Ajker Patrika

ব্যাটারির আয়ু ১০ গুণ বাড়াতে পারে সাধারণ লবণ: গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য জ্বালানির সংযোগে পানিভিত্তিক ব্যাটারিকে একটি নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ছবি: সায়েন্স ডেইলি
বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য জ্বালানির সংযোগে পানিভিত্তিক ব্যাটারিকে একটি নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ছবি: সায়েন্স ডেইলি

পানিভিত্তিক ব্যাটারির আয়ু বাড়াতে এক যুগান্তকারী পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন সৌদি আরবের কিং আবদুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (কেএইউএসটি) গবেষকেরা। গবেষণায় বলা হয়েছে, জিংক সালফেটের মতো সহজলভ্য ও সস্তা লবণ ব্যবহারে ব্যাটারির আয়ু ১০ গুণের বেশি বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।

গবেষক দল জানিয়েছে, পানিভিত্তিক ব্যাটারির কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো ‘ফ্রি ওয়াটার’ বা মুক্ত পানির অণু। এই পানির অণুগুলো অন্য কণার সঙ্গে দুর্বলভাবে যুক্ত থাকে এবং অপ্রয়োজনীয় রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায়। এতে অ্যানোড ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ব্যাটারির আয়ু কমে যায়।

কেএইউএসটির রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যান্ড স্টোরেজ টেকনোলজিস সেন্টারের চেয়ারম্যান ও গবেষণার প্রধান অধ্যাপক হুসাম আলশারিফ বলেন, ‘ব্যাটারির রসায়নে পানির গঠনের গুরুত্ব এত দিন উপেক্ষিত ছিল। আমাদের গবেষণায় এটি স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।’

গবেষণায় দেখা গেছে, সালফেট আয়ন ফ্রি ওয়াটারকে স্থিতিশীল করতে দেখা গেছে। এটি একটি ‘ওয়াটার গ্লু’–র (পানির আঠা) মতো কাজ করে বলে জানান গবেষকেরা। এতে মুক্ত পানির অণুর গতি ও আচরণ পরিবর্তিত হয় এবং ক্ষতিকর বিক্রিয়ার হার কমে যায়।

গবেষণার প্রধান সহকারী বিজ্ঞানী ইউনপেই ঝু বলেন, ‘সালফেট লবণ সস্তা, সহজলভ্য ও রাসায়নিকভাবে স্থিতিশীল। এটি ব্যবহার করায় আমাদের সমাধানটি বৈজ্ঞানিকভাবে কার্যকর ও অর্থনৈতিকভাবে টেকসই।’

জিংক সালফেটের ওপর অধিকাংশ পরীক্ষা চালানো হলেও গবেষকেরা জানিয়েছেন, অন্যান্য ধাতব অ্যানোডের ক্ষেত্রেও সালফেট একই রকম কার্যকারিতা দেখিয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে সব ধরনের পানিভিত্তিক ব্যাটারিতে সালফেট লবণ অন্তর্ভুক্ত করার পথ সুগম হতে পারে।

এই গবেষণায় কেএইউএসটির আরও চারজন অধ্যাপক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাঁরা হলেন অধ্যাপক ওমর মোহাম্মদ, ওমর বাকর, শি শিয়াং ঝাং ও মানি সারাথি।

বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য জ্বালানির সংযোগে পানিভিত্তিক ব্যাটারিকে একটি নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। গবেষকেরা বলছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে এই ব্যাটারির বাজারমূল্য ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। লিথিয়াম ব্যাটারির তুলনায় এগুলো নিরাপদ। এই ব্যাটারিগুলো সৌরবিদ্যুৎসহ বিভিন্ন পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির গ্রিডে সংযুক্তির জন্য উপযুক্ত।

গবেষণাটি বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্স অ্যাডভান্সেসে প্রকাশিত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত