আমিনুল ইসলাম

‘গত বছরের ক্ষতি কাটায়া উঠতে না উঠতেই লকডাউন দিয়া দিল।’ এই এক বাক্যের পেছনে কতটা দীর্ঘশ্বাস জড়ানো, তা মোহাম্মদ কাজলের চোখ না দেখলে বোঝা সম্ভব নয়। করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই বাজে দিকে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে আগামীকাল সোমবার থেকে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। সরকারের তরফ থেকে ‘লকডাউন’ বলা না হলেও সাধারণ মানুষের মুখে মুখে এই বিধিনিষেধ লকডাউনেরই সমার্থক।
করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এবারও লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল। শেষ পর্যন্ত তেমন সিদ্ধান্ত আসেনি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তাকে সাধারণ মানুষ লকডাউন বলেই বিবেচনা করছেন। গেলবারের মতোই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকছে। তবে আগের মতোই বেশ কিছু বিষয় এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকছে। ফলে ঘরের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কার্যকর হলেও বিশেষত নিম্ন আয়ের মানুষদের কপালে এই সরকারি নির্দেশনা চিন্তার ভাঁজ এনে দিয়েছে। এমনই একজন লিয়াকত আলী।
রাজধানীর রামপুরা ব্রিজসংলগ্ন ফুটপাতে চা বিক্রি করেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার মোহাম্মদ লিয়াকত আলী (৪৬)। পরিবার নিয়ে থাকেন বাড্ডায়। সন্তান-স্ত্রী-মা-বাবাসহ মোট ১১ জনের পেট চলে এই ছোট দোকানের আয় দিয়েই। ডাল-ভাত মিলিয়ে ভালোই যাচ্ছিল দিন। কিন্তু হঠাৎ ‘লকডাউন’–এর খবর শুনে কীভাবে সংসার চালাবেন, তার চিন্তায় থই পাচ্ছেন না কোনো।
লিয়াকত আলীর ভাষায়, ‘সন্তানদের পড়াশোনা, খাওয়া-দাওয়া সবকিছু নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমাদের মতো গরিবদের জন্য “লকডাউন” এক আতঙ্কের নাম। ধনীদের কিছুই হবে না। আমাদের মতো গরিবদের না খেয়ে মরার অবস্থা হবে।
একই রকম পরিস্থিতিতে পড়েছেন কাপড় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ কাজল। রাজধানীর বঙ্গবাজারের সিটি মার্কেটের এ কাপড় ব্যবসায়ী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরের ক্ষতি কাটায়া উঠতে না উঠতেই “লকডাউন” দিয়া দিল। এমনিতেই ঋণ-কিস্তিতে ডুইবা আছি। কী যে করুম, বুঝতে পারছি না। রোজায় ভালো বেচাবিক্রি হইব ভাবছিলাম।’
মোহাম্মদ কাজল বলেন, ‘এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। আমরা সরকারের কাছে মার্কেট খোলা রাখার দাবি জানাই।’
আগামীকাল থেকে মার্কেট খোলা থাকবে, নাকি বন্ধ থাকবে, তা নিয়ে মার্কেট কর্তৃপক্ষ এখনো কিছু জানায়নি বলে জানিয়েছেন কাজল। বললেন, ‘টিভিতে লকডাউনের খবর দেখলাম। বলাবলি হচ্ছে, মার্কেট নাকি খুলতে দিব না।’
তরুণ উদ্যোক্তা ‘বেকারত্ব হটাও’–এর প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, যে হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, ‘লকডাউন’–এর বিকল্প ছিল না। তবে সবাই যেন সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলে, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। যদি গত বছরের মতো পরিস্থিতি হয়, তাহলে করোনাও কমবে না, আবার অর্থনীতিতেও বড় আঘাত আসবে।
‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে অনেকেই চাকরি হারানোর শঙ্কায় আছেন। এমন পরিস্থিতিতে তরুণদের অনলাইন বা ই-কমার্স বিজনেসের দিকে ঝুঁকতে হবে উল্লেখ করে ফাহিম বলেন, ‘লকডাউন’–এর সময় ই-কমার্সের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা যায়। কারণ, এই সময়ে মানুষেরা তেমন ঘর থেকে বের হতে পারবে না। তাই এখনই সময় ই-কমার্স বিজনেসের দিকে নজর দেওয়া। তবে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সময়-শ্রম দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে। আর অবশ্যই করোনাবিষয়ক স্বাস্থ্যনীতি মেনে চলতে হবে। ঠিকমতো স্বাস্থ্যবিধি না মানলে দেখা যাবে সরকার এই বিধিনিষেধের সময়সীমা আরও বাড়াবে। এতে হুমকিতে পড়বে অর্থনীতি।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি কঠোর বিধিনিষেধের ঘোষণাকে সমাজের একেক শ্রেণি একেকভাবে নিচ্ছে। বিশেষত নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে গভীর চিন্তায়। গেলবারের মতো এবারও তারা চরম অর্থনৈতিক দুর্ধশায় পড়ার আশঙ্কা করছেন। সচেতন মহল এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও নিম্নবিত্তদের দুর্দশাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন না। গত বছর এমন সময়ে লকডাউন চলাকালে রাজধানীর সড়কগুলোতে বহু মানুষকে খাবারের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। গেলবারের ধাক্কায় বহু মানুষ নিজের পরিবারকে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তারপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে কেউ কেউ ফিরে আসেন। গতকাল শনিবার লকডাউনের মতো পদক্ষেপের ঘোষণা আসতে পারে বলে জানার পরই শহর ছাড়তে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়। বহু মানুষ গতকালই শহর ছেড়েছেন। আজ রোববারও এ ধারা অব্যাহত ছিল।
লকডাউনের মতো পদক্ষেপ শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের যেকোনো দেশের নিম্নবিত্তকেই সংকটে ফেলে। এই সময়ে ই–কমার্স ভিত্তিক ব্যবসার সম্প্রসারণ হলেও খেটে খাওয়া মানুষসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের আয়ের উৎস প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এবারও নিম্নবিত্তদের মধ্যে একই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাজধানীর কোনো কোনো জায়গায় প্রতিবাদও হয়েছে। মূলত অর্থনৈতিক নিরাপত্তাই মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকি মাথায় নিয়ে কাজে নামার দাবি তুলতে বাধ্য করছে। শরবত বিক্রতা আব্দুল হালিমের কথাই আদতে এই শ্রেণির সব মানুষের অন্তরের কথা।
রাজধানীর নবাবপুর এলাকায় শরবত বিক্রেতা আব্দুল হালিম বলেন, ‘হঠাৎ “লকডাউন” দিয়া দিছে। সাতদিন কেন, আমাগো একদিনও কাজ ছাড়া চলনের উপায় নাই। এমন বেশি দিন হইলে ভিক্ষা ছাড়া উপায় থাকব না। সরকারের উচিত আমগো দিকে দেখা।’

‘গত বছরের ক্ষতি কাটায়া উঠতে না উঠতেই লকডাউন দিয়া দিল।’ এই এক বাক্যের পেছনে কতটা দীর্ঘশ্বাস জড়ানো, তা মোহাম্মদ কাজলের চোখ না দেখলে বোঝা সম্ভব নয়। করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই বাজে দিকে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে আগামীকাল সোমবার থেকে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। সরকারের তরফ থেকে ‘লকডাউন’ বলা না হলেও সাধারণ মানুষের মুখে মুখে এই বিধিনিষেধ লকডাউনেরই সমার্থক।
করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এবারও লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল। শেষ পর্যন্ত তেমন সিদ্ধান্ত আসেনি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তাকে সাধারণ মানুষ লকডাউন বলেই বিবেচনা করছেন। গেলবারের মতোই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকছে। তবে আগের মতোই বেশ কিছু বিষয় এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকছে। ফলে ঘরের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কার্যকর হলেও বিশেষত নিম্ন আয়ের মানুষদের কপালে এই সরকারি নির্দেশনা চিন্তার ভাঁজ এনে দিয়েছে। এমনই একজন লিয়াকত আলী।
রাজধানীর রামপুরা ব্রিজসংলগ্ন ফুটপাতে চা বিক্রি করেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার মোহাম্মদ লিয়াকত আলী (৪৬)। পরিবার নিয়ে থাকেন বাড্ডায়। সন্তান-স্ত্রী-মা-বাবাসহ মোট ১১ জনের পেট চলে এই ছোট দোকানের আয় দিয়েই। ডাল-ভাত মিলিয়ে ভালোই যাচ্ছিল দিন। কিন্তু হঠাৎ ‘লকডাউন’–এর খবর শুনে কীভাবে সংসার চালাবেন, তার চিন্তায় থই পাচ্ছেন না কোনো।
লিয়াকত আলীর ভাষায়, ‘সন্তানদের পড়াশোনা, খাওয়া-দাওয়া সবকিছু নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমাদের মতো গরিবদের জন্য “লকডাউন” এক আতঙ্কের নাম। ধনীদের কিছুই হবে না। আমাদের মতো গরিবদের না খেয়ে মরার অবস্থা হবে।
একই রকম পরিস্থিতিতে পড়েছেন কাপড় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ কাজল। রাজধানীর বঙ্গবাজারের সিটি মার্কেটের এ কাপড় ব্যবসায়ী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরের ক্ষতি কাটায়া উঠতে না উঠতেই “লকডাউন” দিয়া দিল। এমনিতেই ঋণ-কিস্তিতে ডুইবা আছি। কী যে করুম, বুঝতে পারছি না। রোজায় ভালো বেচাবিক্রি হইব ভাবছিলাম।’
মোহাম্মদ কাজল বলেন, ‘এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। আমরা সরকারের কাছে মার্কেট খোলা রাখার দাবি জানাই।’
আগামীকাল থেকে মার্কেট খোলা থাকবে, নাকি বন্ধ থাকবে, তা নিয়ে মার্কেট কর্তৃপক্ষ এখনো কিছু জানায়নি বলে জানিয়েছেন কাজল। বললেন, ‘টিভিতে লকডাউনের খবর দেখলাম। বলাবলি হচ্ছে, মার্কেট নাকি খুলতে দিব না।’
তরুণ উদ্যোক্তা ‘বেকারত্ব হটাও’–এর প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, যে হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, ‘লকডাউন’–এর বিকল্প ছিল না। তবে সবাই যেন সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলে, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। যদি গত বছরের মতো পরিস্থিতি হয়, তাহলে করোনাও কমবে না, আবার অর্থনীতিতেও বড় আঘাত আসবে।
‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে অনেকেই চাকরি হারানোর শঙ্কায় আছেন। এমন পরিস্থিতিতে তরুণদের অনলাইন বা ই-কমার্স বিজনেসের দিকে ঝুঁকতে হবে উল্লেখ করে ফাহিম বলেন, ‘লকডাউন’–এর সময় ই-কমার্সের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা যায়। কারণ, এই সময়ে মানুষেরা তেমন ঘর থেকে বের হতে পারবে না। তাই এখনই সময় ই-কমার্স বিজনেসের দিকে নজর দেওয়া। তবে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সময়-শ্রম দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে। আর অবশ্যই করোনাবিষয়ক স্বাস্থ্যনীতি মেনে চলতে হবে। ঠিকমতো স্বাস্থ্যবিধি না মানলে দেখা যাবে সরকার এই বিধিনিষেধের সময়সীমা আরও বাড়াবে। এতে হুমকিতে পড়বে অর্থনীতি।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি কঠোর বিধিনিষেধের ঘোষণাকে সমাজের একেক শ্রেণি একেকভাবে নিচ্ছে। বিশেষত নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে গভীর চিন্তায়। গেলবারের মতো এবারও তারা চরম অর্থনৈতিক দুর্ধশায় পড়ার আশঙ্কা করছেন। সচেতন মহল এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও নিম্নবিত্তদের দুর্দশাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন না। গত বছর এমন সময়ে লকডাউন চলাকালে রাজধানীর সড়কগুলোতে বহু মানুষকে খাবারের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। গেলবারের ধাক্কায় বহু মানুষ নিজের পরিবারকে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তারপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে কেউ কেউ ফিরে আসেন। গতকাল শনিবার লকডাউনের মতো পদক্ষেপের ঘোষণা আসতে পারে বলে জানার পরই শহর ছাড়তে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়। বহু মানুষ গতকালই শহর ছেড়েছেন। আজ রোববারও এ ধারা অব্যাহত ছিল।
লকডাউনের মতো পদক্ষেপ শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের যেকোনো দেশের নিম্নবিত্তকেই সংকটে ফেলে। এই সময়ে ই–কমার্স ভিত্তিক ব্যবসার সম্প্রসারণ হলেও খেটে খাওয়া মানুষসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের আয়ের উৎস প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এবারও নিম্নবিত্তদের মধ্যে একই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাজধানীর কোনো কোনো জায়গায় প্রতিবাদও হয়েছে। মূলত অর্থনৈতিক নিরাপত্তাই মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকি মাথায় নিয়ে কাজে নামার দাবি তুলতে বাধ্য করছে। শরবত বিক্রতা আব্দুল হালিমের কথাই আদতে এই শ্রেণির সব মানুষের অন্তরের কথা।
রাজধানীর নবাবপুর এলাকায় শরবত বিক্রেতা আব্দুল হালিম বলেন, ‘হঠাৎ “লকডাউন” দিয়া দিছে। সাতদিন কেন, আমাগো একদিনও কাজ ছাড়া চলনের উপায় নাই। এমন বেশি দিন হইলে ভিক্ষা ছাড়া উপায় থাকব না। সরকারের উচিত আমগো দিকে দেখা।’
আমিনুল ইসলাম

‘গত বছরের ক্ষতি কাটায়া উঠতে না উঠতেই লকডাউন দিয়া দিল।’ এই এক বাক্যের পেছনে কতটা দীর্ঘশ্বাস জড়ানো, তা মোহাম্মদ কাজলের চোখ না দেখলে বোঝা সম্ভব নয়। করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই বাজে দিকে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে আগামীকাল সোমবার থেকে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। সরকারের তরফ থেকে ‘লকডাউন’ বলা না হলেও সাধারণ মানুষের মুখে মুখে এই বিধিনিষেধ লকডাউনেরই সমার্থক।
করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এবারও লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল। শেষ পর্যন্ত তেমন সিদ্ধান্ত আসেনি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তাকে সাধারণ মানুষ লকডাউন বলেই বিবেচনা করছেন। গেলবারের মতোই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকছে। তবে আগের মতোই বেশ কিছু বিষয় এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকছে। ফলে ঘরের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কার্যকর হলেও বিশেষত নিম্ন আয়ের মানুষদের কপালে এই সরকারি নির্দেশনা চিন্তার ভাঁজ এনে দিয়েছে। এমনই একজন লিয়াকত আলী।
রাজধানীর রামপুরা ব্রিজসংলগ্ন ফুটপাতে চা বিক্রি করেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার মোহাম্মদ লিয়াকত আলী (৪৬)। পরিবার নিয়ে থাকেন বাড্ডায়। সন্তান-স্ত্রী-মা-বাবাসহ মোট ১১ জনের পেট চলে এই ছোট দোকানের আয় দিয়েই। ডাল-ভাত মিলিয়ে ভালোই যাচ্ছিল দিন। কিন্তু হঠাৎ ‘লকডাউন’–এর খবর শুনে কীভাবে সংসার চালাবেন, তার চিন্তায় থই পাচ্ছেন না কোনো।
লিয়াকত আলীর ভাষায়, ‘সন্তানদের পড়াশোনা, খাওয়া-দাওয়া সবকিছু নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমাদের মতো গরিবদের জন্য “লকডাউন” এক আতঙ্কের নাম। ধনীদের কিছুই হবে না। আমাদের মতো গরিবদের না খেয়ে মরার অবস্থা হবে।
একই রকম পরিস্থিতিতে পড়েছেন কাপড় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ কাজল। রাজধানীর বঙ্গবাজারের সিটি মার্কেটের এ কাপড় ব্যবসায়ী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরের ক্ষতি কাটায়া উঠতে না উঠতেই “লকডাউন” দিয়া দিল। এমনিতেই ঋণ-কিস্তিতে ডুইবা আছি। কী যে করুম, বুঝতে পারছি না। রোজায় ভালো বেচাবিক্রি হইব ভাবছিলাম।’
মোহাম্মদ কাজল বলেন, ‘এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। আমরা সরকারের কাছে মার্কেট খোলা রাখার দাবি জানাই।’
আগামীকাল থেকে মার্কেট খোলা থাকবে, নাকি বন্ধ থাকবে, তা নিয়ে মার্কেট কর্তৃপক্ষ এখনো কিছু জানায়নি বলে জানিয়েছেন কাজল। বললেন, ‘টিভিতে লকডাউনের খবর দেখলাম। বলাবলি হচ্ছে, মার্কেট নাকি খুলতে দিব না।’
তরুণ উদ্যোক্তা ‘বেকারত্ব হটাও’–এর প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, যে হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, ‘লকডাউন’–এর বিকল্প ছিল না। তবে সবাই যেন সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলে, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। যদি গত বছরের মতো পরিস্থিতি হয়, তাহলে করোনাও কমবে না, আবার অর্থনীতিতেও বড় আঘাত আসবে।
‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে অনেকেই চাকরি হারানোর শঙ্কায় আছেন। এমন পরিস্থিতিতে তরুণদের অনলাইন বা ই-কমার্স বিজনেসের দিকে ঝুঁকতে হবে উল্লেখ করে ফাহিম বলেন, ‘লকডাউন’–এর সময় ই-কমার্সের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা যায়। কারণ, এই সময়ে মানুষেরা তেমন ঘর থেকে বের হতে পারবে না। তাই এখনই সময় ই-কমার্স বিজনেসের দিকে নজর দেওয়া। তবে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সময়-শ্রম দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে। আর অবশ্যই করোনাবিষয়ক স্বাস্থ্যনীতি মেনে চলতে হবে। ঠিকমতো স্বাস্থ্যবিধি না মানলে দেখা যাবে সরকার এই বিধিনিষেধের সময়সীমা আরও বাড়াবে। এতে হুমকিতে পড়বে অর্থনীতি।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি কঠোর বিধিনিষেধের ঘোষণাকে সমাজের একেক শ্রেণি একেকভাবে নিচ্ছে। বিশেষত নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে গভীর চিন্তায়। গেলবারের মতো এবারও তারা চরম অর্থনৈতিক দুর্ধশায় পড়ার আশঙ্কা করছেন। সচেতন মহল এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও নিম্নবিত্তদের দুর্দশাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন না। গত বছর এমন সময়ে লকডাউন চলাকালে রাজধানীর সড়কগুলোতে বহু মানুষকে খাবারের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। গেলবারের ধাক্কায় বহু মানুষ নিজের পরিবারকে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তারপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে কেউ কেউ ফিরে আসেন। গতকাল শনিবার লকডাউনের মতো পদক্ষেপের ঘোষণা আসতে পারে বলে জানার পরই শহর ছাড়তে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়। বহু মানুষ গতকালই শহর ছেড়েছেন। আজ রোববারও এ ধারা অব্যাহত ছিল।
লকডাউনের মতো পদক্ষেপ শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের যেকোনো দেশের নিম্নবিত্তকেই সংকটে ফেলে। এই সময়ে ই–কমার্স ভিত্তিক ব্যবসার সম্প্রসারণ হলেও খেটে খাওয়া মানুষসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের আয়ের উৎস প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এবারও নিম্নবিত্তদের মধ্যে একই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাজধানীর কোনো কোনো জায়গায় প্রতিবাদও হয়েছে। মূলত অর্থনৈতিক নিরাপত্তাই মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকি মাথায় নিয়ে কাজে নামার দাবি তুলতে বাধ্য করছে। শরবত বিক্রতা আব্দুল হালিমের কথাই আদতে এই শ্রেণির সব মানুষের অন্তরের কথা।
রাজধানীর নবাবপুর এলাকায় শরবত বিক্রেতা আব্দুল হালিম বলেন, ‘হঠাৎ “লকডাউন” দিয়া দিছে। সাতদিন কেন, আমাগো একদিনও কাজ ছাড়া চলনের উপায় নাই। এমন বেশি দিন হইলে ভিক্ষা ছাড়া উপায় থাকব না। সরকারের উচিত আমগো দিকে দেখা।’

‘গত বছরের ক্ষতি কাটায়া উঠতে না উঠতেই লকডাউন দিয়া দিল।’ এই এক বাক্যের পেছনে কতটা দীর্ঘশ্বাস জড়ানো, তা মোহাম্মদ কাজলের চোখ না দেখলে বোঝা সম্ভব নয়। করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই বাজে দিকে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে আগামীকাল সোমবার থেকে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। সরকারের তরফ থেকে ‘লকডাউন’ বলা না হলেও সাধারণ মানুষের মুখে মুখে এই বিধিনিষেধ লকডাউনেরই সমার্থক।
করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এবারও লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল। শেষ পর্যন্ত তেমন সিদ্ধান্ত আসেনি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তাকে সাধারণ মানুষ লকডাউন বলেই বিবেচনা করছেন। গেলবারের মতোই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকছে। তবে আগের মতোই বেশ কিছু বিষয় এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকছে। ফলে ঘরের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কার্যকর হলেও বিশেষত নিম্ন আয়ের মানুষদের কপালে এই সরকারি নির্দেশনা চিন্তার ভাঁজ এনে দিয়েছে। এমনই একজন লিয়াকত আলী।
রাজধানীর রামপুরা ব্রিজসংলগ্ন ফুটপাতে চা বিক্রি করেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার মোহাম্মদ লিয়াকত আলী (৪৬)। পরিবার নিয়ে থাকেন বাড্ডায়। সন্তান-স্ত্রী-মা-বাবাসহ মোট ১১ জনের পেট চলে এই ছোট দোকানের আয় দিয়েই। ডাল-ভাত মিলিয়ে ভালোই যাচ্ছিল দিন। কিন্তু হঠাৎ ‘লকডাউন’–এর খবর শুনে কীভাবে সংসার চালাবেন, তার চিন্তায় থই পাচ্ছেন না কোনো।
লিয়াকত আলীর ভাষায়, ‘সন্তানদের পড়াশোনা, খাওয়া-দাওয়া সবকিছু নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমাদের মতো গরিবদের জন্য “লকডাউন” এক আতঙ্কের নাম। ধনীদের কিছুই হবে না। আমাদের মতো গরিবদের না খেয়ে মরার অবস্থা হবে।
একই রকম পরিস্থিতিতে পড়েছেন কাপড় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ কাজল। রাজধানীর বঙ্গবাজারের সিটি মার্কেটের এ কাপড় ব্যবসায়ী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরের ক্ষতি কাটায়া উঠতে না উঠতেই “লকডাউন” দিয়া দিল। এমনিতেই ঋণ-কিস্তিতে ডুইবা আছি। কী যে করুম, বুঝতে পারছি না। রোজায় ভালো বেচাবিক্রি হইব ভাবছিলাম।’
মোহাম্মদ কাজল বলেন, ‘এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। আমরা সরকারের কাছে মার্কেট খোলা রাখার দাবি জানাই।’
আগামীকাল থেকে মার্কেট খোলা থাকবে, নাকি বন্ধ থাকবে, তা নিয়ে মার্কেট কর্তৃপক্ষ এখনো কিছু জানায়নি বলে জানিয়েছেন কাজল। বললেন, ‘টিভিতে লকডাউনের খবর দেখলাম। বলাবলি হচ্ছে, মার্কেট নাকি খুলতে দিব না।’
তরুণ উদ্যোক্তা ‘বেকারত্ব হটাও’–এর প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, যে হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, ‘লকডাউন’–এর বিকল্প ছিল না। তবে সবাই যেন সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলে, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। যদি গত বছরের মতো পরিস্থিতি হয়, তাহলে করোনাও কমবে না, আবার অর্থনীতিতেও বড় আঘাত আসবে।
‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে অনেকেই চাকরি হারানোর শঙ্কায় আছেন। এমন পরিস্থিতিতে তরুণদের অনলাইন বা ই-কমার্স বিজনেসের দিকে ঝুঁকতে হবে উল্লেখ করে ফাহিম বলেন, ‘লকডাউন’–এর সময় ই-কমার্সের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা যায়। কারণ, এই সময়ে মানুষেরা তেমন ঘর থেকে বের হতে পারবে না। তাই এখনই সময় ই-কমার্স বিজনেসের দিকে নজর দেওয়া। তবে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সময়-শ্রম দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে। আর অবশ্যই করোনাবিষয়ক স্বাস্থ্যনীতি মেনে চলতে হবে। ঠিকমতো স্বাস্থ্যবিধি না মানলে দেখা যাবে সরকার এই বিধিনিষেধের সময়সীমা আরও বাড়াবে। এতে হুমকিতে পড়বে অর্থনীতি।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি কঠোর বিধিনিষেধের ঘোষণাকে সমাজের একেক শ্রেণি একেকভাবে নিচ্ছে। বিশেষত নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে গভীর চিন্তায়। গেলবারের মতো এবারও তারা চরম অর্থনৈতিক দুর্ধশায় পড়ার আশঙ্কা করছেন। সচেতন মহল এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও নিম্নবিত্তদের দুর্দশাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন না। গত বছর এমন সময়ে লকডাউন চলাকালে রাজধানীর সড়কগুলোতে বহু মানুষকে খাবারের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। গেলবারের ধাক্কায় বহু মানুষ নিজের পরিবারকে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তারপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে কেউ কেউ ফিরে আসেন। গতকাল শনিবার লকডাউনের মতো পদক্ষেপের ঘোষণা আসতে পারে বলে জানার পরই শহর ছাড়তে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়। বহু মানুষ গতকালই শহর ছেড়েছেন। আজ রোববারও এ ধারা অব্যাহত ছিল।
লকডাউনের মতো পদক্ষেপ শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের যেকোনো দেশের নিম্নবিত্তকেই সংকটে ফেলে। এই সময়ে ই–কমার্স ভিত্তিক ব্যবসার সম্প্রসারণ হলেও খেটে খাওয়া মানুষসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের আয়ের উৎস প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এবারও নিম্নবিত্তদের মধ্যে একই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাজধানীর কোনো কোনো জায়গায় প্রতিবাদও হয়েছে। মূলত অর্থনৈতিক নিরাপত্তাই মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকি মাথায় নিয়ে কাজে নামার দাবি তুলতে বাধ্য করছে। শরবত বিক্রতা আব্দুল হালিমের কথাই আদতে এই শ্রেণির সব মানুষের অন্তরের কথা।
রাজধানীর নবাবপুর এলাকায় শরবত বিক্রেতা আব্দুল হালিম বলেন, ‘হঠাৎ “লকডাউন” দিয়া দিছে। সাতদিন কেন, আমাগো একদিনও কাজ ছাড়া চলনের উপায় নাই। এমন বেশি দিন হইলে ভিক্ষা ছাড়া উপায় থাকব না। সরকারের উচিত আমগো দিকে দেখা।’

প্রায় ৪৫ বছর আগের কথা। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে ভালোই চলছিল শেফালী বেগমের সংসার। হঠাৎ করেই একদিন উধাও তাঁর স্বামী আলম হোসেন। এরপরই পাল্টে যায় শেফালীর জীবন।
২৯ জানুয়ারি ২০২৫
ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষ
২৬ অক্টোবর ২০২৪
ফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয়
২৩ অক্টোবর ২০২৪
কথায় আছে না—‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি...
২৬ মে ২০২৪শাহীন রহমান, পাবনা

প্রায় ৪৫ বছর আগের কথা। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে ভালোই চলছিল শেফালী বেগমের সংসার। হঠাৎ করেই একদিন উধাও তাঁর স্বামী আলম হোসেন। এরপরই পাল্টে যায় শেফালীর জীবন। কী করবেন ভেবে না পেয়ে বেছে নেন এক অদ্ভুত আয়ের জীবন। চুম্বকের সাহায্যে লোহার টুকরো কুড়িয়ে সেগুলো বিক্রি করে চলে তাঁর একার সংসার। শেফালী বেগমের (৭০) এই অবস্থায় কেউ নেই পাশে। পরিত্যক্ত চাটমোহর দাতব্য চিকিৎসালয়ের উত্তর পাশে বড়াল নদের পাড়ে ছোট্ট ভাঙাচোরা এক ঝুপড়িঘরে শেফালীর বসবাস। স্বামী, সন্তান, আত্মীয়রা কেউ না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।
চাটমোহর পৌর সদরে কথা হয় শেফালী বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রায় ৪৫ বছর আগের কথা। তাঁর পৈতৃক নিবাস চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের লাউতিয়া গ্রামে। বাবা মৃত আব্দুর রহমান প্রামাণিক। শেফালীরা ছিলেন চার ভাই, দুই বোন। মা-বাবাসহ বড় পরিবার পরিচালনা করতে হিমশিম খেতেন শেফালীর মৎস্যজীবী বাবা আব্দুর রহমান। শেফালী যখন ছোট, তখন তাঁর বাবা মারা যান। তাই অভাবের সংসারে পড়ালেখার সুযোগ হয়নি।
একপর্যায়ে কাজের সন্ধানে চলে যান পাশের ঈশ্বরদী উপজেলায়। ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনের পাশে থাকতেন তিনি। যৌবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন সেখানে। জিআরপি থানার তৎকালীন পুলিশ সদস্যরা তাঁর অসহায়ের কথা ভেবে আলম হোসেন নামে রংপুরের এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেন। অন্ধকার জীবনে নতুন সংসার হয় শেফালীর। স্বামীর সঙ্গে ভাড়াবাড়িতে সুখে-দুঃখে ভালোই দিন কাটছিল তাঁদের। প্রায় পনেরো বছর সংসার করার পর একদিন শেফালীকে ছেড়ে হঠাৎ পালিয়ে যান আলম। অনেক খুঁজেও স্বামীকে আর ফিরে পাননি তিনি। পরে শুনেছেন অন্য কাউকে বিয়ে করে তাঁর সঙ্গে সংসার করছেন।
কী করবেন, কীভাবে চলবেন ভেবে না পেয়ে অভিমানে ঈশ্বরদী ছেড়ে জন্মভূমি চাটমোহরে ফিরে আসেন শেফালী। পৌর সদরে সুলতান হোসেন নামের এক ব্যক্তির সহায়তায় তাঁর জায়গায় একটি ঝুপড়িঘর তুলে বসবাস করতে থাকেন। সেখান থেকে নিমতলা এলাকায় বড়াল নদের পাড়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের পাশে সরকারি জায়গায় মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় শেফালীর। কয়েক বছর পর সেখান থেকেও সরে যেতে হয় তাঁকে।
প্রায় ১০ বছর ধরে বসবাস করছেন পরিত্যক্ত চাটমোহর দাতব্য চিকিৎসালয়ের উত্তর পাশে বড়ালের পাড়ে ছোট্ট ভাঙাচোরা এক ঝুপড়ি ঘরে।

শেফালী বেগম বলেন, খেয়ে-পরে জীবন চালানোর জন্য কিছু না কিছু তো করতে হবে। চেয়েচিন্তে, ভিক্ষা করে পেট চলে না। তাই বেঁচে থাকার জন্য পেশা হিসেবে বেছে নিতে হয় চুম্বকের সাহায্যে লোহা সংগ্রহের কাজ। ভোর হলে বেরিয়ে পড়তে হয়।
তিনি জানান, মাঝারি আকৃতির একটা চুম্বকের সঙ্গে রশি বাঁধা থাকে। চুম্বকটি রাস্তায় ফেলে রশির অপর প্রান্ত ধরে টেনে টেনে হেঁটে চলেন তিনি। চুম্বকের আকর্ষণে চুম্বকের সঙ্গে আটকে আসে লোহার টুকরো, পুরোনো ব্লেড ও অন্যান্য লৌহজাত দ্রব্য। বিক্রি হয় না বলে ধারালো ব্লেডগুলো চুম্বক থেকে টেনে খুলে ফেলে দেন তিনি।
লোহার টুকরোগুলো সংগ্রহ করে বিক্রি করে যে টাকা পান, তাতেই চলে শেফালীর জীবিকা। প্রায় সারা দিন চলে লোহা ও প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহের কাজ। সংগৃহীত লোহা, প্লাস্টিকের বোতল চাটমোহর দাতব্য চিকিৎসালয়ের বারান্দায় জমান। কিছুদিন পরপর বিক্রি করেন। যে টাকা পান, তা দিয়েই খাবারের ব্যবস্থা করতে হয় তাঁকে।
শেফালী আরও জানান, বাড়িঘর, বয়স হয়ে যাওয়ায় এখন কাজ করা কঠিন হয়ে গেছে। ভাত-কাপড়ের পাশাপাশি লাগে ওষুধপত্রও। তাই জীবন চালাতে কাজ করতে হচ্ছে। ভাঙা ঘরে শেয়াল-কুকুর ঢোকে। রান্না করা ভাত কুকুরে খেয়ে যায়। বৃষ্টির সময় পানি পড়ে ঘরের চাল দিয়ে। একটি ঘর থাকলে সেখানে নিশ্চিন্তে থাকতে পারতেন তিনি। সরকারিভাবে একটা ঘর চান তিনি।
চাটমোহর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, ‘শেফালীর ব্যাপারটি আমি আপনার থেকে জানলাম। তিনি যদি চাটমোহরের নাগরিক হয়ে থাকেন, তাহলে সমাজসেবা অফিস থেকে বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করে দেব। অসুস্থ হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।’
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, ‘তাঁর বিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। আর সরকারি প্রকল্পের ঘর খালি থাকা সাপেক্ষে তাকে একটি ঘর বরাদ্দ দেওয়া যায় কি না, সেটি দেখা হবে।’

প্রায় ৪৫ বছর আগের কথা। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে ভালোই চলছিল শেফালী বেগমের সংসার। হঠাৎ করেই একদিন উধাও তাঁর স্বামী আলম হোসেন। এরপরই পাল্টে যায় শেফালীর জীবন। কী করবেন ভেবে না পেয়ে বেছে নেন এক অদ্ভুত আয়ের জীবন। চুম্বকের সাহায্যে লোহার টুকরো কুড়িয়ে সেগুলো বিক্রি করে চলে তাঁর একার সংসার। শেফালী বেগমের (৭০) এই অবস্থায় কেউ নেই পাশে। পরিত্যক্ত চাটমোহর দাতব্য চিকিৎসালয়ের উত্তর পাশে বড়াল নদের পাড়ে ছোট্ট ভাঙাচোরা এক ঝুপড়িঘরে শেফালীর বসবাস। স্বামী, সন্তান, আত্মীয়রা কেউ না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।
চাটমোহর পৌর সদরে কথা হয় শেফালী বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রায় ৪৫ বছর আগের কথা। তাঁর পৈতৃক নিবাস চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের লাউতিয়া গ্রামে। বাবা মৃত আব্দুর রহমান প্রামাণিক। শেফালীরা ছিলেন চার ভাই, দুই বোন। মা-বাবাসহ বড় পরিবার পরিচালনা করতে হিমশিম খেতেন শেফালীর মৎস্যজীবী বাবা আব্দুর রহমান। শেফালী যখন ছোট, তখন তাঁর বাবা মারা যান। তাই অভাবের সংসারে পড়ালেখার সুযোগ হয়নি।
একপর্যায়ে কাজের সন্ধানে চলে যান পাশের ঈশ্বরদী উপজেলায়। ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনের পাশে থাকতেন তিনি। যৌবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন সেখানে। জিআরপি থানার তৎকালীন পুলিশ সদস্যরা তাঁর অসহায়ের কথা ভেবে আলম হোসেন নামে রংপুরের এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেন। অন্ধকার জীবনে নতুন সংসার হয় শেফালীর। স্বামীর সঙ্গে ভাড়াবাড়িতে সুখে-দুঃখে ভালোই দিন কাটছিল তাঁদের। প্রায় পনেরো বছর সংসার করার পর একদিন শেফালীকে ছেড়ে হঠাৎ পালিয়ে যান আলম। অনেক খুঁজেও স্বামীকে আর ফিরে পাননি তিনি। পরে শুনেছেন অন্য কাউকে বিয়ে করে তাঁর সঙ্গে সংসার করছেন।
কী করবেন, কীভাবে চলবেন ভেবে না পেয়ে অভিমানে ঈশ্বরদী ছেড়ে জন্মভূমি চাটমোহরে ফিরে আসেন শেফালী। পৌর সদরে সুলতান হোসেন নামের এক ব্যক্তির সহায়তায় তাঁর জায়গায় একটি ঝুপড়িঘর তুলে বসবাস করতে থাকেন। সেখান থেকে নিমতলা এলাকায় বড়াল নদের পাড়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের পাশে সরকারি জায়গায় মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় শেফালীর। কয়েক বছর পর সেখান থেকেও সরে যেতে হয় তাঁকে।
প্রায় ১০ বছর ধরে বসবাস করছেন পরিত্যক্ত চাটমোহর দাতব্য চিকিৎসালয়ের উত্তর পাশে বড়ালের পাড়ে ছোট্ট ভাঙাচোরা এক ঝুপড়ি ঘরে।

শেফালী বেগম বলেন, খেয়ে-পরে জীবন চালানোর জন্য কিছু না কিছু তো করতে হবে। চেয়েচিন্তে, ভিক্ষা করে পেট চলে না। তাই বেঁচে থাকার জন্য পেশা হিসেবে বেছে নিতে হয় চুম্বকের সাহায্যে লোহা সংগ্রহের কাজ। ভোর হলে বেরিয়ে পড়তে হয়।
তিনি জানান, মাঝারি আকৃতির একটা চুম্বকের সঙ্গে রশি বাঁধা থাকে। চুম্বকটি রাস্তায় ফেলে রশির অপর প্রান্ত ধরে টেনে টেনে হেঁটে চলেন তিনি। চুম্বকের আকর্ষণে চুম্বকের সঙ্গে আটকে আসে লোহার টুকরো, পুরোনো ব্লেড ও অন্যান্য লৌহজাত দ্রব্য। বিক্রি হয় না বলে ধারালো ব্লেডগুলো চুম্বক থেকে টেনে খুলে ফেলে দেন তিনি।
লোহার টুকরোগুলো সংগ্রহ করে বিক্রি করে যে টাকা পান, তাতেই চলে শেফালীর জীবিকা। প্রায় সারা দিন চলে লোহা ও প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহের কাজ। সংগৃহীত লোহা, প্লাস্টিকের বোতল চাটমোহর দাতব্য চিকিৎসালয়ের বারান্দায় জমান। কিছুদিন পরপর বিক্রি করেন। যে টাকা পান, তা দিয়েই খাবারের ব্যবস্থা করতে হয় তাঁকে।
শেফালী আরও জানান, বাড়িঘর, বয়স হয়ে যাওয়ায় এখন কাজ করা কঠিন হয়ে গেছে। ভাত-কাপড়ের পাশাপাশি লাগে ওষুধপত্রও। তাই জীবন চালাতে কাজ করতে হচ্ছে। ভাঙা ঘরে শেয়াল-কুকুর ঢোকে। রান্না করা ভাত কুকুরে খেয়ে যায়। বৃষ্টির সময় পানি পড়ে ঘরের চাল দিয়ে। একটি ঘর থাকলে সেখানে নিশ্চিন্তে থাকতে পারতেন তিনি। সরকারিভাবে একটা ঘর চান তিনি।
চাটমোহর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, ‘শেফালীর ব্যাপারটি আমি আপনার থেকে জানলাম। তিনি যদি চাটমোহরের নাগরিক হয়ে থাকেন, তাহলে সমাজসেবা অফিস থেকে বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করে দেব। অসুস্থ হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।’
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, ‘তাঁর বিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। আর সরকারি প্রকল্পের ঘর খালি থাকা সাপেক্ষে তাকে একটি ঘর বরাদ্দ দেওয়া যায় কি না, সেটি দেখা হবে।’

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এবারও লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল। শেষ পর্যন্ত তেমন সিদ্ধান্ত আসেনি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তাকে সাধারণ মানুষ লকডাউন বলেই বিবেচনা করছেন।
০৪ এপ্রিল ২০২১
ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষ
২৬ অক্টোবর ২০২৪
ফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয়
২৩ অক্টোবর ২০২৪
কথায় আছে না—‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি...
২৬ মে ২০২৪আব্দুল্লাহ আল গালিব, ঢাকা

ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। স্বল্প আয়ের এই মানুষগুলোর পক্ষে প্রতিদিনের খাবারের খরচ চালানোও যেন আজ এক অসম্ভব সংগ্রামের।
আজ শুক্রবার এই হাটে প্রায় ৪০ জন পুরুষ এবং ২৫ জন নারী শ্রমিক এসেছেন। তাঁদের মধ্যে কাজ পেয়েছেন ২৫-২৬ জন। যা ৫০ শতাংশেরও কম। তবে তাঁরা জানান, আগে কাজ পাওয়ার হার ৮০ শতাংশ বা এরও বেশি ছিল। সম্প্রতি সরকার বদল ও বিরাজমান অস্থিরতার কারণে বর্তমানে তাঁরা আগের তুলনায় কম কাজ পাচ্ছেন।
কথা হয় ৫৩ বছর বয়সী আব্দুস সালামের সঙ্গে। তাঁর বাড়ি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে। এক হাতে কোদাল আর অন্য হাতে বস্তা নিয়ে প্রতিদিন দাঁড়িয়ে থাকেন কাজের আশায়। আগে মাসে ২০-২২ দিন কাজ পেলেও এখন পান সর্বোচ্চ ১০-১৫ দিন। দৈনিক মজুরি ৬০০ টাকা। বর্তমান বাজারে এই টাকা দিয়ে পর্যাপ্ত খাবার কেনাই সম্ভব হয় না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে বহুগুণ; চাল, ডাল, তেল, সবকিছুর দাম বাড়ায় মাস শেষে পরিবারের জন্য খাবার কিনতেই হিমশিম খাচ্ছেন আব্দুস সালাম। তবুও, তিনি আশা ছাড়েন না। প্রতিদিন নিজেকে প্রস্তুত করেন নতুন উদ্যমে।
৪৩ বছরের ফজলুল হক একাই সংসার চালান। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থেকে আসা এই মানুষটি পাঁচ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালান। একসময় দৈনিক ৭০০-৮০০ টাকা মজুরি পেলেও এখন পাচ্ছেন ৫০০-৬০০ টাকা। এই সামান্য আয়ে পরিবারের জন্য দিনরাত খেটে যাচ্ছেন। নিজের কথা ভুলে গিয়ে ফজলুল হক কেবল ভাবেন, তাঁর পরিবারের মুখে অন্তত একটু খাবার তুলে দেওয়ার কথা। চলমান সংকটে তাঁর এই লড়াই এখন কেবল টিকে থাকার সংগ্রাম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৫ বছরের রবিউল ইসলামও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা। কোনোমতে ভরণপোষণ জোগাড় করছেন পরিবারের। তিনি বলেন, ‘জানি না বাবা, আল্লায় চালাচ্ছেন। নইলে যে কয় টাকা পাই তাতে কোনোভাবেই সংসার চালানো সম্ভব না। এখন তাও ছেলেটা একটু সাহায্য করে বলে, তা না হলে আমি একা পারতামই না।’
নারায়ণগঞ্জের শুক্কুর আলী, ৬০ বছর বয়সেও সংসারের ভার তাঁর কাঁধে। তাঁর দৈনিক ৫০০-৬০০ টাকা আয় দিয়ে পরিবার চালানো খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, ‘জিনিসের দাম বাড়ে, আর আমাদের মজুরি শুধু কমে। তাহলে খেয়ে পরে বাঁচব কীভাবে?’ তাঁর মতো একজন বয়স্ক মানুষ প্রতিদিনের এই যুদ্ধে কোনোমতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
অনেক নারী শ্রমিকদের সঙ্গেও দেখা হয় সেখানে। তাঁদেরই একজন আসমা আক্তার, বয়স ৪০। স্বামী অসুস্থ, তাই সংসারের পুরো খরচ চালাতে তাঁকে কাজ করতে হয়। মাটি কাটা, ঝাড়ু মোছার মতো কাজ করেন, কখনো রাজমিস্ত্রি সহযোগীর কাজও করেন তিনি। আয় এতটাই সীমিত যে প্রতিদিন পরিবারের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা তাঁর জন্য একটা দুঃস্বপ্নের মতো। মাত্র ৪০০-৫০০ টাকায় এত কিছুর জোগান দেওয়া সম্ভব হয় না। তবুও আসমা প্রতিদিন নতুন করে সংগ্রামে নামেন, সন্তানদের মুখে একমুঠো খাবার তুলে দিতে।
এই হাটে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিটি মানুষ দ্রব্যমূল্যের চাপে আজ নুইয়ে পড়েছেন। তাঁদের প্রত্যাশা সামান্য, শুধু একটু খাবারের নিশ্চয়তা। তবে আজকের অর্থনৈতিক সংকটে তাঁদের এই মৌলিক চাহিদাটুকু পূরণ করাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবু তাঁদের আশায় বুক বাঁধা—একদিন হয়তো এই সংগ্রামের শেষ হবে, আর তাঁদের জীবনে খাদ্যের জন্য এই কঠিন লড়াই থেকে মুক্তি মিলবে।
দিন যায়, দিন আসে। তবু খেটে খাওয়া শ্রমজীবী এসব মানুষের ভাগ্যের ফের নেই; তাঁদের জীবনে এখনো অন্ধকার। দ্রব্যমূল্যের করালগ্রাসে প্রতিনিয়ত তাঁরা নিষ্পেষিত, লড়াই করছে জীবনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র চাহিদার জন্য। তাঁদের কণ্ঠে কোনো আর্তনাদ নেই, কিন্তু বোবা ব্যথা যেন হৃদয় বিদীর্ণ করে তুলছে।

ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। স্বল্প আয়ের এই মানুষগুলোর পক্ষে প্রতিদিনের খাবারের খরচ চালানোও যেন আজ এক অসম্ভব সংগ্রামের।
আজ শুক্রবার এই হাটে প্রায় ৪০ জন পুরুষ এবং ২৫ জন নারী শ্রমিক এসেছেন। তাঁদের মধ্যে কাজ পেয়েছেন ২৫-২৬ জন। যা ৫০ শতাংশেরও কম। তবে তাঁরা জানান, আগে কাজ পাওয়ার হার ৮০ শতাংশ বা এরও বেশি ছিল। সম্প্রতি সরকার বদল ও বিরাজমান অস্থিরতার কারণে বর্তমানে তাঁরা আগের তুলনায় কম কাজ পাচ্ছেন।
কথা হয় ৫৩ বছর বয়সী আব্দুস সালামের সঙ্গে। তাঁর বাড়ি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে। এক হাতে কোদাল আর অন্য হাতে বস্তা নিয়ে প্রতিদিন দাঁড়িয়ে থাকেন কাজের আশায়। আগে মাসে ২০-২২ দিন কাজ পেলেও এখন পান সর্বোচ্চ ১০-১৫ দিন। দৈনিক মজুরি ৬০০ টাকা। বর্তমান বাজারে এই টাকা দিয়ে পর্যাপ্ত খাবার কেনাই সম্ভব হয় না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে বহুগুণ; চাল, ডাল, তেল, সবকিছুর দাম বাড়ায় মাস শেষে পরিবারের জন্য খাবার কিনতেই হিমশিম খাচ্ছেন আব্দুস সালাম। তবুও, তিনি আশা ছাড়েন না। প্রতিদিন নিজেকে প্রস্তুত করেন নতুন উদ্যমে।
৪৩ বছরের ফজলুল হক একাই সংসার চালান। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থেকে আসা এই মানুষটি পাঁচ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালান। একসময় দৈনিক ৭০০-৮০০ টাকা মজুরি পেলেও এখন পাচ্ছেন ৫০০-৬০০ টাকা। এই সামান্য আয়ে পরিবারের জন্য দিনরাত খেটে যাচ্ছেন। নিজের কথা ভুলে গিয়ে ফজলুল হক কেবল ভাবেন, তাঁর পরিবারের মুখে অন্তত একটু খাবার তুলে দেওয়ার কথা। চলমান সংকটে তাঁর এই লড়াই এখন কেবল টিকে থাকার সংগ্রাম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৫ বছরের রবিউল ইসলামও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা। কোনোমতে ভরণপোষণ জোগাড় করছেন পরিবারের। তিনি বলেন, ‘জানি না বাবা, আল্লায় চালাচ্ছেন। নইলে যে কয় টাকা পাই তাতে কোনোভাবেই সংসার চালানো সম্ভব না। এখন তাও ছেলেটা একটু সাহায্য করে বলে, তা না হলে আমি একা পারতামই না।’
নারায়ণগঞ্জের শুক্কুর আলী, ৬০ বছর বয়সেও সংসারের ভার তাঁর কাঁধে। তাঁর দৈনিক ৫০০-৬০০ টাকা আয় দিয়ে পরিবার চালানো খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, ‘জিনিসের দাম বাড়ে, আর আমাদের মজুরি শুধু কমে। তাহলে খেয়ে পরে বাঁচব কীভাবে?’ তাঁর মতো একজন বয়স্ক মানুষ প্রতিদিনের এই যুদ্ধে কোনোমতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
অনেক নারী শ্রমিকদের সঙ্গেও দেখা হয় সেখানে। তাঁদেরই একজন আসমা আক্তার, বয়স ৪০। স্বামী অসুস্থ, তাই সংসারের পুরো খরচ চালাতে তাঁকে কাজ করতে হয়। মাটি কাটা, ঝাড়ু মোছার মতো কাজ করেন, কখনো রাজমিস্ত্রি সহযোগীর কাজও করেন তিনি। আয় এতটাই সীমিত যে প্রতিদিন পরিবারের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা তাঁর জন্য একটা দুঃস্বপ্নের মতো। মাত্র ৪০০-৫০০ টাকায় এত কিছুর জোগান দেওয়া সম্ভব হয় না। তবুও আসমা প্রতিদিন নতুন করে সংগ্রামে নামেন, সন্তানদের মুখে একমুঠো খাবার তুলে দিতে।
এই হাটে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিটি মানুষ দ্রব্যমূল্যের চাপে আজ নুইয়ে পড়েছেন। তাঁদের প্রত্যাশা সামান্য, শুধু একটু খাবারের নিশ্চয়তা। তবে আজকের অর্থনৈতিক সংকটে তাঁদের এই মৌলিক চাহিদাটুকু পূরণ করাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবু তাঁদের আশায় বুক বাঁধা—একদিন হয়তো এই সংগ্রামের শেষ হবে, আর তাঁদের জীবনে খাদ্যের জন্য এই কঠিন লড়াই থেকে মুক্তি মিলবে।
দিন যায়, দিন আসে। তবু খেটে খাওয়া শ্রমজীবী এসব মানুষের ভাগ্যের ফের নেই; তাঁদের জীবনে এখনো অন্ধকার। দ্রব্যমূল্যের করালগ্রাসে প্রতিনিয়ত তাঁরা নিষ্পেষিত, লড়াই করছে জীবনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র চাহিদার জন্য। তাঁদের কণ্ঠে কোনো আর্তনাদ নেই, কিন্তু বোবা ব্যথা যেন হৃদয় বিদীর্ণ করে তুলছে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এবারও লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল। শেষ পর্যন্ত তেমন সিদ্ধান্ত আসেনি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তাকে সাধারণ মানুষ লকডাউন বলেই বিবেচনা করছেন।
০৪ এপ্রিল ২০২১
প্রায় ৪৫ বছর আগের কথা। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে ভালোই চলছিল শেফালী বেগমের সংসার। হঠাৎ করেই একদিন উধাও তাঁর স্বামী আলম হোসেন। এরপরই পাল্টে যায় শেফালীর জীবন।
২৯ জানুয়ারি ২০২৫
ফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয়
২৩ অক্টোবর ২০২৪
কথায় আছে না—‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি...
২৬ মে ২০২৪ইশতিয়াক হাসান

ফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয় হওয়া এক গাড়িচালকের।
কয়েকটা বছর পেছনে চলে যাই। সালটা ২০১৭, ডিসেম্বর শুরুর এক সকাল। রাতভর ট্রেনভ্রমণ শেষে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে দার্জিলিংগামী একটা শেয়ার জিপে চেপে বসি। দলেবলে আমরা পাঁচজন। মাঝখানের চারটা সিটে গাদাগাদি করে বসেছিলাম আমি, পুনম, আমার শাশুড়ি এবং মুনা খালামণি (আমার খালা শাশুড়ি)। পুনমের কোলে তিন ছুঁই ছুঁই ওয়াফিকা। মানে তখন ওয়াফিকার বয়স এটাই ছিল।
দার্জিলিং পৌঁছার পথে একটা ঝামেলা হয়েছিল। তবে সেটা কিংবা পরের দিন কী করেছিলাম, তা আজ বলব না। কারণ, আগেই বলেছি এটি গোটা দার্জিলিং ঘুরে বেড়ানোর গল্প নয়।
দার্জিলিং ভ্রমণের তৃতীয় দিন বিকেলে, ওয়াফিকা ও আমার শাশুড়িকে হোটেলে রেখেই বের হলাম। ওয়াফিকার উচ্চতা আর শীতের সঙ্গে মানিয়ে নিতে একটু ঝামেলা হওয়ায় ওকে একটু বিশ্রাম দেওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। গন্তব্য রক গার্ডেন নামের একটি জায়গা। শহর থেকে দূরত্ব ১০ কিলোমিটার।
একটি গাড়ি ঠিক করেছিলাম। চালক নেপালি। বেচারা ভয়ানক রকম গোমড়ামুখো। ফরসা মুখটা অন্ধকার করে রাখাই যেন পছন্দ তাঁর। ইংরেজি জানত না তেমন একটা, আর আমার হিন্দি জ্ঞান তথৈবচ। ঘুম নামের জায়গাটিতে পৌঁছার আগেই ডানে ঢালু এক পথ ধরে নামতে শুরু করল গাড়ি। পথ ভয়ানক খাড়া, আর একটু পরপর সে কী বাঁক। পুনম আর খালামণি একজন আরেকজনকে শক্ত করে ধরে রাখলেন। এক দিকে পাহাড়ের গায়ে গাছপালা, আরেক দিকে খাদ, মাঝেমধ্যে পাথরের স্ল্যাব বসানো হয়েছে রাস্তার কিনারে, কোনোভাবে ভারসাম্য হারালে এই স্ল্যাব আটকানোর জন্য মোটেই যথেষ্ট নয়। তবে পাহাড়ের গায়ে চা–বাগান, গাছপালা দেখতে দেখতে চড়াই-ওতরাই উপভোগই করছিলাম।
পাকদণ্ডী এই পথ শেষে যখন রক গার্ডেনে এলাম. তখন খুশি হয়ে উঠল আমার সঙ্গীরাও। বড় একটা জায়গা নিয়ে পাহাড়ের মধ্যে একটা বাগানের মতো। এখানে সেখানে হাতি, বানরসহ নানা প্রাণীর মূর্তি, বসার ব্যবস্থা। রেলিং দেওয়া আঁকাবাঁকা পথ ধরে এগিয়ে যেতে হয়। রক গার্ডেনের সেরা আকর্ষণ একটি ছোট জলপ্রপাত। প্রাকৃতিক জলপ্রপাতটিকে নিয়ন্ত্রণ করে পাথরের মাঝখান দিয়ে ধাপে ধাপে প্রবাহিত করা হয়েছে।
আমরা এক ঘণ্টা থাকলাম জায়গাটিতে। আরও বেশি সময় কাটাতে পারলে ভালো হতো। তবে ঘড়ির কাঁটা যেন ছুটছে, এদিকে আমাদের আজকের ভ্রমণ লিস্টিতে আরও একটি জায়গা আছে। এবার গন্তব্য গঙ্গামায়া পার্ক, কয়েক কিলোমিটার ভেতরের দিকে।
গাড়িটায় উঠে বসলাম। চালক যথারীতি চুপচাপ। বুঝতে পারছিলাম না বিষয়টা। আমাদের পছন্দ হয়নি, নাকি এমনিতেই সে কথা বলে, কম না কি ভাষাই মূল সমস্যা।
পথটা ঢালু, এবড়োখেবড়ো, তবে সুন্দর। স্থানীয়দের কয়েকটা বসতি পেরোলাম। সুন্দর সুন্দর বাড়ি, ক্যাফে, হোম স্টেগুলো নজর কাড়ল। খুব ইচ্ছা করছিল এখানকার সুনসান কোনো হোম স্টেতে অন্তত একটি রাত কাটাতে। তবে সঙ্গীদের বেশি নীরব জায়গার প্রতি একটু অস্বস্তি কাজ করছিল।
একসময় পৌঁছালাম গাছপালা ঘেরা গঙ্গামায়া পার্কে। পাহাড়ের পাশে চত্বর মতো একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করালেন চালক। আবিষ্কার করলাম আশ্চর্য রকম নীরব এক এলাকায় চলে এসেছি। পার্কের বাঁপাশে ছোট-বড় পাথরের মাঝখান দিয়ে তরতর করে বয়ে চলেছে একটা জলের ধারা। চারপাশে সুন্দর সুন্দর ফুল ফুটে আছে। আমাদের থেকে বেশ কতকটা নিচে ওই ঝরনা, বাগান।
ভারি ভালো লাগছিল পরিবেশটা। পাখি ডাকছিল, হরেক জাতের। তবে সন্ধ্যা ঘনাচ্ছিল, এদিকে আর একজনও পর্যটক নেই। ফেরার তাড়া দিল পুনম ও মুনা খালামণি। তখনই আবিষ্কার করলাম চালক হাওয়া। আশপাশে তাকিয়ে কোথাও দেখতে পেলাম না।
একটার পর একটা মিনিট কাটছে, কিন্তু তাঁর টিকিটারও দেখা নেই। এভাবে মোটামুটি মিনিট ১৫ কেটে গেল। মুনা খালামণির দিকে তাকিয়েই বুঝলাম খুব ভয় পেয়ে গেছেন। বললেন, এই নীরব জায়গায় আসা উচিত হয়নি, মৃত্যুপুরীর মতো লাগছে।
আমার স্ত্রী পুনম এমনিতে বেশ সাহসী। দেখলাম সেও টেনশন করতে শুরু করেছে। ওয়ফিকাকে রেখে আসার দুশ্চিন্তার সঙ্গে বিদেশ বিভুঁইয়ে নির্জন এক জায়গায় চালক নিরুদ্দেশ, দুজনের চেহারাই ঘন কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছে। খালামণি পারলে কান্নাকাটি শুরু করে দেন।
ভয়, টেনশন—এগুলো বড়ই সংক্রামক। আমার একটু অস্বস্তি লাগছিল। ঘটনাটা যখনকার, এর কিছুদিন আগে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বিক্ষোভ করেছিল স্থানীয় গোর্খা নেপালিরা। খুব উত্তপ্ত ছিল পরিস্থিতি। যদি সেই রাগ পর্যটকের ওপর ঝাড়ে। ফেলুদাও তো নেই দার্জিলিংয়ে, কিছু হলে রহস্যভেদ করবে কে?
আরও পাঁচ মিনিট কাটল। এবার ভয় ভয় করতে লাগল আমারও। এদিকে ক্রমেই অন্ধকার হয়ে আসছে চরাচর। তবুও ভাগ্য ভালো, গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ওই আন্দোলনের কথা বলিনি বাকি দুজনকে। তাহলে অন্তত খালামণি যে ফিট যেতেন তাতে সন্দেহ নেই। চিৎকার করে ডাকতে লাগলাম নেপালি লোকটিকে। শুরুতে চারপাশের পাহাড়ে কেবল নিজের ডাকের প্রতিধ্বনি শুনলাম। কিছুক্ষণ পর হঠাৎই সাড়া মিলল, পাশের এক পাহাড়ের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসছে।
নেমে এসে কিছুই ঘটেনি—এমন একটা ভাব করে হিন্দিতে যা বলল তার অর্থ উদ্ধার করতে পারলাম। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়েছিল। টয়লেট একটু দূরে হওয়াতেই বিপত্তিটা বাধে।
যাক ভালোয় ভালোয় সেদিন ফিরে আসি ম্যালের ধারে আমাদের হোটেলে। পরে বুঝতে পারি, গোমড়ামুখো হলেও নিতান্ত ভালো মানুষ আমাদের এই নেপালি ড্রাইভার। কারণ, তাঁকে নিয়েই পরের দিন কালিম্পং যাই। সে আমাদের থেকে তুলনামূলক কম ভাড়াই নিয়েছিল। শুধু তা–ই নয়, মনোমুগ্ধকর দার্জিলিং টু কালিম্পং পথের যেখানে চেয়েছি, সেখানেই থেমেছি। হয়তো পথের মাঝখানে একটা জঙ্গল চোখে পড়ল। দেখতে চাইলাম। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। কখনো আবার নিজেই কোনো জায়গায় গাড়ি রেখে বলেছে, সামনে ভিউ পয়েন্ট আছে। সেখান থেকে চারপাশের দৃশ্য দারুণ দেখা যাবে।
আজ লেখাটি তৈরি করতে গিয়ে আমার মনে পড়ল সেই গাড়িচালকের কথা। তার গোমড়া মুখটাই বড় দেখতে ইচ্ছা করছে! জানি না সে কেমন আছে, আর কোনো দিন দেখা হবে কি না! তাঁর নাম-ঠিকানা কিছুই যে জানা নেই।

ফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয় হওয়া এক গাড়িচালকের।
কয়েকটা বছর পেছনে চলে যাই। সালটা ২০১৭, ডিসেম্বর শুরুর এক সকাল। রাতভর ট্রেনভ্রমণ শেষে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে দার্জিলিংগামী একটা শেয়ার জিপে চেপে বসি। দলেবলে আমরা পাঁচজন। মাঝখানের চারটা সিটে গাদাগাদি করে বসেছিলাম আমি, পুনম, আমার শাশুড়ি এবং মুনা খালামণি (আমার খালা শাশুড়ি)। পুনমের কোলে তিন ছুঁই ছুঁই ওয়াফিকা। মানে তখন ওয়াফিকার বয়স এটাই ছিল।
দার্জিলিং পৌঁছার পথে একটা ঝামেলা হয়েছিল। তবে সেটা কিংবা পরের দিন কী করেছিলাম, তা আজ বলব না। কারণ, আগেই বলেছি এটি গোটা দার্জিলিং ঘুরে বেড়ানোর গল্প নয়।
দার্জিলিং ভ্রমণের তৃতীয় দিন বিকেলে, ওয়াফিকা ও আমার শাশুড়িকে হোটেলে রেখেই বের হলাম। ওয়াফিকার উচ্চতা আর শীতের সঙ্গে মানিয়ে নিতে একটু ঝামেলা হওয়ায় ওকে একটু বিশ্রাম দেওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। গন্তব্য রক গার্ডেন নামের একটি জায়গা। শহর থেকে দূরত্ব ১০ কিলোমিটার।
একটি গাড়ি ঠিক করেছিলাম। চালক নেপালি। বেচারা ভয়ানক রকম গোমড়ামুখো। ফরসা মুখটা অন্ধকার করে রাখাই যেন পছন্দ তাঁর। ইংরেজি জানত না তেমন একটা, আর আমার হিন্দি জ্ঞান তথৈবচ। ঘুম নামের জায়গাটিতে পৌঁছার আগেই ডানে ঢালু এক পথ ধরে নামতে শুরু করল গাড়ি। পথ ভয়ানক খাড়া, আর একটু পরপর সে কী বাঁক। পুনম আর খালামণি একজন আরেকজনকে শক্ত করে ধরে রাখলেন। এক দিকে পাহাড়ের গায়ে গাছপালা, আরেক দিকে খাদ, মাঝেমধ্যে পাথরের স্ল্যাব বসানো হয়েছে রাস্তার কিনারে, কোনোভাবে ভারসাম্য হারালে এই স্ল্যাব আটকানোর জন্য মোটেই যথেষ্ট নয়। তবে পাহাড়ের গায়ে চা–বাগান, গাছপালা দেখতে দেখতে চড়াই-ওতরাই উপভোগই করছিলাম।
পাকদণ্ডী এই পথ শেষে যখন রক গার্ডেনে এলাম. তখন খুশি হয়ে উঠল আমার সঙ্গীরাও। বড় একটা জায়গা নিয়ে পাহাড়ের মধ্যে একটা বাগানের মতো। এখানে সেখানে হাতি, বানরসহ নানা প্রাণীর মূর্তি, বসার ব্যবস্থা। রেলিং দেওয়া আঁকাবাঁকা পথ ধরে এগিয়ে যেতে হয়। রক গার্ডেনের সেরা আকর্ষণ একটি ছোট জলপ্রপাত। প্রাকৃতিক জলপ্রপাতটিকে নিয়ন্ত্রণ করে পাথরের মাঝখান দিয়ে ধাপে ধাপে প্রবাহিত করা হয়েছে।
আমরা এক ঘণ্টা থাকলাম জায়গাটিতে। আরও বেশি সময় কাটাতে পারলে ভালো হতো। তবে ঘড়ির কাঁটা যেন ছুটছে, এদিকে আমাদের আজকের ভ্রমণ লিস্টিতে আরও একটি জায়গা আছে। এবার গন্তব্য গঙ্গামায়া পার্ক, কয়েক কিলোমিটার ভেতরের দিকে।
গাড়িটায় উঠে বসলাম। চালক যথারীতি চুপচাপ। বুঝতে পারছিলাম না বিষয়টা। আমাদের পছন্দ হয়নি, নাকি এমনিতেই সে কথা বলে, কম না কি ভাষাই মূল সমস্যা।
পথটা ঢালু, এবড়োখেবড়ো, তবে সুন্দর। স্থানীয়দের কয়েকটা বসতি পেরোলাম। সুন্দর সুন্দর বাড়ি, ক্যাফে, হোম স্টেগুলো নজর কাড়ল। খুব ইচ্ছা করছিল এখানকার সুনসান কোনো হোম স্টেতে অন্তত একটি রাত কাটাতে। তবে সঙ্গীদের বেশি নীরব জায়গার প্রতি একটু অস্বস্তি কাজ করছিল।
একসময় পৌঁছালাম গাছপালা ঘেরা গঙ্গামায়া পার্কে। পাহাড়ের পাশে চত্বর মতো একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করালেন চালক। আবিষ্কার করলাম আশ্চর্য রকম নীরব এক এলাকায় চলে এসেছি। পার্কের বাঁপাশে ছোট-বড় পাথরের মাঝখান দিয়ে তরতর করে বয়ে চলেছে একটা জলের ধারা। চারপাশে সুন্দর সুন্দর ফুল ফুটে আছে। আমাদের থেকে বেশ কতকটা নিচে ওই ঝরনা, বাগান।
ভারি ভালো লাগছিল পরিবেশটা। পাখি ডাকছিল, হরেক জাতের। তবে সন্ধ্যা ঘনাচ্ছিল, এদিকে আর একজনও পর্যটক নেই। ফেরার তাড়া দিল পুনম ও মুনা খালামণি। তখনই আবিষ্কার করলাম চালক হাওয়া। আশপাশে তাকিয়ে কোথাও দেখতে পেলাম না।
একটার পর একটা মিনিট কাটছে, কিন্তু তাঁর টিকিটারও দেখা নেই। এভাবে মোটামুটি মিনিট ১৫ কেটে গেল। মুনা খালামণির দিকে তাকিয়েই বুঝলাম খুব ভয় পেয়ে গেছেন। বললেন, এই নীরব জায়গায় আসা উচিত হয়নি, মৃত্যুপুরীর মতো লাগছে।
আমার স্ত্রী পুনম এমনিতে বেশ সাহসী। দেখলাম সেও টেনশন করতে শুরু করেছে। ওয়ফিকাকে রেখে আসার দুশ্চিন্তার সঙ্গে বিদেশ বিভুঁইয়ে নির্জন এক জায়গায় চালক নিরুদ্দেশ, দুজনের চেহারাই ঘন কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছে। খালামণি পারলে কান্নাকাটি শুরু করে দেন।
ভয়, টেনশন—এগুলো বড়ই সংক্রামক। আমার একটু অস্বস্তি লাগছিল। ঘটনাটা যখনকার, এর কিছুদিন আগে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বিক্ষোভ করেছিল স্থানীয় গোর্খা নেপালিরা। খুব উত্তপ্ত ছিল পরিস্থিতি। যদি সেই রাগ পর্যটকের ওপর ঝাড়ে। ফেলুদাও তো নেই দার্জিলিংয়ে, কিছু হলে রহস্যভেদ করবে কে?
আরও পাঁচ মিনিট কাটল। এবার ভয় ভয় করতে লাগল আমারও। এদিকে ক্রমেই অন্ধকার হয়ে আসছে চরাচর। তবুও ভাগ্য ভালো, গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ওই আন্দোলনের কথা বলিনি বাকি দুজনকে। তাহলে অন্তত খালামণি যে ফিট যেতেন তাতে সন্দেহ নেই। চিৎকার করে ডাকতে লাগলাম নেপালি লোকটিকে। শুরুতে চারপাশের পাহাড়ে কেবল নিজের ডাকের প্রতিধ্বনি শুনলাম। কিছুক্ষণ পর হঠাৎই সাড়া মিলল, পাশের এক পাহাড়ের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসছে।
নেমে এসে কিছুই ঘটেনি—এমন একটা ভাব করে হিন্দিতে যা বলল তার অর্থ উদ্ধার করতে পারলাম। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়েছিল। টয়লেট একটু দূরে হওয়াতেই বিপত্তিটা বাধে।
যাক ভালোয় ভালোয় সেদিন ফিরে আসি ম্যালের ধারে আমাদের হোটেলে। পরে বুঝতে পারি, গোমড়ামুখো হলেও নিতান্ত ভালো মানুষ আমাদের এই নেপালি ড্রাইভার। কারণ, তাঁকে নিয়েই পরের দিন কালিম্পং যাই। সে আমাদের থেকে তুলনামূলক কম ভাড়াই নিয়েছিল। শুধু তা–ই নয়, মনোমুগ্ধকর দার্জিলিং টু কালিম্পং পথের যেখানে চেয়েছি, সেখানেই থেমেছি। হয়তো পথের মাঝখানে একটা জঙ্গল চোখে পড়ল। দেখতে চাইলাম। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। কখনো আবার নিজেই কোনো জায়গায় গাড়ি রেখে বলেছে, সামনে ভিউ পয়েন্ট আছে। সেখান থেকে চারপাশের দৃশ্য দারুণ দেখা যাবে।
আজ লেখাটি তৈরি করতে গিয়ে আমার মনে পড়ল সেই গাড়িচালকের কথা। তার গোমড়া মুখটাই বড় দেখতে ইচ্ছা করছে! জানি না সে কেমন আছে, আর কোনো দিন দেখা হবে কি না! তাঁর নাম-ঠিকানা কিছুই যে জানা নেই।

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এবারও লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল। শেষ পর্যন্ত তেমন সিদ্ধান্ত আসেনি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তাকে সাধারণ মানুষ লকডাউন বলেই বিবেচনা করছেন।
০৪ এপ্রিল ২০২১
প্রায় ৪৫ বছর আগের কথা। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে ভালোই চলছিল শেফালী বেগমের সংসার। হঠাৎ করেই একদিন উধাও তাঁর স্বামী আলম হোসেন। এরপরই পাল্টে যায় শেফালীর জীবন।
২৯ জানুয়ারি ২০২৫
ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষ
২৬ অক্টোবর ২০২৪
কথায় আছে না—‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি...
২৬ মে ২০২৪আশিকুর রিমেল, ঢাকা

রাতটা প্রায় নির্ঘুম কাটিয়েছেন রিকশাচালক আলমগীর হোসেন (৪২)। কয়েক বছর আগে বড় মেয়ের বিয়ের টাকা জোগাড় করতে রাত-দিন রিকশা চালিয়েছেন। তখন ঘুম আর জেগে থাকার ফারাক তেমন করেননি। কিন্তু গত রাতে তাঁর মনে মাতঙ্গী নেচেছে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ আতঙ্ক। কষ্টার্জিত অর্থে গড়া বাড়িটার থেকেও বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় কাটছে তাঁর সময়।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভুরুলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আলমগীর। সাগরের পার্শ্ববর্তী এই গ্রামে সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভূমি কর্মকর্তা এসেছিলেন। দুপুরের মধ্যে সবাইকে স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য নির্দেশের সঙ্গে অনুরোধও করে গেছেন। রোববার সকাল থেকে পাঁচবার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখার চেষ্টা করছেন। জেনেছেন, সকাল থেকেই আকাশে মুখ কালো করে আছে মেঘ।
জীবিকার তাগিদে সাত বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালান আলমগীর হোসেন। জানা গেল, ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’ ওই এলাকাসহ উপকূলে আঘাত, হেনেছিল তাঁর চোখের সামনেই। যে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন, সেই মেয়ে তখন সংসারের সবচেয়ে ছোট সদস্য। টিনের ঘরের চাল উড়ে গিয়েছিল। ভয়ানক রাত কাটিয়েছেন সপরিবারে। সম্পদ নয়, জীবনটাই ছিল অনিশ্চয়তার মধ্যে।
আলমগীর হোসেন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত স্বরে বললেন, ‘কথায় আছে না—‘‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি।’
রিকশার প্যাডেল মারতে মারতে জানালেন—এমন পরিস্থিতিতে ঘর-বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় মনে কষ্ট হয়। গবাদি পশু-পাখিগুলো নিরাপদ জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করা হয় প্রশাসন থেকেই। এই অভিজ্ঞতা হয়েছে বিভিন্ন সময়ের প্রবল ঝড় থেকে। এখনো ভুলতে পারেননি সর্বশেষ ওই অঞ্চলে তাণ্ডব চালানো আইলার কথা। এই ঘূর্ণিঝড় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে খুলনা ও সাতক্ষীরার উপকূলবর্তী জনজীবনকে।
আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বাড়িতে ২টা গরু, ৬টা ভেড়া, ৩টা ছাগল আর কিছু হাঁস-মুরগি আছে। ওইগুলা আব্বা-মা দেখাশোনা করেন। বাড়িতে ঘর এখন আধপাকা, কিন্তু টিনের চাল। আব্বা-আম্মার বয়স হয়ে গেছে, ওদের নিয়েই বেশি চিন্তা হইচ্চে।’
জানালেন, গবাদিপশুর জন্য নিরাপদ স্থানের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। তাঁর রিকশা থেকে নেমে যাওয়ার আগে তিনি সৃষ্টিকর্তার ওপর তাঁদের রক্ষার দায়িত্বভার দিয়ে বললেন, ‘কাল রাতে বাড়ি যাইতে চাইছিলাম। বউ নিষেধ কইরল। বইলল, অবস্থা খারাপ দেখলে আশ্রয়কেন্দ্রে চইলে যাবে।’
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমাল রোববার আরও শক্তিশালী হয়ে আসছে খুলনা ও বরিশাল উপকূলের দিকে। এর ফলে মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মোংলা বন্দরের জেটিসহ পশুর চ্যানেলে নোঙর করা বিদেশি ছয়টি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধসহ ওই সব জাহাজকে নিরাপদ নোঙরে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষের অপারেশনাল সব কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে কক্সবাজার অংশেও সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। রোববার সকাল থেকে সাগরে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট বেড়েছে। জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া ও টেকনাফের উপকূলীয় কয়েকটি এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সকাল থেকে সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় বসবাস করা লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের সামনের অংশ ও বায়ুচাপের পার্থক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং এসব জেলাসংলগ্ন দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।

রাতটা প্রায় নির্ঘুম কাটিয়েছেন রিকশাচালক আলমগীর হোসেন (৪২)। কয়েক বছর আগে বড় মেয়ের বিয়ের টাকা জোগাড় করতে রাত-দিন রিকশা চালিয়েছেন। তখন ঘুম আর জেগে থাকার ফারাক তেমন করেননি। কিন্তু গত রাতে তাঁর মনে মাতঙ্গী নেচেছে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ আতঙ্ক। কষ্টার্জিত অর্থে গড়া বাড়িটার থেকেও বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় কাটছে তাঁর সময়।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভুরুলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আলমগীর। সাগরের পার্শ্ববর্তী এই গ্রামে সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভূমি কর্মকর্তা এসেছিলেন। দুপুরের মধ্যে সবাইকে স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য নির্দেশের সঙ্গে অনুরোধও করে গেছেন। রোববার সকাল থেকে পাঁচবার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখার চেষ্টা করছেন। জেনেছেন, সকাল থেকেই আকাশে মুখ কালো করে আছে মেঘ।
জীবিকার তাগিদে সাত বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালান আলমগীর হোসেন। জানা গেল, ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’ ওই এলাকাসহ উপকূলে আঘাত, হেনেছিল তাঁর চোখের সামনেই। যে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন, সেই মেয়ে তখন সংসারের সবচেয়ে ছোট সদস্য। টিনের ঘরের চাল উড়ে গিয়েছিল। ভয়ানক রাত কাটিয়েছেন সপরিবারে। সম্পদ নয়, জীবনটাই ছিল অনিশ্চয়তার মধ্যে।
আলমগীর হোসেন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত স্বরে বললেন, ‘কথায় আছে না—‘‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি।’
রিকশার প্যাডেল মারতে মারতে জানালেন—এমন পরিস্থিতিতে ঘর-বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় মনে কষ্ট হয়। গবাদি পশু-পাখিগুলো নিরাপদ জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করা হয় প্রশাসন থেকেই। এই অভিজ্ঞতা হয়েছে বিভিন্ন সময়ের প্রবল ঝড় থেকে। এখনো ভুলতে পারেননি সর্বশেষ ওই অঞ্চলে তাণ্ডব চালানো আইলার কথা। এই ঘূর্ণিঝড় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে খুলনা ও সাতক্ষীরার উপকূলবর্তী জনজীবনকে।
আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বাড়িতে ২টা গরু, ৬টা ভেড়া, ৩টা ছাগল আর কিছু হাঁস-মুরগি আছে। ওইগুলা আব্বা-মা দেখাশোনা করেন। বাড়িতে ঘর এখন আধপাকা, কিন্তু টিনের চাল। আব্বা-আম্মার বয়স হয়ে গেছে, ওদের নিয়েই বেশি চিন্তা হইচ্চে।’
জানালেন, গবাদিপশুর জন্য নিরাপদ স্থানের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। তাঁর রিকশা থেকে নেমে যাওয়ার আগে তিনি সৃষ্টিকর্তার ওপর তাঁদের রক্ষার দায়িত্বভার দিয়ে বললেন, ‘কাল রাতে বাড়ি যাইতে চাইছিলাম। বউ নিষেধ কইরল। বইলল, অবস্থা খারাপ দেখলে আশ্রয়কেন্দ্রে চইলে যাবে।’
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমাল রোববার আরও শক্তিশালী হয়ে আসছে খুলনা ও বরিশাল উপকূলের দিকে। এর ফলে মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মোংলা বন্দরের জেটিসহ পশুর চ্যানেলে নোঙর করা বিদেশি ছয়টি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধসহ ওই সব জাহাজকে নিরাপদ নোঙরে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষের অপারেশনাল সব কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে কক্সবাজার অংশেও সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। রোববার সকাল থেকে সাগরে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট বেড়েছে। জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া ও টেকনাফের উপকূলীয় কয়েকটি এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সকাল থেকে সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় বসবাস করা লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের সামনের অংশ ও বায়ুচাপের পার্থক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং এসব জেলাসংলগ্ন দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এবারও লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল। শেষ পর্যন্ত তেমন সিদ্ধান্ত আসেনি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তাকে সাধারণ মানুষ লকডাউন বলেই বিবেচনা করছেন।
০৪ এপ্রিল ২০২১
প্রায় ৪৫ বছর আগের কথা। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে ভালোই চলছিল শেফালী বেগমের সংসার। হঠাৎ করেই একদিন উধাও তাঁর স্বামী আলম হোসেন। এরপরই পাল্টে যায় শেফালীর জীবন।
২৯ জানুয়ারি ২০২৫
ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষ
২৬ অক্টোবর ২০২৪
ফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয়
২৩ অক্টোবর ২০২৪