Ajker Patrika

‘সরকার একটা বড় দায়িত্ব পালন করেছে’, মার্কিন শুল্ক কমানো প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৫, ০০: ৪২
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল। ছবি: স্ক্রিনশট
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল। ছবি: স্ক্রিনশট

আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে শুল্ক কমাতে রাজি করাতে পারায় অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘সে জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা একটা বড় দায়িত্ব পালন করেছে।’

রাজধানীর উত্তরার মুগ্ধ মঞ্চে (সাবেক মুক্তমঞ্চ) আজ শুক্রবার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে একটা ভালো খবর আছে... কয়েক দিন আগে আপনারা দেখেছেন যে আমেরিকা আমাদের পণ্যের ওপর ট্যারিফ আরোপ করেছে। ট্যারিফ কী জানেন? আমরা যেসব পণ্য রপ্তানি করব, তার ওপরে ৩৫ ভাগ ট্যাক্স নিয়ে নেবে। অর্থাৎ আমাদের যে জিনিসটার দাম ৫০ টাকা, ওটার সঙ্গে আরও ৩৫ টাকা যোগ হবে... তার মানে ১০০ টাকার জিনিস ১৩৫ টাকা দাম হবে। ফলে আমাদের জিনিসটা আর বিক্রি হবে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওটাকে (যুক্তরাষ্ট্র ট্যারিফ) আমাদের পররাষ্ট্র দপ্তর ও উপদেষ্টারা আলোচনা করে কমিয়ে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। সে জন্য আমি অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা একটা বড় দায়িত্ব পালন করেছে।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারকে...অনেকে অনেক কথা বলেন...অনেক ভুল আছে, ত্রুটি আছে, অভিজ্ঞতা নাই বেশি। আমি আশা করেছিলাম যে, এক বছরের মধ্যে আমাদের যাঁরা শহীদ হয়েছেন, প্রকৃত তালিকা করে তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে। দুর্ভাগ্য, তারা পুরোটা করতে পারেনি। কিন্তু তারা চেষ্টা করছে।’

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আপনি লন্ডনে গিয়ে তারেক রহমানকে ও দেশবাসীকে কথা দিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দেবেন। আপনি কথা রাখবেন বলে আশা করি। দেশের সব জনগণ তা-ই চায়।’

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের বহু বছরের আকাঙ্ক্ষা, নিজের ভোট নিজে দেবে। জুলাই-আগস্টে আন্দোলনে শত শত প্রাণ গেছে। শহীদ জাফরুলের মা এখন বক্তব্যের সময় তাঁর কান্নায় চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। তাঁর ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিল। খুনি হাসিনা হতে দেয়নি। তার পুলিশ বাহিনী গুলি চালিয়ে অনেক তরুণের স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে।’

এ সময় গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতিদান দেওয়া সম্ভব নয়। জনগণ ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। তাই জনগণের কাছে যেতে হবে। তাঁদের মনোভাব বুঝতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা লুটপাট করে, চাঁদাবাজি করে ও ব্যাংক লুট করবে, তাদের ছাড় দেব না। শহীদদের দাফনে বাধা, জানাজা দিতে বাধা—এসবের বিচার করতে হবে। উত্তরা থেকে বড় মিছিলের কারণে হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। ভোটাধিকার হরণ করলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হবেই।’

তারেক রহমান শিগগির দেশে ফিরবেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সমতার ভিত্তিতে দেশ চলবে। আগামী দিনের লড়াইটা হবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর লড়াই। তারেক রহমান শিগগির দেশে ফিরে জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘উত্তরা আজমপুরের এই স্থানে আমার ছেলে নিহত হয়েছিল। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হায়েনারা গুলি করে হত্যা করেছিল। হত্যার পর লাশ থানায় নিয়ে গুম করতে চেয়েছিল।’

মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করে আমার ছেলের লাশ আনতে হয়েছে। উত্তরা ৪ ও ১২ নম্বর সেক্টরের কবরস্থানে দাফন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতারা দাফন করতে দেয়নি। পরে বিএনপির নেতাদের সহযোগিতায় তুরাগের বামনারটেক কবরস্থানে দাফন করতে হয়েছিল।’

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি বিএনপির ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদে কয়েক বছর দায়িত্ব পালন করেছিলাম। আমি চাই, সরকার দ্রুত নির্বাচন দেবে। নির্বাচনের পর যে সরকার আসবে, তারাও যেন এই নির্মম গণহত্যার বিচার কার্যক্রম অব্যাহত রাখে, এই দাবি রইল।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব মো. মোস্তফা জামান।

সভাপতির বক্তব্যে আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা মহানগর উত্তরের ২৬ থানা ৭১ ওয়ার্ডের সব নেতাকে নিয়ে আমরা উত্তরা, বাড্ডা ও মিরপুরে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে দেব না।’

মোস্তফা জামান বলেন, জুলাই ও আগস্টের শহীদদের ডিএনসিসির কবরস্থানে কবর দিতে বাধা দিয়েছে। উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টর মসজিদে নিহত ব্যক্তিদের গোসল করাতে ও জানাজা পড়াতেও বাধা দিয়েছিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাবেক কেরানির ২৪টি আলিশান বাড়ি ও ৩০ হাজার কোটির সম্পদ

সব কমিটি থেকে নারীদের সিস্টেমেটিক্যালি সাইড করা হয়েছে: সামান্তা শারমিন

ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে রেখে ‘৪ কোটি টাকা আদায়’

অবরোধকারীদের ‘ভুয়া’ আখ্যা দিয়ে ‘প্রকৃত জুলাই যোদ্ধাদের’ হামলা, পুলিশের লাঠিপেটায় শাহবাগ ফাঁকা

আরও বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত