Ajker Patrika

মেটার সঙ্গে চুক্তির খবরে স্কেল এআইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছে গুগল

অনলাইন ডেস্ক
মেটার সঙ্গে চুক্তির খবরে নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে গুগলের মধ্যে। ছবি: পায়মিনটস ডট কম
মেটার সঙ্গে চুক্তির খবরে নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে গুগলের মধ্যে। ছবি: পায়মিনটস ডট কম

বিশ্বের বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিন প্রতিষ্ঠান গুগল তাদের দীর্ঘদিনের ডেটা লেবেলিং পার্টনার স্কেল এআই-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে যাচ্ছে। পাঁচটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিদ্বন্দ্বী মেটা স্কেল এআইয়ের ৪৯ শতাংশ মালিকানা নেওয়ার খবর প্রকাশের পর কোম্পানিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে গুগলের মধ্যে। হয়েছে, গুগল এরই মধ্যে স্কেল এআই-এর প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যান্য কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।

২০২৪ সালে গুগল স্কেল এআই-এর সেবা বাবদ প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে। চলতি বছর এই খরচ ২০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়ানোর কথা ছিল। তবে এখন সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসছে গুগল।

স্কেল এআই-এর ব্যবসা মূলত কিছু বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল। তাদের রাজস্বের বড় অংশ আসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ‘হিউম্যান লেবেলড’ প্রশিক্ষণ ডেটা সরবরাহের মাধ্যমে।

মেটার সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে স্কেল এআই–এর বাজারমূল্য হবে ২৯ বিলিয়ন ডলার, যেখানে আগে কোম্পানিটির মূল্য ছিল ১৪ বিলিয়ন ডলার। এই বিনিয়োগের ফলে স্কেল এআই-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আলেক্সান্ডার ওয়াং মেটায় যোগ দিচ্ছেন।

তবে গুগল একমাত্র প্রতিষ্ঠান নয়, যারা স্কেল এআই থেকে সরে যাচ্ছে। সূত্র জানিয়েছে, মাইক্রোসফট, ইলন মাস্কের কোম্পানি এক্সএআই এবং ওপেনএআই-ও স্কেল এআই-এর সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, মেটার মালিকানার কারণে স্কেল এআই-এর মাধ্যমে তথ্য শেয়ার করলে প্রতিযোগীদের গোপন গবেষণা ও প্রযুক্তিগত রোডম্যাপ ফাঁস হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, এসব কোম্পানি তাদের উন্নয়নাধীন প্রোটোটাইপ ও স্পর্শকাতর তথ্য স্কেল এআই-এর মানব কর্মীদের কাছে পাঠিয়ে থাকে লেবেলিংয়ের জন্য।

অন্যদিকে, স্কেল এআই-এর প্রতিদ্বন্দ্বীরা এই পরিস্থিতিকে নিজেদের জন্য সুযোগ হিসেবে দেখছে।

স্কেল এআই-এর প্রতিদ্বন্দ্বী টুরিং-এর সিইও জনাথন সিদ্ধার্থ বলেন, ‘মেটা-স্কেল চুক্তি একটি মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছে। নিরপেক্ষতা এখন বিলাসিতা নয়, বরং অপরিহার্য।’

অন্য একটি প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি লেবেলবক্স-এর প্রধান নির্বাহী মনু শর্মা জানান, ‘চলতি বছরের শেষ নাগাদ আমাদের রাজস্ব কয়েকশ মিলিয়ন ডলার বাড়তে পারে স্কেল এআই-এর গ্রাহকেরা আমাদের কাছে চলে আসায়।’

মার্কর নামের আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘এখন অনেক এআই কোম্পানি নিজস্ব ডেটা লেবেলিং টিম গড়ে তুলতে চাইছে, যাতে তাদের স্পর্শকাতর তথ্য নিজস্ব নিয়ন্ত্রণেই থাকে।’

উল্লেখ্য, স্কেল এআই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০১৬ সালে। এনভিডিয়া, অ্যামাজন ও মেটা সমর্থিত এই স্টার্টআপটির সুখ্যাতি রয়েছে ডেটা লেবেলিং-এর জন্য। এছাড়া খুচরা বিক্রেতা, স্বয়ংক্রিয় গাড়ি নির্মাতা এবং মার্কিন সরকারের জন্য ডেটা লেবেলিংয়ের কাজ করে। এআই প্রযুক্তি ও মেশিং লার্নিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ এক প্রক্রিয়া হচ্ছে ডেটা লেবেলিং।

ডেটা লেবেলিং হচ্ছে—অগোছালো, এলোমেলো ডেটাকে চিহ্নিত করে সেগুলোকে গুছিয়ে বিভিন্ন অর্থপূর্ণ নামে (বা লেবেলে) সেগুলোকে শ্রেণীবদ্ধ (ক্যাটাগোরাইজ) করা। বিভিন্ন এআই মডেলের প্রশিক্ষণে কনটেক্সট বা প্রেক্ষাপট প্রদান করা হয় ডেটা লেবেলিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।

তবে জেনারেটিভ এআই মডেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোই স্কেল এআই-এর প্রধান আয় উৎস ছিল। এখন সেই জায়গা থেকেই আস্থা হারাচ্ছে গ্রাহকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত