ফজলুল কবির

কিছুদিন ধরেই মাথায় কেবল ‘পদ’ ঘুরছে। এ নিয়ে মনে মনে বিড়ম্বনাও কম নয়। কারণ, পদ নিয়ে বিপদের তো শেষ নেই। এ এক বিরাট আপদ বলা যায়। ভাবুন না, পদধারীদের কত তটস্থ থাকতে হয় পদ হারানোর ভয়ে। পান থেকে চুন খসলেই উঠে যেতে পারে পদত্যাগের দাবি। কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কায় যেমনটা হলো। দেশে দেশে এমনটা তো প্রায়ই হয়। আবার পদপ্রত্যাশীদের থাকতে হয় দুর্ভাবনায়—পাব তো?
পদ কই না থাকে। দেহ বস্তুটি পরিবহনের একমাত্র দায় এই পদ বা পায়ের। আবার খাবার টেবিলেও আছ সে মহাসমারোহে হরেক রকম পদ হয়ে। এমনকি এই যে বাক্যটি লেখা হলো—সেখানেও আছে পদ। ঘরে বা বাইরে হাজারটা সংকট তো বিপদ হয়েই আসে, যেমনটা আসে জঙ্গলে শ্বাপদের ভয়ে। আবার অনাহূত অনেকেই তো মাঝেমধ্যেই ‘আপদ’ শব্দের অর্থ বুঝিয়ে দেয় নিজ গুণে। পদ সত্যিই...।
তা এই পদের অর্থ কী? হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’-এ বলছেন, ‘পদ’ অর্থ চরণ বা পা। তাহলে? হ্যাঁ, এর পর এই শব্দের অর্থের হাজারটা বিস্তৃতি হয়েছে। কিছু উদাহরণ তো আগেই দেওয়া হলো।
কিন্তু এর ধাতুমূলে গেলে অর্থ কী দাঁড়ায়? ‘পদ’ শব্দের ধাতুমূল ‘পদ্’, যার অর্থ—গতি, প্রাপ্তি। আচ্ছা পদ্ অর্থ তবে প্রাপ্তিও! এ কারণেই কি কারও সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে পদক দেওয়া হয়? হতে পারে।
পদ নিয়ে আলাপে তো মাথা ঘুরে যাওয়ার জোগাড় দেখা যাচ্ছে। এর থেকে কত শব্দ যে তৈরি হয়েছে, কোনোটার অর্থ ইতি, তো কোনোটা নেতি। পত্রিকার পাতা খুলে যেমন ‘পদস্থ’ কর্মকর্তাদের বিবৃতি, উদ্ধৃতিতে চোখ আটকায়, তেমনি বিরাট অগণন জনতার পদে পদে ‘অপদস্থ’ হওয়ার খবরও তো কম মেলে না। এই যেমন পদস্থরা সিদ্ধান্ত নিলেন, জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমানোর সুফল যাত্রী সাধারণের পাওয়া উচিত। ফলে তাঁরা সড়কে প্রতি কিলোমিটারে ৫ পয়সা, আর নৌপথে আরও বড় সুবিধা দিয়ে প্রতি কিলোমিটারে ১৫ পয়সা করে ভাড়া কমালেন। এর মাধ্যমে পদস্থরা কাকে ঠিক অপদস্থ করলেন, ঠিক বোঝা গেল না।
সে যাক। আবার পদে ফেরা যাক। পদ অর্থ চারণ, যা গতি আনে। আর গতিহীনের তো প্রাপ্তি নাই। ফলে পদসঞ্চালন ছাড়া আর গতি কি? ঠিকঠাক ‘পদক্ষেপ’ নিলে জীবন-খাতায় ‘সম্পদ’-এর সংযোজন হয় জানিয়ে কতজনই তো শত পরামর্শ দিয়ে গেলেন। সেসব শুনে কতজন তার দেখা পেল, তার অবশ্য কোনো হিসাব রাখা হয়নি।
এদিকে আবার চোখ রাঙিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শত সতর্কবার্তা। পাহাড়ের ঢাল থেকে পা হড়কালো তো গেল সব। আবার অনেক গুরু ও নমস্য ব্যক্তির ‘পদস্খলন’ বলে দেয়, পা হড়কানো সব সময় পা হড়কানোও নয়, গোটা মানুষটারই হড়কে যাওয়া। সঙ্গে বড় আয়োজনে বা ভূমিকম্পে বা কনসার্টে কিংবা ফি-বছর ধনাঢ্য ব্যক্তিদের জাকাত বা দান-খয়রাতের আয়োজনে পদদলনের ভয় তো আছেই। পা নিয়ে তাই তটস্থ না থেকে উপায় থাকে না।
আবার আছে পাপের ভয়ও। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ‘লোটাকম্বল’-এ লিখছেন—পা থেকেই পাপের শুরু। পরে অবশ্য জানা গিয়েছিল ওটা ছিল প্রেমেরও শুরু। কৈশোরে পড়া সে বই প্রেম প্রশ্নে তাই রীতিমতো ধন্ধে ফেলে দিয়েছিল।
পদ নিয়ে টিটকারি বা তির্যক মন্তব্যও কম করা হয় না। ‘পা-চাটা’ বা আরও ভদ্রভাব আনতে ‘পদলেহী’ বলা হলে সেখানে পদের মান থাকে কই। যদিও পদলেহীগণ যুগে যুগে ‘সম্মানিত’ পদস্থদেরই পদলেহন করে এসেছেন। আবার এই পদ-এর সঙ্গে যখন সেবা যোগ করা হয়, তখন কেমন একটা ভক্তিভাব জাগ্রত হয়। এই ভক্তি থেকেই গুরুজনের পদধূলি নেওয়া। দেবতার অর্ঘ্যও তো পায়েই নিবেদন করা হয়। সেখানেই আশ্রয় নেয় ভক্ত। রামপ্রসাদ যেমন শ্যামাসংগীতে বলছেন—পদের মতো পদ পাই তো সে পদ লয়ে বিপদ সারি।
যদি এই পদ আসে ব্যাকরণের আঙিনায়, তবে কারও কারও আবার গা-হিম হয়ে আসে। কারণ, চেনা শব্দগুলো বাক্যে ঢুকে ‘পদ’ নাম নিয়ে কেমন যেন মুখ ভ্যাংচাতে থাকে। কত ধরনের পদ যে আছে—বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, ক্রিয়া। এই সব পদ সম্পর্কে সম্যক ধারণা নিয়ে যখন কবি বসেন কবিতা লিখতে, তখন তো তিনি নাকি আবার ‘পদ’-ই রচনা করেন। বাংলার প্রাচীন গ্রন্থ চর্যা তো এই পদেরই সমষ্টি। আর যখন আসে শিশুতোষের প্রশ্ন, তখন পদে পদে মিল না দিলে কি আর হয়!
আবার ‘পদ’-যুক্ত একই ধাঁচের শব্দ কত ভিন্ন অর্থ নির্দেশ করে। এই যেমন পদব্রজে কেউ যাচ্ছে শুনলে মনে হয় অনন্ত একটা পথ যেন সামনে। সেখানে কেন, কী, ইত্যাদি প্রশ্ন মাথায় আসে কম। অথচ পদযাত্রা শুনলে মনে হয়, কোনো ঘেরাও-টেরাওয়ের বিষয় আছে নিশ্চয়। প্রশ্ন আসে—কেন পদযাত্রা, কে করছে, কার বিরুদ্ধে। সঙ্গে একটা ঔৎসুক্যও কাজ করে যে, এই পদযাত্রাদল কোথায় গিয়ে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হবে।
তাই এই ‘পদ’ নিয়ে বিপদেই আছে বাঙালি। এই পদকে সে কোথায় রাখবে, তা নিয়ে তার যেন অস্বস্তির সীমা নেই। ‘দেখা হলো ভালোবাসা, বেদনায়’ কবিতায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় নিজের বয়ঃসন্ধিকালের বর্ণনা দিতে গিয়ে লিখছেন, ‘এইসব দেখে, শুনে, দৌড়িয়ে, জিরিয়ে।/আমার কণ্ঠস্বর ভাঙে, হাফপ্যান্টের নীচে বেরিয়ে থাকে/একজোড়া বিসদৃশ ঠ্যাং’। নিজের পদযুগল নিয়ে বয়ঃসন্ধির সুনীলের অস্বস্তিটা দৃশ্যমান। বাঙালি যেন বুঝেই পাচ্ছে না, এই পদকে সে কোথায় রাখবে। নিজের পদই যেন তার আপদ হয়ে দেখা দিয়েছে। একে কখনো আদর-কদর করে, তো কখনো ধুর-ছাই করে, যেন সে অস্পৃশ্য। অথচ পদত্যাগ নিয়ে কত আপত্তি, ওজোর, দ্বিপক্ষীয় আলোচনা, আন্দোলন। অথচ পদ আঁকড়ে থাকায় কত জানবাজি। দলে বা প্রশাসনে পদোন্নতির জন্য পদপ্রার্থীদের উচ্চপদস্থদের কত পদসেবা, কখনো কখনো পদলেহন করতে দেখা যায়। কখনো স্বপদে বহাল থাকতেও এমন মহাজাগতিক পদলেহন করতে হয়। তারও দেখা মেলে খবরের ভাঁজে ভাঁজে। সে কথা আর না বলি।
এদিকে পদের পরিধেয় হওয়ার দরুন একই ভাগ্য জুটেছে জুতার কপালে। এই যুগে মোটামুটি সামর্থ্য থাকলেই কেউ জুতার কথা না ভেবে পারে না। শুধু ভাবনা কেন, পরতেও হয়। অথচ কাউকে অপমান করার জন্য জুতাই যেন তার শেষ অবলম্বন হয়ে ওঠে। জুনিয়র বুশের দিকে ছুড়ে দেওয়া জুতার কথা তো মনে আছে? এই দেখে-শুনে বা খবরের কাগজে এর ছবি ও খবর দেখে-পড়ে একেবারে মহাজাগতিক ঢি ঢি পড়ে গেল। সে কথা তো ভুলবার নয়। এই অপমান ও অপমান-উদ্ভূত কষ্ট দুইই তো পায়ের পরিধেয় হওয়ার কারণেই। জুতার মর্যাদা তো গেল শুধু পায়ে স্থান হওয়ার কারণেই।
এই তো কয়েক দিন আগে এই রাজধানীতেই শুরু হওয়া এক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে গিয়ে এক শিল্পকর্মে জুতার স্থান দেখে চমকে যেতে দেখা গেল কত কত বোদ্ধাদের। অথচ তাঁরা কেউ খালি পায়ে ছিলেন না। কেউ কেউ জুতার প্রতি বেশ যত্নশীল, সেও বোঝা গেল। শিল্পকর্মটা ছিল একটা গোল আয়না ঘিরে বেশ কিছু ছোট-বড় জুতা দিয়ে তৈরি মালার। একটা লকেটের মতোও ছিল। বলা যায়, একটা ফটোফ্রেম। ‘নভেরার খোঁজে’ শীর্ষক সেই প্রদর্শনীতে দীপ্তি দওর এই কাজ যেন অন্য সব সুন্দর-পেলব কাজের মাঝখানে অনাহূত ঢুকে পড়েছে। নভেরাকে খুঁজতে হলে এমন কাজই তো থাকার কথা। কিন্তু ছিল না আর। আর হ্যাঁ ছিলেন শিল্পী প্রিমা, যিনি চমকে দিয়েছিলেন। প্রশ্ন জেগেছিল—সপ্রশ্ন দৃষ্টি ও দৃশ্যায়ন নিয়ে কেন আর কেউ নেই? এককালের ব্রাত্য, দ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত এবং অভিমানে দেশত্যাগ করা নভেরাও কি তবে একটা উপলক্ষ হয়ে উঠছেন শুধু? অর্ঘ্য দেওয়ার ছলে তিনিও তবে বন্দী হচ্ছেন একটু একটু করে বেদির চৌহদ্দিতে? সে যাক এসব অন্য বিষয়। কথা হলো সেই জুতা-সাঁটানো শিল্পকর্মের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিতেই শুরু হলো আরেক ক্রিয়া। বোঝা গেল, অন্যায় হয়ে গেছে। প্রশ্ন জাগল—যতজন এবার আহত বোধ করলেন, ততজন কি ওই শিক্ষকের গলায় জুতার মালা দেখে আহত হয়েছিলেন, প্রতিবাদ করেছিলেন, নাকি জুতার বদলে যদি-কিন্তুর মালা গেঁথেছেন?
এসব আলাপে কাজ নেই, আমরা বরং পদ নিয়ে থাকি।

কিছুদিন ধরেই মাথায় কেবল ‘পদ’ ঘুরছে। এ নিয়ে মনে মনে বিড়ম্বনাও কম নয়। কারণ, পদ নিয়ে বিপদের তো শেষ নেই। এ এক বিরাট আপদ বলা যায়। ভাবুন না, পদধারীদের কত তটস্থ থাকতে হয় পদ হারানোর ভয়ে। পান থেকে চুন খসলেই উঠে যেতে পারে পদত্যাগের দাবি। কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কায় যেমনটা হলো। দেশে দেশে এমনটা তো প্রায়ই হয়। আবার পদপ্রত্যাশীদের থাকতে হয় দুর্ভাবনায়—পাব তো?
পদ কই না থাকে। দেহ বস্তুটি পরিবহনের একমাত্র দায় এই পদ বা পায়ের। আবার খাবার টেবিলেও আছ সে মহাসমারোহে হরেক রকম পদ হয়ে। এমনকি এই যে বাক্যটি লেখা হলো—সেখানেও আছে পদ। ঘরে বা বাইরে হাজারটা সংকট তো বিপদ হয়েই আসে, যেমনটা আসে জঙ্গলে শ্বাপদের ভয়ে। আবার অনাহূত অনেকেই তো মাঝেমধ্যেই ‘আপদ’ শব্দের অর্থ বুঝিয়ে দেয় নিজ গুণে। পদ সত্যিই...।
তা এই পদের অর্থ কী? হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’-এ বলছেন, ‘পদ’ অর্থ চরণ বা পা। তাহলে? হ্যাঁ, এর পর এই শব্দের অর্থের হাজারটা বিস্তৃতি হয়েছে। কিছু উদাহরণ তো আগেই দেওয়া হলো।
কিন্তু এর ধাতুমূলে গেলে অর্থ কী দাঁড়ায়? ‘পদ’ শব্দের ধাতুমূল ‘পদ্’, যার অর্থ—গতি, প্রাপ্তি। আচ্ছা পদ্ অর্থ তবে প্রাপ্তিও! এ কারণেই কি কারও সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে পদক দেওয়া হয়? হতে পারে।
পদ নিয়ে আলাপে তো মাথা ঘুরে যাওয়ার জোগাড় দেখা যাচ্ছে। এর থেকে কত শব্দ যে তৈরি হয়েছে, কোনোটার অর্থ ইতি, তো কোনোটা নেতি। পত্রিকার পাতা খুলে যেমন ‘পদস্থ’ কর্মকর্তাদের বিবৃতি, উদ্ধৃতিতে চোখ আটকায়, তেমনি বিরাট অগণন জনতার পদে পদে ‘অপদস্থ’ হওয়ার খবরও তো কম মেলে না। এই যেমন পদস্থরা সিদ্ধান্ত নিলেন, জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমানোর সুফল যাত্রী সাধারণের পাওয়া উচিত। ফলে তাঁরা সড়কে প্রতি কিলোমিটারে ৫ পয়সা, আর নৌপথে আরও বড় সুবিধা দিয়ে প্রতি কিলোমিটারে ১৫ পয়সা করে ভাড়া কমালেন। এর মাধ্যমে পদস্থরা কাকে ঠিক অপদস্থ করলেন, ঠিক বোঝা গেল না।
সে যাক। আবার পদে ফেরা যাক। পদ অর্থ চারণ, যা গতি আনে। আর গতিহীনের তো প্রাপ্তি নাই। ফলে পদসঞ্চালন ছাড়া আর গতি কি? ঠিকঠাক ‘পদক্ষেপ’ নিলে জীবন-খাতায় ‘সম্পদ’-এর সংযোজন হয় জানিয়ে কতজনই তো শত পরামর্শ দিয়ে গেলেন। সেসব শুনে কতজন তার দেখা পেল, তার অবশ্য কোনো হিসাব রাখা হয়নি।
এদিকে আবার চোখ রাঙিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শত সতর্কবার্তা। পাহাড়ের ঢাল থেকে পা হড়কালো তো গেল সব। আবার অনেক গুরু ও নমস্য ব্যক্তির ‘পদস্খলন’ বলে দেয়, পা হড়কানো সব সময় পা হড়কানোও নয়, গোটা মানুষটারই হড়কে যাওয়া। সঙ্গে বড় আয়োজনে বা ভূমিকম্পে বা কনসার্টে কিংবা ফি-বছর ধনাঢ্য ব্যক্তিদের জাকাত বা দান-খয়রাতের আয়োজনে পদদলনের ভয় তো আছেই। পা নিয়ে তাই তটস্থ না থেকে উপায় থাকে না।
আবার আছে পাপের ভয়ও। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ‘লোটাকম্বল’-এ লিখছেন—পা থেকেই পাপের শুরু। পরে অবশ্য জানা গিয়েছিল ওটা ছিল প্রেমেরও শুরু। কৈশোরে পড়া সে বই প্রেম প্রশ্নে তাই রীতিমতো ধন্ধে ফেলে দিয়েছিল।
পদ নিয়ে টিটকারি বা তির্যক মন্তব্যও কম করা হয় না। ‘পা-চাটা’ বা আরও ভদ্রভাব আনতে ‘পদলেহী’ বলা হলে সেখানে পদের মান থাকে কই। যদিও পদলেহীগণ যুগে যুগে ‘সম্মানিত’ পদস্থদেরই পদলেহন করে এসেছেন। আবার এই পদ-এর সঙ্গে যখন সেবা যোগ করা হয়, তখন কেমন একটা ভক্তিভাব জাগ্রত হয়। এই ভক্তি থেকেই গুরুজনের পদধূলি নেওয়া। দেবতার অর্ঘ্যও তো পায়েই নিবেদন করা হয়। সেখানেই আশ্রয় নেয় ভক্ত। রামপ্রসাদ যেমন শ্যামাসংগীতে বলছেন—পদের মতো পদ পাই তো সে পদ লয়ে বিপদ সারি।
যদি এই পদ আসে ব্যাকরণের আঙিনায়, তবে কারও কারও আবার গা-হিম হয়ে আসে। কারণ, চেনা শব্দগুলো বাক্যে ঢুকে ‘পদ’ নাম নিয়ে কেমন যেন মুখ ভ্যাংচাতে থাকে। কত ধরনের পদ যে আছে—বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, ক্রিয়া। এই সব পদ সম্পর্কে সম্যক ধারণা নিয়ে যখন কবি বসেন কবিতা লিখতে, তখন তো তিনি নাকি আবার ‘পদ’-ই রচনা করেন। বাংলার প্রাচীন গ্রন্থ চর্যা তো এই পদেরই সমষ্টি। আর যখন আসে শিশুতোষের প্রশ্ন, তখন পদে পদে মিল না দিলে কি আর হয়!
আবার ‘পদ’-যুক্ত একই ধাঁচের শব্দ কত ভিন্ন অর্থ নির্দেশ করে। এই যেমন পদব্রজে কেউ যাচ্ছে শুনলে মনে হয় অনন্ত একটা পথ যেন সামনে। সেখানে কেন, কী, ইত্যাদি প্রশ্ন মাথায় আসে কম। অথচ পদযাত্রা শুনলে মনে হয়, কোনো ঘেরাও-টেরাওয়ের বিষয় আছে নিশ্চয়। প্রশ্ন আসে—কেন পদযাত্রা, কে করছে, কার বিরুদ্ধে। সঙ্গে একটা ঔৎসুক্যও কাজ করে যে, এই পদযাত্রাদল কোথায় গিয়ে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হবে।
তাই এই ‘পদ’ নিয়ে বিপদেই আছে বাঙালি। এই পদকে সে কোথায় রাখবে, তা নিয়ে তার যেন অস্বস্তির সীমা নেই। ‘দেখা হলো ভালোবাসা, বেদনায়’ কবিতায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় নিজের বয়ঃসন্ধিকালের বর্ণনা দিতে গিয়ে লিখছেন, ‘এইসব দেখে, শুনে, দৌড়িয়ে, জিরিয়ে।/আমার কণ্ঠস্বর ভাঙে, হাফপ্যান্টের নীচে বেরিয়ে থাকে/একজোড়া বিসদৃশ ঠ্যাং’। নিজের পদযুগল নিয়ে বয়ঃসন্ধির সুনীলের অস্বস্তিটা দৃশ্যমান। বাঙালি যেন বুঝেই পাচ্ছে না, এই পদকে সে কোথায় রাখবে। নিজের পদই যেন তার আপদ হয়ে দেখা দিয়েছে। একে কখনো আদর-কদর করে, তো কখনো ধুর-ছাই করে, যেন সে অস্পৃশ্য। অথচ পদত্যাগ নিয়ে কত আপত্তি, ওজোর, দ্বিপক্ষীয় আলোচনা, আন্দোলন। অথচ পদ আঁকড়ে থাকায় কত জানবাজি। দলে বা প্রশাসনে পদোন্নতির জন্য পদপ্রার্থীদের উচ্চপদস্থদের কত পদসেবা, কখনো কখনো পদলেহন করতে দেখা যায়। কখনো স্বপদে বহাল থাকতেও এমন মহাজাগতিক পদলেহন করতে হয়। তারও দেখা মেলে খবরের ভাঁজে ভাঁজে। সে কথা আর না বলি।
এদিকে পদের পরিধেয় হওয়ার দরুন একই ভাগ্য জুটেছে জুতার কপালে। এই যুগে মোটামুটি সামর্থ্য থাকলেই কেউ জুতার কথা না ভেবে পারে না। শুধু ভাবনা কেন, পরতেও হয়। অথচ কাউকে অপমান করার জন্য জুতাই যেন তার শেষ অবলম্বন হয়ে ওঠে। জুনিয়র বুশের দিকে ছুড়ে দেওয়া জুতার কথা তো মনে আছে? এই দেখে-শুনে বা খবরের কাগজে এর ছবি ও খবর দেখে-পড়ে একেবারে মহাজাগতিক ঢি ঢি পড়ে গেল। সে কথা তো ভুলবার নয়। এই অপমান ও অপমান-উদ্ভূত কষ্ট দুইই তো পায়ের পরিধেয় হওয়ার কারণেই। জুতার মর্যাদা তো গেল শুধু পায়ে স্থান হওয়ার কারণেই।
এই তো কয়েক দিন আগে এই রাজধানীতেই শুরু হওয়া এক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে গিয়ে এক শিল্পকর্মে জুতার স্থান দেখে চমকে যেতে দেখা গেল কত কত বোদ্ধাদের। অথচ তাঁরা কেউ খালি পায়ে ছিলেন না। কেউ কেউ জুতার প্রতি বেশ যত্নশীল, সেও বোঝা গেল। শিল্পকর্মটা ছিল একটা গোল আয়না ঘিরে বেশ কিছু ছোট-বড় জুতা দিয়ে তৈরি মালার। একটা লকেটের মতোও ছিল। বলা যায়, একটা ফটোফ্রেম। ‘নভেরার খোঁজে’ শীর্ষক সেই প্রদর্শনীতে দীপ্তি দওর এই কাজ যেন অন্য সব সুন্দর-পেলব কাজের মাঝখানে অনাহূত ঢুকে পড়েছে। নভেরাকে খুঁজতে হলে এমন কাজই তো থাকার কথা। কিন্তু ছিল না আর। আর হ্যাঁ ছিলেন শিল্পী প্রিমা, যিনি চমকে দিয়েছিলেন। প্রশ্ন জেগেছিল—সপ্রশ্ন দৃষ্টি ও দৃশ্যায়ন নিয়ে কেন আর কেউ নেই? এককালের ব্রাত্য, দ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত এবং অভিমানে দেশত্যাগ করা নভেরাও কি তবে একটা উপলক্ষ হয়ে উঠছেন শুধু? অর্ঘ্য দেওয়ার ছলে তিনিও তবে বন্দী হচ্ছেন একটু একটু করে বেদির চৌহদ্দিতে? সে যাক এসব অন্য বিষয়। কথা হলো সেই জুতা-সাঁটানো শিল্পকর্মের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিতেই শুরু হলো আরেক ক্রিয়া। বোঝা গেল, অন্যায় হয়ে গেছে। প্রশ্ন জাগল—যতজন এবার আহত বোধ করলেন, ততজন কি ওই শিক্ষকের গলায় জুতার মালা দেখে আহত হয়েছিলেন, প্রতিবাদ করেছিলেন, নাকি জুতার বদলে যদি-কিন্তুর মালা গেঁথেছেন?
এসব আলাপে কাজ নেই, আমরা বরং পদ নিয়ে থাকি।
ফজলুল কবির

কিছুদিন ধরেই মাথায় কেবল ‘পদ’ ঘুরছে। এ নিয়ে মনে মনে বিড়ম্বনাও কম নয়। কারণ, পদ নিয়ে বিপদের তো শেষ নেই। এ এক বিরাট আপদ বলা যায়। ভাবুন না, পদধারীদের কত তটস্থ থাকতে হয় পদ হারানোর ভয়ে। পান থেকে চুন খসলেই উঠে যেতে পারে পদত্যাগের দাবি। কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কায় যেমনটা হলো। দেশে দেশে এমনটা তো প্রায়ই হয়। আবার পদপ্রত্যাশীদের থাকতে হয় দুর্ভাবনায়—পাব তো?
পদ কই না থাকে। দেহ বস্তুটি পরিবহনের একমাত্র দায় এই পদ বা পায়ের। আবার খাবার টেবিলেও আছ সে মহাসমারোহে হরেক রকম পদ হয়ে। এমনকি এই যে বাক্যটি লেখা হলো—সেখানেও আছে পদ। ঘরে বা বাইরে হাজারটা সংকট তো বিপদ হয়েই আসে, যেমনটা আসে জঙ্গলে শ্বাপদের ভয়ে। আবার অনাহূত অনেকেই তো মাঝেমধ্যেই ‘আপদ’ শব্দের অর্থ বুঝিয়ে দেয় নিজ গুণে। পদ সত্যিই...।
তা এই পদের অর্থ কী? হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’-এ বলছেন, ‘পদ’ অর্থ চরণ বা পা। তাহলে? হ্যাঁ, এর পর এই শব্দের অর্থের হাজারটা বিস্তৃতি হয়েছে। কিছু উদাহরণ তো আগেই দেওয়া হলো।
কিন্তু এর ধাতুমূলে গেলে অর্থ কী দাঁড়ায়? ‘পদ’ শব্দের ধাতুমূল ‘পদ্’, যার অর্থ—গতি, প্রাপ্তি। আচ্ছা পদ্ অর্থ তবে প্রাপ্তিও! এ কারণেই কি কারও সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে পদক দেওয়া হয়? হতে পারে।
পদ নিয়ে আলাপে তো মাথা ঘুরে যাওয়ার জোগাড় দেখা যাচ্ছে। এর থেকে কত শব্দ যে তৈরি হয়েছে, কোনোটার অর্থ ইতি, তো কোনোটা নেতি। পত্রিকার পাতা খুলে যেমন ‘পদস্থ’ কর্মকর্তাদের বিবৃতি, উদ্ধৃতিতে চোখ আটকায়, তেমনি বিরাট অগণন জনতার পদে পদে ‘অপদস্থ’ হওয়ার খবরও তো কম মেলে না। এই যেমন পদস্থরা সিদ্ধান্ত নিলেন, জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমানোর সুফল যাত্রী সাধারণের পাওয়া উচিত। ফলে তাঁরা সড়কে প্রতি কিলোমিটারে ৫ পয়সা, আর নৌপথে আরও বড় সুবিধা দিয়ে প্রতি কিলোমিটারে ১৫ পয়সা করে ভাড়া কমালেন। এর মাধ্যমে পদস্থরা কাকে ঠিক অপদস্থ করলেন, ঠিক বোঝা গেল না।
সে যাক। আবার পদে ফেরা যাক। পদ অর্থ চারণ, যা গতি আনে। আর গতিহীনের তো প্রাপ্তি নাই। ফলে পদসঞ্চালন ছাড়া আর গতি কি? ঠিকঠাক ‘পদক্ষেপ’ নিলে জীবন-খাতায় ‘সম্পদ’-এর সংযোজন হয় জানিয়ে কতজনই তো শত পরামর্শ দিয়ে গেলেন। সেসব শুনে কতজন তার দেখা পেল, তার অবশ্য কোনো হিসাব রাখা হয়নি।
এদিকে আবার চোখ রাঙিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শত সতর্কবার্তা। পাহাড়ের ঢাল থেকে পা হড়কালো তো গেল সব। আবার অনেক গুরু ও নমস্য ব্যক্তির ‘পদস্খলন’ বলে দেয়, পা হড়কানো সব সময় পা হড়কানোও নয়, গোটা মানুষটারই হড়কে যাওয়া। সঙ্গে বড় আয়োজনে বা ভূমিকম্পে বা কনসার্টে কিংবা ফি-বছর ধনাঢ্য ব্যক্তিদের জাকাত বা দান-খয়রাতের আয়োজনে পদদলনের ভয় তো আছেই। পা নিয়ে তাই তটস্থ না থেকে উপায় থাকে না।
আবার আছে পাপের ভয়ও। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ‘লোটাকম্বল’-এ লিখছেন—পা থেকেই পাপের শুরু। পরে অবশ্য জানা গিয়েছিল ওটা ছিল প্রেমেরও শুরু। কৈশোরে পড়া সে বই প্রেম প্রশ্নে তাই রীতিমতো ধন্ধে ফেলে দিয়েছিল।
পদ নিয়ে টিটকারি বা তির্যক মন্তব্যও কম করা হয় না। ‘পা-চাটা’ বা আরও ভদ্রভাব আনতে ‘পদলেহী’ বলা হলে সেখানে পদের মান থাকে কই। যদিও পদলেহীগণ যুগে যুগে ‘সম্মানিত’ পদস্থদেরই পদলেহন করে এসেছেন। আবার এই পদ-এর সঙ্গে যখন সেবা যোগ করা হয়, তখন কেমন একটা ভক্তিভাব জাগ্রত হয়। এই ভক্তি থেকেই গুরুজনের পদধূলি নেওয়া। দেবতার অর্ঘ্যও তো পায়েই নিবেদন করা হয়। সেখানেই আশ্রয় নেয় ভক্ত। রামপ্রসাদ যেমন শ্যামাসংগীতে বলছেন—পদের মতো পদ পাই তো সে পদ লয়ে বিপদ সারি।
যদি এই পদ আসে ব্যাকরণের আঙিনায়, তবে কারও কারও আবার গা-হিম হয়ে আসে। কারণ, চেনা শব্দগুলো বাক্যে ঢুকে ‘পদ’ নাম নিয়ে কেমন যেন মুখ ভ্যাংচাতে থাকে। কত ধরনের পদ যে আছে—বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, ক্রিয়া। এই সব পদ সম্পর্কে সম্যক ধারণা নিয়ে যখন কবি বসেন কবিতা লিখতে, তখন তো তিনি নাকি আবার ‘পদ’-ই রচনা করেন। বাংলার প্রাচীন গ্রন্থ চর্যা তো এই পদেরই সমষ্টি। আর যখন আসে শিশুতোষের প্রশ্ন, তখন পদে পদে মিল না দিলে কি আর হয়!
আবার ‘পদ’-যুক্ত একই ধাঁচের শব্দ কত ভিন্ন অর্থ নির্দেশ করে। এই যেমন পদব্রজে কেউ যাচ্ছে শুনলে মনে হয় অনন্ত একটা পথ যেন সামনে। সেখানে কেন, কী, ইত্যাদি প্রশ্ন মাথায় আসে কম। অথচ পদযাত্রা শুনলে মনে হয়, কোনো ঘেরাও-টেরাওয়ের বিষয় আছে নিশ্চয়। প্রশ্ন আসে—কেন পদযাত্রা, কে করছে, কার বিরুদ্ধে। সঙ্গে একটা ঔৎসুক্যও কাজ করে যে, এই পদযাত্রাদল কোথায় গিয়ে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হবে।
তাই এই ‘পদ’ নিয়ে বিপদেই আছে বাঙালি। এই পদকে সে কোথায় রাখবে, তা নিয়ে তার যেন অস্বস্তির সীমা নেই। ‘দেখা হলো ভালোবাসা, বেদনায়’ কবিতায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় নিজের বয়ঃসন্ধিকালের বর্ণনা দিতে গিয়ে লিখছেন, ‘এইসব দেখে, শুনে, দৌড়িয়ে, জিরিয়ে।/আমার কণ্ঠস্বর ভাঙে, হাফপ্যান্টের নীচে বেরিয়ে থাকে/একজোড়া বিসদৃশ ঠ্যাং’। নিজের পদযুগল নিয়ে বয়ঃসন্ধির সুনীলের অস্বস্তিটা দৃশ্যমান। বাঙালি যেন বুঝেই পাচ্ছে না, এই পদকে সে কোথায় রাখবে। নিজের পদই যেন তার আপদ হয়ে দেখা দিয়েছে। একে কখনো আদর-কদর করে, তো কখনো ধুর-ছাই করে, যেন সে অস্পৃশ্য। অথচ পদত্যাগ নিয়ে কত আপত্তি, ওজোর, দ্বিপক্ষীয় আলোচনা, আন্দোলন। অথচ পদ আঁকড়ে থাকায় কত জানবাজি। দলে বা প্রশাসনে পদোন্নতির জন্য পদপ্রার্থীদের উচ্চপদস্থদের কত পদসেবা, কখনো কখনো পদলেহন করতে দেখা যায়। কখনো স্বপদে বহাল থাকতেও এমন মহাজাগতিক পদলেহন করতে হয়। তারও দেখা মেলে খবরের ভাঁজে ভাঁজে। সে কথা আর না বলি।
এদিকে পদের পরিধেয় হওয়ার দরুন একই ভাগ্য জুটেছে জুতার কপালে। এই যুগে মোটামুটি সামর্থ্য থাকলেই কেউ জুতার কথা না ভেবে পারে না। শুধু ভাবনা কেন, পরতেও হয়। অথচ কাউকে অপমান করার জন্য জুতাই যেন তার শেষ অবলম্বন হয়ে ওঠে। জুনিয়র বুশের দিকে ছুড়ে দেওয়া জুতার কথা তো মনে আছে? এই দেখে-শুনে বা খবরের কাগজে এর ছবি ও খবর দেখে-পড়ে একেবারে মহাজাগতিক ঢি ঢি পড়ে গেল। সে কথা তো ভুলবার নয়। এই অপমান ও অপমান-উদ্ভূত কষ্ট দুইই তো পায়ের পরিধেয় হওয়ার কারণেই। জুতার মর্যাদা তো গেল শুধু পায়ে স্থান হওয়ার কারণেই।
এই তো কয়েক দিন আগে এই রাজধানীতেই শুরু হওয়া এক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে গিয়ে এক শিল্পকর্মে জুতার স্থান দেখে চমকে যেতে দেখা গেল কত কত বোদ্ধাদের। অথচ তাঁরা কেউ খালি পায়ে ছিলেন না। কেউ কেউ জুতার প্রতি বেশ যত্নশীল, সেও বোঝা গেল। শিল্পকর্মটা ছিল একটা গোল আয়না ঘিরে বেশ কিছু ছোট-বড় জুতা দিয়ে তৈরি মালার। একটা লকেটের মতোও ছিল। বলা যায়, একটা ফটোফ্রেম। ‘নভেরার খোঁজে’ শীর্ষক সেই প্রদর্শনীতে দীপ্তি দওর এই কাজ যেন অন্য সব সুন্দর-পেলব কাজের মাঝখানে অনাহূত ঢুকে পড়েছে। নভেরাকে খুঁজতে হলে এমন কাজই তো থাকার কথা। কিন্তু ছিল না আর। আর হ্যাঁ ছিলেন শিল্পী প্রিমা, যিনি চমকে দিয়েছিলেন। প্রশ্ন জেগেছিল—সপ্রশ্ন দৃষ্টি ও দৃশ্যায়ন নিয়ে কেন আর কেউ নেই? এককালের ব্রাত্য, দ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত এবং অভিমানে দেশত্যাগ করা নভেরাও কি তবে একটা উপলক্ষ হয়ে উঠছেন শুধু? অর্ঘ্য দেওয়ার ছলে তিনিও তবে বন্দী হচ্ছেন একটু একটু করে বেদির চৌহদ্দিতে? সে যাক এসব অন্য বিষয়। কথা হলো সেই জুতা-সাঁটানো শিল্পকর্মের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিতেই শুরু হলো আরেক ক্রিয়া। বোঝা গেল, অন্যায় হয়ে গেছে। প্রশ্ন জাগল—যতজন এবার আহত বোধ করলেন, ততজন কি ওই শিক্ষকের গলায় জুতার মালা দেখে আহত হয়েছিলেন, প্রতিবাদ করেছিলেন, নাকি জুতার বদলে যদি-কিন্তুর মালা গেঁথেছেন?
এসব আলাপে কাজ নেই, আমরা বরং পদ নিয়ে থাকি।

কিছুদিন ধরেই মাথায় কেবল ‘পদ’ ঘুরছে। এ নিয়ে মনে মনে বিড়ম্বনাও কম নয়। কারণ, পদ নিয়ে বিপদের তো শেষ নেই। এ এক বিরাট আপদ বলা যায়। ভাবুন না, পদধারীদের কত তটস্থ থাকতে হয় পদ হারানোর ভয়ে। পান থেকে চুন খসলেই উঠে যেতে পারে পদত্যাগের দাবি। কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কায় যেমনটা হলো। দেশে দেশে এমনটা তো প্রায়ই হয়। আবার পদপ্রত্যাশীদের থাকতে হয় দুর্ভাবনায়—পাব তো?
পদ কই না থাকে। দেহ বস্তুটি পরিবহনের একমাত্র দায় এই পদ বা পায়ের। আবার খাবার টেবিলেও আছ সে মহাসমারোহে হরেক রকম পদ হয়ে। এমনকি এই যে বাক্যটি লেখা হলো—সেখানেও আছে পদ। ঘরে বা বাইরে হাজারটা সংকট তো বিপদ হয়েই আসে, যেমনটা আসে জঙ্গলে শ্বাপদের ভয়ে। আবার অনাহূত অনেকেই তো মাঝেমধ্যেই ‘আপদ’ শব্দের অর্থ বুঝিয়ে দেয় নিজ গুণে। পদ সত্যিই...।
তা এই পদের অর্থ কী? হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’-এ বলছেন, ‘পদ’ অর্থ চরণ বা পা। তাহলে? হ্যাঁ, এর পর এই শব্দের অর্থের হাজারটা বিস্তৃতি হয়েছে। কিছু উদাহরণ তো আগেই দেওয়া হলো।
কিন্তু এর ধাতুমূলে গেলে অর্থ কী দাঁড়ায়? ‘পদ’ শব্দের ধাতুমূল ‘পদ্’, যার অর্থ—গতি, প্রাপ্তি। আচ্ছা পদ্ অর্থ তবে প্রাপ্তিও! এ কারণেই কি কারও সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে পদক দেওয়া হয়? হতে পারে।
পদ নিয়ে আলাপে তো মাথা ঘুরে যাওয়ার জোগাড় দেখা যাচ্ছে। এর থেকে কত শব্দ যে তৈরি হয়েছে, কোনোটার অর্থ ইতি, তো কোনোটা নেতি। পত্রিকার পাতা খুলে যেমন ‘পদস্থ’ কর্মকর্তাদের বিবৃতি, উদ্ধৃতিতে চোখ আটকায়, তেমনি বিরাট অগণন জনতার পদে পদে ‘অপদস্থ’ হওয়ার খবরও তো কম মেলে না। এই যেমন পদস্থরা সিদ্ধান্ত নিলেন, জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমানোর সুফল যাত্রী সাধারণের পাওয়া উচিত। ফলে তাঁরা সড়কে প্রতি কিলোমিটারে ৫ পয়সা, আর নৌপথে আরও বড় সুবিধা দিয়ে প্রতি কিলোমিটারে ১৫ পয়সা করে ভাড়া কমালেন। এর মাধ্যমে পদস্থরা কাকে ঠিক অপদস্থ করলেন, ঠিক বোঝা গেল না।
সে যাক। আবার পদে ফেরা যাক। পদ অর্থ চারণ, যা গতি আনে। আর গতিহীনের তো প্রাপ্তি নাই। ফলে পদসঞ্চালন ছাড়া আর গতি কি? ঠিকঠাক ‘পদক্ষেপ’ নিলে জীবন-খাতায় ‘সম্পদ’-এর সংযোজন হয় জানিয়ে কতজনই তো শত পরামর্শ দিয়ে গেলেন। সেসব শুনে কতজন তার দেখা পেল, তার অবশ্য কোনো হিসাব রাখা হয়নি।
এদিকে আবার চোখ রাঙিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শত সতর্কবার্তা। পাহাড়ের ঢাল থেকে পা হড়কালো তো গেল সব। আবার অনেক গুরু ও নমস্য ব্যক্তির ‘পদস্খলন’ বলে দেয়, পা হড়কানো সব সময় পা হড়কানোও নয়, গোটা মানুষটারই হড়কে যাওয়া। সঙ্গে বড় আয়োজনে বা ভূমিকম্পে বা কনসার্টে কিংবা ফি-বছর ধনাঢ্য ব্যক্তিদের জাকাত বা দান-খয়রাতের আয়োজনে পদদলনের ভয় তো আছেই। পা নিয়ে তাই তটস্থ না থেকে উপায় থাকে না।
আবার আছে পাপের ভয়ও। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ‘লোটাকম্বল’-এ লিখছেন—পা থেকেই পাপের শুরু। পরে অবশ্য জানা গিয়েছিল ওটা ছিল প্রেমেরও শুরু। কৈশোরে পড়া সে বই প্রেম প্রশ্নে তাই রীতিমতো ধন্ধে ফেলে দিয়েছিল।
পদ নিয়ে টিটকারি বা তির্যক মন্তব্যও কম করা হয় না। ‘পা-চাটা’ বা আরও ভদ্রভাব আনতে ‘পদলেহী’ বলা হলে সেখানে পদের মান থাকে কই। যদিও পদলেহীগণ যুগে যুগে ‘সম্মানিত’ পদস্থদেরই পদলেহন করে এসেছেন। আবার এই পদ-এর সঙ্গে যখন সেবা যোগ করা হয়, তখন কেমন একটা ভক্তিভাব জাগ্রত হয়। এই ভক্তি থেকেই গুরুজনের পদধূলি নেওয়া। দেবতার অর্ঘ্যও তো পায়েই নিবেদন করা হয়। সেখানেই আশ্রয় নেয় ভক্ত। রামপ্রসাদ যেমন শ্যামাসংগীতে বলছেন—পদের মতো পদ পাই তো সে পদ লয়ে বিপদ সারি।
যদি এই পদ আসে ব্যাকরণের আঙিনায়, তবে কারও কারও আবার গা-হিম হয়ে আসে। কারণ, চেনা শব্দগুলো বাক্যে ঢুকে ‘পদ’ নাম নিয়ে কেমন যেন মুখ ভ্যাংচাতে থাকে। কত ধরনের পদ যে আছে—বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, ক্রিয়া। এই সব পদ সম্পর্কে সম্যক ধারণা নিয়ে যখন কবি বসেন কবিতা লিখতে, তখন তো তিনি নাকি আবার ‘পদ’-ই রচনা করেন। বাংলার প্রাচীন গ্রন্থ চর্যা তো এই পদেরই সমষ্টি। আর যখন আসে শিশুতোষের প্রশ্ন, তখন পদে পদে মিল না দিলে কি আর হয়!
