Ajker Patrika

খালেদা জিয়া আগের চেয়ে ভালো আছেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অনেকটা ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা খবর নিয়েছি। উনি (খালেদা জিয়া) মানসিক ও শারীরিক দিক দিয়ে আগের চাইতে অনেকটা বেটার (ভালো)।’

৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে খালেদা জিয়াকে। সেখানে লিভার বিশেষজ্ঞ প্রফেসর জন প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকা চিকিৎসক দলের সদস্যরা জানান, লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকেরা বাংলাদেশ থেকে যাওয়া চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে খালেদা জিয়ার লিভার, কিডনি, হৃদ্‌রোগসহ বিভিন্ন রোগের তথ্য জেনেছেন।

বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ম্যাডাম আগের চেয়ে ভালো আছেন। রুটিনমাফিক বিভিন্ন পরীক্ষা এখানকার ডাক্তাররা করছেন। যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে, তার রিপোর্ট দেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এখানে উনার চিকিৎসার ধরনে কিছুটা পরিবর্তনও আনা হয়েছে।’

এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, খালেদা জিয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসা থেকে রান্না করা খাবার খাচ্ছেন। প্রতিদিন সকাল-দুপুর-বিকেল-সন্ধ্যায় এই খাবার হাসপাতালে নিয়ে আসেন তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জোবাইদা রহমান।

জাহিদ হোসেন আরও বলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর দুই ছেলের তিন মেয়ে (তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমান, আরাফাত রহমান কোকোর মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান) সার্বক্ষণিক রয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের কাছে পেয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন মানসিকভাবে খুবই উৎফুল্ল বোধ করছেন বলেও জানান ডা. জাহিদ।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর তাঁর অসুস্থতা বাড়ে। এর মধ্যে কয়েকবার তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও পড়েন। ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে দীর্ঘ সময় চিকিৎসাধীন থাকতে হয়েছে তাঁকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শাপলা প্রতীক প্রশ্নে এনসিপি আপসহীন: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ৫৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন নতুন গেজেটে আমাদের শাপলা কলি প্রতীক দিয়েছে। কমিশন এটি কিসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করেছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। তবে শাপলা প্রশ্নে আমরা আপসহীন।’

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে ‘জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং জাতীয় নির্বাচন কোন পথে?’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় যুবশক্তি এই সেমিনারের আয়োজন করে।

এ সময় এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আহ্বান জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘আপনারা (ইসি) তালিকায় শাপলাকে দ্রুত অন্তর্ভুক্ত করে এনসিপির যে অধিকার, তা বুঝিয়ে দিন। ইতিমধ্যে আপনারা আমাদের অনেক দেরি করিয়েছেন—বিএনপি–জামায়াতকে সুবিধা দেওয়ার জন্য, জনগণের শক্তিকে চাপা দেওয়ার জন্য; যাতে আওয়ামী লীগকে নিয়ে আসতে পারেন।’

এনসিপির এ নেতা আরও বলেন, ‘আমরা আপনাদের বলব, এসব খেলা বন্ধ করেন। যদি তা না করেন, তাহলে হয়তো আমরা ইলেকশন কমিশনের সামনে গিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রটেস্টের (আন্দোলন) মাধ্যমে আপনাদের পদত্যাগ করাতে বাধ্য হব।’

রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) প্রসঙ্গে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ঐকমত্য কমিশনে বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট প্রকৃতপক্ষে ‘নোট অব চিটিং’। আর জামায়াত মুখে জুলাই সনদের কথা বললেও তারা নিম্নকক্ষে পিআরের কথা বলে আসন নিয়ে দর-কষাকষি করছে। এটা একধরনের ভণ্ডামি।

প্রধান উপদেষ্টার করণীয় স্মরণ করিয়ে দিয়ে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘আমরা মনে করি, সুপারিশ করা সনদ বাস্তবায়নে দ্রুত অধ্যাদেশ জারি করতে হবে সরকারকে। এতে সই করার একমাত্র এখতিয়ার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের। এখানে চুপ্পুর (রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন) কোনো ক্ষমতা নেই। কারণ, সে একজন খুনি।’

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, জাতীয় পার্টির বিষয়ে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। জামায়াত বোঝাতে চায়, তারা সংস্কারের পক্ষে। আসলে তারা বাস্তবে কিছু আসন বাগিয়ে নেওয়ার জন্য এ ধরনের কথা বলছে। আর বিএনপি সরাসরি বিপক্ষে। সে হিসেবে বিএনপি কিছুটা পরিষ্কার।

নাসীরুদ্দীনের দৃঢ় বিশ্বাস, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী মুখে বিরোধের কথা বললেও তারা মূলত আসন নিয়ে দর-কষাকষি করছে।

এদিকে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, এনসিপি দলের মার্কা শাপলা করতে চেয়েছিল। কিন্তু গেজেটভুক্ত হয়েছে শাপলা কলি। এটি করে ইসি এনসিপির ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি করতে চাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন কোনো ধরনের কারণ, আইনি ও সাংবিধানিক ব্যাখ্যা ছাড়া এটি করেছে। এই নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারা বলেন, ‘আমরা জুলাই সনদে সই করতে চাই। তবে তার আগে বাস্তবায়নের পথরেখা সুস্পষ্ট করতে হবে। সেটি নিয়ে আবারও আলোচনা করতে হয়, এটি দুঃখজনক।’

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশন জমিদারি আচরণ করছে। এটি অগ্রহণযোগ্য। শাপলাই হবে এনসিপির প্রতীক। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ দ্রুত জারি করতে হবে। জুলাই সনদের অবস্থানের কারণে প্রমাণিত হয়, আগামী দিনে এনসিপি রাষ্ট্রক্ষমতায় যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিএনপি কাবিননামায় সই করেছে, ‘না’ বলার সুযোগ নেই: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৫৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, বিএনপি অনলাইনে ‘না’ বলেছে। কিন্তু তাদের এখন আর না বলার সুযোগ নেই। তারা বিবাহে রাজি হয়েছে। কাবিননামায় সই করেছে। তাই না বলার কোনো সুযোগ নেই। তাদের ভেবেচিন্তে জুলাই সনদে সই করা উচিত ছিল।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘রাজনীতির বর্তমান ও ভবিষ্যতের পথরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘বিএনপি একটি বড় দল। তাদের জন্ম হয়েছিল “হ্যাঁ” ভোটের মাধ্যমে। এবার “না” ভোটে স্ট্রিক্ট থাকলে দলটির মৃত্যু হবে না ভোটের মধ্য দিয়ে। তাই আমরা বলব, না ভোটের মধ্য দিয়ে নিজেদের কবর রচনা করবেন না।’

জামায়াতে ইসলামী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপার হাউসে (উচ্চকক্ষ) পিআর সিস্টেম লোয়ার হাউসে নিয়ে এসে পুরো বিষয়টি নষ্ট হয়েছে। মুখে এক কথা, অন্তরে অন্য। গণভোট প্রশ্নে জামায়াত হয়তো পরবর্তীকালে বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হবে বা বলবে, ইলেকশনের দিনেই গণভোট হোক।

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে করা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালার খসড়া জনসমক্ষে আনার দাবি জানিয়ে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘এরপরই এনসিপি এতে সই করবে। আমরা মনে করি, বল এখন ড. ইউনূসের কোর্টে। তিনি যেহেতু আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড়, বলা হয়ে থাকে বিদেশি খেলোয়াড়েরা বাংলাদেশে খেলতে এলে পিছলে যায়। কারণ, বাংলাদেশের মাঠ পিছলা। কিন্তু এই পিছলা জায়গায় আরও বেশি তেলমর্দন করেন আমাদের আইন উপদেষ্টা। তিনি রাজনীতিবিদদের শুধু পিছলা খাওয়াতে চান।’

তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করতে না পারলে দেশ যদি গৃহযুদ্ধের দিকে যায়, এর দায়ভার প্রধান উপদেষ্টাকে নিতে হবে।’

নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ প্রশ্নে কোনো ‘ছাড় নয়’ মন্তব্য করে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘অনেকেই বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের পাঁচ লাখ নেতা-কর্মীর প্রাণ যাবে। আমরা কিন্তু আওয়ামী লীগের গায়ে হাত দিইনি। কিন্তু তারা দিতে এলে কঠোরভাবে প্রতিহত করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ৩৭
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি: সংগৃহীত
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি: সংগৃহীত

আজ রাত অথবা আগামীকাল শুক্রবারের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে মগবাজারে আলফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

তাহের বলেন, ‘আমি চিফ অ্যাডভাইজারের কাছে জাতির পক্ষ থেকে, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অত্যন্ত জোরালো আবেদন, নিবেদন, দাবি পেশ করতে চাই যে, আপনি আর কোনো সময়ক্ষেপণ না করে জুলাই সনদের ওপরে এনসিসি আপনাদের কাছে যে প্রস্তাব জমা দিয়েছে, সেটার ভিত্তিতে অবিলম্বে আপনি আদেশ জারির ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

জামায়াত নেতা বলেন, ‘এটা যদি ডিলে হতে থাকে, তাইলে জনমনে আবার নানা ধারণা ও বিভ্রান্তি তৈরি হবে আপনার সম্পর্কে, আপনার সরকার সম্পর্কেও। জনগণ ধীরে ধীরে আস্থা হারাতে শুরু করবে। আর যদি এই সরকারের ওপরে মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলে, তাহলে এই সরকারের দুটো নির্বাচন অনুষ্ঠান করার যে কো-অপারেশনের প্রয়োজন জনগণের, সেটা কিন্তু প্রশ্নবোধক হয়ে যাবে।’

আগামীকালের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির দাবি তুলে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘আমি সে জন্য আবার রিপিট করতে চাই যে, আপনি আর সময়ক্ষেপণ না করে আজকের ভেতরে হলে খুবই উত্তম কারণ রাত ১২টায়–১টায় ও রকম আদেশ জারির নজির আছে, আর যদি আজকে না হয়, কোনোভাবেই আগামীকাল আদেশ জারির ক্ষেত্রে আর দেরি করার কোনো সুযোগ নাই।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডে-কেয়ার চালু করতে চায় বিএনপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীতে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীতে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ভবিষ্যতে রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবী নারীদের শিশু পরিচর্যার জন্য ডে-কেয়ার চালুর পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। আজ বৃহস্পতিবার দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন।

তারেক রহমান বলেন, শিশু পরিচর্যা কোনো দয়া-দাক্ষিণ্য নয়, এটি সামাজিক-অর্থনৈতিক অবকাঠামোর একটি অপরিহার্য অংশ। সড়ক যেমন বাজারকে সংযুক্ত করে, তেমনি ডে-কেয়ার সেন্টার নারীদের কর্মজীবনে সাফল্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে।

বিএনপির পরিকল্পনায় মধ্যে রয়েছে, সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন; সরকারি অফিসগুলোয় ধাপে ধাপে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ; বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় বাধ্যতামূলক ডে-কেয়ার ব্যবস্থা; যেসব নিয়োগকর্তা শিশু পরিচর্যার ব্যবস্থা রাখবে, তাদের জন্য কর সুবিধা ও সিএসআর ক্রেডিট প্রদান এবং নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন প্রদান।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই একটি সংস্কার নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে পারে, পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করতে পারে, ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে আর্থিক স্থিতিশীলতা দিতে পারে এবং আমাদের জিডিপিতে ১ শতাংশ পর্যন্ত যোগ করতে পারে। যেহেতু তৈরি পোশাকশিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নারী, তাই কর্মজীবী মায়েদের অবদানকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়।’

তারেক রহমান জানান, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব কারখানায় শিশু পরিচর্যার সুবিধা রয়েছে, সেখানে কর্মী ধরে রাখার হার বেশি, অনুপস্থিতি কম এবং প্রতিষ্ঠানগুলো এক বছরের মধ্যেই খরচ তুলে আনতে পারে।

তারেক রহমান বলেন, যখন কোনো তরুণী মা পর্যাপ্ত শিশু পরিচর্যার সুযোগ না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দেন, অথবা কোনো ছাত্রী পড়াশোনা বন্ধ করে দেন, তখন কী হয়? বাংলাদেশ হারায় সম্ভাবনা, উৎপাদনশীলতা এবং অগ্রগতি। বিএনপির লক্ষ্য সহজ—এমন একটি আধুনিক, গণমুখী বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে কোনো নারীকে তাঁর পরিবার ও ভবিষ্যতের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে না হয়।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৪ সালের শ্রমশক্তি জরিপ তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘পুরুষদের তুলনায় নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কম। মোট পুরুষদের ৮০ শতাংশের বিপরীতে মোট নারীদের মাত্র ৪৩ শতাংশ কর্মজীবী। এই ব্যবধান আমাদের সতর্ক করছে যে আমরা আমাদের জাতির অর্ধেকেরও বেশি মেধা ও দক্ষতাকে পেছনে ফেলে যাচ্ছি। এই কারণেই বিএনপি সারা দেশে এমন একটি উদ্যোগ গ্রহণের কথা বিবেচনা করছে, যাতে শিশু পরিচর্যা (ডে-কেয়ার) বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কৌশলের অংশ হয়।’

২০৩৪ সালের মধ্যে বিএনপির একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘যা লাখ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, যেখানে প্রতিটি নাগরিক, বিশেষ করে নারী গর্বের সঙ্গে দেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে। আমরা এমন যেকোনো পশ্চাৎমুখী ধারণা প্রত্যাখ্যান করি, যা নারীর সম্ভাবনাকে সীমাবদ্ধ করে। শিশু পরিচর্যা, সমান মজুরি ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন শুধু ন্যায়সংগত নয়; এটিই বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতি। আসুন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ি, যেখানে প্রত্যেক কর্মজীবী মা ও প্রত্যেক ছাত্রী নিজের সাফল্যের স্বাধীনতা পায় এবং যেখানে সমাজের যত্ন ও সহযোগিতাকে অগ্রগতির ভিত্তি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত