প্রমিতি কিবরিয়া ইসলাম, ঢাকা

সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ডিজিটাল নির্মাতা বলা যায়। নিজের দক্ষতা অনুসারে তাঁরা নানা বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করেন। এটি এখন শুধু শখের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এর মাধ্যমে আয়ও করা যায়।
আগ্রহের বিষয় নিয়ে ইনফ্লুয়েন্সাররা কনটেন্ট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। ফলোয়ারদের সঙ্গে ডিজিটাল সম্পর্ক তৈরি করেন তাঁরা এবং প্রিয় ব্র্যান্ডের সঙ্গেও কাজ করেন। নিজের বাসায় থেকেই কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। তাই আয়ের জন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
ইনফ্লুয়েন্সার কি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সাররা একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে নিজেদের বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং এক বা একাধিক প্ল্যাটফরমে দর্শক বা ফলোয়ারদের সঙ্গে তাঁদের জ্ঞান ভাগ করে নেন।
ইনফ্লুয়েন্সাররা তাঁদের দক্ষতা প্রতিষ্ঠা এবং ফলোয়ারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে নিয়মিত কনটেন্ট তৈরি ও শেয়ার করেন। নিয়মিতভাবে শ্রোতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ও অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ কনটেন্ট শেয়ার করার মাধ্যমে নির্মাতারা প্রায়ই তাঁদের ফলোয়ারদের একটি নির্দিষ্ট পণ্য কেনার করার জন্য ‘প্রভাবিত’ করতে পারেন।
ব্র্যান্ডগুলো পণ্য বা সেবার প্রচারণার জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে অংশীদারত্ব করে। ফলে কোম্পানিগুলো ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে নিজেদের ব্র্যান্ডকে দর্শকদের সঙ্গে পরিচয় করাতে পারে। যেহেতু ফলোয়াররা একজন ইনফ্লুয়েন্সারকে বিশ্বাস করে তাই তারা এসব পণ্যের প্রচারণাকে বিজ্ঞাপন হিসেবে দেখার পরিবর্তে একজন বন্ধুর সুপারিশ হিসেবে দেখে।
এই অংশীদারত্বের ফলে ইনফ্লুয়েন্সাররা অর্থ পেতে পারেন বা বিনা মূল্যে কোনো পণ্য পেতে পারেন।
ইনফ্লূয়েন্সারদের যা যা করতে হয়
একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে নিয়মিত পোস্টের মাধ্যমে দর্শকসংখ্যা বাড়াতে হয়। কনটেন্ট তৈরি, নতুন নতুন আইডিয়া বের করা, সম্পাদনা ও পোস্ট করতে হয় একজন ইনফ্লুয়েন্সারকে। ইনফ্লুয়েন্সারের দৈনন্দিন কাজের মধ্যে নিচের কাজগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে—
• কনটেন্ট তৈরি।
• সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারণা করা।
• কনটেন্ট পোস্টের জন্য একটি সময়সূচি নির্ধারণ করা।
• কী বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করা হবে তা নিয়ে চিন্তা করা।
• মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখা ও সেগুলো পর্যবেক্ষণ করা।
• ফলোয়ারদের মন্তব্যের উত্তর দিয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা।
• বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা।
ইনফ্লূয়েন্সার হওয়ার জন্য যে যে দক্ষতা প্রয়োজন
ইনফ্লূয়েন্সার হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রবল আগ্রহ, দক্ষতা ও অনন্য জ্ঞান প্রয়োজন। এ ছাড়া এর পাশাপাশি কনটেন্ট তৈরি করার ইচ্ছাও থাকতে হবে। এ ছাড়া যেসব দক্ষতার প্রয়োজন—
•যোগযোগের দক্ষতা
•লেখালেখির দক্ষতা
•সৃজনশীলতা
•সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা
ইনফ্লূয়েন্সারদের প্রকারভেদ
ফলোয়ার সংখ্যা অনুযায়ী ইনফ্লূয়েন্সারদের সাধারণত ৫টি স্তরে ভাগ করা যায়-
মেগা ইনফ্লুয়েন্সার: ১০ লাখ বা তার বেশি ফলোয়ার
ম্যাক্রো ইনফ্লুয়েন্সার: ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ ফলোয়ার
মিড টিয়ার ইনফ্লুয়েন্সার: ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ ফলোয়ার
মাইক্রো ইনফ্লুয়েন্সার: ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ফলোয়ার
ন্যানো ইনফ্লুয়েন্সার: শূন্য থেকে ১০ হাজার ফলোয়ার
ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার সুবিধা ও অসুবিধা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সাররা প্রিয় ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেন এবং তাঁদের পছন্দের পণ্যগুলো প্রচার করেন। একজন ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার সুবিধাগুলোর মধ্য রয়েছে—ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে আয়, বিনা মূল্যে উপহার পাওয়া এবং বিভিন্ন ইভেন্টে আমন্ত্রণ পাওয়া। তবে যাঁরা ভালোভাবে নিজস্ব সময়সূচি সেট করে, ব্র্যান্ডের সঙ্গে দরকষাকষি করতে পারেন ও নিজেদের কনটেন্টের মান নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তাঁরাই মূলত এসব সুবিধা ভোগ করতে পারে।
তবে ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার অসুবিধাও রয়েছে। কনটেন্ট ক্রিয়েটররা প্রায়ই নিজেদের কাজের সঙ্গে নিজেদের চিন্তার একটি অসংগতি খুঁজে পেতে পারেন এবং শূন্য থেকে ফলোয়ারের সংখ্যা তৈরি করতে যে সময় লাগে, এর জন্য অনেকেই হতাশ হয়ে পড়ন।
ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার সুবিধা
দূরবর্তী কাজ: একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে যেকোনো জায়গা থেকে কাজ করা যায়। সেটি নিজের বাড়ি, স্থানীয় লাইব্রেরি, এমনকি প্লেনেও হতে পারে। নিজের পছন্দমতো সময়ে কাজ করতে পারবেন। অর্থাৎ, কখন কনটেন্ট তৈরি করবেন এবং কীভাবে অন্যান্য কাজের সময়সূচি নির্ধারণ করবেন যেমন ব্র্যান্ডের প্রচারণা বা অন্যান্য ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত ইনফ্লুয়েন্সার নিজেই নিতে পারবেন।
পিআর প্যাকেজ: পাবলিক রিলেশন (পিআর) বা জনসংযোগ প্যাকেজের দাম ইনফ্লুয়েন্সাররা নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারেন। এমনকি প্রতিটি কনটেন্টের জন্য আলাদা আলাদাভাবে দামও নির্ধারণ করতে পারেন। পিআর প্যাকেজ কয়েকটি কনটেন্ট তৈরির চুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকে। সাধারণ এসব কনটেন্ট বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করতে হয়। এসব চ্যানেলের প্রসার ও আয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
কনটেন্টের ওপর নিয়ন্ত্রণ: ইনফ্লুয়েন্সাররা এমন কনটেন্ট তৈরি করেন, যাতে তাঁরা আগ্রহ পান। সমমনা শ্রোতাদের সঙ্গে শেয়ার করা কনটেন্টের ওপর ইনফ্লুয়েন্সারদের নিয়ন্ত্রণ থাকে। এর মাধ্যমে তাঁরা একই বিষয়ে আগ্রহী মানুষদের নিয়ে একটি কমিউনিটি তৈরি করতে পারেন।
এমনকি ব্যান্ডের ক্ষেত্রেও কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণের চুক্তি থাকে। ব্র্যান্ডগুলো কনটেন্ট তৈরির দিকনির্দেশ দিয়ে একজন ইনফ্লুয়েন্সারকে সাহায্য করে। আর শ্রোতাদের পছন্দের মিল রেখে কনটেন্ট তৈরি করেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। পণ্যের সেবা ও পণ্য প্রচারের জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের নিজেদের জ্ঞান ও দক্ষতার ওপর নির্ভর করতে হয়।
ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার অসুবিধা
একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে একটি স্থির আয়ের ধারা তৈরি করা একটি চ্যালেঞ্জ। কনটেন্ট তৈরির জন্য অর্থ দেয় এমন ব্র্যান্ড খুঁজে পেতে ইনফ্লুয়েন্সাররা কঠোর পরিশ্রম করেন। এসব ব্যান্ডের সঙ্গে চুক্তিগুলো অনিয়মিত ও অস্থায়ী। ফলে সব সময় একই পরিমাণ আয় না-ও হতে পারে। ফলোয়ার তৈরির জন্য সময় ও কঠোর প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে অর্থ উপার্জন করার জন্য ব্যাপকসংখ্যক ফলোয়ার প্রয়োজন। নিয়মিত শ্রোতা তৈরি করার জন্য অনেক ধৈর্য প্রয়োজন। নিজের দক্ষতা শনাক্ত, কনটেন্ট তৈরি, ব্র্যান্ডদের আকর্ষণ করা এবং যথেষ্ট পরিমাণে শ্রোতা বাড়াতে অনেক সময় লাগতে পারে।
কারা ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে চুক্তি করেন: বড় বড় কোম্পানি থেকে শুরু করে এখন সীমিত বাজেটের মাঝারি ধরনের ব্যবসায়ীরাও নিজেদের পণ্য প্রচারের জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে চুক্তি করেন। অ্যাডিডাস, পেপসি, ডানকিন ডোনাটস ও মটোরোলার মতো বড় কোম্পানিগুলোও পণ্য প্রচারের জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের ব্যবহার করে।
যেভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হবেন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হতে সময় লাগে। তবে আপনি যে প্রথম পদক্ষেপটি গ্রহণ করতে পারেন তা হলো—এমন একটি বিষয় খুঁজে বের করা, যাতে আপনার আগ্রহ রয়েছে এবং এসব কনটেন্ট দেখার শ্রোতাও রয়েছে। এটি একটি প্রাথমিক ধাপ। কনটেন্ট ক্রিয়েটর হওয়ার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করা যায়—
১. পছন্দের বিষয় খুঁজুন
নিজের দক্ষতা অনুযায়ী পছন্দের বিষয় খুঁজুন। একটি বিষয় নির্বাচন করলে নিজেই বুঝতে পারবেন এর মাধ্যমে কোনো পণ্য প্রচার করতে পারবেন ও যার মাধ্যমে শ্রোতারা উপকৃত হতে পারবে। এর মাধ্যমে দর্শক আকর্ষণ হবে এবং নতুন ফলোয়ার যুক্ত হবে।
আর পছন্দের বিষয়টি নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেয়। নিজে যে বিষয়ে আগ্রহী এবং বিষয়টি নিয়ে আরও শেখার ইচ্ছা রয়েছে, এমন বিষয় বেছে নিতে পারেন।
ইনফ্লুয়েন্সাররা সাধারণত যেসব বিষয় বেছে নেন—
• ফ্যাশন
• মেকআপ
• ভ্রমণ
• লাইফস্টাইল
• সেলিব্রেটি ও বিনোদনের খবর
• খেলা
• পশু-পাখি
• স্বাস্থ্য ও ফিটনেস
• গেমিং
• পরিবার ও প্যারেন্টিং
• ব্যবসা ও প্রযুক্তি
২. ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়ানো
প্রকৃত ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার জন্য নিজের অ্যাকাউন্টে ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায়, যেসব ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ১ হাজারের চেয়ে কম ফলোয়ার থাকলে প্রতি ছয় মাসে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ ফলোয়ার বাড়ে। নতুন ফলোয়ারদের আকৃষ্ট করতে কয়েক মাস নিয়মিত কনটেন্ট পোস্ট করতে হয়।
ফলোয়ার বাড়াতে নিচের টিপসগুলো অনুসরণ করতে পারেন—
• নিজের প্রোফাইলের বায়োতে নিজের পছন্দের বিষয়গুলো উল্লেখ করুন।
• উচ্চ মানের কনটেন্ট পোস্ট করুন।
• স্বকীয়তা বজায় রাখুন।
• নিয়মিত নিজের ফলোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
• কনটেন্ট পোস্টের ধারাবাহিকতা রক্ষা করুন।
• পোস্টের সঙ্গে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন।
৩. নিজস্ব কৌশল খুঁজে বের করুন
কোনো কনটেন্ট শেয়ার করার আগে নিজস্ব কৌশল তৈরি করা ভালো। এসব কৌশল সামঞ্জস্যপূর্ণ, উপযোগী কনটেন্ট তৈরি করতে সাহায্য করবে। কৌশলগুলোর মধ্যে রয়েছে—
• নিজের দর্শক বা ফলোয়ারদের আগ্রহ ও প্রয়োজনীয়তা বোঝা।
• কনটেন্ট পোস্টের জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচি নির্ধারণ করা।
• কনটেন্ট তৈরি, এডিট ও পোস্টের জন্য সময় ভাগ করে নেওয়ার পরিকল্পনা করা। • দর্শক কী ধরনের কনটেন্ট দেখে তা থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া।
৪. এসইও ব্যবহার করা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট সরাসরি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনকে (সিইও) প্রভাবিত করে না, তবে নিজের ওয়েবসাইটে ও ব্লগের লিংকে ফলোয়াররা ক্লিক করলেও একই ধরনের প্রভাব দেখা যায়। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (সিইও) হলো আপনার ওয়েবসাইট ও এর বিষয়বস্তুকে সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফলে উচ্চতর স্থানে দেখানোর প্রক্রিয়া। সার্চের ফলাফলে সিজের ওয়েবসাইটগুলো প্রথম দিকে দেখাতে নিচের টিপসগুলো অনুসরণ করতে পারেন—
• মানুষকে সাহায্য করবে এমন কনটেন্ট তৈরি করুন। ফলে অন্যান্য ওয়েবসাইটও আপনার লিংকে যুক্ত করবে।
• দর্শকদের সমর্থনে মেসেজ দিন। অর্থাৎ তাদের মনোভাব ও আবেগের প্রতি নজর রেখে বিভিন্ন মেসেজ পোস্ট করুন।
• বিশ্বস্ত শ্রোতা ও দর্শক কমিউনিটি তৈরি করুন।
৫. নিজের ফলোয়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা
উন্নত মানের কনটেন্ট তৈরির পাশাপাশি একজন ইনফ্লুয়েন্সারের বেশ কিছু দায়িত্ব থাকে। দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ করাও গুরুত্বপূর্ণ। ফলোয়ারদের বিভিন্ন মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন বা নিজের সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েও ফলোয়ারদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল সম্পর্ক তৈরি করা যায়।
আয় ও কাজের দৃষ্টিভঙ্গি
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং খাত দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়। এই শিল্পের এক জরিপে দেখা যায়, ইনফ্লুয়েন্সারের মাধ্যমে প্রচারকে ৮৩ শতাংশ বিপণনকারীরা সফল বলে মনে করেন। ২০২৩ সালে এই খাত থেকে ২ হাজার ১১০ কোটি ডলার আয় হয়।
যতক্ষণ না নিয়মিত ও শক্তিশালী আয়ের উৎস বের করতে পারেন, ততক্ষণ ইনফ্লুয়েন্সাররা সাধারণত পার্ট-টাইম ভিত্তিতে এই ক্যারিয়ার শুরু করেন। একবার ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, বিজ্ঞাপন শেয়ারের থেকে আয় বা তাদের চ্যানেলে সাবস্ক্রিপশন বিক্রির মাধ্যমে একটি স্থির আয় উপার্জন করতে পারলে এটি একটি পূর্ণ সময়ের চাকরি হয়ে উঠতে পারে।
এ ছাড়া জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সাররা বই লিখে এবং টকশোতে উপস্থিত হয়ে বা নিজস্ব পণ্যও বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
২০২৩ সালের জুনে প্রকাশিত গ্লাসডোরের এক ডেটা থেকে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সাররা প্রতিবছর গড়ে ৪৬ হাজার ৩৫৮ ডলার আয় করতে পারেন।
তথ্যসূত্র: কোর্সএরা

সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ডিজিটাল নির্মাতা বলা যায়। নিজের দক্ষতা অনুসারে তাঁরা নানা বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করেন। এটি এখন শুধু শখের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এর মাধ্যমে আয়ও করা যায়।
আগ্রহের বিষয় নিয়ে ইনফ্লুয়েন্সাররা কনটেন্ট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। ফলোয়ারদের সঙ্গে ডিজিটাল সম্পর্ক তৈরি করেন তাঁরা এবং প্রিয় ব্র্যান্ডের সঙ্গেও কাজ করেন। নিজের বাসায় থেকেই কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। তাই আয়ের জন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
ইনফ্লুয়েন্সার কি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সাররা একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে নিজেদের বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং এক বা একাধিক প্ল্যাটফরমে দর্শক বা ফলোয়ারদের সঙ্গে তাঁদের জ্ঞান ভাগ করে নেন।
ইনফ্লুয়েন্সাররা তাঁদের দক্ষতা প্রতিষ্ঠা এবং ফলোয়ারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে নিয়মিত কনটেন্ট তৈরি ও শেয়ার করেন। নিয়মিতভাবে শ্রোতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ও অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ কনটেন্ট শেয়ার করার মাধ্যমে নির্মাতারা প্রায়ই তাঁদের ফলোয়ারদের একটি নির্দিষ্ট পণ্য কেনার করার জন্য ‘প্রভাবিত’ করতে পারেন।
ব্র্যান্ডগুলো পণ্য বা সেবার প্রচারণার জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে অংশীদারত্ব করে। ফলে কোম্পানিগুলো ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে নিজেদের ব্র্যান্ডকে দর্শকদের সঙ্গে পরিচয় করাতে পারে। যেহেতু ফলোয়াররা একজন ইনফ্লুয়েন্সারকে বিশ্বাস করে তাই তারা এসব পণ্যের প্রচারণাকে বিজ্ঞাপন হিসেবে দেখার পরিবর্তে একজন বন্ধুর সুপারিশ হিসেবে দেখে।
এই অংশীদারত্বের ফলে ইনফ্লুয়েন্সাররা অর্থ পেতে পারেন বা বিনা মূল্যে কোনো পণ্য পেতে পারেন।
ইনফ্লূয়েন্সারদের যা যা করতে হয়
একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে নিয়মিত পোস্টের মাধ্যমে দর্শকসংখ্যা বাড়াতে হয়। কনটেন্ট তৈরি, নতুন নতুন আইডিয়া বের করা, সম্পাদনা ও পোস্ট করতে হয় একজন ইনফ্লুয়েন্সারকে। ইনফ্লুয়েন্সারের দৈনন্দিন কাজের মধ্যে নিচের কাজগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে—
• কনটেন্ট তৈরি।
• সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারণা করা।
• কনটেন্ট পোস্টের জন্য একটি সময়সূচি নির্ধারণ করা।
• কী বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করা হবে তা নিয়ে চিন্তা করা।
• মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখা ও সেগুলো পর্যবেক্ষণ করা।
• ফলোয়ারদের মন্তব্যের উত্তর দিয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা।
• বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা।
ইনফ্লূয়েন্সার হওয়ার জন্য যে যে দক্ষতা প্রয়োজন
ইনফ্লূয়েন্সার হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রবল আগ্রহ, দক্ষতা ও অনন্য জ্ঞান প্রয়োজন। এ ছাড়া এর পাশাপাশি কনটেন্ট তৈরি করার ইচ্ছাও থাকতে হবে। এ ছাড়া যেসব দক্ষতার প্রয়োজন—
•যোগযোগের দক্ষতা
•লেখালেখির দক্ষতা
•সৃজনশীলতা
•সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা
ইনফ্লূয়েন্সারদের প্রকারভেদ
ফলোয়ার সংখ্যা অনুযায়ী ইনফ্লূয়েন্সারদের সাধারণত ৫টি স্তরে ভাগ করা যায়-
মেগা ইনফ্লুয়েন্সার: ১০ লাখ বা তার বেশি ফলোয়ার
ম্যাক্রো ইনফ্লুয়েন্সার: ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ ফলোয়ার
মিড টিয়ার ইনফ্লুয়েন্সার: ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ ফলোয়ার
মাইক্রো ইনফ্লুয়েন্সার: ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ফলোয়ার
ন্যানো ইনফ্লুয়েন্সার: শূন্য থেকে ১০ হাজার ফলোয়ার
ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার সুবিধা ও অসুবিধা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সাররা প্রিয় ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেন এবং তাঁদের পছন্দের পণ্যগুলো প্রচার করেন। একজন ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার সুবিধাগুলোর মধ্য রয়েছে—ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে আয়, বিনা মূল্যে উপহার পাওয়া এবং বিভিন্ন ইভেন্টে আমন্ত্রণ পাওয়া। তবে যাঁরা ভালোভাবে নিজস্ব সময়সূচি সেট করে, ব্র্যান্ডের সঙ্গে দরকষাকষি করতে পারেন ও নিজেদের কনটেন্টের মান নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তাঁরাই মূলত এসব সুবিধা ভোগ করতে পারে।
তবে ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার অসুবিধাও রয়েছে। কনটেন্ট ক্রিয়েটররা প্রায়ই নিজেদের কাজের সঙ্গে নিজেদের চিন্তার একটি অসংগতি খুঁজে পেতে পারেন এবং শূন্য থেকে ফলোয়ারের সংখ্যা তৈরি করতে যে সময় লাগে, এর জন্য অনেকেই হতাশ হয়ে পড়ন।
ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার সুবিধা
দূরবর্তী কাজ: একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে যেকোনো জায়গা থেকে কাজ করা যায়। সেটি নিজের বাড়ি, স্থানীয় লাইব্রেরি, এমনকি প্লেনেও হতে পারে। নিজের পছন্দমতো সময়ে কাজ করতে পারবেন। অর্থাৎ, কখন কনটেন্ট তৈরি করবেন এবং কীভাবে অন্যান্য কাজের সময়সূচি নির্ধারণ করবেন যেমন ব্র্যান্ডের প্রচারণা বা অন্যান্য ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত ইনফ্লুয়েন্সার নিজেই নিতে পারবেন।
পিআর প্যাকেজ: পাবলিক রিলেশন (পিআর) বা জনসংযোগ প্যাকেজের দাম ইনফ্লুয়েন্সাররা নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারেন। এমনকি প্রতিটি কনটেন্টের জন্য আলাদা আলাদাভাবে দামও নির্ধারণ করতে পারেন। পিআর প্যাকেজ কয়েকটি কনটেন্ট তৈরির চুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকে। সাধারণ এসব কনটেন্ট বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করতে হয়। এসব চ্যানেলের প্রসার ও আয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
কনটেন্টের ওপর নিয়ন্ত্রণ: ইনফ্লুয়েন্সাররা এমন কনটেন্ট তৈরি করেন, যাতে তাঁরা আগ্রহ পান। সমমনা শ্রোতাদের সঙ্গে শেয়ার করা কনটেন্টের ওপর ইনফ্লুয়েন্সারদের নিয়ন্ত্রণ থাকে। এর মাধ্যমে তাঁরা একই বিষয়ে আগ্রহী মানুষদের নিয়ে একটি কমিউনিটি তৈরি করতে পারেন।
এমনকি ব্যান্ডের ক্ষেত্রেও কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণের চুক্তি থাকে। ব্র্যান্ডগুলো কনটেন্ট তৈরির দিকনির্দেশ দিয়ে একজন ইনফ্লুয়েন্সারকে সাহায্য করে। আর শ্রোতাদের পছন্দের মিল রেখে কনটেন্ট তৈরি করেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। পণ্যের সেবা ও পণ্য প্রচারের জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের নিজেদের জ্ঞান ও দক্ষতার ওপর নির্ভর করতে হয়।
ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার অসুবিধা
একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে একটি স্থির আয়ের ধারা তৈরি করা একটি চ্যালেঞ্জ। কনটেন্ট তৈরির জন্য অর্থ দেয় এমন ব্র্যান্ড খুঁজে পেতে ইনফ্লুয়েন্সাররা কঠোর পরিশ্রম করেন। এসব ব্যান্ডের সঙ্গে চুক্তিগুলো অনিয়মিত ও অস্থায়ী। ফলে সব সময় একই পরিমাণ আয় না-ও হতে পারে। ফলোয়ার তৈরির জন্য সময় ও কঠোর প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে অর্থ উপার্জন করার জন্য ব্যাপকসংখ্যক ফলোয়ার প্রয়োজন। নিয়মিত শ্রোতা তৈরি করার জন্য অনেক ধৈর্য প্রয়োজন। নিজের দক্ষতা শনাক্ত, কনটেন্ট তৈরি, ব্র্যান্ডদের আকর্ষণ করা এবং যথেষ্ট পরিমাণে শ্রোতা বাড়াতে অনেক সময় লাগতে পারে।
কারা ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে চুক্তি করেন: বড় বড় কোম্পানি থেকে শুরু করে এখন সীমিত বাজেটের মাঝারি ধরনের ব্যবসায়ীরাও নিজেদের পণ্য প্রচারের জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে চুক্তি করেন। অ্যাডিডাস, পেপসি, ডানকিন ডোনাটস ও মটোরোলার মতো বড় কোম্পানিগুলোও পণ্য প্রচারের জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের ব্যবহার করে।
যেভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হবেন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হতে সময় লাগে। তবে আপনি যে প্রথম পদক্ষেপটি গ্রহণ করতে পারেন তা হলো—এমন একটি বিষয় খুঁজে বের করা, যাতে আপনার আগ্রহ রয়েছে এবং এসব কনটেন্ট দেখার শ্রোতাও রয়েছে। এটি একটি প্রাথমিক ধাপ। কনটেন্ট ক্রিয়েটর হওয়ার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করা যায়—
১. পছন্দের বিষয় খুঁজুন
নিজের দক্ষতা অনুযায়ী পছন্দের বিষয় খুঁজুন। একটি বিষয় নির্বাচন করলে নিজেই বুঝতে পারবেন এর মাধ্যমে কোনো পণ্য প্রচার করতে পারবেন ও যার মাধ্যমে শ্রোতারা উপকৃত হতে পারবে। এর মাধ্যমে দর্শক আকর্ষণ হবে এবং নতুন ফলোয়ার যুক্ত হবে।
আর পছন্দের বিষয়টি নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেয়। নিজে যে বিষয়ে আগ্রহী এবং বিষয়টি নিয়ে আরও শেখার ইচ্ছা রয়েছে, এমন বিষয় বেছে নিতে পারেন।
ইনফ্লুয়েন্সাররা সাধারণত যেসব বিষয় বেছে নেন—
• ফ্যাশন
• মেকআপ
• ভ্রমণ
• লাইফস্টাইল
• সেলিব্রেটি ও বিনোদনের খবর
• খেলা
• পশু-পাখি
• স্বাস্থ্য ও ফিটনেস
• গেমিং
• পরিবার ও প্যারেন্টিং
• ব্যবসা ও প্রযুক্তি
২. ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়ানো
প্রকৃত ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার জন্য নিজের অ্যাকাউন্টে ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায়, যেসব ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ১ হাজারের চেয়ে কম ফলোয়ার থাকলে প্রতি ছয় মাসে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ ফলোয়ার বাড়ে। নতুন ফলোয়ারদের আকৃষ্ট করতে কয়েক মাস নিয়মিত কনটেন্ট পোস্ট করতে হয়।
ফলোয়ার বাড়াতে নিচের টিপসগুলো অনুসরণ করতে পারেন—
• নিজের প্রোফাইলের বায়োতে নিজের পছন্দের বিষয়গুলো উল্লেখ করুন।
• উচ্চ মানের কনটেন্ট পোস্ট করুন।
• স্বকীয়তা বজায় রাখুন।
• নিয়মিত নিজের ফলোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
• কনটেন্ট পোস্টের ধারাবাহিকতা রক্ষা করুন।
• পোস্টের সঙ্গে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন।
৩. নিজস্ব কৌশল খুঁজে বের করুন
কোনো কনটেন্ট শেয়ার করার আগে নিজস্ব কৌশল তৈরি করা ভালো। এসব কৌশল সামঞ্জস্যপূর্ণ, উপযোগী কনটেন্ট তৈরি করতে সাহায্য করবে। কৌশলগুলোর মধ্যে রয়েছে—
• নিজের দর্শক বা ফলোয়ারদের আগ্রহ ও প্রয়োজনীয়তা বোঝা।
• কনটেন্ট পোস্টের জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচি নির্ধারণ করা।
• কনটেন্ট তৈরি, এডিট ও পোস্টের জন্য সময় ভাগ করে নেওয়ার পরিকল্পনা করা। • দর্শক কী ধরনের কনটেন্ট দেখে তা থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া।
৪. এসইও ব্যবহার করা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট সরাসরি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনকে (সিইও) প্রভাবিত করে না, তবে নিজের ওয়েবসাইটে ও ব্লগের লিংকে ফলোয়াররা ক্লিক করলেও একই ধরনের প্রভাব দেখা যায়। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (সিইও) হলো আপনার ওয়েবসাইট ও এর বিষয়বস্তুকে সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফলে উচ্চতর স্থানে দেখানোর প্রক্রিয়া। সার্চের ফলাফলে সিজের ওয়েবসাইটগুলো প্রথম দিকে দেখাতে নিচের টিপসগুলো অনুসরণ করতে পারেন—
• মানুষকে সাহায্য করবে এমন কনটেন্ট তৈরি করুন। ফলে অন্যান্য ওয়েবসাইটও আপনার লিংকে যুক্ত করবে।
• দর্শকদের সমর্থনে মেসেজ দিন। অর্থাৎ তাদের মনোভাব ও আবেগের প্রতি নজর রেখে বিভিন্ন মেসেজ পোস্ট করুন।
• বিশ্বস্ত শ্রোতা ও দর্শক কমিউনিটি তৈরি করুন।
৫. নিজের ফলোয়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা
উন্নত মানের কনটেন্ট তৈরির পাশাপাশি একজন ইনফ্লুয়েন্সারের বেশ কিছু দায়িত্ব থাকে। দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ করাও গুরুত্বপূর্ণ। ফলোয়ারদের বিভিন্ন মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন বা নিজের সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েও ফলোয়ারদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল সম্পর্ক তৈরি করা যায়।
আয় ও কাজের দৃষ্টিভঙ্গি
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং খাত দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়। এই শিল্পের এক জরিপে দেখা যায়, ইনফ্লুয়েন্সারের মাধ্যমে প্রচারকে ৮৩ শতাংশ বিপণনকারীরা সফল বলে মনে করেন। ২০২৩ সালে এই খাত থেকে ২ হাজার ১১০ কোটি ডলার আয় হয়।
যতক্ষণ না নিয়মিত ও শক্তিশালী আয়ের উৎস বের করতে পারেন, ততক্ষণ ইনফ্লুয়েন্সাররা সাধারণত পার্ট-টাইম ভিত্তিতে এই ক্যারিয়ার শুরু করেন। একবার ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, বিজ্ঞাপন শেয়ারের থেকে আয় বা তাদের চ্যানেলে সাবস্ক্রিপশন বিক্রির মাধ্যমে একটি স্থির আয় উপার্জন করতে পারলে এটি একটি পূর্ণ সময়ের চাকরি হয়ে উঠতে পারে।
এ ছাড়া জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সাররা বই লিখে এবং টকশোতে উপস্থিত হয়ে বা নিজস্ব পণ্যও বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
২০২৩ সালের জুনে প্রকাশিত গ্লাসডোরের এক ডেটা থেকে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সাররা প্রতিবছর গড়ে ৪৬ হাজার ৩৫৮ ডলার আয় করতে পারেন।
তথ্যসূত্র: কোর্সএরা
প্রমিতি কিবরিয়া ইসলাম, ঢাকা

সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ডিজিটাল নির্মাতা বলা যায়। নিজের দক্ষতা অনুসারে তাঁরা নানা বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করেন। এটি এখন শুধু শখের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এর মাধ্যমে আয়ও করা যায়।
আগ্রহের বিষয় নিয়ে ইনফ্লুয়েন্সাররা কনটেন্ট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। ফলোয়ারদের সঙ্গে ডিজিটাল সম্পর্ক তৈরি করেন তাঁরা এবং প্রিয় ব্র্যান্ডের সঙ্গেও কাজ করেন। নিজের বাসায় থেকেই কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। তাই আয়ের জন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
ইনফ্লুয়েন্সার কি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সাররা একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে নিজেদের বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং এক বা একাধিক প্ল্যাটফরমে দর্শক বা ফলোয়ারদের সঙ্গে তাঁদের জ্ঞান ভাগ করে নেন।
ইনফ্লুয়েন্সাররা তাঁদের দক্ষতা প্রতিষ্ঠা এবং ফলোয়ারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে নিয়মিত কনটেন্ট তৈরি ও শেয়ার করেন। নিয়মিতভাবে শ্রোতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ও অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ কনটেন্ট শেয়ার করার মাধ্যমে নির্মাতারা প্রায়ই তাঁদের ফলোয়ারদের একটি নির্দিষ্ট পণ্য কেনার করার জন্য ‘প্রভাবিত’ করতে পারেন।
ব্র্যান্ডগুলো পণ্য বা সেবার প্রচারণার জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে অংশীদারত্ব করে। ফলে কোম্পানিগুলো ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে নিজেদের ব্র্যান্ডকে দর্শকদের সঙ্গে পরিচয় করাতে পারে। যেহেতু ফলোয়াররা একজন ইনফ্লুয়েন্সারকে বিশ্বাস করে তাই তারা এসব পণ্যের প্রচারণাকে বিজ্ঞাপন হিসেবে দেখার পরিবর্তে একজন বন্ধুর সুপারিশ হিসেবে দেখে।
এই অংশীদারত্বের ফলে ইনফ্লুয়েন্সাররা অর্থ পেতে পারেন বা বিনা মূল্যে কোনো পণ্য পেতে পারেন।
ইনফ্লূয়েন্সারদের যা যা করতে হয়
একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে নিয়মিত পোস্টের মাধ্যমে দর্শকসংখ্যা বাড়াতে হয়। কনটেন্ট তৈরি, নতুন নতুন আইডিয়া বের করা, সম্পাদনা ও পোস্ট করতে হয় একজন ইনফ্লুয়েন্সারকে। ইনফ্লুয়েন্সারের দৈনন্দিন কাজের মধ্যে নিচের কাজগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে—
• কনটেন্ট তৈরি।
• সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারণা করা।
• কনটেন্ট পোস্টের জন্য একটি সময়সূচি নির্ধারণ করা।
• কী বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করা হবে তা নিয়ে চিন্তা করা।
• মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখা ও সেগুলো পর্যবেক্ষণ করা।
• ফলোয়ারদের মন্তব্যের উত্তর দিয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা।
• বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা।
ইনফ্লূয়েন্সার হওয়ার জন্য যে যে দক্ষতা প্রয়োজন
ইনফ্লূয়েন্সার হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রবল আগ্রহ, দক্ষতা ও অনন্য জ্ঞান প্রয়োজন। এ ছাড়া এর পাশাপাশি কনটেন্ট তৈরি করার ইচ্ছাও থাকতে হবে। এ ছাড়া যেসব দক্ষতার প্রয়োজন—
•যোগযোগের দক্ষতা
•লেখালেখির দক্ষতা
•সৃজনশীলতা
•সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা
ইনফ্লূয়েন্সারদের প্রকারভেদ
ফলোয়ার সংখ্যা অনুযায়ী ইনফ্লূয়েন্সারদের সাধারণত ৫টি স্তরে ভাগ করা যায়-
মেগা ইনফ্লুয়েন্সার: ১০ লাখ বা তার বেশি ফলোয়ার
ম্যাক্রো ইনফ্লুয়েন্সার: ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ ফলোয়ার
মিড টিয়ার ইনফ্লুয়েন্সার: ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ ফলোয়ার
মাইক্রো ইনফ্লুয়েন্সার: ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ফলোয়ার
ন্যানো ইনফ্লুয়েন্সার: শূন্য থেকে ১০ হাজার ফলোয়ার
ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার সুবিধা ও অসুবিধা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সাররা প্রিয় ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেন এবং তাঁদের পছন্দের পণ্যগুলো প্রচার করেন। একজন ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার সুবিধাগুলোর মধ্য রয়েছে—ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে আয়, বিনা মূল্যে উপহার পাওয়া এবং বিভিন্ন ইভেন্টে আমন্ত্রণ পাওয়া। তবে যাঁরা ভালোভাবে নিজস্ব সময়সূচি সেট করে, ব্র্যান্ডের সঙ্গে দরকষাকষি করতে পারেন ও নিজেদের কনটেন্টের মান নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তাঁরাই মূলত এসব সুবিধা ভোগ করতে পারে।
তবে ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার অসুবিধাও রয়েছে। কনটেন্ট ক্রিয়েটররা প্রায়ই নিজেদের কাজের সঙ্গে নিজেদের চিন্তার একটি অসংগতি খুঁজে পেতে পারেন এবং শূন্য থেকে ফলোয়ারের সংখ্যা তৈরি করতে যে সময় লাগে, এর জন্য অনেকেই হতাশ হয়ে পড়ন।
ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার সুবিধা
দূরবর্তী কাজ: একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে যেকোনো জায়গা থেকে কাজ করা যায়। সেটি নিজের বাড়ি, স্থানীয় লাইব্রেরি, এমনকি প্লেনেও হতে পারে। নিজের পছন্দমতো সময়ে কাজ করতে পারবেন। অর্থাৎ, কখন কনটেন্ট তৈরি করবেন এবং কীভাবে অন্যান্য কাজের সময়সূচি নির্ধারণ করবেন যেমন ব্র্যান্ডের প্রচারণা বা অন্যান্য ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত ইনফ্লুয়েন্সার নিজেই নিতে পারবেন।
পিআর প্যাকেজ: পাবলিক রিলেশন (পিআর) বা জনসংযোগ প্যাকেজের দাম ইনফ্লুয়েন্সাররা নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারেন। এমনকি প্রতিটি কনটেন্টের জন্য আলাদা আলাদাভাবে দামও নির্ধারণ করতে পারেন। পিআর প্যাকেজ কয়েকটি কনটেন্ট তৈরির চুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকে। সাধারণ এসব কনটেন্ট বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করতে হয়। এসব চ্যানেলের প্রসার ও আয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
কনটেন্টের ওপর নিয়ন্ত্রণ: ইনফ্লুয়েন্সাররা এমন কনটেন্ট তৈরি করেন, যাতে তাঁরা আগ্রহ পান। সমমনা শ্রোতাদের সঙ্গে শেয়ার করা কনটেন্টের ওপর ইনফ্লুয়েন্সারদের নিয়ন্ত্রণ থাকে। এর মাধ্যমে তাঁরা একই বিষয়ে আগ্রহী মানুষদের নিয়ে একটি কমিউনিটি তৈরি করতে পারেন।
এমনকি ব্যান্ডের ক্ষেত্রেও কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণের চুক্তি থাকে। ব্র্যান্ডগুলো কনটেন্ট তৈরির দিকনির্দেশ দিয়ে একজন ইনফ্লুয়েন্সারকে সাহায্য করে। আর শ্রোতাদের পছন্দের মিল রেখে কনটেন্ট তৈরি করেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। পণ্যের সেবা ও পণ্য প্রচারের জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের নিজেদের জ্ঞান ও দক্ষতার ওপর নির্ভর করতে হয়।
ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার অসুবিধা
একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে একটি স্থির আয়ের ধারা তৈরি করা একটি চ্যালেঞ্জ। কনটেন্ট তৈরির জন্য অর্থ দেয় এমন ব্র্যান্ড খুঁজে পেতে ইনফ্লুয়েন্সাররা কঠোর পরিশ্রম করেন। এসব ব্যান্ডের সঙ্গে চুক্তিগুলো অনিয়মিত ও অস্থায়ী। ফলে সব সময় একই পরিমাণ আয় না-ও হতে পারে। ফলোয়ার তৈরির জন্য সময় ও কঠোর প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে অর্থ উপার্জন করার জন্য ব্যাপকসংখ্যক ফলোয়ার প্রয়োজন। নিয়মিত শ্রোতা তৈরি করার জন্য অনেক ধৈর্য প্রয়োজন। নিজের দক্ষতা শনাক্ত, কনটেন্ট তৈরি, ব্র্যান্ডদের আকর্ষণ করা এবং যথেষ্ট পরিমাণে শ্রোতা বাড়াতে অনেক সময় লাগতে পারে।
কারা ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে চুক্তি করেন: বড় বড় কোম্পানি থেকে শুরু করে এখন সীমিত বাজেটের মাঝারি ধরনের ব্যবসায়ীরাও নিজেদের পণ্য প্রচারের জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে চুক্তি করেন। অ্যাডিডাস, পেপসি, ডানকিন ডোনাটস ও মটোরোলার মতো বড় কোম্পানিগুলোও পণ্য প্রচারের জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের ব্যবহার করে।
যেভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হবেন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হতে সময় লাগে। তবে আপনি যে প্রথম পদক্ষেপটি গ্রহণ করতে পারেন তা হলো—এমন একটি বিষয় খুঁজে বের করা, যাতে আপনার আগ্রহ রয়েছে এবং এসব কনটেন্ট দেখার শ্রোতাও রয়েছে। এটি একটি প্রাথমিক ধাপ। কনটেন্ট ক্রিয়েটর হওয়ার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করা যায়—
১. পছন্দের বিষয় খুঁজুন
নিজের দক্ষতা অনুযায়ী পছন্দের বিষয় খুঁজুন। একটি বিষয় নির্বাচন করলে নিজেই বুঝতে পারবেন এর মাধ্যমে কোনো পণ্য প্রচার করতে পারবেন ও যার মাধ্যমে শ্রোতারা উপকৃত হতে পারবে। এর মাধ্যমে দর্শক আকর্ষণ হবে এবং নতুন ফলোয়ার যুক্ত হবে।
আর পছন্দের বিষয়টি নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেয়। নিজে যে বিষয়ে আগ্রহী এবং বিষয়টি নিয়ে আরও শেখার ইচ্ছা রয়েছে, এমন বিষয় বেছে নিতে পারেন।
ইনফ্লুয়েন্সাররা সাধারণত যেসব বিষয় বেছে নেন—
• ফ্যাশন
• মেকআপ
• ভ্রমণ
• লাইফস্টাইল
• সেলিব্রেটি ও বিনোদনের খবর
• খেলা
• পশু-পাখি
• স্বাস্থ্য ও ফিটনেস
• গেমিং
• পরিবার ও প্যারেন্টিং
• ব্যবসা ও প্রযুক্তি
২. ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়ানো
প্রকৃত ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার জন্য নিজের অ্যাকাউন্টে ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায়, যেসব ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ১ হাজারের চেয়ে কম ফলোয়ার থাকলে প্রতি ছয় মাসে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ ফলোয়ার বাড়ে। নতুন ফলোয়ারদের আকৃষ্ট করতে কয়েক মাস নিয়মিত কনটেন্ট পোস্ট করতে হয়।
ফলোয়ার বাড়াতে নিচের টিপসগুলো অনুসরণ করতে পারেন—
• নিজের প্রোফাইলের বায়োতে নিজের পছন্দের বিষয়গুলো উল্লেখ করুন।
• উচ্চ মানের কনটেন্ট পোস্ট করুন।
• স্বকীয়তা বজায় রাখুন।
• নিয়মিত নিজের ফলোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
• কনটেন্ট পোস্টের ধারাবাহিকতা রক্ষা করুন।
• পোস্টের সঙ্গে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন।
৩. নিজস্ব কৌশল খুঁজে বের করুন
কোনো কনটেন্ট শেয়ার করার আগে নিজস্ব কৌশল তৈরি করা ভালো। এসব কৌশল সামঞ্জস্যপূর্ণ, উপযোগী কনটেন্ট তৈরি করতে সাহায্য করবে। কৌশলগুলোর মধ্যে রয়েছে—
• নিজের দর্শক বা ফলোয়ারদের আগ্রহ ও প্রয়োজনীয়তা বোঝা।
• কনটেন্ট পোস্টের জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচি নির্ধারণ করা।
• কনটেন্ট তৈরি, এডিট ও পোস্টের জন্য সময় ভাগ করে নেওয়ার পরিকল্পনা করা। • দর্শক কী ধরনের কনটেন্ট দেখে তা থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া।
৪. এসইও ব্যবহার করা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট সরাসরি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনকে (সিইও) প্রভাবিত করে না, তবে নিজের ওয়েবসাইটে ও ব্লগের লিংকে ফলোয়াররা ক্লিক করলেও একই ধরনের প্রভাব দেখা যায়। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (সিইও) হলো আপনার ওয়েবসাইট ও এর বিষয়বস্তুকে সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফলে উচ্চতর স্থানে দেখানোর প্রক্রিয়া। সার্চের ফলাফলে সিজের ওয়েবসাইটগুলো প্রথম দিকে দেখাতে নিচের টিপসগুলো অনুসরণ করতে পারেন—
• মানুষকে সাহায্য করবে এমন কনটেন্ট তৈরি করুন। ফলে অন্যান্য ওয়েবসাইটও আপনার লিংকে যুক্ত করবে।
• দর্শকদের সমর্থনে মেসেজ দিন। অর্থাৎ তাদের মনোভাব ও আবেগের প্রতি নজর রেখে বিভিন্ন মেসেজ পোস্ট করুন।
• বিশ্বস্ত শ্রোতা ও দর্শক কমিউনিটি তৈরি করুন।
৫. নিজের ফলোয়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা
উন্নত মানের কনটেন্ট তৈরির পাশাপাশি একজন ইনফ্লুয়েন্সারের বেশ কিছু দায়িত্ব থাকে। দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ করাও গুরুত্বপূর্ণ। ফলোয়ারদের বিভিন্ন মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন বা নিজের সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েও ফলোয়ারদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল সম্পর্ক তৈরি করা যায়।
আয় ও কাজের দৃষ্টিভঙ্গি
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং খাত দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়। এই শিল্পের এক জরিপে দেখা যায়, ইনফ্লুয়েন্সারের মাধ্যমে প্রচারকে ৮৩ শতাংশ বিপণনকারীরা সফল বলে মনে করেন। ২০২৩ সালে এই খাত থেকে ২ হাজার ১১০ কোটি ডলার আয় হয়।
যতক্ষণ না নিয়মিত ও শক্তিশালী আয়ের উৎস বের করতে পারেন, ততক্ষণ ইনফ্লুয়েন্সাররা সাধারণত পার্ট-টাইম ভিত্তিতে এই ক্যারিয়ার শুরু করেন। একবার ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, বিজ্ঞাপন শেয়ারের থেকে আয় বা তাদের চ্যানেলে সাবস্ক্রিপশন বিক্রির মাধ্যমে একটি স্থির আয় উপার্জন করতে পারলে এটি একটি পূর্ণ সময়ের চাকরি হয়ে উঠতে পারে।
এ ছাড়া জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সাররা বই লিখে এবং টকশোতে উপস্থিত হয়ে বা নিজস্ব পণ্যও বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
২০২৩ সালের জুনে প্রকাশিত গ্লাসডোরের এক ডেটা থেকে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সাররা প্রতিবছর গড়ে ৪৬ হাজার ৩৫৮ ডলার আয় করতে পারেন।
তথ্যসূত্র: কোর্সএরা

সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ডিজিটাল নির্মাতা বলা যায়। নিজের দক্ষতা অনুসারে তাঁরা নানা বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করেন। এটি এখন শুধু শখের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এর মাধ্যমে আয়ও করা যায়।
আগ্রহের বিষয় নিয়ে ইনফ্লুয়েন্সাররা কনটেন্ট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। ফলোয়ারদের সঙ্গে ডিজিটাল সম্পর্ক তৈরি করেন তাঁরা এবং প্রিয় ব্র্যান্ডের সঙ্গেও কাজ করেন। নিজের বাসায় থেকেই কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। তাই আয়ের জন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
ইনফ্লুয়েন্সার কি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সাররা একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে নিজেদের বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং এক বা একাধিক প্ল্যাটফরমে দর্শক বা ফলোয়ারদের সঙ্গে তাঁদের জ্ঞান ভাগ করে নেন।
ইনফ্লুয়েন্সাররা তাঁদের দক্ষতা প্রতিষ্ঠা এবং ফলোয়ারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে নিয়মিত কনটেন্ট তৈরি ও শেয়ার করেন। নিয়মিতভাবে শ্রোতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ও অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ কনটেন্ট শেয়ার করার মাধ্যমে নির্মাতারা প্রায়ই তাঁদের ফলোয়ারদের একটি নির্দিষ্ট পণ্য কেনার করার জন্য ‘প্রভাবিত’ করতে পারেন।
ব্র্যান্ডগুলো পণ্য বা সেবার প্রচারণার জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে অংশীদারত্ব করে। ফলে কোম্পানিগুলো ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে নিজেদের ব্র্যান্ডকে দর্শকদের সঙ্গে পরিচয় করাতে পারে। যেহেতু ফলোয়াররা একজন ইনফ্লুয়েন্সারকে বিশ্বাস করে তাই তারা এসব পণ্যের প্রচারণাকে বিজ্ঞাপন হিসেবে দেখার পরিবর্তে একজন বন্ধুর সুপারিশ হিসেবে দেখে।
এই অংশীদারত্বের ফলে ইনফ্লুয়েন্সাররা অর্থ পেতে পারেন বা বিনা মূল্যে কোনো পণ্য পেতে পারেন।
ইনফ্লূয়েন্সারদের যা যা করতে হয়
একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে নিয়মিত পোস্টের মাধ্যমে দর্শকসংখ্যা বাড়াতে হয়। কনটেন্ট তৈরি, নতুন নতুন আইডিয়া বের করা, সম্পাদনা ও পোস্ট করতে হয় একজন ইনফ্লুয়েন্সারকে। ইনফ্লুয়েন্সারের দৈনন্দিন কাজের মধ্যে নিচের কাজগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে—
• কনটেন্ট তৈরি।
• সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারণা করা।
• কনটেন্ট পোস্টের জন্য একটি সময়সূচি নির্ধারণ করা।
• কী বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করা হবে তা নিয়ে চিন্তা করা।
• মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখা ও সেগুলো পর্যবেক্ষণ করা।
• ফলোয়ারদের মন্তব্যের উত্তর দিয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা।
• বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা।
ইনফ্লূয়েন্সার হওয়ার জন্য যে যে দক্ষতা প্রয়োজন
ইনফ্লূয়েন্সার হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রবল আগ্রহ, দক্ষতা ও অনন্য জ্ঞান প্রয়োজন। এ ছাড়া এর পাশাপাশি কনটেন্ট তৈরি করার ইচ্ছাও থাকতে হবে। এ ছাড়া যেসব দক্ষতার প্রয়োজন—
•যোগযোগের দক্ষতা
•লেখালেখির দক্ষতা
•সৃজনশীলতা
•সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা
ইনফ্লূয়েন্সারদের প্রকারভেদ
ফলোয়ার সংখ্যা অনুযায়ী ইনফ্লূয়েন্সারদের সাধারণত ৫টি স্তরে ভাগ করা যায়-
মেগা ইনফ্লুয়েন্সার: ১০ লাখ বা তার বেশি ফলোয়ার
ম্যাক্রো ইনফ্লুয়েন্সার: ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ ফলোয়ার
মিড টিয়ার ইনফ্লুয়েন্সার: ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ ফলোয়ার
মাইক্রো ইনফ্লুয়েন্সার: ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ফলোয়ার
ন্যানো ইনফ্লুয়েন্সার: শূন্য থেকে ১০ হাজার ফলোয়ার
ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার সুবিধা ও অসুবিধা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সাররা প্রিয় ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেন এবং তাঁদের পছন্দের পণ্যগুলো প্রচার করেন। একজন ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার সুবিধাগুলোর মধ্য রয়েছে—ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে আয়, বিনা মূল্যে উপহার পাওয়া এবং বিভিন্ন ইভেন্টে আমন্ত্রণ পাওয়া। তবে যাঁরা ভালোভাবে নিজস্ব সময়সূচি সেট করে, ব্র্যান্ডের সঙ্গে দরকষাকষি করতে পারেন ও নিজেদের কনটেন্টের মান নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তাঁরাই মূলত এসব সুবিধা ভোগ করতে পারে।
তবে ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার অসুবিধাও রয়েছে। কনটেন্ট ক্রিয়েটররা প্রায়ই নিজেদের কাজের সঙ্গে নিজেদের চিন্তার একটি অসংগতি খুঁজে পেতে পারেন এবং শূন্য থেকে ফলোয়ারের সংখ্যা তৈরি করতে যে সময় লাগে, এর জন্য অনেকেই হতাশ হয়ে পড়ন।
ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার সুবিধা
দূরবর্তী কাজ: একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে যেকোনো জায়গা থেকে কাজ করা যায়। সেটি নিজের বাড়ি, স্থানীয় লাইব্রেরি, এমনকি প্লেনেও হতে পারে। নিজের পছন্দমতো সময়ে কাজ করতে পারবেন। অর্থাৎ, কখন কনটেন্ট তৈরি করবেন এবং কীভাবে অন্যান্য কাজের সময়সূচি নির্ধারণ করবেন যেমন ব্র্যান্ডের প্রচারণা বা অন্যান্য ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত ইনফ্লুয়েন্সার নিজেই নিতে পারবেন।
পিআর প্যাকেজ: পাবলিক রিলেশন (পিআর) বা জনসংযোগ প্যাকেজের দাম ইনফ্লুয়েন্সাররা নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারেন। এমনকি প্রতিটি কনটেন্টের জন্য আলাদা আলাদাভাবে দামও নির্ধারণ করতে পারেন। পিআর প্যাকেজ কয়েকটি কনটেন্ট তৈরির চুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকে। সাধারণ এসব কনটেন্ট বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করতে হয়। এসব চ্যানেলের প্রসার ও আয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
কনটেন্টের ওপর নিয়ন্ত্রণ: ইনফ্লুয়েন্সাররা এমন কনটেন্ট তৈরি করেন, যাতে তাঁরা আগ্রহ পান। সমমনা শ্রোতাদের সঙ্গে শেয়ার করা কনটেন্টের ওপর ইনফ্লুয়েন্সারদের নিয়ন্ত্রণ থাকে। এর মাধ্যমে তাঁরা একই বিষয়ে আগ্রহী মানুষদের নিয়ে একটি কমিউনিটি তৈরি করতে পারেন।
এমনকি ব্যান্ডের ক্ষেত্রেও কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণের চুক্তি থাকে। ব্র্যান্ডগুলো কনটেন্ট তৈরির দিকনির্দেশ দিয়ে একজন ইনফ্লুয়েন্সারকে সাহায্য করে। আর শ্রোতাদের পছন্দের মিল রেখে কনটেন্ট তৈরি করেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। পণ্যের সেবা ও পণ্য প্রচারের জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের নিজেদের জ্ঞান ও দক্ষতার ওপর নির্ভর করতে হয়।
ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার অসুবিধা
একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে একটি স্থির আয়ের ধারা তৈরি করা একটি চ্যালেঞ্জ। কনটেন্ট তৈরির জন্য অর্থ দেয় এমন ব্র্যান্ড খুঁজে পেতে ইনফ্লুয়েন্সাররা কঠোর পরিশ্রম করেন। এসব ব্যান্ডের সঙ্গে চুক্তিগুলো অনিয়মিত ও অস্থায়ী। ফলে সব সময় একই পরিমাণ আয় না-ও হতে পারে। ফলোয়ার তৈরির জন্য সময় ও কঠোর প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে অর্থ উপার্জন করার জন্য ব্যাপকসংখ্যক ফলোয়ার প্রয়োজন। নিয়মিত শ্রোতা তৈরি করার জন্য অনেক ধৈর্য প্রয়োজন। নিজের দক্ষতা শনাক্ত, কনটেন্ট তৈরি, ব্র্যান্ডদের আকর্ষণ করা এবং যথেষ্ট পরিমাণে শ্রোতা বাড়াতে অনেক সময় লাগতে পারে।
কারা ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে চুক্তি করেন: বড় বড় কোম্পানি থেকে শুরু করে এখন সীমিত বাজেটের মাঝারি ধরনের ব্যবসায়ীরাও নিজেদের পণ্য প্রচারের জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে চুক্তি করেন। অ্যাডিডাস, পেপসি, ডানকিন ডোনাটস ও মটোরোলার মতো বড় কোম্পানিগুলোও পণ্য প্রচারের জন্য ইনফ্লুয়েন্সারদের ব্যবহার করে।
যেভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হবেন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হতে সময় লাগে। তবে আপনি যে প্রথম পদক্ষেপটি গ্রহণ করতে পারেন তা হলো—এমন একটি বিষয় খুঁজে বের করা, যাতে আপনার আগ্রহ রয়েছে এবং এসব কনটেন্ট দেখার শ্রোতাও রয়েছে। এটি একটি প্রাথমিক ধাপ। কনটেন্ট ক্রিয়েটর হওয়ার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করা যায়—
১. পছন্দের বিষয় খুঁজুন
নিজের দক্ষতা অনুযায়ী পছন্দের বিষয় খুঁজুন। একটি বিষয় নির্বাচন করলে নিজেই বুঝতে পারবেন এর মাধ্যমে কোনো পণ্য প্রচার করতে পারবেন ও যার মাধ্যমে শ্রোতারা উপকৃত হতে পারবে। এর মাধ্যমে দর্শক আকর্ষণ হবে এবং নতুন ফলোয়ার যুক্ত হবে।
আর পছন্দের বিষয়টি নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেয়। নিজে যে বিষয়ে আগ্রহী এবং বিষয়টি নিয়ে আরও শেখার ইচ্ছা রয়েছে, এমন বিষয় বেছে নিতে পারেন।
ইনফ্লুয়েন্সাররা সাধারণত যেসব বিষয় বেছে নেন—
• ফ্যাশন
• মেকআপ
• ভ্রমণ
• লাইফস্টাইল
• সেলিব্রেটি ও বিনোদনের খবর
• খেলা
• পশু-পাখি
• স্বাস্থ্য ও ফিটনেস
• গেমিং
• পরিবার ও প্যারেন্টিং
• ব্যবসা ও প্রযুক্তি
২. ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়ানো
প্রকৃত ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার জন্য নিজের অ্যাকাউন্টে ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায়, যেসব ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ১ হাজারের চেয়ে কম ফলোয়ার থাকলে প্রতি ছয় মাসে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ ফলোয়ার বাড়ে। নতুন ফলোয়ারদের আকৃষ্ট করতে কয়েক মাস নিয়মিত কনটেন্ট পোস্ট করতে হয়।
ফলোয়ার বাড়াতে নিচের টিপসগুলো অনুসরণ করতে পারেন—
• নিজের প্রোফাইলের বায়োতে নিজের পছন্দের বিষয়গুলো উল্লেখ করুন।
• উচ্চ মানের কনটেন্ট পোস্ট করুন।
• স্বকীয়তা বজায় রাখুন।
• নিয়মিত নিজের ফলোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
• কনটেন্ট পোস্টের ধারাবাহিকতা রক্ষা করুন।
• পোস্টের সঙ্গে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন।
৩. নিজস্ব কৌশল খুঁজে বের করুন
কোনো কনটেন্ট শেয়ার করার আগে নিজস্ব কৌশল তৈরি করা ভালো। এসব কৌশল সামঞ্জস্যপূর্ণ, উপযোগী কনটেন্ট তৈরি করতে সাহায্য করবে। কৌশলগুলোর মধ্যে রয়েছে—
• নিজের দর্শক বা ফলোয়ারদের আগ্রহ ও প্রয়োজনীয়তা বোঝা।
• কনটেন্ট পোস্টের জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচি নির্ধারণ করা।
• কনটেন্ট তৈরি, এডিট ও পোস্টের জন্য সময় ভাগ করে নেওয়ার পরিকল্পনা করা। • দর্শক কী ধরনের কনটেন্ট দেখে তা থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া।
৪. এসইও ব্যবহার করা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট সরাসরি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনকে (সিইও) প্রভাবিত করে না, তবে নিজের ওয়েবসাইটে ও ব্লগের লিংকে ফলোয়াররা ক্লিক করলেও একই ধরনের প্রভাব দেখা যায়। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (সিইও) হলো আপনার ওয়েবসাইট ও এর বিষয়বস্তুকে সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফলে উচ্চতর স্থানে দেখানোর প্রক্রিয়া। সার্চের ফলাফলে সিজের ওয়েবসাইটগুলো প্রথম দিকে দেখাতে নিচের টিপসগুলো অনুসরণ করতে পারেন—
• মানুষকে সাহায্য করবে এমন কনটেন্ট তৈরি করুন। ফলে অন্যান্য ওয়েবসাইটও আপনার লিংকে যুক্ত করবে।
• দর্শকদের সমর্থনে মেসেজ দিন। অর্থাৎ তাদের মনোভাব ও আবেগের প্রতি নজর রেখে বিভিন্ন মেসেজ পোস্ট করুন।
• বিশ্বস্ত শ্রোতা ও দর্শক কমিউনিটি তৈরি করুন।
৫. নিজের ফলোয়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা
উন্নত মানের কনটেন্ট তৈরির পাশাপাশি একজন ইনফ্লুয়েন্সারের বেশ কিছু দায়িত্ব থাকে। দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ করাও গুরুত্বপূর্ণ। ফলোয়ারদের বিভিন্ন মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন বা নিজের সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েও ফলোয়ারদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল সম্পর্ক তৈরি করা যায়।
আয় ও কাজের দৃষ্টিভঙ্গি
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং খাত দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়। এই শিল্পের এক জরিপে দেখা যায়, ইনফ্লুয়েন্সারের মাধ্যমে প্রচারকে ৮৩ শতাংশ বিপণনকারীরা সফল বলে মনে করেন। ২০২৩ সালে এই খাত থেকে ২ হাজার ১১০ কোটি ডলার আয় হয়।
যতক্ষণ না নিয়মিত ও শক্তিশালী আয়ের উৎস বের করতে পারেন, ততক্ষণ ইনফ্লুয়েন্সাররা সাধারণত পার্ট-টাইম ভিত্তিতে এই ক্যারিয়ার শুরু করেন। একবার ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, বিজ্ঞাপন শেয়ারের থেকে আয় বা তাদের চ্যানেলে সাবস্ক্রিপশন বিক্রির মাধ্যমে একটি স্থির আয় উপার্জন করতে পারলে এটি একটি পূর্ণ সময়ের চাকরি হয়ে উঠতে পারে।
এ ছাড়া জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সাররা বই লিখে এবং টকশোতে উপস্থিত হয়ে বা নিজস্ব পণ্যও বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
২০২৩ সালের জুনে প্রকাশিত গ্লাসডোরের এক ডেটা থেকে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সাররা প্রতিবছর গড়ে ৪৬ হাজার ৩৫৮ ডলার আয় করতে পারেন।
তথ্যসূত্র: কোর্সএরা

অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পরপরই দেশজুড়ে ডিজিটাল জগতে এক নতুন লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে। এই আইন প্রয়োগের প্রথম দিনেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে; একদিকে
৩ ঘণ্টা আগে
অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ শিশু বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘুম থেকে উঠে দেখবে—তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট আর চালু নেই। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সম্প্রতি দেশটি ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে দেশটি।
১৬ ঘণ্টা আগে
আগামী চার বছরে ভারতে ১৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। এটি এশিয়ায় মাইক্রোসফটের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। ভারতের ক্লাউড ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অবকাঠামো উন্নয়নে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।
১৬ ঘণ্টা আগে
বিদেশ থেকে সেকেন্ড হ্যান্ড (ব্যবহৃত), ক্লোনড, রিফারফিশড (সংযোজনকৃত) মোবাইল হ্যান্ডসেট বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। অন্যদিকে অননুমোদিত মোবাইল আমদানিকারক ও বিক্রেতারা এসব ফোন নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমদানি করতে চান।
১৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পরপরই দেশজুড়ে ডিজিটাল জগতে এক নতুন লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে। এই আইন প্রয়োগের প্রথম দিনেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে; একদিকে যেমন হাজার হাজার অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। অন্যদিকে কিশোর ব্যবহারকারীদের একটি অংশ এই নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে টিকে থাকার ‘বিজয়’ উদ্যাপন করছে।
অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রী আনিকা ওয়েলস নিশ্চিত করেছেন, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ১৬ বছরের কম বয়সী হিসেবে চিহ্নিত দুই লক্ষাধিক টিকটক অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় (ডিঅ্যাক্টিভেট) করা হয়েছে।
এই পরিসংখ্যান নিঃসন্দেহে আইনটির তাৎক্ষণিক কার্যকারিতা প্রমাণ করে। তবে মজার বিষয় হলো, অনেক ব্যবহারকারী যারা নিজেদের ১৬-এর নিচে বলে দাবি করছে, তারা এখনো প্ল্যাটফর্মে রয়ে গেছে এবং নিজেদের টিকে থাকার ঘটনাটি ব্যাপকভাবে প্রচার করছে।
নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় কিশোরদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বার্তাগুলো নজর কাড়ছে। এক টিকটক ব্যবহারকারী একটি ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে সরাসরি লিখেছে, ‘প্রিয় অ্যান্থনি আলবানিজ, আমি আপনার নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে গেছি।’ এই ভিডিওর কমেন্ট সেকশন ভরে গেছে অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য ব্যবহারকারীদের মন্তব্যে, যারা দাবি করছে যে তারা ১৬ বছরের কম হওয়া সত্ত্বেও প্ল্যাটফর্মে এখনো সক্রিয় রয়েছে।
কেউ কেউ তো সময় উল্লেখ করে তাদের ‘বিজয়’ উদ্যাপন করছে। সাধারণ মন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে: ‘আমরা এখনো বহাল তবিয়তে আছি, এখন ১০ ডিসেম্বর সকাল ৮: ০৫।’ এমনকি কেউ কেউ এলটন জনের জনপ্রিয় গান ‘আই অ্যাম স্টিল স্ট্যান্ডিং’-এর একটি লাইন উদ্ধৃত করে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ঘোষণা করেছে।
অনেকে জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো তাদের মূল অ্যাকাউন্ট থেকে বের করে দিলেও, তারা গোপন ব্যাক-আপ অ্যাকাউন্ট তৈরি করে অ্যাপ ব্যবহার করতে পারছে। প্রযুক্তিগত এই ফাঁক গলে কেউ কেউ স্ন্যাপচ্যাট বা ইনস্টাগ্রামের মতো একটি প্ল্যাটফর্মে নিষিদ্ধ হলেও টিকটকের মতো অন্য প্ল্যাটফর্মে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের টিকটক অ্যাকাউন্টও এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার মাত্র ১০ ঘণ্টা পর তিনি এবিসি রেডিও মেলবোর্নকে বলেন, এটি ‘ইতিমধ্যেই সফল’। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্টেই ব্যবহারকারীরা নিষেধাজ্ঞাটির ব্যর্থতা নিয়ে বার্তাবর্ষণ করেছে।
আলবানিজের একটি টিকটক ভিডিওর নিচে সরাসরি এক ব্যবহারকারী লিখেছে, ‘আরে বন্ধু, এখনো এখানে আছি।’ অন্য একজন কটাক্ষ করে লিখেছে, ‘এটা কাজ করেনি ব্রো, আমি এখনো এখানে।’
এই ধরনের প্রতিক্রিয়াই স্পষ্ট করে যে, সরকারের প্রাথমিক সফলতা সত্ত্বেও ব্যবহারকারীদের মধ্যে আইনকে পাশ কাটানোর প্রবণতা জোরদার।
খোদ বয়স যাচাইকরণের পদ্ধতি নিয়েই বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ই-সেফটি কমিশনার জুলি ইনম্যান গ্রান্ট কোনো নির্দিষ্ট বয়স যাচাইকরণ প্রযুক্তির সুপারিশ করেননি। তিনি বরং একটি ‘ওয়াটারফল পদ্ধতি’ ব্যবহারের কথা বলেছেন, যেখানে সরকারি আইডি আপলোড করা ছাড়াও আরও একাধিক বিকল্প থাকবে। যদিও বয়স অনুমানকারী ফেশিয়াল স্ক্যান প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে পক্ষপাতিত্ব এবং শিশুদের মুখ চেনার ক্ষেত্রে নির্ভুলতার অভাব দেখা যায়।
কমিশনার ইনম্যান গ্রান্ট অবশ্য বাস্তববাদী। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই ধরনের বৃহৎ সিস্টেমে রাতারাতি শতভাগ সাফল্য আশা করা যায় না। তিনি বলেন, এখানে প্রযুক্তির কিছু দুর্বলতা থাকবে, এই বৃহৎ সিস্টেমগুলোতে পরিবর্তন আনতে সময় লাগে। আমরা কিছু অনিয়ম দেখতে পারি, কিন্তু তার জন্য আমাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
আইনের বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী, যদি কোনো অপ্রাপ্তবয়স্ক সফলভাবে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যেতে থাকে, তাহলে তাদের বা তাদের অভিভাবকদের কোনো শাস্তি হবে না। আইন মেনে চলার পুরো দায়িত্বটি প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর বর্তায়। তাদেরই ব্যবহারকারীর বয়স নিশ্চিত করতে হবে এবং ১৬ বছরের কম বয়সীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে হবে। আইন লঙ্ঘনের জন্য সংশ্লিষ্ট টেক জায়ান্টকে সর্বোচ্চ ৪৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৯০ কোটি টাকা) পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হতে পারে।
ই-সেফটি কমিশনার আরও আশা করেন, প্ল্যাটফর্মগুলো ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন)-এর মতো কৌশলও শনাক্ত করবে। ব্যবহারকারীর আইপি ঠিকানা লুকিয়ে তাদের অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান গোপন করতে সাহায্য করে ভিপিএন।
এদিকে যেসব অপ্রাপ্তবয়স্ক তাদের প্রিয় অ্যাপ থেকে বিতাড়িত হয়েছে, তারা এখন অন্য প্ল্যাটফর্মে আশ্রয় খুঁজছে। আজ সকালে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে শীর্ষ তিনটি জনপ্রিয় অ্যাপ ছিল Lemon 8, Yope, এবং Coverstar। এই প্ল্যাটফর্মগুলো টিকটক, ইনস্টাগ্রাম এবং স্ন্যাপচ্যাটের বিকল্প হিসেবে নিজেদের তুলে ধরছে এবং এগুলো আপাতত ই-সেফটি কমিশনারের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নেই।
মন্ত্রী ওয়েলস এই প্রবণতা নিয়েও সতর্ক। তিনি জানিয়েছেন, যদি দেখা যায় নিষিদ্ধ হওয়া ব্যবহারকারীরা Lemon8-এর মতো প্ল্যাটফর্মে ভিড় করছে এবং সেখানে ক্ষতিকর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, তবে সেগুলোকেও তালিকায় যোগ করতে তিনি এক মুহূর্তও দেরি করবেন না।

অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পরপরই দেশজুড়ে ডিজিটাল জগতে এক নতুন লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে। এই আইন প্রয়োগের প্রথম দিনেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে; একদিকে যেমন হাজার হাজার অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। অন্যদিকে কিশোর ব্যবহারকারীদের একটি অংশ এই নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে টিকে থাকার ‘বিজয়’ উদ্যাপন করছে।
অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রী আনিকা ওয়েলস নিশ্চিত করেছেন, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ১৬ বছরের কম বয়সী হিসেবে চিহ্নিত দুই লক্ষাধিক টিকটক অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় (ডিঅ্যাক্টিভেট) করা হয়েছে।
এই পরিসংখ্যান নিঃসন্দেহে আইনটির তাৎক্ষণিক কার্যকারিতা প্রমাণ করে। তবে মজার বিষয় হলো, অনেক ব্যবহারকারী যারা নিজেদের ১৬-এর নিচে বলে দাবি করছে, তারা এখনো প্ল্যাটফর্মে রয়ে গেছে এবং নিজেদের টিকে থাকার ঘটনাটি ব্যাপকভাবে প্রচার করছে।
নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় কিশোরদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বার্তাগুলো নজর কাড়ছে। এক টিকটক ব্যবহারকারী একটি ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে সরাসরি লিখেছে, ‘প্রিয় অ্যান্থনি আলবানিজ, আমি আপনার নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে গেছি।’ এই ভিডিওর কমেন্ট সেকশন ভরে গেছে অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য ব্যবহারকারীদের মন্তব্যে, যারা দাবি করছে যে তারা ১৬ বছরের কম হওয়া সত্ত্বেও প্ল্যাটফর্মে এখনো সক্রিয় রয়েছে।
কেউ কেউ তো সময় উল্লেখ করে তাদের ‘বিজয়’ উদ্যাপন করছে। সাধারণ মন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে: ‘আমরা এখনো বহাল তবিয়তে আছি, এখন ১০ ডিসেম্বর সকাল ৮: ০৫।’ এমনকি কেউ কেউ এলটন জনের জনপ্রিয় গান ‘আই অ্যাম স্টিল স্ট্যান্ডিং’-এর একটি লাইন উদ্ধৃত করে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ঘোষণা করেছে।
অনেকে জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো তাদের মূল অ্যাকাউন্ট থেকে বের করে দিলেও, তারা গোপন ব্যাক-আপ অ্যাকাউন্ট তৈরি করে অ্যাপ ব্যবহার করতে পারছে। প্রযুক্তিগত এই ফাঁক গলে কেউ কেউ স্ন্যাপচ্যাট বা ইনস্টাগ্রামের মতো একটি প্ল্যাটফর্মে নিষিদ্ধ হলেও টিকটকের মতো অন্য প্ল্যাটফর্মে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের টিকটক অ্যাকাউন্টও এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার মাত্র ১০ ঘণ্টা পর তিনি এবিসি রেডিও মেলবোর্নকে বলেন, এটি ‘ইতিমধ্যেই সফল’। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্টেই ব্যবহারকারীরা নিষেধাজ্ঞাটির ব্যর্থতা নিয়ে বার্তাবর্ষণ করেছে।
আলবানিজের একটি টিকটক ভিডিওর নিচে সরাসরি এক ব্যবহারকারী লিখেছে, ‘আরে বন্ধু, এখনো এখানে আছি।’ অন্য একজন কটাক্ষ করে লিখেছে, ‘এটা কাজ করেনি ব্রো, আমি এখনো এখানে।’
এই ধরনের প্রতিক্রিয়াই স্পষ্ট করে যে, সরকারের প্রাথমিক সফলতা সত্ত্বেও ব্যবহারকারীদের মধ্যে আইনকে পাশ কাটানোর প্রবণতা জোরদার।
খোদ বয়স যাচাইকরণের পদ্ধতি নিয়েই বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ই-সেফটি কমিশনার জুলি ইনম্যান গ্রান্ট কোনো নির্দিষ্ট বয়স যাচাইকরণ প্রযুক্তির সুপারিশ করেননি। তিনি বরং একটি ‘ওয়াটারফল পদ্ধতি’ ব্যবহারের কথা বলেছেন, যেখানে সরকারি আইডি আপলোড করা ছাড়াও আরও একাধিক বিকল্প থাকবে। যদিও বয়স অনুমানকারী ফেশিয়াল স্ক্যান প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে পক্ষপাতিত্ব এবং শিশুদের মুখ চেনার ক্ষেত্রে নির্ভুলতার অভাব দেখা যায়।
কমিশনার ইনম্যান গ্রান্ট অবশ্য বাস্তববাদী। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই ধরনের বৃহৎ সিস্টেমে রাতারাতি শতভাগ সাফল্য আশা করা যায় না। তিনি বলেন, এখানে প্রযুক্তির কিছু দুর্বলতা থাকবে, এই বৃহৎ সিস্টেমগুলোতে পরিবর্তন আনতে সময় লাগে। আমরা কিছু অনিয়ম দেখতে পারি, কিন্তু তার জন্য আমাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
আইনের বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী, যদি কোনো অপ্রাপ্তবয়স্ক সফলভাবে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যেতে থাকে, তাহলে তাদের বা তাদের অভিভাবকদের কোনো শাস্তি হবে না। আইন মেনে চলার পুরো দায়িত্বটি প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর বর্তায়। তাদেরই ব্যবহারকারীর বয়স নিশ্চিত করতে হবে এবং ১৬ বছরের কম বয়সীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে হবে। আইন লঙ্ঘনের জন্য সংশ্লিষ্ট টেক জায়ান্টকে সর্বোচ্চ ৪৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৯০ কোটি টাকা) পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হতে পারে।
ই-সেফটি কমিশনার আরও আশা করেন, প্ল্যাটফর্মগুলো ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন)-এর মতো কৌশলও শনাক্ত করবে। ব্যবহারকারীর আইপি ঠিকানা লুকিয়ে তাদের অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান গোপন করতে সাহায্য করে ভিপিএন।
এদিকে যেসব অপ্রাপ্তবয়স্ক তাদের প্রিয় অ্যাপ থেকে বিতাড়িত হয়েছে, তারা এখন অন্য প্ল্যাটফর্মে আশ্রয় খুঁজছে। আজ সকালে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে শীর্ষ তিনটি জনপ্রিয় অ্যাপ ছিল Lemon 8, Yope, এবং Coverstar। এই প্ল্যাটফর্মগুলো টিকটক, ইনস্টাগ্রাম এবং স্ন্যাপচ্যাটের বিকল্প হিসেবে নিজেদের তুলে ধরছে এবং এগুলো আপাতত ই-সেফটি কমিশনারের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নেই।
মন্ত্রী ওয়েলস এই প্রবণতা নিয়েও সতর্ক। তিনি জানিয়েছেন, যদি দেখা যায় নিষিদ্ধ হওয়া ব্যবহারকারীরা Lemon8-এর মতো প্ল্যাটফর্মে ভিড় করছে এবং সেখানে ক্ষতিকর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, তবে সেগুলোকেও তালিকায় যোগ করতে তিনি এক মুহূর্তও দেরি করবেন না।

ঘরে বসে আয় করার দারুন এক ডিজিটাল পেশার নাম ইনফ্লুয়েন্সার। সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ডিজিটাল নির্মাতা বলা যায়। নিজের বাসায় থেকেই কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। তাই আয়ের জন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
০৪ মে ২০২৪
অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ শিশু বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘুম থেকে উঠে দেখবে—তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট আর চালু নেই। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সম্প্রতি দেশটি ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে দেশটি।
১৬ ঘণ্টা আগে
আগামী চার বছরে ভারতে ১৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। এটি এশিয়ায় মাইক্রোসফটের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। ভারতের ক্লাউড ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অবকাঠামো উন্নয়নে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।
১৬ ঘণ্টা আগে
বিদেশ থেকে সেকেন্ড হ্যান্ড (ব্যবহৃত), ক্লোনড, রিফারফিশড (সংযোজনকৃত) মোবাইল হ্যান্ডসেট বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। অন্যদিকে অননুমোদিত মোবাইল আমদানিকারক ও বিক্রেতারা এসব ফোন নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমদানি করতে চান।
১৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ শিশু বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘুম থেকে উঠে দেখবে—তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট আর চালু নেই। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার আইন কার্যকর হয়েছে। সরকার দাবি করেছে, এই পদক্ষেপ শিশুদের আসক্তিমূলক অ্যালগরিদম, অনলাইন বুলিং ও শিকারিদের হাত থেকে রক্ষা করবে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, সদ্য কার্যকর হওয়া ওই আইনটি ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে নজর কেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ নানা দেশের নীতিনির্ধারকেরা অস্ট্রেলিয়ার এই উদ্যোগকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে ১০টি বড় সামাজিক মাধ্যম—ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, থ্রেডস, স্ন্যাপচ্যাট, ইউটিউব, টিকটক, রেডিট, কিক, টুইচ ও এক্স। এসব প্ল্যাটফর্ম জানিয়েছে, তারা নতুন বয়স যাচাইকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। তবে তাদের কেউ কেউ মনে করে—এত বড় পদক্ষেপ বাস্তবে শিশুদের নিরাপদ করবে কি না, তা এখনো প্রশ্ন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ জানিয়েছেন, কিছু শিশু ও তাদের বাবা-মা হয়তো এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করবে। তবে এর জন্য কোনো শাস্তি নির্ধারণ করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘এটি নিখুঁত নাও হতে পারে, কিন্তু সমাজকে জানাতে হবে—কোন আচরণটি গ্রহণযোগ্য।’
অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুযায়ী—প্ল্যাটফর্মগুলোকে দেখাতে হবে তারা ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে এবং নতুন অ্যাকাউন্ট খোলায় বাধা দিতে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা নিয়েছে। তা না হলে প্রায় ৫ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
সিএনএন জানিয়েছে, পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ‘স্ন্যাপচ্যাট’ তিন বছরের জন্য অ্যাকাউন্ট স্থগিত রাখবে। ইউটিউব ব্যবহারকারীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে লগ আউট করবে, তবে লগ ইন না করেও ভিডিও দেখার সুযোগ থেকে যাবে এই মাধ্যমটিতে। টিকটক জানিয়েছে, বয়স যাচাইকরণের মধ্য দিয়েই অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ হবে এবং শিশুদের পোস্ট করা কনটেন্টও আর দেখা যাবে না।
এদিকে নিরাপদ বিবেচনায় ডিসকর্ড, রোবলক্স, গুগল ক্লাসরুম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব কিডস-সহ আরও কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম এখনো অস্ট্রেলিয়ার শিশুদের জন্য উন্মুক্তই রাখা হচ্ছে। তবে ‘রোবলক্স’ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে, কারণ প্ল্যাটফর্মটিতে শিশুদের টার্গেট করা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে।
বয়স যাচাই করার জন্য প্ল্যাটফর্মগুলো লাইভ ভিডিও সেলফি, নথিপত্র বা ইমেইল যাচাইয়ের পদ্ধতি অনুসরণ করবে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার কিশোরেরা বিকল্প অ্যাপ খুঁজতে শুরু করেছে। এর ফলে ইয়োপে ও লেমন৮–এই দুটি অ্যাপ অল্প সময়েই হাজার হাজার নতুন ব্যবহারকারী পেয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, নতুন আইন কার্যকর করার পর শিশুরা বাইরে পর্যাপ্ত সময় কাটাচ্ছে কি না, বই পড়ছে কি না কিংবা মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে কি না—পর্যবেক্ষণ করা হবে। একই সঙ্গে তারা দেখতে চায়—শিশুরা নিষিদ্ধ প্ল্যাটফর্ম ছাড়িয়ে আরও ঝুঁকিপূর্ণ অনলাইন জগতে চলে যাচ্ছে কি না।
এই পুরো প্রক্রিয়াটি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সহযোগিতায় মূল্যায়ন করা হবে এবং বৈশ্বিক নীতিনির্ধারণে সহায়তার জন্য এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ শিশু বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘুম থেকে উঠে দেখবে—তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট আর চালু নেই। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার আইন কার্যকর হয়েছে। সরকার দাবি করেছে, এই পদক্ষেপ শিশুদের আসক্তিমূলক অ্যালগরিদম, অনলাইন বুলিং ও শিকারিদের হাত থেকে রক্ষা করবে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, সদ্য কার্যকর হওয়া ওই আইনটি ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে নজর কেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ নানা দেশের নীতিনির্ধারকেরা অস্ট্রেলিয়ার এই উদ্যোগকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে ১০টি বড় সামাজিক মাধ্যম—ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, থ্রেডস, স্ন্যাপচ্যাট, ইউটিউব, টিকটক, রেডিট, কিক, টুইচ ও এক্স। এসব প্ল্যাটফর্ম জানিয়েছে, তারা নতুন বয়স যাচাইকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। তবে তাদের কেউ কেউ মনে করে—এত বড় পদক্ষেপ বাস্তবে শিশুদের নিরাপদ করবে কি না, তা এখনো প্রশ্ন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ জানিয়েছেন, কিছু শিশু ও তাদের বাবা-মা হয়তো এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করবে। তবে এর জন্য কোনো শাস্তি নির্ধারণ করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘এটি নিখুঁত নাও হতে পারে, কিন্তু সমাজকে জানাতে হবে—কোন আচরণটি গ্রহণযোগ্য।’
অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুযায়ী—প্ল্যাটফর্মগুলোকে দেখাতে হবে তারা ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে এবং নতুন অ্যাকাউন্ট খোলায় বাধা দিতে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা নিয়েছে। তা না হলে প্রায় ৫ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
সিএনএন জানিয়েছে, পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ‘স্ন্যাপচ্যাট’ তিন বছরের জন্য অ্যাকাউন্ট স্থগিত রাখবে। ইউটিউব ব্যবহারকারীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে লগ আউট করবে, তবে লগ ইন না করেও ভিডিও দেখার সুযোগ থেকে যাবে এই মাধ্যমটিতে। টিকটক জানিয়েছে, বয়স যাচাইকরণের মধ্য দিয়েই অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ হবে এবং শিশুদের পোস্ট করা কনটেন্টও আর দেখা যাবে না।
এদিকে নিরাপদ বিবেচনায় ডিসকর্ড, রোবলক্স, গুগল ক্লাসরুম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব কিডস-সহ আরও কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম এখনো অস্ট্রেলিয়ার শিশুদের জন্য উন্মুক্তই রাখা হচ্ছে। তবে ‘রোবলক্স’ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে, কারণ প্ল্যাটফর্মটিতে শিশুদের টার্গেট করা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে।
বয়স যাচাই করার জন্য প্ল্যাটফর্মগুলো লাইভ ভিডিও সেলফি, নথিপত্র বা ইমেইল যাচাইয়ের পদ্ধতি অনুসরণ করবে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার কিশোরেরা বিকল্প অ্যাপ খুঁজতে শুরু করেছে। এর ফলে ইয়োপে ও লেমন৮–এই দুটি অ্যাপ অল্প সময়েই হাজার হাজার নতুন ব্যবহারকারী পেয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, নতুন আইন কার্যকর করার পর শিশুরা বাইরে পর্যাপ্ত সময় কাটাচ্ছে কি না, বই পড়ছে কি না কিংবা মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে কি না—পর্যবেক্ষণ করা হবে। একই সঙ্গে তারা দেখতে চায়—শিশুরা নিষিদ্ধ প্ল্যাটফর্ম ছাড়িয়ে আরও ঝুঁকিপূর্ণ অনলাইন জগতে চলে যাচ্ছে কি না।
এই পুরো প্রক্রিয়াটি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সহযোগিতায় মূল্যায়ন করা হবে এবং বৈশ্বিক নীতিনির্ধারণে সহায়তার জন্য এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

ঘরে বসে আয় করার দারুন এক ডিজিটাল পেশার নাম ইনফ্লুয়েন্সার। সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ডিজিটাল নির্মাতা বলা যায়। নিজের বাসায় থেকেই কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। তাই আয়ের জন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
০৪ মে ২০২৪
অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পরপরই দেশজুড়ে ডিজিটাল জগতে এক নতুন লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে। এই আইন প্রয়োগের প্রথম দিনেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে; একদিকে
৩ ঘণ্টা আগে
আগামী চার বছরে ভারতে ১৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। এটি এশিয়ায় মাইক্রোসফটের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। ভারতের ক্লাউড ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অবকাঠামো উন্নয়নে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।
১৬ ঘণ্টা আগে
বিদেশ থেকে সেকেন্ড হ্যান্ড (ব্যবহৃত), ক্লোনড, রিফারফিশড (সংযোজনকৃত) মোবাইল হ্যান্ডসেট বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। অন্যদিকে অননুমোদিত মোবাইল আমদানিকারক ও বিক্রেতারা এসব ফোন নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমদানি করতে চান।
১৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আগামী চার বছরে ভারতে ১৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। এটি এশিয়ায় মাইক্রোসফটের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। ভারতের ক্লাউড ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অবকাঠামো উন্নয়নে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।
আজ মঙ্গলবার মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পর এক্সে এ তথ্য জানান। সত্য নাদেলা বলেন, ভারতের ‘এআই ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, দক্ষতা ও সার্বভৌম সক্ষমতা’ গড়ে তুলতে মাইক্রোসফট এই বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে।
বিশ্বের অনেক প্রযুক্তি কোম্পানিই ভারতে তাদের বাজার সম্প্রসারণের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। দ্রুতগতিতে ডিজিটাল অবকাঠামোর বিস্তার হওয়ায় দেশটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বাজারগুলোর একটি।
এর আগে গত অক্টোবরে গুগল জানিয়েছিল, তারা আগামী পাঁচ বছরে ভারতে ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। দক্ষিণাঞ্চলের শহর বিশাখাপত্তনমে প্রতিষ্ঠানটির প্রথম এআই হাব স্থাপন করা হবে, যা হবে গুগলের অন্যতম বৃহত্তম বৈশ্বিক কেন্দ্র।
তিন দিনের ভারত সফরে থাকা নাদেলা নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াও বেঙ্গালুরু ও মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত এআই-বিষয়ক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এআই ও সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের বৈশ্বিক কেন্দ্র হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে ভারত সরকার কাজ করছে। দেশটি ইতিমধ্যে বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা চালু করেছে, যাতে বিশ্বখ্যাত চিপ নির্মাতা ও প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো দেশটিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়। সরকারের লক্ষ্য উদ্ভাবনী বাজার শক্তিশালী করা, কর্মসংস্থান বাড়ানো ও আমদানিনির্ভরতা কমানো।
সত্য নাদেলার সঙ্গে সাক্ষাতের পর মোদি এক্সে লিখেছেন, ‘এআই নিয়ে বিশ্ব ভারতের ব্যাপারে আশাবাদী।’
ভারতে মাইক্রোসফটের সর্বশেষ বিনিয়োগ ছিল ৩ বিলিয়ন ডলার। তবে এবার সেটি সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। আগের পরিকল্পনায় আগামী দুই বছরে নতুন ডেটা সেন্টার, ক্লাউড ও এআই অবকাঠামো তৈরি এবং কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের উদ্যোগ ছিল।
ভারতে তিন দশকের বেশি সময় ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে মাইক্রোসফট। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ২২ হাজারের বেশি কর্মী রয়েছেন। উন্নত কম্পিউটিং চাহিদা পূরণে কোম্পানিটি ক্লাউড ও ডেটা সেন্টারের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে।
এক বিবৃতিতে মাইক্রোসফট জানায়, তারা ভারতে চলমান কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করতে চায়। দেশটিতে তাদের সবচেয়ে বড় হাইপারস্কেল সুবিধা নিশ্চিত করতে একটি নতুন ডেটা সেন্টার ২০২৬ সালের মাঝামাঝি থেকে কার্যক্রম শুরু করবে।

আগামী চার বছরে ভারতে ১৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। এটি এশিয়ায় মাইক্রোসফটের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। ভারতের ক্লাউড ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অবকাঠামো উন্নয়নে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।
আজ মঙ্গলবার মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পর এক্সে এ তথ্য জানান। সত্য নাদেলা বলেন, ভারতের ‘এআই ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, দক্ষতা ও সার্বভৌম সক্ষমতা’ গড়ে তুলতে মাইক্রোসফট এই বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে।
বিশ্বের অনেক প্রযুক্তি কোম্পানিই ভারতে তাদের বাজার সম্প্রসারণের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। দ্রুতগতিতে ডিজিটাল অবকাঠামোর বিস্তার হওয়ায় দেশটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বাজারগুলোর একটি।
এর আগে গত অক্টোবরে গুগল জানিয়েছিল, তারা আগামী পাঁচ বছরে ভারতে ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। দক্ষিণাঞ্চলের শহর বিশাখাপত্তনমে প্রতিষ্ঠানটির প্রথম এআই হাব স্থাপন করা হবে, যা হবে গুগলের অন্যতম বৃহত্তম বৈশ্বিক কেন্দ্র।
তিন দিনের ভারত সফরে থাকা নাদেলা নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াও বেঙ্গালুরু ও মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত এআই-বিষয়ক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এআই ও সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের বৈশ্বিক কেন্দ্র হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে ভারত সরকার কাজ করছে। দেশটি ইতিমধ্যে বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা চালু করেছে, যাতে বিশ্বখ্যাত চিপ নির্মাতা ও প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো দেশটিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়। সরকারের লক্ষ্য উদ্ভাবনী বাজার শক্তিশালী করা, কর্মসংস্থান বাড়ানো ও আমদানিনির্ভরতা কমানো।
সত্য নাদেলার সঙ্গে সাক্ষাতের পর মোদি এক্সে লিখেছেন, ‘এআই নিয়ে বিশ্ব ভারতের ব্যাপারে আশাবাদী।’
ভারতে মাইক্রোসফটের সর্বশেষ বিনিয়োগ ছিল ৩ বিলিয়ন ডলার। তবে এবার সেটি সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। আগের পরিকল্পনায় আগামী দুই বছরে নতুন ডেটা সেন্টার, ক্লাউড ও এআই অবকাঠামো তৈরি এবং কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের উদ্যোগ ছিল।
ভারতে তিন দশকের বেশি সময় ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে মাইক্রোসফট। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ২২ হাজারের বেশি কর্মী রয়েছেন। উন্নত কম্পিউটিং চাহিদা পূরণে কোম্পানিটি ক্লাউড ও ডেটা সেন্টারের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে।
এক বিবৃতিতে মাইক্রোসফট জানায়, তারা ভারতে চলমান কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করতে চায়। দেশটিতে তাদের সবচেয়ে বড় হাইপারস্কেল সুবিধা নিশ্চিত করতে একটি নতুন ডেটা সেন্টার ২০২৬ সালের মাঝামাঝি থেকে কার্যক্রম শুরু করবে।

ঘরে বসে আয় করার দারুন এক ডিজিটাল পেশার নাম ইনফ্লুয়েন্সার। সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ডিজিটাল নির্মাতা বলা যায়। নিজের বাসায় থেকেই কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। তাই আয়ের জন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
০৪ মে ২০২৪
অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পরপরই দেশজুড়ে ডিজিটাল জগতে এক নতুন লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে। এই আইন প্রয়োগের প্রথম দিনেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে; একদিকে
৩ ঘণ্টা আগে
অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ শিশু বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘুম থেকে উঠে দেখবে—তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট আর চালু নেই। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সম্প্রতি দেশটি ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে দেশটি।
১৬ ঘণ্টা আগে
বিদেশ থেকে সেকেন্ড হ্যান্ড (ব্যবহৃত), ক্লোনড, রিফারফিশড (সংযোজনকৃত) মোবাইল হ্যান্ডসেট বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। অন্যদিকে অননুমোদিত মোবাইল আমদানিকারক ও বিক্রেতারা এসব ফোন নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমদানি করতে চান।
১৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে সেকেন্ড হ্যান্ড (ব্যবহৃত), ক্লোনড, রিফারফিশড (সংযোজনকৃত) মোবাইল হ্যান্ডসেট বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। অন্যদিকে অননুমোদিত মোবাইল আমদানিকারক ও বিক্রেতারা এসব ফোন নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমদানি করতে চান। একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, এনইআইআর (ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার) পদ্ধতি কার্যকর করার সময় পেছানো এবং মোবাইল ফোন আমদানির ক্ষেত্রে ভ্যাট-ট্যাক্স কমানো।
এসব দাবি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিটিআরসির সঙ্গে বৈঠক করেন মোবাইল ব্যবসায়ীদের সংগঠন মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে বেলা ১১টা নাগাদ এই বৈঠক শুরু হয়। এমবিসিবির ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল এতে অংশ নেয়। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে বৈঠক। এ সময় বিটিআরসি ভবনের বাইরে অবস্থান নেন শতাধিক মোবাইল ব্যবসায়ী।
বিটিআরসি থেকে বের হয়ে এমবিসিবির নেতারা জানান বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। এমবিসিবির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শামীম মোল্লা বলেন, ‘আমাদের দাবিতে তারা (বিটিআরসি) কর্ণপাত করে নাই, আমাদের দাবি কেউ আমলে নেয় নাই। আমাদের কথা তারা বুঝে, বলার আগেই বুঝে, কিন্তু না বোঝার ভান করে।’
আগামীকাল বুধবার এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড), ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক হবে বলে জানান শামীম মোল্লা। সে পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এমবিসিবির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘মিটিংয়ে আমাদের একমাত্র অ্যাজেন্ডা ছিল ইউজড (ব্যবহৃত) ফোন। আমরা বলেছি, এ দেশে ৭০-৭৫ শতাংশ মানুষ ইউজড ফোন কেনে, ব্যবহার করে আবার বিক্রি করে বা এক্সচেঞ্জ (বিনিময়) করে। আমরা বারবার বলেছি এই ফোনগুলোকে ক্লোন, কপি ও রিফারবিশড বলে কালিমা লেপন করছেন আপনারা। আমরা ক্লোন-কপি বেচি না, আমরা যে মালটা বিক্রি করি, সেটা ধনী দেশের মানুষেরা ছেড়ে দেয়, আমরা সেটা দেশে নিয়ে এসে বিক্রি করি।’
মোহাম্মদ আসলাম জানান, তাঁদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ব্যবহৃত ফোনের বাণিজ্য করতে দিতেই হবে। তবে বিটিআরসি বলেছে আপাতত এ বিষয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা নেই।
মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘আমরা বলেছি যেহেতু তারা এনইআইআর চালু করার জন্য নতুন ফোনের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, পুরাতন ফোনের জন্য যে সরঞ্জাম লাগে সেটার টাকা আমরা সারা দেশের ব্যবসায়ীরা দেব। কিন্তু তারা অনড়।’
এমবিসিবির নেতারা জানান, বুধবার মোবাইল ব্যবসা-সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রণালয় এবং এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক হবে। এরপরও তাঁদের দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন তাঁরা।
১৬ ডিসেম্বর থেকে দেশে এনইআইআর কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে বিটিআরসি। মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের এই বাধ্যবাধকতা কার্যকর হওয়ার পর কেবল সরকার অনুমোদিত বৈধ হ্যান্ডসেটই নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে দেশে মোবাইল ফোনের দাম বেড়ে যাবে এবং সাধারণ মোবাইলে বিক্রেতা পথে বসবে বলে অভিযোগ এমবিসিবির।
এমবিসিবির সঙ্গে বৈঠকের পর এক বার্তায় বিটিআরসি জানিয়েছে, মোবাইল হ্যন্ডসেট আমদানি এবং ভেন্ডর তালিকাভুক্তকরণ সনদ দেওয়ার বিদ্যমান প্রক্রিয়া সহজ করতে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু মোবাইল ফোনের মূল উৎপাদনকারী সংস্থার পাশাপাশি যেকোনো অনুমোদিত সরবরাহকারীর প্রত্যয়নপত্রসহ (চুক্তির পরিবর্তে) আবেদন করা হলে বিটিআরসি হতে সহজেই তাদের অনুকূলে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে। এমবিসিবির চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের বাজারে থাকা অবিক্রীত সব মোবাইল হ্যান্ডসেট নিয়মিতকরণের জন্য নির্ধারিত ছকে তথ্য জমা দিতে হবে। এরপর বিটিআরসি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
‘বেতার যন্ত্রপাতি ব্যবহার, বাজারজাতকরণ ও তালিকা গ্রহণের নির্দেশিকা, ২০২৪’ অনুযায়ী বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানি করা হলে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে বিটিআরসি সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে।

বিদেশ থেকে সেকেন্ড হ্যান্ড (ব্যবহৃত), ক্লোনড, রিফারফিশড (সংযোজনকৃত) মোবাইল হ্যান্ডসেট বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। অন্যদিকে অননুমোদিত মোবাইল আমদানিকারক ও বিক্রেতারা এসব ফোন নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমদানি করতে চান। একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, এনইআইআর (ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার) পদ্ধতি কার্যকর করার সময় পেছানো এবং মোবাইল ফোন আমদানির ক্ষেত্রে ভ্যাট-ট্যাক্স কমানো।
এসব দাবি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিটিআরসির সঙ্গে বৈঠক করেন মোবাইল ব্যবসায়ীদের সংগঠন মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে বেলা ১১টা নাগাদ এই বৈঠক শুরু হয়। এমবিসিবির ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল এতে অংশ নেয়। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে বৈঠক। এ সময় বিটিআরসি ভবনের বাইরে অবস্থান নেন শতাধিক মোবাইল ব্যবসায়ী।
বিটিআরসি থেকে বের হয়ে এমবিসিবির নেতারা জানান বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। এমবিসিবির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শামীম মোল্লা বলেন, ‘আমাদের দাবিতে তারা (বিটিআরসি) কর্ণপাত করে নাই, আমাদের দাবি কেউ আমলে নেয় নাই। আমাদের কথা তারা বুঝে, বলার আগেই বুঝে, কিন্তু না বোঝার ভান করে।’
আগামীকাল বুধবার এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড), ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক হবে বলে জানান শামীম মোল্লা। সে পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এমবিসিবির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘মিটিংয়ে আমাদের একমাত্র অ্যাজেন্ডা ছিল ইউজড (ব্যবহৃত) ফোন। আমরা বলেছি, এ দেশে ৭০-৭৫ শতাংশ মানুষ ইউজড ফোন কেনে, ব্যবহার করে আবার বিক্রি করে বা এক্সচেঞ্জ (বিনিময়) করে। আমরা বারবার বলেছি এই ফোনগুলোকে ক্লোন, কপি ও রিফারবিশড বলে কালিমা লেপন করছেন আপনারা। আমরা ক্লোন-কপি বেচি না, আমরা যে মালটা বিক্রি করি, সেটা ধনী দেশের মানুষেরা ছেড়ে দেয়, আমরা সেটা দেশে নিয়ে এসে বিক্রি করি।’
মোহাম্মদ আসলাম জানান, তাঁদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ব্যবহৃত ফোনের বাণিজ্য করতে দিতেই হবে। তবে বিটিআরসি বলেছে আপাতত এ বিষয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা নেই।
মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘আমরা বলেছি যেহেতু তারা এনইআইআর চালু করার জন্য নতুন ফোনের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, পুরাতন ফোনের জন্য যে সরঞ্জাম লাগে সেটার টাকা আমরা সারা দেশের ব্যবসায়ীরা দেব। কিন্তু তারা অনড়।’
এমবিসিবির নেতারা জানান, বুধবার মোবাইল ব্যবসা-সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রণালয় এবং এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক হবে। এরপরও তাঁদের দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন তাঁরা।
১৬ ডিসেম্বর থেকে দেশে এনইআইআর কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে বিটিআরসি। মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের এই বাধ্যবাধকতা কার্যকর হওয়ার পর কেবল সরকার অনুমোদিত বৈধ হ্যান্ডসেটই নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে দেশে মোবাইল ফোনের দাম বেড়ে যাবে এবং সাধারণ মোবাইলে বিক্রেতা পথে বসবে বলে অভিযোগ এমবিসিবির।
এমবিসিবির সঙ্গে বৈঠকের পর এক বার্তায় বিটিআরসি জানিয়েছে, মোবাইল হ্যন্ডসেট আমদানি এবং ভেন্ডর তালিকাভুক্তকরণ সনদ দেওয়ার বিদ্যমান প্রক্রিয়া সহজ করতে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু মোবাইল ফোনের মূল উৎপাদনকারী সংস্থার পাশাপাশি যেকোনো অনুমোদিত সরবরাহকারীর প্রত্যয়নপত্রসহ (চুক্তির পরিবর্তে) আবেদন করা হলে বিটিআরসি হতে সহজেই তাদের অনুকূলে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে। এমবিসিবির চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের বাজারে থাকা অবিক্রীত সব মোবাইল হ্যান্ডসেট নিয়মিতকরণের জন্য নির্ধারিত ছকে তথ্য জমা দিতে হবে। এরপর বিটিআরসি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
‘বেতার যন্ত্রপাতি ব্যবহার, বাজারজাতকরণ ও তালিকা গ্রহণের নির্দেশিকা, ২০২৪’ অনুযায়ী বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানি করা হলে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে বিটিআরসি সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে।

ঘরে বসে আয় করার দারুন এক ডিজিটাল পেশার নাম ইনফ্লুয়েন্সার। সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ডিজিটাল নির্মাতা বলা যায়। নিজের বাসায় থেকেই কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। তাই আয়ের জন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
০৪ মে ২০২৪
অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পরপরই দেশজুড়ে ডিজিটাল জগতে এক নতুন লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে। এই আইন প্রয়োগের প্রথম দিনেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে; একদিকে
৩ ঘণ্টা আগে
অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ শিশু বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘুম থেকে উঠে দেখবে—তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট আর চালু নেই। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সম্প্রতি দেশটি ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে দেশটি।
১৬ ঘণ্টা আগে
আগামী চার বছরে ভারতে ১৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। এটি এশিয়ায় মাইক্রোসফটের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। ভারতের ক্লাউড ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অবকাঠামো উন্নয়নে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।
১৬ ঘণ্টা আগে