জুন, ২০১০। উত্তপ্ত এক দিন। মা-বাবার মার খেয়ে রাগ করে বাড়ি ছাড়ে দুই ভাই-বোন। ১১ বছরের রাখি ও সাত বছরের বাবলুর পরিকল্পনা ছিল নানার বাড়ি চলে যাওয়ার। তাঁদের বাড়ি থেকে মোটে এক কিলোমিটার দূরে সেটা। তবে পথ হারাল তারা। মা নিতু কুমারীর কাছে ফিরে আসতে তাদের সময় লাগল ১৩ বছর!
ভাই-বোনের গত বেশ কয়েক বছর যোগাযোগ থাকলেও তাদেরও পুনরায় দেখা হয় এক দশকের বেশি সময় পর। আর এই ঘটনাটি আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের।
এসব তথ্য জানা যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
বাবলু এবং রাখি মা নিতু কুমারী ও বাবা সন্তোষের সঙ্গে থাকত আগ্রায়। দৈনিক মজুরিতে শ্রমিকের কাজ করতেন নিতু ও সন্তোষ।
১৬ জুন, ২০১০। সেদিন কোনো কাজ না পেয়ে নিতুর মেজাজ গিয়েছিল চড়ে। ঝাল ঝাড়তে মেয়ে রাখিকে রান্নার কাজে ব্যবহার করা ধাতব একটা খুনতি দিয়ে বারি মারেন।নিতু একটা কাজে বাইরে গেলে ঘর থেকে পালায় রাখি আর বাবলু।
‘কখনো কখনো ঠিকমতো লেখাপড়া না করলে বাবা পেটাত আমাকে। কাজেই রাখি যখন এসে বলল বাড়ি ছেড়ে নানির কাছে গিয়ে থাকার কথা, রাজি হয়ে গেলাম।’ বলে বাবলু।
কিন্তু পথ হারাল তারা। এক রিকশাচালক তাদের রেলস্টেশনে পৌঁছে দিল। ভাই-বোন একটি ট্রেনে উঠে পড়ে। যেখানে তাদের দেখা হয় শিশুদের দাতব্য সংস্থায় কাজ করেন এমন এক মহিলার সঙ্গে।
ট্রেনটি যখন তাদের বাড়ি থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরের শহর মিরাটে পৌঁছে, তখন তিনি তাদের পুলিশের কাছে পৌঁছে দিলেন। সেখান থেকে তাদের জায়গা হলো একটি সরকারি এতিমখানায়।
‘তাঁদের বলেছিলাম আমরা বাড়ি যেতে চাই। আমাদের মা-বাবার বিষয়ে বলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু পুলিশ কিংবা সরকারি কর্মকর্তা—কেউই আমাদের পরিবারের খোঁজ করেননি।’ বলে বাবলু।
এক বছর পর ভাই-বোনও আলাদা হয়ে গেল। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির কাছের এনজিও পরিচালিত মেয়েদের একটি আশ্রয়ণে পাঠানো হলো রাখিকে। দুই বছর বাদে বাবলুর জায়গা হলো উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনউর একটি সরকারি এতিমখানায়।
যখনই কোনো গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা, দাতব্য সংস্থার কর্মী বা সাংবাদিক এতিমখানা পরিদর্শন করতেন, বাবলু তাদের রাখির কথা বলত। এই আশায় যে তার সঙ্গে আবার মিলিত হতে পারবে।
তবে বিষয়টি কেউ প্রথম গুরুত্ব দিয়ে দেখল ২০১৭ সালে। এতিমখানার এক নারী তত্ত্বাবধায়ক তাকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেয়। বাবলু তাঁকে বলেছিল তার বোনকে দিল্লির কাছাকাছি কোথাও একটু বয়স্ক মেয়েদের একটি এতিমখানায় পাঠানো হয়েছে।
‘দিল্লির নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডার প্রতিটি এতিমখানায় ফোন দিলেন তিনি। রাখি নামের কেউ আছে কিনা জানতে। অনেক চেষ্টার পর তাকে খুঁজেও পেয়ে গেলেন।’ বলে বাবলু।
‘আমি সরকারকে বলতে চাই, ভাই-বোনদের আলাদা করাটা খুব নিষ্ঠুর আচরণ। পাশাপাশি দুটি এতিমখানায় রাখা উচিত। তাদের আলাদা করাটা মোটেই সঠিক নয়।’ যোগ করে বাবলু।
ভাইবোন আবার পরস্পরের খোঁজ পাওয়ার পর প্রায়ই ফোনে কথা হতো দুজনের। কিন্তু যখনই আলাপটা পরিবারকে খুঁজে বের করার দিকে যেত, রাখি সন্দেহে ভুগত।
‘তেরো বছর খুব কম সময় নয়। মাকে খুঁজে পাব এমন আশা কমই ছিল আমার মনে।’ বলে সে।
বাবলুর অবশ্য এমন সন্দেহ ছিল না। ‘আমি রাখিকে খুঁজে পেয়ে সত্যিই খুশি হয়েছিলাম। আর আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে মাকেও খুঁজে পাব এক সময়।’ বলে বাবলু।
গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর আগ্রাভিত্তিক শিশু অধিকার কর্মী নরেশ পরশ বাবলুর থেকে একটি ফোন পান। সে তখন বেঙ্গালুরুতে থাকে ও চাকরি করে।
‘আপনি অনেক পরিবারকে একত্রিত করেছেন। আমার মাকে খুঁজে বের করতে সাহায্য করবেন?’ বাবলু জানতে চাইল।
২০০৭ সাল থেকে শিশুদের নিয়ে কাজ করা মি. পরশ বলেন, কাজটি মোটেই সহজ হবে না।
ভাই-বোনের কেউই বাবার নাম বলতে পারেনি। কোন জেলা থেকে এসেছে সে সম্পর্কেও ধারণা ছিল না তাদের।
তারপরই বাবলু যখন ট্রেনে উঠেছিল সে স্টেশনের বাইরে একটা ডামি রেলইঞ্জিন দেখার কথা মনে করতে পারল।
‘আমার তখন মনে হলো এটি আগ্রা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন হতে পারে।’ বলেন পরশ।
সিটি পুলিশের রেকর্ডের মাধ্যমে, জগদীশপুর থানায় ভাই-বোনের বাবা ২০১০ সালের জুনে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বল জানতে পারেন তিনি।
কিন্তু পরিবারটির ঠিকানায় খোঁজ নিতে গিয়ে জানলেন তারা ভাড়া বাড়িতে থাকত। সেখান থেকে চলেও গিয়েছে।
এ সময়ই রাখি জানাল, তাঁর মায়ের নাম নিতু। ঘাড়ে একটি পোড়া দাগ আছে।
মি. পরশ তারপর আগ্রার এমন একটি জায়গায় গেলেন যেখানে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকেরা কাজের জন্য প্রতিদিন সকালে জড়ো হন। নিতুকে খুঁজে না পেলেও সেখানকার কিছু শ্রমিক বলেছিল যে তারা তাকে চেনে এবং খবরটি পৌঁছে দিতে পারবে।
নিতু কুমারী যখনই শুনল তার সন্তানদের পাওয়া গেছে, তিনি পুলিশের কাছে যান। তারপর তাঁর যোগাযোগ হয় মি. পরশের সঙ্গে।
মি. পরশ যখন নিতুর সঙ্গে দেখা করেন তখন তাকে বাচ্চাদের ছবি এবং পুলিশ অভিযোগের একটি কপি দেখান। যখন তিনি তাকে বাবলু এবং রাখির সঙ্গে ভিডিও কলে সংযুক্ত করেন। তখন তারা সবাই একে অপরকে চিনতে পেরেছিল।
মজার ঘটনা বাবলু মার কাছে আসার দুদিন আগেই আসে রাখি।
নিতু নরেশ পরশকে বলেন, রাখিকে মারায় তাঁর খুব অনুতাপ হয়। ছেলে-মেয়েদের খুঁজে পাওয়ার সব রকম চেষ্টাই তিনি করেন।
‘কিছু টাকা ধার করে পাটনা (বিহারের রাজধানী) যাই। কারণ শুনেছিলাম সেখানে আমার সন্তানদের রাস্তায় ভিক্ষা করতে দেখা গেছে। মন্দির, মসজিদ, গির্জা সব জায়গায় গিয়েছিলাম তাদের ফিরে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করতে।’ বলেন নিতু।
ছেলে এবং মেয়ের সঙ্গে আবেগপূর্ণ এবং অশ্রুসিক্ত পুনর্মিলনের সময় নিতু জানান, একটি নতুন জীবন পেয়েছেন তিনি।
রাখি বলেছিল তার মনে হয়েছে একটা সিনেমার মধ্যে আছে তারা, কারণ মাকে আর দেখতে পাবে এটা বিশ্বাসই করতে পারেনি সে। ‘আমার এখন খুব ভালো লাগছে।’ বলে সে।
‘এটা অবিশ্বাস্য যে মি. পরশ আমার পরিবারকে খুঁজে পেতে মাত্র এক সপ্তাহ সময় নিয়েছিলেন। পুলিশ এবং এনজিও কর্মীদের প্রতি আমার রাগ ছিল, বারবার অনুরোধ করার পরেও আমাকে সাহায্য করেনি। কিন্তু মায়ের সঙ্গে কথা বলার পর আমার খুব ভালো লাগে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, “তুমি কীভাবে আমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারলে?’ আমি তাকে বলেছিলাম, আমি কখনই তোমাকে ছেড়ে যেতে পারতাম না। আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম।’ বলে বাবলু।
জুন, ২০১০। উত্তপ্ত এক দিন। মা-বাবার মার খেয়ে রাগ করে বাড়ি ছাড়ে দুই ভাই-বোন। ১১ বছরের রাখি ও সাত বছরের বাবলুর পরিকল্পনা ছিল নানার বাড়ি চলে যাওয়ার। তাঁদের বাড়ি থেকে মোটে এক কিলোমিটার দূরে সেটা। তবে পথ হারাল তারা। মা নিতু কুমারীর কাছে ফিরে আসতে তাদের সময় লাগল ১৩ বছর!
ভাই-বোনের গত বেশ কয়েক বছর যোগাযোগ থাকলেও তাদেরও পুনরায় দেখা হয় এক দশকের বেশি সময় পর। আর এই ঘটনাটি আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের।
এসব তথ্য জানা যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
বাবলু এবং রাখি মা নিতু কুমারী ও বাবা সন্তোষের সঙ্গে থাকত আগ্রায়। দৈনিক মজুরিতে শ্রমিকের কাজ করতেন নিতু ও সন্তোষ।
১৬ জুন, ২০১০। সেদিন কোনো কাজ না পেয়ে নিতুর মেজাজ গিয়েছিল চড়ে। ঝাল ঝাড়তে মেয়ে রাখিকে রান্নার কাজে ব্যবহার করা ধাতব একটা খুনতি দিয়ে বারি মারেন।নিতু একটা কাজে বাইরে গেলে ঘর থেকে পালায় রাখি আর বাবলু।
‘কখনো কখনো ঠিকমতো লেখাপড়া না করলে বাবা পেটাত আমাকে। কাজেই রাখি যখন এসে বলল বাড়ি ছেড়ে নানির কাছে গিয়ে থাকার কথা, রাজি হয়ে গেলাম।’ বলে বাবলু।
কিন্তু পথ হারাল তারা। এক রিকশাচালক তাদের রেলস্টেশনে পৌঁছে দিল। ভাই-বোন একটি ট্রেনে উঠে পড়ে। যেখানে তাদের দেখা হয় শিশুদের দাতব্য সংস্থায় কাজ করেন এমন এক মহিলার সঙ্গে।
ট্রেনটি যখন তাদের বাড়ি থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরের শহর মিরাটে পৌঁছে, তখন তিনি তাদের পুলিশের কাছে পৌঁছে দিলেন। সেখান থেকে তাদের জায়গা হলো একটি সরকারি এতিমখানায়।
‘তাঁদের বলেছিলাম আমরা বাড়ি যেতে চাই। আমাদের মা-বাবার বিষয়ে বলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু পুলিশ কিংবা সরকারি কর্মকর্তা—কেউই আমাদের পরিবারের খোঁজ করেননি।’ বলে বাবলু।
এক বছর পর ভাই-বোনও আলাদা হয়ে গেল। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির কাছের এনজিও পরিচালিত মেয়েদের একটি আশ্রয়ণে পাঠানো হলো রাখিকে। দুই বছর বাদে বাবলুর জায়গা হলো উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনউর একটি সরকারি এতিমখানায়।
যখনই কোনো গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা, দাতব্য সংস্থার কর্মী বা সাংবাদিক এতিমখানা পরিদর্শন করতেন, বাবলু তাদের রাখির কথা বলত। এই আশায় যে তার সঙ্গে আবার মিলিত হতে পারবে।
তবে বিষয়টি কেউ প্রথম গুরুত্ব দিয়ে দেখল ২০১৭ সালে। এতিমখানার এক নারী তত্ত্বাবধায়ক তাকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেয়। বাবলু তাঁকে বলেছিল তার বোনকে দিল্লির কাছাকাছি কোথাও একটু বয়স্ক মেয়েদের একটি এতিমখানায় পাঠানো হয়েছে।
‘দিল্লির নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডার প্রতিটি এতিমখানায় ফোন দিলেন তিনি। রাখি নামের কেউ আছে কিনা জানতে। অনেক চেষ্টার পর তাকে খুঁজেও পেয়ে গেলেন।’ বলে বাবলু।
‘আমি সরকারকে বলতে চাই, ভাই-বোনদের আলাদা করাটা খুব নিষ্ঠুর আচরণ। পাশাপাশি দুটি এতিমখানায় রাখা উচিত। তাদের আলাদা করাটা মোটেই সঠিক নয়।’ যোগ করে বাবলু।
ভাইবোন আবার পরস্পরের খোঁজ পাওয়ার পর প্রায়ই ফোনে কথা হতো দুজনের। কিন্তু যখনই আলাপটা পরিবারকে খুঁজে বের করার দিকে যেত, রাখি সন্দেহে ভুগত।
‘তেরো বছর খুব কম সময় নয়। মাকে খুঁজে পাব এমন আশা কমই ছিল আমার মনে।’ বলে সে।
বাবলুর অবশ্য এমন সন্দেহ ছিল না। ‘আমি রাখিকে খুঁজে পেয়ে সত্যিই খুশি হয়েছিলাম। আর আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে মাকেও খুঁজে পাব এক সময়।’ বলে বাবলু।
গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর আগ্রাভিত্তিক শিশু অধিকার কর্মী নরেশ পরশ বাবলুর থেকে একটি ফোন পান। সে তখন বেঙ্গালুরুতে থাকে ও চাকরি করে।
‘আপনি অনেক পরিবারকে একত্রিত করেছেন। আমার মাকে খুঁজে বের করতে সাহায্য করবেন?’ বাবলু জানতে চাইল।
২০০৭ সাল থেকে শিশুদের নিয়ে কাজ করা মি. পরশ বলেন, কাজটি মোটেই সহজ হবে না।
ভাই-বোনের কেউই বাবার নাম বলতে পারেনি। কোন জেলা থেকে এসেছে সে সম্পর্কেও ধারণা ছিল না তাদের।
তারপরই বাবলু যখন ট্রেনে উঠেছিল সে স্টেশনের বাইরে একটা ডামি রেলইঞ্জিন দেখার কথা মনে করতে পারল।
‘আমার তখন মনে হলো এটি আগ্রা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন হতে পারে।’ বলেন পরশ।
সিটি পুলিশের রেকর্ডের মাধ্যমে, জগদীশপুর থানায় ভাই-বোনের বাবা ২০১০ সালের জুনে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বল জানতে পারেন তিনি।
কিন্তু পরিবারটির ঠিকানায় খোঁজ নিতে গিয়ে জানলেন তারা ভাড়া বাড়িতে থাকত। সেখান থেকে চলেও গিয়েছে।
এ সময়ই রাখি জানাল, তাঁর মায়ের নাম নিতু। ঘাড়ে একটি পোড়া দাগ আছে।
মি. পরশ তারপর আগ্রার এমন একটি জায়গায় গেলেন যেখানে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকেরা কাজের জন্য প্রতিদিন সকালে জড়ো হন। নিতুকে খুঁজে না পেলেও সেখানকার কিছু শ্রমিক বলেছিল যে তারা তাকে চেনে এবং খবরটি পৌঁছে দিতে পারবে।
নিতু কুমারী যখনই শুনল তার সন্তানদের পাওয়া গেছে, তিনি পুলিশের কাছে যান। তারপর তাঁর যোগাযোগ হয় মি. পরশের সঙ্গে।
মি. পরশ যখন নিতুর সঙ্গে দেখা করেন তখন তাকে বাচ্চাদের ছবি এবং পুলিশ অভিযোগের একটি কপি দেখান। যখন তিনি তাকে বাবলু এবং রাখির সঙ্গে ভিডিও কলে সংযুক্ত করেন। তখন তারা সবাই একে অপরকে চিনতে পেরেছিল।
মজার ঘটনা বাবলু মার কাছে আসার দুদিন আগেই আসে রাখি।
নিতু নরেশ পরশকে বলেন, রাখিকে মারায় তাঁর খুব অনুতাপ হয়। ছেলে-মেয়েদের খুঁজে পাওয়ার সব রকম চেষ্টাই তিনি করেন।
‘কিছু টাকা ধার করে পাটনা (বিহারের রাজধানী) যাই। কারণ শুনেছিলাম সেখানে আমার সন্তানদের রাস্তায় ভিক্ষা করতে দেখা গেছে। মন্দির, মসজিদ, গির্জা সব জায়গায় গিয়েছিলাম তাদের ফিরে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করতে।’ বলেন নিতু।
ছেলে এবং মেয়ের সঙ্গে আবেগপূর্ণ এবং অশ্রুসিক্ত পুনর্মিলনের সময় নিতু জানান, একটি নতুন জীবন পেয়েছেন তিনি।
রাখি বলেছিল তার মনে হয়েছে একটা সিনেমার মধ্যে আছে তারা, কারণ মাকে আর দেখতে পাবে এটা বিশ্বাসই করতে পারেনি সে। ‘আমার এখন খুব ভালো লাগছে।’ বলে সে।
‘এটা অবিশ্বাস্য যে মি. পরশ আমার পরিবারকে খুঁজে পেতে মাত্র এক সপ্তাহ সময় নিয়েছিলেন। পুলিশ এবং এনজিও কর্মীদের প্রতি আমার রাগ ছিল, বারবার অনুরোধ করার পরেও আমাকে সাহায্য করেনি। কিন্তু মায়ের সঙ্গে কথা বলার পর আমার খুব ভালো লাগে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, “তুমি কীভাবে আমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারলে?’ আমি তাকে বলেছিলাম, আমি কখনই তোমাকে ছেড়ে যেতে পারতাম না। আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম।’ বলে বাবলু।
জুন, ২০১০। উত্তপ্ত এক দিন। মা-বাবার মার খেয়ে রাগ করে বাড়ি ছাড়ে দুই ভাই-বোন। ১১ বছরের রাখি ও সাত বছরের বাবলুর পরিকল্পনা ছিল নানার বাড়ি চলে যাওয়ার। তাঁদের বাড়ি থেকে মোটে এক কিলোমিটার দূরে সেটা। তবে পথ হারাল তারা। মা নিতু কুমারীর কাছে ফিরে আসতে তাদের সময় লাগল ১৩ বছর!
ভাই-বোনের গত বেশ কয়েক বছর যোগাযোগ থাকলেও তাদেরও পুনরায় দেখা হয় এক দশকের বেশি সময় পর। আর এই ঘটনাটি আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের।
এসব তথ্য জানা যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
বাবলু এবং রাখি মা নিতু কুমারী ও বাবা সন্তোষের সঙ্গে থাকত আগ্রায়। দৈনিক মজুরিতে শ্রমিকের কাজ করতেন নিতু ও সন্তোষ।
১৬ জুন, ২০১০। সেদিন কোনো কাজ না পেয়ে নিতুর মেজাজ গিয়েছিল চড়ে। ঝাল ঝাড়তে মেয়ে রাখিকে রান্নার কাজে ব্যবহার করা ধাতব একটা খুনতি দিয়ে বারি মারেন।নিতু একটা কাজে বাইরে গেলে ঘর থেকে পালায় রাখি আর বাবলু।
‘কখনো কখনো ঠিকমতো লেখাপড়া না করলে বাবা পেটাত আমাকে। কাজেই রাখি যখন এসে বলল বাড়ি ছেড়ে নানির কাছে গিয়ে থাকার কথা, রাজি হয়ে গেলাম।’ বলে বাবলু।
কিন্তু পথ হারাল তারা। এক রিকশাচালক তাদের রেলস্টেশনে পৌঁছে দিল। ভাই-বোন একটি ট্রেনে উঠে পড়ে। যেখানে তাদের দেখা হয় শিশুদের দাতব্য সংস্থায় কাজ করেন এমন এক মহিলার সঙ্গে।
ট্রেনটি যখন তাদের বাড়ি থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরের শহর মিরাটে পৌঁছে, তখন তিনি তাদের পুলিশের কাছে পৌঁছে দিলেন। সেখান থেকে তাদের জায়গা হলো একটি সরকারি এতিমখানায়।
‘তাঁদের বলেছিলাম আমরা বাড়ি যেতে চাই। আমাদের মা-বাবার বিষয়ে বলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু পুলিশ কিংবা সরকারি কর্মকর্তা—কেউই আমাদের পরিবারের খোঁজ করেননি।’ বলে বাবলু।
এক বছর পর ভাই-বোনও আলাদা হয়ে গেল। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির কাছের এনজিও পরিচালিত মেয়েদের একটি আশ্রয়ণে পাঠানো হলো রাখিকে। দুই বছর বাদে বাবলুর জায়গা হলো উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনউর একটি সরকারি এতিমখানায়।
যখনই কোনো গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা, দাতব্য সংস্থার কর্মী বা সাংবাদিক এতিমখানা পরিদর্শন করতেন, বাবলু তাদের রাখির কথা বলত। এই আশায় যে তার সঙ্গে আবার মিলিত হতে পারবে।
তবে বিষয়টি কেউ প্রথম গুরুত্ব দিয়ে দেখল ২০১৭ সালে। এতিমখানার এক নারী তত্ত্বাবধায়ক তাকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেয়। বাবলু তাঁকে বলেছিল তার বোনকে দিল্লির কাছাকাছি কোথাও একটু বয়স্ক মেয়েদের একটি এতিমখানায় পাঠানো হয়েছে।
‘দিল্লির নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডার প্রতিটি এতিমখানায় ফোন দিলেন তিনি। রাখি নামের কেউ আছে কিনা জানতে। অনেক চেষ্টার পর তাকে খুঁজেও পেয়ে গেলেন।’ বলে বাবলু।
‘আমি সরকারকে বলতে চাই, ভাই-বোনদের আলাদা করাটা খুব নিষ্ঠুর আচরণ। পাশাপাশি দুটি এতিমখানায় রাখা উচিত। তাদের আলাদা করাটা মোটেই সঠিক নয়।’ যোগ করে বাবলু।
ভাইবোন আবার পরস্পরের খোঁজ পাওয়ার পর প্রায়ই ফোনে কথা হতো দুজনের। কিন্তু যখনই আলাপটা পরিবারকে খুঁজে বের করার দিকে যেত, রাখি সন্দেহে ভুগত।
‘তেরো বছর খুব কম সময় নয়। মাকে খুঁজে পাব এমন আশা কমই ছিল আমার মনে।’ বলে সে।
বাবলুর অবশ্য এমন সন্দেহ ছিল না। ‘আমি রাখিকে খুঁজে পেয়ে সত্যিই খুশি হয়েছিলাম। আর আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে মাকেও খুঁজে পাব এক সময়।’ বলে বাবলু।
গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর আগ্রাভিত্তিক শিশু অধিকার কর্মী নরেশ পরশ বাবলুর থেকে একটি ফোন পান। সে তখন বেঙ্গালুরুতে থাকে ও চাকরি করে।
‘আপনি অনেক পরিবারকে একত্রিত করেছেন। আমার মাকে খুঁজে বের করতে সাহায্য করবেন?’ বাবলু জানতে চাইল।
২০০৭ সাল থেকে শিশুদের নিয়ে কাজ করা মি. পরশ বলেন, কাজটি মোটেই সহজ হবে না।
ভাই-বোনের কেউই বাবার নাম বলতে পারেনি। কোন জেলা থেকে এসেছে সে সম্পর্কেও ধারণা ছিল না তাদের।
তারপরই বাবলু যখন ট্রেনে উঠেছিল সে স্টেশনের বাইরে একটা ডামি রেলইঞ্জিন দেখার কথা মনে করতে পারল।
‘আমার তখন মনে হলো এটি আগ্রা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন হতে পারে।’ বলেন পরশ।
সিটি পুলিশের রেকর্ডের মাধ্যমে, জগদীশপুর থানায় ভাই-বোনের বাবা ২০১০ সালের জুনে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বল জানতে পারেন তিনি।
কিন্তু পরিবারটির ঠিকানায় খোঁজ নিতে গিয়ে জানলেন তারা ভাড়া বাড়িতে থাকত। সেখান থেকে চলেও গিয়েছে।
এ সময়ই রাখি জানাল, তাঁর মায়ের নাম নিতু। ঘাড়ে একটি পোড়া দাগ আছে।
মি. পরশ তারপর আগ্রার এমন একটি জায়গায় গেলেন যেখানে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকেরা কাজের জন্য প্রতিদিন সকালে জড়ো হন। নিতুকে খুঁজে না পেলেও সেখানকার কিছু শ্রমিক বলেছিল যে তারা তাকে চেনে এবং খবরটি পৌঁছে দিতে পারবে।
নিতু কুমারী যখনই শুনল তার সন্তানদের পাওয়া গেছে, তিনি পুলিশের কাছে যান। তারপর তাঁর যোগাযোগ হয় মি. পরশের সঙ্গে।
মি. পরশ যখন নিতুর সঙ্গে দেখা করেন তখন তাকে বাচ্চাদের ছবি এবং পুলিশ অভিযোগের একটি কপি দেখান। যখন তিনি তাকে বাবলু এবং রাখির সঙ্গে ভিডিও কলে সংযুক্ত করেন। তখন তারা সবাই একে অপরকে চিনতে পেরেছিল।
মজার ঘটনা বাবলু মার কাছে আসার দুদিন আগেই আসে রাখি।
নিতু নরেশ পরশকে বলেন, রাখিকে মারায় তাঁর খুব অনুতাপ হয়। ছেলে-মেয়েদের খুঁজে পাওয়ার সব রকম চেষ্টাই তিনি করেন।
‘কিছু টাকা ধার করে পাটনা (বিহারের রাজধানী) যাই। কারণ শুনেছিলাম সেখানে আমার সন্তানদের রাস্তায় ভিক্ষা করতে দেখা গেছে। মন্দির, মসজিদ, গির্জা সব জায়গায় গিয়েছিলাম তাদের ফিরে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করতে।’ বলেন নিতু।
ছেলে এবং মেয়ের সঙ্গে আবেগপূর্ণ এবং অশ্রুসিক্ত পুনর্মিলনের সময় নিতু জানান, একটি নতুন জীবন পেয়েছেন তিনি।
রাখি বলেছিল তার মনে হয়েছে একটা সিনেমার মধ্যে আছে তারা, কারণ মাকে আর দেখতে পাবে এটা বিশ্বাসই করতে পারেনি সে। ‘আমার এখন খুব ভালো লাগছে।’ বলে সে।
‘এটা অবিশ্বাস্য যে মি. পরশ আমার পরিবারকে খুঁজে পেতে মাত্র এক সপ্তাহ সময় নিয়েছিলেন। পুলিশ এবং এনজিও কর্মীদের প্রতি আমার রাগ ছিল, বারবার অনুরোধ করার পরেও আমাকে সাহায্য করেনি। কিন্তু মায়ের সঙ্গে কথা বলার পর আমার খুব ভালো লাগে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, “তুমি কীভাবে আমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারলে?’ আমি তাকে বলেছিলাম, আমি কখনই তোমাকে ছেড়ে যেতে পারতাম না। আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম।’ বলে বাবলু।
জুন, ২০১০। উত্তপ্ত এক দিন। মা-বাবার মার খেয়ে রাগ করে বাড়ি ছাড়ে দুই ভাই-বোন। ১১ বছরের রাখি ও সাত বছরের বাবলুর পরিকল্পনা ছিল নানার বাড়ি চলে যাওয়ার। তাঁদের বাড়ি থেকে মোটে এক কিলোমিটার দূরে সেটা। তবে পথ হারাল তারা। মা নিতু কুমারীর কাছে ফিরে আসতে তাদের সময় লাগল ১৩ বছর!
ভাই-বোনের গত বেশ কয়েক বছর যোগাযোগ থাকলেও তাদেরও পুনরায় দেখা হয় এক দশকের বেশি সময় পর। আর এই ঘটনাটি আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের।
এসব তথ্য জানা যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
বাবলু এবং রাখি মা নিতু কুমারী ও বাবা সন্তোষের সঙ্গে থাকত আগ্রায়। দৈনিক মজুরিতে শ্রমিকের কাজ করতেন নিতু ও সন্তোষ।
১৬ জুন, ২০১০। সেদিন কোনো কাজ না পেয়ে নিতুর মেজাজ গিয়েছিল চড়ে। ঝাল ঝাড়তে মেয়ে রাখিকে রান্নার কাজে ব্যবহার করা ধাতব একটা খুনতি দিয়ে বারি মারেন।নিতু একটা কাজে বাইরে গেলে ঘর থেকে পালায় রাখি আর বাবলু।
‘কখনো কখনো ঠিকমতো লেখাপড়া না করলে বাবা পেটাত আমাকে। কাজেই রাখি যখন এসে বলল বাড়ি ছেড়ে নানির কাছে গিয়ে থাকার কথা, রাজি হয়ে গেলাম।’ বলে বাবলু।
কিন্তু পথ হারাল তারা। এক রিকশাচালক তাদের রেলস্টেশনে পৌঁছে দিল। ভাই-বোন একটি ট্রেনে উঠে পড়ে। যেখানে তাদের দেখা হয় শিশুদের দাতব্য সংস্থায় কাজ করেন এমন এক মহিলার সঙ্গে।
ট্রেনটি যখন তাদের বাড়ি থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরের শহর মিরাটে পৌঁছে, তখন তিনি তাদের পুলিশের কাছে পৌঁছে দিলেন। সেখান থেকে তাদের জায়গা হলো একটি সরকারি এতিমখানায়।
‘তাঁদের বলেছিলাম আমরা বাড়ি যেতে চাই। আমাদের মা-বাবার বিষয়ে বলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু পুলিশ কিংবা সরকারি কর্মকর্তা—কেউই আমাদের পরিবারের খোঁজ করেননি।’ বলে বাবলু।
এক বছর পর ভাই-বোনও আলাদা হয়ে গেল। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির কাছের এনজিও পরিচালিত মেয়েদের একটি আশ্রয়ণে পাঠানো হলো রাখিকে। দুই বছর বাদে বাবলুর জায়গা হলো উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনউর একটি সরকারি এতিমখানায়।
যখনই কোনো গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা, দাতব্য সংস্থার কর্মী বা সাংবাদিক এতিমখানা পরিদর্শন করতেন, বাবলু তাদের রাখির কথা বলত। এই আশায় যে তার সঙ্গে আবার মিলিত হতে পারবে।
তবে বিষয়টি কেউ প্রথম গুরুত্ব দিয়ে দেখল ২০১৭ সালে। এতিমখানার এক নারী তত্ত্বাবধায়ক তাকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেয়। বাবলু তাঁকে বলেছিল তার বোনকে দিল্লির কাছাকাছি কোথাও একটু বয়স্ক মেয়েদের একটি এতিমখানায় পাঠানো হয়েছে।
‘দিল্লির নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডার প্রতিটি এতিমখানায় ফোন দিলেন তিনি। রাখি নামের কেউ আছে কিনা জানতে। অনেক চেষ্টার পর তাকে খুঁজেও পেয়ে গেলেন।’ বলে বাবলু।
‘আমি সরকারকে বলতে চাই, ভাই-বোনদের আলাদা করাটা খুব নিষ্ঠুর আচরণ। পাশাপাশি দুটি এতিমখানায় রাখা উচিত। তাদের আলাদা করাটা মোটেই সঠিক নয়।’ যোগ করে বাবলু।
ভাইবোন আবার পরস্পরের খোঁজ পাওয়ার পর প্রায়ই ফোনে কথা হতো দুজনের। কিন্তু যখনই আলাপটা পরিবারকে খুঁজে বের করার দিকে যেত, রাখি সন্দেহে ভুগত।
‘তেরো বছর খুব কম সময় নয়। মাকে খুঁজে পাব এমন আশা কমই ছিল আমার মনে।’ বলে সে।
বাবলুর অবশ্য এমন সন্দেহ ছিল না। ‘আমি রাখিকে খুঁজে পেয়ে সত্যিই খুশি হয়েছিলাম। আর আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে মাকেও খুঁজে পাব এক সময়।’ বলে বাবলু।
গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর আগ্রাভিত্তিক শিশু অধিকার কর্মী নরেশ পরশ বাবলুর থেকে একটি ফোন পান। সে তখন বেঙ্গালুরুতে থাকে ও চাকরি করে।
‘আপনি অনেক পরিবারকে একত্রিত করেছেন। আমার মাকে খুঁজে বের করতে সাহায্য করবেন?’ বাবলু জানতে চাইল।
২০০৭ সাল থেকে শিশুদের নিয়ে কাজ করা মি. পরশ বলেন, কাজটি মোটেই সহজ হবে না।
ভাই-বোনের কেউই বাবার নাম বলতে পারেনি। কোন জেলা থেকে এসেছে সে সম্পর্কেও ধারণা ছিল না তাদের।
তারপরই বাবলু যখন ট্রেনে উঠেছিল সে স্টেশনের বাইরে একটা ডামি রেলইঞ্জিন দেখার কথা মনে করতে পারল।
‘আমার তখন মনে হলো এটি আগ্রা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন হতে পারে।’ বলেন পরশ।
সিটি পুলিশের রেকর্ডের মাধ্যমে, জগদীশপুর থানায় ভাই-বোনের বাবা ২০১০ সালের জুনে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বল জানতে পারেন তিনি।
কিন্তু পরিবারটির ঠিকানায় খোঁজ নিতে গিয়ে জানলেন তারা ভাড়া বাড়িতে থাকত। সেখান থেকে চলেও গিয়েছে।
এ সময়ই রাখি জানাল, তাঁর মায়ের নাম নিতু। ঘাড়ে একটি পোড়া দাগ আছে।
মি. পরশ তারপর আগ্রার এমন একটি জায়গায় গেলেন যেখানে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকেরা কাজের জন্য প্রতিদিন সকালে জড়ো হন। নিতুকে খুঁজে না পেলেও সেখানকার কিছু শ্রমিক বলেছিল যে তারা তাকে চেনে এবং খবরটি পৌঁছে দিতে পারবে।
নিতু কুমারী যখনই শুনল তার সন্তানদের পাওয়া গেছে, তিনি পুলিশের কাছে যান। তারপর তাঁর যোগাযোগ হয় মি. পরশের সঙ্গে।
মি. পরশ যখন নিতুর সঙ্গে দেখা করেন তখন তাকে বাচ্চাদের ছবি এবং পুলিশ অভিযোগের একটি কপি দেখান। যখন তিনি তাকে বাবলু এবং রাখির সঙ্গে ভিডিও কলে সংযুক্ত করেন। তখন তারা সবাই একে অপরকে চিনতে পেরেছিল।
মজার ঘটনা বাবলু মার কাছে আসার দুদিন আগেই আসে রাখি।
নিতু নরেশ পরশকে বলেন, রাখিকে মারায় তাঁর খুব অনুতাপ হয়। ছেলে-মেয়েদের খুঁজে পাওয়ার সব রকম চেষ্টাই তিনি করেন।
‘কিছু টাকা ধার করে পাটনা (বিহারের রাজধানী) যাই। কারণ শুনেছিলাম সেখানে আমার সন্তানদের রাস্তায় ভিক্ষা করতে দেখা গেছে। মন্দির, মসজিদ, গির্জা সব জায়গায় গিয়েছিলাম তাদের ফিরে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করতে।’ বলেন নিতু।
ছেলে এবং মেয়ের সঙ্গে আবেগপূর্ণ এবং অশ্রুসিক্ত পুনর্মিলনের সময় নিতু জানান, একটি নতুন জীবন পেয়েছেন তিনি।
রাখি বলেছিল তার মনে হয়েছে একটা সিনেমার মধ্যে আছে তারা, কারণ মাকে আর দেখতে পাবে এটা বিশ্বাসই করতে পারেনি সে। ‘আমার এখন খুব ভালো লাগছে।’ বলে সে।
‘এটা অবিশ্বাস্য যে মি. পরশ আমার পরিবারকে খুঁজে পেতে মাত্র এক সপ্তাহ সময় নিয়েছিলেন। পুলিশ এবং এনজিও কর্মীদের প্রতি আমার রাগ ছিল, বারবার অনুরোধ করার পরেও আমাকে সাহায্য করেনি। কিন্তু মায়ের সঙ্গে কথা বলার পর আমার খুব ভালো লাগে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, “তুমি কীভাবে আমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারলে?’ আমি তাকে বলেছিলাম, আমি কখনই তোমাকে ছেড়ে যেতে পারতাম না। আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম।’ বলে বাবলু।
ইন্দোনেশিয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পরকীয়ায় ধরার পর অনন্য এক উপায়ে সম্পর্কের ইতি টানলেন। স্ত্রীকে তিনি প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে নিলেন একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কিছু পণ্য এবং নগদ অর্থ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশে, যেখানে তোলাকি নামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রাচীন সামাজিক রীতিনীতিতে...
৪ দিন আগেবিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের দীর্ঘ নামের একটি আলাদা গুরুত্ব আছে। এই দীর্ঘ নামের মধ্য দিয়ে প্রায় সময় ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামো প্রতিফলিত হয়। দক্ষিণ ভারতে সাধারণত নামের সঙ্গে গ্রামের নাম, বাবার নাম এবং প্রদত্ত নাম যুক্ত থাকে। অন্যদিকে আরব বিশ্বে বংশগতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে একজনের নাম তার...
১০ দিন আগেউত্তর চীনের হেনান প্রদেশের আনইয়াং শহরের একটি নার্সিং হোম সম্প্রতি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মূলত তাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নার্সিং হোমটির এক নারী কর্মকর্তা মিনি স্কার্ট ও স্কুল ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরে বয়স্ক রোগীদের সামনে
১১ দিন আগেথাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় চনবুরি প্রদেশে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জল-মহিষ উৎসব। শতাধিক বছরের পুরোনো এই উৎসবের লক্ষ্য হলো—মহিষদের সম্মান জানানো ও কৃষিক্ষেত্রে তাঁদের বিলুপ্তি রোধ করা। যন্ত্রচালিত কৃষিকাজে ট্রাক্টরের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে বর্তমানে মহিষের অবদান অনেকটাই কমে...
১৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
ইন্দোনেশিয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পরকীয়ায় ধরার পর অনন্য এক উপায়ে সম্পর্কের ইতি টানলেন। স্ত্রীকে তিনি প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে নিলেন একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কিছু পণ্য এবং নগদ অর্থ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশে, যেখানে তোলাকি নামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রাচীন সামাজিক রীতিনীতিতে বিশ্বাসী।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনের পর ওই ব্যক্তি গত সেপ্টেম্বরে একটি বোর্ডিং হাউসে স্ত্রীকে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরেন। এরপর তিনি পুলিশে অভিযোগ করলেও পরে বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসার জন্য গ্রামের প্রবীণদের কাছে যান। প্রবীণেরা ‘মোওয়া সারাপু’ নামে একটি ঐতিহ্যবাহী মিলন-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বিরোধ মেটানোর সিদ্ধান্ত নেন।
‘মোওয়া সারাপু’ রীতিটি তোলাকি সম্প্রদায়ের শতাব্দীপ্রাচীন প্রথা, যার অর্থ ‘ছাড় দেওয়া ও শান্তি স্থাপন করা’। এই রীতির লক্ষ্য প্রতিশোধ নয়, বরং সামাজিক ভারসাম্য ও মর্যাদা পুনরুদ্ধার করা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামের প্রবীণ, উভয় পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। সবার সামনেই ওই নারীর প্রেমিক তাঁর স্বামীকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কাপড়, একটি তামার পাত্র এবং ৫০ লাখ রুপিয়া (প্রায় ৩৬ হাজার টাকা) দেন।
গ্রামপ্রধান সফরুদ্দিন জানান, অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই দম্পতির বিবাহ আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেওয়া হয়। পরে নারীটির স্বামী ও প্রেমিক পরস্পরের সঙ্গে করমর্দন করেন। এভাবে স্ত্রীকে তাঁর প্রেমিকের হাতে সমর্পণ করেন স্বামীটি।
তোলাকি প্রবীণদের মতে, এই রীতি কোনো সম্পর্ককে ছোট করার জন্য নয়, বরং নৈতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতেই এমন প্রথা পালন করা হয়। তবে তাঁরা সতর্ক করে বলেন—কোনো নারী যদি এমন রীতি মেনে আবারও অন্য পুরুষকে বেছে নেয়, তবে তা তাঁর ও পরিবারের জন্য লজ্জার কারণ হবে।
ইন্দোনেশিয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পরকীয়ায় ধরার পর অনন্য এক উপায়ে সম্পর্কের ইতি টানলেন। স্ত্রীকে তিনি প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে নিলেন একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কিছু পণ্য এবং নগদ অর্থ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশে, যেখানে তোলাকি নামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রাচীন সামাজিক রীতিনীতিতে বিশ্বাসী।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনের পর ওই ব্যক্তি গত সেপ্টেম্বরে একটি বোর্ডিং হাউসে স্ত্রীকে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরেন। এরপর তিনি পুলিশে অভিযোগ করলেও পরে বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসার জন্য গ্রামের প্রবীণদের কাছে যান। প্রবীণেরা ‘মোওয়া সারাপু’ নামে একটি ঐতিহ্যবাহী মিলন-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বিরোধ মেটানোর সিদ্ধান্ত নেন।
‘মোওয়া সারাপু’ রীতিটি তোলাকি সম্প্রদায়ের শতাব্দীপ্রাচীন প্রথা, যার অর্থ ‘ছাড় দেওয়া ও শান্তি স্থাপন করা’। এই রীতির লক্ষ্য প্রতিশোধ নয়, বরং সামাজিক ভারসাম্য ও মর্যাদা পুনরুদ্ধার করা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামের প্রবীণ, উভয় পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। সবার সামনেই ওই নারীর প্রেমিক তাঁর স্বামীকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কাপড়, একটি তামার পাত্র এবং ৫০ লাখ রুপিয়া (প্রায় ৩৬ হাজার টাকা) দেন।
গ্রামপ্রধান সফরুদ্দিন জানান, অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই দম্পতির বিবাহ আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেওয়া হয়। পরে নারীটির স্বামী ও প্রেমিক পরস্পরের সঙ্গে করমর্দন করেন। এভাবে স্ত্রীকে তাঁর প্রেমিকের হাতে সমর্পণ করেন স্বামীটি।
তোলাকি প্রবীণদের মতে, এই রীতি কোনো সম্পর্ককে ছোট করার জন্য নয়, বরং নৈতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতেই এমন প্রথা পালন করা হয়। তবে তাঁরা সতর্ক করে বলেন—কোনো নারী যদি এমন রীতি মেনে আবারও অন্য পুরুষকে বেছে নেয়, তবে তা তাঁর ও পরিবারের জন্য লজ্জার কারণ হবে।
জুন, ২০১০। উত্তপ্ত এক দিন। মা-বাবার মার খেয়ে রাগ করে বাড়ি ছাড়ে দুই ভাই-বোন। ১১ বছরের রাখি ও সাত বছরের বাবলুর পরিকল্পনা ছিল নানার বাড়ি চলে যাওয়ার। তাঁদের বাড়ি থেকে মোটে এক কিলোমিটার দূরে সেটা। তবে পথ হারাল তারা। মা নিতু কুমারীর কাছে ফিরে আসতে তাদের সময় লাগল ১৩ বছর!
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের দীর্ঘ নামের একটি আলাদা গুরুত্ব আছে। এই দীর্ঘ নামের মধ্য দিয়ে প্রায় সময় ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামো প্রতিফলিত হয়। দক্ষিণ ভারতে সাধারণত নামের সঙ্গে গ্রামের নাম, বাবার নাম এবং প্রদত্ত নাম যুক্ত থাকে। অন্যদিকে আরব বিশ্বে বংশগতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে একজনের নাম তার...
১০ দিন আগেউত্তর চীনের হেনান প্রদেশের আনইয়াং শহরের একটি নার্সিং হোম সম্প্রতি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মূলত তাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নার্সিং হোমটির এক নারী কর্মকর্তা মিনি স্কার্ট ও স্কুল ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরে বয়স্ক রোগীদের সামনে
১১ দিন আগেথাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় চনবুরি প্রদেশে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জল-মহিষ উৎসব। শতাধিক বছরের পুরোনো এই উৎসবের লক্ষ্য হলো—মহিষদের সম্মান জানানো ও কৃষিক্ষেত্রে তাঁদের বিলুপ্তি রোধ করা। যন্ত্রচালিত কৃষিকাজে ট্রাক্টরের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে বর্তমানে মহিষের অবদান অনেকটাই কমে...
১৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের দীর্ঘ নামের একটি আলাদা গুরুত্ব আছে। এই দীর্ঘ নামের মধ্য দিয়ে প্রায় সময় ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামো প্রতিফলিত হয়। দক্ষিণ ভারতে সাধারণত নামের সঙ্গে গ্রামের নাম, বাবার নাম এবং প্রদত্ত নাম যুক্ত থাকে। অন্যদিকে আরব বিশ্বে বংশগতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে একজনের নাম তার বাবা, দাদা এবং কখনো কখনো গোত্রের নাম পর্যন্ত অনুসরণ করে। পশ্চিমা দেশগুলোতেও এমন দীর্ঘ নামের ঐতিহ্য রয়েছে।
যেমন প্রখ্যাত শিল্পীর পুরো নাম পাবলো দিয়েগো হোসে ফ্রান্সিসকো দে পাওলা হুয়ান নেপোমুসেনো মারিয়া দে লোস রেমেদিওস সিপ্রিয়ানো দে লা সান্তিসিমা ত্রিনিদাদ রুইজ ওয়াই পিকাসো! তবে পিকাসোর নামের এই আশ্চর্য দৈর্ঘ্যও নিউজিল্যান্ডের লরেন্স ওয়াটকিন্সের নামের কাছে নস্যি। লরেন্স ওয়াটকিন্স বর্তমানে বিশ্বের দীর্ঘতম নামের গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ধারণ করে আছেন।
২,২৫৩ শব্দের নাম
১৯৯০ সালের মার্চে, নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী লরেন্স তাঁর নামের সঙ্গে ২ হাজারটির বেশি মধ্যনাম যুক্ত করার জন্য আইনগতভাবে নিজের নাম পরিবর্তন করেন। তাঁর পুরো নামে বর্তমানে মোট ২ হাজার ২৫৩টি অনন্য শব্দ রয়েছে। এই নাম তাঁকে দীর্ঘতম ব্যক্তিগত নামের জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস খেতাব এনে দিয়েছে।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর এই অস্বাভাবিক ইচ্ছার কারণ ব্যাখ্যা করেন: ‘আমি সব সময় অদ্ভুত এবং অস্বাভাবিক রেকর্ডগুলোর প্রতি মুগ্ধ ছিলাম। আমি সত্যিই সেই দৃশ্যের অংশ হতে চেয়েছিলাম। আমি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বইটি আগাগোড়া পড়ি এবং দেখি এমন কোনো রেকর্ড আছে কি না যা ভাঙতে পারি। আমার মনে হয়েছিল, বর্তমান রেকর্ডধারীর চেয়ে বেশি নাম যোগ করার রেকর্ডটিই কেবল আমার পক্ষে ভাঙা সম্ভব।’
লরেন্সের নাম পরিবর্তনের এ প্রক্রিয়াটি ছিল দীর্ঘ এবং কঠিন। সেই সময়ে কম্পিউটারের সীমিত ব্যবহারের কারণে পুরো নামের তালিকা টাইপ করতে তাঁকে কয়েক শ ডলার খরচ করতে হয়েছিল। প্রথমে জেলা আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলেও রেজিস্ট্রার জেনারেল তা বাতিল করে দেন। কিন্তু তিনি দমে যাননি। নিউজিল্যান্ডের হাইকোর্টে আপিল করেন এবং আদালত তাঁর পক্ষে রায় দেয়।
তবে এই ঘটনার পরপরই আইন প্রণেতারা দ্রুত দুটি আইন পরিবর্তন করেন, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এত সংখ্যক মধ্যনাম যোগ করতে না পারে। শুরুতে এই রেকর্ড ২ হাজার ৩১০টি নাম হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেও গিনেসের হালনাগাদকৃত নির্দেশিকা অনুসারে তা পরে ২ হাজার ২৫৩টি নামে সংশোধন করা হয়।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে, লরেন্স সেই সময় সিটি লাইব্রেরিতে কাজ করতেন এবং লাইব্রেরির বই থেকে নাম সংগ্রহ করতেন বা সহকর্মীদের কাছ থেকে সুপারিশ নিতেন। তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় নাম হলো— AZ 2000, যার অর্থ হলো আমার নামের আদ্যক্ষর A থেকে Z পর্যন্ত আছে এবং আমার মোট ২ হাজারটি নাম আছে।’
তবে এর জন্য মাঝেমধ্যে লরেন্সকে বেশ ভোগান্তিও পোহাতে হয়। মানুষ সহজে বিশ্বাস করতে চায় না। প্রধান সমস্যা হয় সরকারি দপ্তরগুলোতে গেলে। কারণ, সরকারি কোনো পরিচয়পত্রে তাঁর পুরো নাম ধরানো সম্ভব হয় না!
বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের দীর্ঘ নামের একটি আলাদা গুরুত্ব আছে। এই দীর্ঘ নামের মধ্য দিয়ে প্রায় সময় ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামো প্রতিফলিত হয়। দক্ষিণ ভারতে সাধারণত নামের সঙ্গে গ্রামের নাম, বাবার নাম এবং প্রদত্ত নাম যুক্ত থাকে। অন্যদিকে আরব বিশ্বে বংশগতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে একজনের নাম তার বাবা, দাদা এবং কখনো কখনো গোত্রের নাম পর্যন্ত অনুসরণ করে। পশ্চিমা দেশগুলোতেও এমন দীর্ঘ নামের ঐতিহ্য রয়েছে।
যেমন প্রখ্যাত শিল্পীর পুরো নাম পাবলো দিয়েগো হোসে ফ্রান্সিসকো দে পাওলা হুয়ান নেপোমুসেনো মারিয়া দে লোস রেমেদিওস সিপ্রিয়ানো দে লা সান্তিসিমা ত্রিনিদাদ রুইজ ওয়াই পিকাসো! তবে পিকাসোর নামের এই আশ্চর্য দৈর্ঘ্যও নিউজিল্যান্ডের লরেন্স ওয়াটকিন্সের নামের কাছে নস্যি। লরেন্স ওয়াটকিন্স বর্তমানে বিশ্বের দীর্ঘতম নামের গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ধারণ করে আছেন।
২,২৫৩ শব্দের নাম
১৯৯০ সালের মার্চে, নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী লরেন্স তাঁর নামের সঙ্গে ২ হাজারটির বেশি মধ্যনাম যুক্ত করার জন্য আইনগতভাবে নিজের নাম পরিবর্তন করেন। তাঁর পুরো নামে বর্তমানে মোট ২ হাজার ২৫৩টি অনন্য শব্দ রয়েছে। এই নাম তাঁকে দীর্ঘতম ব্যক্তিগত নামের জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস খেতাব এনে দিয়েছে।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর এই অস্বাভাবিক ইচ্ছার কারণ ব্যাখ্যা করেন: ‘আমি সব সময় অদ্ভুত এবং অস্বাভাবিক রেকর্ডগুলোর প্রতি মুগ্ধ ছিলাম। আমি সত্যিই সেই দৃশ্যের অংশ হতে চেয়েছিলাম। আমি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বইটি আগাগোড়া পড়ি এবং দেখি এমন কোনো রেকর্ড আছে কি না যা ভাঙতে পারি। আমার মনে হয়েছিল, বর্তমান রেকর্ডধারীর চেয়ে বেশি নাম যোগ করার রেকর্ডটিই কেবল আমার পক্ষে ভাঙা সম্ভব।’
লরেন্সের নাম পরিবর্তনের এ প্রক্রিয়াটি ছিল দীর্ঘ এবং কঠিন। সেই সময়ে কম্পিউটারের সীমিত ব্যবহারের কারণে পুরো নামের তালিকা টাইপ করতে তাঁকে কয়েক শ ডলার খরচ করতে হয়েছিল। প্রথমে জেলা আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলেও রেজিস্ট্রার জেনারেল তা বাতিল করে দেন। কিন্তু তিনি দমে যাননি। নিউজিল্যান্ডের হাইকোর্টে আপিল করেন এবং আদালত তাঁর পক্ষে রায় দেয়।
তবে এই ঘটনার পরপরই আইন প্রণেতারা দ্রুত দুটি আইন পরিবর্তন করেন, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এত সংখ্যক মধ্যনাম যোগ করতে না পারে। শুরুতে এই রেকর্ড ২ হাজার ৩১০টি নাম হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেও গিনেসের হালনাগাদকৃত নির্দেশিকা অনুসারে তা পরে ২ হাজার ২৫৩টি নামে সংশোধন করা হয়।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে, লরেন্স সেই সময় সিটি লাইব্রেরিতে কাজ করতেন এবং লাইব্রেরির বই থেকে নাম সংগ্রহ করতেন বা সহকর্মীদের কাছ থেকে সুপারিশ নিতেন। তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় নাম হলো— AZ 2000, যার অর্থ হলো আমার নামের আদ্যক্ষর A থেকে Z পর্যন্ত আছে এবং আমার মোট ২ হাজারটি নাম আছে।’
তবে এর জন্য মাঝেমধ্যে লরেন্সকে বেশ ভোগান্তিও পোহাতে হয়। মানুষ সহজে বিশ্বাস করতে চায় না। প্রধান সমস্যা হয় সরকারি দপ্তরগুলোতে গেলে। কারণ, সরকারি কোনো পরিচয়পত্রে তাঁর পুরো নাম ধরানো সম্ভব হয় না!
জুন, ২০১০। উত্তপ্ত এক দিন। মা-বাবার মার খেয়ে রাগ করে বাড়ি ছাড়ে দুই ভাই-বোন। ১১ বছরের রাখি ও সাত বছরের বাবলুর পরিকল্পনা ছিল নানার বাড়ি চলে যাওয়ার। তাঁদের বাড়ি থেকে মোটে এক কিলোমিটার দূরে সেটা। তবে পথ হারাল তারা। মা নিতু কুমারীর কাছে ফিরে আসতে তাদের সময় লাগল ১৩ বছর!
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ইন্দোনেশিয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পরকীয়ায় ধরার পর অনন্য এক উপায়ে সম্পর্কের ইতি টানলেন। স্ত্রীকে তিনি প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে নিলেন একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কিছু পণ্য এবং নগদ অর্থ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশে, যেখানে তোলাকি নামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রাচীন সামাজিক রীতিনীতিতে...
৪ দিন আগেউত্তর চীনের হেনান প্রদেশের আনইয়াং শহরের একটি নার্সিং হোম সম্প্রতি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মূলত তাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নার্সিং হোমটির এক নারী কর্মকর্তা মিনি স্কার্ট ও স্কুল ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরে বয়স্ক রোগীদের সামনে
১১ দিন আগেথাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় চনবুরি প্রদেশে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জল-মহিষ উৎসব। শতাধিক বছরের পুরোনো এই উৎসবের লক্ষ্য হলো—মহিষদের সম্মান জানানো ও কৃষিক্ষেত্রে তাঁদের বিলুপ্তি রোধ করা। যন্ত্রচালিত কৃষিকাজে ট্রাক্টরের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে বর্তমানে মহিষের অবদান অনেকটাই কমে...
১৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
উত্তর চীনের হেনান প্রদেশের আনইয়াং শহরের একটি নার্সিং হোম সম্প্রতি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মূলত তাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নার্সিং হোমটির এক নারী কর্মকর্তা মিনি স্কার্ট ও স্কুল ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরে বয়স্ক রোগীদের সামনে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে নাচছেন।
ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘আমাদের পরিচালক বয়স্কদের ওষুধ খাওয়াতে যা যা করা দরকার, সবই করছেন।’ ভিডিওতে ওই নারীকে প্রাণবন্তভাবে নাচতে দেখা যায়। হাঁটু পর্যন্ত কালো মোজা পরিহিত অবস্থায় কোমর দোলাতে দেখা যায় তাঁকে। এরপর নীল ইউনিফর্ম পরা অন্য এক কর্মী এক প্রবীণ পুরুষের কাছে গিয়ে তাঁকে ওষুধ খাওয়ান।
নার্সিং হোমটির অনলাইন প্রোফাইল অনুযায়ী, এটি নব্বইয়ের দশকে জন্ম নেওয়া এক পরিচালকের উদ্যোগে পরিচালিত আনন্দমুখর অবসর নিবাস, যারা প্রবীণদের সুখী রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রোফাইলে আরও লেখা আছে, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো, বার্ধক্যের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা।’
ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। এক নেটিজেন মন্তব্য করেন, ‘এখন কি প্রবীণ যত্ন খাতে ইঙ্গিতপূর্ণ নাচও ঢুকে পড়েছে?’ জবাবে নার্সিং হোমের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট লিখেছে, ‘সবকিছুই ইঙ্গিতপূর্ণ নাচের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর নানগুও মেট্রোপলিস ডেইলিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নার্সিং হোমের পরিচালক জানান, ভিডিওতে থাকা নারী আসলে প্রবীণ যত্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী। তিনি স্বীকার করেন যে ভিডিওটি ‘অনুপযুক্ত’ ছিল, তবে ভবিষ্যতে ওই সিনিয়র কর্মীকে আরও সতর্ক হতে বলা হবে। পরিচালক আরও বলেন, ‘যদিও ওই নারী মাঝেমধ্যে প্রচারণামূলক ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি কোনো পেশাদার নৃত্যশিল্পী নন। সাধারণত এই হোমে বিনোদনের জন্য তাস খেলা ও গান গাওয়ার মতো প্রচলিত আয়োজন করা হয়।’
অন্য এক কর্মী পরে জানান, ওই নাচের ভিডিওগুলোর উদ্দেশ্য ছিল চীনের নার্সিং হোমগুলোকে নিয়ে প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করা। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখাতে চেয়েছিলাম যে নার্সিং হোম কোনো নিস্তেজ জায়গা নয়। এখানেও প্রাণবন্ততা আছে, প্রবীণেরাও প্রাণবন্ত হতে পারেন। তবে এখন বুঝতে পারছি, এই পদ্ধতির ভালো-মন্দ দুটোই আছে।’
জনরোষ বাড়তে থাকায় নার্সিং হোমটির সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে পরে শতাধিক এই সম্পর্কিত ভিডিও মুছে ফেলা হয়। আনইয়াং সিভিল অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর প্রবীণ সেবা বিভাগ জানিয়েছে, ঘটনাটির বিস্তারিত তদন্ত করা হবে এবং ফলাফল জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশটির প্রবীণ জনগোষ্ঠী দ্রুত বাড়ছে। ২০২৪ সালের শেষে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩১ কোটি, যা মোট জনসংখ্যার ২২ শতাংশ।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
উত্তর চীনের হেনান প্রদেশের আনইয়াং শহরের একটি নার্সিং হোম সম্প্রতি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মূলত তাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নার্সিং হোমটির এক নারী কর্মকর্তা মিনি স্কার্ট ও স্কুল ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরে বয়স্ক রোগীদের সামনে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে নাচছেন।
ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘আমাদের পরিচালক বয়স্কদের ওষুধ খাওয়াতে যা যা করা দরকার, সবই করছেন।’ ভিডিওতে ওই নারীকে প্রাণবন্তভাবে নাচতে দেখা যায়। হাঁটু পর্যন্ত কালো মোজা পরিহিত অবস্থায় কোমর দোলাতে দেখা যায় তাঁকে। এরপর নীল ইউনিফর্ম পরা অন্য এক কর্মী এক প্রবীণ পুরুষের কাছে গিয়ে তাঁকে ওষুধ খাওয়ান।
নার্সিং হোমটির অনলাইন প্রোফাইল অনুযায়ী, এটি নব্বইয়ের দশকে জন্ম নেওয়া এক পরিচালকের উদ্যোগে পরিচালিত আনন্দমুখর অবসর নিবাস, যারা প্রবীণদের সুখী রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রোফাইলে আরও লেখা আছে, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো, বার্ধক্যের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা।’
ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। এক নেটিজেন মন্তব্য করেন, ‘এখন কি প্রবীণ যত্ন খাতে ইঙ্গিতপূর্ণ নাচও ঢুকে পড়েছে?’ জবাবে নার্সিং হোমের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট লিখেছে, ‘সবকিছুই ইঙ্গিতপূর্ণ নাচের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর নানগুও মেট্রোপলিস ডেইলিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নার্সিং হোমের পরিচালক জানান, ভিডিওতে থাকা নারী আসলে প্রবীণ যত্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী। তিনি স্বীকার করেন যে ভিডিওটি ‘অনুপযুক্ত’ ছিল, তবে ভবিষ্যতে ওই সিনিয়র কর্মীকে আরও সতর্ক হতে বলা হবে। পরিচালক আরও বলেন, ‘যদিও ওই নারী মাঝেমধ্যে প্রচারণামূলক ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি কোনো পেশাদার নৃত্যশিল্পী নন। সাধারণত এই হোমে বিনোদনের জন্য তাস খেলা ও গান গাওয়ার মতো প্রচলিত আয়োজন করা হয়।’
অন্য এক কর্মী পরে জানান, ওই নাচের ভিডিওগুলোর উদ্দেশ্য ছিল চীনের নার্সিং হোমগুলোকে নিয়ে প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করা। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখাতে চেয়েছিলাম যে নার্সিং হোম কোনো নিস্তেজ জায়গা নয়। এখানেও প্রাণবন্ততা আছে, প্রবীণেরাও প্রাণবন্ত হতে পারেন। তবে এখন বুঝতে পারছি, এই পদ্ধতির ভালো-মন্দ দুটোই আছে।’
জনরোষ বাড়তে থাকায় নার্সিং হোমটির সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে পরে শতাধিক এই সম্পর্কিত ভিডিও মুছে ফেলা হয়। আনইয়াং সিভিল অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর প্রবীণ সেবা বিভাগ জানিয়েছে, ঘটনাটির বিস্তারিত তদন্ত করা হবে এবং ফলাফল জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশটির প্রবীণ জনগোষ্ঠী দ্রুত বাড়ছে। ২০২৪ সালের শেষে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩১ কোটি, যা মোট জনসংখ্যার ২২ শতাংশ।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
জুন, ২০১০। উত্তপ্ত এক দিন। মা-বাবার মার খেয়ে রাগ করে বাড়ি ছাড়ে দুই ভাই-বোন। ১১ বছরের রাখি ও সাত বছরের বাবলুর পরিকল্পনা ছিল নানার বাড়ি চলে যাওয়ার। তাঁদের বাড়ি থেকে মোটে এক কিলোমিটার দূরে সেটা। তবে পথ হারাল তারা। মা নিতু কুমারীর কাছে ফিরে আসতে তাদের সময় লাগল ১৩ বছর!
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ইন্দোনেশিয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পরকীয়ায় ধরার পর অনন্য এক উপায়ে সম্পর্কের ইতি টানলেন। স্ত্রীকে তিনি প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে নিলেন একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কিছু পণ্য এবং নগদ অর্থ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশে, যেখানে তোলাকি নামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রাচীন সামাজিক রীতিনীতিতে...
৪ দিন আগেবিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের দীর্ঘ নামের একটি আলাদা গুরুত্ব আছে। এই দীর্ঘ নামের মধ্য দিয়ে প্রায় সময় ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামো প্রতিফলিত হয়। দক্ষিণ ভারতে সাধারণত নামের সঙ্গে গ্রামের নাম, বাবার নাম এবং প্রদত্ত নাম যুক্ত থাকে। অন্যদিকে আরব বিশ্বে বংশগতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে একজনের নাম তার...
১০ দিন আগেথাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় চনবুরি প্রদেশে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জল-মহিষ উৎসব। শতাধিক বছরের পুরোনো এই উৎসবের লক্ষ্য হলো—মহিষদের সম্মান জানানো ও কৃষিক্ষেত্রে তাঁদের বিলুপ্তি রোধ করা। যন্ত্রচালিত কৃষিকাজে ট্রাক্টরের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে বর্তমানে মহিষের অবদান অনেকটাই কমে...
১৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
থাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় চনবুরি প্রদেশে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জল-মহিষ উৎসব। শতাধিক বছরের পুরোনো এই উৎসবের লক্ষ্য হলো—মহিষদের সম্মান জানানো ও কৃষিক্ষেত্রে তাঁদের বিলুপ্তি রোধ করা। যন্ত্রচালিত কৃষিকাজে ট্রাক্টরের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে বর্তমানে মহিষের অবদান অনেকটাই কমে গেছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, চনবুরির এই জল-মহিষ দৌড় উৎসবের ইতিহাস দেড় শ বছরের পুরোনো। নির্ধারিত স্থানে ফুলের মালা ও সাজসজ্জায় সজ্জিত মহিষদের সঙ্গে অংশ নেয় অসংখ্য স্থানীয় মানুষ। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত মহিষ-আরোহীদের দেখতেও ভিড় জমে পর্যটকদের।
রাজধানী ব্যাংকক থেকে ঘণ্টাখানেক দূরের এই উৎসব এখন শুধু বিনোদন নয়, বরং থাই সংস্কৃতির একটি জীবন্ত ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ‘কোয়াই’ নামে পরিচিত থাই জল-মহিষ অতীতে ছিল কৃষকের শক্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক। কিন্তু যান্ত্রিক চাষাবাদের ফলে এদের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে। তাই সরকার ও স্থানীয় কৃষকেরা এখন সংরক্ষণ ও প্রজনন কর্মসূচির মাধ্যমে মহিষ রক্ষায় সচেষ্ট হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক থাওয়াচাই ডেং-এনগামের পরিবার ৩০টি মহিষ পালন করে। তিনি বলেন, ‘মহিষ মাঠে কাজ করতে পারলেও তারা যন্ত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে না। তারপরও মহিষ আমাদের পরিবারের মতো। মানুষ মহিষ লালন করে, আর মহিষ মানুষকে বাঁচায়।’
ডেং-এনগামের পাঁচ বছর বয়সী কালো মহিষ ‘টড’ এই বছর প্রথমবারের মতো সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে এবং সবার মন জয় করেছে। মূলত মহিষের শিং, খুর ও দেহের গঠন দেখেই বিচারকেরা তার সৌন্দর্য বিচার করেন।
এখন মহিষ শুধু কৃষিকাজে নয়, উৎসব ও প্রদর্শনীর প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবে থাকে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য, ফুলে সাজানো মহিষের শোভাযাত্রা এবং ১০০ মিটারের দৌড় প্রতিযোগিতা। চনবুরির পশুপালন কেন্দ্রের সহকারী কর্মকর্তা পাপাদা স্রিসোফন বলেন, ‘প্রতি বছর উৎসব বড় হচ্ছে। এই আয়োজন না থাকলে কৃষকেরা মহিষ পালনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।’
উল্লেখ্য, থাই সরকার ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর ‘১৪ মে’ দিনটিকে ‘থাই মহিষ সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।
থাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় চনবুরি প্রদেশে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জল-মহিষ উৎসব। শতাধিক বছরের পুরোনো এই উৎসবের লক্ষ্য হলো—মহিষদের সম্মান জানানো ও কৃষিক্ষেত্রে তাঁদের বিলুপ্তি রোধ করা। যন্ত্রচালিত কৃষিকাজে ট্রাক্টরের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে বর্তমানে মহিষের অবদান অনেকটাই কমে গেছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, চনবুরির এই জল-মহিষ দৌড় উৎসবের ইতিহাস দেড় শ বছরের পুরোনো। নির্ধারিত স্থানে ফুলের মালা ও সাজসজ্জায় সজ্জিত মহিষদের সঙ্গে অংশ নেয় অসংখ্য স্থানীয় মানুষ। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত মহিষ-আরোহীদের দেখতেও ভিড় জমে পর্যটকদের।
রাজধানী ব্যাংকক থেকে ঘণ্টাখানেক দূরের এই উৎসব এখন শুধু বিনোদন নয়, বরং থাই সংস্কৃতির একটি জীবন্ত ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ‘কোয়াই’ নামে পরিচিত থাই জল-মহিষ অতীতে ছিল কৃষকের শক্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক। কিন্তু যান্ত্রিক চাষাবাদের ফলে এদের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে। তাই সরকার ও স্থানীয় কৃষকেরা এখন সংরক্ষণ ও প্রজনন কর্মসূচির মাধ্যমে মহিষ রক্ষায় সচেষ্ট হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক থাওয়াচাই ডেং-এনগামের পরিবার ৩০টি মহিষ পালন করে। তিনি বলেন, ‘মহিষ মাঠে কাজ করতে পারলেও তারা যন্ত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে না। তারপরও মহিষ আমাদের পরিবারের মতো। মানুষ মহিষ লালন করে, আর মহিষ মানুষকে বাঁচায়।’
ডেং-এনগামের পাঁচ বছর বয়সী কালো মহিষ ‘টড’ এই বছর প্রথমবারের মতো সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে এবং সবার মন জয় করেছে। মূলত মহিষের শিং, খুর ও দেহের গঠন দেখেই বিচারকেরা তার সৌন্দর্য বিচার করেন।
এখন মহিষ শুধু কৃষিকাজে নয়, উৎসব ও প্রদর্শনীর প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবে থাকে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য, ফুলে সাজানো মহিষের শোভাযাত্রা এবং ১০০ মিটারের দৌড় প্রতিযোগিতা। চনবুরির পশুপালন কেন্দ্রের সহকারী কর্মকর্তা পাপাদা স্রিসোফন বলেন, ‘প্রতি বছর উৎসব বড় হচ্ছে। এই আয়োজন না থাকলে কৃষকেরা মহিষ পালনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।’
উল্লেখ্য, থাই সরকার ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর ‘১৪ মে’ দিনটিকে ‘থাই মহিষ সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।
জুন, ২০১০। উত্তপ্ত এক দিন। মা-বাবার মার খেয়ে রাগ করে বাড়ি ছাড়ে দুই ভাই-বোন। ১১ বছরের রাখি ও সাত বছরের বাবলুর পরিকল্পনা ছিল নানার বাড়ি চলে যাওয়ার। তাঁদের বাড়ি থেকে মোটে এক কিলোমিটার দূরে সেটা। তবে পথ হারাল তারা। মা নিতু কুমারীর কাছে ফিরে আসতে তাদের সময় লাগল ১৩ বছর!
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ইন্দোনেশিয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পরকীয়ায় ধরার পর অনন্য এক উপায়ে সম্পর্কের ইতি টানলেন। স্ত্রীকে তিনি প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে নিলেন একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কিছু পণ্য এবং নগদ অর্থ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশে, যেখানে তোলাকি নামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রাচীন সামাজিক রীতিনীতিতে...
৪ দিন আগেবিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের দীর্ঘ নামের একটি আলাদা গুরুত্ব আছে। এই দীর্ঘ নামের মধ্য দিয়ে প্রায় সময় ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামো প্রতিফলিত হয়। দক্ষিণ ভারতে সাধারণত নামের সঙ্গে গ্রামের নাম, বাবার নাম এবং প্রদত্ত নাম যুক্ত থাকে। অন্যদিকে আরব বিশ্বে বংশগতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে একজনের নাম তার...
১০ দিন আগেউত্তর চীনের হেনান প্রদেশের আনইয়াং শহরের একটি নার্সিং হোম সম্প্রতি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মূলত তাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নার্সিং হোমটির এক নারী কর্মকর্তা মিনি স্কার্ট ও স্কুল ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরে বয়স্ক রোগীদের সামনে
১১ দিন আগে