Ajker Patrika

অ্যাপলের সিইও হতে চেয়েছিলেন ইলন মাস্ক

অনলাইন ডেস্ক
অ্যাপলের সিইও হতে চেয়েছিলেন ইলন মাস্ক

বিদ্যুৎ চালিত বিলাসবহুল গাড়ির পথিকৃৎ প্রতিষ্ঠান টেসলা। ইলন মাস্কের এই কোম্পানিটির ব্যাপারে পৃথিবীর তাবৎ উদ্যোক্তাদের একটা ইতিবাচক এবং সম্মানের দৃষ্টিভঙ্গি আছে। কিন্তু পাঁচ বছর আগে টেসলার মডেল থ্রি নিয়ে বেশ জক্কি–ঝামেলা পোহাতে হয়েছে ইলনকে। গাড়িটির উৎপাদন জটিলতা এবং বাজারজাতকরণ নিয়ে খুব বাজে সময় যাচ্ছিল টেসলার। ওই কঠিন সময়েই অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুকের সঙ্গে টেলিফোনে ইলন মাস্কের কথা হয়েছিল। অ্যাপল তখন টেসলা কিনে নেওয়ার একটা প্রস্তাব দিয়েছিল। জবাবে ইলন মাস্ক নাকি বলেছিলেন, তিনি কোম্পানি বেচবেন ঠিক আছে কিন্তু একটা শর্তে। আমিই হব সিইও। এই শর্ত শুনেই টিম কুক কিছু সময়ের জন্য স্তব্ধ হয়ে ছিলেন। কারণ তিনি স্পষ্ট বুঝতে পারছিলেন, ইলন মাস্ক আসলে তাঁর পদটি পাওয়ারই আবদার করছেন। 

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক টিম হিগিনসের ‘পাওয়ার প্লে: টেসলা, ইলন মাস্ক অ্যান্ড দ্য বেট অব দ্য সেঞ্চুরি’ বইয়ের একটি রিভিউ ছেপেছে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস। সেখানেই এমন দাবি করা হয়েছে। এই বইয়ে হিগিনস অ্যাপল, টেসলা এবং আরও কয়েকটি প্রযুক্তি কোম্পানির গল্প তুলে এনেছেন। গত শুক্রবার রিভিউটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, ইলন মাস্কের কথা শুনে কুক কোনো কথা না বলে কিছুক্ষণ ফোনের ওপারে নীরবে ছিলেন। 

তবে ইলন মাস্ক এবং টিম কুক উভয়ে বলেছেন, তাঁদের মধ্যে কখনোই আলাপ হয়নি। 

গত ডিসেম্বর ইলন মাস্ক টুইটারে প্রথম জানান, অ্যাপলের কাছে টেসলা বিক্রি করে দেওয়ার কথা একবার ভেবেছিলেন তিনি। কিন্তু কুকের সঙ্গে কখনো কথা হয়নি। অ্যাপলকে ব্যাটারি চালিত গাড়ি সরবরাহ করার একটি প্রতিবেদন প্রকাশের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছিলেন, মডেল থ্রি প্রজেক্টের সেই কঠিন সময় কুকের শরণাপন্ন হয়েছিলেন তিনি। কোম্পানির বর্তমান বাজারমূল্যের ১০ ভাগের একভাগ দামে টেসলা কিনে নেওয়ার বিষয়ে কথা হচ্ছিল। কিন্তু তিনি সেই বৈঠকে থাকতে রাজি হননি। 

গত শুক্রবার বইয়ের রিভিউয়ে দুজনের আলাপের যে দাবি করা হয়েছে সেটি সঠিক নয় বলেও এক টুইটে উল্লেখ করেন ইলন মাস্ক। তিনি বলেছেন, কুক এবং আমার কখনোই সরাসরি কথা চিঠি চালাচালি হয়নি। তবে অ্যাপলের টেসলা কিনে নেওয়ার ব্যাপারে কুকের সঙ্গে একটি বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য তাঁকে বলা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি। কোম্পানি কেনার ব্যাপারে কোনো শর্ত নিয়েও আলাপ হয়নি। 

মাস্কের এই টুইটের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বইটির লেখক হিগিনস। তিনি বলেছেন, ওই ছোট্ট ঘটনা নিয়ে হাজার মন্তব্য করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন টেসলার প্রতিষ্ঠাতা। ওই সময় যারা গল্পটি শুনেছিলেন তাঁরা বলেছেন, মাস্কের নিজের আলাপ থেকেই এই গল্পটি বেরিয়ে এসেছে। 

বইটির ব্যাপারে মন্তব্য চাইলে অ্যাপলের পক্ষ থেকে কোনো এক এপ্রিলে সিএনএনকে দেওয়া টিম কুকের বক্তব্যের দিকেই নির্দেশ করা হয়েছে। ওই সময় সাংবাদিক কারা সুইশার টিম কুকের কাছে ইলন মাস্কের সেই বৈঠক বর্জনের বিষয়ে জানতে চান। কুক বলেন, `শোনেন, ইলনের সঙ্গে আমার কখনোই কথা হয়নি। যদিও তিনি যে কোম্পানি তৈরি করেছেন সেটির প্রতি আমার অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা রয়েছে। আমি প্রশংসা করি।' 

অবশ্য ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠকে টিম কুক এবং ইলন মাস্কের কাছাকাছি বসে থাকার একটি ছবি দেখা গিয়েছিল। অবশ্য তাঁদের মাঝখানে ছিলেন সফটওয়্যার কোম্পানি ওরাকলের সিইও সাফ্রা কাৎজ। তবে সেই বৈঠকে তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছিল কি–না তা স্পষ্ট নয়। 

আগামী ৩ আগস্ট সাংবাদিক হিগিনসের ‘পাওয়ার প্লে’ বইটির মোড়ক উন্মোচন হওয়ার কথা রয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত