Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

‘সাইকেলটা নিয়ে মারামারি হচ্ছে!’

এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়ে সাইকেল উপহার পেয়েছেন আকবর আলী। ছবি: বিসিবি

বাংলাদেশ ক্রিকেটের একমাত্র ‘বিশ্বকাপজয়ী’ অধিনায়ক তিনি। ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া আকবর আলী সদ্য সমাপ্ত এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়ে নতুন বার্তাই যেন দিয়েছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস

আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৩৫

প্রশ্ন: ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়ে পাওয়া সাইকেলটা কাকে দিলেন?

আকবর আলী: সাইকেল তো এখনো পাইনি। বলেছে, রংপুরে পাঠিয়ে দেবে। শিরোপা জিতেছি, ওটা (সাইকেল) বড় কিছু না। সবাই সাইকেল খুঁজছে! বাসায় ছোট ছোট বাচ্চা আছে। এটা নিয়েই এখন মারামারি হচ্ছে! বাচ্চা বলতে ভাতিজা, ভাগনে, কাজিনরা।

প্রশ্ন: প্লে অফের চার নম্বর দল হয়েও রংপুর ফাইনালে উঠে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কোন সূত্রে এসেছে এই সাফল্য?

আকবর: ঢাকা মহানগরের বিপক্ষে এমন একটা অবস্থায় ছিলাম, শুধু জিতলেই হবে না। আমরা যদি কোয়ালিফাই করতে চাই প্লে অফে, তাহলে কমপক্ষে ৫০ রানে অথবা ৬-৭ ওভার আগে জিততে হবে। সমীকরণের ব্যাপারে আমাদের মিটিংয়ে একটাই কথা ছিল, আমরা সেটা করব। সেটা করতে গিয়ে যদি ৫০ রানে অলআউটও হয়ে যাই, সমস্যা নেই। কিন্তু আমরা সেটা তাড়া করব। আমাদের উঠতে হলে সেটা করতেই হবে। সেটা যখন আমরা নিশ্চিত করলাম, তখন থেকে আমাদের মনে হয়েছে, আমরা আসলে যেকোনো দলকে হারাতে পারব। তার পর থেকে যেটা হলো, কোয়ালিফায়ারে আমরা পুরোই অন্য রকম ক্রিকেট খেলেছি। আমরা গ্রুপ পর্বে যে রকম ক্রিকেট খেলেছি, সেটার চেয়ে পুরোই ভিন্নরকম ক্রিকেট খেলেছি কোয়ালিফায়ারে উঠে।

প্রশ্ন: বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই প্রমাণ করেছেন আপনি সহজাত অধিনায়ক। নেতৃত্বের সঙ্গে এবার নিজের পারফরম্যান্সটা কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

আকবর: টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে দেখবেন আমি ২০-৩০ রানের মধ্যে আউট হয়ে যাচ্ছিলাম। টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে বেশি ঝুঁকি নিচ্ছিলাম। যদি ব্যাটিংয়ের কথা বলি। কিন্তু পরে নাসির ভাই ও বাবু ভাইয়ের সঙ্গে একদিন বসেছিলাম। কোয়ালিফায়ারের আগের একটা ম্যাচে দুজনের একই বার্তা ছিল, ‘একবার যদি তোমার মনে হয় আমাদের কারও ঝুঁকি নেওয়া দরকার, তাহলে তোমার সঙ্গীকে বলো বেশি ঝুঁকি নিতে। তুমি খেলাটা ডিপে নেওয়ার চেষ্টা করো।’ আমি ২০-৩০ করে আউট হয়ে যাচ্ছিলাম। তখন চিন্তা করেছিলাম, আমি বেশিক্ষণ থাকলে দলের ভালো হবে। সেই বার্তাটা কাজে দিয়েছে এবং আমি নিজেও পরে বুঝতে পেরেছিলাম, যদি শেষ পর্যন্ত থাকতে পারি, সেটাই ভালো হবে।

প্রশ্ন: দলের সিনিয়র সদস্য হিসেবে নাসির হোসেনের কোন ভূমিকা বিশেষ চোখে পড়েছে?

আকবর: নাসির ভাই অনেক দিন পর ক্রিকেটে ফিরেছেন। টুর্নামেন্টের শুরুতে ব্যাটিংয়ে তিনি অনেক শেষের দিকে নামছিলেন। তরুণ ক্রিকেটারদের ওপরের দিকে খেলাতে চেয়েছিলেন। যখন সেই জায়গায় ভালো হচ্ছিল না, তখন তিনি নিজে থেকে দায়িত্ব নিলেন এবং বললেন, ‘ঠিক আছে, আমিই গিয়ে সেটা করার চেষ্টা করি।’ আর পুরো মাঠের ভেতরের কথা যদি বলেন, তিনি আমার মনে হয় যে বাংলাদেশে যত সূক্ষ্ম ক্রিকেটজ্ঞান আছে, তাদের মধ্যে নাসির ভাই অন্যতম। শুধু নাসির ভাই নন, নাঈম-নাহিদ ভাইয়ের সঙ্গেও কথা হতো। তানভীর ভাই অনেক উপকার করেছেন। শেষের দিকে কয়েকটা ম্যাচ খেলতে পারেননি। তবে পরিকল্পনার ক্ষেত্রে অনেক উপকার করেছেন।

প্রশ্ন: টুর্নামেন্টে দারুণ বাঁহাতি স্পিনার আবু হাশিমের পারফরম্যান্স কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

আকবর: হাশিম ভাই সত্যি বলতে গত দুই-তিন বছর ধরেই আছেন এনসিএলে। কিন্তু নানা কারণে নিয়মিত ম্যাচ খেলাতে পারিনি আমরা। এ বছর প্রিমিয়ার লিগটা যখন ভালো করলেন, আমাদের বিভাগ থেকে চূড়ান্ত ছিল যে এই বছর হাশিম ভাইকে খেলানো হবে। সবচেয়ে কঠিন অবস্থায় তিনি বোলিং করেছেন। তিনি কখনোই রাতের ক্রিকেট (ফ্লাড লাইটে) খেলেননি। শিশির পড়লে কীভাবে বোলিং করতে হয়, সেটা ম্যাচে গিয়ে বুঝতে পেরেছেন। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর জন্য একটু কঠিন ছিল। তিনি শেষের ম্যাচে অনেক রান দিয়েছেন। আমার মনে হয়, দ্বিতীয় এলিমিনেটরে বা দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে, সেটা না হলে তাঁর ইকোনমি পাঁচের নিচেও থাকত। যেটা একেবারে অস্বাভাবিক।

প্রশ্ন: আপনার ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী সতীর্থদের প্রায় সবাই জাতীয় দলে চলে এসেছেন। এই ব্যাপারে কি নিজেকে নিয়ে আফসোস হয়?

আকবর: এটা আমার হাতে নেই। এটা নিয়ে আমার কথা বলাও ঠিক হবে না।

প্রশ্ন: উইকেটরক্ষক ব্যাটার না হলে বোলার-ব্যাটার হলে কি দ্রুত আসার সুযোগ হতো? যেহেতু একই পজিশনের একাধিক ক্রিকেটার জাতীয় দলে আছেন।

আকবর: না, মনে হয় না। কারণ, সব জায়গাই চ্যালেঞ্জিং। আপনি কখনো বলতে পারবেন না এটা কম চ্যালেঞ্জিং আর ওটা বেশি চ্যালেঞ্জিং। জাতীয় দলের কথা যদি বলেন, প্রতিটি জায়গার জন্য লড়াই করতে হবে। পাঁচ-ছয় বছর আগে বলা হতো, বাংলাদেশে পেস বোলার নেই। এখন দেখুন, বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে কতটা প্রতিযোগিতা হয়। এখন বাংলাদেশে অনেক বাঁহাতি বোলার আছে। কোনো জায়গাই সহজ বলে আমার মনে হয় না।

প্রশ্ন: কদিন আগে কোচিং কোর্স করেছেন। সেটা খেলায় উন্নতি আনতে কতটা সহায়তা করেছে?

আকবর: সত্যি বলতে এটা একটা বেসিক কোর্স ছিল। আমার মনে হয় যে এখানে এমন কিছু শিখিনি যে টেকনিক্যাল অংশের কথা যদি বলেন, যা আমি আগে থেকে জানতামই না। এটা আসলেই একটা বেসিক কোর্স ছিল। কিন্তু যেটা উপকার করেছে, সেটা খেলোয়াড় হিসেবে নয়। বহিরাগত হিসেবে ক্রিকেটকে কীভাবে দেখছেন আর একটা ক্রিকেট ম্যাচ আপনার জীবনে কতটা ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারে। আদৌ পারে কি না। এসব বিশ্লেষণ করতে সহায়তা করেছে।

প্রশ্ন: এনসিএলের চার দিনের ম্যাচ শুরু হচ্ছে কদিন পর, এখানে নিজেকে কীভাবে উপস্থাপন করতে চান?

আকবর: আমি গত বছরও বেশি চার দিনের ক্রিকেট খেলতে পারিনি। যদি প্রথম থেকেই থাকি, পুরো মৌসুম খেলতে পারলে স্মরণীয় করে রাখার চেষ্টা থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জুলাই যোদ্ধাদের’ দাবি মেনে সনদের অঙ্গীকারনামায় জরুরি সংশোধন আনল কমিশন

দুই দাবিতে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মঞ্চে অবস্থান ‘জুলাই যোদ্ধাদের’

জুলাই জাতীয় সনদের ৫ নম্বর দফা সংশোধনের যে প্রস্তাব দিলেন সালাহউদ্দিন

অঙ্গীকারনামায় সংশোধনীর পরও বিক্ষোভ, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ রণক্ষেত্র

রাকসুতে ভিপি-এজিএসে শিবির, জিএস পদে আধিপত্যবিরোধী ঐক্যের জয়

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত