Ajker Patrika

১০টির বেশি সিমকার্ড থাকলে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
১০টির বেশি সিমকার্ড থাকলে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশ

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) একজন ব্যক্তির নামে মোবাইল সিমের সর্বোচ্চ সংখ্যা ১০টিতে নামিয়ে আনার সময়সীমা ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বেধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে থাকা ১০টির অধিক সিম অনিবন্ধন না করলে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।

গত ৩০ জুন টেলিকম খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভার কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রথম ধাপে আগামী ১৫ জুলাই থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে নিবন্ধিত সিমসংখ্যা দশটির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। যেসব গ্রাহকের দশের অধিক সিম আছে, তাদের তালিকা রেজিস্টার্ড সিম নম্বরসহ মোবাইল অপারেটরদের জানিয়ে দেওয়া হবে। অপারেটরেরা প্রাপ্ত তালিকা অনুযায়ী গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার সিমকার্ড সংখ্যা ১৫ অক্টোবরের মধ্যে দশটিতে নামিয়ে আনার বিষয়ে অনুরোধ জানাবে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটি করে এসএমএস পাঠিয়ে সিমকার্ড সংখ্যা কমিয়ে আনার বিষয়ে গ্রাহকদের অনুরোধ জানাবে। অপারেটররা এসএমএস ও তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্রাহককে অবহিত করতে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করবে।

এ ছাড়া বিটিআরসি বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক বা অনলাইন মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে গ্রাহককে অবহিত করবে। গ্রাহকেরা *১৬০০১# এ ডায়াল করে তার জাতীয় পরিচয়পত্রে মোট কতটি সিম নিবন্ধিত আছে তা জানতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যোগাযোগ করে তার অপ্রয়োজনীয় সিম ডি-রেজিস্টার ট্রান্সফার অব ওনার্সিপ (টিওএফ) করবে। এ সব কার্যক্রম তিন মাস অর্থাৎ ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।

বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়, প্রথম ধাপ শেষে অর্থাৎ ১৬ অক্টোবর থেকে যে সকল গ্রাহকের ১০ এর অধিক সিম থাকবে, সেগুলো গুরুত্ব বিবেচনায় তালিকা তৈরি করে বন্ধ করা হবে। এ ক্ষেত্রে সিবিভিএমপি সলিউশন (সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্লাটফরম) এর ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান সে সকল গ্রাহকের তালিকা প্রস্তুত করে গ্রাহকদের অনুকূলে রেজিস্টার্ড সিম নম্বর স্ব-স্ব অপারেটরকে জানিয়ে দেবে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় সিম নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে একজন গ্রাহকের সিমগুলো সর্বোচ্চ রাজস্ব আহরণের ভিত্তিতে ক্রমানুসারে সাজানো হবে।

প্রতিটি সিম হতে গত ছয় মাসে আহরিত মোট রাজস্ব বিবেচনায় নেওয়া হবে। একজন গ্রাহকের প্রতি ছয় মাসে আহরিত সর্বোচ্চ রাজস্বের সিমটি তালিকার প্রথমে এবং সর্বনিম্ন রাজস্বের সিমটি তালিকার শেষে থাকবে। এ ছাড়া এমএফএস (মোবাইল ফিন্যানশিইয়াল সার্ভিস) একাউন্ট থাকা বা অন্য কোনো নির্ণায়কের ভিত্তিতে সিম গুরুত্বপুর্ণ প্রতীয়মান হলে তা তালিকায় উল্লেখ থাকবে। ১৬ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এই প্রক্রিয়া। এই ধাপ শেষে ২৪ অক্টোবর থেকে সিবিভিএমপি এর ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের জন্য ১০টি সিমের তালিকা তৈরি করবে।

একই সঙ্গে ১০ টির বেশি অগুরুত্বপূর্ণ সিমের তালিকা মোবাইল অপারেটরদের পাঠাবে। এরপর ১৫ নভেম্বরের মধ্যে অপারেটররা ব্যাচ আইডি গ্রহণের মাধ্যমে অগুরুত্বপূর্ণ সিমগুলো ডিরেজিস্ট্রার করবে। ২০ নভেম্বরের মধ্যে এসব কার্যক্রমের চূড়ান্ত প্রতিবেদন বিটিআরসিতে জমা দিতে হবে।

বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দেশের মোট সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার। আর বিক্রি হওয়া সিমের সংখ্যা ১৮ কোটি ৬২ লাখ। পাঁচটি বা তার কম সিম রয়েছে ৮০ দশমিক ৩২ শতাংশ গ্রাহকের। পাঁচ থেকে ১০টি পর্যন্ত সিম রয়েছে ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ গ্রাহকের। ১১ থেকে ১৫টি পর্যন্ত সিম রয়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ গ্রাহকের। বিটিআরসির সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে ১০ টির অতিরিক্ত সিম আছে, এমন ২৬ লাখ গ্রাহকের ৬৭ লাখ সিম বন্ধ হয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত