Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তে বিস্মিত ও ব্যথিত: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ২৭
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তে বিস্মিত ও ব্যথিত: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনের দ্বারপ্রান্তে এসে র‍্যাব ও সাত কর্মকর্তাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের এমন একটি সিদ্ধান্তে (নিষেধাজ্ঞা আরোপ) আমরা বিস্মিত এবং ব্যথিত হয়েছি।’ 

রাজধানীর সচিবালয়ে আজ রোববার নিজের দপ্তরে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, র‍্যাব ও সাত কর্মকর্তাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সিদ্ধান্ত একপেশে ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত দেশের ভেতরে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসীদের উৎসাহিত করবে।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমেরিকা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সপ্তম নৌবহর প্রেরণ করেছিল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে খাদ্যসংকটের সময় ১৯৭৪ সালে কিউবার কাছে পাট বিক্রির অজুহাতে খাদ্যবাহী জাহাজ মাঝপথ থেকে ফিরিয়ে নিয়েছিল আমেরিকা। 

’৭১-এর গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ এবং ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন ঝুলে আছে উল্লেখ করে কাদের আরও বলেন, ‘বন্ধুত্বের প্রশ্নে স্পর্শকাতর এ বিষয়গুলোকে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দিইনি। দ্বিপক্ষীয় ও অভিন্ন ইস্যুসহ বহু পাক্ষিক ইস্যুতে দুই দেশ নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করছে।’ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, র‍্যাব একটি এলিট ফোর্স হিসেবে কাজ করছে। সাম্প্রতিক জঙ্গিবাদ দমনে এই বাহিনী অত্যন্ত পেশাদারি পরিচয় দিয়ে কাজ করছে। তবে এ বাহিনীর কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় এ বাহিনীর অন্তত সাতজন মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন। কোনো অভিযোগ থাকলে বাহিনী নিজে কিংবা মন্ত্রণালয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে। 

দুদক যেকোনো তদন্তকাজ চালিয়ে যেতে স্বাধীন ভূমিকা পালন করছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢালাওভাবে অভিযোগ এনে একটি বাহিনীর প্রধান ও সাবেক কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অযৌক্তিক। মানবাধিকারের কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের সিদ্ধান্তই একধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন। যুক্তরাষ্ট্র আজ মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছে, আমরা তাদের দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আগে পর্যবেক্ষণের অনুরোধ করছি।’ 
 
কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি বৈষম্য এবং নিপীড়ন প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে খোদ জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মেক্সিকো-ইউএসএ সীমান্তে কতজন মারা গেছে? যেখানে বন্দুক হামলায় প্রতিবছর লাখো মানুষ মারা যায়। নির্বাচনে হেরে সে দেশের ক্যাপিটাল হিল দখল করতে গিয়ে পাঁচজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা বিশ্ববাসী লক্ষ করেছে। বিশ্ববাসী দেখেছে মার্কিন গণতন্ত্রের স্বরূপ ও তাদের মানবাধিকারের চেহারা। 

অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার সূচকগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতার কথা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বারবার উল্লেখ করেছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, খোদ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিকে আমেরিকা সফরে বাধা দেওয়া হয়। 

বঙ্গবন্ধুর কোনো কোনো খুনি এখনো আমেরিকায় লুকিয়ে আছে এবং যুদ্ধাপরাধীরাও সে দেশে পালিয়ে আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর রবার্ট রেইচ এক টুইট বার্তায় বিশ্বকে জানিয়েছিলেন শুধু ২০২০ সালে সে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ৯৮৪টি। তিনি জানান, ২০১৫ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ৬ হাজার ৬০০ জন। প্রতিবছর সেখানে প্রায় ১ হাজার মানুষ বিনা বিচারে মারা যায়, যা বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা গেছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যাদের দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন বিভিন্ন শহরে রাস্তায় নামে, তাদের অন্য দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁর মতে, এমন সিদ্ধান্তের গভীরে বাংলাদেশবিরোধী কিছু ব্যক্তি ও অপশক্তির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত