প্রমিতি কিবরিয়া ইসলাম, ঢাকা
শীতের সময় গায়ের ওপর দিয়ে ঠান্ডা বাতাস বয়ে গেলে রোম খাড়া হয়ে যায়, লোমকূপগুলো ফুলে ওঠে। শুধু ঠান্ডা লাগলে নয়, গায়ে কাঁটা দেওয়া বা রোম খাড়া হতে পারে ভয় পেলে বা উত্তেজনায়। শুধু মানুষ নয়, সব স্তন্যপায়ীর গায়েই এমন কাঁটা দেয়। কিন্তু এর কারণ কী?
কয়েকটি কারণে গায়ে কাঁটা দিতে পারে। বিজ্ঞানীরা এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।
ত্বকের নিচে ‘অ্যারেকটর পিলি’ নামক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পেশি থাকে। প্রতিটি লোমের বিপরীতে একটি করে অ্যারেক্টর পিলি থাকে। আবার অ্যারেক্টর পিলির চারপাশে কুণ্ডলীকৃত স্নায়ু থাকে। স্নায়ুগুলো বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠিয়ে পেশিকে কখন সংকোচন করতে হবে তা মস্তিষ্ককে বলে দেয়। আর তখনই পেশিগুলোর সঙ্গে যুক্ত লোমগুলো খাড়া হয়ে ওঠে।
কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে মানুষের রোম খাড়া হয় না। তবে লম্বা লোমযুক্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীদেরও বিশেষ বিশেষ কারণে রোম খাড়া হয়।
২০১৪ সালে ফোলিয়া প্রাইমাটোলজিকা জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়, পাখি ও সরীসৃপের মধ্যেও এই ধরনের ঘটনা দেখা যায়। তবে এদের রোমের বদলে পালক বা আঁশ খাড়া হয়। একে পাইলোইরেকশন বলে। পশম ও পালক ফোলানোর মাধ্যমে বাইরের বস্তু থেকে রক্ষা করার একটি পুরু স্তর তৈরি হয়।
রোম খাড়া হওয়া ও আবেগের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করেন নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী টমাস শুবার্ট। তিনি বলেন, লোমশ প্রাণীরা যখন কোনো হুমকির সম্মুখীন হয় তখন এই ফোলানো পশমের মাধ্যমে সম্ভাব্য আক্রমণকারীদের কাছে নিজেদের আকার বড় করে দেখায়। যেমন—পোষা কুকুরের সামনে কোনো অপরিচিত মানুষ এলে তাদের কানের ও ঘাড়ের লোম খাড়া হয়।
ফোলিয়া প্রাইমাটোলজিকার গবেষণাপত্রে বলা হয়, শিম্পাঞ্জিসহ মানুষের নিকটতম আদিম আত্মীয় ও অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রজাতির মধ্যে ভয় বা হুমকি অনুভবের সময় একই প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কিন্তু যেহেতু মানুষের দেহে লোম কম, তাই লোম খাড়া হলে খুব একটা সুবিধা পাওয়া যায় না।
নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ফেইনবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের চর্মরোগবিদ্যার চেয়ারম্যান অ্যামি প্যালার বলেন, ‘মানুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য এই প্রক্রিয়া তেমন কাজে আসে না।’
কিন্তু প্রায় সমস্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীর পাশাপাশি অনেক সরীসৃপ ও পাখির মধ্যে পাইলোরেকশন প্রবণতা থাকায় বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, এই বৈশিষ্ট্য প্রথম দিকের স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যেও ছিল।
পরে বৈশিষ্ট্যটি প্রাইমেটদের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়। প্রাইমেটরা প্রায় ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে ডাইনোসর বিলুপ্ত হওয়ার ঠিক আগে বা পরে আবির্ভূত হয়েছিল।
এটি একটি ভেস্টিজিয়াল বৈশিষ্ট্য (যেসব বৈশিষ্ট্য পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে এলেও আধুনিক প্রজাতিতে নিষ্ক্রিয় থাকে) হিসেবে রয়ে গেছে। অর্থাৎ এই বৈশিষ্ট্য লম্বা লোমধারী পূর্বপুরুষদের জন্য প্রয়োজন ছিল, সেটি মানুষের মধ্যে থেকে পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়নি।
শোয়ার্টজ বলেন, মানুষের অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা এখন কোনো কাজেই লাগে না। এটি আমাদের স্তন্যপায়ী পূর্বপুরুষদের থেকে পাওয়া একটি অবশেষ মাত্র।’
শুবার্ট বলেন, যখন মানুষের ঠান্ডা লাগে বা ভয় পায়, শুধু তখনই গায়ে কাঁটা দেয় না; তীব্র আবেগ অনুভব করলেও মানুষের লোম খাড়া হয়ে যায়। যখন স্নায়ুগুলো সংকেত পাঠায় তখনই লোম খাড়া হয়।’
কোনো কারণে ভয় পেলে বা উৎসাহী হলে হৃৎপিণ্ডের পেশিও দ্রুত ওঠানামা করে। তেমনি এই অ্যারেকটর পিলির চারপাশে আবৃত স্নায়ু মস্তিষ্ক থেকে রাসায়নিক সংকেত গ্রহণ করে।
বিজ্ঞানীরা গায়ে কাঁটা দেওয়ার ক্ষেত্রে আরেকটি কারণের কথা তুলে ধরেন: নতুন চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করতে পারে এই প্রক্রিয়া। ২০২০ সালে ইঁদুর থেকে ত্বকের নমুনা নিয়েছিল বিজ্ঞানীদের একটি দল। তাঁরা ইঁদুরের অ্যারেক্টর পিলির চারপাশে মোড়ানো স্নায়ুগুলো সরিয়ে দেয়। এর ফলে চুলের ফলিকলে থাকা স্টেম সেলগুলো (যে কোষগুলো চুল তৈরি করে) ধীর গতিতে সক্রিয় হয় ও নতুন চুল গজাতে বেশি সময় নেয়।
গবেষণায় ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপি নামক একটি ইমেজিং কৌশল ব্যবহার করেন বিজ্ঞানীরা। এর মাধ্যমে তাঁরা দেখতে পান, স্নায়ুগুলো অ্যারেক্টর পিলি ও চুলের স্টেম কোষ উভয়ের সঙ্গে যুক্ত। ফলাফলগুলোর ওপর ভিত্তি করে গবেষকেরা বলেন, পাইলোইরেকশন প্রক্রিয়া প্রাণীদের ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য আরও পশম বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আর এই বৈশিষ্ট্য প্রায় সমস্ত স্তন্যপায়ী প্রজাতির মধ্যে রয়েছে।।
সোজা কথায়, ঠান্ডা স্পর্শে রোম খাড়া হওয়ার ফলে মানুষের শরীর গরম হয় না, তবে এটি পূর্বপুরুষদের একটি স্মৃতিচিহ্ন।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
শীতের সময় গায়ের ওপর দিয়ে ঠান্ডা বাতাস বয়ে গেলে রোম খাড়া হয়ে যায়, লোমকূপগুলো ফুলে ওঠে। শুধু ঠান্ডা লাগলে নয়, গায়ে কাঁটা দেওয়া বা রোম খাড়া হতে পারে ভয় পেলে বা উত্তেজনায়। শুধু মানুষ নয়, সব স্তন্যপায়ীর গায়েই এমন কাঁটা দেয়। কিন্তু এর কারণ কী?
কয়েকটি কারণে গায়ে কাঁটা দিতে পারে। বিজ্ঞানীরা এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।
ত্বকের নিচে ‘অ্যারেকটর পিলি’ নামক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পেশি থাকে। প্রতিটি লোমের বিপরীতে একটি করে অ্যারেক্টর পিলি থাকে। আবার অ্যারেক্টর পিলির চারপাশে কুণ্ডলীকৃত স্নায়ু থাকে। স্নায়ুগুলো বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠিয়ে পেশিকে কখন সংকোচন করতে হবে তা মস্তিষ্ককে বলে দেয়। আর তখনই পেশিগুলোর সঙ্গে যুক্ত লোমগুলো খাড়া হয়ে ওঠে।
কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে মানুষের রোম খাড়া হয় না। তবে লম্বা লোমযুক্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীদেরও বিশেষ বিশেষ কারণে রোম খাড়া হয়।
২০১৪ সালে ফোলিয়া প্রাইমাটোলজিকা জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়, পাখি ও সরীসৃপের মধ্যেও এই ধরনের ঘটনা দেখা যায়। তবে এদের রোমের বদলে পালক বা আঁশ খাড়া হয়। একে পাইলোইরেকশন বলে। পশম ও পালক ফোলানোর মাধ্যমে বাইরের বস্তু থেকে রক্ষা করার একটি পুরু স্তর তৈরি হয়।
রোম খাড়া হওয়া ও আবেগের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করেন নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী টমাস শুবার্ট। তিনি বলেন, লোমশ প্রাণীরা যখন কোনো হুমকির সম্মুখীন হয় তখন এই ফোলানো পশমের মাধ্যমে সম্ভাব্য আক্রমণকারীদের কাছে নিজেদের আকার বড় করে দেখায়। যেমন—পোষা কুকুরের সামনে কোনো অপরিচিত মানুষ এলে তাদের কানের ও ঘাড়ের লোম খাড়া হয়।
ফোলিয়া প্রাইমাটোলজিকার গবেষণাপত্রে বলা হয়, শিম্পাঞ্জিসহ মানুষের নিকটতম আদিম আত্মীয় ও অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রজাতির মধ্যে ভয় বা হুমকি অনুভবের সময় একই প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কিন্তু যেহেতু মানুষের দেহে লোম কম, তাই লোম খাড়া হলে খুব একটা সুবিধা পাওয়া যায় না।
নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ফেইনবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের চর্মরোগবিদ্যার চেয়ারম্যান অ্যামি প্যালার বলেন, ‘মানুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য এই প্রক্রিয়া তেমন কাজে আসে না।’
কিন্তু প্রায় সমস্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীর পাশাপাশি অনেক সরীসৃপ ও পাখির মধ্যে পাইলোরেকশন প্রবণতা থাকায় বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, এই বৈশিষ্ট্য প্রথম দিকের স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যেও ছিল।
পরে বৈশিষ্ট্যটি প্রাইমেটদের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়। প্রাইমেটরা প্রায় ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে ডাইনোসর বিলুপ্ত হওয়ার ঠিক আগে বা পরে আবির্ভূত হয়েছিল।
এটি একটি ভেস্টিজিয়াল বৈশিষ্ট্য (যেসব বৈশিষ্ট্য পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে এলেও আধুনিক প্রজাতিতে নিষ্ক্রিয় থাকে) হিসেবে রয়ে গেছে। অর্থাৎ এই বৈশিষ্ট্য লম্বা লোমধারী পূর্বপুরুষদের জন্য প্রয়োজন ছিল, সেটি মানুষের মধ্যে থেকে পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়নি।
শোয়ার্টজ বলেন, মানুষের অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা এখন কোনো কাজেই লাগে না। এটি আমাদের স্তন্যপায়ী পূর্বপুরুষদের থেকে পাওয়া একটি অবশেষ মাত্র।’
শুবার্ট বলেন, যখন মানুষের ঠান্ডা লাগে বা ভয় পায়, শুধু তখনই গায়ে কাঁটা দেয় না; তীব্র আবেগ অনুভব করলেও মানুষের লোম খাড়া হয়ে যায়। যখন স্নায়ুগুলো সংকেত পাঠায় তখনই লোম খাড়া হয়।’
কোনো কারণে ভয় পেলে বা উৎসাহী হলে হৃৎপিণ্ডের পেশিও দ্রুত ওঠানামা করে। তেমনি এই অ্যারেকটর পিলির চারপাশে আবৃত স্নায়ু মস্তিষ্ক থেকে রাসায়নিক সংকেত গ্রহণ করে।
বিজ্ঞানীরা গায়ে কাঁটা দেওয়ার ক্ষেত্রে আরেকটি কারণের কথা তুলে ধরেন: নতুন চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করতে পারে এই প্রক্রিয়া। ২০২০ সালে ইঁদুর থেকে ত্বকের নমুনা নিয়েছিল বিজ্ঞানীদের একটি দল। তাঁরা ইঁদুরের অ্যারেক্টর পিলির চারপাশে মোড়ানো স্নায়ুগুলো সরিয়ে দেয়। এর ফলে চুলের ফলিকলে থাকা স্টেম সেলগুলো (যে কোষগুলো চুল তৈরি করে) ধীর গতিতে সক্রিয় হয় ও নতুন চুল গজাতে বেশি সময় নেয়।
গবেষণায় ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপি নামক একটি ইমেজিং কৌশল ব্যবহার করেন বিজ্ঞানীরা। এর মাধ্যমে তাঁরা দেখতে পান, স্নায়ুগুলো অ্যারেক্টর পিলি ও চুলের স্টেম কোষ উভয়ের সঙ্গে যুক্ত। ফলাফলগুলোর ওপর ভিত্তি করে গবেষকেরা বলেন, পাইলোইরেকশন প্রক্রিয়া প্রাণীদের ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য আরও পশম বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আর এই বৈশিষ্ট্য প্রায় সমস্ত স্তন্যপায়ী প্রজাতির মধ্যে রয়েছে।।
সোজা কথায়, ঠান্ডা স্পর্শে রোম খাড়া হওয়ার ফলে মানুষের শরীর গরম হয় না, তবে এটি পূর্বপুরুষদের একটি স্মৃতিচিহ্ন।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
প্রথমবারের মতো কোনো নক্ষত্রকে ঘিরে নতুন সৌরজগতের জন্ম হতে দেখেছেন বিশ্বের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এটি গ্রহ সৃষ্টি প্রক্রিয়ার এতটাই প্রাথমিক স্তর যে, আগে কখনো এমন দৃশ্যমান হয়নি বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
১৪ ঘণ্টা আগেযুক্তরাজ্যের চিকিৎসকেরা এক যুগান্তকারী পদ্ধতি ব্যবহার করে আট সুস্থ শিশুর জন্ম দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এই পদ্ধতিতে তিন ব্যক্তির ডিএনএ সমন্বয় করে আইভিএফ (ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) ভ্রূণ তৈরি করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল, যাতে শিশুরা দুরারোগ্য জিনগত ব্যাধি উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া থেকে রক্ষা পায়।
৬ দিন আগেপ্রাণীরা একে অপরের ডাকে সাড়া দেয়, এই তথ্য আমাদের অনেকের জানা। তবে সম্প্রতি এক নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে আরও বিস্ময়কর এক তথ্য। গাছও শব্দ করে, আর সেই শব্দ শুনেই সিদ্ধান্ত নেয় পোকামাকড়। এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উদ্ভিদ ও প্রাণীর মধ্যে এক নতুন ধরনের যোগসূত্রের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
৮ দিন আগেসবচেয়ে কাছ থেকে তোলা সূর্যের ছবি প্রকাশ করেছে নাসা। এসব ছবি পাঠিয়েছে নাসার মহাকাশযান পার্কার সোলার প্রোব। এই মহাকাশযান সূর্যের পৃষ্ঠের মাত্র ৩ দশমিক ৮ মিলিয়ন মাইল (৬ দশমিক ১ মিলিয়ন কিলোমিটার) দূর থেকে ছবি তোলে।
৯ দিন আগে