Ajker Patrika

জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল সহিংসতা চালানোর সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৫, ২১: ৫৩
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বক্তব্য দেন মির্জা আব্বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বক্তব্য দেন মির্জা আব্বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় প্রতিবাদ ও সংহতি র‍্যালি করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে র‍্যালিটি কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজারসহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) বিএনপি আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের ঢল নামে।

নয়াপল্টনে র‍্যালিপূর্ব সমাবেশে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ফিলিস্তিনে যে নারকীর অত্যাচার-হত্যা হচ্ছে, তা দেখে আমাদের মনে হতে পারে যে শুধু তাদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। আসলে বিষয়টি তা নয়। একসময় তারা ধীরে ধীরে বিশ্বের সব মুসলমানকে নিঃশেষ করার চেষ্টা করবে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন সহিংসতা চালানোর সাহস পেত না বলেও এ সময় মন্তব্য করেন আব্বাস। তিনি বলেন, ‘ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় যেমন জিয়াউর রহমান ভূমিকা রেখেছিলেন, তিনি বেঁচে থাকলে আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে কার্যকর উদ্যোগ নিতেন এবং ইসরায়েল এমন সহিংসতা চালানোর সাহস পেত না।’

মির্জা আব্বাস বলেন, মুসলিম বিশ্বের যেসব মোড়ল দেশ নিজেদের রাজত্ব বাঁচানোর জন্য নিজেরা নেতৃত্ব দিচ্ছে না, তাদের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ নেমে আসবে। তারা নেতৃত্ব দিলে এবং মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করলে ফিলিস্তিনের এই অবস্থা হতো না।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একজন ছাত্র ভাই বলেছে, যদি বর্ডার না থাকত তাহলে আমরা ফিলিস্তিনে যুদ্ধ করার জন্য নেমে পড়তাম। আমি তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলতে চাই, যদি আজকে সুযোগ হতো, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, আল্লাহ রহমতে বিশ্বের যেকোনো দেশে গিয়ে যুদ্ধ করতাম।’

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রতিবাদ মিছিল বিশাল বড় হয়েছে। এই মিছিলে শুধু বিএনপি নেতা-কর্মী নয়, ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাইয়েরা অংশ নিয়েছেন। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি নিজেও অনেক দূর থেকে আজকের এই র‍্যালিতে অংশ নিতে এসেছি। এই মিছিলে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্য একটা। কারণ, সশরীরে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের জন্য কিছু করতে পারছি না।’

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বিএনপি সব সময় ন্যায়ের পক্ষে, মানবতার পক্ষে। ফিলিস্তিন সম্পর্কে অন্তর্বর্তী সরকারের এখনো আলাপ পাইনি। অনেক সুশীল রয়েছে, তাদের সাড়া মিলছে না।’

মুসলিম বিশ্বের বিভক্তির কারণে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন চলছে—এমন অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ভারতের সঙ্গে ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও রয়েছে। বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়া ঠেকাতে সবাই ব্যস্ত, কিন্তু ফিলিস্তিনের পক্ষে ব্যস্ত নয় বলেও মন্তব্য করেন গয়েশ্বর।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।

এর আগে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক।

এ ছাড়া সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, আব্দুস সালাম পিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, আব্দুস সালাম আজাদ, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম নীরব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন, জাতীয়তাবাদী যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত