উজানের ঢল নেমে আসছে সিলেট অঞ্চলে। এতে অঞ্চলের কুশিয়ারা নদীতে পানি বাড়ছে। নদীটির ডাইকে (নদী রক্ষা বাঁধ) ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি ঢুকে পড়ছে গ্রামগুলোয়। এর ফলে প্রায় ১০০ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে মৌলভীবাজারে মনু নদের পানি বাঁধ উপচে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল।
সুনামগঞ্জে সুরমা, যাদুকাটা, সোমেশ্বরী নদীর পানি কমেছে। গতকাল রোববার সকাল ৯টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সুনামগঞ্জে ২৫ মিলিমিটার ও ছাতকে ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়েছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’র শঙ্কা কেটে গেছে। তবে এবার উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার নদীতীরবর্তী মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে বেড়িবাঁধ ভাঙন-আতঙ্ক। তাঁরা জানান, ইতিমধ্যে কপোতাক্ষ নদ ও খোলপেটুয়া নদীর দুটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে কমপক্ষে ২১টি পয়েন্টের বেড়িবাঁধ।
সিলেটে এক দিনে (শনিবার সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা) রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার কারণে নদ-নদীর পানি আরও বেড়েছে। সুরমা-কুশিয়ারাসহ নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে। সারা রাতের বৃষ্টিপাতের কারণে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি আটকে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
মৌলভীবাজারে কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে জেলার সব কয়টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার মনু ও জুড়ী নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ধলাই ও কুশিয়ারা নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। অব্যাহত বৃষ্টির কারণে জুড়ী, বড়লেখা ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাওড়া নদীর বিভিন্ন অংশে পানির প্রবল চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে বালুভর্তি প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করছেন।
অব্যাহত বৃষ্টি এবং উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এতে সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে ওই চার জেলার বিভিন্ন অঞ্চল এরই মধ্যে ডুবে গেছে।
দিনভর মুষলধারে বৃষ্টিতে সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানি আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছে নগরের বাসিন্দারা। টানা বর্ষণে জেলার সব নদীর পানিও বাড়ছে। ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি ও সিলেটে এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে।
শরণখোলা গ্রামের জেলে খলিল হাওলাদার, বগী গ্রামের সোবাহান ও বকুলতলা গ্রামের লিটন মাতুব্বরসহ অনেকেই বলেন, “আমরা মহাজনের কাছ থেকে দাদন নিয়ে সারা বছর নদী-খালে মাছ ধরে জীবিকা চালাই। এখন তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকলে আমাদের চলবে কীভাবে?”
খুলনার কয়রায় কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আজ শুক্রবার ভোরে কয়রা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ১৩-১৪/২ নম্বর পোল্ডারের পাঁচটি স্থানে প্রায় ৩০০ মিটার বাঁধ নদীতে ধসে পড়ে।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় আয়মন নদীর ওপর নির্মিত গহুর মোল্লার ব্রিজ ধসে দুই পাড়ের হাজারো মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ব্রিজটি ধসে পড়ে।
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুরা জেলায় টানা বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে সেখান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল শেরপুরের নদীগুলোর পানির স্তর বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে জেলার ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ নতুন করে বন্যার আশঙ্কায় রয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানান, এখনো মুহুরি নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ভারতের উজানে বৃষ্টিপাত বাড়লে নদীর পানি হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে পরশুরাম উপজেলায় ২১টি এবং ফুলগাজী উপজেলায় ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে বিশেষ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ডিম ছাড়ছে মা মাছ। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা থেকে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরীয়া।
চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে সুপরিচিত হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুম শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিবাগত রাত দুইটার দিকে হালদা নদীর বিভিন্ন অংশে মা মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করে। হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া
সিলেটের গোয়াইনঘাটে জাফলং নদী থেকে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধ করে চা-বাগান রক্ষার দাবিতে কর্মবিরতি পালন ও মানববন্ধন করেছেন শ্রমিকেরা। জাফলং চা-বাগানবাসীর উদ্যোগে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগান-সংলগ্ন নদীর পাশে ও সেতুর ওপরে দুই ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন করা হয়।