Ajker Patrika

মুশফিকের ভালো দিন, খারাপ দিন

রানা আব্বাস, শারজা থেকে
মুশফিকের ভালো দিন, খারাপ দিন

চাঁদিফাটা রোদ্দুরে ৩৭ বলে অপরাজিত ৫৭ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস খেলে ফিরছিলেন ড্রেসিংরুমে। গ্লাভস-প্যাডও খুলতে পারেননি। ড্রেসিংরুমের সামনে থেকে মুশফিককে ছোঁ মেরে ক্যামেরার সামনে নিয়ে গেলেন সম্প্রচার কর্তৃপক্ষের লোকজন। ইনিংস বিরতিতে শারজার ঝাঁজাল রোদে লাল হয়ে ওঠা মুখটায় অকৃত্রিম এক হাসি ফুটল ধারাভাষ্যকার মুরালি কার্তিকের কোনো প্রশ্নে। মুশফিকের আফসোস, হাসিটা আর ধরে রাখা যায়নি ম্যাচ শেষে। তাঁর ভালো দিনে ফলটা বাংলাদেশের পক্ষে যে আসেনি।

শ্রীলঙ্কাকে পেলেই তাঁর ব্যাট চওড়া হয়ে ওঠে, এ আর নতুন কী! আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির কথাই ধরুন। এই সংস্করণে তাঁর গড় যেখানে ২০.৩৮ আর স্ট্রাইকরেট ১১৬.২০, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেটিই ৪২.২৮ আর ১৪৯.৪৯। ৬ ফিফটির তিনটিই এসেছে লঙ্কানদের বিপক্ষে। আর এই তিনটি ফিফটির কোনোটিতেই শ্রীলঙ্কার কোনো বোলার তাঁকে আউট করতে পারেননি—৬৬, ৭২, ৫৭*। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে রান পাচ্ছিলেন না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো করতে পারেননি মুশফিক। আর তাতেই ‘মুশফিকের কী হলো?’ রব উঠে গিয়েছিল!

সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কাকে পেয়েই কি মুশফিক মনে মনে ঠিক করেছিলেন, এই তো সুযোগ! অবশ্য খেলোয়াড়দের কাছে সব প্রতিপক্ষই সমান। তবু রেকর্ড-পরিসংখ্যান কখনো কখনো নির্দিষ্ট প্রতিপক্ষকে ‘প্রিয়’ করে তোলে খেলোয়াড়দের কাছে। তাঁরা অবশ্য এ প্রসঙ্গে বলে থাকেন, সব প্রতিপক্ষই তাঁদের কাছে সমান। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকও যেমন বললেন, ‘সব সময়ই চেষ্টা করি দলের জন্য অবদান রাখতে। দল না জিতলে ভালো করে আসলে লাভ নেই। কথাটা (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রেকর্ড খুব ভালো) শুনে মনে হলো এখন থেকে প্রতি দলকে শ্রীলঙ্কা ভেবে খেলতে হবে! তাতে আমার আরও ভালো করার সুযোগ থাকবে।’

রানে ফিরে মুশির মুখে স্বস্তির হাসি ফিরেছে। মুশফিক জানালেন, গত কদিনে তাঁর ব্যাটিং নিয়ে যে সমালোচনা হয়েছে, সেটিই নাকি তাঁকে উদ্বুদ্ধ করেছে! বললেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে রান করা কঠিন। আর আমি আসলে পোলার্ড বা রাসেলের মতো না যে ধুমধাম রান করে ফেলব! আমারও কিছু সময় লাগে, আমার কিছু শক্তি, দুর্বলতা আছে। সব সময় উন্নতি করার চেষ্টা করি। সব শুনে মনে হয় পাঁচ-ছয় বছর ধরে রান করি না! এটাই আমাকে আরও উদ্বুদ্ধ করেছে। চেষ্টা থাকবে দলে যত বেশি অবদান রাখা যায়।’

মুশফিক অবশ্য কড়া জবাব দিলেন গত কিছুদিনে বাংলাদেশ দলকে ঘিরে হওয়া নানা আলোচনা-সমালোচনা নিয়েও, ‘মাঠের বাইরে নানা রকম কথা হবেই। ক্রিকেটার হিসেবে আপনি ভালো করলে সবাই তালি দেবে। আর খারাপ করলে গালি দেবে—এটাই নিয়ম! ১৬ বছর ধরে এসব দেখে আসছি। আর যারা আমাদের নিয়ে এসব বলে, তাদের উচিত নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখা। তারা তো বাংলাদেশের হয়ে খেলে না। আমরা খেলছি। আমরা সবাই ভালো করার চেষ্টা করি। কোনো দিন (ভালো) হয়, কোনো দিন হয় না!’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত