কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
তখনো স্নাতক শেষ হয়নি তাঁর। ইচ্ছা হলো, ব্যবসায়ী বাবার প্রতিষ্ঠানে কাজ করবেন। গেলেন বাবার সঙ্গে কথা বলতে। বাবা বললেন, আগে অন্য কোথাও কাজ শিখে এসো। এরপর তিনি নামলেন চাকরির খোঁজে। সে যাত্রা শুরু ১৯৯৬ সালে। ওই বছরই কাজ পান একটি প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানে। এরপর আর বাবার প্রতিষ্ঠানের হাল ধরা হয়নি। কিন্তু বিভিন্ন সময় হাল ধরেছেন নানা প্রতিষ্ঠানের। বর্তমানে কাজ করছেন গ্রামীণফোনের চিফ হিউম্যান রিসোর্সেস অফিসার (সিএইচআরও) হিসেবে।
তাঁর নাম সৈয়দা তাহিয়া হোসেন। বাবার ওপর অভিমান করে নয়, নিজের ইচ্ছায় থেকে গেছেন মানবসম্পদ বিভাগে। গ্রামীণফোন হেডকোয়ার্টার্সে বসে তাহিয়ার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। শুধু গ্রামীণফোনে নয়, হেড অব এইচআর হিসেবে এর আগে কাজ করেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। স্বল্পভাষী তাহিয়া অল্প কথায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, কাজের জায়গায় তিনি কতটা সাবলীল।
যাত্রা শুরুর গল্প
গ্রামীণফোনের আগে তাহিয়া কাজ করতেন চকলেট প্রস্তুতকারক একটি ডাচ প্রতিষ্ঠানে। সেখানে কাজ করেছেন চার বছর। তাহিয়া জানান, জীবনে প্রথম ইন্টারভিউ বোর্ডে, কী করতে চান—এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মানুষের জন্য, মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই।’ প্রথম চাকরিতে ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পরামর্শে হিউম্যান রিসোর্সে কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর মানব প্রশাসনে কাজ করার দীর্ঘ যাত্রা শুরু হয় তাহিয়া হোসেনের। কাজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, ‘ব্যবসার পাশাপাশি এইচআর প্র্যাকটিস কী হওয়া উচিত, সেগুলো শিখতে হবে। শেখা বন্ধ করলে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’
তাহিয়ার কাজের মূলমন্ত্র
একটি দল পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মেনে নিয়ে কাজ করতে হয়। দলনেতা হিসেবে তাহিয়া তাঁর দলকে মানুষের জন্য কাজ করার মানসিকতা নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার পরামর্শ দেন। তাহিয়া বলেন, ‘আমরা অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিই। আবার অনেক সময় অনেক প্রো-এমপ্লয়িজ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়কে ব্যালান্স করার জন্য এমপ্যাথি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটা না থাকলে এইচআর বিভাগে কাজ করা মুশকিল।’ ডিজিটালাইজেশনের যুগে শুধু টেলকো নিয়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ভাবতে হবে টেলকোটেক নিয়েও। এই চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে তাহিয়া বলেন, ‘এটা বিরাট পরিবর্তন। একদিকে কর্মীদের নতুন নতুন স্কিলের মাধ্যমে ডেভেলপ করতে হচ্ছে, অন্যদিকে নতুন স্কিলের মানুষদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।’
নারীবান্ধব কাজের জায়গা
নারীদের নিয়ে প্রতিনিয়ত নতুন কাজের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। গ্রামীণফোনেরও বিভিন্ন কাজ রয়েছে নারীদের নিয়ে। কাজের ক্ষেত্রে তাঁর প্রতিষ্ঠান কতটা নারীবান্ধব—এর উত্তরে তাহিয়া হোসেন বলেন, ‘গ্রামীণফোনের বড় দিক হচ্ছে, এখানে নারীদের আলাদা চোখে দেখা হয় না। যোগ্যতা অনুযায়ী সবাই সম্মান পায়।’
একসময় ম্যানেজমেন্ট টিমে একমাত্র নারী কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন তাহিয়া। নারীরা যেন খোলাখুলি নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে পারেন, এমন একটি পরিবেশ তৈরির প্রতি জোর দেন তিনি। তাহিয়া হোসেন বলেন, ‘নারীদের চিন্তা একটু ভিন্ন হয়। ব্যবসায়িক দিকেও তাঁদের ভিন্ন চিন্তা থাকে। আমরা সেই থট কাজে লাগাতে চেয়েছি।’
চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার ক্ষমতা নারীদের দিতে হবে। পাশাপাশি তাঁদেরও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতে হবে।
নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা
কাজের ক্ষেত্রে নারীদের প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে সৈয়দা তাহিয়া হোসেন বলেন, ‘অফিসে একজন নারীর নিজেকে প্রমাণ করে অ্যাকসেপ্টেড হতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে এমন হয়, একজন নারী আসছেন, দেখি কী বলেন। তাঁর কথা কতটুকু নেব, সেটা কিছুদিন পরে বোঝা যাবে।’ নিজেকে প্রমাণ করার বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখেন তাহিয়া। তিনি বলেন, ‘প্রমাণ করতে গিয়ে নিজের মধ্যে অনেক জিনিস ডেভেলপ করতে হয়েছে। অনেক কিছু শিখতে হয়েছে, যাতে দিন শেষে কেউ মনে না করে যে নারীরা পুরুষের থেকে নিচে।’
তাহিয়া বলেন, কাজে ওনারশিপ না দিলে নারীরা পিছিয়ে থাকবেন। নারীদের পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে, তাঁরা কী চান। পাশাপাশি সেটা কীভাবে পাওয়া সম্ভব, সে বিষয়ে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন তাহিয়া হোসেন।
বাবা ও মেয়ের স্বপ্ন
তাহিয়া হোসেনের অনুপ্রেরণা তাঁর বাবা। এর বড় কারণ হলো, বাবা তাঁকে শিখিয়েছিলেন কীভাবে স্বাধীন হতে হবে। তাহিয়া ভেবেছিলেন, শুরুতে কাজ করবেন বাবার সঙ্গে। কিন্তু তাঁর বাবা চেয়েছিলেন, মেয়ে আগে কাজ শিখুক। তাই ফাইল হাতে চাকরি খোঁজেন তিনি। চাকরি শুরুর চার বছর পর বাবা নিজের প্রতিষ্ঠানে কাজের অফার করলে তাহিয়া বলেছিলেন, ‘আমি তোমার ওখানে আর যেতে চাই না। এখানে ক্যারিয়ার গড়তে চাই।’ বড় হয়ে বাবার ব্যবসা না দেখলেও সৈয়দা তাহিয়া হোসেন একজন স্বাধীন মানুষ।
তখনো স্নাতক শেষ হয়নি তাঁর। ইচ্ছা হলো, ব্যবসায়ী বাবার প্রতিষ্ঠানে কাজ করবেন। গেলেন বাবার সঙ্গে কথা বলতে। বাবা বললেন, আগে অন্য কোথাও কাজ শিখে এসো। এরপর তিনি নামলেন চাকরির খোঁজে। সে যাত্রা শুরু ১৯৯৬ সালে। ওই বছরই কাজ পান একটি প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানে। এরপর আর বাবার প্রতিষ্ঠানের হাল ধরা হয়নি। কিন্তু বিভিন্ন সময় হাল ধরেছেন নানা প্রতিষ্ঠানের। বর্তমানে কাজ করছেন গ্রামীণফোনের চিফ হিউম্যান রিসোর্সেস অফিসার (সিএইচআরও) হিসেবে।
তাঁর নাম সৈয়দা তাহিয়া হোসেন। বাবার ওপর অভিমান করে নয়, নিজের ইচ্ছায় থেকে গেছেন মানবসম্পদ বিভাগে। গ্রামীণফোন হেডকোয়ার্টার্সে বসে তাহিয়ার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। শুধু গ্রামীণফোনে নয়, হেড অব এইচআর হিসেবে এর আগে কাজ করেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। স্বল্পভাষী তাহিয়া অল্প কথায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, কাজের জায়গায় তিনি কতটা সাবলীল।
যাত্রা শুরুর গল্প
গ্রামীণফোনের আগে তাহিয়া কাজ করতেন চকলেট প্রস্তুতকারক একটি ডাচ প্রতিষ্ঠানে। সেখানে কাজ করেছেন চার বছর। তাহিয়া জানান, জীবনে প্রথম ইন্টারভিউ বোর্ডে, কী করতে চান—এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মানুষের জন্য, মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই।’ প্রথম চাকরিতে ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পরামর্শে হিউম্যান রিসোর্সে কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর মানব প্রশাসনে কাজ করার দীর্ঘ যাত্রা শুরু হয় তাহিয়া হোসেনের। কাজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, ‘ব্যবসার পাশাপাশি এইচআর প্র্যাকটিস কী হওয়া উচিত, সেগুলো শিখতে হবে। শেখা বন্ধ করলে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’
তাহিয়ার কাজের মূলমন্ত্র
একটি দল পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মেনে নিয়ে কাজ করতে হয়। দলনেতা হিসেবে তাহিয়া তাঁর দলকে মানুষের জন্য কাজ করার মানসিকতা নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার পরামর্শ দেন। তাহিয়া বলেন, ‘আমরা অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিই। আবার অনেক সময় অনেক প্রো-এমপ্লয়িজ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়কে ব্যালান্স করার জন্য এমপ্যাথি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটা না থাকলে এইচআর বিভাগে কাজ করা মুশকিল।’ ডিজিটালাইজেশনের যুগে শুধু টেলকো নিয়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ভাবতে হবে টেলকোটেক নিয়েও। এই চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে তাহিয়া বলেন, ‘এটা বিরাট পরিবর্তন। একদিকে কর্মীদের নতুন নতুন স্কিলের মাধ্যমে ডেভেলপ করতে হচ্ছে, অন্যদিকে নতুন স্কিলের মানুষদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।’
নারীবান্ধব কাজের জায়গা
নারীদের নিয়ে প্রতিনিয়ত নতুন কাজের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। গ্রামীণফোনেরও বিভিন্ন কাজ রয়েছে নারীদের নিয়ে। কাজের ক্ষেত্রে তাঁর প্রতিষ্ঠান কতটা নারীবান্ধব—এর উত্তরে তাহিয়া হোসেন বলেন, ‘গ্রামীণফোনের বড় দিক হচ্ছে, এখানে নারীদের আলাদা চোখে দেখা হয় না। যোগ্যতা অনুযায়ী সবাই সম্মান পায়।’
একসময় ম্যানেজমেন্ট টিমে একমাত্র নারী কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন তাহিয়া। নারীরা যেন খোলাখুলি নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে পারেন, এমন একটি পরিবেশ তৈরির প্রতি জোর দেন তিনি। তাহিয়া হোসেন বলেন, ‘নারীদের চিন্তা একটু ভিন্ন হয়। ব্যবসায়িক দিকেও তাঁদের ভিন্ন চিন্তা থাকে। আমরা সেই থট কাজে লাগাতে চেয়েছি।’
চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার ক্ষমতা নারীদের দিতে হবে। পাশাপাশি তাঁদেরও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতে হবে।
নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা
কাজের ক্ষেত্রে নারীদের প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে সৈয়দা তাহিয়া হোসেন বলেন, ‘অফিসে একজন নারীর নিজেকে প্রমাণ করে অ্যাকসেপ্টেড হতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে এমন হয়, একজন নারী আসছেন, দেখি কী বলেন। তাঁর কথা কতটুকু নেব, সেটা কিছুদিন পরে বোঝা যাবে।’ নিজেকে প্রমাণ করার বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখেন তাহিয়া। তিনি বলেন, ‘প্রমাণ করতে গিয়ে নিজের মধ্যে অনেক জিনিস ডেভেলপ করতে হয়েছে। অনেক কিছু শিখতে হয়েছে, যাতে দিন শেষে কেউ মনে না করে যে নারীরা পুরুষের থেকে নিচে।’
তাহিয়া বলেন, কাজে ওনারশিপ না দিলে নারীরা পিছিয়ে থাকবেন। নারীদের পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে, তাঁরা কী চান। পাশাপাশি সেটা কীভাবে পাওয়া সম্ভব, সে বিষয়ে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন তাহিয়া হোসেন।
বাবা ও মেয়ের স্বপ্ন
তাহিয়া হোসেনের অনুপ্রেরণা তাঁর বাবা। এর বড় কারণ হলো, বাবা তাঁকে শিখিয়েছিলেন কীভাবে স্বাধীন হতে হবে। তাহিয়া ভেবেছিলেন, শুরুতে কাজ করবেন বাবার সঙ্গে। কিন্তু তাঁর বাবা চেয়েছিলেন, মেয়ে আগে কাজ শিখুক। তাই ফাইল হাতে চাকরি খোঁজেন তিনি। চাকরি শুরুর চার বছর পর বাবা নিজের প্রতিষ্ঠানে কাজের অফার করলে তাহিয়া বলেছিলেন, ‘আমি তোমার ওখানে আর যেতে চাই না। এখানে ক্যারিয়ার গড়তে চাই।’ বড় হয়ে বাবার ব্যবসা না দেখলেও সৈয়দা তাহিয়া হোসেন একজন স্বাধীন মানুষ।
রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা। এখানে প্রধান সড়কের পাশে একটি দালানের দ্বিতীয় তলার ছাদের দিকে চোখ গেলে একটু ঘোর লাগে সবার। গাছপালায় ঘেরা, সূর্যের আলোয় উজ্জ্বল এই ছাদে আছে একটি ক্যাফে। এর নাম ওরেন্ডা অ্যান্ড বিনস।
১ দিন আগেস্কুল, কলেজ ও নারীদের উন্নয়নে উদার হাতে অর্থ দান করার জন্য সুপরিচিত ছিলেন এক নারী। তাঁর নাম মেরি গ্যারেট। তিনি ১৮৯৩ সালে জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি মেডিকেল স্কুলকে একটি শর্ত দিয়ে অর্থ দান করেছিলেন। মেরি গ্যারেটের শর্ত ছিল, এই প্রতিষ্ঠানকে নারী...
১ দিন আগেমৃত্যুদণ্ড দিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করা যায়, এমন প্রমাণাদি নেই বলে মন্তব্য করেছেন ব্লাস্টের (বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট) নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে লিঙ্গভিত্তিক...
৭ দিন আগেশিশুদের সাইকোলজি আগে বুঝতে হবে—যতটা সরলীকরণ করা যায়। পরের পাতায় কী আছে, এ রকম একটা কৌতূহল রাখি। রংটা খুব উজ্জ্বল থাকে। সামাজিক সচেতনতা বাড়ায়, চিন্তার বিকাশ ঘটায়—এমন কাজ করি। চরিত্রদের এক্সপ্রেশনে ব্যাপক ফান থাকতে হবে।
৮ দিন আগে