আবার ‘পদ’-যুক্ত একই ধাঁচের শব্দ কত ভিন্ন অর্থ নির্দেশ করে। এই যেমন পদব্রজে কেউ যাচ্ছে শুনলে মনে হয় অনন্ত একটা পথ যেন সামনে। সেখানে কেন, কী, ইত্যাদি প্রশ্ন মাথায় আসে কম। অথচ পদযাত্রা শুনলে মনে হয়, কোনো ঘেরাও-টেরাওয়ের বিষয় আছে নিশ্চয়। প্রশ্ন আসে—কেন পদযাত্রা, কে করছে, কার বিরুদ্ধে। সঙ্গে একটা ঔৎসুক্যও কাজ করে যে, এই পদযাত্রাদল কোথায় গিয়ে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হবে।
তাই এই ‘পদ’ নিয়ে বিপদেই আছে বাঙালি। এই পদকে সে কোথায় রাখবে, তা নিয়ে তার যেন অস্বস্তির সীমা নেই। ‘দেখা হলো ভালোবাসা, বেদনায়’ কবিতায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় নিজের বয়ঃসন্ধিকালের বর্ণনা দিতে গিয়ে লিখছেন, ‘এইসব দেখে, শুনে, দৌড়িয়ে, জিরিয়ে।/আমার কণ্ঠস্বর ভাঙে, হাফপ্যান্টের নীচে বেরিয়ে থাকে/একজোড়া বিসদৃশ ঠ্যাং’। নিজের পদযুগল নিয়ে বয়ঃসন্ধির সুনীলের অস্বস্তিটা দৃশ্যমান। বাঙালি যেন বুঝেই পাচ্ছে না, এই পদকে সে কোথায় রাখবে। নিজের পদই যেন তার আপদ হয়ে দেখা দিয়েছে। একে কখনো আদর-কদর করে, তো কখনো ধুর-ছাই করে, যেন সে অস্পৃশ্য। অথচ পদত্যাগ নিয়ে কত আপত্তি, ওজোর, দ্বিপক্ষীয় আলোচনা, আন্দোলন। অথচ পদ আঁকড়ে থাকায় কত জানবাজি। দলে বা প্রশাসনে পদোন্নতির জন্য পদপ্রার্থীদের উচ্চপদস্থদের কত পদসেবা, কখনো কখনো পদলেহন করতে দেখা যায়। কখনো স্বপদে বহাল থাকতেও এমন মহাজাগতিক পদলেহন করতে হয়। তারও দেখা মেলে খবরের ভাঁজে ভাঁজে। সে কথা আর না বলি।
এদিকে পদের পরিধেয় হওয়ার দরুন একই ভাগ্য জুটেছে জুতার কপালে। এই যুগে মোটামুটি সামর্থ্য থাকলেই কেউ জুতার কথা না ভেবে পারে না। শুধু ভাবনা কেন, পরতেও হয়। অথচ কাউকে অপমান করার জন্য জুতাই যেন তার শেষ অবলম্বন হয়ে ওঠে। জুনিয়র বুশের দিকে ছুড়ে দেওয়া জুতার কথা তো মনে আছে? এই দেখে-শুনে বা খবরের কাগজে এর ছবি ও খবর দেখে-পড়ে একেবারে মহাজাগতিক ঢি ঢি পড়ে গেল। সে কথা তো ভুলবার নয়। এই অপমান ও অপমান-উদ্ভূত কষ্ট দুইই তো পায়ের পরিধেয় হওয়ার কারণেই। জুতার মর্যাদা তো গেল শুধু পায়ে স্থান হওয়ার কারণেই।
এই তো কয়েক দিন আগে এই রাজধানীতেই শুরু হওয়া এক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে গিয়ে এক শিল্পকর্মে জুতার স্থান দেখে চমকে যেতে দেখা গেল কত কত বোদ্ধাদের। অথচ তাঁরা কেউ খালি পায়ে ছিলেন না। কেউ কেউ জুতার প্রতি বেশ যত্নশীল, সেও বোঝা গেল। শিল্পকর্মটা ছিল একটা গোল আয়না ঘিরে বেশ কিছু ছোট-বড় জুতা দিয়ে তৈরি মালার। একটা লকেটের মতোও ছিল। বলা যায়, একটা ফটোফ্রেম। ‘নভেরার খোঁজে’ শীর্ষক সেই প্রদর্শনীতে দীপ্তি দওর এই কাজ যেন অন্য সব সুন্দর-পেলব কাজের মাঝখানে অনাহূত ঢুকে পড়েছে। নভেরাকে খুঁজতে হলে এমন কাজই তো থাকার কথা। কিন্তু ছিল না আর। আর হ্যাঁ ছিলেন শিল্পী প্রিমা, যিনি চমকে দিয়েছিলেন। প্রশ্ন জেগেছিল—সপ্রশ্ন দৃষ্টি ও দৃশ্যায়ন নিয়ে কেন আর কেউ নেই? এককালের ব্রাত্য, দ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত এবং অভিমানে দেশত্যাগ করা নভেরাও কি তবে একটা উপলক্ষ হয়ে উঠছেন শুধু? অর্ঘ্য দেওয়ার ছলে তিনিও তবে বন্দী হচ্ছেন একটু একটু করে বেদির চৌহদ্দিতে? সে যাক এসব অন্য বিষয়। কথা হলো সেই জুতা-সাঁটানো শিল্পকর্মের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিতেই শুরু হলো আরেক ক্রিয়া। বোঝা গেল, অন্যায় হয়ে গেছে। প্রশ্ন জাগল—যতজন এবার আহত বোধ করলেন, ততজন কি ওই শিক্ষকের গলায় জুতার মালা দেখে আহত হয়েছিলেন, প্রতিবাদ করেছিলেন, নাকি জুতার বদলে যদি-কিন্তুর মালা গেঁথেছেন?
এসব আলাপে কাজ নেই, আমরা বরং পদ নিয়ে থাকি।

চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন।
১১ ঘণ্টা আগে
প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মহামূল্যবান অলংকার চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত বিশেষ একটি ফার্নিচারের প্রস্তুতকারক জার্মান কোম্পানি বোকার। এই চুরির ঘটনাকে এখন নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। তারা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের পণ্যের গুণগান...
১ দিন আগে
নিউজিল্যান্ডে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের পেট থেকে প্রায় ১০০টি শক্তিশালী চুম্বক অপসারণ করেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার অন্ত্রের কিছু টিস্যুও অপসারণ করতে হয়েছে। চিকিৎসকেরা গতকাল শুক্রবার এই অস্ত্রোপচারের কথা প্রকাশ করেন। চুম্বকগুলো কেনা হয়েছিল জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম টেমু থেকে।
১ দিন আগে
তুরস্কের এক ব্যক্তি তাঁর ফোনে স্ত্রীর ফোন নম্বর সেভ করেছিলেন, ‘Chubby-চাবি’ দিয়ে। যার অর্থ প্রচলিত বাংলায় দাঁড়ায় ‘মোটু বা গুলুমুলু।’ অনেক সময় এই ডাকনাম আদুরে শোনালেও বিষয়টি মোটেও ভালো লাগেনি তুর্কি ও ব্যক্তির স্ত্রীর। তিনি সোজা আদালতে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এমনকি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েও যায়।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন। এমন আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব ১৬ বছর বয়সী এই কিশোর বুঝে উঠতে পারছে না, কী তার ভুল। পুলিশের নির্দেশ মানার পর হাতে পড়ল হাতকড়া।
টাকি অ্যালেনকে কিশোর বয়সে এই অদ্ভুত অভিজ্ঞতা দিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। অ্যালেনের হাতে থাকা চিপসকে বন্দুক হিসেবে শনাক্ত করেছে এক এআই সিস্টেম!
স্থানীয় গণমাধ্যম ডব্লিউএমএআর-২ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টাকি অ্যালেন বলে, ‘হঠাৎ দেখি প্রায় আটটা পুলিশ কার এসে গেল। তারপর সবাই বন্দুক তাক করে আমাকে মাটিতে শুতে বলছে।’
অ্যালেন বলতে থাকে, ‘ফুটবল অনুশীলনের পর এক প্যাকেট ডোরিটোস চিপস খেয়ে খালি প্যাকেটটি পকেটে রেখে দিই। এর ২০ মিনিট পরই এই ঘটনা। একজন অফিসার আমাকে হাঁটু গেড়ে বসতে বলেন, তারপর আমাকে আটক করে হাতকড়া পরান।
তবে বাল্টিমোর কাউন্টি পুলিশ বিভাগ বিবিসি নিউজের কাছে দাবি করে, অ্যালেনকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল, গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এক বিবৃতিতে তারা জানায়, কোনো হুমকি নেই নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি নিরাপদে সমাধান করা হয়।
এই ঘটনার পর থেকে ফুটবল অনুশীলন শেষে স্কুলের ভেতরে চলে যায় অ্যালেন। সে জানায়, বাইরে যাওয়া নিরাপদ নয়, বিশেষ করে চিপস খাওয়া বা কিছু পান করা।
বাল্টিমোর কাউন্টি পুলিশ বিভাগ জানায়, সেই মুহূর্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যথোপযুক্ত ও আনুপাতিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাদের কর্মকর্তারা।
বিভাগটি আরও জানায়, এআই সতর্কবার্তাটি মানব পর্যালোচকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা এতে কোনো হুমকি পাননি। এই বার্তা স্কুলের প্রিন্সিপালের কাছে পাঠানো হলেও তিনি এ তথ্যটি দেখেননি এবং স্কুলের নিরাপত্তা টিমকে জানান। তারা পুলিশকে ডাকে।
অভিভাবকদের উদ্দেশে এক চিঠিতে স্কুলের প্রিন্সিপাল কেট স্মিথ বলেন, স্কুলের নিরাপত্তা দল দ্রুত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এবং কোনো অস্ত্র না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর প্রাথমিক সতর্কতা বাতিল করে।
তিনি আরও জানান, ‘আমাদের স্কুল রিসোর্স অফিসারকে (এসআরও) বিষয়টি জানানো হলে তিনি অতিরিক্ত সহায়তার জন্য স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পুলিশ কর্মকর্তারা স্কুলে এসে ওই শিক্ষার্থীকে তল্লাশি করেন এবং দ্রুত নিশ্চিত হন যে তার কাছে কোনো অস্ত্র নেই।’
এআই টুল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওমনিলার্ট এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বিবিসি নিউজকে জানায়, ‘ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও সম্প্রদায়ের প্রতি আমাদের উদ্বেগ জানাতে চাই।’
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তাদের সিস্টেম প্রথমে এমন কিছু শনাক্ত করে যা দেখতে আগ্নেয়াস্ত্রের মতো লাগছিল। ছবিটি পরে তাদের পর্যালোচনা দল যাচাই করে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেই তথ্য ও ছবি বাল্টিমোর কাউন্টি পাবলিক স্কুলের নিরাপত্তা দলের কাছে মূল্যায়নের জন্য পাঠানো হয়।
নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, তাদের সিস্টেমে ‘সমাধান হয়েছে’ বলে চিহ্নিত হওয়ার পরই এ বিষয়ে তাদের সম্পৃক্ততা শেষ হয়। তাদের সিস্টেম ‘যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল, সেভাবেই কাজ করেছে।’
অ্যালেন মন্তব্য করেছে, ‘আমার মনে হয় না কোনো চিপসের প্যাকেটকে কখনো বন্দুক হিসেবে ভুল ধরা উচিত।’
এই ঘটনায় স্কুলগুলোতে এমন প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছে অনেকে। স্থানীয় রাজনীতিবিদেরা ঘটনাটি নিয়ে আরও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বাল্টিমোর কাউন্টির স্থানীয় কাউন্সিলর ইজি পাকোটা ফেসবুকে লেখেন, ‘আমি বাল্টিমোর কাউন্টি পাবলিক স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি তাদের এআই-চালিত অস্ত্র শনাক্তকরণ ব্যবস্থার প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করতে।’

চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন। এমন আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব ১৬ বছর বয়সী এই কিশোর বুঝে উঠতে পারছে না, কী তার ভুল। পুলিশের নির্দেশ মানার পর হাতে পড়ল হাতকড়া।
টাকি অ্যালেনকে কিশোর বয়সে এই অদ্ভুত অভিজ্ঞতা দিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। অ্যালেনের হাতে থাকা চিপসকে বন্দুক হিসেবে শনাক্ত করেছে এক এআই সিস্টেম!
স্থানীয় গণমাধ্যম ডব্লিউএমএআর-২ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টাকি অ্যালেন বলে, ‘হঠাৎ দেখি প্রায় আটটা পুলিশ কার এসে গেল। তারপর সবাই বন্দুক তাক করে আমাকে মাটিতে শুতে বলছে।’
অ্যালেন বলতে থাকে, ‘ফুটবল অনুশীলনের পর এক প্যাকেট ডোরিটোস চিপস খেয়ে খালি প্যাকেটটি পকেটে রেখে দিই। এর ২০ মিনিট পরই এই ঘটনা। একজন অফিসার আমাকে হাঁটু গেড়ে বসতে বলেন, তারপর আমাকে আটক করে হাতকড়া পরান।
তবে বাল্টিমোর কাউন্টি পুলিশ বিভাগ বিবিসি নিউজের কাছে দাবি করে, অ্যালেনকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল, গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এক বিবৃতিতে তারা জানায়, কোনো হুমকি নেই নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি নিরাপদে সমাধান করা হয়।
এই ঘটনার পর থেকে ফুটবল অনুশীলন শেষে স্কুলের ভেতরে চলে যায় অ্যালেন। সে জানায়, বাইরে যাওয়া নিরাপদ নয়, বিশেষ করে চিপস খাওয়া বা কিছু পান করা।
বাল্টিমোর কাউন্টি পুলিশ বিভাগ জানায়, সেই মুহূর্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যথোপযুক্ত ও আনুপাতিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাদের কর্মকর্তারা।
বিভাগটি আরও জানায়, এআই সতর্কবার্তাটি মানব পর্যালোচকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা এতে কোনো হুমকি পাননি। এই বার্তা স্কুলের প্রিন্সিপালের কাছে পাঠানো হলেও তিনি এ তথ্যটি দেখেননি এবং স্কুলের নিরাপত্তা টিমকে জানান। তারা পুলিশকে ডাকে।
অভিভাবকদের উদ্দেশে এক চিঠিতে স্কুলের প্রিন্সিপাল কেট স্মিথ বলেন, স্কুলের নিরাপত্তা দল দ্রুত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এবং কোনো অস্ত্র না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর প্রাথমিক সতর্কতা বাতিল করে।
তিনি আরও জানান, ‘আমাদের স্কুল রিসোর্স অফিসারকে (এসআরও) বিষয়টি জানানো হলে তিনি অতিরিক্ত সহায়তার জন্য স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পুলিশ কর্মকর্তারা স্কুলে এসে ওই শিক্ষার্থীকে তল্লাশি করেন এবং দ্রুত নিশ্চিত হন যে তার কাছে কোনো অস্ত্র নেই।’
এআই টুল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওমনিলার্ট এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বিবিসি নিউজকে জানায়, ‘ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও সম্প্রদায়ের প্রতি আমাদের উদ্বেগ জানাতে চাই।’
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তাদের সিস্টেম প্রথমে এমন কিছু শনাক্ত করে যা দেখতে আগ্নেয়াস্ত্রের মতো লাগছিল। ছবিটি পরে তাদের পর্যালোচনা দল যাচাই করে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেই তথ্য ও ছবি বাল্টিমোর কাউন্টি পাবলিক স্কুলের নিরাপত্তা দলের কাছে মূল্যায়নের জন্য পাঠানো হয়।
নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, তাদের সিস্টেমে ‘সমাধান হয়েছে’ বলে চিহ্নিত হওয়ার পরই এ বিষয়ে তাদের সম্পৃক্ততা শেষ হয়। তাদের সিস্টেম ‘যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল, সেভাবেই কাজ করেছে।’
অ্যালেন মন্তব্য করেছে, ‘আমার মনে হয় না কোনো চিপসের প্যাকেটকে কখনো বন্দুক হিসেবে ভুল ধরা উচিত।’
এই ঘটনায় স্কুলগুলোতে এমন প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছে অনেকে। স্থানীয় রাজনীতিবিদেরা ঘটনাটি নিয়ে আরও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বাল্টিমোর কাউন্টির স্থানীয় কাউন্সিলর ইজি পাকোটা ফেসবুকে লেখেন, ‘আমি বাল্টিমোর কাউন্টি পাবলিক স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি তাদের এআই-চালিত অস্ত্র শনাক্তকরণ ব্যবস্থার প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করতে।’

কিছুদিন ধরেই মাথায় কেবল ‘পদ’ ঘুরছে। এ নিয়ে মনে মনে বিড়ম্বনাও কম নয়। কারণ, পদ নিয়ে বিপদের তো শেষ নেই কোনো। এ এক বিরাট আপদ বলা যায়। ভাবুন না, পদধারীদের কত তটস্থ থাকতে হয় পদ হারানোর ভয়ে। পান থেকে চুন খসলেই উঠে যেতে পারে পদত্যাগের দাবি। কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কায় যেমনটা হলো। দেশে দেশে এমনটা তো প্রায়ই হয়। আব
০২ সেপ্টেম্বর ২০২২
প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মহামূল্যবান অলংকার চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত বিশেষ একটি ফার্নিচারের প্রস্তুতকারক জার্মান কোম্পানি বোকার। এই চুরির ঘটনাকে এখন নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। তারা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের পণ্যের গুণগান...
১ দিন আগে
নিউজিল্যান্ডে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের পেট থেকে প্রায় ১০০টি শক্তিশালী চুম্বক অপসারণ করেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার অন্ত্রের কিছু টিস্যুও অপসারণ করতে হয়েছে। চিকিৎসকেরা গতকাল শুক্রবার এই অস্ত্রোপচারের কথা প্রকাশ করেন। চুম্বকগুলো কেনা হয়েছিল জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম টেমু থেকে।
১ দিন আগে
তুরস্কের এক ব্যক্তি তাঁর ফোনে স্ত্রীর ফোন নম্বর সেভ করেছিলেন, ‘Chubby-চাবি’ দিয়ে। যার অর্থ প্রচলিত বাংলায় দাঁড়ায় ‘মোটু বা গুলুমুলু।’ অনেক সময় এই ডাকনাম আদুরে শোনালেও বিষয়টি মোটেও ভালো লাগেনি তুর্কি ও ব্যক্তির স্ত্রীর। তিনি সোজা আদালতে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এমনকি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েও যায়।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মহামূল্যবান অলংকার চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত বিশেষ একটি ফার্নিচারের প্রস্তুতকারক জার্মান কোম্পানি বোকার। এই চুরির ঘটনাকে এখন নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। তারা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের পণ্যের গুণগান গেয়ে হাস্যরসাত্মক বিজ্ঞাপন প্রচার করছে।
গত সপ্তাহের রোববার সকালে ল্যুভর মিউজিয়াম খোলার পরই চোরেরা একটি ট্রাক মিউজিয়ামের অ্যাপোলো গ্যালারির নিচে থামায়। এই ট্রাকে লাগানো ছিল বোকার কোম্পানির তৈরি একটি ভাঁজযোগ্য মই। দিনের আলোয় তারা সেই মই বেয়ে ওপরে উঠে যায়, জানালা কেটে ভেতরে ঢোকে এবং ডিসপ্লে কেস ভেঙে গয়না চুরি করে।
পুরো অপারেশনটি শেষ করতে চোরদের সময় লেগেছিল মাত্র সাত মিনিট। চুরি হওয়া অলংকারগুলোর মধ্যে রয়েছে সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্টের দেওয়া একটি পান্না ও হীরার নেকলেস এবং সম্রাজ্ঞী ইউজিনির মুকুট। এই মুকুটে প্রায় ২ হাজার হীরা খচিত।
জার্মানির ডর্টমুন্ডের কাছে অবস্থিত লিফটিং সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক কোম্পানি বোকারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলেক্সান্ডার বোক এবং তাঁর স্ত্রী রোববার খবরটি দেখার সময়ই ব্যবহৃত মইটি চিনতে পারেন।
সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলেক্সান্ডার বোক জানান, তাঁর স্ত্রী, যিনি কোম্পানির বিপণন প্রধানও, তিনিই প্রথম বিষয়টি খেয়াল করেন। তিনি বলেন, ‘যখন পরিষ্কার হলো যে চুরির ঘটনায় কেউ আহত হয়নি, তখন আমরা বিষয়টিকে একটু হালকা চালে নিই।’
আলেক্সান্ডার স্বীকার করেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ! সবচেয়ে বিখ্যাত এবং সর্বাধিক পরিদর্শন করা জাদুঘরটির খ্যাতি কাজে লাগিয়ে আমাদের কোম্পানির জন্য কিছুটা দৃষ্টি আকর্ষণ করার এ-ই সুযোগ।’ তবে তিনি এ-ও স্পষ্ট করেন, ‘এই অপরাধ অবশ্যই নিন্দনীয়, এটা নিয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই।’
এই সুযোগে বোকার দ্রুতই একটি প্রচারণামূলক বিজ্ঞাপন তৈরি করেছে। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ল্যুভরের বাইরে লাগানো সেই মইয়ের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছে: ‘যখন আপনার দ্রুত ফেরার তাড়া থাকে!’
বিজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, তাদের তৈরি ‘Agilo’ নামের ডিভাইসটি ২৩০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক মোটর এবং ‘ফিসফিসানির মতো শান্ত’ শব্দের ইঞ্জিনের সাহায্যে ৪০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত মালপত্র বহন করতে পারে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চোরেরা মইটির ডেমোনস্ট্রেশন নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল এবং প্রদর্শনের সময়ই এটি তারা চুরি করে নিয়ে যায়। তারা গাড়ির লাইসেন্স প্লেট ও গ্রাহকের লেবেলিং পর্যন্ত সরিয়ে ফেলেছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোকারের পোস্টগুলো সাধারণত ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার বার দেখা হয়। তবে এই বিতর্কিত বিজ্ঞাপনটি ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকে ৪৩ লাখের বেশি ভিউ পেয়েছে। যদিও প্রচারণার প্রতিক্রিয়া মিশ্র। অনেকে এটিকে ‘স্মার্ট’ ও মজার বলে অভিহিত করেছেন, আবার অনেকে নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আলেক্সান্ডার বোক বলেন, তিনি জানেন এটি ‘খুবই সূক্ষ্ম ভেদরেখা’, কিন্তু কেউ আহত না হওয়ায় তাঁরা এই পথে এগিয়েছেন। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, এই প্রচারণার অর্থ অপরাধকে সমর্থন করা নয়।
তিনি যোগ করেন, ‘আমরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সম্পূর্ণ বিরোধী। আমরা নিঃসন্দেহে সিরিয়াস কোম্পানি। জার্মানিতে আমাদের ৬২০ জন কর্মচারী আছে। সবকিছু জার্মানিতেই তৈরি হয়। আমরা নিরাপত্তার পক্ষে।’

প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মহামূল্যবান অলংকার চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত বিশেষ একটি ফার্নিচারের প্রস্তুতকারক জার্মান কোম্পানি বোকার। এই চুরির ঘটনাকে এখন নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। তারা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের পণ্যের গুণগান গেয়ে হাস্যরসাত্মক বিজ্ঞাপন প্রচার করছে।
গত সপ্তাহের রোববার সকালে ল্যুভর মিউজিয়াম খোলার পরই চোরেরা একটি ট্রাক মিউজিয়ামের অ্যাপোলো গ্যালারির নিচে থামায়। এই ট্রাকে লাগানো ছিল বোকার কোম্পানির তৈরি একটি ভাঁজযোগ্য মই। দিনের আলোয় তারা সেই মই বেয়ে ওপরে উঠে যায়, জানালা কেটে ভেতরে ঢোকে এবং ডিসপ্লে কেস ভেঙে গয়না চুরি করে।
পুরো অপারেশনটি শেষ করতে চোরদের সময় লেগেছিল মাত্র সাত মিনিট। চুরি হওয়া অলংকারগুলোর মধ্যে রয়েছে সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্টের দেওয়া একটি পান্না ও হীরার নেকলেস এবং সম্রাজ্ঞী ইউজিনির মুকুট। এই মুকুটে প্রায় ২ হাজার হীরা খচিত।
জার্মানির ডর্টমুন্ডের কাছে অবস্থিত লিফটিং সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক কোম্পানি বোকারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলেক্সান্ডার বোক এবং তাঁর স্ত্রী রোববার খবরটি দেখার সময়ই ব্যবহৃত মইটি চিনতে পারেন।
সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলেক্সান্ডার বোক জানান, তাঁর স্ত্রী, যিনি কোম্পানির বিপণন প্রধানও, তিনিই প্রথম বিষয়টি খেয়াল করেন। তিনি বলেন, ‘যখন পরিষ্কার হলো যে চুরির ঘটনায় কেউ আহত হয়নি, তখন আমরা বিষয়টিকে একটু হালকা চালে নিই।’
আলেক্সান্ডার স্বীকার করেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ! সবচেয়ে বিখ্যাত এবং সর্বাধিক পরিদর্শন করা জাদুঘরটির খ্যাতি কাজে লাগিয়ে আমাদের কোম্পানির জন্য কিছুটা দৃষ্টি আকর্ষণ করার এ-ই সুযোগ।’ তবে তিনি এ-ও স্পষ্ট করেন, ‘এই অপরাধ অবশ্যই নিন্দনীয়, এটা নিয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই।’
এই সুযোগে বোকার দ্রুতই একটি প্রচারণামূলক বিজ্ঞাপন তৈরি করেছে। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ল্যুভরের বাইরে লাগানো সেই মইয়ের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছে: ‘যখন আপনার দ্রুত ফেরার তাড়া থাকে!’
বিজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, তাদের তৈরি ‘Agilo’ নামের ডিভাইসটি ২৩০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক মোটর এবং ‘ফিসফিসানির মতো শান্ত’ শব্দের ইঞ্জিনের সাহায্যে ৪০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত মালপত্র বহন করতে পারে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চোরেরা মইটির ডেমোনস্ট্রেশন নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল এবং প্রদর্শনের সময়ই এটি তারা চুরি করে নিয়ে যায়। তারা গাড়ির লাইসেন্স প্লেট ও গ্রাহকের লেবেলিং পর্যন্ত সরিয়ে ফেলেছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোকারের পোস্টগুলো সাধারণত ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার বার দেখা হয়। তবে এই বিতর্কিত বিজ্ঞাপনটি ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকে ৪৩ লাখের বেশি ভিউ পেয়েছে। যদিও প্রচারণার প্রতিক্রিয়া মিশ্র। অনেকে এটিকে ‘স্মার্ট’ ও মজার বলে অভিহিত করেছেন, আবার অনেকে নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আলেক্সান্ডার বোক বলেন, তিনি জানেন এটি ‘খুবই সূক্ষ্ম ভেদরেখা’, কিন্তু কেউ আহত না হওয়ায় তাঁরা এই পথে এগিয়েছেন। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, এই প্রচারণার অর্থ অপরাধকে সমর্থন করা নয়।
তিনি যোগ করেন, ‘আমরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সম্পূর্ণ বিরোধী। আমরা নিঃসন্দেহে সিরিয়াস কোম্পানি। জার্মানিতে আমাদের ৬২০ জন কর্মচারী আছে। সবকিছু জার্মানিতেই তৈরি হয়। আমরা নিরাপত্তার পক্ষে।’

কিছুদিন ধরেই মাথায় কেবল ‘পদ’ ঘুরছে। এ নিয়ে মনে মনে বিড়ম্বনাও কম নয়। কারণ, পদ নিয়ে বিপদের তো শেষ নেই কোনো। এ এক বিরাট আপদ বলা যায়। ভাবুন না, পদধারীদের কত তটস্থ থাকতে হয় পদ হারানোর ভয়ে। পান থেকে চুন খসলেই উঠে যেতে পারে পদত্যাগের দাবি। কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কায় যেমনটা হলো। দেশে দেশে এমনটা তো প্রায়ই হয়। আব
০২ সেপ্টেম্বর ২০২২
চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন।
১১ ঘণ্টা আগে
নিউজিল্যান্ডে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের পেট থেকে প্রায় ১০০টি শক্তিশালী চুম্বক অপসারণ করেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার অন্ত্রের কিছু টিস্যুও অপসারণ করতে হয়েছে। চিকিৎসকেরা গতকাল শুক্রবার এই অস্ত্রোপচারের কথা প্রকাশ করেন। চুম্বকগুলো কেনা হয়েছিল জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম টেমু থেকে।
১ দিন আগে
তুরস্কের এক ব্যক্তি তাঁর ফোনে স্ত্রীর ফোন নম্বর সেভ করেছিলেন, ‘Chubby-চাবি’ দিয়ে। যার অর্থ প্রচলিত বাংলায় দাঁড়ায় ‘মোটু বা গুলুমুলু।’ অনেক সময় এই ডাকনাম আদুরে শোনালেও বিষয়টি মোটেও ভালো লাগেনি তুর্কি ও ব্যক্তির স্ত্রীর। তিনি সোজা আদালতে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এমনকি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েও যায়।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নিউজিল্যান্ডে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের পেট থেকে প্রায় ১০০টি শক্তিশালী চুম্বক অপসারণ করেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার অন্ত্রের কিছু টিস্যুও অপসারণ করতে হয়েছে। চিকিৎসকেরা গতকাল শুক্রবার এই অস্ত্রোপচারের কথা প্রকাশ করেন। চুম্বকগুলো কেনা হয়েছিল জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম টেমু থেকে।
এই ঘটনা অনলাইন শপ থেকে কেনা শিশুদের পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার দিন ধরে পেটে তীব্র ব্যথা নিয়ে কিশোরটিকে নর্থ আইল্যান্ডের টরাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিউজিল্যান্ড মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিশোরটি ভর্তির প্রায় এক সপ্তাহ আগে প্রায় ৮০ থেকে ১০০টি (৫ x ২ মিলিমিটার আকারের) শক্তিশালী নিওডিমিয়াম চুম্বক গিলে ফেলেছিল। এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায়, এই চুম্বকগুলো তার অন্ত্রের ভেতরে চারটি সরলরেখায় জড়ো হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, চুম্বকীয় শক্তির কারণে অন্ত্রের বিভিন্ন অংশ একসঙ্গে আটকে যাওয়ায় তীব্র চাপ সৃষ্টি হয়, যার ফলে টিস্যু মারা যায়।
সার্জনরা দ্রুত অপারেশন করে মৃত টিস্যু অপসারণ করেন এবং আটকে থাকা চুম্বকগুলো বের করে আনেন। চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করেন, কিশোরটির ক্ষুদ্রান্ত্র এবং বৃহদন্ত্রের অংশ ক্যাসেম-এর চারটি জায়গায় টিস্যু মারা গিয়েছিল। আট দিন হাসপাতালে থাকার পর শিশুটিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনের লেখক ড. বিনুরা লেখামালেজ, লুসিন্ডা ডানক্যান-ওয়ার এবং নিকোলা ডেভিস সতর্ক করেছেন, এই ঘটনা কেবল চুম্বক গিলে ফেলার বিপদই নয়, বরং শিশুদের জন্য অনলাইন শপের বিপদকেও তুলে ধরে।
উল্লেখ্য, এই শক্তিশালী চুম্বকগুলো নিউজিল্যান্ডে ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে নিষিদ্ধ।
চিকিৎসকেরা আরও জানিয়েছেন, চুম্বক গিলে ফেলার জন্য অস্ত্রোপচার ভবিষ্যতে অন্ত্রে বাধা, পেটে হার্নিয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার মতো জটিলতা তৈরি করতে পারে।
এদিকে, চীনা ই-কমার্স জায়ান্ট টেমু এই ঘটনা জানার পর দুঃখ প্রকাশ করেছে। একজন মুখপাত্র বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আমরা একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা শুরু করেছি এবং নিউজিল্যান্ড মেডিকেল জার্নালের লেখকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’
টেমু আরও জানায়, তারা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি যে চুম্বকগুলো টেমু থেকেই কেনা হয়েছিল কি না। তবে তারা প্রাসঙ্গিক পণ্য তালিকা খতিয়ে দেখছে। অবৈধ পণ্য প্ল্যাটফর্ম থেকে সরাতে ব্যর্থ হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য বাজারেও টেমু ইতিমধ্যে সমালোচনার মুখে পড়েছে।

নিউজিল্যান্ডে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের পেট থেকে প্রায় ১০০টি শক্তিশালী চুম্বক অপসারণ করেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার অন্ত্রের কিছু টিস্যুও অপসারণ করতে হয়েছে। চিকিৎসকেরা গতকাল শুক্রবার এই অস্ত্রোপচারের কথা প্রকাশ করেন। চুম্বকগুলো কেনা হয়েছিল জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম টেমু থেকে।
এই ঘটনা অনলাইন শপ থেকে কেনা শিশুদের পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার দিন ধরে পেটে তীব্র ব্যথা নিয়ে কিশোরটিকে নর্থ আইল্যান্ডের টরাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিউজিল্যান্ড মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিশোরটি ভর্তির প্রায় এক সপ্তাহ আগে প্রায় ৮০ থেকে ১০০টি (৫ x ২ মিলিমিটার আকারের) শক্তিশালী নিওডিমিয়াম চুম্বক গিলে ফেলেছিল। এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায়, এই চুম্বকগুলো তার অন্ত্রের ভেতরে চারটি সরলরেখায় জড়ো হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, চুম্বকীয় শক্তির কারণে অন্ত্রের বিভিন্ন অংশ একসঙ্গে আটকে যাওয়ায় তীব্র চাপ সৃষ্টি হয়, যার ফলে টিস্যু মারা যায়।
সার্জনরা দ্রুত অপারেশন করে মৃত টিস্যু অপসারণ করেন এবং আটকে থাকা চুম্বকগুলো বের করে আনেন। চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করেন, কিশোরটির ক্ষুদ্রান্ত্র এবং বৃহদন্ত্রের অংশ ক্যাসেম-এর চারটি জায়গায় টিস্যু মারা গিয়েছিল। আট দিন হাসপাতালে থাকার পর শিশুটিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনের লেখক ড. বিনুরা লেখামালেজ, লুসিন্ডা ডানক্যান-ওয়ার এবং নিকোলা ডেভিস সতর্ক করেছেন, এই ঘটনা কেবল চুম্বক গিলে ফেলার বিপদই নয়, বরং শিশুদের জন্য অনলাইন শপের বিপদকেও তুলে ধরে।
উল্লেখ্য, এই শক্তিশালী চুম্বকগুলো নিউজিল্যান্ডে ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে নিষিদ্ধ।
চিকিৎসকেরা আরও জানিয়েছেন, চুম্বক গিলে ফেলার জন্য অস্ত্রোপচার ভবিষ্যতে অন্ত্রে বাধা, পেটে হার্নিয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার মতো জটিলতা তৈরি করতে পারে।
এদিকে, চীনা ই-কমার্স জায়ান্ট টেমু এই ঘটনা জানার পর দুঃখ প্রকাশ করেছে। একজন মুখপাত্র বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আমরা একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা শুরু করেছি এবং নিউজিল্যান্ড মেডিকেল জার্নালের লেখকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’
টেমু আরও জানায়, তারা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি যে চুম্বকগুলো টেমু থেকেই কেনা হয়েছিল কি না। তবে তারা প্রাসঙ্গিক পণ্য তালিকা খতিয়ে দেখছে। অবৈধ পণ্য প্ল্যাটফর্ম থেকে সরাতে ব্যর্থ হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য বাজারেও টেমু ইতিমধ্যে সমালোচনার মুখে পড়েছে।

কিছুদিন ধরেই মাথায় কেবল ‘পদ’ ঘুরছে। এ নিয়ে মনে মনে বিড়ম্বনাও কম নয়। কারণ, পদ নিয়ে বিপদের তো শেষ নেই কোনো। এ এক বিরাট আপদ বলা যায়। ভাবুন না, পদধারীদের কত তটস্থ থাকতে হয় পদ হারানোর ভয়ে। পান থেকে চুন খসলেই উঠে যেতে পারে পদত্যাগের দাবি। কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কায় যেমনটা হলো। দেশে দেশে এমনটা তো প্রায়ই হয়। আব
০২ সেপ্টেম্বর ২০২২
চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন।
১১ ঘণ্টা আগে
প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মহামূল্যবান অলংকার চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত বিশেষ একটি ফার্নিচারের প্রস্তুতকারক জার্মান কোম্পানি বোকার। এই চুরির ঘটনাকে এখন নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। তারা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের পণ্যের গুণগান...
১ দিন আগে
তুরস্কের এক ব্যক্তি তাঁর ফোনে স্ত্রীর ফোন নম্বর সেভ করেছিলেন, ‘Chubby-চাবি’ দিয়ে। যার অর্থ প্রচলিত বাংলায় দাঁড়ায় ‘মোটু বা গুলুমুলু।’ অনেক সময় এই ডাকনাম আদুরে শোনালেও বিষয়টি মোটেও ভালো লাগেনি তুর্কি ও ব্যক্তির স্ত্রীর। তিনি সোজা আদালতে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এমনকি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েও যায়।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আপনি কি আপনার স্ত্রীকে ‘মোটু বা গুলুমুলু’ ডাকেন? তাহলে এখনই সাবধান হয়ে যান। কারণ, তুরস্কের এক ব্যক্তি তাঁর ফোনে স্ত্রীর ফোন নম্বর সেভ করেছিলেন, ‘Chubby-চাবি’ দিয়ে। যার অর্থ প্রচলিত বাংলায় দাঁড়ায় ‘মোটু বা গুলুমুলু।’ অনেক সময় এই ডাকনাম আদুরে শোনালেও বিষয়টি মোটেও ভালো লাগেনি তুর্কি ওই ব্যক্তির স্ত্রীর। তিনি সোজা আদালতে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এমনকি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েও যায়।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহের খবরে বলা হয়েছে, তুরস্কের ওই ব্যক্তি তাঁর মোবাইল ফোনের কনট্যাক্টে স্ত্রীর নাম সেভ করেছিলেন ‘চাবি’ নাম দিয়ে। এই ঘটনাকে আদালত ‘অসম্মানজনক’ ও ‘বিবাহের জন্য ক্ষতিকর’ বলে রায় দিয়েছেন।
পশ্চিম তুরস্কের উশাক প্রদেশের ওই নারী এই ঘটনার পর স্বামীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন। অন্যদিকে স্বামী পাল্টা মামলা করে স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন। তাঁদের সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে, তবে তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
আদালতের শুনানিতে ওই নারী জানান, তাঁর স্বামী বারবার তাঁকে হুমকি দিয়ে বার্তা পাঠাতেন। এক বার্তায় তিনি লিখেছিলেন, ‘দূর হও, তোমাকে আর দেখতে চাই না।’ আরেকটিতে বলেছিলেন, ‘তোমার মুখ শয়তানকে দেখাও গে।’ এ ছাড়া তিনি নিজের বাবার অস্ত্রোপচারের খরচ বাবদ স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা দাবি করেন।
শুনানির সময় আদালতে সবচেয়ে আলোচিত হয় স্বামীর ফোনে স্ত্রীর নাম ‘তোম্বিক—তুর্কি ভাষার এই শব্দের অর্থ মোটা) নামে সংরক্ষিত থাকার বিষয়টি। ওই নারীর দাবি, এই ডাকনাম তাঁকে অপমান করেছে এবং তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছে। আদালত তাঁর দাবিকে সমর্থন করে জানায়, ওই নাম ও বার্তাগুলো ‘মানসিক ও অর্থনৈতিক সহিংসতা’র শামিল।
অন্যদিকে স্বামী দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী অন্য এক পুরুষকে বাড়িতে এনেছিলেন। কিন্তু তদন্তে জানা যায়, ওই ব্যক্তি কেবল একটি বই পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন এবং তাঁদের মধ্যে কোনো অনৈতিক সম্পর্কের প্রমাণ মেলেনি। আদালত রায়ে বলে, স্বামীর অপমানজনক ভাষা ও অর্থনৈতিক চাপ ছিল আরও গুরুতর। তাই মূল দায় তাঁরই।
তুর্কি আইনে কারও মর্যাদা বা ব্যক্তিগত সম্মান আঘাত করে এমন ভাষা বা আচরণের জন্য, সেটা বার্তা মারফত হোক বা সরাসরি, দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। শেষ পর্যন্ত দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়। স্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা পরকীয়ার অভিযোগ খারিজ করা হয়। স্বামীকে তাঁর সাবেক স্ত্রীকে মানসিক ও আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে আদেশ দেওয়া হয়। ক্ষতিপূরণের অঙ্ক প্রকাশ করা হয়নি।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে একজন লিখেছেন, ‘মোটু বা গুলুমুলু ডাক আসলে বেশ মিষ্টি শোনায়। মোটা হওয়া কোনো অপরাধ না, আর মোটা বলে ডাকা সব সময় অপমানও নয়।’ আরেকজন বলেছেন, ‘এটা ন্যায্য রায়। স্বামী তাঁর স্ত্রীকে একের পর এক অপমানজনক বার্তা পাঠিয়েছে—সেখানেই সীমা অতিক্রম করেছে।’ তৃতীয় এক ব্যক্তি মজা করে লিখেছেন, ‘আমার বন্ধুদের নম্বরগুলো এখনই যাচাই করব, যেন কোনো আপত্তিকর কিছু না থাকে।’
এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। গত মে মাসে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক ব্যক্তি প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দেন। কারণ, প্রেমিকার ফোনটি তাঁদের প্রথমবার একসঙ্গে যাওয়া এক হোটেলের কামরায় ওয়াইফাইয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযুক্ত হয়ে যায়।
এর ফলে ওই পুরুষি মনে করেন, এর মানে ওই নারী আগে অন্য কারও সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন এবং তাঁকে প্রতারণা করেছেন। অপমানিত হয়ে ওউ নারী স্থানীয় এক টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য।

আপনি কি আপনার স্ত্রীকে ‘মোটু বা গুলুমুলু’ ডাকেন? তাহলে এখনই সাবধান হয়ে যান। কারণ, তুরস্কের এক ব্যক্তি তাঁর ফোনে স্ত্রীর ফোন নম্বর সেভ করেছিলেন, ‘Chubby-চাবি’ দিয়ে। যার অর্থ প্রচলিত বাংলায় দাঁড়ায় ‘মোটু বা গুলুমুলু।’ অনেক সময় এই ডাকনাম আদুরে শোনালেও বিষয়টি মোটেও ভালো লাগেনি তুর্কি ওই ব্যক্তির স্ত্রীর। তিনি সোজা আদালতে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এমনকি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েও যায়।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহের খবরে বলা হয়েছে, তুরস্কের ওই ব্যক্তি তাঁর মোবাইল ফোনের কনট্যাক্টে স্ত্রীর নাম সেভ করেছিলেন ‘চাবি’ নাম দিয়ে। এই ঘটনাকে আদালত ‘অসম্মানজনক’ ও ‘বিবাহের জন্য ক্ষতিকর’ বলে রায় দিয়েছেন।
পশ্চিম তুরস্কের উশাক প্রদেশের ওই নারী এই ঘটনার পর স্বামীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন। অন্যদিকে স্বামী পাল্টা মামলা করে স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন। তাঁদের সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে, তবে তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
আদালতের শুনানিতে ওই নারী জানান, তাঁর স্বামী বারবার তাঁকে হুমকি দিয়ে বার্তা পাঠাতেন। এক বার্তায় তিনি লিখেছিলেন, ‘দূর হও, তোমাকে আর দেখতে চাই না।’ আরেকটিতে বলেছিলেন, ‘তোমার মুখ শয়তানকে দেখাও গে।’ এ ছাড়া তিনি নিজের বাবার অস্ত্রোপচারের খরচ বাবদ স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা দাবি করেন।
শুনানির সময় আদালতে সবচেয়ে আলোচিত হয় স্বামীর ফোনে স্ত্রীর নাম ‘তোম্বিক—তুর্কি ভাষার এই শব্দের অর্থ মোটা) নামে সংরক্ষিত থাকার বিষয়টি। ওই নারীর দাবি, এই ডাকনাম তাঁকে অপমান করেছে এবং তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছে। আদালত তাঁর দাবিকে সমর্থন করে জানায়, ওই নাম ও বার্তাগুলো ‘মানসিক ও অর্থনৈতিক সহিংসতা’র শামিল।
অন্যদিকে স্বামী দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী অন্য এক পুরুষকে বাড়িতে এনেছিলেন। কিন্তু তদন্তে জানা যায়, ওই ব্যক্তি কেবল একটি বই পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন এবং তাঁদের মধ্যে কোনো অনৈতিক সম্পর্কের প্রমাণ মেলেনি। আদালত রায়ে বলে, স্বামীর অপমানজনক ভাষা ও অর্থনৈতিক চাপ ছিল আরও গুরুতর। তাই মূল দায় তাঁরই।
তুর্কি আইনে কারও মর্যাদা বা ব্যক্তিগত সম্মান আঘাত করে এমন ভাষা বা আচরণের জন্য, সেটা বার্তা মারফত হোক বা সরাসরি, দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। শেষ পর্যন্ত দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়। স্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা পরকীয়ার অভিযোগ খারিজ করা হয়। স্বামীকে তাঁর সাবেক স্ত্রীকে মানসিক ও আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে আদেশ দেওয়া হয়। ক্ষতিপূরণের অঙ্ক প্রকাশ করা হয়নি।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে একজন লিখেছেন, ‘মোটু বা গুলুমুলু ডাক আসলে বেশ মিষ্টি শোনায়। মোটা হওয়া কোনো অপরাধ না, আর মোটা বলে ডাকা সব সময় অপমানও নয়।’ আরেকজন বলেছেন, ‘এটা ন্যায্য রায়। স্বামী তাঁর স্ত্রীকে একের পর এক অপমানজনক বার্তা পাঠিয়েছে—সেখানেই সীমা অতিক্রম করেছে।’ তৃতীয় এক ব্যক্তি মজা করে লিখেছেন, ‘আমার বন্ধুদের নম্বরগুলো এখনই যাচাই করব, যেন কোনো আপত্তিকর কিছু না থাকে।’
এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। গত মে মাসে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক ব্যক্তি প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দেন। কারণ, প্রেমিকার ফোনটি তাঁদের প্রথমবার একসঙ্গে যাওয়া এক হোটেলের কামরায় ওয়াইফাইয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযুক্ত হয়ে যায়।
এর ফলে ওই পুরুষি মনে করেন, এর মানে ওই নারী আগে অন্য কারও সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন এবং তাঁকে প্রতারণা করেছেন। অপমানিত হয়ে ওউ নারী স্থানীয় এক টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য।

কিছুদিন ধরেই মাথায় কেবল ‘পদ’ ঘুরছে। এ নিয়ে মনে মনে বিড়ম্বনাও কম নয়। কারণ, পদ নিয়ে বিপদের তো শেষ নেই কোনো। এ এক বিরাট আপদ বলা যায়। ভাবুন না, পদধারীদের কত তটস্থ থাকতে হয় পদ হারানোর ভয়ে। পান থেকে চুন খসলেই উঠে যেতে পারে পদত্যাগের দাবি। কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কায় যেমনটা হলো। দেশে দেশে এমনটা তো প্রায়ই হয়। আব
০২ সেপ্টেম্বর ২০২২
চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন।
১১ ঘণ্টা আগে
প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মহামূল্যবান অলংকার চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত বিশেষ একটি ফার্নিচারের প্রস্তুতকারক জার্মান কোম্পানি বোকার। এই চুরির ঘটনাকে এখন নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। তারা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের পণ্যের গুণগান...
১ দিন আগে
নিউজিল্যান্ডে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের পেট থেকে প্রায় ১০০টি শক্তিশালী চুম্বক অপসারণ করেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার অন্ত্রের কিছু টিস্যুও অপসারণ করতে হয়েছে। চিকিৎসকেরা গতকাল শুক্রবার এই অস্ত্রোপচারের কথা প্রকাশ করেন। চুম্বকগুলো কেনা হয়েছিল জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম টেমু থেকে।
১ দিন আগে