Ajker Patrika

‘বাংলাদেশ দল আমার বাপ-দাদার সম্পত্তি না’

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৬: ৫৫
সংবাদ সম্মেলনে আজ খেপে গিয়েছেন বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
সংবাদ সম্মেলনে আজ খেপে গিয়েছেন বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হতশ্রী পারফরম্যান্স নিয়ে গত কয়েক বছরে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ হচ্ছে অনেক বেশি। ক্রিকেটাররা তো বটেই, সমালোচনা, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ থেকে বাদ যান না কোচেরাও। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ যখন নামবে সিরিজ জয়ের লড়াইয়ে, সেই সময়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন।

বোলিং-ফিল্ডিং যেমনই হোক, বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে ম্যাচ হারছে মূলত ব্যাটারদের ব্যর্থতায়। লিটন দাস-নাজমুল হোসেন শান্তদের পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতার বড্ড অভাব। অনেক সময় জয়ের মতো অবস্থায় থাকলেও হুড়মুড়িয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং ধসে পড়া এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সালাহ উদ্দিন বাংলাদেশের সহকারী কোচ হলেও ব্যাটিং বিভাগটা তিনি এখন দেখভাল করেন। বাংলাদেশের ব্যাটারদের বাজে পারফরম্যান্সে তাই সালাহ উদ্দিনকে নিয়ে সমালোচনা গত কদিন ধরে একটু বেশিই হচ্ছে।

পাল্লেকেলেতে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় হারলেও ডাম্বুলায় দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দাপুটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। কলম্বোর প্রেমাদাসায় আগামীকাল বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা হয়ে গেছে সিরিজ নির্ধারণী। আজ বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে সালাহ উদ্দিন কথা বলেছেন রুক্ষ মেজাজে। বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ বলেন, ‘দেখুন বাংলাদেশ দল আমার বাপ-দাদার সম্পত্তি না। ঠিক আছে। কেউ যদি এখানে ভালো না করে, তার সমালোচনা হবেই। এটা স্বাভাবিকভাবে নিতেই হবে। ভালো করলে সবাই বাহবা দেবে। আমি দলের জন্য শতভাগ দিচ্ছি কিনা, নিজের জায়গায় সৎ কিনা, সেটা আমার কাছে মুখ্য বিষয়।’

যদি জাতীয় দলের দায়িত্ব ছেড়ে বয়সভিত্তিক দলের কোচিংও করাতে হয়, তাতে কোনো আপত্তি নেই সালাহ উদ্দিনের। কলম্বোতে আজ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ বলেন, ‘দেখুন আমি কোচ। আমাকে যদি কালকে বলে সালাহ উদ্দিন, যাও তুমি ১৩ বছর বয়সী ছেলেদের কোচিং করাও। আমার কোনো আপত্তি নেই। আমার এখানে ট্যাগ লেখা নেই যে শুধু জাতীয় দলেরই কোচ। এটা নিয়ে আমার কোনো ইগো সমস্যাও নেই। এটা নিয়ে আমি চিন্তিত না। কেউ এলে যদি দলের জন্য ভালো হয়...’

বাংলাদেশের ক্রিকেটে স্থানীয় কোচদের মধ্যে অন্যতম ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছেন সালাহ উদ্দিন। বিপিএলে যে সর্বোচ্চ চারবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স শিরোপা জিতেছে, প্রত্যেকবারই তিনি ছিলেন দলটির প্রধান কোচের দায়িত্বে। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকের আলী অনিকরা বাংলাদেশের ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে ভালো করেছেন সালাহ উদ্দিন কোচ থাকা অবস্থাতেই। অথচ জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ হওয়ার পর সালাহ উদ্দিন নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না।

সালাহ উদ্দিনের মতে কোচদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ পাওয়া যায়, সেগুলো লিখিত আকারে দিলে তাঁদের (কোচদের) জন্য সুবিধা হতো। বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ বলেন, ‘আজ ২৭-২৮ বছর কোচিং করানোর পরও কেউ যদি বলে, কী যেন বলেছে, আপনারা যেমন বলেন, দলে অনেক অভিযোগ। কী কী অভিযোগ, সেটা লিখে দিলে ভালো হতো। সবার সামনে প্রকাশ্যে বলে দিলেন। আপনাকে তো প্রমাণ দিতে হবে। প্রমাণ দিলে সে কোচের জন্য ভালো হতো। আর আমি যদি ভুল করে থাকি, সেই জায়গাটা শুধরাব।’

সালাহ উদ্দিন গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ হয়েছেন। প্রথমে তাঁর মেয়াদ ছিল ২০২৫-এর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত। আইসিসির এই ইভেন্ট শেষে সেটা আরও দুই বছর বাড়ানো হয়। ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ হিসেবে থাকছেন সালাহ উদ্দিন।

আরও পড়ুন:

সালাহ উদ্দিন-জাদুও বাংলাদেশের কাজে আসছে না

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত