Ajker Patrika

দেশে-বিদেশে রিমঝিমের ‘ইমান’

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান 
আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫, ১৫: ১০
উন্মে ফাতেমা রিমঝিম। ছবি: সংগৃহীত
উন্মে ফাতেমা রিমঝিম। ছবি: সংগৃহীত

অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় মাত্র ২০ হাজার টাকায় বোরকার ব্যবসা শুরু করেন। ডিজাইন, কাপড় সংগ্রহ, ডেলিভারি—সবই এক হাতে সামলাতেন তিনি। বর্তমানে ঢাকায় তাঁর দুটি শোরুম রয়েছে। বিনিয়োগের পরিমাণ বহু আগেই কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আমেরিকা, কানাডা, জাপান, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাঁর তৈরি পোশাক রপ্তানি হচ্ছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১২০ জনের বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে তাঁর প্রতিষ্ঠানে। এতক্ষণ যাঁর কথা বলা হলো, তাঁর নাম উন্মে ফাতেমা রিমঝিম।

পরিবার বড় সাপোর্ট

রিমঝিম ইংরেজিতে অনার্স শেষ করেছেন। থাকেন ঢাকার বনশ্রীতে। নিজের কাজে পেয়েছেন বাবা, ভাই, স্বামীসহ পুরো পরিবারের সহযোগিতা। তিনি মনে করেন, উদ্যোক্তা ছোট বা বড় যা-ই হোক না কেন, নারীদের জন্য পরিবারের সহযোগিতা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

শুরু মাত্র ২০ হাজার টাকায়

নিজের পোশাকে নিজেই ডিজাইন করতেন। ফ্যাশনের প্রতি তাঁর ভালো লাগাটা ছোটবেলা থেকেই। করোনার পর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে চিন্তা করেন, পোশাক নিয়ে কাজ করবেন। অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ চলছে তখন। হাতে ছিল মাত্র ২০ হাজার টাকা। ফেসবুকে একটি পেজ খুলে ফেলেন। কাপড় কিনে ডিজাইন করে বানিয়ে নিজেই পৌঁছে দিতেন ক্রেতার কাছে। পাশে ছিলেন তাঁর ভাই। তিনি পোশাকের ছবি তুলে দিতেন। প্রথম মাসে সব পোশাক বিক্রি হয়ে যায়। ২০ হাজার টাকার পুঁজি বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ টাকায়।

ব্র্যান্ডের নাম ‘ইমান’, কারণ ‘বিশ্বাস’

রিমঝিমের ব্র্যান্ডের নাম ‘ইমান’। ‘ইমান’ অর্থ বিশ্বাস। ক্রেতারা যেন চোখ বন্ধ করে তাঁর প্রোডাক্টে বিশ্বাস রাখতে পারেন, সেই ধারণা থেকে এই নাম। তাঁর পণ্যের তালিকায় রয়েছে আবায়া, হিজাব, কুর্তি, থ্রি-পিস, জুতা, ব্যাগসহ বিভিন্ন লাইফস্টাইল প্রোডাক্ট।

শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান

২০২১ সালে ব্যবসা শুরু। ২০২৩ সালে ১০টি সেলাই মেশিন দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন নিজের কারখানা। বর্তমানে মেশিন রয়েছে ৫০টি। কাজ করেন প্রায় ৬০ জন কারিগর। অতিরিক্ত কাজের সময় বাইরের ফ্যাক্টরি থেকেও কাজ করিয়ে নেন। তাঁর অফিশিয়াল টিমে ৩৫ নারী কাজ করেন।

শোরুম ও অনলাইন সেল

২০২২ সালে দক্ষিণ বনশ্রীতে প্রথম শোরুম প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে। মাসে ২ থকে ৩ হাজার আবায়া বিক্রি হয়। এখনো তাঁর অনলাইন বিক্রি বেশি।

ডিজাইন ও গুণমানে ব্যতিক্রম

ইমানের সব ডিজাইন নিজ হাতে করেন রিমঝিম। কাপড় চীন থেকে আমদানি করেন, কিছু আবায়া আনেন দুবাই থেকেও। ‘স্টিচিং ও কাপড়ের গুণমানই আমার প্রথম অগ্রাধিকার’— বলেন রিমঝিম।

বিশ্বজুড়ে ইমান

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের কারণে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়ার বাঙালিদের কাছে ইমান বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে।

রিমঝিম মনে করেন, মেয়েরা চাইলে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। পুঁজি বড় কথা নয়, ধৈর্য, মনোবল আর প্রতিভা থাকা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বুশেহর পারমাণবিক কেন্দ্রে আছেন রুশ বিশেষজ্ঞরা, ইসরায়েলকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি

ইরানকে ঘিরে ফেলছে একের পর এক মার্কিন রণতরি ও যুদ্ধবিমান

পর্যটনে সেরা ১০ মুসলিমবান্ধব অমুসলিম দেশ

ছেলের কাটা পা হাতে নিয়ে বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা

পাকিস্তানি সেনাপ্রধানকে কেন যুক্তরাষ্ট্রে ডেকেছিলেন ট্রাম্প, ইরান-ইসরায়েল নিয়ে কী আলোচনা হলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত