Ajker Patrika

বাংলাদেশের লক্ষ্য এখন মিশন অস্ট্রেলিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৫, ১৩: ০৯
বাংলাদেশের লক্ষ্য এখন মিশন অস্ট্রেলিয়া

মঞ্চের বাইরে তখন অপেক্ষারত অবস্থায় ফুটবলাররা। জায়ান্ট স্ক্রিনে চলছিল নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পারফরম্যান্সের কিছু ঝলক। মনিকা চাকমা, আফঈদা খন্দকার, মারিয়া মান্দারা খানিকটা ঘাড় বেঁকিয়ে দেখছিলেন তা। আর কানে ভেসে আসছিল ভক্ত সমর্থকদের চিৎকার। এটাই বলে দীর্ঘ ভ্রমণ ক্লান্তি দূরে ঠেলে সংবর্ধনা নিয়ে কতটা উৎসুক ছিলেন তাঁরা।

রাত আড়াইটায় সংবর্ধনা দেওয়ার কথা থাকলেও বাফুফের অনুষ্ঠান শুরু হয় ৩টা ৮ মিনিটে। মিয়ানমার থেকে থাইল্যান্ড হয়ে ঢাকায় ফিরেন আফঈদা-ঋতুপর্ণারা। বিমানবন্দর থেকে সোজা হাতিরঝিলের অ্যাম্ফিথিয়েটারে আসেন তাঁরা। সকালের ফ্লাইটে ভুটানে রওনা দেবেন কয়েক ফুটবলার। যে কারণে রাতেই সংবর্ধনার আয়োজন করে বাফুফে। আলো ঝলমলে মঞ্চে নির্ধারিত সময়ের আগেই হাজির হতে থাকেন ফুটবলপ্রেমীরা। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশকে নারী এশিয়ান কাপে নিয়ে যাওয়া ফুটবলারদের স্বাগত জানাতে অপেক্ষা কিছুটা দীর্ঘ হলেও বেশ প্রাণোচ্ছল দেখা যায় তাঁদের।

আধ ঘণ্টার কিছুটা বেশি সময়ের অনুষ্ঠানের শুরুতে ফুলের তোড়া দিয়ে ফুটবলারদের শুভেচ্ছা জানান বাফুফে নির্বাহী কমিটির সদস্যরা। সঙ্গে বাজতে থাকে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম’ সংগীত। উপস্থাপক প্রথমে মাইক তুলে দেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলামের হাতে। আমিনুল বলেন, ‘বাংলাদেশের ফুটবল উন্মাদনা এটাই। বাংলাদেশের মানুষ যে ফুটবলকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে, এটাই তার প্রমাণ।’

সমর্থকদের স্লোগানের জন্য ঋতুপর্ণা চাকমা কথা বলতে প্রায় মিনিট খানেক সময় নেন। মেয়েদের লড়াইয়ের মানসিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা যে এই পর্যায়ে এসেছি, সেটা দলীয় পরিশ্রমের কারণে। ফুটবল কোনো ব্যক্তিগত খেলা নয়। আমরা বাংলাদেশের মেয়েরা জানি কীভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে লড়াই করতে হয়। আমাদের প্রতি বিশ্বাস রাখবেন। আমরা আপনাদের নিরাশ করব না। শুধু এশিয়া নয়, বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যেতে চাই আমরা।’

এমন মুহূর্ত অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার মনে রাখবেন আজীবন, ‘আমাদের এই সাফল্য একদিনে আসেনি। খুবই ভালো লাগছে। এই মুহূর্ত কখনো ভোলার মতো নয়। সকলে আমাদের জন্য দোয়া করবেন আমরা যেন আরও ভালো কিছু করতে পারি। শুধু দক্ষিণ এশিয়া ও এশিয়া নয়, আমরা যেন বিশ্বমঞ্চে দেশকে আরও অনেক দূর নিয়ে যেতে পারি।’

ইতিহাস গড়া সাফল্যের পেছনে মেয়েদের কৃতিত্ব দিলেন কোচ পিটার বাটলার, ‘কঠিন একটা সপ্তাহ ছিল এবং আমি বলব সম্ভবত এটা স্রেফ কঠিন একটা সপ্তাহ ছিল না। কিন্তু তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সবশেষ ৯ থেকে ১২ সপ্তাহ আমাদের কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। গত বছর থেকে যেটা শুরু হয়েছিল, আমাদের ওঠা-নামার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। টালমাটাল সময় ছিল। তবে এই মেয়েদের ছাড়া আজ আমরা এখানে থাকতে পারতাম না। মেয়েরা যা করেছে, সে জন্য তাদের ধন্যবাদ। টিম স্টাফসহ সবাইকে ধন্যবাদ।’

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে তিন ম্যাচে ৫ গোল করেছেন ঋতুপর্ণা। তাঁর নাম তাই মুখরিত হয়ে পড়েছে সবখানে। প্রধান অতিথি হিসেবে আসা সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর কাছে তিনি বাংলাদেশের সেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, ‘প্রথমত খেলোয়াড়দের ধন্যবাদ। আপনারা দুর্দান্ত। আপনাদের খেলা আমি দেখেছি। আমি কিছুদিন আগে, বোধ হয় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জয়ের পর আমি ফেসবুকে লিখেছিলাম,বাংলাদেশের অ্যাথলেটদের মধ্যে ঋতুপর্ণা আমার ফেবারিট। আমি একটু কারেকশন করতে চাই। আপনি আমার কাছে প্রিয় ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব। আপনি যেভাবে বলেছেন, বাংলাদেশের মেয়েরা জানে কীভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দৌড়াতে হয়...এটা দারুণ।’

আগামী বছরের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় হবে এশিয়ান কাপ। শেষের বক্তব্যে তাই বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল জানালেন, লক্ষ্য এখন মিশন অস্ট্রেলিয়া, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের নারী জাতির পক্ষ থেকে আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনারা দুটি কাজ করেছেন। আপনারা নতুন করে ইতিহাস লিখছেন এবং আমাদের সমাজের মন-মানসিকতা বদলানোর একটা যাত্রাতে আমাদের এগিয়ে নিচ্ছেন। আমরা ১৮ কোটি মানুষ, এটা একটা টিম ওয়ার্ক। আমরা ১৮ কোটি মানুষের দল, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আপনাদের সমর্থন দেওয়ার জন্য। আপনারা এগিয়ে যান। এখন আমাদের একটাই লক্ষ্য-মিশন অস্ট্রেলিয়া।’

সবার বক্তব্য শেষে কোয়ালিফায়েড লেখা বোর্ডে দলীয় ফটোসেশন হয় মেয়েদের। মঞ্চ ছাড়ার সময় ঋতুপর্ণার দিকে ওপর থেকে গোলাপ ছুড়ে মারেন এক সমর্থক। সেটা লুফে নিতে কোনো অসুবিধা হয়নি তাঁর। গোলাপের মতো করেই যেন নারী ফুটবলের বড় স্বপ্নটাকে আগলে রাখবেন তিনি।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্যাম্প ন্যুতে দীর্ঘদিন পর ফিরে মেসির আবেগঘন পোস্ট

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ২৪
দীর্ঘ দিন পর ক্যাম্প ন্যুতে ফিরে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘ দিন পর ক্যাম্প ন্যুতে ফিরে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত

লিওনেল মেসির বার্সেলোনা ছাড়ার পর কেটে গেছে চার বছরেরও বেশি সময়। কিন্তু যে ক্লাবে তিনি প্রায় দুই দশক কাটিয়েছেন, তাঁর ‘মেসি’ হয়ে ওঠা যেখানে, সেই জায়গা কি এত সহজেই স্মৃতি থেকে ‘ডিলিট’ করা সম্ভব! দীর্ঘদিন পর ফিরে মেসি নস্টালজিক হয়ে পড়লেন।

৮৯৪ দিন পর ৭ নভেম্বর ক্যাম্প ন্যুতে ফিরেছে বার্সেলোনা ফুটবল। যে ক্লাবের জার্সিতে মেসি অসংখ্য শিরোপা জিতেছেন, তাঁর অনেক স্মৃতি ক্যাম্প ন্যুতে, সেখানে অনেকটা নিভৃতে ঘুরে গেলেন তিনি। মাঠে কিছু ছবি তুলে নিজের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে সেটা পোস্ট করেন মেসি। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লেখেন, ‘আমি গত রাতে ফিরে গিয়েছিলাম এমন এক জায়গায়, যেটাকে অনেক মিস করি। এই জায়গাটা ছিল আমার মন-প্রাণ। অনেক সুখ ছিল এখানে। আমি যে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ সেটা আপনারা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন।’

২০২১ সালে কান্নাভেজা চোখে ক্যাম্প ন্যু ছেড়ে গিয়েছিলেন মেসি। সেই দৃশ্য ফুটবলভক্তদের স্মৃতিতে এখনো তরতাজা। বার্সায় এরপর তাঁর ফেরার গুঞ্জন শোনা গেলেও সেটা গুঞ্জনই রয়ে গেছে। আর্জেন্টাইন তারকা ফরোয়ার্ড ফিরতে পারেননি বার্সায়। ইনস্টাগ্রামে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড বলেন, ‘একদিন আবার ফিরতে পারব। খেলোয়াড় হিসেবে বিদায় জানানোর জন্য নয়। বরং এমন কিছুর জন্য যেটা আগে কখনো পারিনি।’

বার্সা ছেড়ে মেসি ২০২১ সালে গিয়েছিলেন প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি)। কিন্তু দুই বছর থাকার পর পিএসজির পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠেছিল তাঁর কাছে। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড পাড়ি জমান ইন্টার মায়ামি। ঠিক তার এক মাস আগে (২০২৩-এর জুনে) সংস্কারের জন্য খেলা বন্ধ হয়ে যায় ক্যাম্প ন্যুতে। ৮৯৪ দিন পর ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক ক্যাম্প ন্যুতে ফেরার পর অনুশীলন করেছেন রবার্ট লেভানডফস্কি-লামিনে ইয়ামালরা। এদিকে মায়ামির জার্সিতে ২৮ মাসে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলে ৮৫ ম্যাচ খেলেছেন। ৭৬ গোল করেছেন ও অ্যাসিস্ট করেছেন ৩৮ গোলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই মলাটে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ৫০ ম্যাচের ‘টিকিট’, দাম কত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকের রজতজয়ন্তী উপলক্ষ্যে প্রকাশ করা হয়েছে ‘মেমোরেবল ম্যাচ টিকেটস’। ছবি: ফেসবুক
বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকের রজতজয়ন্তী উপলক্ষ্যে প্রকাশ করা হয়েছে ‘মেমোরেবল ম্যাচ টিকেটস’। ছবি: ফেসবুক

টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকের পর ২৫ বছর পূর্ণ করে ফেলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে হাঁটিহাঁটি পায়ে শুরু হয় টেস্টে বাংলাদেশের পথচলা। ২৫ বছরে ঐতিহাসিক কিছু মুহূর্ত নিয়ে ‘মেমোরেবল ম্যাচ টিকেটস’ নামে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করা হয়েছে। বইটি কেনা যাবে ৮০০ টাকায়।

বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকের রজতজয়ন্তী উপলক্ষ্যে দুই দিনব্যাপী চলা ক্রিকেট কনফারেন্স শেষ হলো আজ। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে বাংলাদেশের আড়াই দশকের স্মরণীয় মুহূর্ত নিয়ে ‘মেমোরেবল ম্যাচ টিকেটস’ প্রকাশ করেছে ক্রিকেট স্মারক সংগ্রাহক জুনায়েদ পাইকার। ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে বাছাই করা ৫০টি ঐতিহাসিক ম্যাচ টিকিট নিয়ে সাজানো এই গ্রন্থে ফুটে উঠেছে আড়াই দশকের আবেগ, স্মৃতি ও গৌরব। জুনায়েদ বলেন, ‘এই টিকেট শুধু স্মারক নয়, আমাদের ক্রিকেটের পথচলা ও অগ্রগতির প্রতীক।’ বাংলাদেশ ক্রিকেট জাদুঘর ফেসবুকে বইটির একটি বিজ্ঞাপনও করেছে। দুই মলাটের এই বইয়ের দাম ৮০০ টাকা। বইটি কীভাবে কেনা যাবে, সেটার লিংকও বাংলাদেশ ক্রিকেট জাদুঘর ফেসবুকে দিয়েছে।

‘মেমোরেবল ম্যাচ টিকেটস’ স্মারকগ্রন্থে বাংলাদেশের শততম টেস্ট জয়ও থাকবে বলে আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন জুনায়েদ। ২০১৭ সালে কলম্বোর পি সারা ওভালে সেই ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক সেই ম্যাচসহ বাংলাদেশের স্মরণীয় কিছু সিরিজ জয়ও থাকবে ‘মেমোরেবল ম্যাচ টিকেটস’ স্মারকগ্রন্থে। বইয়ে নিজের শুভেচ্ছা বার্তায় বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘প্রতিটি টিকেটই একটি গল্প-মুহূর্ত, মাইলফলক ও আবেগের গল্প, যা আমাদের ক্রিকেট পরিচয়কে গড়ে তুলেছে।’

টেস্ট অভিষেকের রজতজয়ন্তী নিয়ে যখন ঢাকায় উৎসব, নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল অবস্থান করছে সিলেটে। আগামীকাল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড সিরিজের প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় টেস্ট মিরপুরে শুরু হবে ১৯ নভেম্বর। এই টেস্ট দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে মুশফিকুর রহিম শততম টেস্ট খেলতে যাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফুটবল নিয়ে আসিফের ‘অপমানজনক’ মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বাফুফে সভাপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ৩৯
আসিফ আকবরের কুরুচিকর মন্তব্যে খেপেছেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। ছবি: ফাইল ছবি
আসিফ আকবরের কুরুচিকর মন্তব্যে খেপেছেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। ছবি: ফাইল ছবি

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) মধ্যে ‘যুদ্ধ’ লেগে গেছে। যুদ্ধের কারণ আসিফ আকবরের ফুটবল নিয়ে ‘কুরুচিকর’ মন্তব্য। আলোড়ন তোলা এই বক্তব্যের পর খেপেছেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল।

টেস্ট অভিষেকে বাংলাদেশের রজতজয়ন্তী উপলক্ষ্যে গতকাল ক্রিকেট কনফারেন্সের প্রথম দিনে বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবর ফুটবল নিয়ে মারপিটের কথা বলেছিলেন। আজ ঢাকার একটি চার তারকা হোটেলে নারী ফুটবলের একটি প্রোগ্রামে তাবিথের কাছে সেই প্রসঙ্গ। উত্তরে সাংবাদিকদের বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘দেখুন আমরা যারা ফুটবল নিয়ে কাজ করি বা ফুটবলটাকে বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের বাইরে জাগ্রত করার চেষ্টা করছি, যখনই আমরা ফুটবল নিয়ে কোন নেতিবাচক কমেন্ট আমরা শুনি, অবশ্যই আমরা ব্যথিত হই এবং আঘাতপ্রাপ্ত হই। তাও কদিন আগে আমাদের ক্রিকেট কনফারেন্সের সময় আমরা একটা বক্তব্য শুনেছিলাম যেটা ফুটবলের বিরুদ্ধে যায় এবং খেলোয়াড়দের ওপর অপমানজনক একটা মন্তব্য করা হয়েছে। তার প্রসঙ্গে আমি ব্যক্তিগত প্যাডে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বিসিবি সভাপতির কাছে একটা চিঠি পাঠিয়েছি।’

আসিফের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বাফুফে একটা চিঠি এরই মধ্যে পাঠিয়েছে বিসিবির কাছে। চিঠির জবাবে বিসিবি একটা সমাধানের পথ খুঁজে দেবে বলে আশা তাবিথের। ঢাকার একটি চার তারকা হোটেলে নারী ফুটবলের একটি প্রোগ্রামে বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘আশা করি, এই চিঠির উত্তরে আমরা অনেক ব্যাপারে স্পষ্ট জানতে পারব। যখন স্পষ্ট কিছু জানতে পারব বা বিসিবির অবস্থান আমরা জানতে পারব, সেখানে সমাধানের একটা পথ খুঁজে নেব। আমরা সবাই খেলোয়াড়। আমরা সবাই ক্রীড়াবিদ। আর আমাদের সকল ফেডারেশনের দায়িত্ব হলো ঐক্যবদ্ধ থাকা। তা আমরা চাইব না কোনো একটা ইস্যুতে বা কোনো কারোর ইস্যুতে সেটা আমাদের আমাদের বিভক্ত করে ফেলে। অতি শীঘ্রই আপনারা দেখবেন যে সকল ক্রীড়া ফেডারেশন এক হয়ে বাংলাদেশের জন্য এবং বাংলাদেশের কল্যাণের জন্য আমরা কাজ করছি।’

দেশের ৬৪ জেলার ক্রিকেট কোচ, সংগঠক ও ক্রীড়া কর্মকর্তাদের নিয়ে গতকাল শুরু হয়েছে বিসিবির দুই দিনব্যাপী ক্রিকেট কনফারেন্স। গতকাল ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলে ক্রিকেট কনফারেন্সের প্রথম দিনে বিসিবি পরিচালক ও সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর বলেছিলেন, ‘ফুটবলারদের জন্য (ক্রিকেট) খেলা যাচ্ছে না সারা দেশে। তারা উইকেট ভেঙে ফেলল, উইকেট নষ্ট করে ফেলেছে। আবার ২৪ তারিখ আবাহনী-মোহামেডান ফুটবল খেলা কুমিল্লা স্টেডিয়ামে। এই সমস্যাটা শুধু কুমিল্লার না। প্রতিটা জেলার স্টেডিয়াম দখল করে রেখেছে ফুটবল, প্রতিটা জেলার যেখানে ফুটবলের কাজ নেই, সেখানেও ফুটবল দখল করে রেখেছে এবং ফুটবলারদের ব্যবহার খুব খারাপ।’ তাঁর এমন মন্তব্যের পর নিন্দার ঝড় উঠেছে দেশের ফুটবল অঙ্গনে। বিসিবির এই পরিচালক ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন ফুটবলাররা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নারী ফুটবলার তুলে আনতে ফিফার সঙ্গে মিলে বাফুফের উদ্যোগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফিফা কর্মকর্তাকে (ডানে) জার্সি তুলে দিয়েছেন ঋতুপর্ণা চাকমা। ছবি: বাফুফে
ফিফা কর্মকর্তাকে (ডানে) জার্সি তুলে দিয়েছেন ঋতুপর্ণা চাকমা। ছবি: বাফুফে

বিশ্বজুড়ে নারী ফুটবলের প্রসারের লক্ষ্যে ‘এমপাওয়ার হার’ নামে এক বিশেষ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ফিফা। এশিয়ান অঞ্চলে নারী ফুটবলে উন্নয়ন বিষয়ক প্রধান সাইমন আন্তোনির উপস্থিতিতে ২০২৫-২৮ চক্রের সেই পরিকল্পনায় যুক্ত হলো বাংলাদেশও। এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য নারী ফুটবলারদের অংশগ্রহণ, বাণিজ্যিক উন্নয়ন বৃদ্ধি ও ভিত্তি তৈরি করা।

নারী কোচের বর্তমান সংখ্যা নিয়ে সাইমন বলেন, ‘আমরা একটা জরিপ করেছি। সেখানে দেখা গেছে নারী-পুরুষ লিগ মিলিয়ে নারী কোচের সংখ্যা মাত্র ২২ শতাংশ। আমরা এই চার বছরে অনেক নারী কোচ বাড়াতে চাই।’ বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল ফিফার এই উদ্যোগের সঙ্গে বাফুফে সম্পৃক্ত হতে পেরে বেশ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি এই উদ্যোগের মাধ্যমে নারী ফুটবলে কার্যকর পরিবর্তন আনা সম্ভব বলে মনে করেন, ‘নারী ফুটবলে আমাদের ক্লাব সংখ্যা কম। নারীদের ঘরোয়া লিগ বাড়ানো, তাদের আরও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির চেষ্টা করব। ফিফা আমাদের টেকনিক্যাল ও আর্থিকভাবে সহায়তা করবে।’

বাফুফে ২০২৫-২৮ সালে নারী ফুটবলে কী কী করতে চায় সেই পরিকল্পনা ডিসপ্লেও করেনি কিংবা পুরোপুরি প্রকাশও করেনি। মাঠের খেলা বৃদ্ধির পাশাপাশি নারী ফুটবলারদের সুরক্ষার বিষয়টিও বাফুফে সভাপতি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু নারী ফুটবলারদের খেলার মান উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতেই সীমাবদ্ধ থাকব না। নারী হিসেবে তাদের সমাজের নানা প্রতিবন্ধকতার পাশেও দাঁড়াব। অনেক সময় নারীরা সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়। আমরা সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেব।’

আজকের অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্সেলো সেসা, মরক্কো দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স উপস্থিত ছিলেন। মরক্কো দূতাবাসের কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশের নারী ফুটবলের উন্নয়নে মরক্কো সব সময় পাশে থাকবে।’ আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা সাফল্য আনছে এটা আসলেই বেশ গর্বের বিষয়।’

বাংলাদেশের নারী ফুটবলে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ঢাকা ব্যাংক। আজকের অনুষ্ঠানে ঢাকা ব্যাংকের প্রতিনিধি বলেন, ‘ঢাকা ব্যাংক নারী ফুটবলের সঙ্গে থাকতে পেরে গর্বিত। আগামী দিনেও ঢাকা ব্যাংক নারী ফুটবলারদের সাথে থাকবে।’ বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের তারকা খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমা ফিফা কর্মকর্তাকে বাংলাদেশের পক্ষে জার্সি তুলে দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত