Ajker Patrika

ওয়ার্নারের ওপর ক্ষোভের কারণ খোলাসা করলেন জনসন

আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২: ৫৭
ওয়ার্নারের ওপর ক্ষোভের কারণ খোলাসা করলেন জনসন

কয়েক দিন ধরে বেশ উত্তপ্ত অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট। সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়েরা একজন আরেকজনকে নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনার পাশাপাশি চালাচ্ছেন উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ও। শুরুটা অবশ্য করেছেন সাবেক অজি পেসার মিচেল জনসন। যাঁকে নিয়ে তাঁর এই তোপ, সেই ডেভিড ওয়ার্নার এখনো মুখ খোলেননি। তবে জনসন যে প্রশ্ন তুলেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে কথা বলেছেন জর্জ বেইলি, উসমান খাজা ও মাইকেল ক্লার্কও। 

কী কারণে ওয়ার্নারকে অমন সমালোচনা, সেটি আজ খোলাসা করেছেন জনসন। জানিয়েছেন, ওয়ার্নারের কাছ থেকে তিনি ‘বেশ খারাপ এক বার্তা’ বা টেক্সট পেয়েছিলেন এই বছরের শুরুর দিকে। আর এটিই অজি ওপেনারকে সমালোচনা করে অমন চাঁছাছোলা কলাম লিখতে প্ররোচিত করেছে তাঁকে। 

এ মাসের মাঝামাঝি নিজদের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু করবে অস্ট্রেলিয়া। এই সিরিজের জন্য দলে আছেন ওয়ার্নারও। লাল বলে এটিই তাঁর শেষ সিরিজ। আগেই জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের পর ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ওয়ার্নারকে বিদায় দিতে অস্ট্রেলিয়া দলও বেশ কিছু আয়োজন করতে যাচ্ছে। 

কিন্তু সেটি মোটেও পছন্দ নয় জনসনের। সাবেক অজি পেসার গত রোববার দ্য ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ানে দীর্ঘ এক কলামে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘কোন যুক্তিতে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির অন্যতম প্রধান চরিত্র নায়কোচিত বিদায় পাচ্ছে?’ 

জনসন আরও লিখেছেন, ‘সে স্যান্ডপেপার কেলেঙ্কারিতে একা ছিল না। তবে দলের অভিজ্ঞ একজন খেলোয়াড় ছিল। এখন যেভাবে সে বিদায় নিচ্ছে, সেটা আমাদের দেশের জন্য একই রকম ঔদ্ধত্য এবং অসম্মানের।’ 

কলামে অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলিকেও ধুয়ে দেন জনসন, ‘তিন সংস্করণেই ওয়ার্নারের সঙ্গে খেলেছে বেইলি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওয়ার্নারকে যেভাবে সামলাতে হয়েছে তাতে প্রশ্ন জাগে, বেইলি খেলা ছেড়ে খুব দ্রুতই দায়িত্ব পেয়ে গেছে কি না, নাকি কিছু ক্রিকেটারের সঙ্গে খুব বেশি ঘনিষ্ঠ?’ এর জবাবে জনসনের সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বেইলি, ‘আমাকে তাঁর লেখা কিছু অংশ পাঠানো হয়েছে। আশা করছি জনসন ঠিক আছে।’ 

 ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার যে তিনজন ‘স্যান্ডপেপার’ কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিলেন, তাঁদের একজন ওয়ার্নার। সেই অপরাধের শাস্তিও তিনি পেয়েছেন। কিন্তু সাবেক সতীর্থের এমন অপরাধ ভোলেননি জনসন। পাঁচ বছর আগে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার পরও ওয়ার্নার যেভাবে ‘বীরত্বের’ সঙ্গে অবসর নিতে যাচ্ছেন, সেটি নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করা জনসনের। 

ওয়ার্নারের এমন বিদায়কে জনসন সমালোচনা করলেও খাজার কাছে নায়ক ওয়ার্নার। তিনি মনে করেন, কেউ নিখুঁত নয়। আজ সাংবাদিকদের খাজা বলেন, ‘ডেভি ওয়ার্নার ও স্টিভ স্মিথ আমার কাছে নায়ক। কেউ নিখুঁত নয়। মিচেল জনসন নিখুঁত নয়, আমিও নিখুঁত নই, স্টিভেন স্মিথও নিখুঁত নয়, ডেভিড ওর্য়ানারও নিখুঁত নয়।’ 

ওয়ার্নার অবশ্য জনসনের সমালোচনার প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি এখনো। তবে তাঁর ম্যানেজার জেমস এর্সকিন সেন রেডিওকে গতকাল সোমবার জানিয়েছেন, জনসন মত প্রকাশ করতেই পারেন। তবে বর্তমান খেলোয়াড়দের নিয়ে সাবেক ক্রিকেটারদের সমালোচনা করতে দেখাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। 

হঠাৎ করে ওয়ার্নারকে নিয়ে কেন এই সমালোচনা করেছেন, তা আজ খোলাসা করেছেন জনসন। সাংবাদিক ভারত সুন্দর্শনের উপস্থাপনে ‘দ্য মিচেল জনসন ক্রিকেট শো’ নামে নিয়মিত পডকাস্টে এর কারণ ব্যখ্যা করেন তিনি। জনসন জানিয়েছেন, এই আক্রমণের ভিত্তি ছিল গত এপ্রিলে ওয়ার্নারের কাছ থেকে পাওয়া একটি টেক্সট মেসেজ। আর সেটিই তাঁকে এমন কলাম লিখতে প্ররোচিত করেছে। 

জনসন বলেন, ‘আমি ডেভ (ওয়ার্নার) থেকে একটি বার্তা পাই, যেটা বেশ ব্যক্তিগত ছিল। এরপর আমি তাকে কল করতে চেষ্টা করি এবং এ ব্যাপারে কথা বলতে চেয়েছিলাম। যেটা আমি সব সময় খোলাখুলিভাবে করি।’ 

কী ছিল সেই বার্তায়, তা প্রকাশ্যে জানাননি জনসন। তা জানানোর দায়ভার ওয়ার্নারের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন তিনি, ‘ওই মুহূর্ত পর্যন্ত সেটি ব্যক্তিগত ছিল না। তবে এর একটি অংশ, এটাই সম্ভবত আমাকে এই আর্টিকেল লিখতে চালিত করেছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি ফ্যাক্টর। এতে এমন কিছু বলা হয়েছে, যা আমি বলব না। আমি মনে করি, এটা ডেভের ওপর নির্ভর করে, যদি সে এ নিয়ে বলতে চায়। সেখানে এমন কিছু ছিল, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। সে যা বলেছিল, সত্যি বলতে তা বেশ খারাপ।’ 

পডকাস্টে বেইলির তোলা মানসিক সুস্থতারও উত্তর দিয়েছেন জনসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত