Ajker Patrika

শুরুতেই কাঁপাকাঁপি নিয়ে চিন্তিত শান্ত

ক্রীড়া ডেস্ক
Thumbnail image

খেলাটা টি-টোয়েন্টি। কিন্তু বাংলাদেশ যেভাবে গোয়ালিয়রে গতকাল ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্যাট করল—কে বলবে নাজমুল হোসেন শান্তরা বিশ ওভারের ম্যাচ খেলতে নেমেছেন! সেই তো আগের মতো ‘শুধু আসা, শুধু যাওয়ার’ তাড়া। 

১২০ বলের ম্যাচে স্কোর ১২৭, অলআউট ১৯.৫ ওভারে। একে কোনোভাবেই টি-টোয়েন্টিসুলভ বলা যায় না। যেখানে ভারত লক্ষ্য তাড়ায় ৪৯ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখে জিতেছে। বাংলাদেশের হয়ে চাপের মুখে সর্বোচ্চ রান ৩৫—মেহেদী হাসান মিরাজের। শুধু দুজনের স্ট্রাইক রেট ২০০ ছুঁয়েছে—লিটন দাস ও রিশাদ হোসেনের। কিন্তু প্রথমজন ৪ ও দ্বিতীয় জন ফেরেন ১১ রান নিয়ে। 

রাওয়ালপিন্ডিতে টেস্ট সিরিজ জয়ের সাফল্য নিয়ে ভারতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখানে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে আগেই সিরিজ হেরেছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। টি-টোয়েন্টি সিরিজেও বাজে ব্যাটিংয়ে হার। অবশ্য এই সংস্করণে বাংলাদেশের সাফল্য হাতেগোনা। গতরাতে হারের পর শান্তও সেটি স্বীকার করলেন। তবে নিজেদের এত খারাপ দল ভাবতেও নারাজ বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘আমরা এ ফরম্যাটে ভালো করছি না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি না, আমরা এত খারাপ দল। (উইকেট) একটু স্লো ছিল, আমরা যখন ব্যাটিং করেছি। আমার মনে হয় উইকেট খুব ভালো ছিল। খুব বেশি যে স্লো ছিল তা না।’ 

পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের স্কোর ছিল—২/২৯। আর তিন অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই হারায় ৭ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ধারাবাহিক ব্যাটিং ব্যর্থতার দৃশ্য এ আর নতুন কী! অনেকবার সমস্যার কথা বললেও সমাধান আসেনি। সমস্যাটা কোথায় হচ্ছে শান্ত সেটি আরেকবার বললেন ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে, ‘আমাদের দলের এখন সমস্যা দুটি—মানসিক ও দক্ষতা। সিরিজে ফিরতে হলে এ দুটো জায়গা দ্রুত সমাধান করতে হবে।’ 

আগামী ২৭ ডিসেম্বর কানপুরে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এখানে হেরেই টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছেন শান্তরা। কানপুর যদি দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি হারেন তবে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ আগেই নিশ্চিত হয়ে যাবে ভারতের। তবে তারুণ্যনির্ভর ভারতের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জিং হলেও ঘুরে দাঁড়াতে চান শান্তরা। সেই ম্যাচের দিকেই এখন যত মনোযোগ বাংলাদেশ অধিনায়কের, ‘ঘুরে তো অবশ্যই আমাদের দাঁড়াতে হবে। অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং হবে। এই সিরিজে যেন আমরা প্রত্যাবর্তন করতে পারি সে চেষ্টা করতে হবে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’ 

টি-টোয়েন্টিতে যখন অন্য দলগুলো পাওয়ার প্লেতে হার্ড হিটিংয়ে রান করার দিকে নজর দেয়, সেখানে বাংলাদেশ ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট চালায়। ওপেনিংয়ে রান তো হচ্ছেই না, উল্টো দ্রুত উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসছে। এই সমস্যা নিয়ে শান্ত বলেছেন, ‘পাওয়ার–প্লে তে আমাদের সমস্যা হচ্ছে সত্য। প্রথম ৬ ওভারে বেশি উইকেট পড়েছে। প্রথম ৬ ওভারে যদি ১-২টা উইকেট পড়ত তাহলে হয়তো টেনে নেওয়া যেত। কিন্তু বেশি উইকেট পরায় আমাদের জন্য চাপ হয়ে গিয়েছে। পরে ব্যাট করা ব্যাটারদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। আমরা অনেক দিন ধরেই সংগ্রাম করছি এই পাওয়ার প্লেতে। এখান থেকে কামব্যাক করতে হলে ব্যাটারদের দায়িত্ব নিতে হবে।’ 

চাপের মুখেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতন অভিজ্ঞ ব্যাটার দ্রুত উইকেট দিয়ে এসেছেন। লিটন খেলতে পারেননি প্রত্যাশিত ইনিংস। ২ বছর পর দলে ফেরা ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন নিজেই নিজের উইকেট দিয়ে এসেছেন। জাকের আলী অনিকের ব্যাটিং কৌশলে দুর্বলতা দেখা দিয়েছে আরও প্রকট হয়ে। দলে পাওয়ার হিটারও নেই। ব্যাটারদের এই ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলেছেন শান্ত। তবে নির্দিষ্ট কারও ঘাড়ে দোষ দিতে চান না তিনি, ‘আমি আসলে কোনো ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স নিয়ে কিছু বলতে চাই না। আমরা যে ব্যাটিংটা করেছি, আমরা সবাই ভালো ব্যাটিং করিনি। অবশ্যই চাপ থাকবে। আমাদের শট নির্বাচনে আরও সচেতন হতে হবে। আমরা কোন পরিস্থিতিতে কোন শটটা খেলব। বা কোন ধরনের অ্যাপ্রোচ ব্যাটিং করব। অবশ্যই এই জিনিসগুলো নিয়ে তো চিন্তা করার ব্যাপার। কিন্তু আমার মনে হয় যে, এই জায়গাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ সঠিক অ্যাপ্রোচে ব্যাটিং করা। এখনই অনেক বেশি এটা নিয়ে চিন্তা করা যাবে না যে, এক ম্যাচ খেলে ফেলেছি পরদিন আবার পরিবর্তন করে ফেলব। আবার বুঝতে হবে কোন সময়ে কোন শটটা খেলব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত