Ajker Patrika

এএইচএফ কাপে ব্যর্থতার পেছনে যে কারণ দেখছেন দুই সাবেক অধিনায়ক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
৪৩ বছরে প্রথমবার এশিয়া কাপে সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ হকি দল। ফাইল ছবি
৪৩ বছরে প্রথমবার এশিয়া কাপে সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ হকি দল। ফাইল ছবি

এশিয়া কাপ হকির ১১ আসরের সব কটিতে খেলার অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের। আগস্টে ভারতের বিহারে বসছে টুর্নামেন্টটির ১২তম আসর। কিন্তু সেখানে থাকছে না বাংলাদেশ। ৪৩ বছরের ইতিহাসের এই প্রথম বাংলাদেশকে ছাড়াই হবে এশিয়া কাপ। যা বেশ অবাক করার মতো!

সেই অঘটনের শিকার বাংলাদেশ হয়েছে পরশু রাতে। এশিয়া কাপের বাছাইপর্ব খ্যাত এএইচএফ কাপের ফাইনালে উঠতে পারেনি মামুন উর রশিদের দল। সেমিফাইনালে ওমানের কাছে হেরেছে ৫-৪ গোলে। অথচ টুর্নামেন্টটির আগের চার আসরের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। কিন্তু এবার ধরে রাখতে পারেনি শিরোপা। কাটতে পারেনি এশিয়া কাপের টিকিটও।

এমন ব্যর্থতার পেছনে হকি অঙ্গনকেই দায়ী করলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক রফিকুল ইসলাম কামাল। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এশিয়া কাপে খেলবে না—একজন হকি খেলোয়াড় হিসেবে এমনটা চিন্তা করতেও খারাপ লাগছে। পুরো ব্যর্থতার জন্য আমাদের হকি অঙ্গনই দায়ী। কয়েক যুগ ধরে আমরা শুনছি যে বাংলাদেশের হকিতে সম্ভাবনা আছে। কিন্তু সেই সম্ভাবনাকে উন্নতি করার জন্য আমরা কোনো চেষ্টা করতে পারিনি।’

পুল পর্বে চার ম্যাচের সবগুলোতে জিতেও ওমানের কাছে ধরাশায়ী হবে বাংলাদেশ, তা হয়তো অনেকে ভাবতে পারেননি। হারের কারণ খুঁজতে গিয়ে কামাল দেখেন, ‘আমার কেন জানি মনে হয়েছে, খেলোয়াড়েরা পুরোপুরি ফিট ছিল না। ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ৩-২ গোলে জেতাটা আমার কাছে অবাক করার মতো। ওমানের বিপক্ষে চতুর্থ গোল যখন হয়েছে, খেলার তখনো ছয় মিনিট বাকি সেখানে সর্বোপরি আক্রমণাত্মক খেলার দরকার ছিল। কিন্তু সেই খেলাটা বাংলাদেশ খেলতে পারেনি। ব্যর্থতা থাকবেই, কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়টা আশা করি ফেডারেশন ভালোভাবে দেখবে।’

এএইচএফ কাপের আগে বাংলাদেশ সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিল ২০২৩ এশিয়ান গেমসে। তাই প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলার ঘাটতিকে বড় করে দেখছেন আরেক সাবেক অধিনায়ক মামুনুর রহমান চয়ন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঘাটতি ছিল অভিজ্ঞতায়। আমি প্রতিটি ম্যাচই দেখেছি, বাংলাদেশের কাছ থেকে যা আশা করেছি, তা আমি ওমানের মধ্যে দেখেছি। টুর্নামেন্টের আগে পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলেছে ওমান। সাগরে সাঁতার কেটে আসার পর নদীতে সাঁতার কাটাটা সহজই মনে হবে।’

ব্যর্থতাকে দূরে ঠেলে ঘুরে দাঁড়াতে হলে মাঠে নিয়মিত খেলা রাখা জরুরি বলে মনে করেন চয়ন, ‘এখন থেমে গেলে চলবে না। উন্নতি করতে হলে প্রথমে খেলোয়াড়দের আর্থিক ব্যবস্থা করতে হবে, মাঠে নিয়মিত খেলা রাখতে হবে। কোনো টুর্নামেন্টে খেলতে যাওয়ার আগে প্রচুর পরিমাণে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে হবে। পরিস্থিতি বুঝে খেলার অভিজ্ঞতা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেই আসবে। এগুলো যদি ফেডারেশন গুরুত্ব দিয়ে দেখে, তাহলে আমার মনে হয় আগামীতে অঘটন ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম।’

এএইচএফ কাপের দলে জায়গা পাননি রাসেল মাহমুদ জিমি। ৩৭ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে যেভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, তা উচিত ছিল না বলে মনে করেন কামাল, ‘জিমি অবশ্যই ভালো খেলোয়াড়। তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর সুযোগ ছিল। ফেডারেশন যে নিয়ম করেছে, ৩২ বছর হয়ে গেলে জাতীয় দলে খেলতে বা ট্রায়াল দিতে পারবে না। এটার সঙ্গে আমি কখনোই একমত না। প্রয়োজন মনে হলে কোচ যেকোনো খেলোয়াড়কেই দলে ডাকতে পারেন, বয়স যেমনই হোক। জিমির মতো খেলোয়াড় বাংলাদেশে আর আসবে কি না আমি জানি না। তবে তাকে সম্মানজনকভাবে বিদায় জানানো উচিত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত