Ajker Patrika

লিটনের সামনে মুশফিক তো আছেন

রানা আব্বাস, পুনে থেকে
লিটনের সামনে মুশফিক তো আছেন

পুনের হোটেল কনরাডে দুপুরে কথা বলতে পারেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু—সকালে শোনা খবরটা পরে আর ‘সত্যি’ হয়নি। দলের কোনো কার্যক্রম নেই। নান্নু যদি কথা বলেন, তাতে লেখার কিছু রসদ মিলতে পারে। কিন্তু সেই আশার গুড়ে বালি। নান্নুর জন্য ঘণ্টা দুয়েকের অপেক্ষা শেষে অতঃপর নিরাপত্তাকর্মীদের হোটেল লবি ত্যাগের নির্দেশ। 

দুপুরে খেতে বেরিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাসকিন আহমেদ, তানজিদ হাসান তামিম। সতীর্থরা বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর খেতে বের হলেন লিটন দাস। খেলোয়াড়েরা বের হলেই সংবাদমাধ্যমকর্মীদের ক্যামেরা সক্রিয় হয়ে উঠছিল। লিটন অবশ্য এতে আপত্তি করলেন। তিনি নিরাপত্তাকর্মীদের বললেন সাংবাদিকদের সরিয়ে দিতে। লিটনের বলার আগেও হোটেলের একজন কর্মকর্তা অবশ্য সংবাদমাধ্যমকে লবি ত্যাগ করতে বলেছিলেন। 

অন্য ক্রিকেটারদের যেখানে আপত্তি নেই, সেখানে লিটনের আপত্তি নিয়ে বেশ প্রশ্ন উঠেছে। বছরটা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না তাঁর। ধর্মশালায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৬ রানই তাঁর এখন পর্যন্ত বলার মতো পারফরম্যান্স। এ বছর শূন্য রানেই ফিরেছেন পাঁচবার। ছন্দ হারিয়ে ফেলায় লিটন নিজে কতটা হতাশ, সেটি দেখা গিয়েছিল বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজে। দ্বিতীয় ম্যাচে দ্রুত আউট হওয়ার হতাশায় ড্রেসিংরুমের সামনে ব্যাট পর্যন্ত আছড়ে ভেঙেছিলেন। লিটনের কাছে সংবাদমাধ্যম কখনোই ‘প্রিয়’ ছিল না। ধ্রুপদি ব্যাটিং শৈলীতে যেদিন খেলেন, শুধুই মুগ্ধ হতে হয়—তবু সাফল্যের চেয়ে ক্যারিয়ারে ব্যর্থতার পাল্লা বেশি ভারী হওয়ায় কম সমালোচনা হয়নি লিটনকে নিয়ে। এ সমালোচনার পেছনে তাঁর এলোমেলো মন্তব্য এবং আচরণও কম দায়ী নয়। 

মাঠে বাইরের এসব বিষয় থেকে নিজেকে কীভাবে দূরে সরিয়ে রাখতে হয়, লিটনের সেটি জানতে খুব বেশি দূরে যাওয়ার দরকার নেই। তিনি শিখতে পারেন তাঁর সিনিয়র মুশফিকুর রহিমের কাছ থেকে। মুশফিকও খুব যে ‘সংবাদমাধ্যমবান্ধব’, তা নয়। তবে নিজের কাজটা ধ্যানমগ্ন ঋষির মতো করতে জানেন। এই বিশ্বকাপের আগে মাত্র দুজন খেলোয়াড়ের চারটি বিশ্বকাপ খেলার রেকর্ড আছে—একজন সাকিব আল হাসান, আরেকজন মুশফিক। বিশ্বকাপে সাকিবের ১০০০ রান আগেই হয়েছে। মুশফিকের হতে বাকি আর ৪ রান। ৩২ ম্যাচে সেঞ্চুরি ১টি, ফিফটি ৮টি। গড় প্রায় ৪০। 

গত মার্চে আয়ারল্যান্ড সিরিজ থেকে তাঁর ব্যাটিং পজিশন বদলে গেছে। চার থেকে মুশফিক এখন নিয়মিত ছয়ে খেলছেন। পজিশন পরিবর্তন হলেও মুশফিকের রান করতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড তাঁর এ পজিশনেই করা। এই বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত মুশফিকই সবচেয়ে সফল ব্যাটার। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড—টানা দুই ফিফটি এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। দুই ম্যাচেই তাঁর সামনে সেঞ্চুরির হাতছানি ছিল। মুশফিক দুদিনই ফিরেছেন ৩৬ ওভার শেষ হওয়ার আগে। 

একবার ভাবুন, মুশফিক ৬ নম্বরে নেমে ফিফটি করে ৩৫ ওভারের মধ্যে ফিরেও আসছেন। বোঝাই যাচ্ছে, বাংলাদেশ দলের টপ আর মিডল অর্ডার বলে যেন কিছু নেই! এ কারণেই তো ফেসবুক ‘মিম’ হচ্ছে, ‘শুধু শুধু তামিম ইকবাল ইগো দেখালেন (তাঁকে ওপেনিং থেকে নিচে ব্যাটিং করার প্রস্তাব)। ওপেনিং আর মিডল অর্ডারের দূরত্ব মাত্র কয়েক মিনিটের!’ 

নিয়মিতই ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে লড়তে হচ্ছে মুশফিককে। তিনি অবশ্য সব সময়ই লড়াকু। পরিস্থিতি যত কঠিন, তাঁর ব্যাট ততই চওড়া। কিন্তু মুশফিককে যদি প্রতি ম্যাচে বিপর্যয় প্রতিরোধে খেলতে হয়, তাহলে লিটনদের মতো টপ অর্ডার ব্যাটারদের কাজ কী? ২২ গজে যদি তাঁরা ধারাবাহিক হন, হুটহাট অসংখ্য ক্যামেরা দেখে তখন আর বিরক্ত লাগবে না! আট বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে লিটন কি বোঝেননি, ক্যামেরা সাধারণত দুই ধরনের খেলোয়াড়কে বেশি খোঁজে—পারফরমার এবং নন-পারফরমার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০২ এসি ল্যান্ডকে প্রত্যাহার

গাজীপুরে একটি সংসদীয় আসন বাড়বে, কমবে বাগেরহাটে, ইসির খসড়া চূড়ান্ত

বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কমছে, সবুজসংকেত যুক্তরাষ্ট্রের

গণপূর্তের ৫ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের ১ স্থপতি বরখাস্ত

স্বামীর মৃত্যুর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েও যাবজ্জীবন এড়াতে পারলেন না রসায়নের অধ্যাপক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত