সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, রেজা করিম, তানিম আহমেদ ও ফারুক ছিদ্দিক, ঢাকা

সাংবিধানিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ চান জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার কিছুটা এগিয়ে নিয়ে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী বছরের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে, এমন একটি ধারণা সম্প্রতি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মধ্যে কোনটি কখন হতে হবে, কীভাবে হবে, সে বিষয়ে সরকার, বিএনপিসহ বড় দলগুলো এবং অভ্যুত্থানের অংশীজনদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
বিএনপি ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করে বলছে, এ সংস্কার মূলত হতে হবে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে। আর রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কারের কিছু পদক্ষেপ আগে নেওয়া হলেও তা সংসদের অনুমোদন সাপেক্ষে বৈধতা পাবে। এ কারণে দলটি সংসদ নির্বাচন আগে করার দাবি তুলছে। এমন দাবিতে প্রয়োজনে মাঠে নামার পরিকল্পনাও করছে দলটি।
বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানালেও সরকারের তরফ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে সম্প্রতি। আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সমমনা কয়েকটি সংগঠন সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আগে করার দাবি তুলছে। ইউনিয়ন পরিষদ ও ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবির সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি ফেসবুক পোস্ট একসঙ্গে নিয়ে পুরো বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছে বিএনপি।
মাঠপর্যায়ে স্থানীয় সরকারের সর্বশেষ স্তর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবির খান গত বৃহস্পতিবার সরকারের অন্য তিন প্রভাবশালী উপদেষ্টাকে যুক্ত করে একটি ফেসবুক পোস্ট দেন।
দুটি প্রশ্ন জুড়ে দিয়ে করা ওই পোস্টে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচনের কথা বলেছেন। দলীয় প্রতীকবিহীন প্রার্থীদের নিয়ে এসব নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের আপত্তির সুযোগ কোথায়? স্বাধীন ও শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ছাড়া, একদলীয় শাসন থেকে মুক্তির অন্য কোনো উপায় আছে কী?’
অন্য যে তিন উপদেষ্টাকে ফেসবুক পোস্টে যুক্ত করা হয়েছে, তাঁরা হলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, তথ্য মন্ত্রণালয়ের মো. নাহিদ ইসলাম ও আইন মন্ত্রণালয়ের আসিফ নজরুল।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা গত বুধবার ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলা বেয়ারকে জানান, সরকার জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি একই সঙ্গে নিচ্ছে। স্থানীয় সরকারব্যবস্থা শক্তিশালী করার বিষয়টি সরকার নিশ্চিত করতে চায়।
বিএনপির নেতৃত্ব মনে করছে, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দীর্ঘায়িত করা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে তৈরি করা প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটির মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সুবিধা ব্যবহার করে সারা দেশে নতুন রাজনৈতিক দল দাঁড় করানোর জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করার কৌশল নেওয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সময় নিতে সামনে আনা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গগুলো।
বিএনপির নেতাদের অনেকের মধ্যে এ ধারণা বদ্ধমূল হয় দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বিদেশে যাওয়ার পরদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজে করা একটি পোস্ট থেকে। ৮ জানুয়ারি করা এ পোস্টে বলা হয়, ‘দুই আপামুক্ত’ এই প্রথম বাংলাদেশ। ফেসবুক পোস্টটি পরে সরিয়ে নেওয়া হলেও সেদিনই তা বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকের নজরে আসে।
খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার প্রসঙ্গটিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে জুড়ে দিয়ে মন্তব্যটি করা হয়েছে, এমনটি মনে করছে বিএনপি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ‘পদত্যাগ করে’ ৫ আগস্ট দিল্লি চলে যান। আর খালেদা জিয়া ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।
বিএনপির নেতারা মনে করছেন, এ পোস্টটি সরকারের কয়েকটি প্রভাবশালী মহল ও সম্প্রতি প্রভাবশালী হয়ে ওঠা বিভিন্ন সংগঠনের অনেক নেতার দুরভিসন্ধি স্পষ্ট করে দিয়েছে। এই মহলগুলো খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে রেখে ও সময়ক্ষেপণের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করে তাঁরা নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এমন একটি রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়।
দলটির কয়েকজন নেতা বলছেন, প্রেক্ষাপট ও কারণ ভিন্ন হলেও দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রধান খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা এখন দেশের বাইরে। এমন অবস্থায় দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পোস্টটির সঙ্গে ২০০৭-০৮ সালের সেনাসমর্থিত সরকারের কুশীলবদের ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলার মিল রয়েছে। তখন দুই নেত্রীকেই রাজনীতির বাইরে রাখার কথা প্রকাশ্যে আনা হলেও আসলে তা ছিল খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়ে (মাইনাস ওয়ান) শেখ হাসিনার ক্ষমতায় আসার পথ নিষ্কণ্টক করা। সরকারের একটি প্রভাবশালী সংস্থার মাধ্যমে প্রবল চাপ দিয়েও খালেদাকে তখন বিদেশে পাঠানো যায়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পোস্টটির বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কোনো দলের বিরুদ্ধে নই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পেজে এ লেখা দেখার পর আমরা মিডিয়া সেলে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদেরকে স্ট্রিকটলি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দলকে হেয় করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।’
নির্বাচন ও সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিএনপির কৌশল কী হতে পারে, সে বিষয়টি টানা আলোচনায় আসছে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বিভিন্ন বৈঠকে।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা তো বিরোধিতা করলাম। তারপরও (স্থানীয় সরকার নির্বাচন) করে ফেললে সেটার পরিণতি... দেশের মানুষ দেখবে। দেশের মানুষ ঠিক করবে।’
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে ঝুঁকি আছে, এমনটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা (স্থানীয় সরকার নির্বাচন) আগে করার কোনো অর্থ হয় না এ জন্য যে, অন্তর্বর্তী সরকারের জনগণের ম্যান্ডেট নেই। নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার এসে ওই নির্বাচন সঠিক হয়নি বলে বাতিল করলে সেটা আরও খারাপ হবে। অতীতেও এ রকম ঘটনা ঘটেছে। কাজেই বিনা কারণে কেন এমন ঝুঁকিতে আমরা যাব?’
বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে চায়, এমনটি স্পষ্টভাবে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার জনগণকে ওয়াদা করেছে যে, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হলে জনগণকে প্রথমে জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে। জনগণের সরকার পরবর্তী কাজগুলো করবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক প্রভাবশালী সদস্য বলেন, ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সংস্কার করে আগে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে বিএনপি শিগগিরই মাঠে নামবে। এ জন্য ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও রাজধানীসহ সর্বত্র দলকে সক্রিয় করা হচ্ছে। শুরুতে শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। প্রয়োজনে পরে কঠোর কর্মসূচিও দেওয়া হতে পারে, এমনটি জানান তাঁরা।
বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি সারা দেশে সাংগঠনিক কাঠামো দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাদের টানার চেষ্টা চলছে।
অন্য এক নেতা বলেন, সরকারের কয়েকটি দপ্তর নতুন নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের নেপথ্যে রয়েছে। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে এসব তৎপরতার ওপর নজর রাখতে বিএনপির হাইকমান্ড ইতিমধ্যে নির্দেশ জারি করেছে।
তবে জাতীয় নাগরিক কমিটির সহমুখপাত্র সালেহ উদ্দীন সিফাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে পুরোনো সব রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ভেঙে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়ন। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া। সে লক্ষ্যে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কথা বলা হচ্ছে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন বা সংস্কার নিশ্চিত করতে হলে গণপরিষদ নির্বাচন লাগবে। নাগরিক কমিটি অন্তর্বর্তী সরকারকে সংবিধান প্রণয়ন করতে বলছে না, এমনটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্যরা সংবিধান প্রণয়ন করবেন। এরপর গণপরিষদই আইনসভায় রূপান্তরিত হবে।’
সিফাত বলেন, ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে উত্তরণের প্রাথমিক ধাপ হলো স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা জনমানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। সে জন্য আগে স্থানীয় নির্বাচন প্রয়োজন।
অন্যদিকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে উপদেষ্টার বক্তব্যকে এখনই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে নারাজ বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রভাবশালী সমর্থক দল জামায়াতে ইসলামী। দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার যে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে চায়, সে বিষয়ে তাঁদের দিক থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য এখনো আসেনি। তেমন বক্তব্য এলে জামায়াত তার করণীয় ঠিক করবে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, এ বিষয়ে অনেকে অনেক কথা বলছে, যা কেবলই ‘ধারণা’। জামায়াত কোনো ‘ধারণা’ নিয়ে কথা বলতে চায় না।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকে ৫৩ বছর ধরে স্থানীয় রাজনীতিতে অন্যতম বড় দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচন নিয়ে সরকারের ভেতরে-বাইরে নানামুখী আলোচনার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দলটির একজন সাংগঠনিক সম্পাদক গতকাল বলেন, ‘আগে তো আমাদের বসতে দিতে হবে। দলকে এক জায়গায় আসতে দিতে হবে। সে রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক। তারপর আমরা নির্বাচনের কথা ভাবব।’
দলের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল গতকাল বলেন, ‘তারা (সরকার) কোন দিকে পালাবে, সে চিন্তা করুক। নির্বাচনের চিন্তা করার দরকার নেই।’

সাংবিধানিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ চান জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার কিছুটা এগিয়ে নিয়ে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী বছরের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে, এমন একটি ধারণা সম্প্রতি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মধ্যে কোনটি কখন হতে হবে, কীভাবে হবে, সে বিষয়ে সরকার, বিএনপিসহ বড় দলগুলো এবং অভ্যুত্থানের অংশীজনদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
বিএনপি ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করে বলছে, এ সংস্কার মূলত হতে হবে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে। আর রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কারের কিছু পদক্ষেপ আগে নেওয়া হলেও তা সংসদের অনুমোদন সাপেক্ষে বৈধতা পাবে। এ কারণে দলটি সংসদ নির্বাচন আগে করার দাবি তুলছে। এমন দাবিতে প্রয়োজনে মাঠে নামার পরিকল্পনাও করছে দলটি।
বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানালেও সরকারের তরফ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে সম্প্রতি। আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সমমনা কয়েকটি সংগঠন সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আগে করার দাবি তুলছে। ইউনিয়ন পরিষদ ও ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবির সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি ফেসবুক পোস্ট একসঙ্গে নিয়ে পুরো বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছে বিএনপি।
মাঠপর্যায়ে স্থানীয় সরকারের সর্বশেষ স্তর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবির খান গত বৃহস্পতিবার সরকারের অন্য তিন প্রভাবশালী উপদেষ্টাকে যুক্ত করে একটি ফেসবুক পোস্ট দেন।
দুটি প্রশ্ন জুড়ে দিয়ে করা ওই পোস্টে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচনের কথা বলেছেন। দলীয় প্রতীকবিহীন প্রার্থীদের নিয়ে এসব নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের আপত্তির সুযোগ কোথায়? স্বাধীন ও শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ছাড়া, একদলীয় শাসন থেকে মুক্তির অন্য কোনো উপায় আছে কী?’
অন্য যে তিন উপদেষ্টাকে ফেসবুক পোস্টে যুক্ত করা হয়েছে, তাঁরা হলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, তথ্য মন্ত্রণালয়ের মো. নাহিদ ইসলাম ও আইন মন্ত্রণালয়ের আসিফ নজরুল।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা গত বুধবার ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলা বেয়ারকে জানান, সরকার জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি একই সঙ্গে নিচ্ছে। স্থানীয় সরকারব্যবস্থা শক্তিশালী করার বিষয়টি সরকার নিশ্চিত করতে চায়।
বিএনপির নেতৃত্ব মনে করছে, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দীর্ঘায়িত করা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে তৈরি করা প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটির মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সুবিধা ব্যবহার করে সারা দেশে নতুন রাজনৈতিক দল দাঁড় করানোর জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করার কৌশল নেওয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সময় নিতে সামনে আনা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গগুলো।
বিএনপির নেতাদের অনেকের মধ্যে এ ধারণা বদ্ধমূল হয় দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বিদেশে যাওয়ার পরদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজে করা একটি পোস্ট থেকে। ৮ জানুয়ারি করা এ পোস্টে বলা হয়, ‘দুই আপামুক্ত’ এই প্রথম বাংলাদেশ। ফেসবুক পোস্টটি পরে সরিয়ে নেওয়া হলেও সেদিনই তা বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকের নজরে আসে।
খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার প্রসঙ্গটিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে জুড়ে দিয়ে মন্তব্যটি করা হয়েছে, এমনটি মনে করছে বিএনপি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ‘পদত্যাগ করে’ ৫ আগস্ট দিল্লি চলে যান। আর খালেদা জিয়া ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।
বিএনপির নেতারা মনে করছেন, এ পোস্টটি সরকারের কয়েকটি প্রভাবশালী মহল ও সম্প্রতি প্রভাবশালী হয়ে ওঠা বিভিন্ন সংগঠনের অনেক নেতার দুরভিসন্ধি স্পষ্ট করে দিয়েছে। এই মহলগুলো খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে রেখে ও সময়ক্ষেপণের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করে তাঁরা নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এমন একটি রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়।
দলটির কয়েকজন নেতা বলছেন, প্রেক্ষাপট ও কারণ ভিন্ন হলেও দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রধান খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা এখন দেশের বাইরে। এমন অবস্থায় দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পোস্টটির সঙ্গে ২০০৭-০৮ সালের সেনাসমর্থিত সরকারের কুশীলবদের ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলার মিল রয়েছে। তখন দুই নেত্রীকেই রাজনীতির বাইরে রাখার কথা প্রকাশ্যে আনা হলেও আসলে তা ছিল খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়ে (মাইনাস ওয়ান) শেখ হাসিনার ক্ষমতায় আসার পথ নিষ্কণ্টক করা। সরকারের একটি প্রভাবশালী সংস্থার মাধ্যমে প্রবল চাপ দিয়েও খালেদাকে তখন বিদেশে পাঠানো যায়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পোস্টটির বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কোনো দলের বিরুদ্ধে নই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পেজে এ লেখা দেখার পর আমরা মিডিয়া সেলে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদেরকে স্ট্রিকটলি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দলকে হেয় করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।’
নির্বাচন ও সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিএনপির কৌশল কী হতে পারে, সে বিষয়টি টানা আলোচনায় আসছে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বিভিন্ন বৈঠকে।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা তো বিরোধিতা করলাম। তারপরও (স্থানীয় সরকার নির্বাচন) করে ফেললে সেটার পরিণতি... দেশের মানুষ দেখবে। দেশের মানুষ ঠিক করবে।’
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে ঝুঁকি আছে, এমনটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা (স্থানীয় সরকার নির্বাচন) আগে করার কোনো অর্থ হয় না এ জন্য যে, অন্তর্বর্তী সরকারের জনগণের ম্যান্ডেট নেই। নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার এসে ওই নির্বাচন সঠিক হয়নি বলে বাতিল করলে সেটা আরও খারাপ হবে। অতীতেও এ রকম ঘটনা ঘটেছে। কাজেই বিনা কারণে কেন এমন ঝুঁকিতে আমরা যাব?’
বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে চায়, এমনটি স্পষ্টভাবে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার জনগণকে ওয়াদা করেছে যে, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হলে জনগণকে প্রথমে জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে। জনগণের সরকার পরবর্তী কাজগুলো করবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক প্রভাবশালী সদস্য বলেন, ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সংস্কার করে আগে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে বিএনপি শিগগিরই মাঠে নামবে। এ জন্য ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও রাজধানীসহ সর্বত্র দলকে সক্রিয় করা হচ্ছে। শুরুতে শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। প্রয়োজনে পরে কঠোর কর্মসূচিও দেওয়া হতে পারে, এমনটি জানান তাঁরা।
বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি সারা দেশে সাংগঠনিক কাঠামো দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাদের টানার চেষ্টা চলছে।
অন্য এক নেতা বলেন, সরকারের কয়েকটি দপ্তর নতুন নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের নেপথ্যে রয়েছে। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে এসব তৎপরতার ওপর নজর রাখতে বিএনপির হাইকমান্ড ইতিমধ্যে নির্দেশ জারি করেছে।
তবে জাতীয় নাগরিক কমিটির সহমুখপাত্র সালেহ উদ্দীন সিফাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে পুরোনো সব রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ভেঙে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়ন। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া। সে লক্ষ্যে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কথা বলা হচ্ছে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন বা সংস্কার নিশ্চিত করতে হলে গণপরিষদ নির্বাচন লাগবে। নাগরিক কমিটি অন্তর্বর্তী সরকারকে সংবিধান প্রণয়ন করতে বলছে না, এমনটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্যরা সংবিধান প্রণয়ন করবেন। এরপর গণপরিষদই আইনসভায় রূপান্তরিত হবে।’
সিফাত বলেন, ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে উত্তরণের প্রাথমিক ধাপ হলো স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা জনমানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। সে জন্য আগে স্থানীয় নির্বাচন প্রয়োজন।
অন্যদিকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে উপদেষ্টার বক্তব্যকে এখনই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে নারাজ বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রভাবশালী সমর্থক দল জামায়াতে ইসলামী। দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার যে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে চায়, সে বিষয়ে তাঁদের দিক থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য এখনো আসেনি। তেমন বক্তব্য এলে জামায়াত তার করণীয় ঠিক করবে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, এ বিষয়ে অনেকে অনেক কথা বলছে, যা কেবলই ‘ধারণা’। জামায়াত কোনো ‘ধারণা’ নিয়ে কথা বলতে চায় না।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকে ৫৩ বছর ধরে স্থানীয় রাজনীতিতে অন্যতম বড় দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচন নিয়ে সরকারের ভেতরে-বাইরে নানামুখী আলোচনার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দলটির একজন সাংগঠনিক সম্পাদক গতকাল বলেন, ‘আগে তো আমাদের বসতে দিতে হবে। দলকে এক জায়গায় আসতে দিতে হবে। সে রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক। তারপর আমরা নির্বাচনের কথা ভাবব।’
দলের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল গতকাল বলেন, ‘তারা (সরকার) কোন দিকে পালাবে, সে চিন্তা করুক। নির্বাচনের চিন্তা করার দরকার নেই।’

তুরস্কের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। আজ বুধবার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তাঁরা যোগ দেন।
৩ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর প্রেসক্লাবে পুলিশের জলকামান নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হওয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।
৪ ঘণ্টা আগে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে বিএনপি আসন ভাগাভাগি করবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, জোট সারা পৃথিবীতে হচ্ছে। বাংলাদেশে হওয়াটা স্বাভাবিক। আর নির্বাচনী জোট করলে শেয়ার তো করতেই হবে।
৪ ঘণ্টা আগে
‘রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরও দু-তিনটি রাজনৈতিক দল একই পক্ষ।’
১১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

তুরস্কের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। আজ বুধবার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তাঁরা যোগ দেন।
এতে ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম প্রমুখ।
তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রমিস সেনসহ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, কূটনীতিক, রাজনৈতিক নেতারা, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের প্রচার বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুষ্ঠানে জামায়াত আমির শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে রিপাবলিক অব তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বরাবর লিখিত একটি শুভেচ্ছাবাণী রাষ্ট্রদূত রমিস সেনের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
জামায়াত আরও জানায়, জামায়াতের প্রতিনিধিদল তুরস্ক ও বাংলাদেশের মাঝে বিরাজমান ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।

তুরস্কের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। আজ বুধবার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তাঁরা যোগ দেন।
এতে ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম প্রমুখ।
তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রমিস সেনসহ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, কূটনীতিক, রাজনৈতিক নেতারা, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের প্রচার বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুষ্ঠানে জামায়াত আমির শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে রিপাবলিক অব তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বরাবর লিখিত একটি শুভেচ্ছাবাণী রাষ্ট্রদূত রমিস সেনের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
জামায়াত আরও জানায়, জামায়াতের প্রতিনিধিদল তুরস্ক ও বাংলাদেশের মাঝে বিরাজমান ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।

সাংবিধানিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ চান জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার কিছুটা এগিয়ে নিয়ে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী বছরের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে, এমন একটি ধারণা সম্প্রতি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা...
১১ জানুয়ারি ২০২৫
রাজধানীর প্রেসক্লাবে পুলিশের জলকামান নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হওয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।
৪ ঘণ্টা আগে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে বিএনপি আসন ভাগাভাগি করবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, জোট সারা পৃথিবীতে হচ্ছে। বাংলাদেশে হওয়াটা স্বাভাবিক। আর নির্বাচনী জোট করলে শেয়ার তো করতেই হবে।
৪ ঘণ্টা আগে
‘রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরও দু-তিনটি রাজনৈতিক দল একই পক্ষ।’
১১ ঘণ্টা আগেঢামেক প্রতিবেদক

রাজধানীর প্রেসক্লাবে পুলিশের জলকামান নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হওয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।
আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তিনি হাসপাতালে আসেন। এ সময় আহত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাঁদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন তিনি।
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের জারা বলেন, ‘আহতদের অনেকে কানে শুনতে পাচ্ছেন না; অনেকের মাথায় ও হাতে-পায়ে আঘাত আছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করা আমাদের শিক্ষকদের ওপর এভাবে আঘাত করা হয়েছে, এটি খুবই লজ্জাজনক। এটি খুব দ্রুত তদন্ত ও বিচার অবশ্যই করা প্রয়োজন। যেই দাবি ইতিপূর্বে ২৮ জানুয়ারি আদায় করে ফেলেছে, সেই দাবি বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের আবার আন্দোলন করতে হবে, এটি খুবই দুঃখজনক। আমরা চাই না, এমন পুনরাবৃত্তি বাংলাদেশে আর হোক। শিক্ষকদের এভাবে অবহেলা, নির্যাতন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তাসনিম জারা বলেন, ‘শিক্ষকদের তো ক্লাশরুমে থাকার কথা, তাঁদের তো মাঠে থাকার কথা ছিল না। যেই প্রতিশ্রুতি সরকার একবার দিয়েছে, সেটি আদায় করতে আবার মাঠে নামতে হচ্ছে, এটি খুবই দুঃখজনক।’
তাসনিম জারা বলেন, ‘এমনকি সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব যেগুলো আছে, সেখানেও বাস্তবায়নের জন্য আলাদা করে কথা বলতে হচ্ছে। আলাদা করে তো কথা বলার কথা না। যেই পরিকল্পনা আমরা চিন্তা করছি বা যেই সংস্কার আসবে, যেটার ঐকমত্য আছে, সেটা আবার বাস্তবায়নের জন্য আলাদা করে আমাদের স্ট্যান্ড নিতে হবে, অথচ বাস্তবায়ন করার জন্যই কমিশন হয়েছে। এই যে ধারাবাহিকতা, যেখানে প্ল্যান হয়, কিন্তু বাস্তবায়নের কোনো রূপরেখা থাকে না।’

রাজধানীর প্রেসক্লাবে পুলিশের জলকামান নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হওয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।
আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তিনি হাসপাতালে আসেন। এ সময় আহত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাঁদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন তিনি।
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের জারা বলেন, ‘আহতদের অনেকে কানে শুনতে পাচ্ছেন না; অনেকের মাথায় ও হাতে-পায়ে আঘাত আছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করা আমাদের শিক্ষকদের ওপর এভাবে আঘাত করা হয়েছে, এটি খুবই লজ্জাজনক। এটি খুব দ্রুত তদন্ত ও বিচার অবশ্যই করা প্রয়োজন। যেই দাবি ইতিপূর্বে ২৮ জানুয়ারি আদায় করে ফেলেছে, সেই দাবি বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের আবার আন্দোলন করতে হবে, এটি খুবই দুঃখজনক। আমরা চাই না, এমন পুনরাবৃত্তি বাংলাদেশে আর হোক। শিক্ষকদের এভাবে অবহেলা, নির্যাতন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তাসনিম জারা বলেন, ‘শিক্ষকদের তো ক্লাশরুমে থাকার কথা, তাঁদের তো মাঠে থাকার কথা ছিল না। যেই প্রতিশ্রুতি সরকার একবার দিয়েছে, সেটি আদায় করতে আবার মাঠে নামতে হচ্ছে, এটি খুবই দুঃখজনক।’
তাসনিম জারা বলেন, ‘এমনকি সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব যেগুলো আছে, সেখানেও বাস্তবায়নের জন্য আলাদা করে কথা বলতে হচ্ছে। আলাদা করে তো কথা বলার কথা না। যেই পরিকল্পনা আমরা চিন্তা করছি বা যেই সংস্কার আসবে, যেটার ঐকমত্য আছে, সেটা আবার বাস্তবায়নের জন্য আলাদা করে আমাদের স্ট্যান্ড নিতে হবে, অথচ বাস্তবায়ন করার জন্যই কমিশন হয়েছে। এই যে ধারাবাহিকতা, যেখানে প্ল্যান হয়, কিন্তু বাস্তবায়নের কোনো রূপরেখা থাকে না।’

সাংবিধানিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ চান জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার কিছুটা এগিয়ে নিয়ে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী বছরের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে, এমন একটি ধারণা সম্প্রতি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা...
১১ জানুয়ারি ২০২৫
তুরস্কের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। আজ বুধবার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তাঁরা যোগ দেন।
৩ ঘণ্টা আগে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে বিএনপি আসন ভাগাভাগি করবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, জোট সারা পৃথিবীতে হচ্ছে। বাংলাদেশে হওয়াটা স্বাভাবিক। আর নির্বাচনী জোট করলে শেয়ার তো করতেই হবে।
৪ ঘণ্টা আগে
‘রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরও দু-তিনটি রাজনৈতিক দল একই পক্ষ।’
১১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর আছে। নির্বাচনের আগে আরও অনেক ঘটনা দেখবেন আপনারা। তারপরও আমি মনে করি, বাংলাদেশের মানুষ চায় একটা সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন।’
আজ বুধবার সংবিধান, আইন, বিচার ও মানবাধিকারবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে বিএনপি আসন ভাগাভাগি করবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, জোট সারা পৃথিবীতে হচ্ছে। বাংলাদেশে হওয়াটা স্বাভাবিক। আর নির্বাচনী জোট করলে শেয়ার তো করতেই হবে।
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন করেন। এতে সহযোগিতা করে ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল।
এ সময় হাসপাতালের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার হাফিজুর রহমান, ডা. শিশির মন্ডল, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার এইচ এম দুলাল, আব্দুল কুদ্দুস, মোবারক করিম প্রমুখ।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর আছে। নির্বাচনের আগে আরও অনেক ঘটনা দেখবেন আপনারা। তারপরও আমি মনে করি, বাংলাদেশের মানুষ চায় একটা সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন।’
আজ বুধবার সংবিধান, আইন, বিচার ও মানবাধিকারবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে বিএনপি আসন ভাগাভাগি করবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, জোট সারা পৃথিবীতে হচ্ছে। বাংলাদেশে হওয়াটা স্বাভাবিক। আর নির্বাচনী জোট করলে শেয়ার তো করতেই হবে।
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন করেন। এতে সহযোগিতা করে ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল।
এ সময় হাসপাতালের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার হাফিজুর রহমান, ডা. শিশির মন্ডল, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার এইচ এম দুলাল, আব্দুল কুদ্দুস, মোবারক করিম প্রমুখ।

সাংবিধানিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ চান জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার কিছুটা এগিয়ে নিয়ে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী বছরের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে, এমন একটি ধারণা সম্প্রতি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা...
১১ জানুয়ারি ২০২৫
তুরস্কের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। আজ বুধবার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তাঁরা যোগ দেন।
৩ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর প্রেসক্লাবে পুলিশের জলকামান নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হওয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।
৪ ঘণ্টা আগে
‘রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরও দু-তিনটি রাজনৈতিক দল একই পক্ষ।’
১১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রেফারির ভূমিকায় থেকেও এক পক্ষের হয়ে গোল দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত জুলাই সনদের পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি।সরকার ও দু-তিনটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একই পক্ষে কমিশনের অবস্থান দেখা যাচ্ছে, যা রেফারির নিরপেক্ষ ভূমিকার পরিপন্থী।
আজ বুধবার দুপুরে বিএনপি আয়োজিত একটি গোলটেবিল বৈঠকে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন। ‘ফ্রম রুল বাই পাওয়ার টু রুল অব ল: ট্রানজিশন টু আ ডেমোক্রেটিক বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই বৈঠক রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ যেটা স্বাক্ষরিত হয়েছে সেটা তো গতকালকের সুপারিশের মধ্যে নাই। ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরো দু তিনটি দল তারা বোধহয় একপক্ষ আমি বিপক্ষেই খেলছিলাম মনে হয়। ঐকমত্য কমিশনের এবং সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে আজকে এখানে এসে হতাশা ব্যক্ত করছি।’
তিনি বলেন, ‘কিছু সত্য আবিষ্কার করতে পেরেছি, এতোদিন আমরা মনে করতাম, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রেফারির ভূমিকা পালন করছে বা ফেসিলিটেটরের ভূমিকা পালন করছে। কালকে যে সুপারিশ তারা সরকারের কাছে প্রদান করেছে, তার মধ্যে অবশ্য একজন দস্তখতকারী মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাও বটে, জাতীয় ঐক্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে। সুতরাং সেটা একপক্ষে সরকারেরও একটা এনডোর্সমেন্ট হয়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে তো বটেই। কিন্তু রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি।’
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশের সুপারিশগুলোর মধ্যে মোট সংযুক্তিসহ ৯৪ পৃষ্ঠার দলিলের কথা উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘তার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে চিঠি লেখা হয়েছে, ওখানে প্রধান উপদেষ্টা নিজেই দস্তগত করেছেন ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে। তো বলা যায় সরকার এবং ঐকমত্য কমিশন তো মূলত একই। আর ঐকমত্য কমিশনের সাথে আলোচনা সময় আমার মনে হয়েছে কমিশন, সরকার এবং আরো দু–তিনটি দল তারা বোধহয় একপক্ষ, আমি বিপক্ষেই খেলছিলাম মনে হয়। তো সেই হিসেবে জাতির পক্ষেই আমি দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি।’
কিছু দলের প্রস্তাব এবং ঐকমত্য কমিশনের নিজস্ব চিন্তাভাবনা জাতির উপরে জবরদস্তি করে আরোপ করার প্রচেষ্টা চলছে অভিযোগ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যে দলিলটা গতকাল প্রকাশিত হয়ে, তার মধ্যে ১৭ অক্টোবরের সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় স্বাক্ষরিত দলিলটা হুবহু নেই। শুধু আছে ঐকমত্য্য কমিশনের প্রস্তাব।
তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর সুপারিশ, ঐকমত্যের প্রক্রিয়া ও নোট অব ডিসেন্ট— কোনো কিছুই উল্লেখ করা হয় নাই। আদেশের মধ্যে তফসিল হিসেবে সংবিধানের বিভিন্ন রকমের সংশোধনের প্রস্তাবসহ ৪৮টা দফা সংযুক্ত করে সেগুলোর উপরে গণভোটের প্রস্তাব করা হয়েছে।
তাহলে ১১ মাস বা ১২ মাস ধরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে কেন কসরত করা হলো, সেই প্রশ্ন তুলে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ, ঐকমত্য কমিশন গঠন, ছয়টা গঠন সংস্কার কমিশন গঠন এবং তাদের সঙ্গে এতো আলোচনা, সুপারিশ, জনগণের পক্ষ থেকে প্রস্তাব— সবগুলো মিলে সংকলিত প্রতিবেদন নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সভাপতি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা নিজে বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে সমস্ত বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করবে, সেগুলো সংকলিত করে জুলাই জাতীয় সনদ হবে, সেটা স্বাক্ষরিত হবে এবং সেটা পরবর্তী সংসদে বাস্তবায়ন হবে। এর আগে নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়গুলো সরকার বাস্তবায়ন করে ফেলবে— এই ছিল প্রস্তাব।
৩১ জুলাই দ্বিতীয় দফার আলোচনা শেষে জুলাই সনদ প্রায় পাকাপোক্ত ও ঐকমত্য হওয়ার দিনে হঠাৎ নতুন বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে ইঙ্গিত করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সেইদিন হঠাৎ করে দুয়েকটা দলের পক্ষ থেকে বলা হলো, এটা বাস্তবায়নের জন্য আইনানুগ ভিত্তি চাই, বাস্তবায়নের গ্যারান্টি চাই। আমরা বললাম ঠিক আছে, সনদ প্রণীত হোক, বাস্তবায়নের উপায়, আইনানুগ ভিত্তি, গ্যারান্টির জন্য কী করা যায় সেজন্য আরো আলোচনা হতে পারে। অনেকদিন আলোচনা হলো, আলোচনার পর নির্ধারিত হলো— আমিই প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমাদের দলের পক্ষ থেকে যে, এই জুলাই জাতীয় সনদ প্রণীত হোক, সেটা বাস্তবায়নের জন্য আমরা একটা প্রজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে গেজেট নোটিফিকেশন করতে পারি, তার ভিত্তিতে এগুলো গ্রহণ করার পক্ষে জাতি আছে কি নাই, জুলাই জাতীয় সনদ যেভাবে প্রণীত হয়েছে, সেই একটি প্রশ্নে গণভোট হতে পারে, একই দিনে হতে পারে।’
একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যাখ্যা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একই দিনে কেন হবে সেই যুক্তি আমরা দিয়েছিলাম, যাতে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ে। যেহেতু প্রার্থীরা ভোটারদেরকে নিয়ে আসবে এবং একই দিনে একই খরচায় একই আয়োজন হয়ে যাবে, ছোট্ট একটা ব্যালটের মাধ্যমে। আমরা তখন সে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। দুয়েকটি দল বাদে বাকি সবাই সেই প্রস্তাবে একমত ছিল এবং তারপরেও সেটা নিয়ে পরবর্তীতে আরো আলাপ–আলোচনার জন্য কয়েকটি দল বলল, সরকার সেটা পরে আরো আলাপ আলোচনা করবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের সুপারিশে দুই দিকেই ওপেন রেখে তাদের সুপারিশ দিয়েছে আগে অথবা পরে গণভোট হতে পারে এই ইস্যু উপর।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এখন মূল প্রশ্ন সেটা নয়, যার উপরে গণভোট হবে জুলাই জাতীয় সনদ যেটা স্বাক্ষরিত হয়েছে, সেটা তো এই সনদে নাই, সেটা গতকালকের সুপারিশের মধ্যে নাই। আছে হলো যে সমস্ত প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশন এবং দুয়েকটি দল দিয়েছিল, সেই প্রস্তাবগুলো। যেন উনারা সরাসরি ওই আদেশের মধ্যে খসড়া আদেশের মধ্যে তারা অন্তর্ভুক্ত করল তফসিল হিসাবে। বলা হলো এই ৪৮টা দফার উপরে গণভোট হতে হবে। এখন সেই আলাপ তো হয়নি আমাদের সাথে। ঐকমত্য কমিশনে ঐকমত্য হয়েছে ‘উইথ নোট অব ডিসেন্ট সার্টেন পয়েন্টসে’। যে সমস্ত রাজনৈতিক দল ওই সমস্ত নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, সে সমস্ত নোট অব ডিসেন্ট তারা নির্বাচন ইশতেহারে উল্লেখ করবে। সেই ছাপানো বই যেটা আছে সেই ইশতেহারে নোট অব ডিসেন্ট উল্লেখের পরে যদি জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত হয় সেগুলো তারা সেভাবে বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু নোট অব ডিসেন্ট বাদ দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে হতাশা ব্যক্ত করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘তো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য ছিল ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। এখন এখানে এসে এই অবস্থায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে সমস্ত প্রস্তাব দিয়েছে, সেখানে শুধু জাতিতে বিভক্তি হবে, অনৈক্য হবে এবং এখানে কোনো ঐকমত্য হবে না। এর ভিত্তিতে তারা কী অর্জন করতে চায়, আমরা জানি না।’
এর সঙ্গে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) নিয়ে ‘উদ্দেশ্যমূলক’ আচরণ করা হচ্ছে বলে সমালোচনা করে সালাউদ্দিন বলেন, ‘যে সমস্ত প্রস্তাব নির্বাচন কমিশন থেকেও আরপিওতে এসেছে তাতেও আমরা লক্ষ্য করেছি যে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে নির্বাচন সংস্কার সংক্রান্ত কমিশনের একটি অনালোচিত প্রভিশন আরপিওতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেটা এখন অর্ডিনেন্স হওয়ার অপেক্ষায় আছে। যেমন জোটভুক্ত যে কোনো রাজনৈতিক দলের স্বাধীনতা ছিল নিজস্ব প্রতীকে অথবা জোটের যে কোনো প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে। হঠাৎ করে তারা একটা অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বলে দিল যে, জোটভুক্ত হলেও তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেখলাম, আরেকটি রাজনৈতিক দল তাকে সমর্থন করে যাচ্ছে। তো এটা পক্ষপাতমূলক আচরণ, আমরা আশা করি না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় দেখতে চাই, তারা যেন নিরপেক্ষভাবে আচরণ করে এবং তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ডে যেন জাতি আশ্বস্ত হতে পারে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে, সেভাবেই যেতে হবে।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রেফারির ভূমিকায় থেকেও এক পক্ষের হয়ে গোল দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত জুলাই সনদের পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি।সরকার ও দু-তিনটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একই পক্ষে কমিশনের অবস্থান দেখা যাচ্ছে, যা রেফারির নিরপেক্ষ ভূমিকার পরিপন্থী।
আজ বুধবার দুপুরে বিএনপি আয়োজিত একটি গোলটেবিল বৈঠকে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন। ‘ফ্রম রুল বাই পাওয়ার টু রুল অব ল: ট্রানজিশন টু আ ডেমোক্রেটিক বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই বৈঠক রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ যেটা স্বাক্ষরিত হয়েছে সেটা তো গতকালকের সুপারিশের মধ্যে নাই। ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরো দু তিনটি দল তারা বোধহয় একপক্ষ আমি বিপক্ষেই খেলছিলাম মনে হয়। ঐকমত্য কমিশনের এবং সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে আজকে এখানে এসে হতাশা ব্যক্ত করছি।’
তিনি বলেন, ‘কিছু সত্য আবিষ্কার করতে পেরেছি, এতোদিন আমরা মনে করতাম, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রেফারির ভূমিকা পালন করছে বা ফেসিলিটেটরের ভূমিকা পালন করছে। কালকে যে সুপারিশ তারা সরকারের কাছে প্রদান করেছে, তার মধ্যে অবশ্য একজন দস্তখতকারী মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাও বটে, জাতীয় ঐক্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে। সুতরাং সেটা একপক্ষে সরকারেরও একটা এনডোর্সমেন্ট হয়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে তো বটেই। কিন্তু রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি।’
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশের সুপারিশগুলোর মধ্যে মোট সংযুক্তিসহ ৯৪ পৃষ্ঠার দলিলের কথা উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘তার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে চিঠি লেখা হয়েছে, ওখানে প্রধান উপদেষ্টা নিজেই দস্তগত করেছেন ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে। তো বলা যায় সরকার এবং ঐকমত্য কমিশন তো মূলত একই। আর ঐকমত্য কমিশনের সাথে আলোচনা সময় আমার মনে হয়েছে কমিশন, সরকার এবং আরো দু–তিনটি দল তারা বোধহয় একপক্ষ, আমি বিপক্ষেই খেলছিলাম মনে হয়। তো সেই হিসেবে জাতির পক্ষেই আমি দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি।’
কিছু দলের প্রস্তাব এবং ঐকমত্য কমিশনের নিজস্ব চিন্তাভাবনা জাতির উপরে জবরদস্তি করে আরোপ করার প্রচেষ্টা চলছে অভিযোগ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যে দলিলটা গতকাল প্রকাশিত হয়ে, তার মধ্যে ১৭ অক্টোবরের সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় স্বাক্ষরিত দলিলটা হুবহু নেই। শুধু আছে ঐকমত্য্য কমিশনের প্রস্তাব।
তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর সুপারিশ, ঐকমত্যের প্রক্রিয়া ও নোট অব ডিসেন্ট— কোনো কিছুই উল্লেখ করা হয় নাই। আদেশের মধ্যে তফসিল হিসেবে সংবিধানের বিভিন্ন রকমের সংশোধনের প্রস্তাবসহ ৪৮টা দফা সংযুক্ত করে সেগুলোর উপরে গণভোটের প্রস্তাব করা হয়েছে।
তাহলে ১১ মাস বা ১২ মাস ধরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে কেন কসরত করা হলো, সেই প্রশ্ন তুলে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ, ঐকমত্য কমিশন গঠন, ছয়টা গঠন সংস্কার কমিশন গঠন এবং তাদের সঙ্গে এতো আলোচনা, সুপারিশ, জনগণের পক্ষ থেকে প্রস্তাব— সবগুলো মিলে সংকলিত প্রতিবেদন নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সভাপতি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা নিজে বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে সমস্ত বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করবে, সেগুলো সংকলিত করে জুলাই জাতীয় সনদ হবে, সেটা স্বাক্ষরিত হবে এবং সেটা পরবর্তী সংসদে বাস্তবায়ন হবে। এর আগে নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়গুলো সরকার বাস্তবায়ন করে ফেলবে— এই ছিল প্রস্তাব।
৩১ জুলাই দ্বিতীয় দফার আলোচনা শেষে জুলাই সনদ প্রায় পাকাপোক্ত ও ঐকমত্য হওয়ার দিনে হঠাৎ নতুন বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে ইঙ্গিত করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সেইদিন হঠাৎ করে দুয়েকটা দলের পক্ষ থেকে বলা হলো, এটা বাস্তবায়নের জন্য আইনানুগ ভিত্তি চাই, বাস্তবায়নের গ্যারান্টি চাই। আমরা বললাম ঠিক আছে, সনদ প্রণীত হোক, বাস্তবায়নের উপায়, আইনানুগ ভিত্তি, গ্যারান্টির জন্য কী করা যায় সেজন্য আরো আলোচনা হতে পারে। অনেকদিন আলোচনা হলো, আলোচনার পর নির্ধারিত হলো— আমিই প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমাদের দলের পক্ষ থেকে যে, এই জুলাই জাতীয় সনদ প্রণীত হোক, সেটা বাস্তবায়নের জন্য আমরা একটা প্রজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে গেজেট নোটিফিকেশন করতে পারি, তার ভিত্তিতে এগুলো গ্রহণ করার পক্ষে জাতি আছে কি নাই, জুলাই জাতীয় সনদ যেভাবে প্রণীত হয়েছে, সেই একটি প্রশ্নে গণভোট হতে পারে, একই দিনে হতে পারে।’
একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যাখ্যা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একই দিনে কেন হবে সেই যুক্তি আমরা দিয়েছিলাম, যাতে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ে। যেহেতু প্রার্থীরা ভোটারদেরকে নিয়ে আসবে এবং একই দিনে একই খরচায় একই আয়োজন হয়ে যাবে, ছোট্ট একটা ব্যালটের মাধ্যমে। আমরা তখন সে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। দুয়েকটি দল বাদে বাকি সবাই সেই প্রস্তাবে একমত ছিল এবং তারপরেও সেটা নিয়ে পরবর্তীতে আরো আলাপ–আলোচনার জন্য কয়েকটি দল বলল, সরকার সেটা পরে আরো আলাপ আলোচনা করবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের সুপারিশে দুই দিকেই ওপেন রেখে তাদের সুপারিশ দিয়েছে আগে অথবা পরে গণভোট হতে পারে এই ইস্যু উপর।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এখন মূল প্রশ্ন সেটা নয়, যার উপরে গণভোট হবে জুলাই জাতীয় সনদ যেটা স্বাক্ষরিত হয়েছে, সেটা তো এই সনদে নাই, সেটা গতকালকের সুপারিশের মধ্যে নাই। আছে হলো যে সমস্ত প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশন এবং দুয়েকটি দল দিয়েছিল, সেই প্রস্তাবগুলো। যেন উনারা সরাসরি ওই আদেশের মধ্যে খসড়া আদেশের মধ্যে তারা অন্তর্ভুক্ত করল তফসিল হিসাবে। বলা হলো এই ৪৮টা দফার উপরে গণভোট হতে হবে। এখন সেই আলাপ তো হয়নি আমাদের সাথে। ঐকমত্য কমিশনে ঐকমত্য হয়েছে ‘উইথ নোট অব ডিসেন্ট সার্টেন পয়েন্টসে’। যে সমস্ত রাজনৈতিক দল ওই সমস্ত নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, সে সমস্ত নোট অব ডিসেন্ট তারা নির্বাচন ইশতেহারে উল্লেখ করবে। সেই ছাপানো বই যেটা আছে সেই ইশতেহারে নোট অব ডিসেন্ট উল্লেখের পরে যদি জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত হয় সেগুলো তারা সেভাবে বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু নোট অব ডিসেন্ট বাদ দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে হতাশা ব্যক্ত করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘তো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য ছিল ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। এখন এখানে এসে এই অবস্থায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে সমস্ত প্রস্তাব দিয়েছে, সেখানে শুধু জাতিতে বিভক্তি হবে, অনৈক্য হবে এবং এখানে কোনো ঐকমত্য হবে না। এর ভিত্তিতে তারা কী অর্জন করতে চায়, আমরা জানি না।’
এর সঙ্গে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) নিয়ে ‘উদ্দেশ্যমূলক’ আচরণ করা হচ্ছে বলে সমালোচনা করে সালাউদ্দিন বলেন, ‘যে সমস্ত প্রস্তাব নির্বাচন কমিশন থেকেও আরপিওতে এসেছে তাতেও আমরা লক্ষ্য করেছি যে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে নির্বাচন সংস্কার সংক্রান্ত কমিশনের একটি অনালোচিত প্রভিশন আরপিওতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেটা এখন অর্ডিনেন্স হওয়ার অপেক্ষায় আছে। যেমন জোটভুক্ত যে কোনো রাজনৈতিক দলের স্বাধীনতা ছিল নিজস্ব প্রতীকে অথবা জোটের যে কোনো প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে। হঠাৎ করে তারা একটা অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বলে দিল যে, জোটভুক্ত হলেও তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেখলাম, আরেকটি রাজনৈতিক দল তাকে সমর্থন করে যাচ্ছে। তো এটা পক্ষপাতমূলক আচরণ, আমরা আশা করি না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় দেখতে চাই, তারা যেন নিরপেক্ষভাবে আচরণ করে এবং তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ডে যেন জাতি আশ্বস্ত হতে পারে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে, সেভাবেই যেতে হবে।’

সাংবিধানিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ চান জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার কিছুটা এগিয়ে নিয়ে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী বছরের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে, এমন একটি ধারণা সম্প্রতি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা...
১১ জানুয়ারি ২০২৫
তুরস্কের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। আজ বুধবার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তাঁরা যোগ দেন।
৩ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর প্রেসক্লাবে পুলিশের জলকামান নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হওয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।
৪ ঘণ্টা আগে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে বিএনপি আসন ভাগাভাগি করবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, জোট সারা পৃথিবীতে হচ্ছে। বাংলাদেশে হওয়াটা স্বাভাবিক। আর নির্বাচনী জোট করলে শেয়ার তো করতেই হবে।
৪ ঘণ্টা আগে