Ajker Patrika

বিশ্বের কুখ্যাত ১০ জলদস্যু

বিশ্বের কুখ্যাত ১০ জলদস্যু

জলদস্যুরা শত শত বছর ধরে আমাদের কল্পনায় বিশেষ এক জায়গা করে নিয়েছে। এর কারণ জলদস্যুদের ভয়াবহতার নানা কাহিনি, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সাগরে রোমাঞ্চকর অভিযান ও তাঁদের গুপ্তধন। এদিকে এখন বাংলাদেশি একটি জাহাজের দখলে নিয়ে ২৩ নাবিককে জিম্মি করে আলোচনায় সোমালি জলদস্যুরা। অবশ্য এখনকার এই জলদস্যুদের সঙ্গে পুরোনো দিনের সেই জলদস্যুদের অনেকই তফাত। 

আগের জমানার ওই জলদস্যুরা শাসন করত সাগর। ব্ল্যাকবিয়ার্ড থেকে শুরু করে অ্যানি বনি, এই সব জলদস্যুরা যে শুধু অপরাধী ছিল তা নয়, তারা প্রকৃতপক্ষে পরিণত হয়েছে কিংবদন্তিতে। 

জলদস্যুতার সোনালি সময়
সতেরো ও আঠারো শতকে পৃথিবীর সাগর-মহাসাগরগুলোয় মহা দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করেছে জলদস্যুরা। জলদস্যুতার স্বর্ণযুগ হিসেবে পরিচিত এই উত্তাল যুগে কুখ্যাত সব জলদস্যুর উত্থান ঘটেছিল। যারা বণিকদের জাহাজ লুণ্ঠন করত, উপকূলীয় শহরগুলিতে লুটতরাজ চালাত। চলুন তবে কয়েকটি শতাব্দী পিছিয়ে যাই, পরিচিত হই জলদস্যুতার সোনালি সময়ের সেই সব দুর্দমনীয়-ভয়ংকর জলদস্যুদের সঙ্গে। 

ব্ল্যাকবিয়ার্ড
যার নাম শুনলেই জাহাজের ক্যাপ্টেন ও নাবিকদের গা কাটা দিয়ে উঠত তিনি ব্ল্যাকবিয়ার্ড। তার আসল নাম এডওয়ার্ড টিচ। অনেকের বিবেচনাতেই তিনি ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর জলদস্যু। কালো জট পাকানো চুল, দাঁড়ির কিনারা থেকে বের হওয়া ধোঁয়া, ভাটার মতো জ্বলন্ত দুই চোখ, শরীরের সঙ্গে আটকানো পিস্তল—সব মিলিয়ে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে দেখলেই আত্মরাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় হতো নাবিকদের। 

ব্ল্যাকবিয়ার্ডের হাত থেকে বেঁচে ফেরা নাবিকেরা জানান, লুটতরাজের সময় টুপির নিচে জ্বলন্ত দড়ির টুকরো রেখে দিত ভয়ানক এই দস্যু। জাহাজের একটি বহরের নেতৃত্ব দেওয়া ব্ল্যাকবিয়ার্ড ক্যারিবিয়ান ও আটলান্টিক মহাসাগরে জাহাজ লুট করে বিশাল সম্পদের মালিক হন। বলা চলে অক্ষত অবস্থায় তার এলাকা অতিক্রমের সাধ্য ছিল না কোনো জাহাজের। পরে পাইরেট হান্টারদের হাতে নিহত হন এই ভয়ংকর দস্যু। 

দিনটি ছিল ১৭১৮ সালের ২২ নভেম্বর। আমেরিকার উত্তর ক্যারোলাইনার ওকরাকক দ্বীপের কাছে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে কোণঠাসা করে ফেলে পাইরেট হান্টাররা। জলদস্যুদের জন্য ঘোষণা করা পুরস্কারের অর্থ পাওয়ার জন্য যারা তাদের ধরত বা মারত তাদেরই বলা হতো পাইরেট হান্টার। দারুণ যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত মারা পড়েন ব্ল্যাকবিয়ার্ড। 

অ্যান বনি
পুরুষের আধিপত্যময় এক বিশ্বে, অ্যান বনি আবির্ভূত হন নিষ্ঠুর এবং নির্ভীক এক নারী জলদস্যু হিসেবে। আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী বনি সামাজিক রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে বনে যান জলদস্যু। প্রেমিক কুখ্যাত ক্যালিকো জ্যাক র‍্যাকহেমের সঙ্গে মিলে ক্যারিবিয়ান সাগরে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতেন অ্যান বনি। 

একজন দক্ষ যোদ্ধা হিসেবে তার খ্যাতি এবং নারীর প্রথাগত ভূমিকা মেনে চলতে অস্বীকৃতি বনিকে জলদস্যুদের মধ্যে একজন কিংবদন্তিতে পরিণত করে। তবে একপর্যায়ে বন্দী হন এবং মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। তবে তিনি ফাঁসির মঞ্চ থেকে পালাতে সক্ষম হন। তারপর তার আর খোঁজ না মিললেও বনির সাহস এবং অনমনীয়তা রোমাঞ্চপ্রেমী মানুষের মনে চিরস্থায়ী জায়গা দিয়েছে তাকে। 

শিল্পীর তুলিতে ক্যালিকো জ্যাক র‍্যাকহেম। ছবি: সংগৃহীতক্যালিকো জ্যাক র‍্যাকহেম
বনির কথা যেহেতু বলা হলোই তাহলে তার প্রেমিক ক্যালিকো জ্যাক রেকহ্যাম কেন বাদ থাকবেন! র‍্যাকহেম রঙিন সুতির বা ক্যালিকো পোশাক পরতেন। এ কারণে ক্যালিকো জ্যাক নামে পরিচিতি পান। তার জলদস্যু জীবন ছিল স্বল্পস্থায়ী। কারণ তাকে বন্দী করার পর ১৭২০ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে বন্দী হওয়ার আগেই অসংখ্য জাহাজ দখল ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে কুখ্যাতি অর্জন করেন। 

শিল্পীর তুলিতে ক্যাপ্টেন কিড। ছবি: সংগৃহীতক্যাপ্টেন কিড
উইলিয়াম কিড পরিচিত ছিলেন ক্যাপ্টেন কিড নামে। তার শুরুটা প্রাইভেটিয়ার হিসেবে। ব্রিটিশ সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত এই প্রাইভেটিয়ারদের কাজ ছিল যুদ্ধের সময় শত্রু জাহাজ আক্রমণ করা। তবে দ্রুতই জলদস্যুতে পরিণত হন। শত্রু জাহাজের পাশাপাশি সাধারণ সদাগরি জাহাজগুলিও তার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এটা তাকে একজন নির্মম এবং রক্তপিপাসু জলদস্যু হিসেবে কুখ্যাতি এনে দেয়। তবে একপর্যায়ে কিড বন্দী হন এবং বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। যতদূর জানা যায় ১৭০১ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় তার। 

বার্থলোমিও রবার্টস
বার্থলোমিও রবার্টস পরিচিত ছিলেন ব্ল্যাক বার্ট নামে। অনেকেই তাকে বিবেচনা করেন সোনালি যুগের সবচেয়ে সফল জলদস্যু হিসেবে। ৪০০-র বেশি জাহাজ দখল করে নাবিকদের মধ্যে নিজেদের ভীতিকর এক ইমেজ তৈরি করেন তিনি। রবার্টস তার কঠোর আচরণবিধির জন্য পরিচিত ছিলেন। নিজের জাহাজে জুয়া, মদ্যপান এবং লড়াই নিষিদ্ধ করেছিলেন। 

শিল্পীর তুলিতে হেনরি মরগান। ছবি: সংগৃহীতহেনরি মরগান
হেনরি মরগানের গল্পটা অন্য জলদস্যুদের চেয়ে একটু ভিন্ন। শুরুটা তার জলদস্যু হিসেবে। বিশেষ করে স্প্যানিশ উপনিবেশগুলিতে হামলা চালিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। তবে একপর্যায়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পান এবং ব্রিটিশ সরকার স্পেনীয় জাহাজে আক্রমণ চালানোর জন্য প্রাইভেটিয়ার হিসেবে দায়িত্ব দেয় তাকে। পানামা সিটি দখল করে বিপুল অর্থ-সম্পদ লুণ্ঠন করেন। পরবর্তীতে জ্যামাইকার লেফটেন্যান্ট গভর্নর হন। ১৬৮৮ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি। 

শিল্পীর তুলিতে মেরি রিড। ছবি: সংগৃহীতমেরি রিড
অ্যান বনির মতো কুখ্যাতি কামানো আরেক নারী জলদস্যু মেরি রিড। তবে তিনি সবসময় থাকতেন পুরুষের ছদ্মবেশে। এমনকি দলের অন্য জলদস্যুদের থেকেও নিজের পরিচয় লুকিয়ে রেখেছিলেন। সেটা প্রকাশ পায় রিডসহ অন্য জলদস্যুরা ধরা পড়ার পর। 

বন্দী হওয়ার পরে, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগেই কারাগারে মারা যান তিনি। তার গল্প সেইসব নারীর গুপ্ত ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে কাজ করে যারা চিরাচরিত রীতিকে অস্বীকার করেন এবং জলদস্যুতার মাধ্যমে স্বাধীনতা পেয়েছিলেন।

শিল্পীর তুলিতে চিং শি। ছবি: সংগৃহীতচিং শি
চীনা এই নারী জলদস্যু নেতৃত্ব দিতেন ইতিহাসের জলদস্যুদের সবচেয়ে বড় জাহাজ বহরগুলির একটির। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে দক্ষিণ চীন সাগরে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। সদাগরি জাহাজের পাশাপাশি ও নৌবাহিনীর জাহাজও আতঙ্কে থাকত এই নারী জলদস্যু ও তার দলবলকে নিয়ে। 

চিং শির অসাধারণ কৌশল এবং কঠোর আচরণবিধি তাকে প্রচুর সম্পদের মালিক করার পাশাপাশি বিপুল ক্ষমতাশালী করে। অবশ্য একপর্যায়ে জলদস্যুর জীবন ছেড়ে সাধারণ, বৈধ নাগরিকের মতো জীবন-যাপন করতে থাকেন। 

এডওয়ার্ড লো
নাবিকদের মনে ভীতি সৃষ্টির জন্য এডওয়ার্ড লোর নামটিই ছিল যথেষ্ট। তিনি বন্দীদের সঙ্গে নৃশংস আচরণের জন্য কুখ্যাতি পান। নিষ্ঠুরতার জন্য তার খ্যাতি তাকে আঠারো শতকের সবচেয়ে কুখ্যাত জলদস্যুদের তালিকায় ওপরের দিকে রাখবে। অবশ্য একপর্যায়ে তাকে বন্দী করা হয় এবং ফাঁসি দেওয়া হয়। 

শিল্পীর তুলিতে জঁ লাফিত। ছবি: সংগৃহীতজঁ লাফিত
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে গালফ অব মেক্সিকো এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে অভিযান চালাতেন জঁ লাফিত। লাফিত ও তার ভাই পিয়ের চোরাচালানের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেন। ১৮১২ সালের যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করার আগ্রহের জন্যও পরিচিতি পান। তার অপারেশনের মূল ঘাঁটি ছিল নিউ অরলিন্স। সেখানে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করার জন্যও পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে একজন প্রাইভেটিয়ার হিসেবে তার দক্ষতা তাকে আমেরিকানদের কাছে মূল্যবান এক সম্পদে পরিণত করে। নায়ক এবং খলনায়কের মধ্যে সীমারেখা অনেকটাই ঝাপসা করে দেন জঁ লাফিত। 

সূত্র: ফ্যামিলি ওয়াইজ ডট কম ইউকে, উইকিপিডিয়া

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

আনিস আলমগীর এখনো ডিবি কার্যালয়ে

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে হামলায় নিহত বেড়ে ১৫, আহত ৪০ জনেরও বেশি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লিংকডইনে গার্লফ্রেন্ড চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর যা ঘটল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১২
‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। ছবি: লিংকডইন থেকে নেওয়া।
‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। ছবি: লিংকডইন থেকে নেওয়া।

চাকরি খোঁজার জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম লিংকডইন। সেখানে কর্মীরা চাকরি খোঁজেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান সেখান থেকে কর্মীদের বাছাই করে থাকে। এই প্ল্যাটফর্মে এবার ‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রুপ।

ভারতের হরিয়ানার গুরুগ্রামের দীনেশ বৈরাগী। ‘পূর্ণকালীন’ চাকরির অফার দিয়ে নারীবন্ধু খুঁজেছেন লিংকডইনে। ওই বিজ্ঞাপনের বিবরণে সম্ভাব্য ‘গার্লফ্রেন্ড’-এর জন্য প্রয়োজনীয় নানা গুণাবলির কথাও উল্লেখ করেছেন দীনেশ।

টেক মাহিন্দ্রার সাবেক সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট দীনেশ চাকরির বিজ্ঞাপনে লিখেছেন, ‘গুরগাঁওয়ে পূর্ণকালীন গার্লফ্রেন্ডের পদ খালি আছে। সরাসরি দেখা করা এবং দূর থেকে দায়িত্ব পালন দুটোই করতে হবে।’

প্রযুক্তিখাতে অভিজ্ঞ এই যুবক চাকরির বিজ্ঞাপনে আরও লিখেছেন, ‘এই ভূমিকায় শক্তিশালী আবেগগত সম্পর্ক গড়ে তোলা ও তা বজায় রাখা, অর্থবহ কথোপকথনে অংশ নেওয়া, সঙ্গ দেওয়া, পারস্পরিক সমর্থন এবং সঙ্গীর সঙ্গে বিভিন্ন কার্যক্রম বা শখে যুক্ত থাকার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’

তিনি আরও লেখেন, ‘সক্রিয় যোগাযোগ, পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়া এই ভূমিকাটির ভিত্তি হবে। পাশাপাশি যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ইতিবাচক ও সহায়ক সম্পর্কের পরিবেশ গড়ে তোলাও এর অন্তর্ভুক্ত।’

দীনেশ চাকরিপ্রার্থীর যোগ্যতার ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার আবেগগত বুদ্ধিমত্তা, শোনার সক্ষমতা, সহমর্মিতা ও আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতার কথা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া তিনি জানান, এমন একজনকে তিনি খুঁজছেন, যাঁর মধ্যে রসবোধ, দয়া এবং ইতিবাচক মানসিকতা থাকবে।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ও যৌথ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার সক্ষমতা থাকতে হবে। শখ, কার্যক্রমে আগ্রহ বা একসঙ্গে নতুন অভিজ্ঞতা গড়ে তোলার মানসিকতারও প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি সম্পর্কের ভেতরে পারস্পরিক সমর্থন ও বিকাশে আগ্রহী হতে হবে।’

লিংকডইনে দেওয়া এই চাকরি খোঁজার মতো করে গার্লফ্রেন্ড খোঁজার পোস্টটি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটি নিয়ে রসিকতার বন্যা বইয়ে দেন নেটিজেনরা। অনেকেই এই অদ্ভুত চাকরির বিজ্ঞাপন নিয়ে ঠাট্টা–মশকরা করেন, আবার কেউ কেউ সরাসরি পারিশ্রমিক বা বেতন প্যাকেজ সম্পর্কে জানতে চান।

একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘ওহ, এখন সব পরিষ্কার! তাহলে আমার প্রাক্তন আমার সঙ্গে ছয় মাস গার্লফ্রেন্ড হিসেবে ইন্টার্নশিপ করেছিল, এরপর অন্য কোথাও ফুলটাইম গার্লফ্রেন্ডের চাকরি পেয়ে চলে গেছে।’

আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘আপনি যদি আসলেই ভারতীয় হন, তাহলে যেকোনো অ্যাপই ডেটিং অ্যাপ বানিয়ে ফেলবেন।’

তৃতীয় একজন লিখেছেন, ‘পদের বিবরণ দেখে বেশ চমকপ্রদই লাগছে, কিন্তু স্যালারি কত?’

একজন ব্যবহারকারী প্রশ্ন করেন, ‘তিনি কি লিংকডইনের পোস্টের মাধ্যমে কোনো পরীক্ষা চালাচ্ছেন?’ উত্তরে দীনেশ বলেন, ‘একেবারেই না। এটি একটি প্রকৃত শূন্যপদ। প্রোফাইলটি ভালোভাবে বোঝার জন্য আমি চাকরির বিবরণ দেখার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া কেউ যদি আগ্রহী ও যোগ্য হন, তাদেরও নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।’

শেষ আপডেট অনুযায়ী দীনেশ জানিয়েছেন, এই ‘চাকরির’ জন্য এরইমধ্যে ২৬ জন আবেদন করেছেন। এখন নতুন কোনো আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

আনিস আলমগীর এখনো ডিবি কার্যালয়ে

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে হামলায় নিহত বেড়ে ১৫, আহত ৪০ জনেরও বেশি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অফিসে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ায় চাকরি হারালেন প্রকৌশলী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪৯
প্রতীকী ছবি। ছবি: পিক্সাবে
প্রতীকী ছবি। ছবি: পিক্সাবে

কাজের মধ্যে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নিয়ে চাকরি খুইয়েছেন এক চীনা প্রকৌশলী। চীনের পূর্বাঞ্চলের জিয়াংসু প্রদেশের ওই প্রকৌশলী ঘন ঘন এবং প্রতিবার এক ঘণ্টার বেশি সময় টয়লেটে কাটাচ্ছিলেন। যদিও তাঁর দাবি ছিল, তিনি অর্শ বা পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন।

হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি ভাষার দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে বলা হয়েছে জিয়াংসু প্রদেশের লি নামক ওই ব্যক্তি গত বছর এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে এক মাসে ১৪ বার টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নেন। এর মধ্যে একবার তিনি চার ঘণ্টা টয়লেটে কাটান। এর জেরে তাঁকে চাকরি হারাতে হয়।

এই খবর সম্প্রতি সাংহাই ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নসের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

ওই ব্যক্তি বেআইনিভাবে চুক্তি বাতিলের জন্য কোম্পানির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলে বিষয়টি সামনে আসে। লি প্রমাণ হিসেবে গত বছর মে ও জুন মাসে তাঁর সঙ্গীর কেনা অর্শের ওষুধ এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তাঁর হাসপাতালে ভর্তি ও অস্ত্রোপচারের নথিও পেশ করেন।

এরপর লি ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করে বেআইনিভাবে চুক্তি বাতিলের দায়ে ৩ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। অন্যদিকে কোম্পানি লি-এর ঘন ঘন এবং দীর্ঘ সময় ধরে বিরতিতে থাকার প্রমাণস্বরূপ সিসিটিভি ফুটেজ আদালতে জমা দেয়।

আদালতের বিশ্বাস, লি টয়লেটে যে সময় ব্যয় করেছেন, তা তাঁর ‘শারীরিক প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি’ ছিল। এ ছাড়া লি যে ডাক্তারি নথি জমা দিয়েছেন, তা তাঁর বহুবার দীর্ঘ পানির বিরতি নেওয়ার পরের সময়ের। চুক্তিতে প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও লি তাঁর অসুস্থতার কথা কোম্পানিকে আগে জানাননি বা অসুস্থতাজনিত ছুটির জন্য আবেদনও করেননি।

কোম্পানি লি-কে তাঁর অনুপস্থিতি লক্ষ্য করে প্রথমে একটি চ্যাট অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করে, কিন্তু কোনো উত্তর পায়নি। লি-এর পদে কাজ করার জন্য তাঁকে সব সময় কাজের অনুরোধে সাড়া দিতে হয়। সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করার পর কোম্পানি তাঁকে বরখাস্ত করে।

লি ২০১০ সালে কোম্পানিতে যোগ দেন এবং ২০১৪ সালে একটি উন্মুক্ত-মেয়াদি চুক্তি নবায়ন করেন। চুক্তি অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিজের কর্মস্থল ত্যাগ করাকে অনুপস্থিতি বলে গণ্য করা হবে এবং ১৮০ দিনের মধ্যে মোট তিন কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকলে চুক্তি সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হয়ে যাবে।

বরখাস্ত করার আগে কোম্পানি ট্রেড ইউনিয়নের অনুমতিও নিয়েছিল। দুই দফা বিচার পর্বের পর আদালত অবশেষে দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করেন এবং লি-এর কোম্পানিতে অবদানের কথা এবং বেকারত্বের পর তাঁর অসুবিধার কথা বিবেচনা করে কোম্পানিকে ৩০ হাজার ইউয়ান ভাতা দিয়ে মামলাটি মিটিয়ে নিতে রাজি করান।

চীনে এ ধরনের বিরতি নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। এর আগে ২০২৩ সালেও জিয়াংসু প্রদেশের আরেক ব্যক্তিকে একই অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তাঁর দীর্ঘতম বিরতি ছিল এক দিনে ছয় ঘণ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

আনিস আলমগীর এখনো ডিবি কার্যালয়ে

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে হামলায় নিহত বেড়ে ১৫, আহত ৪০ জনেরও বেশি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যর্থ ব্যবসায়ী ফুড ডেলিভারি করে লাখপতি

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১১
প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি
প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

সাধারণত অস্থায়ী পেশা হিসেবে ফুড ডেলিভারির চাকরি অনেকেই করেন। কেউ আবার মূল চাকরির ফাঁকে ফুড ডেলিভারি দেন অতিরিক্ত আয়ের জন্য। কিন্তু এ কাজ করেও যে লাখ টাকার মালিক হওয়া যায়, তা দেখিয়ে দিলেন চীনের সাংহাই শহরের ঝাং শুয়েচিয়াং নামের এক তরুণ।

ফুড ডেলিভারি করতে করতে মাত্র পাঁচ বছরে ১১ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান সঞ্চয় করেছেন তিনি, যা বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার সমান। প্রতিদিন গড়ে ১৪ ঘণ্টা কাজ আর কঠোর মিতব্যয়িতাই তাঁকে লাখপতি বানিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

ব্যর্থ ব্যবসা, তারপর নতুন শুরু

ঝাংয়ের বাড়ি ফুজিয়ান প্রদেশের ঝাংঝো শহরে। ২০১৯ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে তিনি একটি নাশতার দোকান চালু করেন। শুরুতে কিছুটা আশাব্যঞ্জক হলেও কয়েক মাসের মধ্যেই ব্যবসার অবস্থা হয়ে যায় টালমাটাল। লোকসান দিন দিন বাড়তে থাকে, ক্রেতা কমে যায় এবং প্রতিদিনের খরচ টানতে গিয়ে তিনি চাপের মুখে পড়েন। শেষ পর্যন্ত দোকানটি বন্ধ করতে বাধ্য হন এবং তাঁর কাঁধে চাপে প্রায় ৫০ হাজার ইউয়ানের ঋণ।

চীনের সাংহাই শহরের ঝাং শুয়েচিয়াং। ফুড ডেলিভারি করতে মাত্র পাঁচ বছরে বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার সমান আয় করেন। ছবি: এসইটিএন
চীনের সাংহাই শহরের ঝাং শুয়েচিয়াং। ফুড ডেলিভারি করতে মাত্র পাঁচ বছরে বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার সমান আয় করেন। ছবি: এসইটিএন

এ ব্যর্থতা তরুণ ঝাংকে মানসিকভাবে দমিয়ে দেয়। কিন্তু তিনি পরিবারকে বিষয়টি বুঝতে দিতে চাননি। তাই সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে একাই রওনা দেন সাংহাইয়ের পথে। বড় শহরে গিয়ে নতুন করে শুরু করার সিদ্ধান্ত তাঁর জন্য সহজ ছিল না। তবুও লক্ষ্য ছিল যত দ্রুত সম্ভব ঋণ শোধ করা, আবার উঠে দাঁড়ানোর মতো মূলধন জোগাড় করা এবং নিজের জন্য একটি নতুন পথ তৈরি করা।

১৪ ঘণ্টার কর্মদিবস এবং অবিশ্বাস্য পরিশ্রম

সাংহাইয়ের মিনহাং জেলায় উঝং রোডের একটি ডেলিভারি স্টেশনে তিনি কাজ শুরু করেন। সকাল ১০টা ৪০ থেকে রাত ১টা পর্যন্ত বৃষ্টি, ঠান্ডা কিংবা গরম—সব পরিস্থিতিতেই তিনি মাঠে থাকেন ডেলিভারির কাজে। সবার আগে অর্ডার ধরতে এবং দ্রুত ডেলিভারি দিতে তিনি সব সময় ছুটে চলেন। ডেলিভারি স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়ান বলেন, ‘ছেলেটা খুব কম কথা বলে, কিন্তু কাজ করে অবিশ্বাস্য পরিশ্রম দিয়ে। প্রতিদিনই দেখি সে সময় বাঁচাতে দৌড়াচ্ছে।’

কাজের দক্ষতার কারণে সহকর্মীরা তাঁকে ডাকেন ‘অর্ডারের রাজা’ নামে। টানা দীর্ঘ শিফটের পরও তিনি প্রতিদিন ৮ ঘণ্টার বেশি ঘুম নিশ্চিত করেন, যাতে পরদিন আবার পুরো শক্তিতে কাজ করতে পারেন।

কঠোর মিতব্যয়িতা

ঝাংয়ের সঞ্চয়ের সবচেয়ে বড় রহস্য তাঁর মিতব্যয়ী জীবনযাপন। প্রয়োজন ছাড়া তিনি কোনো খরচ করেন না। বাইরে খাওয়া, বিনোদন, ভ্রমণ—কোনো কিছুতেই ব্যয় করেন না তিনি। এমনকি চন্দ্র নববর্ষেও তিনি বাড়ি যান না। তখন শহরে থেকে উচ্চমূল্যের অর্ডার ডেলিভারি করেন। এই কঠোর জীবনযাপন ও পরিশ্রম মিলিয়ে পাঁচ বছরে তাঁর মোট আয় দাঁড়ায় প্রায় ১৪ লাখ ইউয়ান। প্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিয়ে সঞ্চয় হয় ১১ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান।

ঝাং জানান, তাঁর পরিবার এখনো জানে না যে তিনি ঋণ শোধ করে বড় অঙ্কের সঞ্চয় করেছেন। তিনি বলেন, ‘একবার ব্যর্থ হয়েছি বলে থেমে থাকব না। ভবিষ্যতে আবার ব্যবসা শুরু করার পুঁজি হিসেবেই এ টাকা জমাচ্ছি।’

চীনের তরুণদের নতুন পেশা হিসেবে ডেলিভারি

অর্থনৈতিক ধাক্কা ও চাকরির বাজারের পরিবর্তনের মধ্যে চীনে ডেলিভারি পেশা দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। নিয়োগ প্ল্যাটফর্ম ঝাওপিনের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশটিতে ডেলিভারি কর্মীদের মধ্যে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রিধারীর হার দুই বছরে ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ শতাংশে। আয়ও অনেক অফিসকর্মীর চেয়ে বেশি। বেইজিং বা সাংহাইয়ের মতো বড় শহরে যেখানে সাধারণ একজন অফিসকর্মী মাসে গড়ে আয় করেন ৬ হাজার ইউয়ান, সেখানে ডেলিভারি ড্রাইভারদের গড় আয় মাসে ৭ হাজার ৩৫০ ইউয়ান পর্যন্ত। ব্যস্ত দিনে ঝাংয়ের মতো পরিশ্রমী ডেলিভারি কর্মীরা দিনে হাজার ইউয়ানের বেশি আয় করতে পারেন।

সূত্র: ভিএন এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

আনিস আলমগীর এখনো ডিবি কার্যালয়ে

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে হামলায় নিহত বেড়ে ১৫, আহত ৪০ জনেরও বেশি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিমানের ডানায় আটকে গেল প্যারাস্যুট, অলৌকিকভাবে বাঁচলেন স্কাইডাইভার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৯
বিমানটির ডানায় এভাবেই আটকে গিয়েছিলেন স্কাইডাইভার। ছবি: সংগৃহীত
বিমানটির ডানায় এভাবেই আটকে গিয়েছিলেন স্কাইডাইভার। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার ফার নর্থ কুইন্সল্যান্ডে গত ২০ সেপ্টেম্বর ঘটে বিস্ময়কর সেই দুর্ঘটনাটি। সেদিন প্রায় ৪ হাজার ৬০০ মিটার উচ্চতায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন এক স্কাইডাইভার। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) প্রকাশিত অস্ট্রেলিয়ান ট্রান্সপোর্ট সেফটি ব্যুরোর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটির বিস্তারিত উঠে এসেছে।

এই বিষয়ে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ফার নর্থ কুইন্সল্যান্ডের টুলি এয়ারপোর্টের আকাশে ১৭ জন প্যারাস্যুটার একটি ‘সিক্সটিন-ওয়ে ফরমেশন জাম্পে’ অংশ নিচ্ছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রথমজন যখন বিমান থেকে বের হচ্ছিলেন, ঠিক তখনই তাঁর রিজার্ভ প্যারাস্যুটের হ্যান্ডেলটি বিমানের উইং ফ্ল্যাপে আটকে যায়। এর ফলে মুহূর্তের মধ্যেই রিজার্ভ প্যারাস্যুট খুলে যায় এবং বাতাসের হঠাৎ টানে পেছনের দিকে ছিটকে গিয়ে বিমানের ডানায় ধাক্কা খান এবং আটকে যান ওই স্কাইডাইভার। এতে বিমানের ডানায় ও স্ট্যাবিলাইজারে গুরুতর ক্ষতি হয়।

প্যারাস্যুটের দড়ি স্ট্যাবিলাইজারের চারপাশে পেঁচিয়ে যাওয়ায় স্কাইডাইভার ঝুলন্ত অবস্থায় অচল হয়ে পড়েন। অন্য প্যারাস্যুটারেরা জাম্প সম্পন্ন করলেও দুজন দরজায় দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি দেখছিলেন। ঝুলে থাকা প্যারাস্যুটার জীবন বাঁচাতে তাঁর হুক নাইফ বের করে রিজার্ভ প্যারাস্যুটের ১১টি লাইন কেটে নিজেকে মুক্ত করেন। এরপর তিনি মূল প্যারাস্যুট খুলতে সক্ষম হন, যদিও রিজার্ভ প্যারাস্যুটের কিছু লাইন তখনো তাঁকে জড়িয়ে ছিল।

এদিকে পাইলট হঠাৎ বিমানটিকে ওপরের দিকে ঢলে যেতে এবং গতি কমে যেতে দেখে প্রথমে ভেবেছিলেন বিমানটিতে ত্রুটি হয়েছে। পরে তাঁকে জানানো হয়, একজন স্কাইডাইভার বিমানের পেছনে ডানায় ঝুলে আছেন। এ অবস্থায় পাইলট জরুরি ‘মে ডে’ বার্তা পাঠান এবং প্রয়োজনে নিজেও বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন।

অবশেষে ২,৫০০ ফুট উচ্চতায় এসে পাইলট বুঝতে পারেন, বিমানটি তাঁর নিয়ন্ত্রণেই আছে। ছোট-খাটো আঘাত নিয়ে নিরাপদেই অবতরণ করেন ওই স্কাইডাইভার এবং পাইলটও ক্ষতিগ্রস্ত বিমানটিকে নিরাপদে অবতরণ করাতে সক্ষম হন।

এই ঘটনার পর স্কাইডাইভারদের প্রতি এক সতর্কবার্তায় ‘অস্ট্রেলিয়ান ট্রান্সপোর্ট সেফটি ব্যুরো’ বলেছে—বিমানের দরজার কাছে প্যারাস্যুটের হ্যান্ডেল সম্পর্কে অতিরিক্ত সতর্ক হতে হবে এবং জরুরি অবস্থার জন্য হুক নাইফ অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে। ব্যুরো আরও জানিয়েছে, বিমানের ওজন ও ভারসাম্য নির্ণয় স্কাইডাইভিং অভিযানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অতীতে এসব কারণে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

আনিস আলমগীর এখনো ডিবি কার্যালয়ে

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে হামলায় নিহত বেড়ে ১৫, আহত ৪০ জনেরও বেশি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত