Ajker Patrika

নগ্ন হয়ে পরিচিতি বাড়াচ্ছে যে গ্রামের মানুষ

ডয়চে ভেলে
আপডেট : ৩০ জুন ২০২৩, ১৬: ১৪
নগ্ন হয়ে পরিচিতি বাড়াচ্ছে যে গ্রামের মানুষ

স্পেনের এক লুপ্তপ্রায় গ্রামের মানুষ বহির্বিশ্বের নজর আকর্ষণ করতে এক অভিনব পথ বেছে নিয়েছে৷ ক্যালেন্ডারের জন্য ক্যামেরার সামনে নগ্ন অবস্থায় হাজির হয়েছে তাঁরা৷ ইতিবাচক সাড়া পেয়ে পরের বছরও একই কাজ করতে চায় গ্রামবাসী৷

খুয়ানখো পেরেসের মতো গ্রামের অনেকেই জামাকাপড় খুলেছে৷ ৬৮ বছর বয়সী মানুষটি আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন৷ এক বছর আগে সেই জায়গায় গ্রামের প্রায় সব মানুষ বিবস্ত্র হয়ে ছবি তুলিয়েছিল৷ খুয়ানখো বলেন, ‘অংশ না নিয়ে পারিনি৷ ওরা বলল, মানুষ কম পড়ছে৷ জনসংখ্যা এত কম হওয়ায় অন্য কোনো উপায় ছিল না।’

স্পেনের মোরিকা অঞ্চলের পেনিয়া সাফরা দে আবাখো নামে গ্রামটির বাসিন্দারা ভাগ্যান্বেষণের জন্য একে একে গ্রাম ছেড়েছে। টিকে রয়েছে শুধু ১৬ জন। গ্রামটিকে মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে তারা ক্যালেন্ডারের জন্য নিজেদের নগ্ন ছবি তুলিয়েছিল৷

স্পেনের রক্ষণশীল দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে এমন ঘটনা বেশ আলোড়ন তুলেছিল৷ আন্তোনিয়া পেরেয়াও সেই শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন৷ সেখানকার মানুষ যে অনেক খোলা মনের অধিকারী এবং অগ্রগতির পক্ষে, ৬৪ বছর বয়সী এই নারী তা দেখাতে চান৷ আন্তোনিয়া বলেন, ‘আমাদের ভাবমূর্তি বেশ খারাপ৷ আমরাও বড় জনপদের মানুষের মতো ইমেজ চাই৷ আমরাও তো কর দিই৷ অথচ আমাদের ছোট এই জায়গা যেন কিছুটা অবহেলিত৷’

ফটোগ্রাফার দাবিদ কান্তো ও খুয়ানখো রামিরেস গ্রামের বাসিন্দাদের সহজেই বোঝাতে পেরেছিলেন৷ দাবিদ বলেন, ‘গ্রামে মুখে-মুখেই খবর ছড়িয়ে পড়ে৷ প্রতিবেশীরা কী করছে, কত ভালো করছে, মানুষ তা দেখে৷ এভাবে তারা একে অপরের পথ অনুসরণ করে৷’

spনগ্ন হয়ে পরিচিতি বাড়াচ্ছেন স্পেনের এক গ্রামের মানুষগ্রামের মেয়রের মথায় নগ্ন ক্যালেন্ডারের আইডিয়া আসে৷ ৩০ বছর বয়সী লুসিয়া নিকোলাস গ্রামের অন্যতম তরুণদের মধ্যে পড়েন৷ তিনি প্রতিবেশীদের সাহস দেখে গর্বিত৷ তিনি মনে করেন, ‘এটা শুধু একধরনের মুক্তি নয়৷ আমরা অনেক বদ্ধমূল ধারণাও ভেঙে দিচ্ছি৷ শারীরিক কসরত করা মানুষের ছবি তোলা হয়নি৷ এরা সাধারণ মানুষ৷ এখানে সবাই নিজেকে নিজের মতো করেই দেখাতে পারে৷ আমাদের দেখা অন্যান্য নগ্ন ছবির মতো নয়৷ আমি নিজেও এভাবে ছবি তুলিয়েছি৷ ফটো দারুণ হয়েছে৷’

লুসিয়া ও তাঁর সতীর্থরা এসব ছবির মাধ্যমে অন্য একটি বার্তাও দিতে চেয়েছেন৷ গত শতাব্দীর ষাটের দশক থেকে সেই অঞ্চলে বালু ও মার্বেল পাথর সংগ্রহ করা হচ্ছে৷ এককালের সুন্দর গ্রাম আজ পাথর ভাঙার বিকট শব্দ, ধুলা ও নোংরার ভারে আক্রান্ত৷ লুসিয়া বলেন, ‘এ ছাড়া অনেক সম্পদ রয়েছে৷ আমাদের একটা সংস্কৃতিও আছে৷ আমরা সেটাই দেখাতে চাই৷ ওয়াইন সেলার আছে, পাইনগাছ আছে, যেটির বয়স নিশ্চয় আমাদের সবার চেয়ে বেশি৷ আমাদের আশপাশের সবকিছুর থেকেও আমাদের নিজস্ব মূল্য রয়েছে৷ সেটাই আমরা দেখাতে চাই৷’

ইতিমধ্যে সেই ক্যালেন্ডার স্পেনের সীমানার বাইরেও পরিচিতি পেয়েছে৷ কুমড়োচাষি হিসেবে খুয়ানখো পেরেস তাতে খুশি৷ তিনি নিজের সম্পূর্ণ এক নতুন দিক আবিষ্কার করেছেন৷ খুয়ানখো বলেন, ‘আগে কখনো এমনটা না করলেও আমার আর কোনো সংকোচ নেই৷ পরেরবারও অবশ্যই সঙ্গে থাকব৷’

পেনিয়া সাফরা দে আবাখো গ্রামের মানুষ এরই মধ্যে পরের বছরের জন্য নতুন ক্যালেন্ডারের পরিকল্পনা করছে৷ তখন গ্রামের আরও মানুষ নগ্ন হতে চায়৷

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএসএমএমইউতে হেনস্তার ঘটনা নিয়ে যা বললেন প্রাণ গোপালের মেয়ে ডা. অনিন্দিতা

বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব: গ্রেপ্তার ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী

জামিনে বেরিয়েই ছদ্মনামে হাসপাতালে ভর্তি হন ‘ডিবি হেফাজতে’ মৃত এজাজ

স্বাধীনতা দিবসে এবার কুচকাওয়াজ হচ্ছে না

থমথমে খামারবাড়ি: সড়ক অবরোধ করে চলছে অবস্থান কর্মসূচি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত