আকিফ গালিব
রেডিওকে ট্রানজিস্টর বলা হতো কেন—এ প্রশ্ন নিশ্চয়ই কখনো না কখনো আপনার মাথায় এসেছে। এর উত্তরে বলতে হবে বিরাট এক গল্প।
১৯২৫ সালে পদার্থবিদ জুলিয়ান এডগার লিলিয়েনফিল্ড নতুন একটি বিষয়ে ধারণা দেন, যাকে বলা হয় ফিল্ড ইফেক্ট ট্রানজিস্টর। কিন্তু সে সময় বিজ্ঞানীরা তা বানাতে পারেননি। পরে ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বখ্যাত বেল ল্যাবের তিন পদার্থবিদ জন বারডিন, ওয়াল্টার ব্র্যাটাইন ও উইলিয়াম শকলি বিখ্যাত বিজ্ঞান জার্নাল ‘ফিজিক্যাল রিভিউ’তে তাঁদের আবিষ্কারের খুঁটিনাটি প্রকাশ করেন।
সেই আবিষ্কার নতুন এক অধ্যায়ের দুয়ার খুলে দেয় প্রায় ৭৬ বছর আগে। এর কার্যপ্রণালি ফিল্ড ইফেক্ট ট্রানজিস্টর থেকে কিছুটা আলাদা। এই ট্রানজিস্টর বানানোর জন্য ১৯৫৬ সালে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান এই তিন বিজ্ঞানী। এর আবিষ্কার প্রযুক্তির দুনিয়াকে আমূল বদলে দিয়েছিল। মানবজাতির ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারগুলোর একটি এই ট্রানজিস্টর। এটি অর্ধপরিবাহী যন্ত্র, যা সাধারণত অ্যামপ্লিফায়ার ও বৈদ্যুতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত সুইচ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ট্রানজিস্টর আবিষ্কারের আগে প্রায় এক ডজন ভ্যাকুয়াম টিউব দিয়ে বানানো হতো রেডিও। আর সেটির আকৃতি ছিল একটা ছোটখাটো আলমারির সমান। গত শতকের পঞ্চাশের দশকে ভ্যাকুয়াম টিউবের পরিবর্তে ট্রানজিস্টর দিয়ে বানানো রেডিও বাজারে আসা শুরু করে। সেই সঙ্গে তার আকারও ছোট হতে থাকে। ৮ থেকে ১০টি ট্রানজিস্টর দিয়ে বানানো রেডিও শার্টের পকেটে রাখা যেত একসময়। এটি দিয়ে বানানো বলে এই রেডিওকে বলা হতো ট্রানজিস্টর-রেডিও বা সংক্ষেপে শুধুই ট্রানজিস্টর।
প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই সময়েও প্রতিদিন কোনো না কোনোভাবে আমরা ট্রানজিস্টর ব্যবহার করছি। মোবাইলে ফোন, কম্পিউটার, ট্যাবলেট, টেলিভিশন, প্রিন্টার, ফ্রিজ, মাইক্রোওয়েভ ওভেন—সবকিছুতেই আছে ট্রানজিস্টর। আসলে খুঁজলে খুব কম যন্ত্রই পাওয়া যাবে, যাতে ট্রানজিস্টর নেই।
আমাদের মোবাইল ফোন এবং কম্পিউটারের মাইক্রোপ্রসেসর বা সিপিইউতে আমরা যে আইসি দেখি, তার মধ্যে কোটি কোটি মসফেট আছে। আজকের মসফেট বা আধুনিক ট্রানজিস্টরের যাত্রা শুরু হয় ১৯৫৯ সালে। প্রথম মসফেট বা মেটাল অক্সাইড ফিল্ড ইফেক্ট ট্রানজিস্টর তৈরি করেন বেল ল্যাবের মোহাম্মাদ আতাল্লা ও ডাওয়েন ক্যাং। প্রযুক্তিজগতের এই মহানায়কের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, মসফেট ছোট করলে তার কার্যক্ষমতা বাড়ে এবং বিদ্যুৎ খরচ কমে। আর একটা ছোট্ট সিলিকনের টুকরোর মধ্যে অনেক ট্রানজিস্টর বানিয়ে তাদের মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল কানেকশন দিয়ে ইলেকট্রনিক সার্কিট তৈরি করা যায়। এ রকম সার্কিটকে বলা হয় ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট বা আইসি। ১৯৭১ সালে সিলিকন ভ্যালির অখ্যাত এক স্টার্টআপ পৃথিবীর প্রথম বাণিজ্যিক মাইক্রোপ্রসেসর ৪০০৪ বাজারে আনে। ২৩০০ মসফেট দিয়ে বানানো এই সিপিইউর আকার ১২ বর্গমিলিমিটার।
সেটা প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১ লাখ গাণিতিক অপারেশন করতে পারত। সেই অখ্যাত স্টার্টআপ বর্তমানের বিখ্যাত ইনটেল করপোরেশন। ১৯৬৫ সালে ইনটেলের সহপ্রতিষ্ঠাতা গর্ডন মুর দেখলেন, প্রতি দুই বছর পর একটা আইসিতে ট্রানজিস্টরের সংখ্যা দ্বিগুণ করলে ট্রানজিস্টরপ্রতি গড় উৎপাদনের খরচ সর্বনিম্ন হয়। আরেকটু সহজ করে বললে, দুই বছর পরপর প্রতিটি ট্রানজিস্টরের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। তাঁর এই পর্যবেক্ষণ মুর’স ল নামে পরিচিত। ষাটের দশক থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪০ বছর ধরে দুই বছর পরপর সিপিউতে ট্রানজিস্টরের সংখ্যা দ্বিগুণ করা সম্ভব হয়েছে প্রধানত মসফেটের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে। ২০১০ সালের পরে
মসফেট শুধু ছোট করে তার কার্যক্ষমতা আর বাড়ানো যাচ্ছিল না। বর্তমানে মুর’স লকে টিকিয়ে রাখার জন্য তাই নতুন নতুন বুদ্ধি বের করছেন বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা।
রেডিওকে ট্রানজিস্টর বলা হতো কেন—এ প্রশ্ন নিশ্চয়ই কখনো না কখনো আপনার মাথায় এসেছে। এর উত্তরে বলতে হবে বিরাট এক গল্প।
১৯২৫ সালে পদার্থবিদ জুলিয়ান এডগার লিলিয়েনফিল্ড নতুন একটি বিষয়ে ধারণা দেন, যাকে বলা হয় ফিল্ড ইফেক্ট ট্রানজিস্টর। কিন্তু সে সময় বিজ্ঞানীরা তা বানাতে পারেননি। পরে ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বখ্যাত বেল ল্যাবের তিন পদার্থবিদ জন বারডিন, ওয়াল্টার ব্র্যাটাইন ও উইলিয়াম শকলি বিখ্যাত বিজ্ঞান জার্নাল ‘ফিজিক্যাল রিভিউ’তে তাঁদের আবিষ্কারের খুঁটিনাটি প্রকাশ করেন।
সেই আবিষ্কার নতুন এক অধ্যায়ের দুয়ার খুলে দেয় প্রায় ৭৬ বছর আগে। এর কার্যপ্রণালি ফিল্ড ইফেক্ট ট্রানজিস্টর থেকে কিছুটা আলাদা। এই ট্রানজিস্টর বানানোর জন্য ১৯৫৬ সালে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান এই তিন বিজ্ঞানী। এর আবিষ্কার প্রযুক্তির দুনিয়াকে আমূল বদলে দিয়েছিল। মানবজাতির ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারগুলোর একটি এই ট্রানজিস্টর। এটি অর্ধপরিবাহী যন্ত্র, যা সাধারণত অ্যামপ্লিফায়ার ও বৈদ্যুতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত সুইচ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ট্রানজিস্টর আবিষ্কারের আগে প্রায় এক ডজন ভ্যাকুয়াম টিউব দিয়ে বানানো হতো রেডিও। আর সেটির আকৃতি ছিল একটা ছোটখাটো আলমারির সমান। গত শতকের পঞ্চাশের দশকে ভ্যাকুয়াম টিউবের পরিবর্তে ট্রানজিস্টর দিয়ে বানানো রেডিও বাজারে আসা শুরু করে। সেই সঙ্গে তার আকারও ছোট হতে থাকে। ৮ থেকে ১০টি ট্রানজিস্টর দিয়ে বানানো রেডিও শার্টের পকেটে রাখা যেত একসময়। এটি দিয়ে বানানো বলে এই রেডিওকে বলা হতো ট্রানজিস্টর-রেডিও বা সংক্ষেপে শুধুই ট্রানজিস্টর।
প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই সময়েও প্রতিদিন কোনো না কোনোভাবে আমরা ট্রানজিস্টর ব্যবহার করছি। মোবাইলে ফোন, কম্পিউটার, ট্যাবলেট, টেলিভিশন, প্রিন্টার, ফ্রিজ, মাইক্রোওয়েভ ওভেন—সবকিছুতেই আছে ট্রানজিস্টর। আসলে খুঁজলে খুব কম যন্ত্রই পাওয়া যাবে, যাতে ট্রানজিস্টর নেই।
আমাদের মোবাইল ফোন এবং কম্পিউটারের মাইক্রোপ্রসেসর বা সিপিইউতে আমরা যে আইসি দেখি, তার মধ্যে কোটি কোটি মসফেট আছে। আজকের মসফেট বা আধুনিক ট্রানজিস্টরের যাত্রা শুরু হয় ১৯৫৯ সালে। প্রথম মসফেট বা মেটাল অক্সাইড ফিল্ড ইফেক্ট ট্রানজিস্টর তৈরি করেন বেল ল্যাবের মোহাম্মাদ আতাল্লা ও ডাওয়েন ক্যাং। প্রযুক্তিজগতের এই মহানায়কের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, মসফেট ছোট করলে তার কার্যক্ষমতা বাড়ে এবং বিদ্যুৎ খরচ কমে। আর একটা ছোট্ট সিলিকনের টুকরোর মধ্যে অনেক ট্রানজিস্টর বানিয়ে তাদের মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল কানেকশন দিয়ে ইলেকট্রনিক সার্কিট তৈরি করা যায়। এ রকম সার্কিটকে বলা হয় ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট বা আইসি। ১৯৭১ সালে সিলিকন ভ্যালির অখ্যাত এক স্টার্টআপ পৃথিবীর প্রথম বাণিজ্যিক মাইক্রোপ্রসেসর ৪০০৪ বাজারে আনে। ২৩০০ মসফেট দিয়ে বানানো এই সিপিইউর আকার ১২ বর্গমিলিমিটার।
সেটা প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১ লাখ গাণিতিক অপারেশন করতে পারত। সেই অখ্যাত স্টার্টআপ বর্তমানের বিখ্যাত ইনটেল করপোরেশন। ১৯৬৫ সালে ইনটেলের সহপ্রতিষ্ঠাতা গর্ডন মুর দেখলেন, প্রতি দুই বছর পর একটা আইসিতে ট্রানজিস্টরের সংখ্যা দ্বিগুণ করলে ট্রানজিস্টরপ্রতি গড় উৎপাদনের খরচ সর্বনিম্ন হয়। আরেকটু সহজ করে বললে, দুই বছর পরপর প্রতিটি ট্রানজিস্টরের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। তাঁর এই পর্যবেক্ষণ মুর’স ল নামে পরিচিত। ষাটের দশক থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪০ বছর ধরে দুই বছর পরপর সিপিউতে ট্রানজিস্টরের সংখ্যা দ্বিগুণ করা সম্ভব হয়েছে প্রধানত মসফেটের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে। ২০১০ সালের পরে
মসফেট শুধু ছোট করে তার কার্যক্ষমতা আর বাড়ানো যাচ্ছিল না। বর্তমানে মুর’স লকে টিকিয়ে রাখার জন্য তাই নতুন নতুন বুদ্ধি বের করছেন বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের ২০২৫ সালের বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় নতুন একাধিক এআইভিত্তিক উদ্যোক্তা স্থান পেয়েছেন। তবে এআইকে ঘিরে প্রতিক্রিয়া সবার এক রকম নয়।
১৫ ঘণ্টা আগেহোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা এখন থেকে মেটা এআই-এর কাছে ছবি, ভিডিও ও টেক্সট পাঠিয়ে সেগুলোর বিশ্লেষণ করাতে পারবেন। পরীক্ষামূলকভাবে ফিচারটি প্রথমে অ্যান্ড্রয়েডের জন্য ২.২৫. ১৮.৮ সংস্করণে চালু হয়েছে। পাশাপাশি কিছু সাধারণ ব্যবহারকারীর জন্যও এটি ধীরে ধীরে উন্মুক্ত হচ্ছে।
১৭ ঘণ্টা আগেএক সময় ইন্টারনেট থেকে তথ্য জানার জন্য মানুষ নির্ভর করত একমাত্র সার্চ ইঞ্জিনের ওপর। আর সেই দুনিয়ার শীর্ষে ছিল গুগল। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে এখন চিত্রটা বদলাতে শুরু করেছে। চ্যাটজিপিটি ও অন্যান্য জেনারেটিভ এআই টুল তথ্য খোঁজার নতুন বিকল্প হিসেবে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
১৮ ঘণ্টা আগেদৈনন্দিন জীবনের মুহূর্তগুলো আরও আকর্ষণীয় ও জীবন্ত করে তুলতে স্টোরি ফিচারটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেন ইনস্টাগ্রামের ব্যবহারকারীরা। এই ফিচারের মাধ্যমে শুধু ছবি বা ভিডিও পোস্ট করলেই হয় না, তাতে বাড়তি আকর্ষণ যোগ করে স্টিকার, মিউজিক ও টেক্সট। এই উপাদানগুলো স্টোরিকে করে তোলে আরও জীবন্ত, তথ্যপূর্ণ ও মনোমুগ্ধ
২১ ঘণ্টা আগে