ল-র-ব-য-হ ডেস্ক
জীবনে পিৎজা তো কম খাননি। মনে হলেই ছুটে গেছেন পিৎজার দোকানে অথবা রেস্টুরেন্টে। এখন তো সময় আরও সহজ। ঘরে বসেই অমুক পান্ডা তমুক পান্ডায় অর্ডার করলেই বান্দা (পড়ুন পিৎজা) হাজির! কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন, গোল গোল পিৎজা কেন চারকোনা বাক্সে করে আসে?
মাথার অ্যান্টেনায় আপনার অনেক কিছু বাড়ি দিলেও এ বিষয়টি একবারও নাড়া দেয়নি, তাই তো? দেবেই বা কী করে? সিগন্যালজুড়ে তো শুধু টিপ, ট্যাপা পুতুল, বিজাতীয় সংস্কৃতি, গেল গেল সব গেল, অবমাননা, ইতি ও আদি।
যাক গে। আপনি খেয়েই খালাস হলেও গোলাকার পিৎজার চতুষ্কোণ বাক্স নিয়ে অনেকেই মস্তিষ্ক প্রক্ষালন করেছেন। গোলাকার বস্তু গোলাকার বাক্সে সরবরাহ করাই যেখানে রীতিসিদ্ধ, সেখানে পিৎজার ক্ষেত্রে কেন উল্টো ঘটনা ঘটে?
কারণ আছে। সাধারণ এবং সহজ। প্রথম কারণ, গোলাকার বাক্স তৈরি করা কষ্টসাধ্য। সেই তুলনায় চারকোনা বাক্স তৈরি করা সহজ। একটিমাত্র কার্ডবোর্ড দিয়েই চারকোনা বাক্স তৈরি করা যায়। কিন্তু গোলাকার বাক্স তৈরি করতে দরকার হয় একাধিক কার্ডবোর্ড। তারপর চারকোণা বাক্স বহন করাও সহজ। কিন্তু গোলাকার বাক্স বহন করা ঝুঁকিপূর্ণ।
খাওয়ার আগে খেয়াল করে দেখুন, গোলাকার পিৎজা গোলাকার বাক্স থেকে বের করাও কঠিন। যদি এটি গোলাকার বাক্সে বহন করা হয়, তবে পিৎজার পাইগুলো (ত্রিভুজাকৃতির টুকরো) এলোমেলো হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিপরীতে আপনি যদি স্কয়ার আকৃতির বাক্সে তা বহন করেন, তবে সেই ঝুঁকি থাকে না।
আরেকটি বিষয়, বাক্স তৈরির চারকোনা কার্ডবোর্ডগুলো সংরক্ষণ করাও সহজ। একটির পর একটি স্তূপ করে রাখা যায়। জায়গা কম লাগে। কিন্তু কার্ডবোর্ডগুলো যদি গোলাকৃতি হতো, তাহলে কী হতো ভেবে দেখুন। বিস্তর জায়গার প্রয়োজন হতো। তা ছাড়া গোলাকৃতি কার্ডবোর্ডগুলো একবারের বেশি ব্যবহারও করা যায় না। সাধারণত কোনাগুলো ভেঙে যায়। কিন্তু চতুষ্কোণ কার্ডবোর্ডগুলো একাধিকবার একাধিক কাজে ব্যবহার করা যায়। পিৎজা খাওয়ার পর অনায়াসে বাক্সটি অন্য কাজে ব্যবহার করতে পারেন আপনি।
দ্বিতীয় কারণ খোঁজা যাক এবার। সেটি আর কিছুই নয়। অর্থ। হ্যাঁ, অর্থ, কড়ি, টাকা, খরচ—এই সব আরকি। গোলাকার বাক্স তৈরি করতে যেহেতু একাধিক কার্ডবোর্ডের প্রয়োজন হয়, তাই খরচও বেশি হয়। লোকবল বেশি প্রয়োজন হয়। সেটিও আলাদা খরচের ব্যাপার। আবার গোলাকার কার্ডবোর্ডগুলো গুদামজাত করার জন্য জায়গারও প্রয়োজন হয় বেশি। সেটিও তো এক খরচান্ত ব্যাপার! সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীরা ভাবলেন, পিৎজা এমনিতেই একটু ব্যয়বহুল খাবার, সর্বসাধারণের নাগালযোগ্য নয়, সেখানে খরচ আরও বাড়লে তো ‘ডুমুরপুষ্প’ হয়ে যাবে বস্তুটি। তাই পিৎজা ব্যবসায়ীরা ওমুখো হওয়ার ভাবনা বাদ দিয়েছেন। তাঁরা চেয়েছেন, ব্যয় নাগালের মধ্যে থাকুক আর খেতে থাকুক বেশি বেশি মানুষ। তাতে আখেরে নিজেদের পকেট উঠবে ফুলে ও ফেঁপে।
তবে ২০১০ সালে অ্যাপল একবার ছিদ্রযুক্ত গোল পিৎজা বাক্সের মেধাস্বত্বের আবেদন করেছিল। এ ছাড়া ২০১৮ সালে ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রিক নামের একটি কোম্পানি গোল পিৎজা বাক্সের ডিজাইন করেছিল। এমনকি ২০১৯ সালে বিখ্যাত পিৎজা হাট কোম্পানি অনুরূপ একটি বাক্স তৈরির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কোনো বাক্সই হালে পানি পায়নি।
তৃতীয় কারণ—নিরাপত্তাই প্রথম। হ্যাঁ, পিৎজা শুধু বানালেই হবে না, সেটি নিরাপত্তার সহিত গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোটাও তো গুরুত্বপূর্ণ। সেই দিক বিবেচনা করে এটি চতুষ্কোণ বাক্সে বন্দী করা হয়। তাতে গোল গোল পিৎজার প্রান্তুগুলো অক্ষত থাকে। ত্রিভুজাকারে কাটা টুকরোগুলো এলোমেলো হয়ে ছড়িয়ে যায় না। একেবারে অক্ষত অবস্থায় আস্ত গোল পিৎজা গ্রাহকের পাতে তুলে দেওয়া যায়।
শেষে সম্পূরক একটি তথ্য—ইতালিতে প্রথম যে পিৎজাটি তৈরি করা হয়েছিল, তা ছিল বর্গাকার। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়েছেন, বর্গাকার। মানে চার কোনাকার। এবং সেই পিৎজা অতি আবশ্যিক কারণেই ডেলিভারি দেওয়া হয়েছিল বর্গাকার বাক্সে। পিৎজা ডেলিভারির চতুষ্কোণ বাক্সের সঙ্গে এই ছোট্ট ইতিহাসও যুক্ত থাকা বিচিত্র কিছু নয়।
সূত্র: মেন্টাল ফ্লস ও ইন্ডিয়া
এই সম্পর্কিত পড়ুন:
জীবনে পিৎজা তো কম খাননি। মনে হলেই ছুটে গেছেন পিৎজার দোকানে অথবা রেস্টুরেন্টে। এখন তো সময় আরও সহজ। ঘরে বসেই অমুক পান্ডা তমুক পান্ডায় অর্ডার করলেই বান্দা (পড়ুন পিৎজা) হাজির! কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন, গোল গোল পিৎজা কেন চারকোনা বাক্সে করে আসে?
মাথার অ্যান্টেনায় আপনার অনেক কিছু বাড়ি দিলেও এ বিষয়টি একবারও নাড়া দেয়নি, তাই তো? দেবেই বা কী করে? সিগন্যালজুড়ে তো শুধু টিপ, ট্যাপা পুতুল, বিজাতীয় সংস্কৃতি, গেল গেল সব গেল, অবমাননা, ইতি ও আদি।
যাক গে। আপনি খেয়েই খালাস হলেও গোলাকার পিৎজার চতুষ্কোণ বাক্স নিয়ে অনেকেই মস্তিষ্ক প্রক্ষালন করেছেন। গোলাকার বস্তু গোলাকার বাক্সে সরবরাহ করাই যেখানে রীতিসিদ্ধ, সেখানে পিৎজার ক্ষেত্রে কেন উল্টো ঘটনা ঘটে?
কারণ আছে। সাধারণ এবং সহজ। প্রথম কারণ, গোলাকার বাক্স তৈরি করা কষ্টসাধ্য। সেই তুলনায় চারকোনা বাক্স তৈরি করা সহজ। একটিমাত্র কার্ডবোর্ড দিয়েই চারকোনা বাক্স তৈরি করা যায়। কিন্তু গোলাকার বাক্স তৈরি করতে দরকার হয় একাধিক কার্ডবোর্ড। তারপর চারকোণা বাক্স বহন করাও সহজ। কিন্তু গোলাকার বাক্স বহন করা ঝুঁকিপূর্ণ।
খাওয়ার আগে খেয়াল করে দেখুন, গোলাকার পিৎজা গোলাকার বাক্স থেকে বের করাও কঠিন। যদি এটি গোলাকার বাক্সে বহন করা হয়, তবে পিৎজার পাইগুলো (ত্রিভুজাকৃতির টুকরো) এলোমেলো হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিপরীতে আপনি যদি স্কয়ার আকৃতির বাক্সে তা বহন করেন, তবে সেই ঝুঁকি থাকে না।
আরেকটি বিষয়, বাক্স তৈরির চারকোনা কার্ডবোর্ডগুলো সংরক্ষণ করাও সহজ। একটির পর একটি স্তূপ করে রাখা যায়। জায়গা কম লাগে। কিন্তু কার্ডবোর্ডগুলো যদি গোলাকৃতি হতো, তাহলে কী হতো ভেবে দেখুন। বিস্তর জায়গার প্রয়োজন হতো। তা ছাড়া গোলাকৃতি কার্ডবোর্ডগুলো একবারের বেশি ব্যবহারও করা যায় না। সাধারণত কোনাগুলো ভেঙে যায়। কিন্তু চতুষ্কোণ কার্ডবোর্ডগুলো একাধিকবার একাধিক কাজে ব্যবহার করা যায়। পিৎজা খাওয়ার পর অনায়াসে বাক্সটি অন্য কাজে ব্যবহার করতে পারেন আপনি।
দ্বিতীয় কারণ খোঁজা যাক এবার। সেটি আর কিছুই নয়। অর্থ। হ্যাঁ, অর্থ, কড়ি, টাকা, খরচ—এই সব আরকি। গোলাকার বাক্স তৈরি করতে যেহেতু একাধিক কার্ডবোর্ডের প্রয়োজন হয়, তাই খরচও বেশি হয়। লোকবল বেশি প্রয়োজন হয়। সেটিও আলাদা খরচের ব্যাপার। আবার গোলাকার কার্ডবোর্ডগুলো গুদামজাত করার জন্য জায়গারও প্রয়োজন হয় বেশি। সেটিও তো এক খরচান্ত ব্যাপার! সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীরা ভাবলেন, পিৎজা এমনিতেই একটু ব্যয়বহুল খাবার, সর্বসাধারণের নাগালযোগ্য নয়, সেখানে খরচ আরও বাড়লে তো ‘ডুমুরপুষ্প’ হয়ে যাবে বস্তুটি। তাই পিৎজা ব্যবসায়ীরা ওমুখো হওয়ার ভাবনা বাদ দিয়েছেন। তাঁরা চেয়েছেন, ব্যয় নাগালের মধ্যে থাকুক আর খেতে থাকুক বেশি বেশি মানুষ। তাতে আখেরে নিজেদের পকেট উঠবে ফুলে ও ফেঁপে।
তবে ২০১০ সালে অ্যাপল একবার ছিদ্রযুক্ত গোল পিৎজা বাক্সের মেধাস্বত্বের আবেদন করেছিল। এ ছাড়া ২০১৮ সালে ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রিক নামের একটি কোম্পানি গোল পিৎজা বাক্সের ডিজাইন করেছিল। এমনকি ২০১৯ সালে বিখ্যাত পিৎজা হাট কোম্পানি অনুরূপ একটি বাক্স তৈরির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কোনো বাক্সই হালে পানি পায়নি।
তৃতীয় কারণ—নিরাপত্তাই প্রথম। হ্যাঁ, পিৎজা শুধু বানালেই হবে না, সেটি নিরাপত্তার সহিত গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোটাও তো গুরুত্বপূর্ণ। সেই দিক বিবেচনা করে এটি চতুষ্কোণ বাক্সে বন্দী করা হয়। তাতে গোল গোল পিৎজার প্রান্তুগুলো অক্ষত থাকে। ত্রিভুজাকারে কাটা টুকরোগুলো এলোমেলো হয়ে ছড়িয়ে যায় না। একেবারে অক্ষত অবস্থায় আস্ত গোল পিৎজা গ্রাহকের পাতে তুলে দেওয়া যায়।
শেষে সম্পূরক একটি তথ্য—ইতালিতে প্রথম যে পিৎজাটি তৈরি করা হয়েছিল, তা ছিল বর্গাকার। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়েছেন, বর্গাকার। মানে চার কোনাকার। এবং সেই পিৎজা অতি আবশ্যিক কারণেই ডেলিভারি দেওয়া হয়েছিল বর্গাকার বাক্সে। পিৎজা ডেলিভারির চতুষ্কোণ বাক্সের সঙ্গে এই ছোট্ট ইতিহাসও যুক্ত থাকা বিচিত্র কিছু নয়।
সূত্র: মেন্টাল ফ্লস ও ইন্ডিয়া
এই সম্পর্কিত পড়ুন:
এক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে ঊর্ধ্বমুখী ডিমের বাজার। বর্তমানে প্রতি ডজন ডিম কিনতে গুনতে হচ্ছে ৪ দশমিক ৯৫ ডলার; যা ২০২৪–এর ডিসেম্বরের তুলনায় প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি। এমন পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত পয়সা খরচ না করে ডিমের জোগান ঠিক রাখতে মুরগি পালনের দিকে ঝুঁকছেন অনেক মার্কিন।
২ দিন আগেদক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় পপ ব্যান্ড বিটিএসের সদস্য জিনকে (কিম সক-জিন) জনসমক্ষে চুম্বন করে পুলিশি তদন্তের মুখে পড়েছেন এক জাপানি নারী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত বছরের জুনে সিউলে একটি ফ্যান ইভেন্টে এ ঘটনা ঘটে। সেখানে জিন বিটিএসের ১ হাজার ভক্তকে আলিঙ্গন করেন। তবে ওই জাপানি..
৬ দিন আগেইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডশায়ারের ব্লেনহেইম প্যালেস। বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ এই প্রাসাদটিতে ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের জন্ম হয়েছিল। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্রাসাদে ইতালির শিল্পী মরিজিও কাত্তেলানের শিল্পকর্ম প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। এই প্রদর্শনীতে দেখানোর জন্য কাত্তেলানের তৈরি ১৮...
৯ দিন আগেচুরি করা এটিএম কার্ড নিয়ে লটারির টিকিট কেনেন দুই চোর। স্ক্র্যাচ-অফ লটারি টিকিটটিতে তাঁরা পেয়ে যান ৫ লাখ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা)। টাকা খুশি হলেও সেই টাকা তোলা নিয়েই বিপদ তাদের। এদিকে এটিএম কার্ডের মালিক খুঁজছেন তাঁদের। চাইছেন টাকার ভাগ। এমনই ঘটনা ঘটেছে ফ্রান্সে।
১১ দিন আগে