জলদস্যুরা শত শত বছর ধরে আমাদের কল্পনায় বিশেষ এক জায়গা করে নিয়েছে। এর কারণ জলদস্যুদের ভয়াবহতার নানা কাহিনি, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সাগরে রোমাঞ্চকর অভিযান ও তাঁদের গুপ্তধন। এদিকে এখন বাংলাদেশি একটি জাহাজের দখলে নিয়ে ২৩ নাবিককে জিম্মি করে আলোচনায় সোমালি জলদস্যুরা। অবশ্য এখনকার এই জলদস্যুদের সঙ্গে পুরোনো দিনের সেই জলদস্যুদের অনেকই তফাত।
আগের জমানার ওই জলদস্যুরা শাসন করত সাগর। ব্ল্যাকবিয়ার্ড থেকে শুরু করে অ্যানি বনি, এই সব জলদস্যুরা যে শুধু অপরাধী ছিল তা নয়, তারা প্রকৃতপক্ষে পরিণত হয়েছে কিংবদন্তিতে।
জলদস্যুতার সোনালি সময়
সতেরো ও আঠারো শতকে পৃথিবীর সাগর-মহাসাগরগুলোয় মহা দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করেছে জলদস্যুরা। জলদস্যুতার স্বর্ণযুগ হিসেবে পরিচিত এই উত্তাল যুগে কুখ্যাত সব জলদস্যুর উত্থান ঘটেছিল। যারা বণিকদের জাহাজ লুণ্ঠন করত, উপকূলীয় শহরগুলিতে লুটতরাজ চালাত। চলুন তবে কয়েকটি শতাব্দী পিছিয়ে যাই, পরিচিত হই জলদস্যুতার সোনালি সময়ের সেই সব দুর্দমনীয়-ভয়ংকর জলদস্যুদের সঙ্গে।
ব্ল্যাকবিয়ার্ড
যার নাম শুনলেই জাহাজের ক্যাপ্টেন ও নাবিকদের গা কাটা দিয়ে উঠত তিনি ব্ল্যাকবিয়ার্ড। তার আসল নাম এডওয়ার্ড টিচ। অনেকের বিবেচনাতেই তিনি ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর জলদস্যু। কালো জট পাকানো চুল, দাঁড়ির কিনারা থেকে বের হওয়া ধোঁয়া, ভাটার মতো জ্বলন্ত দুই চোখ, শরীরের সঙ্গে আটকানো পিস্তল—সব মিলিয়ে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে দেখলেই আত্মরাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় হতো নাবিকদের।
ব্ল্যাকবিয়ার্ডের হাত থেকে বেঁচে ফেরা নাবিকেরা জানান, লুটতরাজের সময় টুপির নিচে জ্বলন্ত দড়ির টুকরো রেখে দিত ভয়ানক এই দস্যু। জাহাজের একটি বহরের নেতৃত্ব দেওয়া ব্ল্যাকবিয়ার্ড ক্যারিবিয়ান ও আটলান্টিক মহাসাগরে জাহাজ লুট করে বিশাল সম্পদের মালিক হন। বলা চলে অক্ষত অবস্থায় তার এলাকা অতিক্রমের সাধ্য ছিল না কোনো জাহাজের। পরে পাইরেট হান্টারদের হাতে নিহত হন এই ভয়ংকর দস্যু।
দিনটি ছিল ১৭১৮ সালের ২২ নভেম্বর। আমেরিকার উত্তর ক্যারোলাইনার ওকরাকক দ্বীপের কাছে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে কোণঠাসা করে ফেলে পাইরেট হান্টাররা। জলদস্যুদের জন্য ঘোষণা করা পুরস্কারের অর্থ পাওয়ার জন্য যারা তাদের ধরত বা মারত তাদেরই বলা হতো পাইরেট হান্টার। দারুণ যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত মারা পড়েন ব্ল্যাকবিয়ার্ড।
অ্যান বনি
পুরুষের আধিপত্যময় এক বিশ্বে, অ্যান বনি আবির্ভূত হন নিষ্ঠুর এবং নির্ভীক এক নারী জলদস্যু হিসেবে। আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী বনি সামাজিক রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে বনে যান জলদস্যু। প্রেমিক কুখ্যাত ক্যালিকো জ্যাক র্যাকহেমের সঙ্গে মিলে ক্যারিবিয়ান সাগরে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতেন অ্যান বনি।
একজন দক্ষ যোদ্ধা হিসেবে তার খ্যাতি এবং নারীর প্রথাগত ভূমিকা মেনে চলতে অস্বীকৃতি বনিকে জলদস্যুদের মধ্যে একজন কিংবদন্তিতে পরিণত করে। তবে একপর্যায়ে বন্দী হন এবং মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। তবে তিনি ফাঁসির মঞ্চ থেকে পালাতে সক্ষম হন। তারপর তার আর খোঁজ না মিললেও বনির সাহস এবং অনমনীয়তা রোমাঞ্চপ্রেমী মানুষের মনে চিরস্থায়ী জায়গা দিয়েছে তাকে।
ক্যালিকো জ্যাক র্যাকহেম
বনির কথা যেহেতু বলা হলোই তাহলে তার প্রেমিক ক্যালিকো জ্যাক রেকহ্যাম কেন বাদ থাকবেন! র্যাকহেম রঙিন সুতির বা ক্যালিকো পোশাক পরতেন। এ কারণে ক্যালিকো জ্যাক নামে পরিচিতি পান। তার জলদস্যু জীবন ছিল স্বল্পস্থায়ী। কারণ তাকে বন্দী করার পর ১৭২০ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে বন্দী হওয়ার আগেই অসংখ্য জাহাজ দখল ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে কুখ্যাতি অর্জন করেন।
ক্যাপ্টেন কিড
উইলিয়াম কিড পরিচিত ছিলেন ক্যাপ্টেন কিড নামে। তার শুরুটা প্রাইভেটিয়ার হিসেবে। ব্রিটিশ সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত এই প্রাইভেটিয়ারদের কাজ ছিল যুদ্ধের সময় শত্রু জাহাজ আক্রমণ করা। তবে দ্রুতই জলদস্যুতে পরিণত হন। শত্রু জাহাজের পাশাপাশি সাধারণ সদাগরি জাহাজগুলিও তার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এটা তাকে একজন নির্মম এবং রক্তপিপাসু জলদস্যু হিসেবে কুখ্যাতি এনে দেয়। তবে একপর্যায়ে কিড বন্দী হন এবং বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। যতদূর জানা যায় ১৭০১ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় তার।
বার্থলোমিও রবার্টস
বার্থলোমিও রবার্টস পরিচিত ছিলেন ব্ল্যাক বার্ট নামে। অনেকেই তাকে বিবেচনা করেন সোনালি যুগের সবচেয়ে সফল জলদস্যু হিসেবে। ৪০০-র বেশি জাহাজ দখল করে নাবিকদের মধ্যে নিজেদের ভীতিকর এক ইমেজ তৈরি করেন তিনি। রবার্টস তার কঠোর আচরণবিধির জন্য পরিচিত ছিলেন। নিজের জাহাজে জুয়া, মদ্যপান এবং লড়াই নিষিদ্ধ করেছিলেন।
হেনরি মরগান
হেনরি মরগানের গল্পটা অন্য জলদস্যুদের চেয়ে একটু ভিন্ন। শুরুটা তার জলদস্যু হিসেবে। বিশেষ করে স্প্যানিশ উপনিবেশগুলিতে হামলা চালিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। তবে একপর্যায়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পান এবং ব্রিটিশ সরকার স্পেনীয় জাহাজে আক্রমণ চালানোর জন্য প্রাইভেটিয়ার হিসেবে দায়িত্ব দেয় তাকে। পানামা সিটি দখল করে বিপুল অর্থ-সম্পদ লুণ্ঠন করেন। পরবর্তীতে জ্যামাইকার লেফটেন্যান্ট গভর্নর হন। ১৬৮৮ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মেরি রিড
অ্যান বনির মতো কুখ্যাতি কামানো আরেক নারী জলদস্যু মেরি রিড। তবে তিনি সবসময় থাকতেন পুরুষের ছদ্মবেশে। এমনকি দলের অন্য জলদস্যুদের থেকেও নিজের পরিচয় লুকিয়ে রেখেছিলেন। সেটা প্রকাশ পায় রিডসহ অন্য জলদস্যুরা ধরা পড়ার পর।
বন্দী হওয়ার পরে, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগেই কারাগারে মারা যান তিনি। তার গল্প সেইসব নারীর গুপ্ত ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে কাজ করে যারা চিরাচরিত রীতিকে অস্বীকার করেন এবং জলদস্যুতার মাধ্যমে স্বাধীনতা পেয়েছিলেন।
চিং শি
চীনা এই নারী জলদস্যু নেতৃত্ব দিতেন ইতিহাসের জলদস্যুদের সবচেয়ে বড় জাহাজ বহরগুলির একটির। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে দক্ষিণ চীন সাগরে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। সদাগরি জাহাজের পাশাপাশি ও নৌবাহিনীর জাহাজও আতঙ্কে থাকত এই নারী জলদস্যু ও তার দলবলকে নিয়ে।
চিং শির অসাধারণ কৌশল এবং কঠোর আচরণবিধি তাকে প্রচুর সম্পদের মালিক করার পাশাপাশি বিপুল ক্ষমতাশালী করে। অবশ্য একপর্যায়ে জলদস্যুর জীবন ছেড়ে সাধারণ, বৈধ নাগরিকের মতো জীবন-যাপন করতে থাকেন।
এডওয়ার্ড লো
নাবিকদের মনে ভীতি সৃষ্টির জন্য এডওয়ার্ড লোর নামটিই ছিল যথেষ্ট। তিনি বন্দীদের সঙ্গে নৃশংস আচরণের জন্য কুখ্যাতি পান। নিষ্ঠুরতার জন্য তার খ্যাতি তাকে আঠারো শতকের সবচেয়ে কুখ্যাত জলদস্যুদের তালিকায় ওপরের দিকে রাখবে। অবশ্য একপর্যায়ে তাকে বন্দী করা হয় এবং ফাঁসি দেওয়া হয়।
জঁ লাফিত
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে গালফ অব মেক্সিকো এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে অভিযান চালাতেন জঁ লাফিত। লাফিত ও তার ভাই পিয়ের চোরাচালানের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেন। ১৮১২ সালের যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করার আগ্রহের জন্যও পরিচিতি পান। তার অপারেশনের মূল ঘাঁটি ছিল নিউ অরলিন্স। সেখানে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করার জন্যও পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে একজন প্রাইভেটিয়ার হিসেবে তার দক্ষতা তাকে আমেরিকানদের কাছে মূল্যবান এক সম্পদে পরিণত করে। নায়ক এবং খলনায়কের মধ্যে সীমারেখা অনেকটাই ঝাপসা করে দেন জঁ লাফিত।
সূত্র: ফ্যামিলি ওয়াইজ ডট কম ইউকে, উইকিপিডিয়া
জলদস্যুরা শত শত বছর ধরে আমাদের কল্পনায় বিশেষ এক জায়গা করে নিয়েছে। এর কারণ জলদস্যুদের ভয়াবহতার নানা কাহিনি, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সাগরে রোমাঞ্চকর অভিযান ও তাঁদের গুপ্তধন। এদিকে এখন বাংলাদেশি একটি জাহাজের দখলে নিয়ে ২৩ নাবিককে জিম্মি করে আলোচনায় সোমালি জলদস্যুরা। অবশ্য এখনকার এই জলদস্যুদের সঙ্গে পুরোনো দিনের সেই জলদস্যুদের অনেকই তফাত।
আগের জমানার ওই জলদস্যুরা শাসন করত সাগর। ব্ল্যাকবিয়ার্ড থেকে শুরু করে অ্যানি বনি, এই সব জলদস্যুরা যে শুধু অপরাধী ছিল তা নয়, তারা প্রকৃতপক্ষে পরিণত হয়েছে কিংবদন্তিতে।
জলদস্যুতার সোনালি সময়
সতেরো ও আঠারো শতকে পৃথিবীর সাগর-মহাসাগরগুলোয় মহা দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করেছে জলদস্যুরা। জলদস্যুতার স্বর্ণযুগ হিসেবে পরিচিত এই উত্তাল যুগে কুখ্যাত সব জলদস্যুর উত্থান ঘটেছিল। যারা বণিকদের জাহাজ লুণ্ঠন করত, উপকূলীয় শহরগুলিতে লুটতরাজ চালাত। চলুন তবে কয়েকটি শতাব্দী পিছিয়ে যাই, পরিচিত হই জলদস্যুতার সোনালি সময়ের সেই সব দুর্দমনীয়-ভয়ংকর জলদস্যুদের সঙ্গে।
ব্ল্যাকবিয়ার্ড
যার নাম শুনলেই জাহাজের ক্যাপ্টেন ও নাবিকদের গা কাটা দিয়ে উঠত তিনি ব্ল্যাকবিয়ার্ড। তার আসল নাম এডওয়ার্ড টিচ। অনেকের বিবেচনাতেই তিনি ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর জলদস্যু। কালো জট পাকানো চুল, দাঁড়ির কিনারা থেকে বের হওয়া ধোঁয়া, ভাটার মতো জ্বলন্ত দুই চোখ, শরীরের সঙ্গে আটকানো পিস্তল—সব মিলিয়ে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে দেখলেই আত্মরাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় হতো নাবিকদের।
ব্ল্যাকবিয়ার্ডের হাত থেকে বেঁচে ফেরা নাবিকেরা জানান, লুটতরাজের সময় টুপির নিচে জ্বলন্ত দড়ির টুকরো রেখে দিত ভয়ানক এই দস্যু। জাহাজের একটি বহরের নেতৃত্ব দেওয়া ব্ল্যাকবিয়ার্ড ক্যারিবিয়ান ও আটলান্টিক মহাসাগরে জাহাজ লুট করে বিশাল সম্পদের মালিক হন। বলা চলে অক্ষত অবস্থায় তার এলাকা অতিক্রমের সাধ্য ছিল না কোনো জাহাজের। পরে পাইরেট হান্টারদের হাতে নিহত হন এই ভয়ংকর দস্যু।
দিনটি ছিল ১৭১৮ সালের ২২ নভেম্বর। আমেরিকার উত্তর ক্যারোলাইনার ওকরাকক দ্বীপের কাছে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে কোণঠাসা করে ফেলে পাইরেট হান্টাররা। জলদস্যুদের জন্য ঘোষণা করা পুরস্কারের অর্থ পাওয়ার জন্য যারা তাদের ধরত বা মারত তাদেরই বলা হতো পাইরেট হান্টার। দারুণ যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত মারা পড়েন ব্ল্যাকবিয়ার্ড।
অ্যান বনি
পুরুষের আধিপত্যময় এক বিশ্বে, অ্যান বনি আবির্ভূত হন নিষ্ঠুর এবং নির্ভীক এক নারী জলদস্যু হিসেবে। আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী বনি সামাজিক রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে বনে যান জলদস্যু। প্রেমিক কুখ্যাত ক্যালিকো জ্যাক র্যাকহেমের সঙ্গে মিলে ক্যারিবিয়ান সাগরে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতেন অ্যান বনি।
একজন দক্ষ যোদ্ধা হিসেবে তার খ্যাতি এবং নারীর প্রথাগত ভূমিকা মেনে চলতে অস্বীকৃতি বনিকে জলদস্যুদের মধ্যে একজন কিংবদন্তিতে পরিণত করে। তবে একপর্যায়ে বন্দী হন এবং মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। তবে তিনি ফাঁসির মঞ্চ থেকে পালাতে সক্ষম হন। তারপর তার আর খোঁজ না মিললেও বনির সাহস এবং অনমনীয়তা রোমাঞ্চপ্রেমী মানুষের মনে চিরস্থায়ী জায়গা দিয়েছে তাকে।
ক্যালিকো জ্যাক র্যাকহেম
বনির কথা যেহেতু বলা হলোই তাহলে তার প্রেমিক ক্যালিকো জ্যাক রেকহ্যাম কেন বাদ থাকবেন! র্যাকহেম রঙিন সুতির বা ক্যালিকো পোশাক পরতেন। এ কারণে ক্যালিকো জ্যাক নামে পরিচিতি পান। তার জলদস্যু জীবন ছিল স্বল্পস্থায়ী। কারণ তাকে বন্দী করার পর ১৭২০ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে বন্দী হওয়ার আগেই অসংখ্য জাহাজ দখল ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে কুখ্যাতি অর্জন করেন।
ক্যাপ্টেন কিড
উইলিয়াম কিড পরিচিত ছিলেন ক্যাপ্টেন কিড নামে। তার শুরুটা প্রাইভেটিয়ার হিসেবে। ব্রিটিশ সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত এই প্রাইভেটিয়ারদের কাজ ছিল যুদ্ধের সময় শত্রু জাহাজ আক্রমণ করা। তবে দ্রুতই জলদস্যুতে পরিণত হন। শত্রু জাহাজের পাশাপাশি সাধারণ সদাগরি জাহাজগুলিও তার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এটা তাকে একজন নির্মম এবং রক্তপিপাসু জলদস্যু হিসেবে কুখ্যাতি এনে দেয়। তবে একপর্যায়ে কিড বন্দী হন এবং বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। যতদূর জানা যায় ১৭০১ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় তার।
বার্থলোমিও রবার্টস
বার্থলোমিও রবার্টস পরিচিত ছিলেন ব্ল্যাক বার্ট নামে। অনেকেই তাকে বিবেচনা করেন সোনালি যুগের সবচেয়ে সফল জলদস্যু হিসেবে। ৪০০-র বেশি জাহাজ দখল করে নাবিকদের মধ্যে নিজেদের ভীতিকর এক ইমেজ তৈরি করেন তিনি। রবার্টস তার কঠোর আচরণবিধির জন্য পরিচিত ছিলেন। নিজের জাহাজে জুয়া, মদ্যপান এবং লড়াই নিষিদ্ধ করেছিলেন।
হেনরি মরগান
হেনরি মরগানের গল্পটা অন্য জলদস্যুদের চেয়ে একটু ভিন্ন। শুরুটা তার জলদস্যু হিসেবে। বিশেষ করে স্প্যানিশ উপনিবেশগুলিতে হামলা চালিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। তবে একপর্যায়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পান এবং ব্রিটিশ সরকার স্পেনীয় জাহাজে আক্রমণ চালানোর জন্য প্রাইভেটিয়ার হিসেবে দায়িত্ব দেয় তাকে। পানামা সিটি দখল করে বিপুল অর্থ-সম্পদ লুণ্ঠন করেন। পরবর্তীতে জ্যামাইকার লেফটেন্যান্ট গভর্নর হন। ১৬৮৮ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মেরি রিড
অ্যান বনির মতো কুখ্যাতি কামানো আরেক নারী জলদস্যু মেরি রিড। তবে তিনি সবসময় থাকতেন পুরুষের ছদ্মবেশে। এমনকি দলের অন্য জলদস্যুদের থেকেও নিজের পরিচয় লুকিয়ে রেখেছিলেন। সেটা প্রকাশ পায় রিডসহ অন্য জলদস্যুরা ধরা পড়ার পর।
বন্দী হওয়ার পরে, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগেই কারাগারে মারা যান তিনি। তার গল্প সেইসব নারীর গুপ্ত ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে কাজ করে যারা চিরাচরিত রীতিকে অস্বীকার করেন এবং জলদস্যুতার মাধ্যমে স্বাধীনতা পেয়েছিলেন।
চিং শি
চীনা এই নারী জলদস্যু নেতৃত্ব দিতেন ইতিহাসের জলদস্যুদের সবচেয়ে বড় জাহাজ বহরগুলির একটির। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে দক্ষিণ চীন সাগরে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। সদাগরি জাহাজের পাশাপাশি ও নৌবাহিনীর জাহাজও আতঙ্কে থাকত এই নারী জলদস্যু ও তার দলবলকে নিয়ে।
চিং শির অসাধারণ কৌশল এবং কঠোর আচরণবিধি তাকে প্রচুর সম্পদের মালিক করার পাশাপাশি বিপুল ক্ষমতাশালী করে। অবশ্য একপর্যায়ে জলদস্যুর জীবন ছেড়ে সাধারণ, বৈধ নাগরিকের মতো জীবন-যাপন করতে থাকেন।
এডওয়ার্ড লো
নাবিকদের মনে ভীতি সৃষ্টির জন্য এডওয়ার্ড লোর নামটিই ছিল যথেষ্ট। তিনি বন্দীদের সঙ্গে নৃশংস আচরণের জন্য কুখ্যাতি পান। নিষ্ঠুরতার জন্য তার খ্যাতি তাকে আঠারো শতকের সবচেয়ে কুখ্যাত জলদস্যুদের তালিকায় ওপরের দিকে রাখবে। অবশ্য একপর্যায়ে তাকে বন্দী করা হয় এবং ফাঁসি দেওয়া হয়।
জঁ লাফিত
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে গালফ অব মেক্সিকো এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে অভিযান চালাতেন জঁ লাফিত। লাফিত ও তার ভাই পিয়ের চোরাচালানের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেন। ১৮১২ সালের যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করার আগ্রহের জন্যও পরিচিতি পান। তার অপারেশনের মূল ঘাঁটি ছিল নিউ অরলিন্স। সেখানে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করার জন্যও পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে একজন প্রাইভেটিয়ার হিসেবে তার দক্ষতা তাকে আমেরিকানদের কাছে মূল্যবান এক সম্পদে পরিণত করে। নায়ক এবং খলনায়কের মধ্যে সীমারেখা অনেকটাই ঝাপসা করে দেন জঁ লাফিত।
সূত্র: ফ্যামিলি ওয়াইজ ডট কম ইউকে, উইকিপিডিয়া
জলদস্যুরা শত শত বছর ধরে আমাদের কল্পনায় বিশেষ এক জায়গা করে নিয়েছে। এর কারণ জলদস্যুদের ভয়াবহতার নানা কাহিনি, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সাগরে রোমাঞ্চকর অভিযান ও তাঁদের গুপ্তধন। এদিকে এখন বাংলাদেশি একটি জাহাজের দখলে নিয়ে ২৩ নাবিককে জিম্মি করে আলোচনায় সোমালি জলদস্যুরা। অবশ্য এখনকার এই জলদস্যুদের সঙ্গে পুরোনো দিনের সেই জলদস্যুদের অনেকই তফাত।
আগের জমানার ওই জলদস্যুরা শাসন করত সাগর। ব্ল্যাকবিয়ার্ড থেকে শুরু করে অ্যানি বনি, এই সব জলদস্যুরা যে শুধু অপরাধী ছিল তা নয়, তারা প্রকৃতপক্ষে পরিণত হয়েছে কিংবদন্তিতে।
জলদস্যুতার সোনালি সময়
সতেরো ও আঠারো শতকে পৃথিবীর সাগর-মহাসাগরগুলোয় মহা দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করেছে জলদস্যুরা। জলদস্যুতার স্বর্ণযুগ হিসেবে পরিচিত এই উত্তাল যুগে কুখ্যাত সব জলদস্যুর উত্থান ঘটেছিল। যারা বণিকদের জাহাজ লুণ্ঠন করত, উপকূলীয় শহরগুলিতে লুটতরাজ চালাত। চলুন তবে কয়েকটি শতাব্দী পিছিয়ে যাই, পরিচিত হই জলদস্যুতার সোনালি সময়ের সেই সব দুর্দমনীয়-ভয়ংকর জলদস্যুদের সঙ্গে।
ব্ল্যাকবিয়ার্ড
যার নাম শুনলেই জাহাজের ক্যাপ্টেন ও নাবিকদের গা কাটা দিয়ে উঠত তিনি ব্ল্যাকবিয়ার্ড। তার আসল নাম এডওয়ার্ড টিচ। অনেকের বিবেচনাতেই তিনি ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর জলদস্যু। কালো জট পাকানো চুল, দাঁড়ির কিনারা থেকে বের হওয়া ধোঁয়া, ভাটার মতো জ্বলন্ত দুই চোখ, শরীরের সঙ্গে আটকানো পিস্তল—সব মিলিয়ে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে দেখলেই আত্মরাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় হতো নাবিকদের।
ব্ল্যাকবিয়ার্ডের হাত থেকে বেঁচে ফেরা নাবিকেরা জানান, লুটতরাজের সময় টুপির নিচে জ্বলন্ত দড়ির টুকরো রেখে দিত ভয়ানক এই দস্যু। জাহাজের একটি বহরের নেতৃত্ব দেওয়া ব্ল্যাকবিয়ার্ড ক্যারিবিয়ান ও আটলান্টিক মহাসাগরে জাহাজ লুট করে বিশাল সম্পদের মালিক হন। বলা চলে অক্ষত অবস্থায় তার এলাকা অতিক্রমের সাধ্য ছিল না কোনো জাহাজের। পরে পাইরেট হান্টারদের হাতে নিহত হন এই ভয়ংকর দস্যু।
দিনটি ছিল ১৭১৮ সালের ২২ নভেম্বর। আমেরিকার উত্তর ক্যারোলাইনার ওকরাকক দ্বীপের কাছে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে কোণঠাসা করে ফেলে পাইরেট হান্টাররা। জলদস্যুদের জন্য ঘোষণা করা পুরস্কারের অর্থ পাওয়ার জন্য যারা তাদের ধরত বা মারত তাদেরই বলা হতো পাইরেট হান্টার। দারুণ যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত মারা পড়েন ব্ল্যাকবিয়ার্ড।
অ্যান বনি
পুরুষের আধিপত্যময় এক বিশ্বে, অ্যান বনি আবির্ভূত হন নিষ্ঠুর এবং নির্ভীক এক নারী জলদস্যু হিসেবে। আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী বনি সামাজিক রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে বনে যান জলদস্যু। প্রেমিক কুখ্যাত ক্যালিকো জ্যাক র্যাকহেমের সঙ্গে মিলে ক্যারিবিয়ান সাগরে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতেন অ্যান বনি।
একজন দক্ষ যোদ্ধা হিসেবে তার খ্যাতি এবং নারীর প্রথাগত ভূমিকা মেনে চলতে অস্বীকৃতি বনিকে জলদস্যুদের মধ্যে একজন কিংবদন্তিতে পরিণত করে। তবে একপর্যায়ে বন্দী হন এবং মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। তবে তিনি ফাঁসির মঞ্চ থেকে পালাতে সক্ষম হন। তারপর তার আর খোঁজ না মিললেও বনির সাহস এবং অনমনীয়তা রোমাঞ্চপ্রেমী মানুষের মনে চিরস্থায়ী জায়গা দিয়েছে তাকে।
ক্যালিকো জ্যাক র্যাকহেম
বনির কথা যেহেতু বলা হলোই তাহলে তার প্রেমিক ক্যালিকো জ্যাক রেকহ্যাম কেন বাদ থাকবেন! র্যাকহেম রঙিন সুতির বা ক্যালিকো পোশাক পরতেন। এ কারণে ক্যালিকো জ্যাক নামে পরিচিতি পান। তার জলদস্যু জীবন ছিল স্বল্পস্থায়ী। কারণ তাকে বন্দী করার পর ১৭২০ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে বন্দী হওয়ার আগেই অসংখ্য জাহাজ দখল ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে কুখ্যাতি অর্জন করেন।
ক্যাপ্টেন কিড
উইলিয়াম কিড পরিচিত ছিলেন ক্যাপ্টেন কিড নামে। তার শুরুটা প্রাইভেটিয়ার হিসেবে। ব্রিটিশ সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত এই প্রাইভেটিয়ারদের কাজ ছিল যুদ্ধের সময় শত্রু জাহাজ আক্রমণ করা। তবে দ্রুতই জলদস্যুতে পরিণত হন। শত্রু জাহাজের পাশাপাশি সাধারণ সদাগরি জাহাজগুলিও তার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এটা তাকে একজন নির্মম এবং রক্তপিপাসু জলদস্যু হিসেবে কুখ্যাতি এনে দেয়। তবে একপর্যায়ে কিড বন্দী হন এবং বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। যতদূর জানা যায় ১৭০১ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় তার।
বার্থলোমিও রবার্টস
বার্থলোমিও রবার্টস পরিচিত ছিলেন ব্ল্যাক বার্ট নামে। অনেকেই তাকে বিবেচনা করেন সোনালি যুগের সবচেয়ে সফল জলদস্যু হিসেবে। ৪০০-র বেশি জাহাজ দখল করে নাবিকদের মধ্যে নিজেদের ভীতিকর এক ইমেজ তৈরি করেন তিনি। রবার্টস তার কঠোর আচরণবিধির জন্য পরিচিত ছিলেন। নিজের জাহাজে জুয়া, মদ্যপান এবং লড়াই নিষিদ্ধ করেছিলেন।
হেনরি মরগান
হেনরি মরগানের গল্পটা অন্য জলদস্যুদের চেয়ে একটু ভিন্ন। শুরুটা তার জলদস্যু হিসেবে। বিশেষ করে স্প্যানিশ উপনিবেশগুলিতে হামলা চালিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। তবে একপর্যায়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পান এবং ব্রিটিশ সরকার স্পেনীয় জাহাজে আক্রমণ চালানোর জন্য প্রাইভেটিয়ার হিসেবে দায়িত্ব দেয় তাকে। পানামা সিটি দখল করে বিপুল অর্থ-সম্পদ লুণ্ঠন করেন। পরবর্তীতে জ্যামাইকার লেফটেন্যান্ট গভর্নর হন। ১৬৮৮ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মেরি রিড
অ্যান বনির মতো কুখ্যাতি কামানো আরেক নারী জলদস্যু মেরি রিড। তবে তিনি সবসময় থাকতেন পুরুষের ছদ্মবেশে। এমনকি দলের অন্য জলদস্যুদের থেকেও নিজের পরিচয় লুকিয়ে রেখেছিলেন। সেটা প্রকাশ পায় রিডসহ অন্য জলদস্যুরা ধরা পড়ার পর।
বন্দী হওয়ার পরে, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগেই কারাগারে মারা যান তিনি। তার গল্প সেইসব নারীর গুপ্ত ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে কাজ করে যারা চিরাচরিত রীতিকে অস্বীকার করেন এবং জলদস্যুতার মাধ্যমে স্বাধীনতা পেয়েছিলেন।
চিং শি
চীনা এই নারী জলদস্যু নেতৃত্ব দিতেন ইতিহাসের জলদস্যুদের সবচেয়ে বড় জাহাজ বহরগুলির একটির। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে দক্ষিণ চীন সাগরে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। সদাগরি জাহাজের পাশাপাশি ও নৌবাহিনীর জাহাজও আতঙ্কে থাকত এই নারী জলদস্যু ও তার দলবলকে নিয়ে।
চিং শির অসাধারণ কৌশল এবং কঠোর আচরণবিধি তাকে প্রচুর সম্পদের মালিক করার পাশাপাশি বিপুল ক্ষমতাশালী করে। অবশ্য একপর্যায়ে জলদস্যুর জীবন ছেড়ে সাধারণ, বৈধ নাগরিকের মতো জীবন-যাপন করতে থাকেন।
এডওয়ার্ড লো
নাবিকদের মনে ভীতি সৃষ্টির জন্য এডওয়ার্ড লোর নামটিই ছিল যথেষ্ট। তিনি বন্দীদের সঙ্গে নৃশংস আচরণের জন্য কুখ্যাতি পান। নিষ্ঠুরতার জন্য তার খ্যাতি তাকে আঠারো শতকের সবচেয়ে কুখ্যাত জলদস্যুদের তালিকায় ওপরের দিকে রাখবে। অবশ্য একপর্যায়ে তাকে বন্দী করা হয় এবং ফাঁসি দেওয়া হয়।
জঁ লাফিত
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে গালফ অব মেক্সিকো এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে অভিযান চালাতেন জঁ লাফিত। লাফিত ও তার ভাই পিয়ের চোরাচালানের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেন। ১৮১২ সালের যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করার আগ্রহের জন্যও পরিচিতি পান। তার অপারেশনের মূল ঘাঁটি ছিল নিউ অরলিন্স। সেখানে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করার জন্যও পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে একজন প্রাইভেটিয়ার হিসেবে তার দক্ষতা তাকে আমেরিকানদের কাছে মূল্যবান এক সম্পদে পরিণত করে। নায়ক এবং খলনায়কের মধ্যে সীমারেখা অনেকটাই ঝাপসা করে দেন জঁ লাফিত।
সূত্র: ফ্যামিলি ওয়াইজ ডট কম ইউকে, উইকিপিডিয়া
জলদস্যুরা শত শত বছর ধরে আমাদের কল্পনায় বিশেষ এক জায়গা করে নিয়েছে। এর কারণ জলদস্যুদের ভয়াবহতার নানা কাহিনি, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সাগরে রোমাঞ্চকর অভিযান ও তাঁদের গুপ্তধন। এদিকে এখন বাংলাদেশি একটি জাহাজের দখলে নিয়ে ২৩ নাবিককে জিম্মি করে আলোচনায় সোমালি জলদস্যুরা। অবশ্য এখনকার এই জলদস্যুদের সঙ্গে পুরোনো দিনের সেই জলদস্যুদের অনেকই তফাত।
আগের জমানার ওই জলদস্যুরা শাসন করত সাগর। ব্ল্যাকবিয়ার্ড থেকে শুরু করে অ্যানি বনি, এই সব জলদস্যুরা যে শুধু অপরাধী ছিল তা নয়, তারা প্রকৃতপক্ষে পরিণত হয়েছে কিংবদন্তিতে।
জলদস্যুতার সোনালি সময়
সতেরো ও আঠারো শতকে পৃথিবীর সাগর-মহাসাগরগুলোয় মহা দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করেছে জলদস্যুরা। জলদস্যুতার স্বর্ণযুগ হিসেবে পরিচিত এই উত্তাল যুগে কুখ্যাত সব জলদস্যুর উত্থান ঘটেছিল। যারা বণিকদের জাহাজ লুণ্ঠন করত, উপকূলীয় শহরগুলিতে লুটতরাজ চালাত। চলুন তবে কয়েকটি শতাব্দী পিছিয়ে যাই, পরিচিত হই জলদস্যুতার সোনালি সময়ের সেই সব দুর্দমনীয়-ভয়ংকর জলদস্যুদের সঙ্গে।
ব্ল্যাকবিয়ার্ড
যার নাম শুনলেই জাহাজের ক্যাপ্টেন ও নাবিকদের গা কাটা দিয়ে উঠত তিনি ব্ল্যাকবিয়ার্ড। তার আসল নাম এডওয়ার্ড টিচ। অনেকের বিবেচনাতেই তিনি ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর জলদস্যু। কালো জট পাকানো চুল, দাঁড়ির কিনারা থেকে বের হওয়া ধোঁয়া, ভাটার মতো জ্বলন্ত দুই চোখ, শরীরের সঙ্গে আটকানো পিস্তল—সব মিলিয়ে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে দেখলেই আত্মরাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় হতো নাবিকদের।
ব্ল্যাকবিয়ার্ডের হাত থেকে বেঁচে ফেরা নাবিকেরা জানান, লুটতরাজের সময় টুপির নিচে জ্বলন্ত দড়ির টুকরো রেখে দিত ভয়ানক এই দস্যু। জাহাজের একটি বহরের নেতৃত্ব দেওয়া ব্ল্যাকবিয়ার্ড ক্যারিবিয়ান ও আটলান্টিক মহাসাগরে জাহাজ লুট করে বিশাল সম্পদের মালিক হন। বলা চলে অক্ষত অবস্থায় তার এলাকা অতিক্রমের সাধ্য ছিল না কোনো জাহাজের। পরে পাইরেট হান্টারদের হাতে নিহত হন এই ভয়ংকর দস্যু।
দিনটি ছিল ১৭১৮ সালের ২২ নভেম্বর। আমেরিকার উত্তর ক্যারোলাইনার ওকরাকক দ্বীপের কাছে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে কোণঠাসা করে ফেলে পাইরেট হান্টাররা। জলদস্যুদের জন্য ঘোষণা করা পুরস্কারের অর্থ পাওয়ার জন্য যারা তাদের ধরত বা মারত তাদেরই বলা হতো পাইরেট হান্টার। দারুণ যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত মারা পড়েন ব্ল্যাকবিয়ার্ড।
অ্যান বনি
পুরুষের আধিপত্যময় এক বিশ্বে, অ্যান বনি আবির্ভূত হন নিষ্ঠুর এবং নির্ভীক এক নারী জলদস্যু হিসেবে। আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী বনি সামাজিক রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে বনে যান জলদস্যু। প্রেমিক কুখ্যাত ক্যালিকো জ্যাক র্যাকহেমের সঙ্গে মিলে ক্যারিবিয়ান সাগরে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতেন অ্যান বনি।
একজন দক্ষ যোদ্ধা হিসেবে তার খ্যাতি এবং নারীর প্রথাগত ভূমিকা মেনে চলতে অস্বীকৃতি বনিকে জলদস্যুদের মধ্যে একজন কিংবদন্তিতে পরিণত করে। তবে একপর্যায়ে বন্দী হন এবং মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। তবে তিনি ফাঁসির মঞ্চ থেকে পালাতে সক্ষম হন। তারপর তার আর খোঁজ না মিললেও বনির সাহস এবং অনমনীয়তা রোমাঞ্চপ্রেমী মানুষের মনে চিরস্থায়ী জায়গা দিয়েছে তাকে।
ক্যালিকো জ্যাক র্যাকহেম
বনির কথা যেহেতু বলা হলোই তাহলে তার প্রেমিক ক্যালিকো জ্যাক রেকহ্যাম কেন বাদ থাকবেন! র্যাকহেম রঙিন সুতির বা ক্যালিকো পোশাক পরতেন। এ কারণে ক্যালিকো জ্যাক নামে পরিচিতি পান। তার জলদস্যু জীবন ছিল স্বল্পস্থায়ী। কারণ তাকে বন্দী করার পর ১৭২০ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে বন্দী হওয়ার আগেই অসংখ্য জাহাজ দখল ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে কুখ্যাতি অর্জন করেন।
ক্যাপ্টেন কিড
উইলিয়াম কিড পরিচিত ছিলেন ক্যাপ্টেন কিড নামে। তার শুরুটা প্রাইভেটিয়ার হিসেবে। ব্রিটিশ সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত এই প্রাইভেটিয়ারদের কাজ ছিল যুদ্ধের সময় শত্রু জাহাজ আক্রমণ করা। তবে দ্রুতই জলদস্যুতে পরিণত হন। শত্রু জাহাজের পাশাপাশি সাধারণ সদাগরি জাহাজগুলিও তার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এটা তাকে একজন নির্মম এবং রক্তপিপাসু জলদস্যু হিসেবে কুখ্যাতি এনে দেয়। তবে একপর্যায়ে কিড বন্দী হন এবং বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। যতদূর জানা যায় ১৭০১ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় তার।
বার্থলোমিও রবার্টস
বার্থলোমিও রবার্টস পরিচিত ছিলেন ব্ল্যাক বার্ট নামে। অনেকেই তাকে বিবেচনা করেন সোনালি যুগের সবচেয়ে সফল জলদস্যু হিসেবে। ৪০০-র বেশি জাহাজ দখল করে নাবিকদের মধ্যে নিজেদের ভীতিকর এক ইমেজ তৈরি করেন তিনি। রবার্টস তার কঠোর আচরণবিধির জন্য পরিচিত ছিলেন। নিজের জাহাজে জুয়া, মদ্যপান এবং লড়াই নিষিদ্ধ করেছিলেন।
হেনরি মরগান
হেনরি মরগানের গল্পটা অন্য জলদস্যুদের চেয়ে একটু ভিন্ন। শুরুটা তার জলদস্যু হিসেবে। বিশেষ করে স্প্যানিশ উপনিবেশগুলিতে হামলা চালিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। তবে একপর্যায়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পান এবং ব্রিটিশ সরকার স্পেনীয় জাহাজে আক্রমণ চালানোর জন্য প্রাইভেটিয়ার হিসেবে দায়িত্ব দেয় তাকে। পানামা সিটি দখল করে বিপুল অর্থ-সম্পদ লুণ্ঠন করেন। পরবর্তীতে জ্যামাইকার লেফটেন্যান্ট গভর্নর হন। ১৬৮৮ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মেরি রিড
অ্যান বনির মতো কুখ্যাতি কামানো আরেক নারী জলদস্যু মেরি রিড। তবে তিনি সবসময় থাকতেন পুরুষের ছদ্মবেশে। এমনকি দলের অন্য জলদস্যুদের থেকেও নিজের পরিচয় লুকিয়ে রেখেছিলেন। সেটা প্রকাশ পায় রিডসহ অন্য জলদস্যুরা ধরা পড়ার পর।
বন্দী হওয়ার পরে, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগেই কারাগারে মারা যান তিনি। তার গল্প সেইসব নারীর গুপ্ত ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে কাজ করে যারা চিরাচরিত রীতিকে অস্বীকার করেন এবং জলদস্যুতার মাধ্যমে স্বাধীনতা পেয়েছিলেন।
চিং শি
চীনা এই নারী জলদস্যু নেতৃত্ব দিতেন ইতিহাসের জলদস্যুদের সবচেয়ে বড় জাহাজ বহরগুলির একটির। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে দক্ষিণ চীন সাগরে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। সদাগরি জাহাজের পাশাপাশি ও নৌবাহিনীর জাহাজও আতঙ্কে থাকত এই নারী জলদস্যু ও তার দলবলকে নিয়ে।
চিং শির অসাধারণ কৌশল এবং কঠোর আচরণবিধি তাকে প্রচুর সম্পদের মালিক করার পাশাপাশি বিপুল ক্ষমতাশালী করে। অবশ্য একপর্যায়ে জলদস্যুর জীবন ছেড়ে সাধারণ, বৈধ নাগরিকের মতো জীবন-যাপন করতে থাকেন।
এডওয়ার্ড লো
নাবিকদের মনে ভীতি সৃষ্টির জন্য এডওয়ার্ড লোর নামটিই ছিল যথেষ্ট। তিনি বন্দীদের সঙ্গে নৃশংস আচরণের জন্য কুখ্যাতি পান। নিষ্ঠুরতার জন্য তার খ্যাতি তাকে আঠারো শতকের সবচেয়ে কুখ্যাত জলদস্যুদের তালিকায় ওপরের দিকে রাখবে। অবশ্য একপর্যায়ে তাকে বন্দী করা হয় এবং ফাঁসি দেওয়া হয়।
জঁ লাফিত
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে গালফ অব মেক্সিকো এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে অভিযান চালাতেন জঁ লাফিত। লাফিত ও তার ভাই পিয়ের চোরাচালানের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেন। ১৮১২ সালের যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করার আগ্রহের জন্যও পরিচিতি পান। তার অপারেশনের মূল ঘাঁটি ছিল নিউ অরলিন্স। সেখানে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করার জন্যও পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে একজন প্রাইভেটিয়ার হিসেবে তার দক্ষতা তাকে আমেরিকানদের কাছে মূল্যবান এক সম্পদে পরিণত করে। নায়ক এবং খলনায়কের মধ্যে সীমারেখা অনেকটাই ঝাপসা করে দেন জঁ লাফিত।
সূত্র: ফ্যামিলি ওয়াইজ ডট কম ইউকে, উইকিপিডিয়া
ইন্দোনেশিয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পরকীয়ায় ধরার পর অনন্য এক উপায়ে সম্পর্কের ইতি টানলেন। স্ত্রীকে তিনি প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে নিলেন একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কিছু পণ্য এবং নগদ অর্থ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশে, যেখানে তোলাকি নামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রাচীন সামাজিক রীতিনীতিতে...
৩ দিন আগেবিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের দীর্ঘ নামের একটি আলাদা গুরুত্ব আছে। এই দীর্ঘ নামের মধ্য দিয়ে প্রায় সময় ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামো প্রতিফলিত হয়। দক্ষিণ ভারতে সাধারণত নামের সঙ্গে গ্রামের নাম, বাবার নাম এবং প্রদত্ত নাম যুক্ত থাকে। অন্যদিকে আরব বিশ্বে বংশগতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে একজনের নাম তার...
১০ দিন আগেউত্তর চীনের হেনান প্রদেশের আনইয়াং শহরের একটি নার্সিং হোম সম্প্রতি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মূলত তাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নার্সিং হোমটির এক নারী কর্মকর্তা মিনি স্কার্ট ও স্কুল ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরে বয়স্ক রোগীদের সামনে
১১ দিন আগেথাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় চনবুরি প্রদেশে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জল-মহিষ উৎসব। শতাধিক বছরের পুরোনো এই উৎসবের লক্ষ্য হলো—মহিষদের সম্মান জানানো ও কৃষিক্ষেত্রে তাঁদের বিলুপ্তি রোধ করা। যন্ত্রচালিত কৃষিকাজে ট্রাক্টরের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে বর্তমানে মহিষের অবদান অনেকটাই কমে...
১২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
ইন্দোনেশিয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পরকীয়ায় ধরার পর অনন্য এক উপায়ে সম্পর্কের ইতি টানলেন। স্ত্রীকে তিনি প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে নিলেন একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কিছু পণ্য এবং নগদ অর্থ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশে, যেখানে তোলাকি নামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রাচীন সামাজিক রীতিনীতিতে বিশ্বাসী।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনের পর ওই ব্যক্তি গত সেপ্টেম্বরে একটি বোর্ডিং হাউসে স্ত্রীকে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরেন। এরপর তিনি পুলিশে অভিযোগ করলেও পরে বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসার জন্য গ্রামের প্রবীণদের কাছে যান। প্রবীণেরা ‘মোওয়া সারাপু’ নামে একটি ঐতিহ্যবাহী মিলন-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বিরোধ মেটানোর সিদ্ধান্ত নেন।
‘মোওয়া সারাপু’ রীতিটি তোলাকি সম্প্রদায়ের শতাব্দীপ্রাচীন প্রথা, যার অর্থ ‘ছাড় দেওয়া ও শান্তি স্থাপন করা’। এই রীতির লক্ষ্য প্রতিশোধ নয়, বরং সামাজিক ভারসাম্য ও মর্যাদা পুনরুদ্ধার করা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামের প্রবীণ, উভয় পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। সবার সামনেই ওই নারীর প্রেমিক তাঁর স্বামীকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কাপড়, একটি তামার পাত্র এবং ৫০ লাখ রুপিয়া (প্রায় ৩৬ হাজার টাকা) দেন।
গ্রামপ্রধান সফরুদ্দিন জানান, অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই দম্পতির বিবাহ আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেওয়া হয়। পরে নারীটির স্বামী ও প্রেমিক পরস্পরের সঙ্গে করমর্দন করেন। এভাবে স্ত্রীকে তাঁর প্রেমিকের হাতে সমর্পণ করেন স্বামীটি।
তোলাকি প্রবীণদের মতে, এই রীতি কোনো সম্পর্ককে ছোট করার জন্য নয়, বরং নৈতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতেই এমন প্রথা পালন করা হয়। তবে তাঁরা সতর্ক করে বলেন—কোনো নারী যদি এমন রীতি মেনে আবারও অন্য পুরুষকে বেছে নেয়, তবে তা তাঁর ও পরিবারের জন্য লজ্জার কারণ হবে।
ইন্দোনেশিয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পরকীয়ায় ধরার পর অনন্য এক উপায়ে সম্পর্কের ইতি টানলেন। স্ত্রীকে তিনি প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে নিলেন একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কিছু পণ্য এবং নগদ অর্থ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশে, যেখানে তোলাকি নামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রাচীন সামাজিক রীতিনীতিতে বিশ্বাসী।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনের পর ওই ব্যক্তি গত সেপ্টেম্বরে একটি বোর্ডিং হাউসে স্ত্রীকে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরেন। এরপর তিনি পুলিশে অভিযোগ করলেও পরে বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসার জন্য গ্রামের প্রবীণদের কাছে যান। প্রবীণেরা ‘মোওয়া সারাপু’ নামে একটি ঐতিহ্যবাহী মিলন-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বিরোধ মেটানোর সিদ্ধান্ত নেন।
‘মোওয়া সারাপু’ রীতিটি তোলাকি সম্প্রদায়ের শতাব্দীপ্রাচীন প্রথা, যার অর্থ ‘ছাড় দেওয়া ও শান্তি স্থাপন করা’। এই রীতির লক্ষ্য প্রতিশোধ নয়, বরং সামাজিক ভারসাম্য ও মর্যাদা পুনরুদ্ধার করা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামের প্রবীণ, উভয় পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। সবার সামনেই ওই নারীর প্রেমিক তাঁর স্বামীকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কাপড়, একটি তামার পাত্র এবং ৫০ লাখ রুপিয়া (প্রায় ৩৬ হাজার টাকা) দেন।
গ্রামপ্রধান সফরুদ্দিন জানান, অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই দম্পতির বিবাহ আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেওয়া হয়। পরে নারীটির স্বামী ও প্রেমিক পরস্পরের সঙ্গে করমর্দন করেন। এভাবে স্ত্রীকে তাঁর প্রেমিকের হাতে সমর্পণ করেন স্বামীটি।
তোলাকি প্রবীণদের মতে, এই রীতি কোনো সম্পর্ককে ছোট করার জন্য নয়, বরং নৈতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতেই এমন প্রথা পালন করা হয়। তবে তাঁরা সতর্ক করে বলেন—কোনো নারী যদি এমন রীতি মেনে আবারও অন্য পুরুষকে বেছে নেয়, তবে তা তাঁর ও পরিবারের জন্য লজ্জার কারণ হবে।
জলদস্যুরা শত শত বছর ধরে আমাদের কল্পনায় বিশেষ এক জায়গা দখল করে নিয়েছে। এর কারণ জলদস্যুদের ভয়াবহতার নানা কাহিনি, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সাগরে রোমাঞ্চকর অভিযান ও তাদের গুপ্তধন। ব্ল্যাকবিয়ার্ড থেকে শুরু করে অ্যানি বনি, এই সব জলদস্যুরা যে শুধু অপরাধী ছিলেন তা নয়, তারা প্রকৃতপক্ষে পরিণত হয়েছেন কিংবদন্তিতে। চলুন
১৭ মার্চ ২০২৪বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের দীর্ঘ নামের একটি আলাদা গুরুত্ব আছে। এই দীর্ঘ নামের মধ্য দিয়ে প্রায় সময় ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামো প্রতিফলিত হয়। দক্ষিণ ভারতে সাধারণত নামের সঙ্গে গ্রামের নাম, বাবার নাম এবং প্রদত্ত নাম যুক্ত থাকে। অন্যদিকে আরব বিশ্বে বংশগতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে একজনের নাম তার...
১০ দিন আগেউত্তর চীনের হেনান প্রদেশের আনইয়াং শহরের একটি নার্সিং হোম সম্প্রতি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মূলত তাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নার্সিং হোমটির এক নারী কর্মকর্তা মিনি স্কার্ট ও স্কুল ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরে বয়স্ক রোগীদের সামনে
১১ দিন আগেথাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় চনবুরি প্রদেশে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জল-মহিষ উৎসব। শতাধিক বছরের পুরোনো এই উৎসবের লক্ষ্য হলো—মহিষদের সম্মান জানানো ও কৃষিক্ষেত্রে তাঁদের বিলুপ্তি রোধ করা। যন্ত্রচালিত কৃষিকাজে ট্রাক্টরের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে বর্তমানে মহিষের অবদান অনেকটাই কমে...
১২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের দীর্ঘ নামের একটি আলাদা গুরুত্ব আছে। এই দীর্ঘ নামের মধ্য দিয়ে প্রায় সময় ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামো প্রতিফলিত হয়। দক্ষিণ ভারতে সাধারণত নামের সঙ্গে গ্রামের নাম, বাবার নাম এবং প্রদত্ত নাম যুক্ত থাকে। অন্যদিকে আরব বিশ্বে বংশগতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে একজনের নাম তার বাবা, দাদা এবং কখনো কখনো গোত্রের নাম পর্যন্ত অনুসরণ করে। পশ্চিমা দেশগুলোতেও এমন দীর্ঘ নামের ঐতিহ্য রয়েছে।
যেমন প্রখ্যাত শিল্পীর পুরো নাম পাবলো দিয়েগো হোসে ফ্রান্সিসকো দে পাওলা হুয়ান নেপোমুসেনো মারিয়া দে লোস রেমেদিওস সিপ্রিয়ানো দে লা সান্তিসিমা ত্রিনিদাদ রুইজ ওয়াই পিকাসো! তবে পিকাসোর নামের এই আশ্চর্য দৈর্ঘ্যও নিউজিল্যান্ডের লরেন্স ওয়াটকিন্সের নামের কাছে নস্যি। লরেন্স ওয়াটকিন্স বর্তমানে বিশ্বের দীর্ঘতম নামের গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ধারণ করে আছেন।
২,২৫৩ শব্দের নাম
১৯৯০ সালের মার্চে, নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী লরেন্স তাঁর নামের সঙ্গে ২ হাজারটির বেশি মধ্যনাম যুক্ত করার জন্য আইনগতভাবে নিজের নাম পরিবর্তন করেন। তাঁর পুরো নামে বর্তমানে মোট ২ হাজার ২৫৩টি অনন্য শব্দ রয়েছে। এই নাম তাঁকে দীর্ঘতম ব্যক্তিগত নামের জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস খেতাব এনে দিয়েছে।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর এই অস্বাভাবিক ইচ্ছার কারণ ব্যাখ্যা করেন: ‘আমি সব সময় অদ্ভুত এবং অস্বাভাবিক রেকর্ডগুলোর প্রতি মুগ্ধ ছিলাম। আমি সত্যিই সেই দৃশ্যের অংশ হতে চেয়েছিলাম। আমি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বইটি আগাগোড়া পড়ি এবং দেখি এমন কোনো রেকর্ড আছে কি না যা ভাঙতে পারি। আমার মনে হয়েছিল, বর্তমান রেকর্ডধারীর চেয়ে বেশি নাম যোগ করার রেকর্ডটিই কেবল আমার পক্ষে ভাঙা সম্ভব।’
লরেন্সের নাম পরিবর্তনের এ প্রক্রিয়াটি ছিল দীর্ঘ এবং কঠিন। সেই সময়ে কম্পিউটারের সীমিত ব্যবহারের কারণে পুরো নামের তালিকা টাইপ করতে তাঁকে কয়েক শ ডলার খরচ করতে হয়েছিল। প্রথমে জেলা আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলেও রেজিস্ট্রার জেনারেল তা বাতিল করে দেন। কিন্তু তিনি দমে যাননি। নিউজিল্যান্ডের হাইকোর্টে আপিল করেন এবং আদালত তাঁর পক্ষে রায় দেয়।
তবে এই ঘটনার পরপরই আইন প্রণেতারা দ্রুত দুটি আইন পরিবর্তন করেন, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এত সংখ্যক মধ্যনাম যোগ করতে না পারে। শুরুতে এই রেকর্ড ২ হাজার ৩১০টি নাম হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেও গিনেসের হালনাগাদকৃত নির্দেশিকা অনুসারে তা পরে ২ হাজার ২৫৩টি নামে সংশোধন করা হয়।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে, লরেন্স সেই সময় সিটি লাইব্রেরিতে কাজ করতেন এবং লাইব্রেরির বই থেকে নাম সংগ্রহ করতেন বা সহকর্মীদের কাছ থেকে সুপারিশ নিতেন। তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় নাম হলো— AZ 2000, যার অর্থ হলো আমার নামের আদ্যক্ষর A থেকে Z পর্যন্ত আছে এবং আমার মোট ২ হাজারটি নাম আছে।’
তবে এর জন্য মাঝেমধ্যে লরেন্সকে বেশ ভোগান্তিও পোহাতে হয়। মানুষ সহজে বিশ্বাস করতে চায় না। প্রধান সমস্যা হয় সরকারি দপ্তরগুলোতে গেলে। কারণ, সরকারি কোনো পরিচয়পত্রে তাঁর পুরো নাম ধরানো সম্ভব হয় না!
বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের দীর্ঘ নামের একটি আলাদা গুরুত্ব আছে। এই দীর্ঘ নামের মধ্য দিয়ে প্রায় সময় ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামো প্রতিফলিত হয়। দক্ষিণ ভারতে সাধারণত নামের সঙ্গে গ্রামের নাম, বাবার নাম এবং প্রদত্ত নাম যুক্ত থাকে। অন্যদিকে আরব বিশ্বে বংশগতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে একজনের নাম তার বাবা, দাদা এবং কখনো কখনো গোত্রের নাম পর্যন্ত অনুসরণ করে। পশ্চিমা দেশগুলোতেও এমন দীর্ঘ নামের ঐতিহ্য রয়েছে।
যেমন প্রখ্যাত শিল্পীর পুরো নাম পাবলো দিয়েগো হোসে ফ্রান্সিসকো দে পাওলা হুয়ান নেপোমুসেনো মারিয়া দে লোস রেমেদিওস সিপ্রিয়ানো দে লা সান্তিসিমা ত্রিনিদাদ রুইজ ওয়াই পিকাসো! তবে পিকাসোর নামের এই আশ্চর্য দৈর্ঘ্যও নিউজিল্যান্ডের লরেন্স ওয়াটকিন্সের নামের কাছে নস্যি। লরেন্স ওয়াটকিন্স বর্তমানে বিশ্বের দীর্ঘতম নামের গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ধারণ করে আছেন।
২,২৫৩ শব্দের নাম
১৯৯০ সালের মার্চে, নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী লরেন্স তাঁর নামের সঙ্গে ২ হাজারটির বেশি মধ্যনাম যুক্ত করার জন্য আইনগতভাবে নিজের নাম পরিবর্তন করেন। তাঁর পুরো নামে বর্তমানে মোট ২ হাজার ২৫৩টি অনন্য শব্দ রয়েছে। এই নাম তাঁকে দীর্ঘতম ব্যক্তিগত নামের জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস খেতাব এনে দিয়েছে।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর এই অস্বাভাবিক ইচ্ছার কারণ ব্যাখ্যা করেন: ‘আমি সব সময় অদ্ভুত এবং অস্বাভাবিক রেকর্ডগুলোর প্রতি মুগ্ধ ছিলাম। আমি সত্যিই সেই দৃশ্যের অংশ হতে চেয়েছিলাম। আমি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বইটি আগাগোড়া পড়ি এবং দেখি এমন কোনো রেকর্ড আছে কি না যা ভাঙতে পারি। আমার মনে হয়েছিল, বর্তমান রেকর্ডধারীর চেয়ে বেশি নাম যোগ করার রেকর্ডটিই কেবল আমার পক্ষে ভাঙা সম্ভব।’
লরেন্সের নাম পরিবর্তনের এ প্রক্রিয়াটি ছিল দীর্ঘ এবং কঠিন। সেই সময়ে কম্পিউটারের সীমিত ব্যবহারের কারণে পুরো নামের তালিকা টাইপ করতে তাঁকে কয়েক শ ডলার খরচ করতে হয়েছিল। প্রথমে জেলা আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলেও রেজিস্ট্রার জেনারেল তা বাতিল করে দেন। কিন্তু তিনি দমে যাননি। নিউজিল্যান্ডের হাইকোর্টে আপিল করেন এবং আদালত তাঁর পক্ষে রায় দেয়।
তবে এই ঘটনার পরপরই আইন প্রণেতারা দ্রুত দুটি আইন পরিবর্তন করেন, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এত সংখ্যক মধ্যনাম যোগ করতে না পারে। শুরুতে এই রেকর্ড ২ হাজার ৩১০টি নাম হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেও গিনেসের হালনাগাদকৃত নির্দেশিকা অনুসারে তা পরে ২ হাজার ২৫৩টি নামে সংশোধন করা হয়।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে, লরেন্স সেই সময় সিটি লাইব্রেরিতে কাজ করতেন এবং লাইব্রেরির বই থেকে নাম সংগ্রহ করতেন বা সহকর্মীদের কাছ থেকে সুপারিশ নিতেন। তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় নাম হলো— AZ 2000, যার অর্থ হলো আমার নামের আদ্যক্ষর A থেকে Z পর্যন্ত আছে এবং আমার মোট ২ হাজারটি নাম আছে।’
তবে এর জন্য মাঝেমধ্যে লরেন্সকে বেশ ভোগান্তিও পোহাতে হয়। মানুষ সহজে বিশ্বাস করতে চায় না। প্রধান সমস্যা হয় সরকারি দপ্তরগুলোতে গেলে। কারণ, সরকারি কোনো পরিচয়পত্রে তাঁর পুরো নাম ধরানো সম্ভব হয় না!
জলদস্যুরা শত শত বছর ধরে আমাদের কল্পনায় বিশেষ এক জায়গা দখল করে নিয়েছে। এর কারণ জলদস্যুদের ভয়াবহতার নানা কাহিনি, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সাগরে রোমাঞ্চকর অভিযান ও তাদের গুপ্তধন। ব্ল্যাকবিয়ার্ড থেকে শুরু করে অ্যানি বনি, এই সব জলদস্যুরা যে শুধু অপরাধী ছিলেন তা নয়, তারা প্রকৃতপক্ষে পরিণত হয়েছেন কিংবদন্তিতে। চলুন
১৭ মার্চ ২০২৪ইন্দোনেশিয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পরকীয়ায় ধরার পর অনন্য এক উপায়ে সম্পর্কের ইতি টানলেন। স্ত্রীকে তিনি প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে নিলেন একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কিছু পণ্য এবং নগদ অর্থ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশে, যেখানে তোলাকি নামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রাচীন সামাজিক রীতিনীতিতে...
৩ দিন আগেউত্তর চীনের হেনান প্রদেশের আনইয়াং শহরের একটি নার্সিং হোম সম্প্রতি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মূলত তাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নার্সিং হোমটির এক নারী কর্মকর্তা মিনি স্কার্ট ও স্কুল ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরে বয়স্ক রোগীদের সামনে
১১ দিন আগেথাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় চনবুরি প্রদেশে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জল-মহিষ উৎসব। শতাধিক বছরের পুরোনো এই উৎসবের লক্ষ্য হলো—মহিষদের সম্মান জানানো ও কৃষিক্ষেত্রে তাঁদের বিলুপ্তি রোধ করা। যন্ত্রচালিত কৃষিকাজে ট্রাক্টরের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে বর্তমানে মহিষের অবদান অনেকটাই কমে...
১২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
উত্তর চীনের হেনান প্রদেশের আনইয়াং শহরের একটি নার্সিং হোম সম্প্রতি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মূলত তাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নার্সিং হোমটির এক নারী কর্মকর্তা মিনি স্কার্ট ও স্কুল ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরে বয়স্ক রোগীদের সামনে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে নাচছেন।
ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘আমাদের পরিচালক বয়স্কদের ওষুধ খাওয়াতে যা যা করা দরকার, সবই করছেন।’ ভিডিওতে ওই নারীকে প্রাণবন্তভাবে নাচতে দেখা যায়। হাঁটু পর্যন্ত কালো মোজা পরিহিত অবস্থায় কোমর দোলাতে দেখা যায় তাঁকে। এরপর নীল ইউনিফর্ম পরা অন্য এক কর্মী এক প্রবীণ পুরুষের কাছে গিয়ে তাঁকে ওষুধ খাওয়ান।
নার্সিং হোমটির অনলাইন প্রোফাইল অনুযায়ী, এটি নব্বইয়ের দশকে জন্ম নেওয়া এক পরিচালকের উদ্যোগে পরিচালিত আনন্দমুখর অবসর নিবাস, যারা প্রবীণদের সুখী রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রোফাইলে আরও লেখা আছে, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো, বার্ধক্যের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা।’
ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। এক নেটিজেন মন্তব্য করেন, ‘এখন কি প্রবীণ যত্ন খাতে ইঙ্গিতপূর্ণ নাচও ঢুকে পড়েছে?’ জবাবে নার্সিং হোমের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট লিখেছে, ‘সবকিছুই ইঙ্গিতপূর্ণ নাচের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর নানগুও মেট্রোপলিস ডেইলিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নার্সিং হোমের পরিচালক জানান, ভিডিওতে থাকা নারী আসলে প্রবীণ যত্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী। তিনি স্বীকার করেন যে ভিডিওটি ‘অনুপযুক্ত’ ছিল, তবে ভবিষ্যতে ওই সিনিয়র কর্মীকে আরও সতর্ক হতে বলা হবে। পরিচালক আরও বলেন, ‘যদিও ওই নারী মাঝেমধ্যে প্রচারণামূলক ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি কোনো পেশাদার নৃত্যশিল্পী নন। সাধারণত এই হোমে বিনোদনের জন্য তাস খেলা ও গান গাওয়ার মতো প্রচলিত আয়োজন করা হয়।’
অন্য এক কর্মী পরে জানান, ওই নাচের ভিডিওগুলোর উদ্দেশ্য ছিল চীনের নার্সিং হোমগুলোকে নিয়ে প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করা। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখাতে চেয়েছিলাম যে নার্সিং হোম কোনো নিস্তেজ জায়গা নয়। এখানেও প্রাণবন্ততা আছে, প্রবীণেরাও প্রাণবন্ত হতে পারেন। তবে এখন বুঝতে পারছি, এই পদ্ধতির ভালো-মন্দ দুটোই আছে।’
জনরোষ বাড়তে থাকায় নার্সিং হোমটির সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে পরে শতাধিক এই সম্পর্কিত ভিডিও মুছে ফেলা হয়। আনইয়াং সিভিল অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর প্রবীণ সেবা বিভাগ জানিয়েছে, ঘটনাটির বিস্তারিত তদন্ত করা হবে এবং ফলাফল জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশটির প্রবীণ জনগোষ্ঠী দ্রুত বাড়ছে। ২০২৪ সালের শেষে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩১ কোটি, যা মোট জনসংখ্যার ২২ শতাংশ।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
উত্তর চীনের হেনান প্রদেশের আনইয়াং শহরের একটি নার্সিং হোম সম্প্রতি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মূলত তাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নার্সিং হোমটির এক নারী কর্মকর্তা মিনি স্কার্ট ও স্কুল ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরে বয়স্ক রোগীদের সামনে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে নাচছেন।
ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘আমাদের পরিচালক বয়স্কদের ওষুধ খাওয়াতে যা যা করা দরকার, সবই করছেন।’ ভিডিওতে ওই নারীকে প্রাণবন্তভাবে নাচতে দেখা যায়। হাঁটু পর্যন্ত কালো মোজা পরিহিত অবস্থায় কোমর দোলাতে দেখা যায় তাঁকে। এরপর নীল ইউনিফর্ম পরা অন্য এক কর্মী এক প্রবীণ পুরুষের কাছে গিয়ে তাঁকে ওষুধ খাওয়ান।
নার্সিং হোমটির অনলাইন প্রোফাইল অনুযায়ী, এটি নব্বইয়ের দশকে জন্ম নেওয়া এক পরিচালকের উদ্যোগে পরিচালিত আনন্দমুখর অবসর নিবাস, যারা প্রবীণদের সুখী রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রোফাইলে আরও লেখা আছে, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো, বার্ধক্যের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা।’
ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। এক নেটিজেন মন্তব্য করেন, ‘এখন কি প্রবীণ যত্ন খাতে ইঙ্গিতপূর্ণ নাচও ঢুকে পড়েছে?’ জবাবে নার্সিং হোমের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট লিখেছে, ‘সবকিছুই ইঙ্গিতপূর্ণ নাচের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর নানগুও মেট্রোপলিস ডেইলিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নার্সিং হোমের পরিচালক জানান, ভিডিওতে থাকা নারী আসলে প্রবীণ যত্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী। তিনি স্বীকার করেন যে ভিডিওটি ‘অনুপযুক্ত’ ছিল, তবে ভবিষ্যতে ওই সিনিয়র কর্মীকে আরও সতর্ক হতে বলা হবে। পরিচালক আরও বলেন, ‘যদিও ওই নারী মাঝেমধ্যে প্রচারণামূলক ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি কোনো পেশাদার নৃত্যশিল্পী নন। সাধারণত এই হোমে বিনোদনের জন্য তাস খেলা ও গান গাওয়ার মতো প্রচলিত আয়োজন করা হয়।’
অন্য এক কর্মী পরে জানান, ওই নাচের ভিডিওগুলোর উদ্দেশ্য ছিল চীনের নার্সিং হোমগুলোকে নিয়ে প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করা। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখাতে চেয়েছিলাম যে নার্সিং হোম কোনো নিস্তেজ জায়গা নয়। এখানেও প্রাণবন্ততা আছে, প্রবীণেরাও প্রাণবন্ত হতে পারেন। তবে এখন বুঝতে পারছি, এই পদ্ধতির ভালো-মন্দ দুটোই আছে।’
জনরোষ বাড়তে থাকায় নার্সিং হোমটির সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে পরে শতাধিক এই সম্পর্কিত ভিডিও মুছে ফেলা হয়। আনইয়াং সিভিল অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর প্রবীণ সেবা বিভাগ জানিয়েছে, ঘটনাটির বিস্তারিত তদন্ত করা হবে এবং ফলাফল জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশটির প্রবীণ জনগোষ্ঠী দ্রুত বাড়ছে। ২০২৪ সালের শেষে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩১ কোটি, যা মোট জনসংখ্যার ২২ শতাংশ।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
জলদস্যুরা শত শত বছর ধরে আমাদের কল্পনায় বিশেষ এক জায়গা দখল করে নিয়েছে। এর কারণ জলদস্যুদের ভয়াবহতার নানা কাহিনি, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সাগরে রোমাঞ্চকর অভিযান ও তাদের গুপ্তধন। ব্ল্যাকবিয়ার্ড থেকে শুরু করে অ্যানি বনি, এই সব জলদস্যুরা যে শুধু অপরাধী ছিলেন তা নয়, তারা প্রকৃতপক্ষে পরিণত হয়েছেন কিংবদন্তিতে। চলুন
১৭ মার্চ ২০২৪ইন্দোনেশিয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পরকীয়ায় ধরার পর অনন্য এক উপায়ে সম্পর্কের ইতি টানলেন। স্ত্রীকে তিনি প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে নিলেন একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কিছু পণ্য এবং নগদ অর্থ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশে, যেখানে তোলাকি নামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রাচীন সামাজিক রীতিনীতিতে...
৩ দিন আগেবিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের দীর্ঘ নামের একটি আলাদা গুরুত্ব আছে। এই দীর্ঘ নামের মধ্য দিয়ে প্রায় সময় ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামো প্রতিফলিত হয়। দক্ষিণ ভারতে সাধারণত নামের সঙ্গে গ্রামের নাম, বাবার নাম এবং প্রদত্ত নাম যুক্ত থাকে। অন্যদিকে আরব বিশ্বে বংশগতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে একজনের নাম তার...
১০ দিন আগেথাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় চনবুরি প্রদেশে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জল-মহিষ উৎসব। শতাধিক বছরের পুরোনো এই উৎসবের লক্ষ্য হলো—মহিষদের সম্মান জানানো ও কৃষিক্ষেত্রে তাঁদের বিলুপ্তি রোধ করা। যন্ত্রচালিত কৃষিকাজে ট্রাক্টরের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে বর্তমানে মহিষের অবদান অনেকটাই কমে...
১২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
থাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় চনবুরি প্রদেশে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জল-মহিষ উৎসব। শতাধিক বছরের পুরোনো এই উৎসবের লক্ষ্য হলো—মহিষদের সম্মান জানানো ও কৃষিক্ষেত্রে তাঁদের বিলুপ্তি রোধ করা। যন্ত্রচালিত কৃষিকাজে ট্রাক্টরের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে বর্তমানে মহিষের অবদান অনেকটাই কমে গেছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, চনবুরির এই জল-মহিষ দৌড় উৎসবের ইতিহাস দেড় শ বছরের পুরোনো। নির্ধারিত স্থানে ফুলের মালা ও সাজসজ্জায় সজ্জিত মহিষদের সঙ্গে অংশ নেয় অসংখ্য স্থানীয় মানুষ। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত মহিষ-আরোহীদের দেখতেও ভিড় জমে পর্যটকদের।
রাজধানী ব্যাংকক থেকে ঘণ্টাখানেক দূরের এই উৎসব এখন শুধু বিনোদন নয়, বরং থাই সংস্কৃতির একটি জীবন্ত ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ‘কোয়াই’ নামে পরিচিত থাই জল-মহিষ অতীতে ছিল কৃষকের শক্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক। কিন্তু যান্ত্রিক চাষাবাদের ফলে এদের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে। তাই সরকার ও স্থানীয় কৃষকেরা এখন সংরক্ষণ ও প্রজনন কর্মসূচির মাধ্যমে মহিষ রক্ষায় সচেষ্ট হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক থাওয়াচাই ডেং-এনগামের পরিবার ৩০টি মহিষ পালন করে। তিনি বলেন, ‘মহিষ মাঠে কাজ করতে পারলেও তারা যন্ত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে না। তারপরও মহিষ আমাদের পরিবারের মতো। মানুষ মহিষ লালন করে, আর মহিষ মানুষকে বাঁচায়।’
ডেং-এনগামের পাঁচ বছর বয়সী কালো মহিষ ‘টড’ এই বছর প্রথমবারের মতো সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে এবং সবার মন জয় করেছে। মূলত মহিষের শিং, খুর ও দেহের গঠন দেখেই বিচারকেরা তার সৌন্দর্য বিচার করেন।
এখন মহিষ শুধু কৃষিকাজে নয়, উৎসব ও প্রদর্শনীর প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবে থাকে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য, ফুলে সাজানো মহিষের শোভাযাত্রা এবং ১০০ মিটারের দৌড় প্রতিযোগিতা। চনবুরির পশুপালন কেন্দ্রের সহকারী কর্মকর্তা পাপাদা স্রিসোফন বলেন, ‘প্রতি বছর উৎসব বড় হচ্ছে। এই আয়োজন না থাকলে কৃষকেরা মহিষ পালনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।’
উল্লেখ্য, থাই সরকার ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর ‘১৪ মে’ দিনটিকে ‘থাই মহিষ সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।
থাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় চনবুরি প্রদেশে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জল-মহিষ উৎসব। শতাধিক বছরের পুরোনো এই উৎসবের লক্ষ্য হলো—মহিষদের সম্মান জানানো ও কৃষিক্ষেত্রে তাঁদের বিলুপ্তি রোধ করা। যন্ত্রচালিত কৃষিকাজে ট্রাক্টরের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে বর্তমানে মহিষের অবদান অনেকটাই কমে গেছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, চনবুরির এই জল-মহিষ দৌড় উৎসবের ইতিহাস দেড় শ বছরের পুরোনো। নির্ধারিত স্থানে ফুলের মালা ও সাজসজ্জায় সজ্জিত মহিষদের সঙ্গে অংশ নেয় অসংখ্য স্থানীয় মানুষ। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত মহিষ-আরোহীদের দেখতেও ভিড় জমে পর্যটকদের।
রাজধানী ব্যাংকক থেকে ঘণ্টাখানেক দূরের এই উৎসব এখন শুধু বিনোদন নয়, বরং থাই সংস্কৃতির একটি জীবন্ত ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ‘কোয়াই’ নামে পরিচিত থাই জল-মহিষ অতীতে ছিল কৃষকের শক্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক। কিন্তু যান্ত্রিক চাষাবাদের ফলে এদের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে। তাই সরকার ও স্থানীয় কৃষকেরা এখন সংরক্ষণ ও প্রজনন কর্মসূচির মাধ্যমে মহিষ রক্ষায় সচেষ্ট হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক থাওয়াচাই ডেং-এনগামের পরিবার ৩০টি মহিষ পালন করে। তিনি বলেন, ‘মহিষ মাঠে কাজ করতে পারলেও তারা যন্ত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে না। তারপরও মহিষ আমাদের পরিবারের মতো। মানুষ মহিষ লালন করে, আর মহিষ মানুষকে বাঁচায়।’
ডেং-এনগামের পাঁচ বছর বয়সী কালো মহিষ ‘টড’ এই বছর প্রথমবারের মতো সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে এবং সবার মন জয় করেছে। মূলত মহিষের শিং, খুর ও দেহের গঠন দেখেই বিচারকেরা তার সৌন্দর্য বিচার করেন।
এখন মহিষ শুধু কৃষিকাজে নয়, উৎসব ও প্রদর্শনীর প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবে থাকে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য, ফুলে সাজানো মহিষের শোভাযাত্রা এবং ১০০ মিটারের দৌড় প্রতিযোগিতা। চনবুরির পশুপালন কেন্দ্রের সহকারী কর্মকর্তা পাপাদা স্রিসোফন বলেন, ‘প্রতি বছর উৎসব বড় হচ্ছে। এই আয়োজন না থাকলে কৃষকেরা মহিষ পালনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।’
উল্লেখ্য, থাই সরকার ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর ‘১৪ মে’ দিনটিকে ‘থাই মহিষ সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।
জলদস্যুরা শত শত বছর ধরে আমাদের কল্পনায় বিশেষ এক জায়গা দখল করে নিয়েছে। এর কারণ জলদস্যুদের ভয়াবহতার নানা কাহিনি, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সাগরে রোমাঞ্চকর অভিযান ও তাদের গুপ্তধন। ব্ল্যাকবিয়ার্ড থেকে শুরু করে অ্যানি বনি, এই সব জলদস্যুরা যে শুধু অপরাধী ছিলেন তা নয়, তারা প্রকৃতপক্ষে পরিণত হয়েছেন কিংবদন্তিতে। চলুন
১৭ মার্চ ২০২৪ইন্দোনেশিয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পরকীয়ায় ধরার পর অনন্য এক উপায়ে সম্পর্কের ইতি টানলেন। স্ত্রীকে তিনি প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে নিলেন একটি গরু, ঐতিহ্যবাহী কিছু পণ্য এবং নগদ অর্থ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি প্রদেশে, যেখানে তোলাকি নামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রাচীন সামাজিক রীতিনীতিতে...
৩ দিন আগেবিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের দীর্ঘ নামের একটি আলাদা গুরুত্ব আছে। এই দীর্ঘ নামের মধ্য দিয়ে প্রায় সময় ঐতিহ্য ও সামাজিক কাঠামো প্রতিফলিত হয়। দক্ষিণ ভারতে সাধারণত নামের সঙ্গে গ্রামের নাম, বাবার নাম এবং প্রদত্ত নাম যুক্ত থাকে। অন্যদিকে আরব বিশ্বে বংশগতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে একজনের নাম তার...
১০ দিন আগেউত্তর চীনের হেনান প্রদেশের আনইয়াং শহরের একটি নার্সিং হোম সম্প্রতি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মূলত তাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এই সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নার্সিং হোমটির এক নারী কর্মকর্তা মিনি স্কার্ট ও স্কুল ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরে বয়স্ক রোগীদের সামনে
১১ দিন আগে