ইশতিয়াক হাসান
নেদারল্যান্ডসের এক গ্রাম গিয়েথুর্ন। হঠাৎ করে সেখানে গেলে মনে হবে আশ্চর্য সুন্দর এক রূপকথার রাজ্যে চলে এসেছেন। পর্যটকেরা একে আদর করে ডাকেন ‘উত্তরের ভেনিস’ নামে। কারণ এই গ্রামে গাড়ি চলার মতো কোনো রাস্তা নেই। এখানকার ছোট ছোট সব খাল ধরে অর্থাৎ নৌপথে চলে সব যোগাযোগ।
এবার এমন সুন্দর একটি গ্রামের কীভাবে জন্ম হলো তা বরং জেনে নেওয়া যাক। ১১৭০ সালের দিকে এলাকায় বড় একটি বন্যা হয়। মূলত এ সময়ই এই এলাকা বা এখন যেখানে গ্রামটি তার চারপাশ পানিতে ডুবে যায়। বন্যার ৬০ বছর পর, ১২৩০ সালের দিকে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের মানুষ এই এলাকায় এসে বসবাস শুরু করার সময়ই বলা চলে গোড়াপত্তন হয় গ্রামটির। তার পরই এর নানা ধরনের উন্নয়ন হয়। নতুন বসতি স্থাপনকারীরা এখানে বুনো ছাগলের অনেক শিং খুঁজে পায়, যেগুলো বন্যায় মারা যায় বলে ধারণা করা হয়। এখান থেকেই এমন নাম পায় গ্রামটি। নতুন বসতি স্থাপনকারীরা অবশ্য জায়গাটিকে ডাকতেন ‘গেতেনহর্ন’ নামে, যার অর্থ ছাগলের শিং। এই নামই কালক্রমে পরিবর্তিত হয় গিয়েথুর্নে। গ্রামটির জনসংখ্যা এখন প্রায় ২ হাজার ৮০০।
এ জায়গাটি একসময় ছিল পিট ডিগারদের মাটি খোঁড়ার জন্য খুব পছন্দের এলাকা। পুরোনো দিনের বিভিন্ন শাক-সবজি মাটির সঙ্গে মিশে মাটির তলে একধরনের পদার্থের জন্ম দেয়। পিট ডিগাররা এই উর্বর মাটি নিয়ে অন্য জায়গায় ব্যবহার করে। এভাবে এখানে-সেখানে খোঁড়াখুঁড়ির করণে এই এলাকায় ছোট-বড় বিভিন্ন হ্রদের জন্ম হয়। আর এ ধরনের মাটি বিভিন্ন জায়গায় নেওয়ার জন্য অনেক পরিখা আর খাল খনন করেন পিট ডিগাররা। বলা চলে—এমন খাল খনন, বন্যা সবকিছু মিলিয়েই জন্ম সুন্দর গ্রাম গিয়েথুর্নের।
বলা চলে, গোটা গ্রামটি ছোট ছোট অনেকগুলো দ্বীপের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে। এই দ্বীপগুলোতে বাড়ি বানান স্থানীয় বাসিন্দারা। এক দ্বীপের সঙ্গে আরেক দ্বীপকে জোড়া লাগিয়েছে উঁচু সব সেতু। এই সেতুগুলোর নির্মাণশৈলী দেখে চোখ জুড়াবে আপনার। এ ধরনের ৫-১০টি নয়, ১৭৬টি সেতু আছে গিয়েথুর্ন গ্রামে। কাঠের সেতু ধরে এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ি যেতে পারেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গ্রামের লোকেরা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে ব্যবহার করেন বৈদ্যুতিক মোটরের ছোট ছোট নৌকা। অবশ্য এ ধরনের ইঞ্জিনে সেই অর্থে শব্দ হয় না, তাই নৌকাগুলো পরিচিত হুইসপার বোট বা ফিসফিসে নৌকা নামে। পর্যটক আনা-নেওয়ায় কিংবা তাঁদের গোটা গ্রাম ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখানোয়ও ব্যবহার করা হয় এমন নৌকা।
তবে একটা সময় পর্যন্ত আশ্চর্য সুন্দর এই গ্রামের কথা খুব বেশি মানুষ জানত না। বলা চলে, ১৯৫৮ সালে ডাচ চলচ্চিত্র নির্মাতা বার্ট হানসট্রা তাঁর বিখ্যাত কমেডি ‘ফানফেয়ার’এর শুটিং এই গ্রামে করার পর জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে জায়গাটি। একসময় নেদারল্যান্ডসের বাইরের পর্যটকেরাও জেনে যান খাল আর সেতুময় ছোট ছোট দ্বীপে ভরা এই গ্রামের খবর। এখন নেদারল্যান্ডসসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পর্যটকের কাছেই খুব পছন্দের এক গন্তব্য এই গিয়েথুর্ন।
গ্রামটি থেকে ডু উইররিব্যান-উইডেন ন্যাশনাল পার্কও দূরে নয়। বন্যপ্রাণী যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরা সেখানে ঘুরে আসতে পারেন। নলখাগড়াময় জলাভূমি এলাকাটি ভোঁদড়, সারসসহ নানান জলজ প্রাণী ও পাখির জন্য বিখ্যাত।
নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডাম থেকে গ্রামটির দূরত্ব কেবল ৭৫ মাইল। বাস ও ট্রেনে চেপে মোটামুটি ঘণ্টা দুয়েক লাগবে গ্রামটির কাছাকাছি যেতে। তারপর নৌকায় চেপে পৌঁছে যেতে পারবেন কোলাহলমুক্ত আশ্চর্য সুন্দর সেই জলের রাজ্যে। শব্দ যে একেবারে শুনবেন না তা নয়, তবে সেটা কোনো বুনো হাঁসের ডাক বা ডানা জাপটানোর আওয়াজ কিংবা পর্যটকের কথা বলার শব্দ। অবশ্য চাইলে গ্রামটির ছোট দ্বীপগুলোকে যুক্ত করা সেতু ধরে হেঁটে বা সাইকেলে চেপেও ঘুরেফিরে দেখতে পারেন।
কখন যাবেন? যদি পর্যটকের ভিড় এড়াতে চান তবে এপ্রিল, মে, জুন আর সেপ্টেম্বর সেরা সময়। এখন গ্রামটি মানুষের ভালোই নজর কেড়েছে, তাই ছুটির দিনগুলোতে বেশ ভিড় হয়। ছুটির দিনে ভ্রমণ এড়াতে পারলে এখানে আপনার সময়টা আরও আনন্দময় কাটবে।
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক
নেদারল্যান্ডসের এক গ্রাম গিয়েথুর্ন। হঠাৎ করে সেখানে গেলে মনে হবে আশ্চর্য সুন্দর এক রূপকথার রাজ্যে চলে এসেছেন। পর্যটকেরা একে আদর করে ডাকেন ‘উত্তরের ভেনিস’ নামে। কারণ এই গ্রামে গাড়ি চলার মতো কোনো রাস্তা নেই। এখানকার ছোট ছোট সব খাল ধরে অর্থাৎ নৌপথে চলে সব যোগাযোগ।
এবার এমন সুন্দর একটি গ্রামের কীভাবে জন্ম হলো তা বরং জেনে নেওয়া যাক। ১১৭০ সালের দিকে এলাকায় বড় একটি বন্যা হয়। মূলত এ সময়ই এই এলাকা বা এখন যেখানে গ্রামটি তার চারপাশ পানিতে ডুবে যায়। বন্যার ৬০ বছর পর, ১২৩০ সালের দিকে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের মানুষ এই এলাকায় এসে বসবাস শুরু করার সময়ই বলা চলে গোড়াপত্তন হয় গ্রামটির। তার পরই এর নানা ধরনের উন্নয়ন হয়। নতুন বসতি স্থাপনকারীরা এখানে বুনো ছাগলের অনেক শিং খুঁজে পায়, যেগুলো বন্যায় মারা যায় বলে ধারণা করা হয়। এখান থেকেই এমন নাম পায় গ্রামটি। নতুন বসতি স্থাপনকারীরা অবশ্য জায়গাটিকে ডাকতেন ‘গেতেনহর্ন’ নামে, যার অর্থ ছাগলের শিং। এই নামই কালক্রমে পরিবর্তিত হয় গিয়েথুর্নে। গ্রামটির জনসংখ্যা এখন প্রায় ২ হাজার ৮০০।
এ জায়গাটি একসময় ছিল পিট ডিগারদের মাটি খোঁড়ার জন্য খুব পছন্দের এলাকা। পুরোনো দিনের বিভিন্ন শাক-সবজি মাটির সঙ্গে মিশে মাটির তলে একধরনের পদার্থের জন্ম দেয়। পিট ডিগাররা এই উর্বর মাটি নিয়ে অন্য জায়গায় ব্যবহার করে। এভাবে এখানে-সেখানে খোঁড়াখুঁড়ির করণে এই এলাকায় ছোট-বড় বিভিন্ন হ্রদের জন্ম হয়। আর এ ধরনের মাটি বিভিন্ন জায়গায় নেওয়ার জন্য অনেক পরিখা আর খাল খনন করেন পিট ডিগাররা। বলা চলে—এমন খাল খনন, বন্যা সবকিছু মিলিয়েই জন্ম সুন্দর গ্রাম গিয়েথুর্নের।
বলা চলে, গোটা গ্রামটি ছোট ছোট অনেকগুলো দ্বীপের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে। এই দ্বীপগুলোতে বাড়ি বানান স্থানীয় বাসিন্দারা। এক দ্বীপের সঙ্গে আরেক দ্বীপকে জোড়া লাগিয়েছে উঁচু সব সেতু। এই সেতুগুলোর নির্মাণশৈলী দেখে চোখ জুড়াবে আপনার। এ ধরনের ৫-১০টি নয়, ১৭৬টি সেতু আছে গিয়েথুর্ন গ্রামে। কাঠের সেতু ধরে এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ি যেতে পারেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গ্রামের লোকেরা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে ব্যবহার করেন বৈদ্যুতিক মোটরের ছোট ছোট নৌকা। অবশ্য এ ধরনের ইঞ্জিনে সেই অর্থে শব্দ হয় না, তাই নৌকাগুলো পরিচিত হুইসপার বোট বা ফিসফিসে নৌকা নামে। পর্যটক আনা-নেওয়ায় কিংবা তাঁদের গোটা গ্রাম ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখানোয়ও ব্যবহার করা হয় এমন নৌকা।
তবে একটা সময় পর্যন্ত আশ্চর্য সুন্দর এই গ্রামের কথা খুব বেশি মানুষ জানত না। বলা চলে, ১৯৫৮ সালে ডাচ চলচ্চিত্র নির্মাতা বার্ট হানসট্রা তাঁর বিখ্যাত কমেডি ‘ফানফেয়ার’এর শুটিং এই গ্রামে করার পর জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে জায়গাটি। একসময় নেদারল্যান্ডসের বাইরের পর্যটকেরাও জেনে যান খাল আর সেতুময় ছোট ছোট দ্বীপে ভরা এই গ্রামের খবর। এখন নেদারল্যান্ডসসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পর্যটকের কাছেই খুব পছন্দের এক গন্তব্য এই গিয়েথুর্ন।
গ্রামটি থেকে ডু উইররিব্যান-উইডেন ন্যাশনাল পার্কও দূরে নয়। বন্যপ্রাণী যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরা সেখানে ঘুরে আসতে পারেন। নলখাগড়াময় জলাভূমি এলাকাটি ভোঁদড়, সারসসহ নানান জলজ প্রাণী ও পাখির জন্য বিখ্যাত।
নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডাম থেকে গ্রামটির দূরত্ব কেবল ৭৫ মাইল। বাস ও ট্রেনে চেপে মোটামুটি ঘণ্টা দুয়েক লাগবে গ্রামটির কাছাকাছি যেতে। তারপর নৌকায় চেপে পৌঁছে যেতে পারবেন কোলাহলমুক্ত আশ্চর্য সুন্দর সেই জলের রাজ্যে। শব্দ যে একেবারে শুনবেন না তা নয়, তবে সেটা কোনো বুনো হাঁসের ডাক বা ডানা জাপটানোর আওয়াজ কিংবা পর্যটকের কথা বলার শব্দ। অবশ্য চাইলে গ্রামটির ছোট দ্বীপগুলোকে যুক্ত করা সেতু ধরে হেঁটে বা সাইকেলে চেপেও ঘুরেফিরে দেখতে পারেন।
কখন যাবেন? যদি পর্যটকের ভিড় এড়াতে চান তবে এপ্রিল, মে, জুন আর সেপ্টেম্বর সেরা সময়। এখন গ্রামটি মানুষের ভালোই নজর কেড়েছে, তাই ছুটির দিনগুলোতে বেশ ভিড় হয়। ছুটির দিনে ভ্রমণ এড়াতে পারলে এখানে আপনার সময়টা আরও আনন্দময় কাটবে।
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক
অনেকের কাছেই মদের বোতলে ডুবে থাকা সাপ, মোটেই রুচিকর বা মনোহর দৃশ্য নয়। তবে এশিয়ার কিছু অঞ্চলে এই ছবি আশার প্রতীক, স্বাস্থ্য ভালো রাখার প্রতিশ্রুতি। এই ব্যতিক্রমী পানীয়টির নাম ‘স্নেক ওয়াইন’ বা সাপের ওয়াইন। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এটি পান করা হয়ে আসছে এই অঞ্চলে। অনেকেরই বিশ্বাস, এতে রয়েছে ওষধিগুণ।
২ ঘণ্টা আগেনারীর বগলের গন্ধ পুরুষদের আচরণে প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি তাদের মানসিক চাপও কমাতে পারে। এমনটাই জানা গেছে, জাপানে হওয়া এক চমকপ্রদ গবেষণা থেকে। তবে এই প্রভাব সব সময় দেখা যায় না। মাসের নির্দিষ্ট কিছু সময়ে, যখন নারীদের গন্ধ পুরুষদের কাছে বেশি আকর্ষণীয় মনে হয়, তখনই এই প্রভাব দেখা যায়।
২ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা ৩৩ বছর বয়সী এমিলি এনজার এখন নিয়মিত আয় করছেন বুকের দুধ বিক্রি করে। পাঁচ সন্তানের এই মা প্রতিদিন সন্তানদের দুধ পান করানোর পর অতিরিক্ত যে দুধ পাম্প করেন, তা ব্যাগে ভরে সংরক্ষণ করেন ফ্রিজে। উদ্দেশ্য—নিজের সন্তানের জন্য নয়, বরং বিক্রি করে বাড়তি আয় করা।
৩ দিন আগেচীনের হুবেই প্রদেশের শিয়াংইয়াং শহরে ঘটেছে এক আজব দুর্ঘটনা। বাগানে কাজ করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে একটি পাথরে বসেছিলেন ৭২ বছর বয়সী এক নারী। বসতেই গরমের আঁচ টের পেলেন খুব ভালোমতো! মাত্র ১০ সেকেন্ডেই তাঁর নিতম্ব পুড়ে গেল। যেনতেন পোড়া নয়, রীতিমতো ‘থার্ড ডিগ্রি বার্ন।’ এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।
৪ দিন আগে