Ajker Patrika

খালেদার চিকিৎসা নিয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ইঙ্গিত আসেনি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮: ২৯
খালেদার চিকিৎসা নিয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ইঙ্গিত আসেনি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে আইন মন্ত্রণালয় পরবর্তী করণীয় নিয়ে কেনো ইঙ্গিত দেয়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে আদালত নির্দেশনা দিলে সেটা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসসা ইউসেফ ইসসা আল দুহাইলান আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। 

মানবিকতা দেখিয়ে সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেবে কি না, এই প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা মেডিকেল বোর্ড জানে, চিকিৎসকেরা জানেন। চিকিৎসকেরা জানেন কি করতে হবে না করতে হবে, তাদের কাছে সে রকম প্রস্তাব এলে আদালত যদি আমাদেরকে ওই রকম কিছু নির্দেশনা দেয়, তাহলে আমরা সেটা করতে পারব। আদালতের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’ 

‘প্রধানমন্ত্রী মাদার অব হিউম্যানিটি। কোকো যখন মারা গেল, ডেডবডি যখন আসলো প্রধানমন্ত্রীর অনেক যন্ত্রণা ছিল, তারপরেও কিন্তু তিনি তাকে দেখার জন্য গিয়েছেন, সমবেদনা জানানোর জন্য গিয়েছেন, কিন্তু গেটটি পর্যন্ত খোলা হয়নি। সেই দৃশ্য তো নিশ্চয়ই আপনারা ভুলেন নাই। মানবতার প্রশ্নে যদি প্রশ্ন আসে, আমি মনে করি সারা বিশ্ব থেকে যে প্রসঙ্গটি এসেছে মাদার অব হিউম্যানিটি, আমি মনে করি তিনি মাদার অব হিউম্যানিটি।’ 

প্রতিহিংসা করে খালেদা জিয়াকে সরকার বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না বলে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিহিংসার কথাটা কীভাবে এল? জেলে থাকার সময়ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আরও ভালো চিকিৎসার জন্য সাজা স্থগিত করে বাসায় চিকিৎসা নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। প্রতিহিংসার প্রশ্নেই আসে না। আইনমন্ত্রী সংসদে আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, ৪০১ ধারায় যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, যদি আবার ৪০১ ধারা প্রয়োগ করতে হয় তাঁকে আবার এটি স্থগিত করে জেলখানায় গিয়ে সেখান থেকে আবেদন করতে হবে। 

খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যতগুলো আবেদন এসেছে, সেগুলো আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আইনমন্ত্রী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তী অ্যাকশনের জন্য যা করণীয় তিনিই করবেন। আইন মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের আবার করণীয়র কোনো ইঙ্গিত আসেনি। আমাদের কিছু করণীয় আছে বলে আইন মন্ত্রণালয় জানায়নি।’ 

কামাল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার পাসপোর্ট নবায়ন করার আবেদন কিন্তু আমার কাছে আসেনি। যদি করে থাকেন অন্য কোথাও করেছেন। ওনার পাসপোর্ট ওনার কাছে আছে কি নেই আমি জানি না। আমি জানি, পাসপোর্ট নবায়নের কোনো আবেদন আমাদের মন্ত্রণালয়ে আসেনি।’ 

বিএনপির আন্দোলনের হুমকি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা একটা রাজনৈতিক দল তারা আন্দোলন করতে পারে, প্রতিবাদ করতে পারে, দোয়া মাহফিল করতে পারে, মানববন্ধন করতে পারে। পাশাপাশি সহিংস কোনো ঘটনা যদি ঘটায় সে ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করবে। মানববন্ধন, দোয়া মাহফিল, প্রতিবাদ তো তারা করছেই। কারও জানমাল ধ্বংস করা, অগ্নিসংযোগ করা, রাস্তাঘাট বন্ধ করে দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যা করণীয় তা করবে।’ 

খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে না দিলে সরকারকে টেনেহিঁচেড়ে নামানোর হুমকি দিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ রকম অনেক অবান্তর কথা অনেকে বলে। অনেক দল অনেক কথা বলে, সেগুলো রাজনৈতিক কথা। আমার মনে হয় চিন্তা করার কোনো বিষয় না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিএনপি কাবিননামায় সই করেছে, ‘না’ বলার সুযোগ নেই: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, বিএনপি অনলাইনে ‘না’ বলেছে। কিন্তু তাদের এখন আর ‘না’ বলার সুযোগ নেই। তারা বিবাহে রাজি হয়েছে। কাবিননামায় সই করেছে। তাই ‘না’ বলার কোনো সুযোগ নেই। তাদের ভেবেচিন্তে জুলাই সনদে সই করা উচিত ছিল।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘রাজনীতির বর্তমান ও ভবিষ্যতের পথরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির প্রতি আহবান জানিয়ে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘বিএনপি একটি বড় দল। তাদের জন্ম হয়েছিল “হ্যাঁ” ভোটের মাধ্যমে। এবার “না” ভোটে স্ট্রিক্ট থাকলে দলটির মৃত্যু হবে ‘না’ ভোটের মধ্য দিয়ে। তাই আমরা বলব, “না” ভোটের মধ্য দিয়ে নিজেদের কবর রচনা করবেন না।’

জামায়াতে ইসলামী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপার হাউজে (উচ্চকক্ষ) পিআর সিস্টেম লোয়ার হাউজে নিয়ে এসে পুরো বিষয়টি নষ্ট হয়েছে। মুখে এক কথা, অন্তরে অন্য। গণভোট প্রশ্নে জামায়াত হয়তো পরবর্তীতে বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হবে বা বলবে–ইলেকশনের দিনেই গণভোট হোক।

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে করা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালার খসড়া জনসম্মুখে আনার দাবি জানিয়ে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘এরপরই এনসিপি এতে সই করবে। আমরা মনে করি, বল এখন ড. ইউনূসের কোর্টে। তিনি যেহেতু আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড়, বলা হয়ে থাকে বিদেশি খেলোয়াড়রা বাংলাদেশে খেলতে এলে পিছলে যায়। কারণ বাংলাদেশের মাঠ পিছলা। কিন্তু এই পিছলা জায়গায় আরও বেশি তেলমর্দন করেন আমাদের আইন উপদেষ্টা। তিনি রাজনীতিবিদদের শুধু পিছলা খাওয়াতে চান।’

তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করতে না পারলে দেশ যদি গৃহযুদ্ধের দিকে যায়, এর দায়ভার প্রধান উপদেষ্টাকে নিতে হবে।’

নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ প্রশ্নে কোনও ‘ছাড় নয়’ মন্তব্য করে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘অনেকেই বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের ৫ লাখ নেতা-কর্মীর প্রাণ যাবে। আমরা কিন্তু আওয়ামী লীগের গায়ে হাত দেইনি। কিন্তু তারা দিতে এলে কঠোরভাবে প্রতিহত করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৩৫
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি: ফোকাস বাংলা
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি: ফোকাস বাংলা

আজ রাত অথবা আগামীকাল শুক্রবারের মধ্যেই জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে মগবাজারে আলফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

তাহের বলেন, ‘আমি চিফ অ্যাডভাইজারের কাছে জাতির পক্ষ থেকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অত্যন্ত জোরালো আবেদন নিবেদন দাবি পেশ করতে চাই যে, আপনি আর কোনো সময়ক্ষেপণ না করে জুলাই সনদের ওপরে এনসিসি আপনাদের কাছে যে প্রস্তাব জমা দিয়েছে, সেটার ভিত্তিতে অনতিবিলম্বে আপনি আদেশ জারির ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

জামায়াত নেতা বলেন, ‘এটা যদি ডিলে হতে থাকে তাইলে জনমনে আবার নানা ধারণা এবং বিভ্রান্তি তৈরি হবে আপনার সম্পর্কে, আপনার সরকার সম্পর্কেও। জনগণ ধীরে ধীরে আস্থা হারাতে শুরু করবে। আর যদি এই সরকারের ওপরে মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলে তাহলে এই সরকারের দুটো নির্বাচন অনুষ্ঠান করার যে কোঅপারেশনের প্রয়োজন জনগণের, সেটা কিন্তু প্রশ্নবোধক হয়ে যাবে।’

আগামীকালের মধ্যে জুলাই জাতীয় বাস্তবায়ন আদেশ জারির দাবি তুলে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘আমি সে জন্য আবার রিপিট করতে চাই যে, আপনি আর সময়ক্ষেপণ না করে আজকের ভেতরে হলে খুবই উত্তম কারণ রাত ১২টায়–১টায় ওরকম আদেশ জারির নজির আছে, আর যদি আজকে না হয় কোনোভাবেই আগামীকাল আদেশ জারির ক্ষেত্রে আর দেরি করার কোনো সুযোগ নাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডে-কেয়ার চালু করতে চায় বিএনপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীতে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীতে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ভবিষ্যতে রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবী নারীদের শিশু পরিচর্যার জন্য ডে-কেয়ার চালুর পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। আজ বৃহস্পতিবার দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন।

তারেক রহমান বলেন, শিশু পরিচর্যা কোনো দয়া-দাক্ষিণ্য নয়, এটি সামাজিক-অর্থনৈতিক অবকাঠামোর একটি অপরিহার্য অংশ। সড়ক যেমন বাজারকে সংযুক্ত করে, তেমনি ডে-কেয়ার সেন্টার নারীদের কর্মজীবনে সাফল্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে।

বিএনপির পরিকল্পনায় মধ্যে রয়েছে, সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন; সরকারি অফিসগুলোয় ধাপে ধাপে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ; বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় বাধ্যতামূলক ডে-কেয়ার ব্যবস্থা; যেসব নিয়োগকর্তা শিশু পরিচর্যার ব্যবস্থা রাখবে, তাদের জন্য কর সুবিধা ও সিএসআর ক্রেডিট প্রদান এবং নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন প্রদান।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই একটি সংস্কার নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে পারে, পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করতে পারে, ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে আর্থিক স্থিতিশীলতা দিতে পারে এবং আমাদের জিডিপিতে ১ শতাংশ পর্যন্ত যোগ করতে পারে। যেহেতু তৈরি পোশাকশিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নারী, তাই কর্মজীবী মায়েদের অবদানকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়।’

তারেক রহমান জানান, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব কারখানায় শিশু পরিচর্যার সুবিধা রয়েছে, সেখানে কর্মী ধরে রাখার হার বেশি, অনুপস্থিতি কম এবং প্রতিষ্ঠানগুলো এক বছরের মধ্যেই খরচ তুলে আনতে পারে।

তারেক রহমান বলেন, যখন কোনো তরুণী মা পর্যাপ্ত শিশু পরিচর্যার সুযোগ না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দেন, অথবা কোনো ছাত্রী পড়াশোনা বন্ধ করে দেন, তখন কী হয়? বাংলাদেশ হারায় সম্ভাবনা, উৎপাদনশীলতা এবং অগ্রগতি। বিএনপির লক্ষ্য সহজ—এমন একটি আধুনিক, গণমুখী বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে কোনো নারীকে তাঁর পরিবার ও ভবিষ্যতের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে না হয়।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৪ সালের শ্রমশক্তি জরিপ তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘পুরুষদের তুলনায় নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কম। মোট পুরুষদের ৮০ শতাংশের বিপরীতে মোট নারীদের মাত্র ৪৩ শতাংশ কর্মজীবী। এই ব্যবধান আমাদের সতর্ক করছে যে আমরা আমাদের জাতির অর্ধেকেরও বেশি মেধা ও দক্ষতাকে পেছনে ফেলে যাচ্ছি। এই কারণেই বিএনপি সারা দেশে এমন একটি উদ্যোগ গ্রহণের কথা বিবেচনা করছে, যাতে শিশু পরিচর্যা (ডে-কেয়ার) বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কৌশলের অংশ হয়।’

২০৩৪ সালের মধ্যে বিএনপির একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘যা লাখ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, যেখানে প্রতিটি নাগরিক, বিশেষ করে নারী গর্বের সঙ্গে দেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে। আমরা এমন যেকোনো পশ্চাৎমুখী ধারণা প্রত্যাখ্যান করি, যা নারীর সম্ভাবনাকে সীমাবদ্ধ করে। শিশু পরিচর্যা, সমান মজুরি ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন শুধু ন্যায়সংগত নয়; এটিই বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতি। আসুন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ি, যেখানে প্রত্যেক কর্মজীবী মা ও প্রত্যেক ছাত্রী নিজের সাফল্যের স্বাধীনতা পায় এবং যেখানে সমাজের যত্ন ও সহযোগিতাকে অগ্রগতির ভিত্তি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সংবিধান সংস্কার বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুমোদনের প্রস্তাব গণতন্ত্র ও সংসদীয় সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী: বিএনপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ১৪
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ফোকাস বাংলা
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ফোকাস বাংলা

সংবিধান সংস্কার বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুমোদনের প্রস্তাব গণতন্ত্র ও সংসদীয় সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, জাতীয় সংসদে অনুমোদনের পর যেকোনো বিল রাষ্ট্রপতির অনুমোদন প্রাপ্তির পরই কেবল আইনে পরিণত হয়। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটি গণতান্ত্রিক রীতি ও সংসদীয় সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকে বিএনপি।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের একটি সুপারিশ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বলা হয়েছে, সংবিধান সংস্কার পরিষদ প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ থেকে ২৭০ পঞ্জিকা দিবসের মধ্যে যদি সংস্কার সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে গণভোটে অনুমোদিত সংবিধান সংস্কার বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হাস্যকর। জাতীয় সংসদে অনুমোদনের পর যেকোনো বিল রাষ্ট্রপতির অনুমোদন প্রাপ্তির পরই কেবল আইনে পরিণত হয়। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং তা গণতান্ত্রিক রীতি ও সংসদীয় সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের সুপারিশ সরকারের কাছে পেশ করেছে। সেখানে যেসব বিষয়ে ভিন্নমত বা নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্য হয়েছে, তার উল্লেখ না রেখে দীর্ঘ আলোচনায় যেসব প্রসঙ্গ আসেনি, তা অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের অন্য সব সুপারিশ অগ্রহণযোগ্য বিধায় আমরা একমত হতে পারছি না।’

সরকারের কাছে জমা দেওয়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালাকে একপেশে, জবরদস্তিমূলক ও অগ্রহণযোগ্য মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে, এই সকল সুপারিশ কেবল জাতিকে বিভক্ত করবে, ঐক্যের বদলে অনৈক্য সৃষ্টি করবে। মনগড়া যেকোনো সংস্কার প্রস্তাব গ্রহণ করলে জাতীয় জীবনে দীর্ঘ মেয়াদে অকল্যাণ ডেকে নিয়ে আসতে পারে।’

জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবিকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। সে ক্ষেত্রে (সংসদ) নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে প্রস্তাবিত গণভোট অনুষ্ঠান সম্ভব নয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, সময় স্বল্পতা, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ব্যাপক লোকবল নিয়োগ এবং একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মতো বিশাল আয়োজনের বিবেচনায় নির্বাচনের আগে গণভোট অনুষ্ঠান অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত। একই আয়োজনে ও একই ব্যয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠান করা বাঞ্ছনীয়।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা মনে করি না এই সুপারিশ ঘোষিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে কোনো প্রভাব ফেলবে। আমরা এখনো এই সরকারের প্রতি আস্থা রেখেছি যে তারা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে। সে অনুযায়ী আমরাও আমাদের কার্যক্রম চলমান রেখেছি।’

কমিশনের সুপারিশ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে বিএনপি যাবে কি না— জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘প্রয়োজনে আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাব।’ তবে এ নিয়ে তাঁর দল কোনো কর্মসূচি দেবে না বলে জানান ফখরুল।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, সেলিমা রহমান ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত