পদ্মা

চারঘাটের পদ্মা ও বড়াল নদীর বিভিন্ন স্থানে চায়না দুয়ারী নামের বিশেষ ধরনের ফাঁদ ব্যবহার করে নির্বিচারে মাছ শিকার করছেন স্থানীয় জেলেরা। খুব সহজে বেশি মাছ ধরার এই ফাঁদ ব্যবহারে ভবিষ্যতে দেশি প্রজাতির মাছ অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

মা ইলিশ রক্ষায় পদ্মা নদীতে সমন্বিত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত নড়িয়া উপজেলার পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে বিমানবাহিনীর বিশেষ টিম হেলিকপ্টার নিয়ে এই সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করে 

দেশের বৃহত্তর ফরিদপুর এবং বৃহত্তর কুমিল্লা ও নোয়াখালীকে নিয়ে পদ্মা ও মেঘনা নামে নতুন দুটি বিভাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি কুমিল্লা নাম দিবো না। কারণ এই নামের সঙ্গে মোশতাকের নাম জড়িত।'

গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় তৃতীয় দিনে পদ্মা নদীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এ সময়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দকৃত প্রায় ২ হাজার মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। 

রাজবাড়ীতে পদ্মার পানি কমে যাওয়ার পর মাত্র নয় দিনের ব্যবধানে একই স্থানে দুইবার ভাঙন ঘটনা ঘটে। দ্বিতীয় দফা ভাঙনেই নদীতে ধসে পরে চরসিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি

‘গাঙ্গে ঘর ভাঙে গেল। আপনারা দেহেন না। আমি অসুস্থ, কনতে কনে যাব, সরার জাগা (জায়গা) নাই, জাগা-জমি নাই আমাগোর’—এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন সদর উপজেলার ৮০ বছর বয়সী মহিরন বেগম। পদ্মার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে চরসিলিমপুর এলাকায় হঠাৎ ভাঙন শুরু হয়।

পদ্মার ভাঙনে বিলীন হরিরামপুরের চরাঞ্চলের সুতালড়ি ইউনিয়নের ৪১ নম্বর রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে অন্য একটি স্কুলে। একই ইউনিয়নের আড়াই কিলোমিটার দূরের ডুবাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস করার স্থান নির্ধারিত হয়েছে পদ্মায় বিলীন স্কুলের শিক্ষার্থীদের। তবে স্কুল খোলার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পদ্মা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিটি ফেরি নদী পার হতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ সময় লাগছে

পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে পানি প্রবাহ বিপৎসীমার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। যেকোনো সময় বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা পানি উন্নয়ন বোর্ডের। 

রাজশাহীতে এখন প্রতিদিন গড়ে ১০ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। এতে নদীতীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি। কোথাও কোথাও আবার পুরোনো বাঁধের ব্লক নিচে নেমে যাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে কিছু কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

কোনো যাত্রীবাহী নৌযান সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর সংশ্লিষ্ট ঘাট ত্যাগ করতে পারবে না। নৌযান পরিচালনাকারী মালিক, নৌযানের নাবিক/শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টদের জন্য এই তথ্য জানানো হয়েছে। এ রুটে তীব্র স্রোতের কারণে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে ও জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের পদ্মা নদীতে স্রোতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়ে পরেছে। আজ শুক্রবার নৌরুটে সকাল থেকে ৪টি কেটাইপ ফেরি চলাচল করছে। ফলে উভয় ঘাটেই পারাপারের অপেক্ষায় থাকা সহস্রাধিক যানবাহন আটকা পড়েছে

ফেরির মাস্টার ও সুকানির দক্ষতার সঙ্গে ফেরিটি পরিচালনা করলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো। দায়িত্বপূর্ণ কর্মচারী হিসেবে ফেরিটি অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে পরিচালনা করা তাদের উচিত ছিল। পদ্মা সেতুর নিচে এ ধরনের দুর্ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

স্রোতের তীব্রতায় পদ্মায় ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে পদ্মা পাড় হতে এখন দ্বিগুণ সময় লাগছে। এতে করে গত ২৪ ঘণ্টায় কমে গেছে ফেরির চলাচলের সংখ্যা। যে পরিমাণ যানবাহন পার হওয়ার কথা তা পার করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ঘাটে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাক চালকদের।

তাৎক্ষণিকভাবে মরদেহটির পরিচয় পাওয়া যায়নি। কাফনের কাপড়ে মোড়ানো মরদেহটির প্রাথমিক সুরতহালে ধারণা করা হচ্ছে, মরদেহটি কোনো বয়স্ক পুরুষের, আনুমানিক বয়স ৭০ বছর। শরীরের মাংস খসে পড়ে অনেকটা কঙ্কালে পরিণত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বেশ কিছু দিনের পুরোনো এ মরদেহ পদ্মার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কোনো কবর থেকে ভেসে এসেছে।

আকাশ মেঘলা ও ঝোড়ো বাতাস থাকায় উত্তাল পদ্মানদী। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মাঝ পদ্মায় ঢেউয়ের মাত্রা বেড়েছে। ঝোড়ো বাতাসের কারণে পদ্মা উত্তাল থাকায় লঞ্চ চলাচল কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে

আজও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে কয়েক হাজার ঘরমুখী মানুষ জড়ো হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে বাড়ি যেতে তারা পন্টুন ও এর আশপাশে অপেক্ষা করছেন। সকাল থেকে এ পর্যন্ত ডিএমএল ও যমুনা নামে মাত্র দুটি ফেরি ছেড়ে গেছে। জরুরি সেবার জন্য চললেও ফেরি দুটি মূলত ঠাসাঠাসি করা যাত্রী নিয়ে ঘাট ছেড়েছে।