Ajker Patrika

ইন্টেলের বাজারে ভাগ বসাতে আসছে এনভিডিয়া

ইন্টেলের বাজারে ভাগ বসাতে আসছে এনভিডিয়া

এআই চিপ তৈরিতে সফল এনভিডিয়া এবার এআরএমভিত্তিক কম্পিউটার চিপ তৈরিতে নজর দিয়েছে। এর ফলে দীর্ঘকাল বাজারে রাজত্ব করা ইন্টেল চাপের মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

এআরএম হোল্ডিংস কোম্পানির প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট তৈরি করবে এনভিডিয়া। 

উইন্ডোজ পিসির জন্য এআরএমভিত্তিক প্রসেসর তৈরিতে চিপ প্রস্তুতকারকদের সহায়তা দেবে মাইক্রোসফট। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এনভিডিয়া কাজ করছে। অ্যাপলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে মাইক্রোসফট এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। 

গবেষণা সংস্থা আইডিসির তৃতীয়-ত্রৈমাসিকের প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, কম্পিউটারের জন্য ম্যাক নিজস্ব এআইভিত্তিক চিপ তৈরি করার পর তিন বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। 

এছাড়া এআরএম প্রযুক্তি ব্যবহার করে পিসির জন্য চিপ তৈরি করবে অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইস (এএমডি) কোম্পানি। 

বিভিন্ন সূত্র বলেছে, ২০২৫ সাল নাগাদ পিসি চিপ বিক্রি শুরু করতে পারে এনভিডিয়া ও এমএমডি। কোয়ালকমের সঙ্গে অংশীদারত্ব করতে পারে এই দুই কোম্পানি। ২০১৬ সাল থেকে ল্যাপটপের জন্য এআরএমভিত্তিক চিপ তৈরি করছে কোয়ালকম। 

মাইক্রোসফটের নির্বাহী, উইন্ডোজ ও ডিভাইসের ভাইস প্রেসিডেন্ট পবন দাভুলুরি আজ এক ইভেন্টে যোগদান করবে। অ্যাপলের সাবেক ইঞ্জিনিয়ার এই ইভেন্টে অংশ নেবেন। ফ্ল্যাগশিপ চিপ নিয়ে কোয়ালকম এই ইভেন্টে বিস্তারিত তথ্য দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

এনভিডিয়ার পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এনভিডিয়া শেয়ার ৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেড়েছে ও ইন্টেলের শেয়ার ৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কমেছে। গতকাল এআরএমের শেয়ার হয়েছে ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ। 

এনভিডিয়ার মুখপাত্র কেন ব্রাউন, এএমডি মুখপাত্র ব্র্যান্ডি মেরিনা, আর্ম মুখপাত্র ক্রিস্টেন রে এবং মাইক্রোসফটের মুখপাত্র পিট উটন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এনভিডিয়া, এএমডি ও কোয়ালকমের প্রচেষ্টা একটি পিসি শিল্পকে নাড়া দিতে পারে। ইন্টেল এই বাজারে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। অ্যাপলের চিপও ইন্টেলকে চাপে ফেলে দিয়েছে। অ্যাপলের কাস্টম চিপগুলি ম্যাক কম্পিউটারকে আরও ভালো ব্যাটারি লাইফ ও দ্রুত কর্মক্ষমতা দিয়েছে। এটি বেশি শক্তি ব্যবহার করে এমন চিপগুলির প্রতিদ্বন্দ্বী। এআই প্রসেসিংসহ, অ্যাপলের আর্মভিত্তিক চিপগুলি কতটা দক্ষ তা মাইক্রোসফটের নির্বাহীরা পর্যবেক্ষণ করেছেন। নতুন চিপের মাধ্যমে এ রকম কর্মক্ষমতা অর্জনের আকাঙ্ক্ষা করছে মাইক্রোসফট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অস্ট্রেলিয়ায় কিশোরীদের সহিংস কাজ করিয়ে মজা নিচ্ছে অনলাইন অপরাধ চক্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজ করতে বাধ্য করছে অনলাইন অপরাধ চক্রগুলো। ছবি: জেমিনি
নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজ করতে বাধ্য করছে অনলাইন অপরাধ চক্রগুলো। ছবি: জেমিনি

অনলাইন অপরাধী চক্রের শিকারে পরিণত হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার কিশোরীরা। দেশটির পুলিশ সতর্ক করেছে, অনলাইন অপরাধ চক্রগুলো অস্ট্রেলিয়ার কিশোরীদের নিজেদের, ভাইবোনের বা পোষা প্রাণীর ওপর সহিংসতা এবং নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজ করতে বাধ্য করছে। পুলিশ একে ‘বিকৃত গেমিফিকেশন’ বলে অভিহিত করেছে।

এরইমধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় তিনজন এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশে আরও নয়জনকে এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশ (এএফপি) কমিশনার ক্রিসি ব্যারেট জানিয়েছেন, এই নতুন ও উদ্বেগজনক ‘লিঙ্গভিত্তিক’ সহিংসতার বিরুদ্ধে বৈশ্বিক কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করতে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। আজ বুধবার এক ভাষণে এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবেন তিনি।

টার্গেট করা এই কিশোরীদের দিয়ে কী ধরনের কাজ করানো হচ্ছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে কমিশনার ব্যারেট বলেছেন, অভিযুক্ত অপরাধীরা সহিংস উগ্রবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী এবং ‘মজা করার জন্য’ মানুষকে আঘাত করতে চায়।

এই অভিযুক্তদের বেশির ভাগই বিশের কোঠায় থাকা তরুণ। যাদের বেশিরভাগই পশ্চিমা পটভূমি থেকে এসেছে। তারা রোবলক্সের মতো গেমিং প্ল্যাটফর্ম বা ডিসকর্ড ও টেলিগ্রামের মতো মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে কিশোরী বা প্রাক-কিশোরী মেয়েদের টার্গেট করে।

কমিশনার ক্রিসি ব্যারেট এদের ‘ক্রাইমফ্লুয়েন্সার’ (crimefluencer) বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এই ব্যক্তিরা নানা ধরনের মতাদর্শে বিশ্বাসী, যার মধ্যে নিহিলিজম (জীবনের অর্থ অস্বীকার), স্যাডিজম (অন্যকে কষ্ট দিয়ে আনন্দ পাওয়া), নাৎসিবাদ ও শয়তানবাদ অন্তর্ভুক্ত।

ব্যারেট বলেন, এই দলগুলোর সংস্কৃতি অনেকটা মাল্টিপ্লেয়ার বা অনলাইন গেমিং সংস্কৃতির মতো। তারা বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে শিকার খোঁজে, অনুসরণ করে এবং ভুক্তভোগীদের টেনে আনে।। তারা হয়তো তাদের আচরণের পরিণতি পুরোপুরি বোঝে না।

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এই নেটওয়ার্কগুলোর সদস্যদের প্রেরণা অর্থনৈতিক নয়, যৌন তৃপ্তির জন্যও নয়, একেবারেই তাদের বিনোদনের জন্য, মজা করার জন্য কিংবা অনলাইনে জনপ্রিয় হওয়ার আকাঙ্ক্ষা থেকেই তারা এসব করছে।’

কমিশনার ব্যারেট জানান, শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়াতেই প্রায় ৬০ জন সন্দেহভাজন অপরাধীকে শনাক্ত করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া পুলিশ এখন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড ও কানাডাসহ ফাইভ আইজ (Five Eyes) জোটভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে মিলে এই গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ১৬ বছরের নিচের শিশুদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন সময়ে এই ঘোষণা এলো। তবে ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই নিষেধাজ্ঞা থেকে বাইরে থাকবে গেমিং ও মেসেজিং প্ল্যাটফর্মগুলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নেটওয়ার্ক ৫জি দেখালেই পৃথিবীর কোথাও ৫জি সেবা পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফোনে ৫জি দেখানো মানেই ৫জি নয়। ছবি: সংগৃহীত
ফোনে ৫জি দেখানো মানেই ৫জি নয়। ছবি: সংগৃহীত

মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে যখন ৫জি প্রতীকটি লেখা ওঠে, তখন ব্যবহারকারী ধরেই নেন যে তিনি অতি দ্রুত গতির ইন্টারনেট পরিষেবা পাচ্ছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল নেটওয়ার্কের এই লেখাটি গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করছে। পাঁচ বছর আগে ৫জি চালু হওয়ার সময় যে গতি, মসৃণ স্ট্রিমিং এবং তাৎক্ষণিক সংযোগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, বাস্তবে তা অনেক ক্ষেত্রেই অধরা।

প্রতীক মানেই গতি নয়

যুক্তরাজ্যের গবেষণা সংস্থা পলিসিট্র্যাকার-এর গবেষণা এবং বিবিসির ‘মর্নিং লাইভ’-এ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৪০ শতাংশ সময় একটি ফোনে যখন নেটওয়ার্ক বারে ৫জি প্রতীক দেখা যায়, তখন ফোনটি আসলে ৪জি সংযোগ ব্যবহার করে।

এর অর্থ হলো, গ্রাহকেরা উচ্চ মূল্যে ৫জি পরিষেবার বিল পরিশোধ করেও নীরবে ধীর গতির ৪জিতেই আটকে থাকছেন। পলিসিট্র্যাকারের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর প্রধান কারণ হলো মোবাইল নেটওয়ার্কগুলো ৫ জি-কে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করছে। তাঁদের মতে, স্ক্রিনের প্রতীকটি এলাকায় ৫জি সিগন্যালের ‘উপস্থিতি’ দেখায় মাত্র, কিন্তু ফোনটি প্রকৃতপক্ষে সক্রিয়ভাবে সেই দ্রুততম নেটওয়ার্কে যুক্ত কি না, তা নিশ্চিত করে না।

নীতিগতভাবে, ৫জি-এর সর্বোচ্চ তাত্ত্বিক ডাউনলোড গতি প্রতি সেকেন্ডে ২০ হাজার মেগাবিটস (এমবিপিএস) পর্যন্ত হতে পারে। এই গতিতে এক মিনিটেরও কম সময়ে ১৮টি এইচডি চলচ্চিত্র ডাউনলোড করা সম্ভব। তবে গ্রাহকদের জন্য এই গতি বহুলাংশে কম দেখা গেছে।

মোবাইল অপারেটর এবং সরকারের বিপুল বিনিয়োগ সত্ত্বেও,৫জি পরিষেবা বেশ কিছু বাধার সম্মুখীন হয়েছে। এর মূল কারণ হলো,৫জি প্রযুক্তিতে দ্রুত গতি বজায় রাখতে তুলনামূলকভাবে কম দূরত্বে অনেক বেশি টাওয়ার (mast) স্থাপনের প্রয়োজন হয়।

পলিসিট্র্যাকারের মার্টিন সিমনস জানান, ফোনে ৫জি লোগো দেখানো সত্ত্বেও, ডেটা এখনও পুরোনো ৪জি অবকাঠামো ব্যবহার করে স্থানান্তরিত হচ্ছে। এর ফলে গ্রাহকেরা যেখানে অতি-দ্রুত নেটওয়ার্কের প্রত্যাশা করেন, সেখানেও ধীর ডাউনলোড বা বাফারিংয়ের সম্মুখীন হতে পারেন।

এই সমস্যার সমাধানে কিছু মোবাইল নেটওয়ার্ক এখন ‘স্ট্যান্ডালোন ৫ জি’ নামে একটি নতুন পরিষেবা চালু করছে। তারা দাবি করছে, এই পরিষেবাটি সব সময় সত্যিকারের ৫জি গতি সরবরাহ করবে।

তবে এই সুবিধা পেতে হলে গ্রাহকদের জন্য একটি বিশেষ ফোন প্ল্যান কিনতে হবে, যার খরচ সাধারণত বেশি হয়। কনজিউমার বিশেষজ্ঞ জেসপার গ্রিগসন বিবিসিকে বলেছেন, এই স্ট্যান্ডালোন ৫জি অনেকের জন্য ‘খুব বেশি খরুচে নয়’ কারণ এর চুক্তিগুলো ব্যয়বহুল এবং বড় শহরগুলোতে এখনও কভারেজ অসম্পূর্ণ। যদিও ট্রেন স্টেশন বা ব্যস্ত এলাকায় ভালো পরিষেবা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রাহকদের স্বচ্ছতা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। আপনি একটি জিনিস পাওয়ার আশা করছেন, কিন্তু পাচ্ছেন অন্য কিছু। এখানে নির্ভুলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিত্বকারী বাণিজ্য সংস্থা মোবাইল ইউকে অবশ্য নিশ্চিত করেছে,৫জি আইকন মানেই সক্রিয় ৫জি সংযোগ নয়। এটি শুধু ব্যবহারকারী ৫জি এনাবল এলাকায় আছেন তা নির্দেশ করে। তারা জানায়, নেটওয়ার্কগুলো রিয়েল-টাইম সিগন্যাল শক্তির ওপর ভিত্তি করে গ্রাহকদের গতিশীলভাবে ৪জি বা ৫ জি-এর মধ্যে সেরা সংযোগে পরিচালিত করে।

গ্রাহকেরা কী করবেন?

যদি অপারেটর ৫জি নেটওয়ার্ক দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু আপনি নিয়মিত এবং নির্ভরযোগ্য ৫জি সংকেত পাচ্ছেন না বলে মনে করেন, তাহলে কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা:

গতি পরীক্ষা করুন: একটি অনলাইন স্পিড টেস্ট ব্যবহার করে আসল ডাউনলোড এবং আপলোড রেট দেখুন।

কভারেজ যাচাই করুন: আপনার এলাকায় কোন নেটওয়ার্ক সেরা ৪জি বা ৫জি সংকেত দিচ্ছে, তা জানতে একটি কভারেজ চেকার ব্যবহার করুন।

প্রোভাইডারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন: যদি আপনি কভারেজ নিয়ে অসন্তুষ্ট হন, তবে আপনার বর্তমান পরিষেবা প্রদানকারীর সাথে যোগাযোগ করে সমস্যাটি ব্যাখ্যা করুন এবং তাদের পরামর্শ নিন।

প্রোভাইডার পরিবর্তন করুন: একটি অপারেটরে আবদ্ধ না থেকে, ভালো কভারেজ দেয় এমন অন্য একটি প্রোভাইডারে সুইচ করা যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৪ ট্রিলিয়ন ডলার স্পর্শ করল অ্যাপলের বাজারমূল্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সিএনএন
ছবি: সিএনএন

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাপল’ নতুন এক মাইলফলক অতিক্রম করেছে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) কোম্পানিটির বাজারমূল্য ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৪ হাজার বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে অ্যাপল ‘এনভিডিয়া’ ও ‘মাইক্রোসফট’-এর পাশে জায়গা করে নিয়েছে—এই দুই প্রযুক্তি জায়ান্টও চলতি বছরই ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারমূল্যে পৌঁছেছে।

সিএনএন জানিয়েছে, অ্যাপলের শেয়ারের দাম মঙ্গলবার ০.১ শতাংশ বেড়েছে, যা সাম্প্রতিক সময়ের ধারাবাহিক উত্থানের অংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন আইফোন-১৭ এর বিপুল বিক্রি, বিশেষ করে চীনের বাজারে, এই উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

এটি কোম্পানিটির বছরের শুরুর পরিস্থিতির সম্পূর্ণ উল্টো। তখন শেয়ারবাজারে অ্যাপলের অবস্থান ছিল নড়বড়ে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় পিছিয়ে পড়া এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের চাপে কোম্পানিটি বিপাকে পড়েছিল। এভাবে গত এপ্রিলে মাত্র এক দিনেই ৩১০ বিলিয়ন ডলারের বাজারমূল্য হারিয়েছিল অ্যাপল।

তবে এই ঘুরে দাঁড়ানো প্রমাণ করেছে, এখনো আইফোনই অ্যাপলের প্রধান শক্তি। কোম্পানিটি এআই প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়লেও এর পণ্য ও বিক্রি মার্কিন শেয়ারবাজারে আস্থা ফিরিয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত অ্যাপলের শেয়ারমূল্য বেড়েছে মাত্র ৭ শতাংশ, যা ২০২৪ সালের ৩০.৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় অনেক কম এবং বাজারের গড় প্রবৃদ্ধির ১৭ শতাংশ নিচে।

প্রযুক্তি খাতে ২০২৫ সালকে ‘এআই উন্মাদনার বছর’ বলা হচ্ছে। এআই–ভিত্তিক কোম্পানিগুলোর শেয়ারের রেকর্ড ভাঙা উত্থানের মাঝেই অ্যাপল নতুন রেকর্ডে পৌঁছেছে। চার ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারমূল্যে পৌঁছানো অন্য দুটি কোম্পানির মধ্যে এনভিডিয়া এআই চিপ তৈরি করে এবং মাইক্রোসফট ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের নেতৃত্বে রয়েছে। অ্যাপলের আগে ওই দুই প্রতিষ্ঠানের ৪ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছানো ইঙ্গিত দিচ্ছে, ওয়াল স্ট্রিটে এখন এআই–ই সবচেয়ে বড় চালিকাশক্তি।

অ্যাপল প্রথমবার ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারমূল্যে পৌঁছায় ২০১৮ সালের আগস্টে। এরপর ২০২০ সালে ২ ট্রিলিয়ন, একই বছরে ৩ ট্রিলিয়ন এবং অবশেষে ২০২৫ সালে ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের এই নতুন ইতিহাস গড়েছে।

ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক ড্যান আইভস এক নোটে লিখেছেন, ‘এটি স্পষ্ট যে আইফোন-১৭ এর মাধ্যমে অ্যাপলের নতুন সাফল্য এসেছে। ওয়াল স্ট্রিট এখন কোম্পানিটির নতুন এআই কৌশল ঘোষণার অপেক্ষা করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘উইকিপিডিয়া পক্ষপাতদুষ্ট’, গ্রোকিপিডিয়া আনলেন ইলন মাস্ক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
‘উইকিপিডিয়া পক্ষপাতদুষ্ট’, গ্রোকিপিডিয়া আনলেন ইলন মাস্ক

উইকিপিডিয়ার বিকল্প হিসেবে নতুন অনলাইন মুক্ত জ্ঞানকোষ ‘গ্রোকিপিডিয়া’ (Grokipedia) চালু করেছেন টেক মোগল ইলন মাস্ক। স্থানীয় সময় সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে ওয়েবসাইটটি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের এক পোস্টে মাস্ক নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এক মাস আগে মাস্কের প্রতিষ্ঠান ‘এক্সএআই’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দিয়ে জানিয়েছিল, তারা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে, যা হবে ‘উইকিপিডিয়ার চেয়ে বহুগুণ উন্নত’। এর ঠিক এক মাস পর সেটি চালু করলেন মাস্ক।

মাস্ক তখন বলেছিলেন, ‘আমরা এক্সএআই-এ গ্রোকিপিডিয়া তৈরি করছি। এটি উইকিপিডিয়ার চেয়ে বহুলাংশে উন্নত হবে। সত্যি বলতে, মহাবিশ্বকে বোঝার এক্সএআই-এর লক্ষ্যের দিকে এটি একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।’

স্থানীয় সময় সোমবার Grokipedia.com চালুর পর কিছু ব্যবহারকারী সাইটে প্রবেশে সমস্যার মুখে পড়েছেন বলে জানায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট। তবে বিজনেস ইনসাইডার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটের দিকে সাইটটিতে প্রবেশ করে মাস্কের নামে একটি নিবন্ধ দেখতে পায়।

সাইটটির ইন্টারফেস কালো। এতে একটি সার্চ বার এবং উইকিপিডিয়া ও চ্যাটজিপিটির মতো ফন্ট স্টাইল দেখা যায়। হোমপেজে লেখা আছে—‘Grokipedia version v0.1’ এবং এতে ইতিমধ্যে ৮ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি নিবন্ধ যুক্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

‘গ্রোকিপিডিয়া’ মাস্কের এমন একটি প্রকল্প, যার মাধ্যমে তিনি তথাকথিত ‘রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট মূলধারার প্ল্যাটফর্মগুলোর’ বিকল্প তৈরি করতে চান।

একসময় উইকিপিডিয়ার প্রশংসা করলেও গত কয়েক বছরে মাস্ক এই প্ল্যাটফর্মটিকে ‘উদারপন্থী পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে অভিযুক্ত করেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এক্সের এক পোস্টে তিনি তাঁর অনুসারীদের আহ্বান জানান—‘নিরপেক্ষে সা হওয়া অবধি উইকিপিডিয়ার অর্থায়ন বন্ধ করুন।’

২০১৯ সালে তিনি নিজের উইকিপিডিয়া পেজ নিয়েও সমালোচনা করে লিখেছিলেন, ‘এটি একপ্রকার যুদ্ধক্ষেত্র। এখানে প্রতি মুহূর্তে অগণিত ব্যবহারকারী সম্পাদনার কাজ করছে।’ তিনি মজার ছলে আরও লিখেছিলেন, আমার পেজ থেকে ‘ইনভেস্টর’ শব্দটা কেউ দয়া করে মুছে দাও, আমি আসলে বিনিয়োগ তেমন করি না।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে তিনি এক পোস্টে বলেন, ‘উইকিপিডিয়ার বামপন্থী পক্ষপাত একেবারে নগণ্য নয়।’

এদিকে, উইকিপিডিয়ার সহ–প্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলস ও মাস্কের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই অনলাইন দ্বন্দ্ব চলছে। ২০২৩ সালের মে মাসে ওয়েলস তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে টুইটারে (বর্তমানে এক্স) কনটেন্ট সীমিত করার ঘটনায় মাস্কের সমালোচনা করেন। একই বছরের নভেম্বরে টুইটারের নাম পরিবর্তন করে ‘এক্স’ করার পর ওয়েলস মন্তব্য করেছিলেন, ‘এক্স এখন ট্রল ও উন্মাদে ভরে গেছে।’

এর জবাবে মাস্ক লিখেছিলেন, যদি উইকিপিডিয়া তার নাম ‘ডিকিপিডিয়া’ রাখে, তবে তিনি ১ বিলিয়ন ডলার দান করবেন।

সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জিমি ওয়েলস বলেন, তিনি গ্রোকিপিডিয়ার ওপর বেশি ভরসা রাখছেন না, কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখনো যথেষ্ট নির্ভুল নয়—‘এতে অনেক ভুল থাকবে।’

গ্রোকিপিডিয়ার মূল ভিত্তি গ্রোক, যা মাস্কের এক্সএআই-এর তৈরি একটি এআই চ্যাটবট। এটি অতীতে বেশ কয়েকটি বিতর্কিত ভুল তথ্য প্রচার করেছে। একবার এটি দক্ষিণ আফ্রিকার ‘শ্বেতাঙ্গ গণহত্যা’ সম্পর্কিত একটি ভিত্তিহীন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচার করে সমালোচনার মুখে পড়ে।

তবে মাস্ক ও তাঁর টিম জানিয়েছে, তারা এ ধরনের ভুল দূর করতে কাজ করছেন। গত জুন মাসে মাস্ক এক্সের এক পোস্টে বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য অপূর্ণ তথ্য যোগ করে ও ভুল তথ্য মুছে ফেলে ‘পৃথিবীর তথ্যভান্ডারের সম্পূর্ণ পুনর্লিখন’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত