Ajker Patrika

একটি বিশেষ দলকে সুবিধা দিতে জেলা-উপজেলায় নাগরিক কমিটির সুপারিশ: ববি হাজ্জাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। ছবি: সংগৃহীত
এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। ছবি: সংগৃহীত

বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দিতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নাগরিক কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)। আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে অনুষ্ঠিত সংলাপে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে এমনটা বলেছেন বলে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।

দলের নাম উল্লেখ না করে ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘সদ্য গঠিত একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দিতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে নাগরিক কমিটি গঠনের সুপারিশ করে বলে আমরা ঐকমত্য কমিশনকে জানিয়েছি।’

দলের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে কোন বিশেষ দলের নাম বলছি, কোন বিষয়, যেটা বলেছি—তাতে আপনাদের কাছে নিশ্চয়ই পরিষ্কার হয়ে গেছে।’

ন্যূনতম ১০ শতাংশ আসনে তরুণ প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এনডিএম। এমপি পদে নির্বাচনের বয়স কমিয়ে ২১ করা বর্তমান বাস্তবতায় কতখানি সম্ভব, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলে দলটি।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজ সকাল ১০টার দিকে শুরু হওয়া বৈঠকটি চলে দুপুর সাড়ে ১২টার পর পর্যন্ত। এতে কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন ও ড. ইফতেখারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, মহাসচিব মোমিনুল আমিনসহ আটজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি লিখিত প্রস্তাবের মধ্যে ৯৪টি একমত, দ্বিমত ২৫, আংশিকভাবে একমত ৪৪ এবং ৩টি প্রশ্নে মতামত জমা দেয়নি এনডিএম। তবে আজকের সংলাপে আংশিকভাবে দ্বিমত থাকা আরও কিছু বিষয়ে একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ববি হাজ্জাজ। তিনি বলেন, ‘তারা ব্যাখ্যা দেওয়ার পরে আমরা ১০০টির অধিক প্রস্তাবে একমত হয়েছি।’

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাই সর্বপ্রথম সংস্কার বলে মনে করেন ববি হাজ্জাজ। তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত হওয়া এই সরকারের দায়িত্ব টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের জন্য ফ্যাসিবাদ সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করা।’

সাবেক কোনো প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের অযোগ্যতা, এটি একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে মনে করে এনডিএম। তারা দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না, এমন প্রস্তাবে একমত নন বলে জানিয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে সবার লক্ষ্য এক। তবে সংস্কার বাস্তবায়নের পথ নিয়ে সামান্য ভিন্নতা আছে। আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য দূর করে যেসব জায়গায় ঐকমত্য আছে তার ভিত্তিতে দ্রুতই জাতীয় সনদ তৈরি করা যাবে। এই সনদ তৈরির মাধ্যমে জাতির রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষার দিকে অগ্রসর হওয়া সম্ভব।

জাতীয় সনদ তৈরি প্রসঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে—দ্রুততার সঙ্গে একটি জাতীয় সনদের জায়গায় পৌঁছানো। এই কমিশনের মেয়াদ যেহেতু জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। তাই আমরা আশা করি, প্রাথমিক আলোচনা মে মাসের মাঝামাঝি পর্যায়ে শেষ করতে পারব। পরে আমরা পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হব।’

আলোচনা টেবিলের দুই পাশে হলেও, এখানে পক্ষ দুটি নয় মন্তব্য করে আলী রীয়াজ আরও বলেন, ‘আমরা সবাই একপক্ষ। চেষ্টা করছি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য। আমাদের লক্ষ্য এক। কিন্তু পথের ক্ষেত্রে সামান্য ভিন্নতা আছে। সেটা দূর করে—যে ঐক্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শাসন দূর করা গেছে, সে ঐক্যের জায়গায় পৌঁছাতে পারি এবং অগ্রসর হতে পারি। এখানে ঐক্য আছে, মতভিন্নতা আছে। সেই ঐক্যকে সুদৃঢ় করা এবং সংস্কার কার্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত