Ajker Patrika

জামায়াত নির্বাচনের বিরোধিতা করে নিজেদের ক্ষমতা এনজয় করছে: শাহ আলম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আজ শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সিপিবির ত্রয়োদশ কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য দেন মো. শাহ আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সিপিবির ত্রয়োদশ কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য দেন মো. শাহ আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রতিক্রিয়াশীল সাম্প্রদায়িক শক্তি নানা অছিলায় এ নির্বাচনের বিরোধিতা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মো. শাহ আলম। তিনি বলেছেন, ‘বিভিন্নভাবে এই মৌলবাদী শক্তি, বিশেষ করে, জামায়াত, স্টেট পাওয়ারের মধ্যে আরেকটা পাওয়ার সৃষ্টি করে ফেলেছে। তাই নির্বাচনের বিরোধিতা করে তারা তাদের যে ক্ষমতা, তারা সেটা এনজয় করছে।’

আজ শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সিপিবির ত্রয়োদশ কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিকেলে জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সিপিবির ত্রয়োদশ কংগ্রেসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এরপর কংগ্রেস উপলক্ষে দেশ-বিদেশ থেকে পাঠানো বামপন্থী সংগঠনসমূহের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠ করা হয়।

এ ছাড়া উদ্বোধনী সভায় প্রবীণদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা স্মারক দেন দলের নেতারা।

মো. শাহ আলম বলেন, ‘হাসিনা আমাদের দেশের নির্বাচনকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছিল। দেশের মানুষ এখন নির্বাচন চাচ্ছে। প্রতিক্রিয়াশীল মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তি নানা অছিলায় এই নির্বাচনের বিরোধিতা করছে। এই নির্বাচন যদি না হয়, তাহলে এই যে রাজনৈতিক শক্তির যে ভারসাম্য বাংলাদেশে বর্তমানে চলছে, তাহলে বাংলাদেশ কোথায় যাবে? দেশ তালেবানি ও মৌলবাদী রাষ্ট্রের দিকে চলে যাবে। অলরেডি আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার লক্ষণ দেখেন, সেখানে জিতেছে। জাহাঙ্গীরনগর দেখেন, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি দেখবেন, চাকসু দেখবেন। বিভিন্নভাবে এই মৌলবাদী শক্তি, বিশেষ করে, জামায়াত, স্টেট পাওয়ারের মধ্যে আরেকটা পাওয়ার সৃষ্টি করে ফেলেছে। তাই নির্বাচনের বিরোধিতা করে তারা তাদের যে ক্ষমতা, তারা সেটা এনজয় করছে।’

সিপিবি সভাপতি আরও বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সাধারণ লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র ও বৈষম্যবিরোধিতা। পাঁচ আগস্টের পর আমরা দেখলাম, ছাত্র আন্দোলনের মূল নেতৃত্ব থেকে ’৭২-এর সংবিধান পাল্টে দিতে হবে, চার মূলনীতি বাতিল করতে হবে—এই সমস্ত বিতর্কিত দাবি নিয়ে সামনে আসা হলো। ফলে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যে বিভেদ সৃষ্টি হলো। জুলাই-আগস্টে দাবি ছিল এক দফা, এক দাবি: শেখ হাসিনা কবে যাবে? কিন্তু পরেই দাবি এসে গেল, ৭২-এর সংবিধান পাল্টে দিতে হবে, চার মূলনীতি বাতিল করতে হবে, জাতীয় সংগীত বাতিল করতে হবে।’

শাহ আলম আরও বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের পর যারা জাতীয় সংগীত বাতিল করতে হবে, ৭২-এর সংবিধান বাতিল করতে হবে, চার মূলনীতি বাতিল করতে হবে এবং সামনের যে নির্বাচন, সেটাকে নানা কৌশলে বিতর্কিত করছে, তারাই এখন গণতন্ত্রের শত্রু। গণতন্ত্রের শত্রু হলো সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। আগস্ট পর্যন্ত শত্রু ছিল শেখ হাসিনার সরকার। এখন শত্রু যে পাল্টে গেছে, সেটুকু আজকে আমাদের বুঝতে হবে। এই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু রাষ্ট্রক্ষমতার শ্রেণি চরিত্রের কোনো পরিবর্তন হয়নি। দেশে দ্বিতীয় স্বাধীনতা হয়নি, বিপ্লব হয়নি। একটি গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে। এই জায়গায়, এই ডাইমেনশনটা আজকে আমাদের পরিষ্কারভাবে বুঝতে হবে।’

সভায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ত্রয়োদশ কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু সাঈদ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাষ্ট্রপতি নয়, প্রধান উপদেষ্টা থেকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ চায় জামায়াত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে কথা বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে কথা বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, ‘এই যে রিফর্মস (জুলাই সনদ) হচ্ছে, এটার যে ডিক্লারেশনটা বা আদেশটা কে দিবে? এ নিয়ে একটা প্রশ্ন এখানে উঠেছে। আমরা বলে আসছি, যদি আইনে কাভার করে এবং আইনগতভাবে যদি কোনো ব্যত্যয় না ঘটে, তাহলে আমরা চাই, চিফ অ্যাডভাইজার (প্রধান উপদেষ্টা) এই আদেশটি দিবেন, প্রেসিডেন্ট দিবেন না। এটা আজকে আমরা মত দিয়েছি।’

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম ও রফিকুল ইসলাম খান।

‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি জানিয়ে তাহের বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে এখনো সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হচ্ছে। সুতরাং, আমরা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষায় আছি। এখনই যদি বিষয়টি আলোচনা করি, তাহলে এটি ইমম্যাচিউরড হবে। আমরা মনে করি, ইন্টেরিম এখন ইন্টেরিমই থাকবে। যদি কোনো ব্যত্যয় না হয় সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারে, তাহলে এই সরকারই কেয়ারটেকার সরকারের ভূমিকা পালন করবে।’

তাহের আরও বলেন, ‘আমরা সেখানে বলেছি, একটি আদেশের মাধ্যমে এটাকে (জুলাই সনদ) সাংবিধানিক মর্যাদা দিতে হবে। এটা কনস্টিটিউশন নয়। এটা হচ্ছে এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল অ্যারেঞ্জমেন্ট। যেটা কোনো সরকার এ রকম একটি পরিস্থিতিতে পড়লে দেওয়ার এখতিয়ার রাখে। এই সনদের মাঝে যেগুলো আগামী নির্বাচন সম্পৃক্ত, সেগুলোকে আগেই পাস করিয়ে তার ভিত্তিতে নির্বাচন দেওয়া হচ্ছে ইম্পর্ট্যান্ট।’

জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির বলেন, ‘কেউ কেউ বলেছেন অধ্যাদেশ দেওয়ার জন্য, অধ্যাদেশ খুব দুর্বল। অধ্যাদেশে এগুলোর সাংবিধানিক মর্যাদায় যাওয়ার মতো স্টে অধ্যাদেশ নেই। কিন্তু আদেশ ইজ ইকুইভ্যালেন্ট টু সাংবিধানিক পরিবর্তন, পাওয়ার অব অথরিটি।’

গণভোটের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘গণভোটের ব্যাপারে বিএনপি কোনোভাবেই রাজি হচ্ছিল না প্রথম দিকে। আমরা এটাতে জোর দিয়েছিলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিএনপি গণভোটে রাজি হয়েছে। তারপরেও তারা একটা জটিলতা তৈরি করার চেষ্টা করছে। সেটা হচ্ছে, গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন এক দিনে হতে হবে। দুইটা একেবারে আলাদা জিনিস।’

তাহের বলেন, ‘একটা হচ্ছে, জাতীয় নির্বাচনে জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হয়ে দেশে কারা সরকার চালাবে, সেটার সিদ্ধান্ত। আর গণভোট হচ্ছে আমাদের কতগুলো রিফর্ম, সংস্কার; যেগুলো কীভাবে সরকার পরিচালনা হবে, কীভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, কীভাবে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা থাকবে—এসব মৌলিক বিষয়, এটার সঙ্গে এটার কোনো রিলেশন নেই। গণভোটের মাধ্যমে রিফর্মস আলাদাভাবে পাস করতে হবে। জনগণ যদি ‘‘হ্যাঁ’’ বলে, পাস হয়ে গেল। জনগণ যদি ‘‘না’’ বলে, পাস হবে না।’

তাহের আরও বলেন, ‘বিএনপি অজুহাত দেখাচ্ছে, গণভোটের সময় নেই। আমরা বলেছি, নভেম্বরের লাস্টে গণভোট করেন। প্রায় এক মাসের বেশি সময় আছে, তারপরে আরও আড়াই মাস থাকবে জাতীয় নির্বাচনের। সুতরাং, এখানে সময়ের কোনো সমস্যা নাই। এই গণভোট হলেই জনগণের সিদ্ধান্ত নিয়ে জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন হবে, নয়তো আগের মতোই হবে।’

নির্বাচনের আগেই প্রশাসনে রদবদল ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির বলেন, ‘ইলেকশন কমিশন, সচিবালয়, পুলিশ প্রশাসনে ৭০-৮০ শতাংশ অফিসারই একটি দলের আনুগত্য। তাদের মাধ্যমে এটা হচ্ছে। আমরা গেলে তারা বলে যে প্রচণ্ড চাপ। পুলিশে একই অবস্থা আছে। আমাদের প্রসিকিউটর যারা হয় ওখানে, পিপিএ ৮০ শতাংশ হচ্ছে একটি বিশেষ দলের। এই যে ইমব্যালেন্সটা হয়ে আছে, আপনারা নিরপেক্ষ সরকার, আপনারা এটাকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করেন। সকলের জন্য সমতল ভূমি তৈরি করেন এবং নির্বাচনের আগে যেখানে যেখানে রদবদল করা দরকার, আপনারা তা করেন।’

প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে ইতিবাচক আশ্বাস দিয়েছেন জানিয়ে তাহের বলেন, ‘উনি আমাদের বলেছেন, উনি নিজে তত্ত্বাবধান করবেন এবং লটারি সিস্টেমে উনি পোস্টিং ঠিক করবেন। তো আমরা বলেছি, আমাদের কোনো আপত্তি নেই, আপনি লটারি টানেন, দেন। তবে লটারির পেছনে যেন কোনো একটা ভূত দাঁড়াইয়া না থাকে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শাপলা ছাড়া আমরা নির্বাচনে যাব না: নাহিদ ইসলাম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
‘শাপলা’ প্রতীক ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘শাপলা’ প্রতীক ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ‘শাপলা’ প্রতীক ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘শাপলা প্রতীক না থাকলে আমরা কী নিয়ে নির্বাচন করব। শাপলা ছাড়া অন্য কোনো প্রতীকে আমরা নির্বাচনে অংশ নেব না।’

আজ বুধবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে তিনি এ কথা বলেন।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। নির্বাচন কমিশনের গঠনপ্রক্রিয়া ও কমিশনের বর্তমান আচরণ আমাদের কাছে নিরপেক্ষ মনে হচ্ছে না। এটা স্বচ্ছ হচ্ছে না এবং নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যেভাবে কার্যক্রম করার কথা ছিল, সেটা করছে না। কিছু কিছু দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখা যাচ্ছে এবং কোনো কোনো দলের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করছে।’

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা বলেছি, বিগত সময়গুলোতে নির্বাচন কমিশন যে পদক্ষেপ নিয়েছে, সেখানে যেভাবে নির্বাচন হয়েছে, সেভাবে হলে দায় সরকারের ওপর আসবে। আমরা সরকারকে বিষয়টি অবগত করেছি। এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা প্রয়োজন। উপদেষ্টা পরিষদের বিষয়েও বক্তব্য দিয়ে এসেছি। সরকারি কর্মকর্তাদের পদায়ন দেওয়া হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে যোগ্যতার ভিত্তিতে হচ্ছে কি না, বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পাচ্ছি, শুনতে পাচ্ছি, প্রশাসনে বিভিন্ন ভাগবাঁটোয়ারা হচ্ছে। বড় রাজনৈতিক ব্যক্তিরা নিজেদের মধ্যে ভাগবাঁটোয়ারা করে এসপি-ডিসির জন্য তালিকা করে দিচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদের ভেতর থেকে সেই দলগুলোকে সহায়তা করছে। ফলে এভাবে চললে সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে। অনিয়ম-দুর্নীতি ও রাজনৈতিক দলীয় পক্ষপাতের বিষয়টি যেন প্রধান উপদেষ্টা দেখেন, সে বিষয়েও আমরা জানিয়েছি।’

নাহিদ আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে আমরা আমাদের বিষয়টা জানিয়েছি। সরকার বলেছে, এটি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন যদি না হয়, সে দায় সরকারের ওপরে আসবে। ফলে বিষয়টা তাঁরা গুরুত্বসহকারে দেখবেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয়, তা সরকারের পক্ষ থেকে করা হবে। জুলাই সনদের বিষয়ে তাঁরা আমাদের সই করার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, আমাদের বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।’

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘গণভোটের মাধ্যমে অনুমোদিত হলে পরবর্তী সংসদের একটি গাঠনিক কাঠামো থাকবে। সেই কাঠামো একটি সংবিধান তৈরি করবে। এই পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে ঐকমত্য কমিশন সুপারিশ দেবে, তা নিয়ে সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটার ওপর নির্ভর করে আমরা জুলাই সনদে সই করার বিষয়টি বিবেচনা করব। এটা সরকারের কাছে আমরা দাবি জানিয়েছি এবং এই দাবিগুলো যেন বিবেচনা করা হয়। আর সরকার যেন সেই পথে যৌক্তিকভাবে এই জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আগায়, এ বিষয়ে জোর দাবি জানিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা যাঁরা বলছেন, তাঁদের দুরভিসন্ধি রয়েছে: নাহিদ ইসলাম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ১৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা যাঁরা বলছেন, তাঁদের দুরভিসন্ধি রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই অভিযোগ করেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টা জুলাই সনদের আওতাধীন। সে বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা হয়েছে—তত্ত্বাবধায়ক সরকার কীভাবে গঠিত হবে ও কোন প্রক্রিয়ায় গঠিত হবে। সেখানে নোট অব ডিসেন্টের বিষয়টা আছে। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জুলাই সনদে আসবে। গণভোটের পরে এ বিষয়ে চূড়ান্ত হওয়া সম্ভব। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে যাওয়ার আসলে কোনো ধরনের সুযোগ নেই। ফলে এই কথা (তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা) যদি বলে থাকেন, যাঁরা বলছেন, তাঁদের দুরভিসন্ধি রয়েছে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গে কথা বলে বিএনপির প্রতিনিধিদল ৷

নাহিদ ইসলাম জানান, বিএনপি প্রতিনিধিদলের এই আলাপের বিষয়ে তাঁরা আইন উপদেষ্টার কাছে জানতে চেয়েছিলেন। নাহিদ বলেন, ‘আমরা জিজ্ঞেস করেছি, বিষয়টা কী। আইন উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের না, বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো যাতে আচরণ করে, অর্থাৎ নিরপেক্ষভাবে, সেই বিষয়ে বলা হয়েছে।’

অন্তর্বর্তী সরকারে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে দুজন উপদেষ্টা আছেন। তাঁদের নিয়ে নিরপেক্ষ উপদেষ্টা পরিষদ সম্ভব কি না—তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এ বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ছাত্র উপদেষ্টাদের বিষয়ে যেটা বারবার বলা হয়, তাঁরা কোনো দলের প্রতিনিধি হিসেবে কিন্তু সরকারে নেই। গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে রয়েছে। ফলে অন্য উপদেষ্টা যে রকম, ছাত্র উপদেষ্টাও সে রকম। ছাত্র উপদেষ্টাকে যদি কোনো নির্দিষ্ট দলের প্রতিনিধি বা সংশ্লিষ্টতা হিসেবে দেখা হয়, অন্য অনেক উপদেষ্টারও বিভিন্ন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

নাহিদ এ বিষয়ে আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক সাবেক, মানে ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে, ফলে সেই বিষয়গুলোও সরকারকে বিবেচনা করতে হবে; কারণ, সরকার যখন গঠিত হয়েছিল, তখন বিভিন্ন দলের রেফারেন্সে এই উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়েছে এবং তাঁরা এই সরকারে ঠাঁই পেয়েছেন। ফলে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হলে শুধু ছাত্র উপদেষ্টা নন, অন্য যে উপদেষ্টাগুলো রয়েছেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেই নামগুলো বলেছি—কার কার কোন কোন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বা প্রশাসনের ভাগবাঁটোয়ারার সঙ্গে জড়িত আছে। ফলে সার্বিকভাবে এটা বিবেচনা করতে হবে।’

আজ বিকেল ৫টায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যমুনায় পৌঁছায় এনসিপির প্রতিনিধিদল। নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এ দলে ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সরকারে রাজনৈতিক দলের উপদেষ্টা থাকার কোনো কারণ নেই: রিজভী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ১৯
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের প্রশাসনে যদি কোনোভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কেউ থাকে, তাদের রাখা যাবে না। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণাই নির্দলীয়। নির্দলীয় হলে সেখানে রাজনৈতিক দলের উপদেষ্টা বা দলীয় পরিচয়ের লোকদের থাকার কোনো কারণ নেই।’

আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, গত ১৫ বছরের নানা ধরনের অপকর্মে যাঁরা জড়িত এবং যাঁরা ফ্যাসিস্টদের রক্ষা করতে গিয়ে বেআইনি কাজ করেছেন, তাঁদের প্রশাসনে রেখে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাঁরা গোপনে থাকেননি, অনেকে প্রকাশ্যেই সহযোগিতা করেছেন। তাঁদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপ নেবে, তখন তা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। তাহলে বিগত ১৬ বছর যাঁরা ভোটে বিশ্বাস হারিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দুটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, এসব বিষয় আইনি প্রক্রিয়ার আওতায়। আইনি প্রক্রিয়ায় যা হওয়ার, তা হবে। যাঁরা অপরাধী, তাঁদের বিচার হওয়া উচিত। তবে এসব কিছুতে কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত