Ajker Patrika

বাংলাদেশের সবাই নিজেকে বাঁচিয়ে ক্রিকেট খেলছে

আফতাব আহমেদ
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ০০
বাংলাদেশের সবাই নিজেকে বাঁচিয়ে ক্রিকেট খেলছে

এমন ব্যাটিং নিয়ে কি বলা যায়? ব্যাটিংয়ের এমন ভরাডুবি দেখার পর সব শব্দই যেন হারিয়ে ফেলেছি। বাংলাদেশ–দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা দেখতে দেখতে টাইম মেশিনে চড়ে প্রথম বিশ্বকাপের সময়টায় ফিরে গিয়েছিলাম। ২০০৭ বিশ্বকাপে টি-টোয়েন্টি সংস্করণটা বলতে গেলে তখনো আমাদের কাছে অচেনা। তখনো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আমরা আগে ব্যাটিং করে ১৪৪ রান করেছিলাম।

এটি মনে করিয়ে দেওয়া আসলে কৃতিত্ব নেওয়ার বিষয় নয়। দুই ম্যাচের মধ্যে একটু তফাত খুঁজতেই এই উদাহরণ সামনে আনা। সেদিন ৩৪ রানে তিন উইকেট হারানোর পরও আমি আর সাকিব চেষ্টা করেছিলাম ইতিবাচক ব্যাটিং করার।

টি-টোয়েন্টিটা এমনই। কটি উইকেট পড়েছে, সেটি দেখার সময় কোথায়? শট খেলতেই হবে। কিন্তু গতকাল আবুধাবিতে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে ইতিবাচক কোনো কিছুই খুঁজে পেলাম না। সবাই যেন নিজেকে বাঁচিয়ে ক্রিকেট খেলছে।

টি-টোয়েন্টিতে ঝুঁকি নিতেই হবে। এখানে মারতে গিয়ে উইকেট খোয়ানোর সম্ভাবনা থাকবে, সেই চিন্তা করে যদি শট খেলা বন্ধ করে দেয় তাহলে সব শেষ। দেখেশুনে খেলে যদি ১০০–১২০ রানের পুঁজি করেন, তাহলে বলব জেতার জন্য খেলছেন না। আমার মনে হয় পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ যদি ঝুঁকি নিয়ে খেলত তাহলে ১৬০ থেকে ১৭০ রানের স্কোর গড়তে পারত।

দলের আটজন ব্যাটার দুই অঙ্ক পেরোতে পারেনি। পুরো ইনিংসে ৪টি চার ও একটি ছক্কা। আমি আট ব্যাটার খেলানোর কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাই না টি-টোয়েন্টিতে। কারণ এখানে দুই-তিনজন ব্যাটার দেখেশুনে ১০ ওভার খেলবে। বাকি দশ ওভারে অন্যরা আক্রমণে যাবে। যখন ব্যাটার বেশি থাকে তখন একজন চিন্তা করে আরেকজন করবে, আরেকজন চিন্তা করবে অন্যজন রান করবে। এই চিন্তা করতে করতেই সবাই আউট।

আর যদি আট ব্যাটার নিয়েই খেলেন তাহলে চারটা ব্যাটারকে মেরে খেলার লাইসেন্স দিয়ে দিতে হবে। তাদের বলে দিতে হবে, তোমরা মেরে খেলে পাওয়ার প্লের ব্যবহারটা করো, আউট হও সমস্যা নেই। পুরো বিশ্বকাপে তো আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসানদের মতো হার্ট হিটারদের ব্যবহারই করতে পারেনি আমরা। বলছি না তারা সফল হতো, কিন্তু তাদের ওপরে নামিয়ে ঝুঁকিটা নিতে পারত বাংলাদেশ।
এক একটা ম্যাচ যায়, আর বাংলাদেশ দল যেন কত ডট বল খেলা যায় তারই রেকর্ড করছে। আগের ম্যাচে ৫২টা ডট বল দিয়েছিল। গতকাল সেটি ঠেকল ৫৯-এ। টেস্ট ক্রিকেটে আজকাল এত ডট হয় কিনা সন্দেহ।

হারতে পারে, কিন্তু একটা বিষয় আছে না জয়ের জন্যই মাঠে নামব–সেই মানসিক দৃঢ়তা কিন্তু দেখিনি বাংলাদেশ দলের কারও মধ্যে। ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষা দেখে মনে হচ্ছিল বিশ্বকাপটা শেষ করতে পারলেই যেন বাঁচে তারা। এভাবে খেলে ভালো কিছুর আশা করা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়।

এখন আমাদের সামনে আরেকটি ম্যাচ আছে। তাও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। জানি আরও কঠিন প্রতিপক্ষ। কিন্তু আমি বলব–যা হারানোর তা তো হারিয়েই ফেলছি। আমি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এতটুকুই আশা করব–ম্যাচ শেষে যেন বলতে পারি খেলোয়াড়রা অন্তত চেষ্টা করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত