Ajker Patrika

পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তির কণ্ঠ ফিরিয়ে আনল এআই

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ১৭ জুন ২০২৫, ০৯: ০১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

একসময় যিনি মুখে একটি কথাও বলতে পারতেন না, এখন তিনি অন্য সবার মতো কথা বলতে পারছেন, এমনকি গানও গাইতে পারছেন। এই অসাধ্যকে সম্ভব করেছে এক নতুন প্রযুক্তি।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ডেভিসের একদল গবেষক এই অনন্য প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। তাঁরা বলছেন, এটি বিশ্বে প্রথম এমন একটি ব্যবস্থা, যা মাত্র ২৫ মিলিসেকেন্ডে মানুষের মস্তিষ্কের সংকেত পড়ে তাৎক্ষণিকভাবে কথা তৈরি করতে পারে।

হারিয়ে যাওয়া কণ্ঠ ফিরে পেলেন রোগী

যে ব্যক্তির ওপর এই প্রযুক্তির প্রয়োগ হয়েছে, তিনি অ্যামিওট্রফিক ল্যাটারাল স্কলেরোসিস নামের একটি জটিল স্নায়বিক রোগে আক্রান্ত। এই রোগে ধীরে ধীরে পেশি দুর্বল হয়ে যায় এবং একসময় পুরোপুরি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন রোগীরা। স্বাভাবিকভাবে কথা বলার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেন তাঁরা।

তবে এই গবেষণার রোগী নতুন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আবার মানুষের মতো করেই কথা বলতে পারছেন। এমনকি তিনি বলছেন, ‘এই প্রযুক্তি ব্যবহারে আমার মনে হয় যেন নিজের কণ্ঠেই কথা বলছি। এটা আমাকে সত্যিই আনন্দ দেয়।’

প্রযুক্তিটি যেভাবে কাজ করে

গবেষণায় রোগীর মস্তিষ্কের ভাষা ও মুখের পেশি নিয়ন্ত্রণকারী অংশে ২৫৬টি ইলেকট্রোড স্থাপন করা হয়। এরপর তাঁকে বিভিন্ন বাক্য স্ক্রিনে দেখানো হয় এবং বলা হয় যেন সেগুলো মনে মনে উচ্চারণের চেষ্টা করেন। যদিও মুখ দিয়ে তিনি কিছু বলতে পারেন না, তবু তাঁর মস্তিষ্কে তখনো কথা বলার সংকেত তৈরি হয়। এই সংকেতগুলো গবেষকেরা রেকর্ড করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্লেষণ করেন। এআই মডেলটি বুঝে ফেলে, তিনি কী বলতে চাচ্ছেন এবং সেই অনুযায়ী শব্দ তৈরি করে। এমনকি বাক্যের টোন ও জোরের জায়গাগুলোও বুঝে নেয় প্রযুক্তিটি। গবেষক সের্গেই স্তাভিস্কি বলেন, ‘এই প্রযুক্তি শুধু শব্দ তৈরি করে না, বরং মানুষ যেভাবে কথা বলে, তাঁর স্বাভাবিক ভঙ্গিমা, উচ্চারণের ওঠানামা—সবকিছুর অনুকরণ করে। আর এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য।’

আগের কণ্ঠ ফিরে পেতে ‘ভয়েস ক্লোনিং’

আরও চমকপ্রদ বিষয় হলো, গবেষকেরা ওই ব্যক্তির আগে রেকর্ড করা কণ্ঠ ব্যবহার করে ভয়েস ক্লোনিং প্রযুক্তির মাধ্যমে তাঁর পুরোনো কণ্ঠের মতোই কণ্ঠস্বর তৈরি করেছেন। ফলে যন্ত্রের মাধ্যমে বের হওয়া কণ্ঠ বাস্তবের মতোই মনে হয়।

এই প্রযুক্তির মাধ্যমে যাঁরা কথার জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন, তাঁদের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিশ্বব্যাপী এখন এই প্রযুক্তি আরও সহজলভ্য এবং উন্নত করার চেষ্টা চলছে। হয়তো সামনে এমন এক সময় আসবে, যখন মস্তিষ্ক দিয়েই আমরা মোবাইল ফোনে কথা বলব, গান গাইব। এ সবকিছুই হবে চিন্তা থেকে।

সূত্র: নিউ সায়েন্টিস্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নেতানিয়াহু বাংকারে লুকিয়ে, ট্রাম্পের একটি ফোনকলই যথেষ্ট: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মেয়াদের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় চালুর পরিকল্পনা সরকারের

ঐকমত্য কমিশনের মঙ্গলবারের সংলাপ ‘বয়কট’ করল জামায়াত

বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধে আইন পরিবর্তন করায় জাতিসংঘের উদ্বেগ

ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করা সম্ভব নয়, স্বীকার করল ইসরায়েল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত