Ajker Patrika

এবার আসল চ্যালেঞ্জ মোস্তাফিজের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ মে ২০২৪, ১১: ০৯
Thumbnail image

৬ উইকেট পাওয়ার চেয়ে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে কথা বলা কি বেশি কঠিন মনে হলো? এ প্রশ্নে মেসেঞ্জার বার্তায় মোস্তাফিজুর রহমান হাসেন। ৯ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার, এখনো ক্যামেরার সামনে খুব একটা স্বচ্ছন্দবোধ করেন না। মোস্তাফিজ স্বচ্ছন্দবোধ করেন শুধু ২২ গজে, সেখানেই তিনি চেষ্টা করেন বলকে দিয়ে কথা বলাতে। 

সেই কথা বলানোর কাজটা সব সময় ঠিকঠাক হয় না। তাঁর ‘প্রিয়’ সংস্করণ ২০ ওভারের ম্যাচে বেশ লম্বা সময় ধরে নির্বিষ বোলিংয়ে সমালোচিত হচ্ছিলেন। তারকা পেসার হওয়ার পরও একাদশ থেকে বাদ পড়ার অভিজ্ঞতা হচ্ছিল। ‘তিনি আর কখনো ফিরবেন না’—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ রকম ট্রলিংয়ের শিকারও হন। তবে এ বছর নিয়মিত দেখা যাচ্ছে তাঁর বিষাক্ত বোলিং! হিউস্টনে গত পরশু শেষ টি-টোয়েন্টিতে ১০ রানে ৬ উইকেট নেওয়া সেই বিধ্বংসী স্পেল বলেই নয়। আইপিএলে অসাধারণ বোলিংয়ের পর জাতীয় দলের হয়ে নিয়মিত ভালো করছেন। টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে সবচেয়ে স্বস্তির বিষয়, উপমহাদেশের বাইরের উইকেটেও সাফল্য পাচ্ছেন মোস্তাফিজ। 

বিশ্বকাপের আগে একটা সিরিজে দল হারলেও ১০ উইকেট নিয়ে মোস্তাফিজ হয়েছেন সিরিজ-সেরা। শুধুই কি তাই, পরশু ১০ রানে ৬ উইকেট নিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছেন মোস্তাফিজ। আগের রেকর্ডটি ছিল ইলিয়াস সানির। ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমে ১৩ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন বাঁহাতি স্পিনার। সেই ইলিয়াস সানি কাল এক ফেসবুক পোস্টে অভিনন্দন জানিয়েছেন ফিজকে, ‘রেকর্ড হয়ই ভাঙার জন্য। ১২ বছর আগের রেকর্ড। অভিনন্দন মোস্তাফিজ, এত দারুণ পারফরম্যান্সের জন্য। বিশ্বকাপের জন্য তোমার প্রতি শুভকামনা।’ 

ব্যক্তিগত সাফল্য ছাপিয়ে সিরিজ হারের আফসোস তাঁর থেকেই যাচ্ছে। ম্যাচ ও সিরিজ-সেরার পুরস্কার নেওয়ার সময় বাঁহাতি পেসার বলেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, সব মিলিয়ে খুব ভালো হয়েছে। বোলিংয়ে বৈচিত্র্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যদি আমরা ভেরিয়েশনটা আরেকটু বেশি করতাম, আমাদের জন্য (সিরিজটা) খুব ভালো হতো। তবে ম্যাচ ও সিরিজ-সেরার পুরস্কার পাওয়ায় অনেক ভালো লাগছে।’ 

টি-টোয়েন্টি সংস্করণে গত বছর ৯ টি-টোয়েন্টি খেলে চার ম্যাচে উইকেটই পাননি মোস্তাফিজ। এ বছর এরই মধ্যে আট ম্যাচে ফিজের শিকার ১৫টি। মন্থর উইকেটে যতটা কার্যকর; ফ্ল্যাট, হাই স্কোরিং উইকেটে ঠিক ততটাই এলোমেলো—মোস্তাফিজের বোলিং নিয়ে এ রকম একটা ধারণা প্রায় প্রতিষ্ঠা হয়ে গেছে। এ বছরের মার্চে সিলেটেই যেমন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচে ওভারপ্রতি ১০.৯১ দিয়ে পেয়েছিলেন মাত্র ২ উইকেট। ২০২৪ আইপিএলে ধোনিদের সংস্পর্শেই যেন মোস্তাফিজের বদলে যাওয়া। ৯ ম্যাচ খেলে দেশের ফেরার আগপর্যন্ত যৌথভাবে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিই ছিলেন। ফিরেছেন কিছু পরিবর্তন আর সংযোজন নিয়ে। ২৫০ রানের ফ্ল্যাট উইকেটে কীভাবে বল করবেন, সেটা বেশ ভালো আয়ত্ত করেছেন। 

মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই পেয়েছেন ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট। এশিয়ার বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের উইকেটেও ছিলেন ছন্দে। তিন ম্যাচে ৬.৮৩ ইকোনমিতে তাঁর শিকার ১০ উইকেট। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে মোস্তাফিজের উইকেট ১৬টি। এমন ভালো পরিসংখ্যান নিয়ে টেস্ট প্লেয়িং দলের কোনো বোলারই তো যেতে পারছেন না মার্কিন মুলুকে। মোস্তাফিজকে নিয়ে সতীর্থ তানজিদ হাসান তামিম বলেছেন, ‘সে বিশ্বমানের বোলার। আইপিএলে খেলে থাকে এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলে। অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। আমরা দারুণ খুশি। সে উইকেট ভালোভাবে পড়তে পেরেছে। তার কাটার উইকেটে কাজে লাগাতে পেরেছে।’ 

মোস্তাফিজের আসল চ্যালেঞ্জ শুরু কদিন পর, আইসিসির রানপ্রসবা-হাই স্কোরিং উইকেটে ছন্দটা ধরে রাখতে পারলেই নিজের নামের প্রতি সুবিচার হবে। 

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত