Ajker Patrika

পাগলাটে ম্যাচে ‘শ্বাসরুদ্ধকর’ নিষ্পত্তি 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
পাগলাটে ম্যাচে ‘শ্বাসরুদ্ধকর’ নিষ্পত্তি 

ম্যাচে পেনাল্টি হলো তিনটি। গোলের সংখ্যা ৬। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে গোল হলো দুইবার। ক্ষণে ক্ষণে পাল্টালো ম্যাচের মোড়। দেশের ঘরোয়া ফুটবলে এমন পাগলাটে ম্যাচ শেষ কবে হয়েছে তা রীতিমতো গবেষণা বিষয়! পাগলাটে ম্যাচের নিষ্পত্তিটাও হলো শ্বাসরুদ্ধকরভাবে। ৩-৩ গোলের সমতায় থাকা ম্যাচে টাইব্রেকারে সাইফ স্পোর্টিংকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে চার বছর পর ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনী। ৯ জানুয়ারির ফাইনালে আকাশী-নীলদের প্রতিপক্ষ রহমতগঞ্জ। 

উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে নাটকও কম হয়নি। দুইবার পেনাল্টি থেকে গোল করার পরও রেফারি সায়মুন হাসানের গোল বাতিলের সিদ্ধান্ত। পরে রেফারির চোট নিয়ে মাঠ ছাড়া। দানিয়েল কলিন্দ্রেসের ম্যাচ সেরার পুরস্কার সতীর্থ শহীদুল আলম সোহেলের হাতে তুলে দেওয়ার মতো গল্পও আছে এই ম্যাচে। 

বলতে হবে দুই দলের হাল ছেড়ে না দেওয়ারও গল্প। ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে যখন ফেডারেশন কাপের টানা দ্বিতীয় ফাইনালের পথে সাইফ, তখনই শেষ সময়ে গোল করে ম্যাচটাকে বাড়তি ৩০ মিনিট পর্যন্ত নিয়েছেন আবাহনীর কোস্টারিকান ফরোয়ার্ড দানিয়েল কলিনদ্রেস। পাল্টা জবাবটা দিয়েছে সাইফও। ১২১ মিনিট পর্যন্ত ৩-২ গোলে এগিয়ে থাকা আবাহনীর জালে বল জড়িয়ে খেলাকে টাইব্রেকারে নিয়েছেন সাজ্জাদ হোসেন। কিন্তু ভাগ্যের খেলায় শেষ পর্যন্ত হার মেনেছেন জামাল ভূঁইয়ারা। টাইব্রেকারের সময় পেনাল্টিও মিস করেছেন সাইফ অধিনায়ক। 

টার্ফের মাঠে দুই দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ ছিল ম্যাচের শুরু থেকেই। ৪ মিনিটেই গোলের দারুণ এক সুযোগ হাতছাড়া করে সাইফ। ডি-বক্সের বাইরে থেকে নাইজেরিয়ান এমফোন সানডের শট ফেরে পোস্টে লেগে। 

এরপরই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হাতে নেয় আবাহনী। ৮ মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর রাকিব হোসেনকে ফাউল করেন মঞ্জুর রহমান, পেনাল্টির বাঁশি বাজান সায়মুন হাসান। দুই মিনিট পর স্পটকিকে বল জালে জড়ান ব্রাজিলিয়ান রাফায়েল অগুস্তো। 

এক মিনিট বাদে আবারও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল আবাহনীর সামনে। দানিয়েল কলিন্দ্রেসের ক্রস থেকে রাকিব হোসেনের শট গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন সাইফের রোয়ান্ডান ডিফেন্ডার এমেরি বাইসাঙ্গে। ১৭ মিনিটে সাইফ গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেনকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি রাকিব। 

আবাহনীর আক্রমণ ঠেকিয়ে ২০ মিনিটে সাইফকে সমতায় ফেরান এমফোন সানডে। এমেকা ওগবাঘের কাটব্যাক থেকে প্রথমে শট নিয়েছিলেন উজবেক মিডফিল্ডার আসরার গফুরভ। তার নেওয়া শট প্রথম দফায় ফিরিয়ে দিলেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি আবাহনী গোলরক্ষক সোহেল। ফিরতি বলে শট নিয়ে বল জালে জড়ান এমফোন। 

 ২৭ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পায় আবাহনী। কলিন্দ্রেসের দারুণ এক রক্ষণচেরা পাস থেকে নাবীব নেওয়াজ জীবনের চিপ দারুণ নৈপ্যুন্যে ফিরিয়ে দেন সাইফ গোলরক্ষক পাপ্পু। আবার প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে টুটুল হোসেন বাদশার ভুল থেকে আবাহনী গোলরক্ষক সোহেলকে একা পেয়েও গোল পাননি এমফোন। 

 ৭২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ব্যবধান বাড়ায় সাইফ। ডি-বক্সের ভেতর সাদ্দাম হোসেনকে ফাউল করেন আবাহনীর বদলি ডিফেন্ডার মনির হোসেন। দুই মিনিট পর স্পটকিকে লক্ষ্যভেদ করেন নাইজেরিয়ান এমেকা ওগবাঘ। এর চার মিনিট পরেই আবাহনীকে বিপদে ফেলে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক রাফায়েল অগুস্তো। 

রাফায়েলের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন উইঙ্গার জুয়েল রানা। মাঠে নেমেই এমফোন সানডেকে ডি-বক্সে করে বসেন ফাউল। স্পটকিক নিতে এসেছিলেন এমেরি বাইসাঙ্গে। ৮২ মিনিটে দুবার বল জালে জড়ালেও নিয়ম মেনে শট না নেওয়ায় প্রতিবারই গোল বাতিল করেছেন রেফারি সায়মুন হাসান। একইসঙ্গে বাইসাঙ্গেকে দেখিয়েছেন হলুদ কার্ড। 

হার দেখতে থাকা আবাহনীকে অতিরিক্ত সময়ে সমতায় ফেরান কোস্টারিকান দানিয়েল কলিনদ্রেস। বামপ্রান্ত থেকে নুরুল নাইয়ুম ফয়সালের পাস থেকে ডি-বক্সে বল পান জুয়েল রানা। বল বাড়ান কলিন্দ্রেসের দিকে। বিশ্বকাপে খেলা এই ফরোয়ার্ডের শটে বল গোললাইনে থাকা সাইফের এক ডিফেন্ডারের গায়ে লাগলেও ধীরে ধীরে পার হয় গোললাইন। 

ম্যাচটা অতিরিক্ত সময়ে গড়াতেই আবারও গোল আবাহনীর। ৯৪ মিনিটে জুয়েল রানার ক্রস থেকে মেহেদী হাসান রয়্যালের পা ঘুরে ফাঁকায় বল পান রাকিব হোসেন। ফাঁকা জালে রাকিবের গোলে উল্লাসে ভাসে আবাহনী ডাগআউট। 

এরপর আলোচনায় স্বয়ং রেফারি সায়মুন হাসান। শক্ত হাতে ম্যাচ পরিচালনা করতে থাকা সায়মুন ১০১ মিনিটে চোটের কারণে নিজেই হয়েছেন বদলি। তার জায়গায় বাকি সময় ম্যাচ পরিচালনা করেছেন বদলি রেফারি মাহমুদ জামাল ফারুকী নাহিদ। 

অতিরিক্ত সময়ের শেষ ভাগে এসে যখন ফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখছে আবাহনী তখনই ম্যাচটাকে টাইব্রেকে নিয়ে যান সাইফের বদলি ফরোয়ার্ড সাজ্জাদ হোসেন। শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগ মুহূর্তে ১২২ মিনিটে এমফোন সানডের নিচু ক্রস থেকে আলতো টোকায় সাইফের ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে দেন সাজ্জাদ। কিন্তু ম্যাচটাকে গেলেও এমফোন আর জামাল সুযোগ নষ্ট করলে ফাইনালে খেলা হয়নি সাইফের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বৃষ্টিতে ম্যাচ বাতিলের আগে জ্যোতিদের হতাশার ব্যাটিং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার আগে মাঠ ছেড়ে যাচ্ছেন মারুফা আক্তাররা। ছবি: আইসিসি
বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার আগে মাঠ ছেড়ে যাচ্ছেন মারুফা আক্তাররা। ছবি: আইসিসি

বৃষ্টি বাগড়া দিল কয়েকবার। তাতে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে আসে ২৭ ওভারে। মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে বৃষ্টির মতো আরেকটি দৃশ্য খুব পরিচিত হয়ে উঠেছে। সেটা বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের হতাশা। এমনকি শেষ ম্যাচেও তা এড়ানো গেল না।

মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ১১৯ রান করেছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। দুই অঙ্কের ছোঁয়া পেয়েছেন মাত্র ৪ ব্যাটার। প্রথম ওভারে সুমাইয়া আক্তারকে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন রেনুকা সিং। আরেক ওপেনার রুবাইয়া হায়দারও (১৩) থিতু হতে পারেননি।

তিনে নেমে বড় ইনিংস খেলার সুবাস দিচ্ছিলেন শারমিন আক্তার সুপ্তা। কিন্তু দলীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রানে ফিরতে হয় তাঁকে। সোবহানা মোস্তারি এসে আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করেন। তাঁর ২১ বলে ৪ চারে ২৬ রানের ইনিংস থামান রাধা যাদব। এরপর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ। দিন শেষে অলআউট না হওয়ার স্বস্তি নিয়ে শেষ হয় ইনিংস।

ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন রাধা যাদব। দুটি উইকেট শিকার শ্রী চারানির। ডিএলএস মেথডে ভারতের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২৬ রান। যে লক্ষ্যে ব্যাট করে ৮.৪ ওভারে বিনা উইকেটে ৫৭ রান করে ভারত।। এরপর বৃষ্টি আবার বাগড়া দলে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। ম্যাচ বাতিল হওয়ার আগে স্মৃতি মান্ধনা ৩৪ ও আমানজোতে কৌর ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।

ম্যাচ বাতিল হওয়ায় ৭ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করলেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। আর সমান ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে শেষ দল হিসেবে সেমিফাইনালেম উঠল ভারত। ভারতের আগে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েরা সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এমবাপ্পে-বেলিংহামের গোলে রিয়ালের এল ক্লাসিকো জয়

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ১১
গোলের পর এমবাপ্পেকে ঘিরে সতীর্থদের উচ্ছ্বাস। ছবি: এএফপি
গোলের পর এমবাপ্পেকে ঘিরে সতীর্থদের উচ্ছ্বাস। ছবি: এএফপি

খেলার শেষ মিনিটে পেদ্রিকে রেফারি লাল কার্ড দেখানোর সঙ্গে সঙ্গেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল দুই দলের ডাগআউট। খেলা শেষেও তর্কে জড়িয়ে পড়েন খেলোয়াড়েরা। আপনি হয়তো বলতে পারেন এ আর নতুন কি! এল ক্লাসিকো বলে কথা। মাঠের লড়াইয়ে যেখানে থাকে যুদ্ধের ভাব। থিয়েটারে রিলিজ করলেও বক্স অফিসে সহজেই হিট তকমা পেয়ে যাবে এই ম্যাচ।

তবে সেই সিনেমায় তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলবেন কেবল রিয়াল মাদ্রিদ ভক্তরাই। আজ বার্সেলোনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে তাদের জয় উপহার দিয়েছেন এমবাপ্পে-বেলিংহামরা। তাও টানা ৪ এল ক্লাসিকো হারের পর।

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে পেনাল্টি পায় রিয়াল। কিন্তু ভিএআরে দেখা যায় লামিনে ইয়ামাল নন উল্টো ভিনিসিয়ুস জুনিয়রই ফাউল করে বসেন। ১২ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে দারুণ এক ভলিতে কাঁপান জাল। অফসাইডের সংকেত নিয়ে এবারও বাধা হয়ে দাঁড়ায় ভিএআর।

২২ মিনিটে রিয়ালকে আর কোনোকিছুই আটকাতে পারেনি। আটকাতে পারেনি এমবাপ্পেকেও। জুড বেলিংহামের দুর্দান্ত এক থ্রু বল খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে নেন তিনি। সামনে যখন শুধু গোলরক্ষক ভয়চেক সেজনি। তখন এমবাপ্পে আর ভুল করতে পারেন কী করে! অসাধারণ শটে বল জালে ঠেলে সোজা চলে যান উদ্যাপনে। এল ক্লাসিকোর ইতিহাসে টানা ৪ ম্যাচে গোল করা তৃতীয় ফুটবলার তিনি।

এরপর বল বার্সার দখলে বেশি থাকলেও রিয়াল শানাচ্ছিল একের পর এক আক্রমণ। আর বার্সা ছিল রিয়ালের একটি ভুলের অপেক্ষায়। সেই ভুল করে বসেন আর্দা গুলের। বক্সের সামনে পেদ্রির কাছে বল হারান তিনি। সেখান থেকে আলেহান্দ্রো বালদে বল পেয়ে তা বাড়ান মার্কাস রাশফোর্ডকে। তাঁর কাটব্যাক থেকে সুযোগ সন্ধানী ফরোয়ার্ডের মতোই জাল খুঁজে নেন ফেরমিন লোপেস। সমতায় ফেরার স্বস্তি নিয়ে বার্সা বিরতিতে যাওয়ার সম্ভাবনা তখনো খুব একটা বেশি ছিল। রিয়াল বল পেলেই যে ছুটছিল আক্রমণের দিকে। ৪২ মিনিটে স্বাগতিকদের ফের এগিয়ে দেন বেলিংহাম। ২১ শতাব্দীতে এল ক্লাসিকোর এক ম্যাচে গোল ও অ্যাসিস্ট করা সর্বকনিষ্ঠ ফুটবরার তিনি (২২ বছর ১১৯ দিন)। ছাড়িয়ে গেছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে (২২ বছর ২৬৭ দিন)।

বিরতির পর ম্যাচের ফিরে আসতে মরিয়া হয়ে ওঠে বার্সা। রিয়ালের রক্ষণ দুর্গ ভেঙে তেমন কোনো সুযোগই পাচ্ছিল না। তাদের হাইলাইন ডিফেন্সের সুযোগ নিয়ে এমবাপ্পেও বেশ কিছু পাল্টা আক্রমণে ত্রাস সৃষ্টি করেন। কিন্তু একটি সুযোগও কাজে লাগাতে পারেননি। এমনকি পেনাল্টিও না। ৬২ মিনিটে স্পটকিক থেকে তাঁর নেওয়া শট খুব সহজেই ঠেকান সেজনি। যোগ করা সময়ের নবম মিনিটে অরেলিয়ে চুয়োমেনিকে ফাউল করে পেদ্রি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখলে ১০ জনের দলে নামে বার্সা। হতাশার সঙ্গে তাই ক্ষোভ নিয়েও মাঠ ছাড়তে হলো তাদের।

এই জয়ে ১০ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে লা লিগায় শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল রিয়াল। ৫ পয়েন্ট দূরে থেকে দুইয়ে বার্সা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাফুফের সভা হয়েছে, কিন্তু ‘আলোচনা’ হয়নি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ২৩
বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির ৫ম সভা। ছবি: বাফুফে
বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির ৫ম সভা। ছবি: বাফুফে

এক বছর পূর্তিতে আজ বাফুফে ভবনে হয়েছে বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির পঞ্চম সভা। যেখানে আসেনি উল্লেখযোগ্য কোনো সিদ্ধান্ত। বেলা ২টায় শুরু হওয়া সভার চার ঘণ্টায় এক বছর নারী ফুটবল দলের সাফল্য ও গঠনতন্ত্রের সংশোধন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অথচ অ্যাজেন্ডা থাকলেও বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশ-হংকং ম্যাচের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে আলোচনাই হয়নি।

সভা শেষে বাফুফের মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘আজ তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বে বাফুফে নির্বাহী কমিটি এক বছর অতিক্রম করল। আমরা এক বছর অনেক ফুটবল কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছি। নারী দল সাফ চ্যাম্পিয়ন, প্রথমবারের মতো নারী দলের এশিয়া কাপের মূল পর্বে কোয়ালিফাই করেছে, ফুটসাল এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে খেলেছে, হামজা-শমিতের মতো ফুটবলার বাংলাদেশের হয়ে খেলছে, এ রকম অনেক সফলতাই আমাদের এসেছে। ব্যর্থতা থাকলে সেটা আপনারা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

নারী ফুটবল দল সাফ জেতার পর দেড় কোটি টাকা বোনাসের ঘোষণা দেয় বাফুফে। সেই অর্থ এখনো দেওয়া হয়নি। বাবু বলেন, ‘আজকে এটা নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমরা সামনে আলোচনার মাধ্যমে এটা তাদের প্রদানের ব্যবস্থা করব।’

সবশেষ দুই ম্যাচে হংকংয়ের কাছে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে জিততে পারেনি পুরুষ ফুটবল দল। সেই প্রসঙ্গ কেউ তোলেননি বলে দাবি বাবুর, ‘না, আমাদের এ রকম আলোচনা হয়নি। হলে তো অবশ্যই বলতাম। জাতীয় দলের বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। এটি জাতীয় দল কমিটির বিষয়, সভাপতি নিজেই এটার চেয়ারম্যান। এই (আয়-ব্যয়ের) বিষয়টি আলোচনায় ওঠেনি। গঠনতন্ত্র ও এক বছরের কর্মকাণ্ড নিয়ে অনেক আলোচনা হওয়ায় দুটি বিষয় আলোচনা হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘরের মাঠে খেলতে না পারার আক্ষেপ বাংলাদেশ কোচের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অনুশীলনে ফুটবলারদের নিয়ে বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার। ছবি: বাফুফে
অনুশীলনে ফুটবলারদের নিয়ে বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার। ছবি: বাফুফে

ফুটবলে দিন শেষে ফলই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলারের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল আজ থাইল্যান্ডকে কি হারাতে পারবেন ঋতুপর্ণা-আফঈদারা? জবাবে বাটলার পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ শেষ কবে জিতেছিল?

দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে গিয়ে প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডের কাছে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। হেরেছে ৩-০ গোলে। কাল লড়াইটা তাই ঘুরে দাঁড়ানোর। ব্যাংককের চালেম ফ্রা কিয়াত স্পোর্টস সেন্টারে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায়।

খেলায় যেকোনো দলই জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে। তবে প্রতিপক্ষ যখন র‍্যাঙ্কিংয়ে ৫১ ধাপ এগিয়ে থাকা থাইল্যান্ড। দুবার বিশ্বকাপ খেলা দলটির বিপক্ষে তখন বাটলারও খুব একটা উচ্চাশা দেখার সুযোগ পান না। আগের ম্যাচের ভুল শুধরে স্বাগতিকদের চ্যালেঞ্জে ফেলার সাহস অবশ্য তিনি করছেন। আজ বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘আমরা সিস্টেমে কিছুটা পরিবর্তন এনেছি। কিছু কিছু জায়গা ঘাটতি রয়েছে আমাদের, সেটা পূরণ করতে হবে। আগের ম্যাচে আমরা মৌলিক কিছু ভুল করেছি—যেমন প্রথম ৪৫ সেকেন্ডে গোল হজম করা এবং তা সবসময় পাহাড়সম চাপ বয়ে আনে।’

ঘরের মাঠে বাংলাদেশ সবশেষ খেলেছে গত বছরের জুনে চায়নিজ তাইপের বিপক্ষে। এরপর সবগুলো ম্যাচ শুধু দেশের বাইরে খেলেছে। বাটলারও খানিকটা আক্ষেপ ভরা কণ্ঠে বলেন, ‘খেলার মধ্যে অনেক কিছুই থাকে, যা ফলাফলে প্রভাব ফেলে। আমি কাউকে দোষ দিতে পছন্দ করি না এবং অজুহাতও দিই না। তবে দেশের বাইরে জেতার চেয়ে ঘরের মাঠে ম্যাচ জেতা অনেক সহজ।’

প্রথম ম্যাচে হারের পর ফুটবলারদের আচরণ ও মানসিকতা ক্ষুব্ধ করেছিল বাটলারকে, ‘কয়েকজনের সঙ্গে আমি আলাদাভাবে কথা বলেছি। তাদের অ্যাপ্রোচ ও মাইন্ডসেট নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। বিশেষ করে এক-দুজন আছে, যাদের আমি সত্যিকারের ম্যাচ উইনার মনে করি এবং আগের ম্যাচে তারা তাদের সামর্থ্যটা মেলে ধরতে পারেনি।’

থাইল্যান্ডের সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে বাটলার বলেন, ‘আমরা থাইল্যান্ডের লেভেলে নেই। তারা খুবই ভালো দল এবং সেটা তারা দেখাবেও। তারা সম্ভবত পুরো ভিন্ন এক দল মাঠে নামাবে (আজ)। অনেক সময় বেঞ্চ দেখে দলের শক্তি বোঝা যায়। তাদের বেঞ্চ দেখে মনে হলো এখানে আরকটা দল বসে আছে। তাই আমাদের বাস্তববাদী হতে হবে।’

এই সফরের আগে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচই খেলেছে বাংলাদেশ। এক যুগ আগের ম্যাচে হারতে হয়েছিল ৯-০ গোলে। বাটলার বলেন, ‘যদি আমরা মানদণ্ড দাঁড় করানোর ও আরও পেশাদার হওয়ার কথা বলি, বড় কিছু কল্পনা করার আগে আমাদের সেই জায়গায় পৌঁছাতে হবে। যেখানে আমরা থাইল্যান্ডের মতো জায়গায় এসে ম্যাচ জেতার কথা ভাবতে পারি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা একটা মোমেন্টাম তৈরি করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত