Ajker Patrika

চীনের জন্য ৩ লাখ চিপ পাঠাবে মার্কিন এনভিডিয়া, বানাবে তাইওয়ানের টিএসএমসি

অনলাইন ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে চীনের বাজারের জন্য বিশেষভাবে এইচ২০ চিপসেটটি তৈরি করেছিল এনভিডিয়া। ছবি: এনভিডিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে চীনের বাজারের জন্য বিশেষভাবে এইচ২০ চিপসেটটি তৈরি করেছিল এনভিডিয়া। ছবি: এনভিডিয়া

চীনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চিপসেটের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এই চাহিদা মেটাতে তাইওয়ানের চিপ প্রস্তুতকারণ প্রতিষ্ঠান টিএসএমসি–কে ৩ লাখ এইচ২০ চিপসেটের অর্ডার দিয়েছে এনভিডিয়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

এর মধ্যে এক সূত্র জানিয়েছেন, সংরক্ষিত চিপের মজুতের ওপর নির্ভর না করে নতুন চাহিদা মেটাতে এনভিডিয়া নতুনভাবে উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছে।

চলতি মাসেই চীনকে আবার এইচ২০ গ্রাফিকস চিপ বিক্রির অনুমতি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। গত এপ্রিলে এই চিপের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এই নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য ছিল—চীনের হাতে উন্নত এআই চিপ যেন না পৌঁছায় তা নিশ্চিত করা।

২০২৩ সালের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে চীনের বাজারের জন্য বিশেষভাবে এইচ২০ চিপসেটটি তৈরি করেছিল এনভিডিয়া। এইচ২০ চিপের কম্পিউটিং ক্ষমতা এইচ১০০ বা নতুন ব্ল্যাকওয়েল সিরিজের মতো শক্তিশালী না। চীনের বাইরের বাজারে বিক্রি হচ্ছে এইচ১০০ বা নতুন ব্ল্যাকওয়েল সিরিজের চিপগুলো।

সূত্র বলছে, এই নতুন ৩ লাখ ইউনিটের অর্ডার ছাড়াও এনভিডিয়ার হাতে বর্তমানে প্রায় ৬ থেকে ৭ লাখ এইচ২০ চিপসেটের মজুত রয়েছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেমিঅ্যানালাইসিস অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রায় ১০ লাখ এইচ২০ চিপসেট বিক্রি করেছে এনভিডিয়া।

চলতি মাসে বেইজিং সফরে গিয়ে এনভিডিয়া প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াং জানিয়েছিলেন, এই এইচ২০ চিপের অর্ডার পরিমাণই নির্ধারণ করবে কোম্পানি পুনরায় উৎপাদন শুরু করবে কিনা। তিনি জানান, উৎপাদন শুরু হলে সম্পূর্ণ সরবরাহ শৃঙ্খল পুনঃগঠনে প্রায় ৯ মাস সময় লাগবে।

হুয়াংয়ের চীন সফরের পর এনভিডিয়া তাদের গ্রাহকদের জানিয়েছে, তাদের হাতে সীমিত পরিমাণে এইচ২০ চিপ রয়েছে এবং তারা এখনই ওয়েফার উৎপাদন পুনরায় শুরু করার পরিকল্পনা করছে না।

এইচ২০ চিপ চীনে পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের রপ্তানি লাইসেন্স প্রয়োজন এবং জুলাইয়ের মাঝামাঝি এনভিডিয়া জানায়, কর্তৃপক্ষ তাদের শিগগিরই লাইসেন্স প্রদান করবে বলে আশ্বস্ত করেছে। তবে তিনটি সূত্র জানিয়েছে, এখনো যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ সেই লাইসেন্স অনুমোদন করেনি।

এনভিডিয়া এবং টিএসএমসি উভয় প্রতিষ্ঠানই এই অর্ডার এবং লাইসেন্স সংক্রান্ত বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগও কোনো মন্তব্য করেনি।

সূত্র জানিয়েছে, যারা চীনে এইচ২০ চিপ কিনতে আগ্রহী, তাদের এখন ক্রয়সংক্রান্ত নতুন ডকুমেন্ট ও অর্ডার পূর্বাভাস জমা দিতে বলছে এনভিডিয়া।

এদিকে, গতকাল সোমবার স্টকহোমে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বাণিজ্য আলোচনা হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, এইচ২০ বিক্রির অনুমতি পুনরায় চালুর সিদ্ধান্তটি চীনের সঙ্গে একটি দর-কষাকষির অংশ। কারণ দুর্লভ খনিজ উপাদানের রপ্তানি সীমিত করেছে চীন। এসব উপাদান যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিল্পের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ

তবে এই সিদ্ধান্ত মার্কিন আইনপ্রণেতাদের পক্ষ থেকে দ্বিদলীয়ভাবে সমালোচনার মুখে পড়ে। এইচ২০ চিপ চীনে প্রবেশ করলে এআই প্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র অগ্রাধিকার হারাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

গত এপ্রিলের নিষেধাজ্ঞার আগে, টেনসেন্ট, বাইটড্যান্স, এবং আলিবাবাসহ বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো ডিপসিকের সাশ্রয়ী এআই মডেল এবং নিজেদের তৈরি মডেল চালাতে বিপুল পরিমাণ এইচ২০ চিপ অর্ডার করেছিল।

চীনে নিষিদ্ধ অন্যান্য চিপসেটের চাহিদাও এখন তুঙ্গে। চোরাই পথে আনা এইচ১০০ চিপেরও মেরামত চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে যা চীনে এনভিডিয়ার জনপ্রিয়তা বজায় রাখার ইঙ্গিত দেয়।

এই নিষেধাজ্ঞার পর এনভিডিয়া জানায়, কোম্পানিকে ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য মজুত বাতিল করতে হয়েছে। এনভিডিয়া প্রধান নির্বাহী হুয়াং জানান, এতে কোম্পানির প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার সম্ভাব্য বিক্রি হাতছাড়া হয়েছে।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত