Ajker Patrika

ওয়েবক্যাম হ্যাকড কি না বুঝবেন কীভাবে, নিরাপদ থাকার ৫ উপায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩৪
কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যেতে পারে আপনার ওয়েবক্যাম হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে কি না। ছবি: মেক ইউজ অব
কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যেতে পারে আপনার ওয়েবক্যাম হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে কি না। ছবি: মেক ইউজ অব

পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ, অফিসের কাজে বা অনলাইন ক্লাসের জন্য ওয়েবক্যাম একটি দরকারি প্রযুক্তি। তবে এই ছোট্ট ডিভাইসটিই অনেক সময় আমাদের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা ঝুঁকি হয়ে দাঁড়ায়। হ্যাকাররা আপনার ওপর নজর রাখতে ওয়েবক্যাম ব্যবহার করতে পারে। আর তখনই গোপনীয়তার লঙ্ঘন ঘটে, যা ব্যক্তিগত জীবনকে বিপদে ফেলতে পারে। তাই, নিজের ওয়েবক্যাম হ্যাক হয়েছে কি না, তা বোঝা জরুরি।

কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যেতে পারে আপনার ওয়েবক্যাম হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে কি না। এসব লক্ষণ হলো—

১. আপনার পিসিতে অপরিচিত ফাইল

বেশির ভাগ হ্যাকার তাদের অস্তিত্ব লুকানোর জন্য পিসির ড্রাইভ থেকে নিজেদের হ্যাকিংয়ে সব চিহ্ন মুছে ফেলে। তবে তারা মুছে ফেলার আগে আপনি তাদের ধরে ফেলতে পারেন। এমন ক্ষেত্রে প্রথমে আপনার ওয়েবক্যামের ডিফল্ট স্টোরেজ লোকেশন এবং পিসির রিসাইকেল বিন চেক করুন, কারণ সেখানেই কিছু ভিডিও বা ছবি থাকতে পারে। যদি এসব ফোল্ডারে এমন ভিডিও বা ছবি থাকে, যেগুলো আপনি রেকর্ড করেননি, তখন বুঝতে পারবেন ওয়েবক্যাম হ্যাক হয়েছে। আর যদি পিসি বা ল্যাপটপের একমাত্র ব্যবহারকারী কেবল আপনিই হন, তাহলে আপনার ওয়েবক্যাম হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়। তবে নিশ্চিত হওয়ার আগে অবশ্যই ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপগুলোর সেটিংসে স্বয়ংক্রিয় রেকর্ডিং ফিচার সক্রিয় আছে কি না, তা পরীক্ষা করে নিন।

২. ওয়েবক্যামের লাইট মাঝে মাঝে নিজে থেকে জ্বলে ওঠে

বেশির ভাগ ওয়েবক্যামের পাশে ছোট একটি ইন্ডিকেটর লাইট থাকে, যা ক্যামেরা চালু থাকলে জ্বলে ওঠে। তবে কিছু কিছু পিসিতে এই লাইট না-ও থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে স্ক্রিনের নিচে ট্রে আইকন হিসেবে ক্যামেরা ব্যবহারের নোটিফিকেশন দেখা যায়।

যদি কখনো এমন দেখা যায় যে আপনি ওয়েবক্যাম ব্যবহার করছেন না অথচ ক্যামেরার লাইট জ্বলে উঠছে বা কোনো নোটিফিকেশন আসছে, তাহলে এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত যে, আপনার ক্যামেরা ব্যবহার হচ্ছে। এ অবস্থায় ধরে নেওয়া যায়, কোনো হ্যাকার টরজান বা অন্য কোনো রিমোট অ্যাকসেস ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে আপনার ওয়েবক্যামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

তবে ‘হ্যাক হয়েছে’ বলার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন এটা মিথ্যা অ্যালার্ম নয়। অনেক সময় কোনো ব্রাউজার এক্সটেনশন বা ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু থাকা ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপের কারণেও ক্যামেরার আলো জ্বলে উঠতে পারে।

এটি যাচাই করতে চাইলে একে একে ব্রাউজারের প্রতিটি এক্সটেনশন বন্ধ করুন এবং প্রতিবার ক্যামেরার লাইট দেখুন। যেটা বন্ধ করলে আলো নিভে যায়, সেই এক্সটেনশনই দায়ী ক্যামেরার ইন্ডিকেটর লাইটের জন্য।

৩. কম্পিউটারের নিরাপত্তা সেটিংস পরিবর্তন করা হয়েছে

হ্যাকারদের তাদের উদ্দেশ্য সফল করতে হলে আপনার কম্পিউটারকে কম নিরাপদ করে। এ জন্য তারা ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে নিরাপত্তা সেটিংসে পরিবর্তন আনে। এটি ঘটেছে কি না, তা যাচাই করতে প্রথমে আপনার ওয়েবক্যাম অ্যাপটি খুলুন এবং সিকিউরিটি (নিরাপত্তা) সেটিংসে যান।

সেখানে গিয়ে খেয়াল করুন পাসওয়ার্ড পরিবর্তন হয়েছে কি না, কোনো অচেনা বা সন্দেহজনক অ্যাপস আছে কি না অথবা এমন কোনো অ্যাপস আছে কি না, যেগুলো আপনার ওয়েবক্যামে অ্যাকসেস পাচ্ছে অথচ আপনি জানেন না। এ ধরনের অ্যাপ দিয়েই হ্যাকাররা ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে। পাশাপাশি এমন কোনো নিরাপত্তা নোটিফিকেশন বন্ধ আছে কি না, যা আসলে চালু থাকার কথা নয়।

শুধু ওয়েবক্যাম অ্যাপই নয়, উইন্ডোজ ও অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারেও একই ধরনের পরীক্ষা করুন। কারণ এগুলোই সেই মূল নিরাপত্তা স্তর, যেখানে হ্যাকাররা ফাঁকফোকর খোঁজে।

৪. হ্যাকারদের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত বার্তা পাওয়া

হ্যাকারদের মধ্যে একটি সাধারণ প্রতারণার কৌশল হলো—আপনার ওয়েবক্যাম হ্যাক করা হয়েছে বলে দাবি করে আপনাকে ভয় দেখানো এবং অর্থ আদায়ের চেষ্টা করা। এ ধরনের বার্তাগুলোতে হ্যাকাররা প্রায়ই আপনার চেহারা বা ব্যক্তিগত কোনো তথ্য উল্লেখ করে, যাতে আপনি তাদের দাবি বিশ্বাস করেন।

এই পরিস্থিতিতে তারা সাধারণত অর্থ বা বিটকয়েন দাবি করে এবং কীভাবে, কোথায় সেই অর্থ পাঠাতে হবে তা বার্তায় জানিয়ে দেয়।

এ ধরনের বার্তা পেলে প্রথমে যা মনে রাখা দরকার তা হলো—আপনার ওয়েবক্যামের ওপর হ্যাকার আসলেই কতটা নিয়ন্ত্রণ রাখে সেটা নিশ্চিত হতে হবে। হতে পারে তারা আংশিক বা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, আবার হতে পারে তারা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলছে। অনেক সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকা আপনার ছবিই তারা ব্যবহার করে আপনাকে বোকা বানাতে চেষ্টা করে।

তাই ভয় না পেয়ে বার্তাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখুন—এগুলো বিশ্বাসযোগ্য কি না এবং সম্ভাব্য প্রমাণ আছে কি না। সন্দেহজনক কিছু মনে হলে অবশ্যই সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন।

এ কারণে কোনো অবস্থাতেই হ্যাকারদের দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ বা অর্থ প্রদান করা উচিত নয়। অর্থ দেওয়া মানে তাদের অপরাধে উৎসাহ দেওয়া এবং নিজেকে আরও বড় বিপদে ফেলা। এর পরিবর্তে, যদি আপনি মনে করেন যে হ্যাকারদের হুমকি সত্যি হতে পারে, তাহলে দ্রুত কোনো সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরামর্শ নিন।

৫. ওয়েবক্যাম নিজে থেকেই বারবার চালু হয়ে যাচ্ছে

আপনার ওয়েবক্যাম আসলেই হ্যাক হয়েছে কি না, তা জানার আরেকটি উপায় হলো—ওয়েবক্যামটি উইন্ডোজ সেটিংস থেকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিন। তারপর কিছু সময় পর্যবেক্ষণ করুন—ক্যামেরা নিজের থেকে আবার চালু হচ্ছে কি না। যদি এমন ঘটে, তবে ধরে নেওয়া যায়, কোনো হ্যাকার দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

ওয়েবক্যাম বন্ধ করতে উইন্ডোজের সেটিংসে প্রবেশ করুন। এরপর ‘ব্লুটুথ অ্যান্ড ডিভাইসেস’ অপশনে ট্যাপ করুন। এখন ‘ক্যামেরা’ অপশনটি বাছাই করে নিন। এবার ‘ইন্টিগ্রেটেড ওয়েবক্যাম’-এর ডান পাশে থাকা ‘ডিসঅ্যাবল’ বাটনে ক্লিক করুন।

তবে মনে রাখতে হবে, এই উপায় নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করে না যে আপনার ওয়েবক্যাম হ্যাক হয়েছে। কারণ, অনেক সময় উইন্ডোজ আপডেট বা এমন কিছু অ্যাপও আছে, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্যামেরা চালু করতে পারে। তাই পরীক্ষার সময় এসব বিষয় মনে রাখা জরুরি।

ওয়েবক্যাম হ্যাকিং থেকে বাঁচার ৫ উপায়

১. ফায়ারওয়াল সক্রিয় করুন

ফায়ারওয়াল আপনার নেটওয়ার্ক ট্রাফিক পর্যবেক্ষণ করে এবং সন্দেহজনক সংযোগ ব্লক করে। উইন্ডোজে ফায়ারওয়াল সক্রিয় করতে প্রথমেই কন্ট্রোল প্যানেলে প্রবেশ করুন। এরপর ‘সিস্টেম অ্যান্ড সিকিউরিটি’ অপশনে যান। এবার ‘উইন্ডোজ ডিফেন্ডার ফায়ারওয়াল’ চালু করুন।

ম্যাকওয়েসের নিরাপত্তাব্যবস্থা চালু করতে প্রথমে ‘সিস্টেম প্রিফারেন্সেস’ অপশনে যান। এরপর ‘সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রাইভেসি’ অপশন খুঁজে বের করুন। সবশেষে ফায়ারওয়াল চালু করে দিন।

২. ভালো অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন

একটি শক্তিশালী অ্যান্টিভাইরাস ম্যালওয়্যার, স্পাইওয়্যার ও ভাইরাস থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করে। ভালো অ্যান্টিভাইরাস আপনার কম্পিউটারে অতিরিক্ত সুরক্ষা দেয়—ম্যালওয়্যার, ট্র্যাকার ও ক্ষতিকর ওয়েবসাইট ব্লক করে।

৩. ফিশিং প্রতারণা এড়িয়ে চলুন

অজানা ইমেইল, লিংক বা ফাইল ডাউনলোড করবেন না। হ্যাকাররা সাপোর্ট এজেন্ট (সাহায্যকারী হিসেবে) সেজে আপনাকে রিমোট অ্যাকসেস সফটওয়্যার ইনস্টল করাতে পারে, যার মাধ্যমে তারা ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে।

৪. পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করলে সতর্ক থাকুন

পাবলিক জায়গায় বিনা মূল্যের ওয়াইফাই খুব সহজেই হ্যাক করা যায়। ভিপিএন ব্যবহার করলে আপনার ডেটা এনক্রিপ্টেড থাকবে এবং হ্যাকারদের নজরদারি থেকে নিরাপদ থাকবেন।

৫. ওয়েবক্যাম ঢেকে রাখুন

সবচেয়ে সহজ ও নির্ভরযোগ্য উপায় ক্যামেরায় টেপ বা স্টিকার লাগিয়ে রাখা। এখন বাজারে আক স্লাইডিং ওয়েবক্যাম কভারও পাওয়া যায়, সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন।

তথ্যসূত্র: পিসিম্যাগ ও নর্ড ভিপিএন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সকালে ঘুম ভেঙে অস্ট্রেলিয়ার লাখো শিশু দেখবে তাদের ‘আইডি’ উধাও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ শিশু বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘুম থেকে উঠে দেখবে—তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট আর চালু নেই। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার আইন কার্যকর হয়েছে। সরকার দাবি করেছে, এই পদক্ষেপ শিশুদের আসক্তিমূলক অ্যালগরিদম, অনলাইন বুলিং ও শিকারিদের হাত থেকে রক্ষা করবে।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, সদ্য কার্যকর হওয়া ওই আইনটি ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে নজর কেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ নানা দেশের নীতিনির্ধারকেরা অস্ট্রেলিয়ার এই উদ্যোগকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে ১০টি বড় সামাজিক মাধ্যম—ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, থ্রেডস, স্ন্যাপচ্যাট, ইউটিউব, টিকটক, রেডিট, কিক, টুইচ ও এক্স। এসব প্ল্যাটফর্ম জানিয়েছে, তারা নতুন বয়স যাচাইকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। তবে তাদের কেউ কেউ মনে করে—এত বড় পদক্ষেপ বাস্তবে শিশুদের নিরাপদ করবে কি না, তা এখনো প্রশ্ন।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ জানিয়েছেন, কিছু শিশু ও তাদের বাবা-মা হয়তো এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করবে। তবে এর জন্য কোনো শাস্তি নির্ধারণ করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘এটি নিখুঁত নাও হতে পারে, কিন্তু সমাজকে জানাতে হবে—কোন আচরণটি গ্রহণযোগ্য।’

অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুযায়ী—প্ল্যাটফর্মগুলোকে দেখাতে হবে তারা ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে এবং নতুন অ্যাকাউন্ট খোলায় বাধা দিতে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা নিয়েছে। তা না হলে প্রায় ৫ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।

সিএনএন জানিয়েছে, পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ‘স্ন্যাপচ্যাট’ তিন বছরের জন্য অ্যাকাউন্ট স্থগিত রাখবে। ইউটিউব ব্যবহারকারীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে লগ আউট করবে, তবে লগ ইন না করেও ভিডিও দেখার সুযোগ থেকে যাবে এই মাধ্যমটিতে। টিকটক জানিয়েছে, বয়স যাচাইকরণের মধ্য দিয়েই অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ হবে এবং শিশুদের পোস্ট করা কনটেন্টও আর দেখা যাবে না।

এদিকে নিরাপদ বিবেচনায় ডিসকর্ড, রোবলক্স, গুগল ক্লাসরুম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব কিডস-সহ আরও কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম এখনো অস্ট্রেলিয়ার শিশুদের জন্য উন্মুক্তই রাখা হচ্ছে। তবে ‘রোবলক্স’ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে, কারণ প্ল্যাটফর্মটিতে শিশুদের টার্গেট করা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে।

বয়স যাচাই করার জন্য প্ল্যাটফর্মগুলো লাইভ ভিডিও সেলফি, নথিপত্র বা ইমেইল যাচাইয়ের পদ্ধতি অনুসরণ করবে।

এদিকে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার কিশোরেরা বিকল্প অ্যাপ খুঁজতে শুরু করেছে। এর ফলে ইয়োপে ও লেমন৮–এই দুটি অ্যাপ অল্প সময়েই হাজার হাজার নতুন ব্যবহারকারী পেয়েছে।

সরকার জানিয়েছে, নতুন আইন কার্যকর করার পর শিশুরা বাইরে পর্যাপ্ত সময় কাটাচ্ছে কি না, বই পড়ছে কি না কিংবা মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে কি না—পর্যবেক্ষণ করা হবে। একই সঙ্গে তারা দেখতে চায়—শিশুরা নিষিদ্ধ প্ল্যাটফর্ম ছাড়িয়ে আরও ঝুঁকিপূর্ণ অনলাইন জগতে চলে যাচ্ছে কি না।

এই পুরো প্রক্রিয়াটি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সহযোগিতায় মূল্যায়ন করা হবে এবং বৈশ্বিক নীতিনির্ধারণে সহায়তার জন্য এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে ১৭.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে মাইক্রোসফট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা আজ মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছবি: এক্সে
মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা আজ মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছবি: এক্সে

আগামী চার বছরে ভারতে ১৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। এটি এশিয়ায় মাইক্রোসফটের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। ভারতের ক্লাউড ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অবকাঠামো উন্নয়নে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।

আজ মঙ্গলবার মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পর এক্সে এ তথ্য জানান। সত্য নাদেলা বলেন, ভারতের ‘এআই ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, দক্ষতা ও সার্বভৌম সক্ষমতা’ গড়ে তুলতে মাইক্রোসফট এই বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে।

বিশ্বের অনেক প্রযুক্তি কোম্পানিই ভারতে তাদের বাজার সম্প্রসারণের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। দ্রুতগতিতে ডিজিটাল অবকাঠামোর বিস্তার হওয়ায় দেশটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বাজারগুলোর একটি।

এর আগে গত অক্টোবরে গুগল জানিয়েছিল, তারা আগামী পাঁচ বছরে ভারতে ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। দক্ষিণাঞ্চলের শহর বিশাখাপত্তনমে প্রতিষ্ঠানটির প্রথম এআই হাব স্থাপন করা হবে, যা হবে গুগলের অন্যতম বৃহত্তম বৈশ্বিক কেন্দ্র।

তিন দিনের ভারত সফরে থাকা নাদেলা নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াও বেঙ্গালুরু ও মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত এআই-বিষয়ক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এআই ও সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের বৈশ্বিক কেন্দ্র হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে ভারত সরকার কাজ করছে। দেশটি ইতিমধ্যে বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা চালু করেছে, যাতে বিশ্বখ্যাত চিপ নির্মাতা ও প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো দেশটিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়। সরকারের লক্ষ্য উদ্ভাবনী বাজার শক্তিশালী করা, কর্মসংস্থান বাড়ানো ও আমদানিনির্ভরতা কমানো।

সত্য নাদেলার সঙ্গে সাক্ষাতের পর মোদি এক্সে লিখেছেন, ‘এআই নিয়ে বিশ্ব ভারতের ব্যাপারে আশাবাদী।’

ভারতে মাইক্রোসফটের সর্বশেষ বিনিয়োগ ছিল ৩ বিলিয়ন ডলার। তবে এবার সেটি সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। আগের পরিকল্পনায় আগামী দুই বছরে নতুন ডেটা সেন্টার, ক্লাউড ও এআই অবকাঠামো তৈরি এবং কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের উদ্যোগ ছিল।

ভারতে তিন দশকের বেশি সময় ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে মাইক্রোসফট। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ২২ হাজারের বেশি কর্মী রয়েছেন। উন্নত কম্পিউটিং চাহিদা পূরণে কোম্পানিটি ক্লাউড ও ডেটা সেন্টারের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে।

এক বিবৃতিতে মাইক্রোসফট জানায়, তারা ভারতে চলমান কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করতে চায়। দেশটিতে তাদের সবচেয়ে বড় হাইপারস্কেল সুবিধা নিশ্চিত করতে একটি নতুন ডেটা সেন্টার ২০২৬ সালের মাঝামাঝি থেকে কার্যক্রম শুরু করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যবহৃত মোবাইল ফোন আমদানিতে বিটিআরসির ‘না’, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি মোবাইল ব্যবসায়ীদের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ব্যবহৃত মোবাইল ফোন আমদানিতে বিটিআরসির ‘না’, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি মোবাইল ব্যবসায়ীদের

বিদেশ থেকে সেকেন্ড হ্যান্ড (ব্যবহৃত), ক্লোনড, রিফারফিশড (সংযোজনকৃত) মোবাইল হ্যান্ডসেট বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। অন্যদিকে অননুমোদিত মোবাইল আমদানিকারক ও বিক্রেতারা এসব ফোন নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমদানি করতে চান। একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, এনইআইআর (ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার) পদ্ধতি কার্যকর করার সময় পেছানো এবং মোবাইল ফোন আমদানির ক্ষেত্রে ভ্যাট-ট্যাক্স কমানো।

এসব দাবি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিটিআরসির সঙ্গে বৈঠক করেন মোবাইল ব্যবসায়ীদের সংগঠন মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে বেলা ১১টা নাগাদ এই বৈঠক শুরু হয়। এমবিসিবির ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল এতে অংশ নেয়। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে বৈঠক। এ সময় বিটিআরসি ভবনের বাইরে অবস্থান নেন শতাধিক মোবাইল ব্যবসায়ী।

বিটিআরসি থেকে বের হয়ে এমবিসিবির নেতারা জানান বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। এমবিসিবির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শামীম মোল্লা বলেন, ‘আমাদের দাবিতে তারা (বিটিআরসি) কর্ণপাত করে নাই, আমাদের দাবি কেউ আমলে নেয় নাই। আমাদের কথা তারা বুঝে, বলার আগেই বুঝে, কিন্তু না বোঝার ভান করে।’

আগামীকাল বুধবার এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড), ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক হবে বলে জানান শামীম মোল্লা। সে পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

এমবিসিবির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘মিটিংয়ে আমাদের একমাত্র অ্যাজেন্ডা ছিল ইউজড (ব্যবহৃত) ফোন। আমরা বলেছি, এ দেশে ৭০-৭৫ শতাংশ মানুষ ইউজড ফোন কেনে, ব্যবহার করে আবার বিক্রি করে বা এক্সচেঞ্জ (বিনিময়) করে। আমরা বারবার বলেছি এই ফোনগুলোকে ক্লোন, কপি ও রিফারবিশড বলে কালিমা লেপন করছেন আপনারা। আমরা ক্লোন-কপি বেচি না, আমরা যে মালটা বিক্রি করি, সেটা ধনী দেশের মানুষেরা ছেড়ে দেয়, আমরা সেটা দেশে নিয়ে এসে বিক্রি করি।’

মোহাম্মদ আসলাম জানান, তাঁদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ব্যবহৃত ফোনের বাণিজ্য করতে দিতেই হবে। তবে বিটিআরসি বলেছে আপাতত এ বিষয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা নেই।

মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘আমরা বলেছি যেহেতু তারা এনইআইআর চালু করার জন্য নতুন ফোনের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, পুরাতন ফোনের জন্য যে সরঞ্জাম লাগে সেটার টাকা আমরা সারা দেশের ব্যবসায়ীরা দেব। কিন্তু তারা অনড়।’

এমবিসিবির নেতারা জানান, বুধবার মোবাইল ব্যবসা-সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রণালয় এবং এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক হবে। এরপরও তাঁদের দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন তাঁরা।

১৬ ডিসেম্বর থেকে দেশে এনইআইআর কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে বিটিআরসি। মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের এই বাধ্যবাধকতা কার্যকর হওয়ার পর কেবল সরকার অনুমোদিত বৈধ হ্যান্ডসেটই নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে দেশে মোবাইল ফোনের দাম বেড়ে যাবে এবং সাধারণ মোবাইলে বিক্রেতা পথে বসবে বলে অভিযোগ এমবিসিবির।

এমবিসিবির সঙ্গে বৈঠকের পর এক বার্তায় বিটিআরসি জানিয়েছে, মোবাইল হ্যন্ডসেট আমদানি এবং ভেন্ডর তালিকাভুক্তকরণ সনদ দেওয়ার বিদ্যমান প্রক্রিয়া সহজ করতে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু মোবাইল ফোনের মূল উৎপাদনকারী সংস্থার পাশাপাশি যেকোনো অনুমোদিত সরবরাহকারীর প্রত্যয়নপত্রসহ (চুক্তির পরিবর্তে) আবেদন করা হলে বিটিআরসি হতে সহজেই তাদের অনুকূলে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে। এমবিসিবির চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের বাজারে থাকা অবিক্রীত সব মোবাইল হ্যান্ডসেট নিয়মিতকরণের জন্য নির্ধারিত ছকে তথ্য জমা দিতে হবে। এরপর বিটিআরসি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

‘বেতার যন্ত্রপাতি ব্যবহার, বাজারজাতকরণ ও তালিকা গ্রহণের নির্দেশিকা, ২০২৪’ অনুযায়ী বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানি করা হলে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে বিটিআরসি সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৩০ মিনিটের বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার শিশুদের মনোযোগের ক্ষমতা কমায়, বলছে গবেষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪০
শিশুদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় দেওয়া বেড়ে যায়। ছবি: পেক্সেলস
শিশুদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় দেওয়া বেড়ে যায়। ছবি: পেক্সেলস

শিশু-কিশোরদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়ে বাড়ছে সচেতনতা। অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যে আইন তৈরি করেছে যে ১৬ বছরের কম বয়সী কারও ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট রাখা যাবে না। এরপর আরও অনেক দেশ এই সিদ্ধান্তের দিকে এগোচ্ছে। এদিকে এক গবেষণায় উঠে এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দৈনিক ৩০ মিনিটের বেশি সময় করলে শিশুদের মনোযোগ ধরে রাখার সক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে পারে।

৮ হাজারের বেশি শিশুর ওপর পরীক্ষা চালিয়ে এক গবেষণায় এ তথ্য জানিয়েছে সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা। তাঁরা এ গবেষণায় স্ক্রিন ব্যবহারের অভ্যাস এবং অ্যাটেনশন-ডেফিসিট/হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার (এডিএইচডি)–সম্পর্কিত উপসর্গের সম্ভাব্য সংযোগ খতিয়ে দেখেছেন।

গবেষকেরা যুক্তরাষ্ট্রের ৯ থেকে ১৪ বছর বয়সী মোট ৮ হাজার ৩২৪ শিশুকে চার বছর ধরে অনুসরণ করেন। এ সময় শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার, টিভি বা ভিডিও দেখা এবং ভিডিও গেম খেলার গড় সময় বিবেচনায় নেওয়া হয়। দেখা যায়, একটি শিশু যেখানে ৯ বছর বয়সে দৈনিক প্রায় ৩০ মিনিট স্ক্রিনে চোখ রাখত, সে ১৩ বছর বয়সে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর্যন্ত স্ক্রিনে সময় ব্যয় করছে।

গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, যে শিশুরা ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট, টিকটক, ফেসবুক, এক্স (সাবেক টুইটার) বা মেসেঞ্জারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশি সময় ব্যয় করেছে, তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে অমনোযোগিতার উপসর্গ তৈরি হয়েছে।

গবেষণায় আরও দেখা যায়, অনেক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ন্যূনতম বয়সসীমা ১৩ বছর নির্ধারিত থাকা সত্ত্বেও ৯ বছর বয়সে শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের দৈনিক গড় সময় ছিল প্রায় ৩০ মিনিট, যা ১৩ বছর বয়সে গিয়ে দাঁড়ায় আড়াই ঘণ্টায়।

পিয়ার-রিভিউড জার্নাল পেডিয়াট্রিক্স ওপেন সায়েন্স–এ প্রকাশিত এই গবেষণায় টিভি দেখা বা ভিডিও গেম খেলার ক্ষেত্রে এমন ফলাফল উল্লেখ করা হয়নি।

ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নিউরোসায়েন্স বিভাগের কগনিটিভ নিউরোসায়েন্সের অধ্যাপক টরকেল ক্লিংবার্গ বলেন, ‘আমাদের গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে নির্দিষ্টভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই শিশুদের মনোযোগ ধরে রাখার সক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বার্তা ও নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ক্রমাগত মনোযোগ বিঘ্নিত হয়। এমনকি কোনো বার্তা এসেছে কি না, এই চিন্তাও মনোযোগ সরিয়ে দেয়। এটি মনোসংযোগ ধরে রাখার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।

পরিবারের আর্থসামাজিক পটভূমি বা এডিএইচডির প্রতি জিনগত প্রবণতা কোনোটিই এই সম্পর্ককে প্রভাবিত করেনি বলে জানান গবেষকেরা।

এ ছাড়া, যেসব শিশুর আগে থেকেই অমনোযোগিতার উপসর্গ ছিল, তারা বেশি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা শুরু করেনি। এটি ইঙ্গিত দেয় যে সম্পর্কটি ব্যবহার থেকে উপসর্গের দিকে যায়, উপসর্গ থেকে ব্যবহারের দিকে নয়।

গবেষণায় হাইপার অ্যাকটিভ বা আবেগপ্রবণ আচরণ বৃদ্ধির কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি। ব্যক্তিগত পর্যায়ে এর প্রভাব সামান্য হলেও জনসংখ্যার বিস্তৃত পরিসরে এর প্রভাব লক্ষণীয় হতে পারে বলে মনে করেন গবেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত