Ajker Patrika

ছাত্রদের কাজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, মন্ত্রণালয়ে নয়: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৭: ০৪
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: আজকের পত্রিকা
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: আজকের পত্রিকা

ছাত্রদের কাজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, মন্ত্রণালয়ে নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এখন দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ছাত্রসংগঠনের কমিটি দেওয়া হচ্ছে। এতে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। সমাজের কিছু সুবিধাভোগী শ্রেণি ছাত্রদের বিপথে পরিচালিত করছে, প্রলোভনে ফেলছে।

আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘ফ্যাসিবাদের মিথ্যা মামলায় ৬০ লাখ আসামি, মুক্তি কত দূর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা শুনেছি প্রধান উপদেষ্টার সব মামলা প্রত্যাহার হয়ে গেছে। উনিও শেখ হাসিনার ঈর্ষা, বিদ্বেষ ও আক্রোশের শিকার হয়েছেন। আমরাও আন্দোলন–সংগ্রামে থেকেছি, নির্যাতন–নিপীড়নের শিকার হয়েছি। দু-একজন উপদেষ্টাও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মামলা যদি প্রত্যাহার হয়ে থাকে, তাহলে এই লাখ লাখ মানুষেরটা কেন হচ্ছে না?’ অতি দ্রুত এই মামলাগুলো নিষ্পত্তির আহ্বান জানান তিনি।

রিজভী বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদ সরকার বিতাড়িত হওয়ার পরও তার পাচার করা টাকার যে জোর, এই জোরের বলে যেমন হুমকি দিচ্ছে, তেমনি নানা ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে ৬০ লাখ মামলা দিয়েছে এই কারণে যে তিনি তাঁর লোক দিয়ে ব্যাংক দখল করবেন আর কেউ যাতে এর প্রতিবাদ না করতে পারেন। এর জন্য এই মিথ্যা মামলাগুলো দিয়েছে। শুধু তাই নয়, বিএনপির নেতা–কর্মীদের খুন করেছে, গুম করেছে। তাঁর ফ্যাসিবাদের লেলিহান শিখা জ্বালিয়ে রাখার জন্য এগুলো করেছে। জুলুমের এক বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, শেখ হাসিনা মাদক সম্রাটদের এমপি বানাতেন, গডফাদার ও মাদককারবারিই ছিলেন হাসিনার কাছে বেশি সম্মানিত। আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী এস আলম, সালমান এফ রহমানসহ যারা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ, তাদের টাকা পাচারের গল্প সিন্দাবাদের গল্পকে হার মানিয়ে নতুন রূপকথার গল্প বাংলাদেশের মানুষ শুনেছে। গল্পটি রূপকথার মতো হলেও এটি অত্যন্ত সত্য ও বাস্তব ঘটনা।

যেখানে আমেরিকানরা ফ্ল্যাট কিনতে সাহস পায় না, সেখানে শেখ হাসিনার এমপি-মন্ত্রীরা ফ্ল্যাট কিনেছেন জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘শেখ পরিবারের টিউলিপ সিদ্দিকও এখান থেকে মুক্ত নন, তিনি আবার লন্ডনের এমপি ছিলেন। শেখ হাসিনা তো নিজেই গর্ব করে বলতেন, তার পিয়ন নাকি বাড়িতে হেলিকপ্টার ছাড়া যায় না, সে নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক। তাঁর ঘনিষ্ঠ এস আলম তাঁর বাড়ির কাজের লোক দিয়ে একটি ব্যাংকের শাখা থেকে ২ হাজারের কোটির বেশি টাকা লোন তুলেছেন। শেখ হাসিনা দেশ থেকে জনগণের টাকা লুট করে পুঞ্জীভূত করে পাচার করেছেন। কিছু টাকা দেশে আছে, যেটি বিভিন্ন অপকর্ম করতে ব্যবহার হচ্ছে, আমরা দেখতে পাচ্ছি।’

ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা বলেন, পয়লা বৈশাখে আনন্দ শোভাযাত্রা করতে গিয়ে যে প্রতীকগুলো ব্যবহার করা হয়েছিল, আন্দোলনের সেই ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি ব্যবহারের কারণে শিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের গ্রামের বাড়ি আগুনে ভস্মীভূত করে দেওয়া হয়েছে। পতিত ফ্যাসিবাদ তার অধঃপতনের পরও পাচার করা টাকার জোরে তারা যেমন হুমকি দিচ্ছে, তেমনি নানাবিধ কাজ করে বেড়াচ্ছে।

রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মোটামুটি আট মাস হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা যে নির্বাচনকে কলঙ্কিত করে অদৃশ্য করার চেষ্টা করেছেন, সেই জায়গা থেকে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করবেন ড. ইউনূসের কাছে এটাই জনগণের প্রত্যাশা।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচন নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে কেন মানুষের হৃদয়কে দোলাচ্ছেন? পেন্ডুলামের মধ্যে ডিসেম্বর না জুন এর মধ্যে দোল খাচ্ছে কেন? এটা স্পষ্ট করেন।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এ এস এম আমানুল্লাহ, বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজীজুল বারী হেলাল, বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ, নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারজানা শারমিন, ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, সদস্যসচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত