Ajker Patrika

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে হারানো জাহাজ ও প্লেনগুলো যাচ্ছে কোথায়!

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১৯: ০৪
বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে হারানো জাহাজ ও প্লেনগুলো যাচ্ছে কোথায়!

বারমুডা, মিয়ামি ও পুয়েরতো রিকোর বেশ অনেকটা এলাকা নিয়ে একটি ত্রিভুজ কল্পনা করা হয়। মোটামুটি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের ৫ লাখ বর্গমাইল এলাকা পড়েছে এর সীমানায়। অসংখ্য জাহাজ ও উড়োজাহাজ বারমুডা ট্রায়াঙ্গল নামে পরিচিত এই জায়গা থেকে কোনো চিহ্ন না রেখেই অদৃশ্য হয়ে গেছে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্য সমাধানে মাথা খাটিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু সত্যি কি সমাধান হয়েছে রহস্যের?

৭৮ বছর আগের রোদ্রালোকিত এক দিন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ঘাঁটি থেকে একটি রুটিন প্রশিক্ষণে অংশ নিতে আকাশে উড়াল দেয় নৌবাহিনীর পাঁচটি উড়োজাহাজ। এটি পরিচিত ছিল ফ্লাইট-১৯ নামে। উড়োজাহাজ কিংবা বৈমানিকদের কারোরই খোঁজ পাওয়া যায়নি আর কখনোই।

আর এভাবেই জন্ম বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রোমাঞ্চকর গল্পের। বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের সীমানা নিয়ে তর্ক আছে। তবে বেশির ভাগ তত্ত্ব অনুসারে মিয়ামি, বারমুডা ও পুয়েরতো রিকোর মধ্যে পড়া আটলান্টিক মহাসাগরের ত্রিভুজাকার একটি এলাকা নিয়ে এর অবস্থান। কারও কাছেই নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই, তবে গত শতকে কাল্পনিক এই ত্রিভুজের মধ্যে কোনো ধরনের চিহ্ন না রেখেই অদৃশ্য হয়ে গেছে অগণিত জাহাজ ও প্লেন।

মিয়ামি, বারমুডা ও পুয়েরতো রিকোর বেশ অনেকটা এলাকা নিয়ে একটি ত্রিভুজ কল্পনা করা হয়যেভাবে বিখ্যাত হলো
এই জায়গাটির অস্বাভাবিবকতার কথা শোনা যাচ্ছিল বহু আগে থেকেই। এই এলাকায় কম্পাসের অদ্ভুত আচরণের ব্যাপারে তাঁর লগ বইয়ে লিখে গেছেন ক্রিস্টোফার কলম্বাসও। তবে ১৯৬৪ সালের আগস্টের আগ পর্যন্ত তাঁর বিখ্যাত নামটি পায়নি এলাকাটি। তখন আরগোসি ম্যাগাজিনে ফ্লাইট-১৯-এর রহস্যময় অন্তর্ধান নিয়ে যে লেখাটি লেখেন, সেখানেই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল কথাটি ব্যবহার করেন ভিনসেন্ট গ্যাডিস। তাঁর এই লেখাই বলা চলে আলোচনায় নিয়ে এল বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এবং এর রহস্যকে। হারিয়ে যাওয়া বৈমানিকদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তার অসংখ্য তত্ত্বই আলোচনায় এল পরের বছরগুলোতে।

এদিকে চার্লস বার্লিকজের মতো লেখকেরাও বারমুডা ট্রায়াঙ্গলকে তাঁদের লেখার মাধ্যমে মানুষের নজরে নিয়ে আসতে ভূমিকা রাখেন ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে।

বাংলাদেশে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল জায়গাটিকে পরিচিত করে তুলতে সাহায্য করে সেবা প্রকাশনী থেকে বের হওয়া ‘বারমুডা ট্রায়াঙ্গল’ বইটি। লেখেন শামসুদ্দীন নওয়াব। আমার বারমুডা ট্রায়াঙ্গল নিয়ে আগ্রহের শুরু সেই বই পড়েই। চলুন তবে পাঠক প্রবেশ করি বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্যময় জগতে।

মোটামুটি আটলান্টিক মহাসাগরের ৫ লাখ বর্গমাইল এলাকা পড়েছে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের সীমানায়।রহস্যময় সব অন্তর্ধান
ফ্লাইট ১৯-এর উড়োজাহাজগুলো হারিয়ে যাওয়ার আগের অনেক রহস্যময় অন্তর্ধানের ঘটনাও আলোচনায় আসে তারপর। এর একটি হলো এইচএমএস আটালান্টা নামের একটি জাহাজ। বারমুডার রয়্যাল নেভি ডকইয়ার্ড থেকে রওনা দিয়ে যাচ্ছিল ইংল্যান্ডের ফালমাউথে। ১৮৮০ সালের জানুয়ারির শেষ দিন সব ক্রুসহ অদৃশ্য হয় জাহাজটি। কেউ কেউ দাবি করেন, প্রবল ঝড়ে ডুবে গেছে এটি, তবে নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি।

১৯১৮ সালের ৪ মে আরেকটি ঘটনা ঘটে। ইউএসএস সাইক্লপস নামের একটি জাহাজ ম্যাংগানিজ আকরিক নিয়ে বার্বাডোজ দ্বীপ ছাড়ে। ৩০৯ জন নাবিক-কর্মকর্তা নিয়ে এটিও চিরতরে অদৃশ্য হয়। অনেক ধরনের তত্ত্বই খাঁড়া করা হয়। কেউ দোষ দেন ঝড়কে, কেউ শত্রুদের। তবে কারণ যা-ই হোক, বিশাল এক জাহাজ আর এর কয়েক শ যাত্রীর কোনো চিহ্নই পাওয়া যাবে না—এটা কেমন কথা!

এবারের গল্পটা ক্যারল এ. ডিয়ারিং নামের একটি পাঁচ মাস্তুলের স্কুনারের। ১৯২৯ সালের জানুয়ারির ২৯ তারিখ কেপ লুকআউট লাইটহাউস থেকে জাহাজটিকে সাগরের বুক কেটে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। এর দুই দিন পরই উত্তর ক্যারোলিনার উপকূলে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় একে। এর ক্রুদের কোনো খোঁজই পাওয়া যায়নি। জাহাজটি ফাঁকা রেখে কোথায় অদৃশ্য হলেন এতগুলো মানুষ।

২৮ ডিসেম্বর, ১৯৪৮। একটি ডগলাস ডি-৩ উড়োজাহাজ পুয়ের্তো রিকোর সান জুয়ান থেকে মিয়ামি যাচ্ছিল। উড়োজাহাজটি কখনোই গন্তব্যে পৌঁছায়নি। প্লেন কিংবা ৩২ জন ক্রুর কোনো খোঁজ মেলেনি আর। এই অন্তর্ধান রহস্যের তদন্ত হলেও কমিটি কোনো সমাধানে পৌঁছার মতো তথ্য পাননি।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের আরেক রহস্যের জন্ম ১৯৬৩ সালে। ফ্লোরিডার কি ওয়েস্টের কাছের সাগরে ডুবে যায় এসএস মেরিন সালফার কুইন নামের একটি ট্যাংকার জাহাজ। এ ধরনের জাহাজ তরল গ্যাস, তেল প্রভৃতি পরিবহন করে। জাহাজের কিছু কিছু জিনিস আশপাশের সাগরে ভাসতে দেখা গেলেও এটার ভাগ্যে কী হয়েছে তা যেমন জানা যায়নি, তেমনি খোঁজ মেলেনি এর নাবিকদের।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের জলে বা আকাশে হারিয়ে যাওয়া জাহাজ আর উড়োজাহাজের লিস্টিটা আসলেই অনেক লম্বা। তেমনি ওই ঘটনাগুলোর বর্ণনা দিতে থাকলে লেখা শেষ করাটাই মুশকিল হয়ে যাবে।

নিখোঁজ জাহাজের তালিকায় আছে এইচএমএস আটালান্টা।জাহাজ আর প্লেনগুলো অদৃশ্য হওয়ার কারণ কী
বিশাল সাগর দানো, দৈত্যকার স্কুইড, ভিনগ্রহবাসী, অজানা কিছুর তৈরি করা রহস্যময় তৃতীয় ডাইমেনশনের উপস্থিতি, সাগর থেকে হঠাৎ বিপুল গ্যাস বের হয়ে আসা—এমন নানা তত্ত্বই এসেছে আলোচনায়। তবে যুক্তিবাদী অনেকেই বলছেন, বাস্তবতা অনেক বেশি নিরস। তাঁদের দাবি, কখনো কখনো বৈরী প্রকৃতি, মানুষের ভুল, ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণ বা নকশা এমনকি মন্দভাগ্যও অনেক অন্তর্ধানের কারণ।

ইউএস নেভাল হিস্টোরিক্যাল ফাউন্ডেশনের ইতিহাসবিদ জন রেইলি বলেন, ‘ইউরোপীয়দের অভিযাত্রার শুরুর দিক থেকেই এই অঞ্চলে প্রচুর মানুষ ভ্রমণ করেছেন এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ এলাকা হয়ে ওঠে। এখানে বেশ কিছু জাহাজ ও উড়োজাহাজ অদৃশ্য হওয়ার যে কথাটা বলা হয়, সেটি নিউ জার্সির টার্নপাইকে ভয়ংকর অনেক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে এমন কিছু বলার মতোই!’

লেফটেন্যান্ট এ এল রাসেল বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের বিষয়ে মার্কিন কোস্ট গার্ডের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় লেখেন, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, প্রাকৃতিক শক্তি ও মানবজাতির অনিশ্চিত আচরণ মিলিয়ে প্রতিবছর বহুবার বিজ্ঞান-কল্পকাহিনির চেয়েও বড় ঘটনার জন্ম দেয়।

আটলান্টিক মহাসাগরে গালফ স্ট্রিমের অবস্থান বর্ণিল করে দেখানো হয়েছে।ফ্লাইট ১৯-এর অন্তর্ধান
তবে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের সবচেয়ে বড় রহস্য নিঃসন্দেহে ফ্লাইট ১৯-এর হারিয়ে যাওয়া। ১৯৪৫ সালের ৫ ডিসেম্বর এই ফ্লাইটই বলা চলে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের কিংবদন্তির জন্মে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে। ফ্লোরিডার ফোর্ট লডারডেলের মার্কিন নেভাল এয়ার স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু হয় ফ্লাইট ১৯-এর। ১৪ জন যাত্রী নিয়ে পাঁচটি টিবিএম অ্যাভেঞ্জার টর্পেডো বম্বারস আকাশে উড়াল দেয় আনুমানিক বেলা ২টা ১০ মিনিটে। ইনস্ট্রাক্টর জেনারেল চার্লস টেইলর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।

তখনো উড়োজাহাজ চালনায় জিপিএসের ব্যবহার শুরু হয়নি। সাধারণ হয়ে ওঠার আগের এক যুগে, পরীক্ষামূলক বোমাবর্ষণ শুরুর একটু পরই পথ হারালেন টেইলর দলবলসহ।

তবে এটাকে রহস্যময় ঘটনা মানতে নারাজ অনেকেই। তাঁদের মতে, ১৯৪৫ সালে জলের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া পাইলটদের কম্পাসের ওপরই ভরসা রাখতে হতো। সেই সঙ্গে কতক্ষণ ধরে একটি নির্দিষ্ট দিকে কি গতিতে উড়ছিল, তাও জানা থাকাটা জরুরি ছিল। টেলরের উড়োজাহাজের দুটি কম্পাসই দৃশ্যত ত্রুটিপূর্ণ ছিল। তদন্তে বেরিয়ে আসে তিনি ঘড়িও পরেননি সেদিন। সমুদ্রের মাঝখানে দিকনির্দেশ করে এমন কিছু ছিল না।

দিনের আলো ঝোড়ো সমুদ্রে অন্ধকারে রূপ নিচ্ছিল যখন,  উড়োজাহাজগুলো এলোমেলো উড়ছিল। একপর্যায়ে জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়ায় একে একে পাঁচটি উড়োজাহাজই খুব সম্ভব সমুদ্রে ভূপাতিত হয়।

নেভাল হিস্ট্রিকেল সেন্টারের নেভাল অ্যাভিয়েশন হিস্ট্রি শাখার ইতিহাসবিদ মার্ক ইভান্স বলেন, দ্য অ্যাভেঞ্জার একটি অত্যন্ত শক্তপোক্ত ধরনের বিমান হিসেবে পরিচিত ছিল। পাইলটরা কখনো কখনো তাদের ‘আয়রন বার্ডস’ বলে ডাকতেন।

‘ট্যাংকের মতো শক্তিশালী করে বানানো হতো এদের।’ যোগ করেন তিনি, ‘ভয়ানক যুদ্ধ শেষে ফিরে এসে আবার কাজ করত এরা। পাইলটরা এদের পছন্দ করতেন।’

এ ধরনের উড়োজাহাজগুলো খুব ভারী ছিল। ১০ হাজার পাউন্ডের (৪ হাজার ৫৩৫ কেজি) বেশি ছিল খালি অবস্থান। পতনের সময় এরা অত্যন্ত দ্রুত নিচে নেমে যাওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক। এ ধরনের ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সাগরে অবতরণ করলে যে কারও উদ্ধার পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তারপর আবার ঠান্ডা জলে রাতে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল শূন্য। আর এদের ধ্বংসাবশেষ দ্রুত নিচে নেমে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।

উড়োজাহাজগুলো নিখোঁজের পর স্থল ও জলের বিপুল এলাকাজুড়ে অনুসন্ধান চালানো হয়। কিন্তু কোনো মৃতদেহ বা ধ্বংসাবশেষ কিছুই পাওয়া যায়নি।

পরিস্থিত আরও ঘোলাটে হয় যখন, উড়োজাহাজগুলোর অনুসন্ধানে বের হয়ে উদ্ধারকারী উড়োজাহাজগুলোর একটি তার ১৩ জন ক্রুসহ চিরতরে হারিয়ে যায়। এটি ছিল একটি পিবিএম মেরিনার উড়োজাহাজ, যার ডাকনাম ছিল ‘উড়ন্ত গ্যাস ট্যাংক’। সামান্যতম বৈদ্যুতিক স্ফুলিঙ্গ কিংবা ম্যাচের কাঠির আগুন বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে এর মধ্যে। ওই এলাকা অতিক্রম করা একটি জাহাজ একটি বিশাল আগুনের গোলা দেখেছে। পাশাপাশি সাগরে তেল ছড়িয়ে থাকার খবরও দেয়। আর এ তথ্য উড়োজাহাজটির ভাগ্যে কী ঘটেছে তার একটা ইঙ্গিত দেয়। ১৯৪৯ সালে এ ধরনের উড়োজাহাজ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়।

নৌবাহিনীর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ফ্লাইট ১৯ নিখোঁজ হওয়ার জন্য পাইলটের ত্রুটিকে দায়ী করা হয়েছে। তবে টেলরের পরিবার প্রতিবাদ করলে বেশ কয়েকটি পর্যালোচনার পরে রায় পরিবর্তন করে ‘কারণ অজানা’ লেখা হয়।

ইউএসএস সাইক্লপস অদৃশ্য হয় ১৯১৮ সালের মে মাসে।আটলান্টিকের গোরস্থান
এবার এখানকার রহস্যের আরেকটি যৌক্তিক ব্যাখ্যার দিকে মনোযোগ দেওয়া যাক। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এলাকাটির অস্বাভাবিক একটি বৈশিষ্ট্য আছে। এমনটা চোখে পড়ে কেবল আরেকটি জায়গায়, সেটি জাপানের পূর্ব উপকূলের ডেভিলস সি। এই এলাকা দুটোয় সত্যিকারের উত্তর ও চুম্বকীয় উত্তর মিলিত হয়েছে। এ কারণে কম্পাস এখানে অস্বাভাবিক আচরণ করে।

সাগরতলের সবচেয়ে গভীর খাদগুলোর কয়েকটির অবস্থানও এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এলাকায়। এখানকার বেশির ভাগ এলাকায় সাগরের গভীরতা ১৯ হাজার ফুটের (৫ হাজার ৭৯১ মিটার) মতো। একেবারে দক্ষিণ অংশে পোয়ের্তো রিকো ট্রেঞ্চের গভীরতা ২৭ হাজার ৫০০ ফুট (৮ হাজার ২২৯ মিটার।)

গুপ্ত শৈলশ্রেণি ও বালুর চড়াও এখানকার সাগরের আরেক বড় বৈশিষ্ট্য। শৈলশ্রেণি বা পাহাড়ের ওপরের শক্তিশালী স্রোত জাহাজ চলাচলে জটিলতা বাড়ায় বলে ধারণা কোস্ট গার্ডদের।

হিসাবে রাখতে হবে আবহাওয়াকেও
ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সামুদ্রিক পূর্বাভাস কেন্দ্রের শাখাপ্রধান ডেভ ফেইট বলেন, ‘গালফ স্ট্রিম বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের পশ্চিম প্রান্ত বরাবর ভ্রমণ করে। এটার ভূমিকা থাকতে পারে।’  এখন গালফ স্ট্রিম বিষয়টি কী জেনে নেওয়া যাক। এটি সমুদ্রের মধ্যে একটি ৪০-৫০ মাইল প্রশস্ত নদীর মতো, যা উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে ঘুরছে।

‘যদি সঠিক বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থা থাকে, তবে অপ্রত্যাশিতভাবে উঁচু ঢেউ পেতে পারেন।’ ফেইট বলেন, ‘ঢেউয়ের উচ্চতা বাইরে আট ফুট হলে গালফ স্ট্রিমের মধ্যে এটি দুই এমনকি তিনগুণ বেশি হতে পারে। নাবিকেরা কখনো কখনো এর ওপরের মেঘ ও বজ্রপাত দেখে গালফ স্ট্রিমেকে শনাক্ত করেন।’

কোস্ট গার্ড আরও জানায়, অপ্রত্যাশিত ক্যারিবিয়ান-আটলান্টিক ঝড়গুলো জলস্তম্ভ তৈরি করে, যা প্রায়ই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এলাকায় পাইলট ও নাবিকদের জন্য বিপদের কারণ হয়।

তবে এত কিছুর পরও বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্য পুরোপুরি সমাধান হয়েছে এমন উপসংহারে পৌঁছা মুশকিল। রহস্যপ্রেমীরা বলবেন, বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া এত জাহাজ, উড়োজাহাজের মধ্যে কয়টির বিষয়ে মোটামুটি যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে? আর একেবারে চিহ্ন না রেখে এগুলো যায়-ই বা কোথায়? তাই মানুষের ভুল, প্রকৃতির বৈরী আচরণের পাশাপাশি দৈত্যকার স্কুইড, ভিনগ্রহের প্রাণীর প্রভাব কিংবা রহস্যময় তৃতীয় ডাইমেনশনের উপস্থিতির বিষয়টিও এখনো আসে তাঁদের ভাবনায়। তাই সবকিছু মিলিয়ে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল আজও রয়ে গেছে অমীমাংসিত রহস্যের কাতারে।

সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, হিস্ট্রি ডট কম, উইকিপিডিয়া, মেরিন ইনসাইট ডট কম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঘুমালেই ঠিক হয়ে যাবে—মৃত্যুর আগে সাপে কাটা ছেলেকে বলেছিলেন বাবা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
অস্ট্রেলিয়ার ব্রাউন স্নেক বিশ্বের অন্যতম বিষধর সাপ। ছবি: সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ার ব্রাউন স্নেক বিশ্বের অন্যতম বিষধর সাপ। ছবি: সংগৃহীত

হৃদয় বিদারক এই ঘটনাটি ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের মারগন শহরে। ১১ বছর বয়সী ট্রিস্টিয়ান জেমস ফ্রাহাম সাপের কামড়ে মারা গেছে। কারণ তার বাবা চিকিৎসা না দিয়ে তাকে একটু ঘুমিয়ে নিতে বলেছিলেন।

মঙ্গলবার এনডিটিভি জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছিল বেশ কিছু দিন আগে ঘটলেও সম্প্রতি প্রকাশিত একটি তদন্ত প্রতিবেদন এই মৃত্যুর ভয়াবহ অবহেলাটিকে সামনে এনেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রিস্টিয়ান একটি রাইডিং মাওয়ার চালানোর সময় পড়ে যায় এবং তখনই তাকে একটি ব্রাউন স্নেক ছোবল দেয়। এটি বিশ্বের অন্যতম মারাত্মক বিষধর সাপ। কামড়ের পর ট্রিস্টিয়ানের বাবা কেরড ফ্রাহাম ও আরও দুই প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি কামড়ের দাগ খুঁজলেও স্পষ্ট কিছু না পেয়ে বিষয়টিকে হালকাভাবে নেন। কেরড মনে করেছিলেন, ছেলে হয়তো মদ্যপ ছিল, তাই অসুস্থ দেখাচ্ছে। পরে তিনি ছেলেকে বলেন, ‘ঘুমিয়ে নাও, সকালে ভালো লাগবে।’

কিন্তু পরদিন সকালেই ট্রিস্টিয়ানকে বাড়ির বাইরে একটি স্লিপিং ব্যাগের নিচে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তদন্তে দেখা যায়, তার ডান গোড়ালিতে দুটি চিহ্ন ছিল, যা সাপের কামড়ের সঙ্গে মিলে যায়। পরে ময়নাতদন্তে জানা যায়, ব্রাউন স্নেকের বিষে তার দেহে ব্যাপক অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়েছিল।

করনারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যদি ট্রিস্টিয়ান সময়মতো চিকিৎসা পেত, তবে তার মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হতো।’

এই ঘটনাটি সাপের কামড়ের আশঙ্কা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে।

এদিকে কেরড ফ্রাহামের বিরুদ্ধে প্রথমে অনিচ্ছাকৃত হত্যার অভিযোগ আনা হলেও গত বছর সেই মামলা রহস্যজনকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্ত্রীকে প্রেমিকের হাতে তুলে দিলেন স্বামী, বিনিময়ে নিলেন গরু ও টাকা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৪৪
ছবিটি এআই নির্মিত
ছবিটি এআই নির্মিত

ইন্দোনেশিয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পরকীয়ায় ধরার পর অনন্য এক উপায়ে সম্পর্কের ইতি টানলেন। স্ত্রীকে তিনি প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে নিলেন একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কিছু পণ্য এবং নগদ অর্থ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশে, যেখানে তোলাকি নামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রাচীন সামাজিক রীতিনীতিতে বিশ্বাসী।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনের পর ওই ব্যক্তি গত সেপ্টেম্বরে একটি বোর্ডিং হাউসে স্ত্রীকে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরেন। এরপর তিনি পুলিশে অভিযোগ করলেও পরে বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসার জন্য গ্রামের প্রবীণদের কাছে যান। প্রবীণেরা ‘মোওয়া সারাপু’ নামে একটি ঐতিহ্যবাহী মিলন-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বিরোধ মেটানোর সিদ্ধান্ত নেন।

‘মোওয়া সারাপু’ রীতিটি তোলাকি সম্প্রদায়ের শতাব্দীপ্রাচীন প্রথা, যার অর্থ ‘ছাড় দেওয়া ও শান্তি স্থাপন করা’। এই রীতির লক্ষ্য প্রতিশোধ নয়, বরং সামাজিক ভারসাম্য ও মর্যাদা পুনরুদ্ধার করা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামের প্রবীণ, উভয় পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। সবার সামনেই ওই নারীর প্রেমিক তাঁর স্বামীকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কাপড়, একটি তামার পাত্র এবং ৫০ লাখ রুপিয়া (প্রায় ৩৬ হাজার টাকা) দেন।

গ্রামপ্রধান সফরুদ্দিন জানান, অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই দম্পতির বিবাহ আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেওয়া হয়। পরে নারীটির স্বামী ও প্রেমিক পরস্পরের সঙ্গে করমর্দন করেন। এভাবে স্ত্রীকে তাঁর প্রেমিকের হাতে সমর্পণ করেন স্বামীটি।

তোলাকি প্রবীণদের মতে, এই রীতি কোনো সম্পর্ককে ছোট করার জন্য নয়, বরং নৈতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতেই এমন প্রথা পালন করা হয়। তবে তাঁরা সতর্ক করে বলেন—কোনো নারী যদি এমন রীতি মেনে আবারও অন্য পুরুষকে বেছে নেয়, তবে তা তাঁর ও পরিবারের জন্য লজ্জার কারণ হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২২৫৩ শব্দের নাম তাঁর, গিনেস বুকে স্থান পেতে বদলাতে হয়েছে দেশের আইন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৩৮
সবচেয়ে বড় নামের রেকর্ড এখন লরেন্সের। ছবি: সংগৃহীত
সবচেয়ে বড় নামের রেকর্ড এখন লরেন্সের। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের দীর্ঘ নামের একটি আলাদা গুরুত্ব আছে। এই দীর্ঘ নামের মধ্য দিয়ে প্রায় সময় ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামো প্রতিফলিত হয়। দক্ষিণ ভারতে সাধারণত নামের সঙ্গে গ্রামের নাম, বাবার নাম এবং প্রদত্ত নাম যুক্ত থাকে। অন্যদিকে আরব বিশ্বে বংশগতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে একজনের নাম তার বাবা, দাদা এবং কখনো কখনো গোত্রের নাম পর্যন্ত অনুসরণ করে। পশ্চিমা দেশগুলোতেও এমন দীর্ঘ নামের ঐতিহ্য রয়েছে।

যেমন প্রখ্যাত শিল্পীর পুরো নাম পাবলো দিয়েগো হোসে ফ্রান্সিসকো দে পাওলা হুয়ান নেপোমুসেনো মারিয়া দে লোস রেমেদিওস সিপ্রিয়ানো দে লা সান্তিসিমা ত্রিনিদাদ রুইজ ওয়াই পিকাসো! তবে পিকাসোর নামের এই আশ্চর্য দৈর্ঘ্যও নিউজিল্যান্ডের লরেন্স ওয়াটকিন্সের নামের কাছে নস্যি। লরেন্স ওয়াটকিন্স বর্তমানে বিশ্বের দীর্ঘতম নামের গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ধারণ করে আছেন।

২,২৫৩ শব্দের নাম

১৯৯০ সালের মার্চে, নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী লরেন্স তাঁর নামের সঙ্গে ২ হাজারটির বেশি মধ্যনাম যুক্ত করার জন্য আইনগতভাবে নিজের নাম পরিবর্তন করেন। তাঁর পুরো নামে বর্তমানে মোট ২ হাজার ২৫৩টি অনন্য শব্দ রয়েছে। এই নাম তাঁকে দীর্ঘতম ব্যক্তিগত নামের জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস খেতাব এনে দিয়েছে।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর এই অস্বাভাবিক ইচ্ছার কারণ ব্যাখ্যা করেন: ‘আমি সব সময় অদ্ভুত এবং অস্বাভাবিক রেকর্ডগুলোর প্রতি মুগ্ধ ছিলাম। আমি সত্যিই সেই দৃশ্যের অংশ হতে চেয়েছিলাম। আমি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বইটি আগাগোড়া পড়ি এবং দেখি এমন কোনো রেকর্ড আছে কি না যা ভাঙতে পারি। আমার মনে হয়েছিল, বর্তমান রেকর্ডধারীর চেয়ে বেশি নাম যোগ করার রেকর্ডটিই কেবল আমার পক্ষে ভাঙা সম্ভব।’

লরেন্সের নাম পরিবর্তনের এ প্রক্রিয়াটি ছিল দীর্ঘ এবং কঠিন। সেই সময়ে কম্পিউটারের সীমিত ব্যবহারের কারণে পুরো নামের তালিকা টাইপ করতে তাঁকে কয়েক শ ডলার খরচ করতে হয়েছিল। প্রথমে জেলা আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলেও রেজিস্ট্রার জেনারেল তা বাতিল করে দেন। কিন্তু তিনি দমে যাননি। নিউজিল্যান্ডের হাইকোর্টে আপিল করেন এবং আদালত তাঁর পক্ষে রায় দেয়।

তবে এই ঘটনার পরপরই আইন প্রণেতারা দ্রুত দুটি আইন পরিবর্তন করেন, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এত সংখ্যক মধ্যনাম যোগ করতে না পারে। শুরুতে এই রেকর্ড ২ হাজার ৩১০টি নাম হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেও গিনেসের হালনাগাদকৃত নির্দেশিকা অনুসারে তা পরে ২ হাজার ২৫৩টি নামে সংশোধন করা হয়।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে, লরেন্স সেই সময় সিটি লাইব্রেরিতে কাজ করতেন এবং লাইব্রেরির বই থেকে নাম সংগ্রহ করতেন বা সহকর্মীদের কাছ থেকে সুপারিশ নিতেন। তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় নাম হলো— AZ 2000, যার অর্থ হলো আমার নামের আদ্যক্ষর A থেকে Z পর্যন্ত আছে এবং আমার মোট ২ হাজারটি নাম আছে।’

তবে এর জন্য মাঝেমধ্যে লরেন্সকে বেশ ভোগান্তিও পোহাতে হয়। মানুষ সহজে বিশ্বাস করতে চায় না। প্রধান সমস্যা হয় সরকারি দপ্তরগুলোতে গেলে। কারণ, সরকারি কোনো পরিচয়পত্রে তাঁর পুরো নাম ধরানো সম্ভব হয় না!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নার্সিং হোমে বয়স্ক পুরুষদের ওষুধ খেতে উৎসাহিত করতে মিনি স্কার্ট পরে তরুণীর নাচ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৪২
প্রবীণদের ওষুধ খেতে উৎসাহিত করতে তাদের সামনে নেচেছেন এক তরুণী। ছবি: সংগৃহীত
প্রবীণদের ওষুধ খেতে উৎসাহিত করতে তাদের সামনে নেচেছেন এক তরুণী। ছবি: সংগৃহীত

উত্তর চীনের হেনান প্রদেশের আনইয়াং শহরের একটি নার্সিং হোম সম্প্রতি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মূলত তাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নার্সিং হোমটির এক নারী কর্মকর্তা মিনি স্কার্ট ও স্কুল ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরে বয়স্ক রোগীদের সামনে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে নাচছেন।

ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘আমাদের পরিচালক বয়স্কদের ওষুধ খাওয়াতে যা যা করা দরকার, সবই করছেন।’ ভিডিওতে ওই নারীকে প্রাণবন্তভাবে নাচতে দেখা যায়। হাঁটু পর্যন্ত কালো মোজা পরিহিত অবস্থায় কোমর দোলাতে দেখা যায় তাঁকে। এরপর নীল ইউনিফর্ম পরা অন্য এক কর্মী এক প্রবীণ পুরুষের কাছে গিয়ে তাঁকে ওষুধ খাওয়ান।

নার্সিং হোমটির অনলাইন প্রোফাইল অনুযায়ী, এটি নব্বইয়ের দশকে জন্ম নেওয়া এক পরিচালকের উদ্যোগে পরিচালিত আনন্দমুখর অবসর নিবাস, যারা প্রবীণদের সুখী রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রোফাইলে আরও লেখা আছে, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো, বার্ধক্যের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা।’

ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। এক নেটিজেন মন্তব্য করেন, ‘এখন কি প্রবীণ যত্ন খাতে ইঙ্গিতপূর্ণ নাচও ঢুকে পড়েছে?’ জবাবে নার্সিং হোমের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট লিখেছে, ‘সবকিছুই ইঙ্গিতপূর্ণ নাচের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।’

গত ২৫ সেপ্টেম্বর নানগুও মেট্রোপলিস ডেইলিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নার্সিং হোমের পরিচালক জানান, ভিডিওতে থাকা নারী আসলে প্রবীণ যত্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী। তিনি স্বীকার করেন যে ভিডিওটি ‘অনুপযুক্ত’ ছিল, তবে ভবিষ্যতে ওই সিনিয়র কর্মীকে আরও সতর্ক হতে বলা হবে। পরিচালক আরও বলেন, ‘যদিও ওই নারী মাঝেমধ্যে প্রচারণামূলক ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি কোনো পেশাদার নৃত্যশিল্পী নন। সাধারণত এই হোমে বিনোদনের জন্য তাস খেলা ও গান গাওয়ার মতো প্রচলিত আয়োজন করা হয়।’

অন্য এক কর্মী পরে জানান, ওই নাচের ভিডিওগুলোর উদ্দেশ্য ছিল চীনের নার্সিং হোমগুলোকে নিয়ে প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করা। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখাতে চেয়েছিলাম যে নার্সিং হোম কোনো নিস্তেজ জায়গা নয়। এখানেও প্রাণবন্ততা আছে, প্রবীণেরাও প্রাণবন্ত হতে পারেন। তবে এখন বুঝতে পারছি, এই পদ্ধতির ভালো-মন্দ দুটোই আছে।’

জনরোষ বাড়তে থাকায় নার্সিং হোমটির সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে পরে শতাধিক এই সম্পর্কিত ভিডিও মুছে ফেলা হয়। আনইয়াং সিভিল অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর প্রবীণ সেবা বিভাগ জানিয়েছে, ঘটনাটির বিস্তারিত তদন্ত করা হবে এবং ফলাফল জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে।

চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশটির প্রবীণ জনগোষ্ঠী দ্রুত বাড়ছে। ২০২৪ সালের শেষে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩১ কোটি, যা মোট জনসংখ্যার ২২ শতাংশ।

তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত