গ্রামে থাকা হ্রদগুলো এখন সারা বছর পানি ধরে রাখে। এতে মাছ চাষ এবং কৃষিকাজের সুযোগ বেড়েছে। হ্রদে মাছ চাষের মাধ্যমে এখন ৬০ জনের বেশি মানুষ আয়ের সঙ্গে যুক্ত।

প্রাকৃতিক জীবন এবং বন্য প্রাণী

বন পুনরুদ্ধারের ফলে বন্য প্রাণীর বিচরণও বেড়েছে। গ্রুপের সদস্যরা জানান, এখানে নিয়মিত দেখা যায় বন্য শূকর, হরিণ, কাঠবিড়ালি, টিকটিকি, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। বন পুনর্গঠন শুধু অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়নি, এর সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে এনেছে।

রাচাপ্রাপা কামফুদ
রাচাপ্রাপা কামফুদ

নারীর নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণ

বান পংয়ের উদাহরণ প্রমাণ করছে, নারীর নেতৃত্বে বন রক্ষা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ কতটা কার্যকর হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নারীরা বন ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হলে এর ফল অনেক বেশি ইতিবাচক হয়, বন সুস্থ থাকে, প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষিত হয়। এর সঙ্গে স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা ও জীবিকা উন্নত হয়। নারীরা বন সংরক্ষণে সক্রিয় ভূমিকা নিলে দীর্ঘ মেয়াদে পুরো সম্প্রদায় উপকৃত হয়।

প্রশংসা এবং সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতা

বান পং এখন থাইল্যান্ডের অন্যান্য গ্রাম এবং বিদেশি সংস্থাগুলোর কাছে এক অনন্য উদাহরণ। তাদের সফল উদ্যোগ এবং নারী নেতৃত্বে পরিচালিত বন ও অগ্নিনিরোধ কর্মসূচি অন্য সম্প্রদায়কে অনুপ্রাণিত করছে। বান পংয়ের সদস্যরা স্থানীয় মানুষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, বন পুনরুদ্ধার এবং আগুন প্রতিরোধের কৌশল শেখাচ্ছেন এবং হাতেকলমে কাজের মাধ্যমে তাঁদের অভিজ্ঞতা ভাগ করছেন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বান পং কমিউনিটি ফরেস্ট অ্যান্ড ফায়ার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ শুধু নিজেদের বন রক্ষা করছে না, এর সঙ্গে আশপাশের গ্রামগুলোর বন রক্ষা এবং টেকসই জীবিকা নিশ্চিতে সাহায্য করছে।

সূত্র: মঙ্গাবে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত