Ajker Patrika

বেলজিয়ামে পানির নিচে শুটিং করার অভিনব স্টুডিও 

ডয়েচে ভেলে
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৩, ১৯: ১৬
Thumbnail image

চলচ্চিত্রের পর্দায় উত্তাল সমুদ্র, পানির নিচে অ্যাকশন দেখলে মনে বেশ রোমাঞ্চ জাগে। কিন্তু এমন দৃশ্যের শুটিং মোটেই সহজ নয়। তবে বেলজিয়ামে এক অভিনব স্টুডিও সেই কাজ অনেকটা সহজ করে তুলেছে। 

দেখলে সহজ মনে হলেও পানির নিচে ভিডিও তোলা বাস্তবে বেশ কঠিন। এর জন্য বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের প্রয়োজন। বেলজিয়ামের অনেক মানুষ পানিরে ওপর বা নিচে ভিডিও ক্যামেরা চালাতে পারদর্শী। এমনকি সেখানেই বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ‘ওয়াটার স্টুডিও’ রয়েছে। ১০ মিটার গভীর সেই পুলের মেঝে ওঠানামা করা যায়, স্পেশাল এফেক্টের ব্যবস্থাও রয়েছে। 

উপযুক্ত আবহাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে বিরক্ত এক ক্যামেরাম্যান ও ডুবুরি এমন সমাধানসূত্র সৃষ্টি করেছেন। স্টুডিওর মালিক ভিম মিশিয়েলস বলেন, ‘কখনো একটি মাত্র এফেক্টের জন্য দিনের পর দিন পানির মধ্যে অপেক্ষা করতে হয়েছে। সঙ্গে আরও ৫০ জনকেও অপেক্ষা করতে হয়েছে। তখন মনে হলো, অনেক হয়েছে, আর নয়। নিশ্চয় আরও ভালো উপায় রয়েছে।’ 

সেই চিন্তা থেকেই বেলজিয়ামের ছোট শহর ফিলফোর্ড শহরে ‘লাইটস স্টুডিও’ সৃষ্টি হলো। বাইরে থেকে অবশ্য কিছু বোঝার উপায় নেই। 

স্টুডিওর পুল প্রযুক্তিতে ভরা। ঝড় সৃষ্টি করা যায়। কয়েক মিটার উঁচু ঢেউ, মুষলধারে বৃষ্টিও কোনো সমস্যা নয়। স্টান্টম্যানরা সেই পরিস্থিতিতে কেরামতি দেখিয়ে শ্রদ্ধার পাত্র হন ৷ স্টান্টম্যান হিসেবে জেপি ডে কাম মনে করিয়ে দেন, এই ঢেউ কিন্তু মোটেই সহজ নয়। মনে হতে পারে, ওপরে মাথা তুলে নিশ্বাস নেওয়া যায়। কিন্তু তখনই অন্য ঢেউ আছড়ে পড়ে। নাকে পানি ঢুকে যায়। শান্ত থাকতে হয়, মনে আতঙ্ক এলে চলবে না। ঝোড়ো বাতাস, বিকট শব্দ, উঁচু ঢেউয়ের পাশাপাশি বিশাল জলকামান থেকেও পানির ধাক্কা আসে। সেই অবস্থায় সাঁতার কাটা আরও কঠিন। 

স্টান্টম্যান হিসেবে জেপি অত্যন্ত শক্তপোক্ত মানুষ। ফলে স্টুডিওর পরিবেশে তাঁকে কতটা চাপ সামলাতে হয়, তা কল্পনা করা কঠিন নয়। নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়ায় এবং অনেক কর্মীর সহায়তায় এফেক্ট যথেষ্ট নিরাপদ করার ব্যবস্থা থাকলেও অলিম্পিকের মাপের পুলে ৬০ লাখ লিটার পানি সামলানো বেশ কঠিন কাজ। 

সৌর প্যানেল ও অন্য পরিবেশবান্ধব উপায়ে পানির তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখা হয়। দীর্ঘ শুটিংয়ের জন্য সেই তাপমাত্রা মনোরম হলেও অন্য সমস্যা রয়েছে। ডুবুরি ও অভিনেতা ক্রিস্টফ ক্যোনেন বলেন, ‘আমরা অভিনেতাদের এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করি। উপায় থাকলে প্রোডাকশনের আগেই তা শুরু হয়। তাদের শ্বাসপ্রশ্বাসের কৌশল শেখাই, শান্ত থাকার উপায় বলি এবং পানির নিচে স্কুবা ডাইভিংয়ের সময় কীভাবে মুখ দিয়ে বাতাস নেওয়া যায়, তা-ও শেখাই। অভিনেতাদের ভালো করে প্রস্তুত করলে অনেক সময় বাঁচে। কারণ এমন পরিবেশে তাঁদের জন্য এই অভিজ্ঞতা অত্যন্ত কঠিন।’ 

এই স্টুডিওতে অনেক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছে। কলাকুশলীরা কোথায় সেই সব দৃশ্যের শুটিং করেছেন, দর্শকদের সেই ধারণা নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত